ওয়েলকাম_টু_মাই_ডার্কসাইড পর্ব-১৮+১৯

0
4

#ওয়েলকাম_টু_মাই_ডার্কসাইড
#পর্ব_১৮
#সারিকা_হোসাইন

মাউন্ট সিনাই হসপিটাল থেকে যুবরাজকে চির জীবনের নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে শুধু তাই নয় নিউইয়র্ক সিটির কোনো হসপিটাল এই যুবরাজ আর ডাক্তারি পেশায় নিয়োজিত হতে পারবে না।হসপিটালের ডিন যুবরাজের সকল মেডিকেল স্টাডির ডকুমেন্টস মুখ বরাবর ছুড়ে মারলেন।

“ইউ আর এ মার্ডারার,উই ডোন্ট ওয়ান্ট ইউ এনিমোর।গেট আউট অফ হেয়ার বিফোর আই স্নাপ ইউর নেক'”

ডিনের মুখের এমন কঠিন শব্দ গুলো যুবরাজের কর্ণকুহরে বার বার বাজতে লাগলো।যেই ডিন যুবরাজের সাফল্যে কতো শত বাহবা দিয়েছে সেই মুখেই আজ সে তাকে একজন খুনি উপাধি দিচ্ছেন!

নিজের সাথে ঘটে যাওয়া সবকিছুই যুবরাজের কাছে অবিশ্বাস্য লাগছে।হসপিটাল ডিনের রাগী আগ্রাসী চেহারা দেখে যুবরাজের দৃষ্টি স্থির হয়ে রইলো।ডিনের মুখের এমন অসহনীয় বাণী সহ্য করতে না পেরে নিজের দুই কান চেপে ধরে হাটু মুড়ে ফ্লোরে বসে পড়লো যুবরাজ।
ডিন আরো কিছু বিশ্ৰী অশ্রাব্য গালাগাল করে পুলিশকে নির্দেশ দিলো
“প্লিজ এরেস্ট হিম।

নিউইয়র্ক পুলিশ যখন যুবরাজের হাতে হ্যান্ডকাফ লাগায় যুবরাজের তখন মনে হতে থাকে সে কোনো ভয়ানক দুঃস্বপ্ন দেখছে।একটু পরেই ঘুম ভেঙে গেলে হয়তো স্বপ্নটাও ভেঙে যাবে।সেই ভরসায় যুবরাজ নির্বিকার হয়ে মেঝেতেই বসে থাকে।

যুবরাজের শার্টের কলার ধরে টেনে হিচড়ে দাঁড় করিয়ে চারজন পুলিশ হসপিটাল এর বাইরে টানতে টানতে নিয়ে যায়।
পেছন থেকে অসহায় ম্যাগান যুবরাজকে বাঁচানোর প্রানপন চেষ্টা করে যাচ্ছে।কিন্তু তাকে যেনো কেউ শুনতেই পাচ্ছে না।

“প্লিজ ইউভি কে ছেড়ে দিন।তার কোনো দোষ নেই।যেখানে আমার বাবার মৃত্যুতে আমি কোনো আইনি ঝামেলায় যাচ্ছি না সেখানে আপনারা কেনো নাক গলাচ্ছেন?

ম্যাগান এর ভাঙা গলার ফ্যাসফ্যাসে আওয়াজ কারো কানেই প্রবেশ করলো না।শেষমেশ উপায় না পেয়ে অষ্টাদশী অসহায় বালিকা যুবরাজের কোমর পেঁচিয়ে জাপ্টে ধরে আটকাবার চেষ্টা করে।মেয়েটিকে পাগল আখ্যা দিয়ে সজোড়ে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় একজন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসার।যুবরাজ কিছু ঠাহর করার আগেই পুলিশ ক্যাবের দরজা খুলে ভেতরে ঠেসে বসিয়ে গাড়ির দরজা লাগিয়ে পুলিশ স্টেশনের দিকে চলতে থাকে।

এদিকে শীর্ন শরীরটা ধাক্কার টাল সামলাতে না পেরে পাশে থাকা খুঁটির সাথে বাড়ি খেয়ে পড়ে যায়।সহসাই ধবধবে সাদা কপাল কেটে ফিনকি দিয়ে বেরিয়ে আসে লাল রঙের উষ্ণ তরল।

**********
আশেপাশে কি হচ্ছে না হচ্ছে সেটা নিয়ে ডক্টর রেহানের কোনো মাথাব্যথা নেই।তার মাথায় একটা চিন্তাই বার বার ঘুরছে।

“কেউ ইচ্ছে করেই যুবরাজকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।যে করেই হোক আমাকে সত্য উদঘাটন করতে হবে।ঘৃণ্য চক্রান্ত থেকে যুবরাজকে আমার বের করতেই হবে”!

নিজের হাতের রক্তে রঞ্জিত গ্লাভস খুলে কোনো মতে ঝুড়িতে ফেলে দৌড়ে ওটি রুমের দিকে চলে গেলো রেহান।চারপাশে একবার চোখ মেলে ভালো করে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করা চাই।

“এখানে অবশ্যই বড় কোনো ব্ল্যান্ডার আছে এবং এই মুহূর্তে সেটা আমাকে খুঁজে বের করতেই হবে।”

নিজের এপ্রোন টেনে খুলে দ্রুত হাতে সেটাকে হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে শার্টের হাতা ফোল্ড করে নিলো রেহান।এরপর নিজের দুই হাতের সাহায্যে উপুড় হয়ে সারা ওটি রুমের ছড়িয়ে থাকা জিনিস গুলো একত্র করলো।
একটা তুলার টুকরো থেকে শুরু করে সিরিঞ্জ পর্যন্ত বাদ রাখলো না রেহান।

কিছুক্ষন তল্লাশির পর সেরকম সন্দেহ জনক কিছু না পেয়ে আশেপাশে আরো খুঁজতে লাগলো সচেতন নজরে।
অদূরে পরিত্যক্ত একটি ডাস্ট বিন নজর কাড়ে ডক্টর রেহানের।

“এটা এখানে কিভাবে এলো?গতকাল যখন ওটিতে এসেছিলাম তখন তো এটা একদম কর্নারে সিটিয়ে রাখা হয়েছিলো!

যুবরাজের চিন্তায় এবং অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রেক্ষিতে চতুর রেহান সেই ঝুড়ির দিকে এগিয়ে গেলো।
একহাতে ঝুড়িটিকে ধরে অন্যহাতে সার্জারির বড় লাইট অন করে অপারেশন টেবিলের উপর সেই ঝুড়ি কাত করে সব কিছু ঢেলে দিলো।

ঝুড়ির ভেতর থেকে বেরিয়ে আসা জিনিসের দিকে তাকিয়ে রেহানের চক্ষু কোটর ছেড়ে বেরিয়ে আসার উপক্রম।
দ্রুত হাতে রেহান সবগুলো সিরিঞ্জ আর কাচের ছোট মেডিসিন কীট চোখের সামনে তুলে নাম পড়তে লাগলো
একে একে সাতটা প্রাণঘাতী মেডিসিন দেখে রেহানের প্রাণ কন্ঠনালী পর্যন্ত চলে এলো।শ্বাস নিতেও যেনো তার কষ্ট হচ্ছে।মুহূর্তে মুহূর্তে পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে রক্ত ছলকে উঠে মস্তিষ্ককে উত্তপ্ত করছে।
ঝটপট এভিডেন্স গুলো গুছিয়ে নিজের ফোন বের করে দ্রুত ছবি তুলে জিনিস গুলো নিয়ে নিজের এপার্টমেন্টের দিকে ছুটে চললো রেহান।

**********
স্পেশাল বেল নিয়ে এক ঘন্টার জন্য যুবরাজের সঙ্গে দেখা করতে এসেছে রেহান।
দুদিনেই ছেলেটা অনেকটা শুকিয়ে গিয়েছে।ফর্সা মুখটি মলিনতায় কালো বর্ণ ধারণ করেছে।ক্লীন শেভের চকচকে গাল দুটো খোঁচা খোঁচা দাঁড়িতে ভরে গিয়েছে।চোখের নিচেও জমেছে অনেকটা কালি।তার গায়ের কমলা রঙা অপরাধীর পোশাক দেখে মনে হচ্ছে হাজার বছরের অত্যাচারিত কয়েদী সে।হাতে হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে একজন কনস্টেবল কাঁচের ক্রিমিনাল ভিজিটিং রুমে যুবরাজকে নিয়ে এসে চেয়ারে বসিয়ে টেবিলে থাকা হ্যান্ডকাফ স্টাক এর সাথে হ্যান্ডকাফ এর চেইন আটকে দিয়ে বেরিয়ে গেলো।

সামনা সামনি যুবরাজ আর রেহান তবুও শরীর স্পর্শ করে বুকে টেনে পিঠ হাতড়ে শান্তনা দেবার কোনো উপায় নেই।সামনে থাকা মজবুত কাঁচের দেয়ালটি যেনো দুজনের মধ্যে যোজন যোজনের দূরত্ব তৈরি করেছে।

“কেনো এসেছিস এখানে?নিজের ভালো চাইলে চলে যা।আমার সাথে তোকে মাখামাখি অবস্থায় দেখলে ও তোকেও আস্ত ছাড়বে না”

আহত নরম স্বরে কথা গুলো বলে নিজের চোখের ফুঁসে উঠা জলকে নিয়ন্ত্রণ এর ব্যার্থ চেষ্টা করতে লাগলো যুবরাজ।
পকেট থেকে নিজের ফোন বের করে গ্যালারী অপশনে গিয়ে ফোনটা যুবরাজের সামনে মেলে ধরলো রেহান।
প্রথমে উদাসীন ভঙ্গিতে নজর দিলেও অপরিচিত বিষাক্ত মেডিসিন দেখে থমকে গেলো যুবরাজ।
না চাইতেও নিজের বাদামি চোখের মণি থেকে টুপ টুপ করে অশ্রু ঝরতে লাগলো।

“তার মানে অপারেশন জটিলতার জন্য জ্যাকব গ্যাব্রিয়েল এর মৃত্যু হয়নি?

কথা খানা বলে লম্বা আঙ্গুলির সহায়তায় থুতনি সমেত নিজের মুখ চেপে ধরলো যুবরাজ।

“না তাকে কার্ডিয়াক এরেস্ট এর ইনজেকশন পুশ করা হয়েছে।শুধু তাই নয় তার বয়সের তুলনায় বেশি পরিমাণে এনেস্থেসিয়া ইনজেক্ট করা হয়েছে তার শরীরে।নরমাল এনস্থিসিয়ার পরিবর্তে তাকে সোডিয়াম থিউপেন্টাল বারবিটুরেট এনেস্থেসিয়া দেয়া হয়েছে।এজন্যই সে এতো দ্রুত অবচেতন হয়েছিলো।সবচেয়ে মারাত্মক খেলা ও কি খেলেছে জানিস?

যুবরাজের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে বিজ্ঞের ন্যায় তাকিয়ে রইলো রেহান।

অবুঝ শিশুর ন্যায় যুবরাজ রেহানের চোখে চোখ রেখে আহত কন্ঠে জানতে চাইলো
“কি করেছে?

“আমাদের সামনেই ও জ্যাকব গ্যাব্রিয়েলকে পটাশিয়াম ক্লোরাইড পুশ করেছে।যার জন্য ধীরে ধীরে কার্ডিয়াক এরেস্ট হয়ে জ্যাকব গ্যাব্রিয়েল মৃত্যু বরন করেছেন কিন্তু আমরা কেউ টের পাইনি।

রেহানের মুখে শেরহামের এমন হৃদয়হীনের মতো খুনর বর্ণনা শুনে নিজের চুল খামচে ধরে টেবিলে কপাল ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে কষ্টে বেরিয়ে আসা চিৎকার রোধ করে যুবরাজ।কোনো কিছুই যেনো তার মাথায় ঢুকছে না।শেরহাম কেনো তার পিছনে এভাবে লেগেছে এটাও তার অজানা।

“তুই আমাকে শেরহামের সকল আপডেট কালকের মধ্যে জানাবি।আগামী দুই দিনের মধ্যে আমাকে কোর্টে তোলা হবে।এতবড় গেইম যেহেতু শেরহাম আমার সাথে খেলেছে তাহলে এতো দ্রুত ও আমাকে ছাড়বে না।অবশ্যই বড় কিছু করার অপেক্ষার প্রহর সে গুনছে।তাই যা করার তোকে আজ রাতের মধ্যেই করতে হবে।

যুবরাজের কথা শেষ হতে না হতেই কনস্টেবল নম্র ভাবে জানিয়ে দিলো
“ইউর টাইমস আপ”
যাবার আগে যুবরাজের গভীর চোখের দিকে একবার চাইলো রেহান।চোখে চোখে নিজেদের প্রয়োজনীয় কথা সারতেই জেল থেকে বেরিয়ে নিজের গাড়িতে উঠে বসলো রেহান।

_________
“তোকে আমার খুব ভালো লাগে যুবরাজ শাহীর।আর ভালো লাগে বলেই তোকে আমি এভাবে কষ্ট দেই।তোর কান্না আমাকে যে, কি পরিমাণ তৃপ্তি দেয় এটা ভাষায় প্রকাশ করার জো নেই!
উফ কি সুন্দর চোখ তোর!তোর চোখের কাতরতা আর জল দুটোই আমার বেশ পছন্দের।

মৃদু হলুদ আলোর নির্জন কক্ষে ইজি চেয়ারে বসে হুইস্কির গ্লাসে বরফ ঢেলে তা নাড়তে নাড়তে বির বির করে কথা গুলো বলে চলেছে শেরহাম।
বিশাল বড় এপার্টমেন্টের বৃহৎ কক্ষ জুড়ে যুবরাজের বড় বড় ছবি আর লেখালেখি তে পরিপূর্ণ।

“তুই না চাইতেও অনেক বড় ভুল করে ফেলেছিস যুবরাজ।তোর প্রথম অপরাধ তুই আমার মনে ধরেছিস।মনে ধরার একটা কারণ আছে অবশ্য।তোর জন্য আমি আমার পাপার কাছে অবহেলিত হয়েছি।আমার পাপার ভালবাসায় ভাগ বসানোর দুঃসাহস দেখিয়েছিস তুই।তোর জীবনের সব ভালো আমি আস্তে আস্তে কেড়ে নেবো দেখিস।

দাঁতে দাঁত পিষে কথা গুলো বলেই হো হো করে হেসে উঠলো শেরহাম।মুহূর্তেই সেই হাসি বিলীন হয়ে তা ক্রোধে রূপ নিলো।
সেই ক্রোধ ঠেকাতে না পেরে হুইস্কির বোতল দিয়ে নিজের মাথায় নিজেই বাড়ি মারলো শেরহাম।শক্ত বোতলের সজোড় আঘাতে সাথে সাথেই মাথা ফেটে উষ্ণ রক্ত ধারা গড়িয়ে পড়লো শেরহামের চিবুক আর কপাল বেয়ে।

কিঞ্চিৎ আলোতে বেলকনির বিশাল থাই পার্টিশনে নিজের রক্তাক্ত ভয়ংকর অবয়ব দেখে কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো শেরহাম।

“শেরহাম ফাইয়াজ ইজ দ্যা মোস্ট হ্যান্ডসাম ম্যান ইন দ্যা ওয়ালর্ড”

কথাটা সগর্বে বলে কিছুক্ষন হাসার পর আপনা আপনি হাসি বন্ধ করে কঠিন রাগে ফুঁসতে লাগলো সে।নিজের মুখায়বে দুই হাতের আঙ্গুলি সঞ্চালন করতে করতে ভাবতে লাগলো―

“আমিই যদি পৃথিবীর সবচেয়ে সুদর্শন পুরুষ হই তাহলে ম্যাগান গ্যাব্রিয়েলা যুবরাজের হাত ধরলো কেনো?তাহলে কি যুবরাজ বেশি সুদর্শন?

এবার যেনো শেরহামের রাগ গগনচুম্বী হলো।
নিজেকে নিজেই শক্ত হাতে আঘাত করতে করতে রক্তাক্ত করে ফেললো নিমিষেই।এরপর সেখান থেকে উঠে এসে একটা রিভলবার তুলে নিয়ে ওয়ালে টানানো যুবরাজের বিশালাকার ফটো তে একের পর এক গুলি চালাতে লাগলো।

এভাবে কিছুক্ষণ কেটে যাবার পর রক্তাক্ত শরীরেই ধপ করে বিছানায় শুয়ে ঘুমের রাজ্যে তলিয়ে গেলো শেরহাম।

বেলকনির এক কর্নারে দাঁড়িয়ে সবটাই অবলোকন করলো রেহান।এরপর ধীরে সুস্থে স্টিলের পাইপ বেয়ে নীচে নেমে এলো।

_______
আজকে যুবরাজকে কোর্টে তোলা হয়েছে।প্রত্যেকে অধীর আগ্রহে হিয়ারিং এর জন্য অপেক্ষা করছে।
শহরের নামকরা বড় বড় উকিল নিয়ে কোর্টে এসে হাজির হয়েছে ম্যাগান।এই টুকু একটা বাচ্চা মেয়ে যুবরাজের জন্য এতো কিছু করে যাচ্ছে এটা ভাবতেই যুবরাজের বুক খাঁ খাঁ করে উঠছে থেকে থেকে।চঞ্চল উৎফুল্ল হাসিখুশি ছোট মেয়েটাকে আজকে অনেকটাই ম্যাচিউর আর বড় বড় ঠেকছে যুবরাজের কাছে।

ঘড়ির ঘন্টা পড়তেই পক্ষ বিপক্ষের উকিলদের জেরা শুরু হয়ে যায়।এমন একটা কেস সলভড করতে এসে জাজ নিজেও বেকায়দায় পড়েছেন।হসপিটাল থেকে বলা হচ্ছে খুনের কেস কিন্তু যাদের পেশেন্ট তারা চুপচাপ।
এমন বিরল কেস কখনোই যেনো দেখেন নি বেচারা জাজ।

এদিকে সমানে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে সময়ের প্রহর গুনছে যুবরাজ।সকল প্রমান নিয়ে রেহানের কোর্টে হাজির হবার কথা।

“তবে কি কোনো বিপদ হলো?

অজানা আতঙ্কে গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে এলো যুবরাজের।পানি পিপাসায় বুকটা খাঁ খাঁ করে উঠলো।
“তবে কি রেহান আমার জন্য শেরহামের ফাঁদে পড়ে গেলো?

#চলবে

#ওয়েলকাম_টু_মাই_ডার্কসাইড
#পর্ব_১৯
#সারিকা_হোসাইন

______
নিউইয়র্ক শহরের তাপমাত্রা কমতে কমতে মাইনাস টুয়েলভ ডিগ্রি সেলসিয়াস এ এসে নেমেছে।সারাদিন ধরেই তীব্র শৈত প্রবাহ বিরাজমান ছিলো।সন্ধ্যার পর যেকোনো মুহূর্তে তুষার ঝড় উঠতে পারে যার জন্য সন্ধ্যার আগে থেকেই শহরের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে মানুষজন কে নিজ নিজ আবাস স্থলে অবস্থান করতে জরুরি নির্দেশ দেয়া হয়েছে।ইতোমধ্যে ধুম্র জালের মতো ঘন কুয়াশা চারপাশ বেষ্টন করে ফেলেছে গভীর ভাবে।সন্ধ্যা নামার আগেই শীতল নিউইয়র্ক শহর আবছা অন্ধকারে তলীয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।রাস্তার সোডিয়াম লাইটের কড়া হলুদ আলো পর্যন্ত সেই ধোয়া কাটিয়ে উঠতে পারছে না।চারপাশে কেমন যেনো একটা গা ছমছমে ভাব পরিলক্ষিত।

সময় যখন আটটা বেজে দশ মিনিট তখনই শো শো শব্দে ভারী বাতাস বইতে শুরু করলো।বরফ ঝড় থেকে নিজেদের বাঁচাতে প্রত্যেকেই কঠিন ভাবে নিজেদের ঘর বন্দি করে ফেলেছে।রাস্তার নেড়ি কুকুর ছাড়া আর কোনো পশু পাখি বা মানুষের কোনো শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না।অত্যাধিক শীতের প্রকোপে কুকুর গুলো করুন স্বরে চিৎকার করে চলেছে সারাক্ষন।পরিস্থিতি এমন রুপে এসে দাঁড়িয়েছে কেউ যদি সাহায্যের জন্য বাইরে চিৎকার চেঁচামেচি করে মরেও যায় তবুও সেটা কারো কর্ণকুহরে প্রবেশ পর্যন্ত করবে না।

প্রায় দুশো বছরের পরিত্যক্ত পুরনো একটি প্যালেসের বেজমেন্টে সামান্য আলো দেখা যাচ্ছে।যদিও রাত তেমন গভীর নয়।কিন্তু কুয়াশার গাঢ় চাদরে মনে হচ্ছে গভীর নিশুতি ভুতুড়ে রাত।
প্যালেসের বেজমেন্টের ছাদের একটা হুকের সাথে টানানো হয়েছে নাইলনের বিশালাকার দড়ি।সেই দড়ি দিয়ে দুই পায়ের টাখনু একসাথে করে কষে বেঁধে উপুড় করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে কোনো এক যুবক কে।সামান্য আলোতে সেই যুবকের মুখায়ব দেখা যাচ্ছে না।যুবকটির সারা শরীর থেকে চুইয়ে চুইয়ে কপাল গড়িয়ে মেঝেতে ঝরে পড়ছে লাল রঙের উষ্ণ তরল।আর সেই তরল হিমায়িত মেঝেতে পড়ার সাথে সাথেই কঠিন বরফে রূপান্তরিত হচ্ছে।
হঠাৎই বাইরে শুরু হলো কঠিন তুষার ঝড়।পরিত্যক্ত প্যালেসের ভাঙা জানালা দিয়ে হুড়মুড় করে বরফের স্তুপ প্রবেশ করতে লাগলো সেই সাথে রক্ত হিম করা উত্তরীয় হাওয়া।শীতের নিষ্ঠুরতায় ঝুলিয়ে রাখা ব্যাক্তিটি কিঞ্চিৎ নড়েচড়ে উঠলো।তার বিবস্ত্র উলঙ্গ শরীরটি এই তাপমাত্রা সহ্য করতে ব্যার্থ হচ্ছে।মনে হচ্ছে বুকের খাঁচার ভেতর উষ্ণ হৃদযন্ত্রটাও বুঝি জমে যাবার উপক্রম।যুবককটি গলা ফাটিয়ে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে চাইলো।
“কিন্তু হায় দূর্ভাগ্য, চিৎকার করা তো দূর ঠোঁট পর্যন্ত নাড়ানোর সক্ষমতা তার নেই।শক্ত স্কচটেপ দিয়ে তার মুখ খানা আটকে দেয়া হয়েছে।প্রচন্ড ঠান্ডায় তার সারা শরীরের আঘাত প্রাপ্ত স্থান গুলো ব্যাথায় চিরবিড়িয়ে উঠলো।মনে হচ্ছে সেগুলো আরো ফেটে চৌচির হয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হবে।এবার লোকটির ছটফটানি বেড়ে গেলো দ্বিগুন।তার কাছে মনে হচ্ছে এই নরকীয় যন্ত্রণার চাইতে মৃত্যু বহু গুন ভালো।

লোকটির নড়াচড়া দেখে চেয়ারে বসা অপেক্ষমান ব্যাক্তি মুখ টিপে হু হু করে সামান্য হাসলো।ফায়ার প্লেসে বেশি করে পাইন গাছের কাঠ ঠেলে দিয়ে নিজের গলার উলের মাফলার খানা ভালো মতো মুখে পেঁচিয়ে গলা খাকরি দিলো।

“জ্ঞান ফিরলো তবে তোর ডক্টর রেহান চৌধুরী?তোর জ্ঞান ফেরাতে বেশ খুশি হয়েছি আমি।এভাবে নিশ্চুপ ডেড ফিসের মতো তোকে দেখতে মোটেও ভালো ঠেকছিলো না আমার।যাই হোক কাজের কথায় আসি।তোর সাথে সময় কাটাতে মোটেও ভালো লাগছে না আমার।

চেয়ারে বসে থাকা ব্যাক্তির কন্ঠ শুনেই ঠাহর করে ফেললো রেহান মানুষটি কে হতে পারে?
উপুড় করে ঝুলিয়ে রাখার কারনে শেরহামের মুখায়ব দেখতে তার বেশ বেগ পেতে হলো।তবুও রেহান এই ঘৃণিত নোংরা মস্তিষ্কের অধিকারী ব্যাক্তিকে মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্তে একবার হলেও দেখে তবেই মরতে চায়।রেহান হাত নাড়িয়ে মাথা নাড়িয়ে কিছু বোঝানোর চেষ্টা করলো।
শেরহাম রেহানের উদ্বিগ্ন অবস্থা দেখে বিগলিত হাসলো।

“উপস সরি ডক্টর রেহান তোর মুখে টেপ মেরে দিয়েছি।কিন্তু সেটা খুলতে বেমালুম ভুলে গিয়েছি।মুখ বন্ধ থাকলে মনের আকুতি প্রকাশ করবি কি দিয়ে??

কথা খান বলে হো হো শব্দে হাসতে হাসতে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে রেহানের সামনে এসে দাঁড়ালো।এরপর সহসাই রেহানের ঝলমলে সুন্দর রক্তাক্ত চুলের ভাঁজে নিজের হাতের ভয়ানক থাবা বসিয়ে শক্ত করে টেনে ধরলো।

অসহনীয় ব্যাথায় রেহান উম উম শব্দ করতে লাগলো।
শেরহাম রেহানের দূর্দশা গ্রস্থ অবস্থা দেখে হেসে কুটি কুটি হলো।এরপর সজোড়ে এক টানে রেহানের মুখের টেপ খুলে ফেললো।শেরহামের অনমনীয় আচরণে রেহানের তুলতুলে নরম শুষ্ক লাল ঠোঁট খানা কেটে রক্তাক্ত হলো।
ব্যাথায় রেহান গগন বিদারী চিৎকার দিয়ে শক্ত হয়ে রইলো।
রেহানের যন্ত্রনা কাতর মুখশ্রী দেখে শেরহাম নিজের মাফলার খুলতে খুলতে বললো

“খুব শান্তি পাচ্ছি রে রেহান।তোর মৃত্যু যন্ত্রনা আমাকে স্বর্গীয় সুখ উপভোগ করার শান্তি দিচ্ছে।আমি তোকে এখন জাহান্নামের যন্ত্রনা দেবো।তুই যত চিৎকার করবি আমি ততো আনন্দ উপভোগ করবো।

কথা টা বলেই অদূরেই পড়ে থাকা ভাঙা একটা টেবিলের উপর থেকে একটা ট্রান্সপারেন্ট কাঁচের বোতল তুলে নিলো।সেটার দিকে তাকিয়ে অল্প মেপে হাসলো শেরহাম।এরপর শীষ বাজাতে বাজাতে রেহানের সামনে এসে দাড়ালো।

“এটা কি এনেছি তোর জন্য জানিস?
কথাটি বলে রেহানের চোখের সামনে শিশি খানা তুলে ধরলো।

শেরহামের হাতের শিশির দিকে রেহান সামান্য দৃষ্টি দিলো।দৃষ্টি দেবার সাথে সাথেই তার অক্ষিদ্বয় কোটর ছেড়ে বেরিয়ে আসার উপক্রম।শেরহামের হাতে হাইড্রোক্লোরিক এসিডের বোতল।
রেহান যেনো এবার বেঁচে থাকার সব আশা ছেড়ে দিলো।কিন্তু কোনো ভীরু কাপুরুষের মতো সে মরবে না।মরলে বীরের মতো মরবে।কিছুতেই এই নরকের কিটের সামনে মাথা নোয়াবে না সে ।

শীতের প্রভাবে রেহানের সারা শরীর জমে শক্ত হয়ে যাচ্ছে।হাত পা গুলো এমন ভাবে বেদনায় নীল হয়েছে যেনো বিষাক্ত কোনো সাপ শরীরের সমস্ত বিষ ঢেলে ছোবল কেটেছে।মুখের লালা পর্যন্ত শুকিয়ে আসছে তার।ঠোঁট দুটো চটচট করে ফেটে সমানে রক্ত ঝরে আবার জমে যাচ্চে।মাথার চুল থেকে শুরু করে চোখের পাপড়ি পর্যন্ত ইতোমধ্যেই বরফে আচ্ছাদিত হয়েছে।
নিজের মৃত্যুকে চোখের সামনে দেখে কিঞ্চিৎ তাচ্ছিল্য কর হাসি হাসলো রেহান।নিজের জড়িয়ে যাওয়া জিভ কে বহু কষ্টে আয়ত্তে এনে গলার রোধ হয়ে যাওয়া কণ্ঠকে ঠেলে বাইরে নিয়ে এসে ফ্যাসফ্যাসে কন্ঠে বললো

“তোর মতো শয়তানের হাতে কিছুতেই আমার মৃত্যু হতে পারে না।তোর বিনাশ দেখে তবেই আমি মরবো।সেদিন তুই বাঁচার আকুতি করবি কিন্তু আমি হাসবো।”

কথা টা শেষ করার সাথে সাথেই শেরহাম নিজের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে রেহানের মুখে এক ঘুষি বসিয়ে দিলো।ঘুষির আঘাতে রেহানের ঠোঁট আর নাক ফেটে গলগল করে রক্ত বেরুতে লাগলো।তবুও রেহান সামান্য উহ আওয়াজ টুকু করলো না।
এটা দেখে যেনো শেরহামের ক্রোধ হাজার গুণ বেড়ে গেলো।
ক্রোধে নিজের জ্ঞান খুইয়ে হাতে থাকা ছোট কাঁচের শিশিটির ছিপি দ্রুত হাতে খুলতে লাগলো শেরহাম।

“তোর চেহারা টা আমার মোটেও পছন্দ হচ্ছে না রে ডক্টর।তাই আমি ঠিক করেছি তোর এই বেখাপ্পা চেহারা আমি পুড়িয়ে দেবো।

কথাটা বলেই শিশির এসিড গুলো ছুড়ে মারলো রেহানের মুখে।

এবার যেনো সকল ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেলো রেহানের।তার সারা মুখমন্ডল জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছে।চিনচিনে অসহনীয় ব্যাথায় সারা শরীর অবশ করে ফেলছে।পিছ মোড়া করে বাধা হাত দুটো ছাড়ানোর জন্য বেশ ছটফট করছে।কিন্তু নিরুপায় রেহান কোনো ভাবেই নিজেকে ছাড়াতে পারছে না।

রেহানের ভয়ংকর চিৎকারে মাটিতে বসে ঝাঁপিয়ে ঝাঁপিয়ে মাটি চাপড়ে হেসে চলেছে শেরহাম।

“আহ কি আনন্দ হচ্ছে রে রেহান খুব আনন্দ।এতো আনন্দ যুবরাজকে দেখেও পাইনি।যেই আনন্দ যুবরাজকে দিয়ে পেতে চেয়েছিলাম সেটা তোকে দেখে পেতে হচ্ছে।কেনো অযথা মরতে এলি আমার কাছে বলতো?আমার বিরুদ্ধে প্রমাণ জোগাড় করা কি এতোই সোজা?

কথা গুলো বলে রেহানের ফোন হাতে নিয়ে একে একে সকল এভিডেন্স ডিলিট করতে লাগলো শেরহাম।গ্যালারি ঘাটতে ঘাটতে হঠাৎই একটা ছবিতে গিয়ে দৃষ্টি স্থির হয়ে শেরহামের।একুয়া ব্লু রঙের ডেনিমের শার্ট পরিহিত আঠারো কি উনিশ বছর বয়সের এক মেয়ে আহ্লাদী ঢংয়ে ছবিটি তুলেছে।মেয়েটির বড় বড় পাপড়ি যুক্ত দু চোখে বড্ড নেশা হলো শেরহামের।মোলায়েম গোলাপি ঠোঁট দুটোর দিকে তাকিয়ে মনে নিষিদ্ধ বাসনার জন্ম দিলো।মুহূর্তেই মেয়েটির নগ্ন শরীরের কথা কল্পনা করে অস্থির হয়ে উঠলো শেরহাম ।সেই অস্থিরতায় রেহানের কথা দিব্যি ভুলে গেলো।
নিজের উত্তেজনা আয়ত্তে আনতে রেহান কে ওই ভাবে ফেলেই দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে গেলো সে।উদ্দেশ্য একটাই নারী সঙ্গী চাই।

*********
জেলের ভেতর বসে বসে নানান ভয়ঙ্কর ভাবনা ভেবে চলেছে যুবরাজ।বোকা রেহানটার জন্য তার মন বার বার খচখচ করে উঠছে শুধু।যুবরাজ শতভাগ নিশ্চিত রেহান শেরহামের খপ্পরে পড়েছে।কিন্তু যুবরাজ বেঁচে থাকতে কোনো ভাবেই রেহানের ক্ষতি হতে দেবে না।রেহানকে বাঁচাতে মনে মনে এক দুধর্ষ ভাবনা ভেবে ফেললো যুবরাজ।

“যে করেই হোক আমাকে পালাতে হবে এখান থেকে।

যেই ভাবনা সেই কাজ। নিজেকে কারামুক্ত করার জন্য পাশেই ঘুমিয়ে থাকা কয়েদিকে সজোড়ে এক লাথি বসিয়ে দিলো যুবরাজ।
বহু কষ্টে কেবলই ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমিয়েছে শ্বেতাঙ্গ খুনি আসামি টি।
চোখ মেলে তাকিয়ে মুখে ক্রোর হাসি নিয়ে যুবরাজের দিকে তেড়ে এলো।অবস্থা স্বপক্ষে বুঝতে পারলো চৌকস যুবরাজ।নিজের অমীমাংসিত ঘোর লাগানো হিপ্নোটিক চাহনি তার দিকে নিক্ষেপ করলো
“লেটস এস্ক্যাপ ফ্রম জেল”

বাধ্য দাসের ন্যায় যুবরাজের আজ্ঞা পালনে ব্যাস্ত হলো শ্বেতাঙ্গ।

********
বাইরে বিশাল তালা ঝুলিয়ে সকল পুলিশ জেল থেকে নিজেদের বাড়ি চলে গিয়েছে বহু আগেই।আজকের মতো এমন ভয়ঙ্কর বৈরী আবহাওয়া নিউইয়র্ক এ প্রথম।হিমাঙ্কের নীচে এমন তাপমাত্রা আর তুষার ঝড় পূর্বে কখনো দেখা যায়নি।এমন হিংস্র আবহাওয়া তে কেউ নিজের কক্ষ থেকে বের হবে না বা জেল থেকে আসামি পালাবে না এই ব্যাপারে পুলিশ সদস্য গ্যারান্টি সহকারে নিশ্চিত।কারন বাইরে বের হলেই নির্ঘাত মৃত্যু।সেই নিশ্চয়তা তে তারা যার যার পরিবারের সাথে সময় কাটাতে ব্যাস্ত।
এই বৈরী ভয়ংকর আবহাওয়াই যেনো যুবরাজের মুক্তির পথ সুগম করলো।

শ্বেতাঙ্গ আসামির সহায়তায় দুজনে মিলে সতর্কতার সহিত জেলের তালা ভেঙে বাইরে বেরিয়ে এলো।প্রতিটা কর্নারে কর্নারে সিসি ক্যামেরা ঘুরছে।খুব বুদ্ধিদীপ্ত তার সহিত ক্যামেরা ফাঁকি দিয়ে জেল ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে এলো দুজনে।এবার বিশাল উঁচু ওয়াল টপকানোর পালা।পুরোটা দেয়াল চকচকে স্মুদ।কোনো ভাবেই সেটা টপকানোর অবস্থা নেই।চারপাশে পাগলের মতো খুঁজতে খুঁজতে স্টিলের লম্বা একটা পাইপ পেয়ে দুজনের মুখেই হাসি ফুটে উঠলো।সেই পাইপ দেয়ালে ঠেস দিয়ে বেয়ে বেয়ে উঠার চেষ্টা করলো।
বাহিরে অলরেডি সাদা বরফের স্তূপে ভরে গিয়েছে।এই অল্প সময়ে দুই তিন হাত পর্যন্ত উঁচু হয়ে বরফ জমে গিয়েছে।কারো গায়েই ভারী শীত বস্ত্র নেই।ঠক ঠক করে কাঁপতে কাঁপতে নিজেদের চেষ্টা চালাতে লাগলো দুজনে।ঘন্টা খানেক কঠিন চেষ্টার ফলে দুজনেই সেই দেয়াল টপকে নিচে নেমে এলো।এবার নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছনোর পালা।

যাবার আগে সেই শ্বেতাঙ্গ যুবরাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে কঠিন হাগ করে বলে উঠলো

“ইউ উইল হ্যাভ মি ফর এনি নিড,অল অফ নিউ ইয়র্ক নোস হু আই এম”

#চলবে