#এমন_একদিন_সেদিন
#মুমুর্ষিরা_শাহরীন
পর্ব-৪৭
১০০.
শ্রেয়সীর হাত ধরে ভেজা শ্যাতশ্যাতে মাটির আইল ধরে হাটছে প্রযুক্ত। সতর্ক দৃষ্টিতে পিচ্ছিল পথের দিকে তাকিয়ে আরো খানিকটা শক্ত করে মুঠো ধরে বলল,
‘একটা কথা জিজ্ঞেস করি?’
তিড়িং বিড়িং করে পথ মাড়িয়ে চলা শ্রেয়সী কানের পেছনে চুল গুঁজে ব্যতিব্যস্ত গলায় বলে,
‘বলুন না! বলুন!’
‘আপনারা এতো ভালো বন্ধু! অথচ কেমন যেনো!’
তিড়িংতিড়িং থামিয়ে পায়ের চলন ধীর করে দিল শ্রেয়সী,
‘কেমন?’
‘আপনাদের বন্ধুত্বের রং ফিকে হয়ে যাওয়ার কারণ কি?’
শ্রেয়সী কিছু মূহুর্ত চুপ থাকলো। চারিপাশে বিস্তর ক্ষেতের মাঝখানের আইল ধরে হাটছিলো ওরা। চাষের জমি’গুলোতে তখন বেগুনের চারা লাগানো হয়েছে। চারা বড় হয়ে ফুল ধরেছে। শ্রেয়সী একটা ফুল ছিড়লো। কানে গুঁজলো। প্রযুক্ত নাক কুচকে ‘ভালো লাগছে না’ বলে ফেলে দিলো। শ্রেয়সী অপরাগতা প্রকাশ করলো,
‘ইশশ….তাই বলে ফুলটা ফেলে দিবেন?’
প্রযুক্ত ভ্রু কুচকিয়ে তাকালো।
‘আশ্চর্য! এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন কেনো?’
প্রযুক্তর প্রশ্ন করা অস্বাভাবিক নয়। শুধু প্রযুক্ত কেনো যেকেউ যেকোনো সময় যদি এই প্রশ্ন করে, তৎক্ষণাৎ তাদের উত্তর দিতে বাধ্য থাকতে হবে। আর প্রযুক্তর বেলায় তো উত্তর দেওয়া আবশ্যক। তবে সত্যি হওয়া নিশ্চয়ই জরুরি নয়! শ্রেয়সী লম্বা করে দীর্ঘশ্বাস টানলো। প্রযুক্ত খুব ভঙ্গি নিয়ে তা চেয়ে চেয়ে দেখলো। শ্রেয়সী হেসে ফেললো,
‘এভাবে তাকিয়ে থাকবেন না। বলছি।’
বলে শ্রেয়সী আগের চেয়েও বড় করে দীর্ঘশ্বাস নিলো। প্রযুক্ত অনেক কষ্টে এই মেয়ের নাটকীয়তা হজম করলো। শ্রেয়সী প্রযুক্তকে আরেকটু জ্বালাতে শব্দ করে ঠোঁট গোল করে নিঃশ্বাস ছাড়লো। প্রযুক্ত বিরক্তিতে চু চু শব্দ তুলে বললো,
‘আমার ধৈর্য্যের বাধ ভেঙে যাচ্ছে। এতো অভিনয় পারেন আপনি! উফফ…!’
শ্রেয়সী মেকি হাসলো। অন্যমনস্ক হয়ে সরু আইলে পা ফেলতে ফেলতে বললো,
‘আসলে দুষ্টুকে তো জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। ও আমাদের জানায়নি। আমরা ওর বিয়ের এক মাস পরে জেনেছিলাম। এটা নিয়ে আমাদের মাঝে একটু ঝামেলা হয়। আবার আমি বিয়ে করলাম সেটাও ওরা জানলো না। নীড়ের বিয়ের দিন-ই ওই বাড়িতে আমাকে দেখে ওরা জেনেছে। এদিকে নীড়ও রাগে ক্ষোভে আমাকে ওর বিয়ে কথা জানায়নি। এসব নিয়েই আসলে!’
প্রযুক্ত কৌতুক বোধ করলো,
‘বাহ! ইন্টারেস্টিং তো! তিন বন্ধু অথচ কেউ কারোর বিয়ের খবর জানে না। বিয়ে সমাচার!’
শ্রেয়সী ছোট্ট করে বললো, ‘হুম।’
‘সামান্য এই কারণে?’
‘না আরো একটা কারণ আছে?
প্রযুক্ত ভ্রু কুচকায়, ‘কি?’
‘নীড়ের ভাইকে’ই দুষ্টু বিয়ে করেছে অথচ নীড় জানে না এটাই।’
বলেই শ্রেয়সী শব্দ করে হাসলো। প্রযুক্তও তাতে যোগ দিলো। বললো,
‘কি হযবরল!’
হাসতে হাসতেই শ্রেয়সীর চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে উঠলো। সে সত্য বললো অথচ বিরাট বড় সত্যিটাই লুকিয়ে গেলো। প্রযুক্ত শ্রেয়সীকে নিয়ে উল্টোঘুরে বাড়ির পথ ধরলো। যেতে যেতে বললো,
‘আপনাদের বয়স হয়েছে এতো অথচ কত ইমম্যাচিউর! প্রচ্ছদও তো আমার বিয়ের কথা জানতো না। অথচ আমরা এক ঘন্টাও কথা না বলে থাকিনি। আপনাদের উচিত কি জানেন?’
শ্রেয়সী ফিচেল গলায় বলে, ‘কি?’
‘তিনজনে বসে একসাথে পান্তা ভাত খাওয়া। শুকনো মরিচ ডলে ডলে একেক লোকমা খাবেন আর চোখের পানি, নাকের পানি একাকার করে একে অপরকে ইচ্ছে মতো গালাগাল করবেন। তারপর দেখবেন সব ঠিক!’
শ্রেয়সী বিস্তর হাসলো। প্রযুক্ত কৌতুক করলেও শ্রেয়সীর নেত্র দুটো পানিতে টইটম্বুর হলো। মনে মনে সে ভাবলো, ‘যদি সত্যি এটা কাজে দিতো তবে তারা তিনবেলা একসাথে বসে আয়েস করে পান্তা ভাত খেতো!’ কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও জীবনের সবচেয়ে বড় বিশ্রী সত্য’টা হলো, এই সময়টায় এসে ওদের একসাথে বসে খাওয়া তো দূর! একজন আরেকজনের সাথে কথা বলতে গেলে গলার স্বর বন্ধ হয়ে যায়! কত জড়তা! কবে কোনদিন কে ভেবেছিলো যে তাদের মাঝেও একদিন এমন নিস্তব্ধতা বিরাজ করবে? কেউ কারোর মুখ দেখতে চাইবে না অথচ ভাগ্যের লীলাখেলায় তবুও দেখে যেতে হবে! বাড়ির কাছাকাছি এসে প্রচ্ছদকে পুকুর পাড়ে বসে থাকতে দেখা গেলো। প্রযুক্ত শ্রেয়সীকে ভেতরে যেতে বলে সেদিকে পা বাড়ায়।
প্রচ্ছদের চোখ মুখ লাল হয়ে আছে। প্রযুক্ত গিয়ে প্রচ্ছদের পিঠে দু’আঙ্গুল দিয়ে টোকা মেরে পাশে বসে বলল,
‘কিরে বেটা! বউ ছেড়ে আসতে পারলি? কিরে? গালে তো টোকা দিলে রক্ত পরবে। চোখ, মুখ এতো লাল?’
প্রচ্ছদ কথা বললো না। এতো বাজে রকমের খারাপ লাগছে তার বলে বোঝানো যাবে না৷ অপমানে, লজ্জায়, রাগে ভেতর’টা একদম তিতে বিষ হয়ে আছে৷ কিছুক্ষণ আগেই দুষ্টুর সাথে একদফা হট্টগোল হয়ে গেছে তার। তখন নীড়ের গান শেষ হওয়ার পর রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দেওয়ায় দুষ্টু বিরক্তি নিয়ে তাকালো। শীতল কণ্ঠে শুধালো,
‘কিছু চাই?’
প্রচ্ছদ সরাসরি এমন প্রশ্নে কি বলবে খুঁজে পেলো না। দুষ্টু পিঠ দেখিয়ে ফিরে নিজমনে কি যেনো করা শুরু করলো সম্পূর্ণ প্রচ্ছদকে অবজ্ঞা করে। এই ঘরে যে ও নিজে ছাড়া আরো একজন পুরুষের অস্তিত্ব আছে তা খুব সূক্ষ্ম ভাবে এড়িয়ে চললো। প্রচ্ছদ খাটের একপাশে বসলো। দুষ্টু অপরপাশে গিয়ে শুয়ে চোখের উপর এক হাত রেখে নিস্তব্ধে পরে রইলো। মিনিট কতক পর প্রচ্ছদ একবার জিজ্ঞেস করলো,
‘তোমার কি শরীর খারাপ লাগছে?’
দুষ্টু উত্তর দিলো না। অপমানে শরীর রি রি করে উঠলো প্রচ্ছদের। হাতের মুঠো শক্ত হয়ে এলো। এতোটা অবহেলা! দুষ্টু তাকে এতো ঘৃণা কেনো করে? সে-ই বা কেনো আগ বাড়িয়ে এই বেয়াদব মেয়ের সাথে কথা বলতে যায়? এতোটা নির্লজ্জ প্রচ্ছদ?নিজের ঠোঁট দুটোই কেঁটে ফেলতে ইচ্ছে করলো। অনেক্ক্ষণ পর নিরবতা কাটিয়ে প্রচ্ছদ ঠান্ডা মেজাজে বলে উঠলো,
‘জীবনে কাকে সবথেকে বেশি ঘৃণা করো, দুষ্টু?’
প্রচ্ছদ জানতো দুষ্টু তেরছাভাবে উত্তর দিয়ে বলবে ‘আপনাকে’ । কিন্তু সে উত্তর দিলো,
‘নিজেকে!’
প্রচ্ছদ বেহায়ার মতো তবুও আরেকবার প্রশ্ন করে উঠলো, ‘কেনো?’
‘কারণ আপনার মতো একটা লোকের সাথে আমার বিয়ে হয়েছে তাই!’
প্রচ্ছদ চকিতে ঘাড় ঘুরালো। নিজেকে নর্দমার কীট বলে বোধ হলো। দুষ্টু এই কথাটা এভাবে বলতে পারলো প্রচ্ছদের মুখের উপর? প্রচ্ছদের বুকের ভেতর’টা কে যেনো খামচে ধরলো। শরীরের প্রতিটা পশমে পশমে যেনো আগুন জ্বললো।
প্রচ্ছদ তড়িৎ বেগে দুষ্টুর মুখের উপর ঝুঁকলো। হাত দুটো দুষ্টুর দু’পাশে রাখলো। আজকে এই মেয়ের একটা হেস্তনেস্ত করা দরকার। প্রচ্ছদ কি এতোটা সস্তা নাকি? এতো ফেলনা ও? দাঁতে দাঁত চেপে সে বলল,
‘ইচ্ছে করছে তোমার চাপা টা ভেঙে দেই।’
মুখে বললো ঠিকই কিন্তু প্রচ্ছদ কিছুই করতে পারলো না। দুষ্টুর চোখ খিচে বন্ধ করে রাখা ভয়ার্ত সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত ওই ওতো সুন্দর মুখের দিকে তাকিয়ে আদতে কিছু বলতে-ই পারলো না। তার বদলে বিছানায় এতো জোরে ঘুষি মারা হলো যে বিছানাসহ দুষ্টু কেঁপে উঠলো। প্রচ্ছদ রাগে দ্রুত ঘর প্রস্থান করতে চাইলো। দরজার কাছে যাওয়া মাত্রই দুষ্টু আগের ভাবভঙ্গির ঠাট বজায় রেখে বলে উঠলো,
‘দিনের বেলা এভাবে হুটহাট এসে দরজা বন্ধ করে দিবেন না। আর আমি ঘরে আসলেই আমার পেছন পেছন আসবেন না।’
প্রচ্ছদ রাগে চুল টেনে ধরলো। ওর কি কোনো প্রাইভেসি নেই নাকি? ওর নিজের কোনো ইচ্ছা, মতামতের দাম নেই? এই মেয়েটার সাথে এক ঘরে আর থাকবে না ও! দরজায় এক লাত্থি দিয়ে খুললো। আবার চলে যাওয়ার সময় আরেক লাত্থি দিয়ে বন্ধ করলো।
সেদিকে তাকিয়ে থেকে দুষ্টুর বুক চিরে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো। চোখ থেকে টুপটুপ করে দু’ফোটা পানি কান পর্যন্ত গড়িয়ে গেলো। কদিন পরেই সে চলে যাবে; সে চায়নি এখন আর এভাবে প্রচ্ছদের সাথে খারাপ ব্যাবহার করতে। কিন্তু না করে উপায় নেই। প্রচ্ছদ ক্রমেই তার উপর দুর্বল হয়ে পরছে। তাকে চোখে হারাচ্ছে। তার উপর অধিকার খাটাচ্ছে। প্রচ্ছদ যে তাকে খুব ভালোবাসে এ আরো বহু আগেই দুষ্টু টের পেয়েছে। এটুকু বুঝার মতোন বয়স তার হয়েছে। প্রচ্ছদের ওই গোপনী, সন্ধানী যে একমাত্র সে এটুকুন অনুভব করার মতো বোধবুদ্ধি দুষ্টু নামক নারী’টির মাঝে রয়েছে! কিন্তু কিচ্ছু করার নেই! দুষ্টু’ই বোধহয় প্রশ্রয় দিলো! দুষ্টুর ক্রমাগত প্রেগন্যান্সি টেস্ট করানোর ডেট পিছিয়ে দেওয়ায় প্রচ্ছদ হয়তো অন্যকিছুর স্বপ্ন বুনছে! যার জেল্লা ওর চোখে মুখে হরহামেশাই দেখতে পাওয়া যাচ্ছে! এতে দুষ্টুর বুক’টা মুচড়ে উঠে! আর কতবার তারজন্য একেকজন পুরুষ ঠকবে? এতো নিকৃষ্ট সে? নিজের প্রতি বড্ড ঘৃনা হয় আজকাল! বড্ড!
প্রযুক্ত প্রচ্ছদের থেকে সব শুনে হালকা আওয়াজে বলল,
‘এখন এসব নিয়ে কষ্ট পেয়ে কি আদেও লাভ আছে প্রচ্ছদ? তুই নিজে যেচে আগুনে ঝাপ দিয়েছিস।’
প্রচ্ছদ কেমন অপ্রকৃতস্থের ন্যায় তাকালো। ধরা গলায় বলল,
‘ও আমাকে ভালোবাসে না কেনো, প্রযুক্ত? আমি কি সুদর্শন নই?’
প্রচ্ছদের এমন অসহায়ত্বের বানীর কাছে প্রযুক্ত কোনো উত্তর পেলো না। ফ্যালফ্যাল করে দেখে গেলো চিরচেনা, বাইরে ঠাট বজায় রেখে চলা বন্ধুর করুণ স্বর। একটু ভালোবাসা ভিক্ষা পাওয়ার জন্য আর্তনাদ। একটু!
‘ও আমার বাজে অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ আমি তো মানতে পারছি না এসব।’
প্রযুক্তর ভীষণ খারাপ লাগলো। প্রচ্ছদের কাধে এক হাত রেখে পুকুরের স্থির পানির দিকে তাকিয়ে বললো,
‘সেই কলেজ থেকে এই মেয়েটার পেছনে ঘুরছিস। কেনো এতো ভালোবাসিস?’
প্রচ্ছদ হাটুতে মুখ ঠেকিয়ে বসেছিলো। সেভাবেই বললো,
‘তুই কেনো শ্রেয়সীকে এতো ভালোবাসিস?’
‘আমার আর তোর মধ্যে বিশাল ফারাক। আমি যদি জানতাম শ্রেয়সী অন্য কাউকে ভালোবাসে আমি ওকে জোর করে আমার করতে চাইতাম না কক্ষনো।’
‘কিন্তু আমি চাই। জোর করেই হোক যেভাবে হোক। আমি ভীষণ স্বার্থপর! ও যাকে ইচ্ছে তাকে ভালোবাসুক। আমি ওকে ভালোবাসি এটাই মূখ্য!’
প্রযুক্ত অসহায়যোগে চাইলো। এই যে প্রচ্ছদ এতো ভালোবাসে যদি সত্যি ডিভোর্স’টা হয়ে যায় তাহলে ছেলেটা বাঁচবে কেমন করে? প্রচ্ছদ আবার বললো,
‘ওকে ছাড়া ইদানীং আমার দমবন্ধ লাগে। এক সেকেন্ড চোখের আড়াল হলে মনে হয় আমি নিঃস্ব হয়ে গিয়েছি। আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি। হাজারবার অপমান করা সত্ত্বেও আমি ওর কথাই ভাবছি ওর কাছেই ফিরে যাচ্ছি আগের মতো জেদ ধরে বসে থাকছি না। ওর উপর রাগও দেখাতে পারছি না। কি যেন এক মন্ত্রবলে পুরো আমাকে বলহীন করে চলেছে এই মেয়ে।’
প্রযুক্ত ভীষণ ভাবুক গলায় বললো, ‘তুই ওকে ডিভোর্স দিবি কীভাবে?’
প্রচ্ছদ উন্মাদের মতো মাথা দু’পাশে নাড়িয়ে বলে,
‘দেবো না। কক্ষনো দেবো না।’
‘একটা বুদ্ধি দেই?’
প্রচ্ছদ কৌতুহল চোখে তাকালো। প্রযুক্ত অনেক ভেবে সময় নিয়ে চোখের তারায় আশার আলো জ্বালিয়ে বলল,
‘তোরা ইন্টিমেট হ।’
কয়েক মিনিট প্রচ্ছদ বোধ-বুদ্ধিহীন ফাঁকা মস্তিষ্কে চেয়ে রইলো। এরপর ভীষণ… ভীষণ অবাক গলায় বললো,
‘কি বলতাছোস? ইন্টিমেট হবো মানে? ও আমার থেকে ডিভোর্স চাইছে, প্রযুক্ত। ডিভোর্স!’
শেষের কথাটা হালকা জোরেই বললো প্রচ্ছদ। প্রযুক্ত গা ছাড়া ভাবে বললো,
‘জোর করবি?’
আশ্চর্যের উচ্চ সমানায় পৌঁছে প্রচ্ছদ শব্দ করে বলে উঠলো, ‘হুয়াট?’
প্রযুক্ত কথা বলে না। বাম গালে জিহবা ঠেকিয়ে ভাবুক চোখে বসে থাকে। প্রচ্ছদ দাঁত কিড়মিড় করে উঠলো,
‘তোর কি আমাকে কাপুরুষ মনে হয়? এরকম একটা লেইম চিন্তাভাবনা তোর মাথায় এলো কীভাবে? ছিহ! শেইম অন ইউ! যা এখান থেকে।’
‘এতো রিয়েক্ট করতাছোস কেন? হাসবেন্ড-ওয়াইফ তোরা!’
‘তুই শ্রেয়সীর সাথে জোর করে ইন্টিমেট হয়েছিস এখনো?’
প্রচ্ছদের দৃঢ় গলার বলা আকস্মিক প্রশ্নে আর কোনো কথা বললো না প্রযুক্ত। পেছনে হাত ঠেকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে দুই বন্ধু আকাশের দিকে চেয়ে রইল। দুষ্টুর মতো মেয়েকে এসব দিয়ে আদেও কখনো আটকে রাখা যায়? যাবে কি?
চলবে