এখানে সুখ ছোঁয়া যায় পর্ব-০৭

0
112

‘এখানে সুখ ছোঁয়া যায়’ (পর্ব-৭)
(কপি করা সম্পূর্ণভাবে নি’ষে’ধ।)

রুমঝুমের নতুন স্কুলের নেওয়া প্রথম ক্লাসটি বেশ ভালোই কাটল। নতুন পরিবেশে যদিও একটু জড়তা কাজ করছিল তারপরও মানিয়ে নিয়েছে। আজ তার দুইটার বেশি ক্লাস নিতে হয়নি। তাই অনেক আগে আগেই সে স্কুল থেকে বেরিয়ে পড়েছে। একটা ছোট খাটো বাসার খোঁজ করেছে অনেকক্ষণ এদিক সেদিক ঘুরে। খুব ক’ষ্ট করে অবশেষে দুই রুমের একটা বাসা পেয়েও যায়। যেখানে একটা বারান্দা, একটা বাথরুম আর একটা ছোটখাটো কিচেন আছে। বাসা হিসেবে ভাড়াটা আহামরি বেশি না। খুব পুরোনো ধাঁচের এই বাড়িটিতে আছেই মাত্র দুইটা পরিবার। আধুনিক সুবিধা তেমন একটা নেই বলে আর বাড়ির ভা’ঙা অবস্থা দেখে তেমন কেউই আসেনা এদিকটায়। তাই বাড়িওয়ালা হয়তো না পারতেই কম করে ভাড়া দিচ্ছেন। পেট তো সবারই চালাতে হবে। রুমঝুমেরও যে একেবারে আর্থিক সংকট চলছে ব্যাপারটা তেমন না। আসলে যুবতী একটা মেয়েকে অনেকেই বাসা দিতে আগ্রহ বোধ করেনি। আর তার তেমন কোনো রিলেটিভস্ ও নেই যে তাদের বাসায় উঠবে। আসলে যদি থাকত তবুও উঠত না সে। গত বছর তার বাবা অবসর নেন। সিলেটে তাঁদের দোতলা বাড়ি আছে। পৈতৃক ভিটাতেই তার বাবা চাকরী করা অবস্থায় নিজের সঞ্চয় দিয়ে বাড়িটি গড়েছেন। কিন্তু সারাবছর একবার এক জায়গায় ট্রান্সফার হয়ে ঘুরতে ঘুরতে তাঁদের আর সেই বাড়িতে তেমন একটা থাকা হয়নি। শেষ বয়সে এসে তাই তার বাবা মহিউদ্দিন শিকদার নিজের জন্মস্থানে ছুঁটেছেন। চেয়েছিলেন মেয়েকে বিয়ে দিতে কিন্তু বৃদ্ধ বাবা-মাকে কার ভরসায় রেখে যাবে এই ভ’য়ে রুমঝুম বারবার বিয়ে থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে। তার কথা হলো বিয়ে করে দূরে চলে গিয়ে অন্যের অধীনে থাকার থেকে ভালো নিজে রোজগার করে বাবা-মাকে দেখে রাখবে। তবে তার যে সংসার পাতার ইচ্ছে নেই তা নয়। ইচ্ছে আছে। একটা ভালো মনের পুরুষ, সব সময় পাশে থাকার মতো মন মানসিকতার পুরুষের খোঁজ যদি কোনো দিন পায় তবে তার আপত্তি নেই।

বাসা দেখে রাস্তায় বের হয়ে বাড়িতে বাবা-মায়ের সাথে কল করে সে কথা বলে নিল। দুজনেই বেশ চিন্তিত তাকে নিয়ে। সে আশ্বাস দিল সে সবটা সামলে নিতে পারবে। তাঁরা যেন চিন্তা না করে। কথা শেষ করে একটা রিকশা ডেকে সে রওনা হলো চৌধুরী বাড়ির দিকে। সেখান থেকে যত জলদি হোক তাকে চলে আসতে হবে। যতক্ষণই সে ওই বাড়িতে থাকে একটা অস্বস্তিতে গাঁট হয়ে থাকে। দরকার নেই তার এমন দ’ম বদ্ধকর পরিবেশে থাকার। ব্যাগ গুছিয়ে আজই চলে আসবে। এখন বেলা বারোটা বাজে। বিকেল পাঁচটার মধ্যে সব গুছিয়ে চলে আসতে পারবে নিশ্চয়ই।

_____________________________

রিনিঝিনি বড় চাচাকে এবং তার বাবাকে কল করে দাদীর কথা জানালো। এতে দুজনেই বেশ রে’গে গেলেন। অফিস ফেলে দুজনেই একটার দিকে বাড়ি এসে পড়লেন। আসতে পারল না তাহমীদ। সব সময় সবাই তার উপর সব চাপিয়ে দিয়ে চলে যায়। আজও তার ব্যতিক্রম হলো না। অন্য সময় হলে সে স্বাভাবিক ভাবেই সবটা দেখত। কিন্তু আজ তার কোনো কিছুতেই মন বসছে না। ছুঁটে বাড়ি যেতে ইচ্ছে করছে। রুমঝুমের তো আজ স্কুলে প্রথম দিন ছিল। কেমন কাটল বা কাটছে তার দিনটা? জানার জন্য তার মন ব্যাকুল হয়ে রইল।

রিনিঝিনি ইখতিয়ারকে হল রুমের পাশের ছোট বসার ঘরটায় বসতে বলে অনিরুদ্ধকে গিয়ে কল করল। বলল দ্রুত যেন সে তাদের বাড়িতে চলে আসে যদি তার মায়ের সাথে দেখা করতে চায় তো। তার কথার মাঝেই তার বাবা আর বড় চাচা এসে উপস্থিত হলেন। তাঁদের পিছু পিছু সেও গেল হলরুমে। দাদীকে সবাই বেশ সময় নিয়ে বোঝালো সে যা করছে বা বলছে তা সমীচীন নয়। মূলত বাড়ি ভর্তি অতিথিদের মধ্যে অনেকেই আগের ঘরের সন্তান নিয়ে দাদীর কানে নানান নেতিবাচক কথা বলেছেন। যাতে তিনি আ’শ’ঙ্কায় পড়েছেন।পরিবারের ভবিষ্যৎ সেই বি’প’দের কথা ভেবে তাই দাদী চাইছেন ছেলেটিকে তিনি মানবেন না। বড় চাচা বললেন,

-‘আপনি যা করছেন তা ঠিক করছেন না আম্মা।’

-‘তুই আমারে ঠিক ভুল শেখাস না। যা করার তুই তো করছস। এবার আমার কথা মানতে হইলে মান। যদি না মানতে চাস তো বইলা দে। আমি এহনি বাইর হইয়া যাইতেছি এই বাড়ি থাইকা। থাক তোরা! আমি আমার স্বামীর পুরান ভিটায় উঠমু দরকার পড়লে।’

রিনিঝিনির বাবা বললেন,

-‘আপনি কি বলছেন আপনি বুঝতে পারছেন আম্মা? এটা কেমন কথা! দয়া করে এখন এসব বলবেন না। বাড়ি ভর্তি অনেক মানুষ। অন্তত এই দুটো দিন একটু মানিয়ে নিন! তারপর না হয় এসব নিয়ে কথা বলবেন?’

রিনিঝিনিও তাল মেলালো বাবার সাথে। দাদীকে অনুনয় করে বলল,

-‘প্লিজ দাদী!’

অবেশেষে আরো কথা বলার পর দাদীকে একটু বোঝানো গেল। তবে তার শর্ত রইল যে সালমা কায়সারের সাথে তার ছেলে এই দুই দিন অর্থাৎ আত্মীয় স্বজনদের থাকা অবস্থায় কোনো দেখা সাক্ষাৎ করতে পারবে না। বাড়িতে সে চাইলে থাকুক তবে মায়ের কাছে যেন ভুলেও না যায়। উদ্ভট এক নিয়ম! দাদী যে এমন একটা শর্ত দিবে তা যেন রিনিঝিনি আগেই বুঝে গিয়েছিল। তাই তো চুপচাপ মেনে নিলো।

বড় চাচা ডাকলেন অনিরুদ্ধকে নিয়ে আসতে। রিনিঝিনি কিছু বলার আগেই জরিনা গিয়ে ইখতিয়ারকে ডেকে নিয়ে এলো। রিনিঝিনি হায় বলে কপাল চাপড়ায়। তার এত ভালো প্ল্যানটা জরিনা এক নিমিষেই ন’ষ্ট করে দিতে চলেছে!

না! উপর ওয়ালা সহায় ছিলেন। ঠিক তখনই হল রুমে অনিরুদ্ধ প্রবেশ করল। দাদী ইখতিয়ারকেই অনিরুদ্ধ ভেবে ভুল করে মুখ ভেঙচি কেটে অন্যদিকে তাকিয়ে রইল। বাড়ির মহিলারাও ঝামেলা মিটেছে দেখে অন্দরে চলে গেল। বড় চাচা অনিরুদ্ধকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই রিনিঝিনি তাঁকে ডেকে একটু দূরে নিয়ে গেল। বড় চাচাকে নিজের পরিকল্পনা জানালো। ইখতিয়ারকে সবাই অনিরুদ্ধ ভেবে আছে। তাকেই ভাবুক আপাততর জন্য। আসল অনিরুদ্ধকে নিয়ে কেউ মাথা ঘামাবে না। তার পরিচয় গো’পন রাখলে ভালো হয় সে এখনই তার মায়ের সাথে দেখা করতে পারে। নয়তো সে জানে দাদী সত্যিই দেখা করতে দিবে না। বড় চাচা ভেবে দেখলেন এটাই ভালো হয়। তাই তিনি আর সবার সামনে কথা বললেন না অনিরুদ্ধর সাথে। চলে গেলেন দোতলায়। সালমা কায়সারকে জানাতে হবে ব্যাপারটা।

ইখতিয়ার বুঝতে পারল না তাকে ডেকে এনে এভাবে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে কেন? রিনিঝিনি জরিনাকে ডাক দিলো। বলল ইখতিয়ারকে তিন তলার গতকাল পরিষ্কার করা রুম গুলোর একটায় দিয়ে আসতে। জরিনা ইখতিয়ারকে নিয়ে যেতেই রিনিঝিনি অনিরুদ্ধর কাছে গেল। ইশ! একটু আগেও তো সব ঠিক ছিল। হাত-পা আবারও ঠান্ডা হয়ে পড়ছে কেন?

___________________________
আগামীকাল বড় করে চেনা জানা মানুষদের ডেকে রিসিপশন করবেন বলে সবাই ঠিক করেছে। সেই অনুযায়ী কাজ চলছে। আজকেই করা যেতো কিন্তু হুট করে আসলে কেউই প্রস্তুত ছিল না। যেহেতু পরদিন শুক্রবার বন্ধের দিন তাই সবাই সুযোগ পাবে আসার। সেই ভেবে একদিন আবার পিছিয়েছে। গতকাল আসা কিছু অতিথি এখনও আছে। গতকাল অবশ্য অনেকেই এক ঝলক নতুন বউ দেখে চলে গেছেন। যারা কাছের তাদের মধ্যে কিছু আছে। আর যারা একটু দূর থেকে আসার তারা অনেকে আবার আজ এসে পড়েছেন।

গতকালের সেই মহিলা গুলো মধ্যে দুই তিনজন এখনও আছেন। রুমঝুম তাদের চেনে না। তারা কি হয়? এই বাড়ির সাথে তাদের কি সম্পর্ক? কিছুই সে জানে না। জানার দরকারও নেই তার। কিন্তু তাকে নিয়ে মহিলা গুলোর এত বেশি কৌতূহল ও সে মেনে নিতে পারছে না। সে এসে থেকেই দেখছে একটার পর একটা হট্টগোল করছে এই বাড়ির লোক। একটুও আগেও কিছুটা দেখেছে। তবে এই হট্টগোলে কেউ কিন্তু তাকে ভুলেও যায়নি। বিশেষ করে ঈশান! সে কয়েকবার এসে খবর নিলো খেয়েছে কিনা, কিছু লাগবে কিনা। রুমঝুম জানালো সে খায়নি এখনও ফ্রেশ হয়ে খাবে। শুনে ঈশান হন্তদন্ত হয়ে ছুটল। জরিনা কি অতিথি সেবা করছে না? জরিনা তখন রুমঝুমের জন্যই খাবার নিয়ে যাচ্ছিল। ঈশানের রা’গটা তাতে একটু কমল। জরিনাকে বলল এভাবেই রুমঝুমকে টেক কেয়ার করতে। সেজন্য অবশ্যই তাকে কিছু বকশিশ দেওয়া হবে। শুনে জরিনাও খুশি হয়ে গেল। কথা মতো কাজও করল। তার এত টেক কেয়ারে রুমঝুম রীতিমত বি’র’ক্ত হয়ে পড়ে। একটু পরপরই এসে কি লাগবে, কি লাগবে করছে। রুমঝুমের মাথা ধরে বসে থাকে। পাঁচটা নয় একেবারে চারটার দিকেই সে তৈরি হয়ে গেল। জরিনা শেষবার যখন এলো তখন সে আশরাফ চৌধুরীর কোথায় আছেন জানতে চাইলে জরিনা জানায় তারা বাড়িতে নেই। রুমঝুম ভাবল থাক, পরে জানিয়ে দিবে। আজ সে যেভাবেই হোক বের হবে এখান থেকে। তার পক্ষে আর সম্ভব না এখানে থাকা। আঙ্কেল রা’গ করতে পারেন কিন্তু সে সত্যিই পারছে না এখানে থাকতে। নিজেকে তার কেমন ছোট লাগছে অপরিচিত মানুষদের ভীড়ে।

ব্যাগ নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে একটু সামনে যেতেই একজন মহিলা তাকে ‘এই মেয়ে’ বলে পেছন থেকে ডাকল। রুমঝুম পেছন ফিরে দেখল গতকালের সেই মহিলা যে তাকে তাহমীদের রুমে বন্ধ করে রেখেছিল। তাঁকে দেখেই রুমঝুম হাঁটার গতি বাড়ায়। এই মহিলা খুব ডে’ঞ্জা’রা’স। আবার কী না কী করে ফেলে! দরকার নেই তার কাছে যাওয়ার।

-‘এই মেয়ে? দাঁড়াও! আরে তুমি যাচ্ছো কোথায়?’

মহিলা একপ্রকার দৌঁড়ে এসে রুমঝুমের হাত চেপে ধরল। বাড়ি ভর্তি তখন মানুষ। সবার চোখে পড়ল ব্যাপারটা। মহিলা কাউকে তোয়াক্কা না করেই বলে উঠলেন,

-‘আরে কী করছ তুমি? একটু মান অভিমান হয়েছে মানছি। তাই বলে একেবারে ব্যাগ গুছিয়ে বাপের বাড়ি চলে যাবে? আরে আশ্চর্য! বাড়িতে একটা অনুষ্ঠান আছে আগামীকাল। তুমি বাড়ির বড় বউ হয়ে এমন কাজ করছ এটা তো ঠিক না।’

একজন উঠে এসে বললেন,

-‘ও কে ফিরোজা?’

-‘তাহমীদের বউ। রা’গ করে বাপের বাড়ি চলে যাচ্ছে। তোমরা বোঝাও। এত রা’গ করলে কি চলে?’

মহিলাটি এগিয়ে এলেন। বললেন,

-‘তাহমীদ বিয়ে করেছে? শুনিনি তো!’

-‘কেউই তো শুনিনি। এখন এসে দেখছি।’

-‘আচ্ছা সে না হয় বাদ দিলাম। ঠিকাছে আমাদের জানা লাগবে না এত। মেয়ে শোনো! সংসারে টুকটাক ঝগড়াঝাটি, কথা কা’টা’কা’টি হয়েই থাকে। তাই বলে এত রা’গ করলে তো হবে না। বাড়ি ভর্তি মানুষ দেখছ তো? তাছাড়া একটা অনুষ্ঠান। বাড়ির বউ হুট করে এই সময় বাড়ি ছাড়ছে এটা কি ঠিক?’

রুমঝুম বলল,

-‘আপনারা ভুল ভাবছেন। আমি কারো বউ না।’

-‘ধুর মেয়ে! রা’গ করে বলছ আমরা কি বুঝিনা?’

-‘সত্যি বলছি।’

রুমঝুম ব্যাগ নিয়ে আবার হাঁটা ধরল। মহিলা গুলোও পেছন পেছন এলো। ফিরোজা নামের মহিলাটা রিনিঝিনিকে ডাকতে লাগলেন। রিনিঝিনি তখন অনিরুদ্ধকে নিয়ে গেছে সালমা কায়সারের সঙ্গে দেখা করতে। আশেপাশে বাড়ির সদস্য আর কাউকে দেখা যাচ্ছিল না। যে একটু ডাক শুনে আসবে। রুমঝুম যখন সদর দরজার কাছে গেল তখনই তাহমীদকে ভেতরে ঢুকতে দেখা গেল। মহিলা দুটো শান্তি পেলেন। ফিরোজা বেগম চেঁচিয়ে বললেন,

-‘এই তাহমীদ! তোর বউ তো রা’গ করে চলে যাচ্ছে। বউকে আটকা!’

রুমঝুম তাহমীদকে চোখ দিয়ে ইশারা করল সরে যেতে। তাহমীদ সরল না। তাই সে উপায় না পেয়ে পাশ কাটিয়ে যেতে নিলেই তাহমীদ তার হাত চেপে ধরল। এমনকি তাহমীদ তার অন্য হাতে থাকা ব্যাগটাও ছি’নি’য়ে নিল। আকস্মিক এমন কান্ডে রুমঝুম ভাষাহারা হয়ে পড়ল।

-‘যা যা! বউকে রুমে নিয়ে যা। সবাই দেখলে কী ভাববে।’

তাহমীদ রুমঝুমের বিস্ময় সম্পূর্ণ অবজ্ঞা করে বলল,

-‘ফুপি, আমার বউ তোমার পছন্দ হয়েছে?’

ফিরোজা বেগম হেসে বললেন,

-‘পছন্দ না হয়ে উপায় আছে? আমার তাহমীদ বাবার বউ বলে কথা। তবে রা’গ অভিমান বেশি মনে হচ্ছে। একটু খেয়াল রাখিস।’

তাহমীদ প্রাণবন্ত হেসে বলল,

-‘রাখব।’

রুমঝুম স্তব্ধ চোখে তাকিয়ে রইল তাহমীদের মুখের দিকে। তাহমীদ এমন ভাবে কথা বলছে কেন? এমন আচরণই বা করছে কেন? পা’গ’ল হলো?

#চলবে।