#ওহে_প্রিয়
#জান্নাতুল_নাঈমা
#পর্ব_২৭ (১ম অংশ)
প্রায় দু’বছর হয়ে এলো। হ্যাভেনের করা সব অন্যায়, সব পাগলামি মুখ বুঝে সহ্য করে গেছে আহি। মানুষ টা’কে এক আকাশ সমান ঘৃণা করতে করতে অসংখ্য তিক্ততার ভীরেও একটুখানি ভালোবেসে ফেলেছিলো সে। নারী মন যে বড়ই কোমলত্বে ঘেরা।
মানবে না মানবে না করেও জোর করা বিয়ের এই সম্পর্ক টা’কে মন থেকে গ্রহণ করে নিয়েছিলো। দু’বার পালিয়ে গিয়েও বৈবাহিক বন্ধনের টানে ফিরে এসেছিলো, সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো মানুষ টা’র ভগ্ন হৃদয় ভালোবাসার বেড়াজালে আঁটকে দিয়ে নতুনভাবে গড়ে দেবে। কিন্তু বরাবরই তাঁর সব চেষ্টা বৃথাতে রূপান্তরিত হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে এই মানুষ টা তাঁর জীবনে এসেছে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে মানুষ টার সন্তান তাঁর গর্ভে এসে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবেই চলে গেলো। তাঁর এমন বিপর্যস্ত অবস্থাতেও আরো একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে চলেছে। তাঁর অনাকাঙ্ক্ষিত মানুষটিই ঘটাতে চাইছে সেই ঘটনাটি। ডিভোর্স, ডিভোর্স করে শুরুতে সে মরিয়া হয়ে ওঠলেও হ্যাভেনের মুখে ডিভোর্সের কথা শুনে বুকের ভিতরটা তাঁর দুমড়েমুচড়ে যাচ্ছে। শরীরের প্রতিটা শিরা উপশিরায় যেনো জ্বলন ধরে গেছে মূহুর্তেই।
অশ্রুসিক্ত নয়নে নির্লিপ্ত দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো হ্যাভেনের দিকে আহি। হ্যাভেনের বিক্ষিপ্ত চেহেরাটা দেখতে পেয়ে তাঁর বুক টা হু’হু করে ওঠলো৷ মানুষ টা যে বড্ড পাষাণ তা সে এ ক্ষণেই বেশ টের পেয়ে গেছে। মরীচিকার পিছনেই এতোদিন ছুটে চলেছিলো সে। মরীচিকার সঙ্গেই প্রায় দু’টো বছর তাঁর বাস। মরীচিকাই যে তাঁর ভবিতব্য। কান্নারা দলা পাকিয়ে গলায় আঁটকে গেলো আহির। শ্বাসরুদ্ধ হয়ে সে শুধু এটুকুই বললো,
-‘ আপনি বাড়ি চলে যান রেষ্ট নিন মাথা ঠিক নেই আপনার উল্টাপাল্টা কথা বলবেন না দয়া করে। আমি মানসিকভাবে একদম ঠিক নেই চলে যান ‘।
হ্যাভেনের স্বভাব সম্পর্কে মোটামুটি সবারই ধারণা রয়েছে। আহিরও কম নেই। কিন্তু এতোগুলো দিনে আহির প্রতি হ্যাভেনের যে পরিমাণ পজেসিভনেস সকলে এবং আহি দেখেছে। তাঁর ভিত্তিতে সকলে এটুকু ধারণা করে নিলো সত্যি হ্যাভেন মন থেকে সুস্থ মস্তিষ্কে এসব বলেনি। তাই আহির বলা বাক্যগুলোর ইতি ঘটতেই রেশমি বললো,
-‘ পাগলামো করিস না তো হ্যাভেন। বউয়ের প্রতি আরো বেশী যত্নশীল হওয়া উচিত ছিলো তোর। মেয়েটা কেয়ারলেস বয়স কম তুই তো কচি খোকা না। এখন সব দোষ বউয়ের তাইনা এইসবে সমান দোষী তুইও। বাইরে মানুষের প্রতি তো খুব সচেতন, বাইরের মানুষের দায়িত্ব পালনেও ত্রুটি নেই অথচ ঘরের লোকের দিকেই কোন নজর নেই। বাইরে যেমন চোখ, কান খোলা রেখে রাজনীতি করে বেড়াস ঘরেও সেম করা উচিত ছিলো। এখন ফাইজলামি বাদ দিয়ে যা এখান থেকে। তোর চোখ, মুখ ঠিক লাগছে না বাড়ি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে কিছু খেয়ে রেষ্ট কর এদিকটা আমরা দেখছি ‘।
আহিও স্বস্তি নিয়ে নিশ্চুপ বসে রইলো। কিন্তু রেশমির কথার পৃষ্ঠে হ্যাভেন যা বললো এতে সকলের শরীর শিউরে ওঠলো,
-‘ মাথা বিগরাবিনা কেউ। তুই শুনতে পাসনি আমি কি বলেছি? মিসক্যারেজটা ইচ্ছেকৃত ছিলো। আমার সন্তান কে হত্যাকরা হয়েছে এরপরও ওকে আমি ছেড়ে দেবো? আমার চোখের সামনে আজকের পর ওকে দেখলে খুন করে ফেলবো একদম। বার বার আমার থেকে পালিয়ে গিয়েও ফিরে কেনো এসেছে এইভাবে নিঃশ্বেষ করার জন্য তাইতো ব্যাস করা হয়ে গেছে এবার সে মুক্তি নিক ‘ বলেই কবিন থেকে বেশ ক্ষিপ্ত হয়েই বেরিয়ে গেলো হ্যাভেন।
স্তব্ধ হয়ে তাঁর যাওয়ার পানে নির্নিমেষ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো তিনজনই। খানিক সময় বাদে দু’চোখ ভরে জল গড়িয়ে পড়লো আহির। হত্যাকারী! সে হ্যাভেনের সন্তানের হত্যাকারী? এই সন্তান কি তাঁর নয় শুধুই হ্যাভেনের ? যন্ত্রণা কি তাঁর থেকে হ্যাভেনের বেশী হচ্ছে? আর এই সম্পর্ক টা কি এই বাচ্চা কে কেন্দ্র করে ছিলো? যে এই বাচ্চার জন্য তাঁর বিচ্ছেদ চাই? যদি বাচ্চা টা না আসতো তাহলে তো বিচ্ছেদ চাইতো না হ্যাভেন৷ তাঁর প্রতি সম্মান না হয় নেই একটুখানি ভালোবাসাও কি জন্মায়নি? একটা সম্পর্কের ভিত এতোটাই নড়বড়ে? কি ভাবে হ্যাভেন নিজেকে? ইচ্ছে করলো জোর করে বিয়ে করলাম আবার ইচ্ছে করলো জোর করে ডিভোর্সও দিয়ে দিলাম? এই সম্পর্কের শুরু টা সে করলেও শেষটা তাঁকে করার সুযোগ কখনোই দেবে না আহি। সে সস্তা জীবন অনেক পার করেছে আর না এবার জবাব দেওয়ার সময় এসে গেছে। একটা মানুষের যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায় তখন তাঁর আর পিছিয়ে যাওয়ার উপায় থাকে না। আজ তাঁর দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। সব যন্ত্রণা সহ্য করা যায় সন্তান হারানোর যন্ত্রণা কোন মা’ই সহ্য করতে পারেনা। সেখানে যদি তাঁকে অযৌক্তিক ব্লেম দেওয়া হয় নিজ সন্তানের হত্যাকারী বলে চিহ্নিত করা হয় তখন ঘুরে দাঁড়িয়ে যোগ্য জবাব না দিতে পারলে নিজের প্রতি নিজেরই অবিচার করা হয়। দুনিয়া টা বড়ই অদ্ভুত এখানে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে চাইলে একবার না একবার ঘুড়ে দাঁড়াতেই হবে। যে সম্পর্কের শুরুটা হ্যাভেন করেছিলো সেই সম্পর্কের শেষটা করবে আহি৷ হ্যাঁ ডিভোর্স হবে তাঁদের অবশ্যই হবে। এটাই তো হওয়ার কথা ছিলো। দেরিতে হলেও এটাই ঘটবে। মাঝখানে কিছু ভুল অনুভূতি তে লিপ্ত হয়ে প্রাণহীন সম্পর্কটায় প্রাণ দিতে চেয়েছিলো সে। কিন্তু তাঁর সেই ভুলটাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে গেলো হ্যাভেন। তাই ভুলগুলোও সে শুধরে নেবে কিন্তু তাঁর আগে তাঁর সন্তানের আসল হত্যাকারীকেও চিহ্নিত করে দিয়ে যাবে স্বামী নামক ঐ নরপশুটাকে।
_______________
পরেরদিন সকাল বেলা হ্যারি এসে হসপিটালের যাবতীয় ফর্মালিটিস পূরণ করে আহি এবং রুবিনাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যায়। হ্যারিকে দেখে
আহি অনেকটাই আশ্চর্য হয়ে যায়, আশ্চর্য হয়ে যায় হ্যাভেনের আচরণেও। গতকালের পর হ্যাভেন না একটিবার ফোন করেছে আর না হসপিটালের সম্মুখীন হয়েছে এমনকি তাঁকে নিতেও আসেনি। আর যাইহোক ঐ মানুষ টাকে কখনো দায় এড়ানো স্বভাবের মনে হয়নি। এতোদিন মুখে কাপুরুষ বললেও আজ সত্যি তাঁর দৃষ্টিতে হ্যাভেনের বাস্তবিক কাপুরুষত্বের চিএ স্পষ্টতর হয়ে ওঠছে। সকলের অগোচরে বাঁকা হাসি দিলো আহি। সত্যিই মানুষ ঠিক গিরগিটির মতোই রঙ পাল্টায়। সে বোধহয় বেশীই আশা করে ফেলেছিলো। কেনো আসবে হ্যাভেন? কে হয় সে তাঁর? এই বিয়েটা না ভালোবাসার বিয়ে ছিলো আর না সে ছিলো তাঁর ভালোবাসার মানুষ। তাহলে কেনো তাঁর দুঃসময়ে পাশে থাকবে হ্যাভেন? কিন্তু জোর করে বিয়ে করে যে দায়িত্ব টা সে নিয়েছিলো সেই দায়িত্ব কি করে এড়িয়ে যেতে পারে? সে তো ভেসে ভেসে তাঁর জীবনে আসেনি বরং প্রচন্ড জোর প্রয়োগ করেই নিজের কাছে আঁটকে রেখেছিলো এতোগুলো দিন তাহলে আজ এই নাটকীয়তার মানে কি? ডিভোর্স তো হয়ে যায় নি। তাহলে কেনো তাঁর দায়িত্ব অন্য কেউ পালন করছে? অত্যন্ত কাঠিন্য রূপ ধারণ করলো আহি। পুরো গাড়িতে সে একদমই নিস্তব্ধ হয়ে বসেছিলো। না শ্বাশুড়ি না দেবর কারো সাথে একটি বাক্য বা একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি। হসপিটাল থেকে বের হওয়ার সময় রেশমি বার বার করে রুবিনা এবং আহিকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে চৌদ্দ দিন পর যদি ব্লিডিং না কমে বা ব্লিডিংয়ের মাত্রা বেড়ে যায় অবশ্যই অবশ্যই ডক্টরের শরণাপন্ন হতে হবে। যে কোন সমস্যার সম্মুখীন হলেই সঙ্গে সঙ্গে তাঁকেও নক দিতে বলেছে। কিন্তু এসবে আহির বিন্দু পরিমাণ ভ্রুক্ষেপ নেই৷ সে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিন্তায় মগ্ন রয়েছে। সেই চিন্তারগুলোর ভীরে নিজেকে ঠিক যতোটা শক্ত করে নেওয়া যায়, যতোটা কাঠিন্য রূপ ধারণ করা যায়, নিজেকে ঠিক যতোটা প্রস্তুত করে নেওয়া যায় ততোটাই করে নিলো সে।
.
বাড়িতে প্রবেশের মূহুর্তে একটু চমকালেও নিজেকে বেশ সামলে নিলো আহি। ড্রয়িং রুমের সোফায় বসে আছে তাঁর শ্বশুর হুমায়ুন তালুকদার। তাঁর পাশের মেঝেতে বেশ বড়সড় একটি লাগেজ দাঁড় করানো রয়েছে। কাজের মেয়ে রমা আহিকে দেখতে পেয়েই ডাইনিং টেবিলের কাছে গিয়ে খাবার বাড়তে শুরু করলো। রুবিনা আহিকে জোর করেই শ্বশুরের পাশে বসালো। হ্যারি চলে গেলো উপরে। রুবিনাও ফ্রেশ হওয়ার জন্য উপরে ওঠে গেলো। আহিরও পুতুলের মতো বসে থাকতে ইচ্ছে করলো না। তাঁর যে একটিবারের জন্য হলেও হ্যাভেনের মুখোমুখি হতে হবে সময় খুব কম। তাই ওঠে দাঁড়াতেই হুমায়ুন তালুকদার খবরের কাগজ থেকে দৃষ্টি ওঠিয়ে আহির দিকে অত্যন্ত স্নেহমাখা দৃষ্টিতে তাকালো। অত্যন্ত গম্ভীর প্রকৃতির মানুষ হুমায়ুন তালুকদার। প্রয়োজন ব্যাতিত একটা শব্দও মুখ দিয়ে বের করেন না তিনি। আহির সঙ্গেও তাঁর তেমন বাক্যালাপ হয়নি। এ প্রথম আজি সে নিজের পুত্রবধূর সাথে অত্যন্ত স্নেহময় ভঙ্গিতে কথা বলছেন। কিন্তু সে কথাগুলো যে আহির মনে বিরূপ প্রভাব ফেলবে বুঝতে পারেননি তিনি। আহির ক্ষেত্রে এ প্রভাব পড়াটা অবশ্যই যৌক্তিক তাই মিইয়ে পড়লেন হুমায়ুন তালুকদার। সারাজীবন রাজকীয় ভাবে বাস হুমায়ুন তালুকদারের কিন্তু এ মূহুর্তে তাঁর সবটা যেনো দুমড়েমুচড়ে যাচ্ছে। সামনের এই নিষ্পাপ,পবিত্র মুখশ্রীর কাছে সে মারাত্মকভাবে অপরাধী। সেই অপরাধগুলো এভাবে চোখে চোখ রেখে আঙুল ওঠিয়ে দেখিয়ে দেবে মেয়েটা কল্পনাও করতে পারেনি হুমায়ুন তালুকদার। শুধু কি সে? বাড়ির কাজের লোক থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা ব্যাক্তিই বাকরুদ্ধ।
আহি যখন উপরে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায় হুমায়ুন তালুকদার অত্যন্ত লজ্জিত হয়েই বলেন,
-‘ বউ মা উপরে যেওনা হ্যাভেন রয়েছে তাঁর মাথা ঠিক নেই তোমায় আঘাত করে বসতে পারে। খাবার খেয়ে নাও হ্যারি তোমাকে বাবার বাড়ি দিয়ে আসবে। হ্যাভেনের মাথা ঠান্ডা হোক আমি বা হ্যাভেন গিয়ে নিয়ে আসবো তোমায়। একটু ধৈর্য ধারণ করো মা ‘।
বাবার বাড়ি যাওয়া নিয়ে একটুও আফসোস নেই আহির। কিন্তু ছেলের মাথা ঠান্ডা হলে তাঁকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারটা হজম করতে পারলো না। তাঁর জীবনটা এতোটাই সস্তা হয়ে গেছে? যখন খুশি যেভাবে খুশি সকলে তাঁর জীবন নিয়ে খেলবে? আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছে সে হুমায়ুন তালুকদার ভাবলো কি করে সে বাবার বাড়ি চলে গেলে আবার ফিরে আসবে? সে সুযোগ টা বোধ হয় সে নিজেই করে দিয়েছে সেদিন ফিরে এসে কিন্তু একি সুযোগ তো বার বার করে দেবে না সে। সময় সবসময় একপাক্ষিক তো হবে না। চোখ দুটো রক্তিম বর্ণ ধারণ করলো আহির চোয়াল শক্ত হয়ে এলো। মূর্তির ন্যায় গেঁথে ড্রয়িং রুমের মাঝ বরাবর দাঁড়িয়ে পড়লো সে। মাথা থেকে শাড়ির আঁচল সড়ে যাওয়ায় একফোঁটাও গ্রাহ্যও করলো না আচমকাই চিৎকার করে ডাকতে শুরু করলো, ‘মি. হ্যাভেন তালুকদার এখুনি নিচে নেমে আসুন নয়তো আমি আপনার বাবার অবাধ্য হতে বাধ্য হবো ‘।
অকস্মাৎ ঘটনায় সকলেই হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। হুমায়ুন তালুকদার নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে আহির দিকে তাকিয়ে রইলো। রমা ভীত হয়ে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আহির দিকে। এতোদিনের চেনা অত্যন্ত শান্তশিষ্ট প্রকৃতির মেয়েটার হঠাৎ এমন গর্জে ওঠাতে সকলের হৃদস্পন্দন কতো সময়ের জন্য থেমে গেলো তা বোধগম্য করা গেলো না। হ্যারি,হিরা, রুবিনা তালুকদার সকলেই ড্রয়িং রুমে এসে দাঁড়িয়েছে। সকলেই বিস্ময় চোখে চেয়ে আছে আহির দিকে। শেষ ডাকে হ্যাভেনও অত্যন্ত ক্ষিপ্ত হয়ে নিচে নেমে এলো। যতোটা ফুঁসে ওঠে সে নিচের দিকে পা বাড়িয়েছিলো নিচে আসার পর আহিকে আপাদমস্তক দেখে নিয়ে ঠিক ততোটাই নিভে গেলো।আহির ফ্যাঁকাশে মুখশ্রী,ভয়ংকর রক্তিম আভার ন্যায় দৃষ্টিতে দৃষ্টি ফেলা মাত্রই আঁতকে ওঠলো। আহির এহেন রূপ দেখে তাঁর খুব একটা স্বাভাবিক লাগলো না। কিন্তু তাঁর তো খুশি হওয়া উচিত মুক্তি পাবে সে। এতোদিনের করা তীব্র চেষ্টা অবশেষে সফল হতে যাচ্ছে। খুশি মনে এ বাড়ি ত্যাগ না করে এমন রণমূর্তি ধারণ করার মানে কি? ভ্রুজোরা কুঞ্চিত করে ফেললো হ্যাভেন। একহাত ট্রাউজারের পকেটে ঢুকিয়ে দিয়ে আরেকহাতে ঘাড়ে মালিশ করতে করতে খানিকটা ঘাড় বাঁকিয়ে হ্যারির দিকে তাকালো। বললো,
-‘ হ্যারি ওকে পৌঁছে দিয়ে আয় ‘। বলেই উপরের দিকে পা বাড়াতে নিলেই আহি গর্জে ওঠে বললো,
-‘ দাঁড়ান আমার কথা শেষ না হওয়া অবদি এক পা ও নড়বেন না’।
থেমে গেলো হ্যাভেন কিন্তু ঘুরে দাঁড়ানোর প্রয়োজন বোধ করলো না। রুবিনা আহির দিকে এগিয়ে কিছু বলতে নিলে আহি হাত ওঠিয়ে তাঁকে থামিয়ে দিলো। এক ঢোক গিলে দীর্ঘ এক নিঃশ্বাস ছেড়ে বলতে শুরু করলো সকলের অভাবনীয় কথাগুলো,
চলবে..