#ওহে_প্রিয়
#জান্নাতুল_নাঈমা
#পর্ব_৩৩
________________
বোনের পাশে চুপটি করে শুয়ে আছে আহি। খাবার ঘর থেকে শুনতে পাচ্ছে হ্যাভেনের অট্রহাসির শব্দ। তাঁর মা হাসছে কিনা জানা নেই তবে হ্যাভেনের হাসি আর কথার ফাঁকফোকরে তাঁরও টুকটাক কথা শোনা যাচ্ছে। অবাক না হয়ে পারলো না হ্যাভেন তাঁর মায়ের সাথে গল্প গুজব করছে? ভারী আশ্চর্যের বিষয়। তাঁর মা যে সাহস করে নিজে থেকে একটাও অপ্রয়োজনীয় কথা বলবে না তা খুব ভালো করেই জানে। তাঁর মানে কথার সূত্রপাত হ্যাভেন দ্বারাই। মানুষ টা এতো নাটক কেনো করছে? শুধু মাত্র তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য? তাঁকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য এসবের তো প্রয়োজন পড়ার কথা না তাহলে কেনো করছে এসব ? হ্যাভেন চাইলেই আবারো তাঁকে জোর পূর্বক নিজের কাছে নিয়ে যেতে পারে। আবারো তাঁর ওপর নিজের কর্তৃত্ব ফলাতে পারে। সে যতো যাই বলুক সেসবে কেয়ার করার মতো ছেলে তো হ্যাভেন কখনোই ছিলোনা। তাহলে এসব কেনো করছে? হঠাৎ এতো গুরুত্বই বা কেনো দিচ্ছে? নিজের মধ্যেকার পরিবর্তন টা বোঝাতে চাইছে? এতো দ্রুত কোন মানুষের মাঝে পরিবর্তন আসতে পারে? হ্যাঁ পারে গিরগিটির ন্যায় মানুষ’রাই পারে নিজেদের মাঝে পরপর পরিবর্তন আনতে। অতিরিক্ত চিন্তায় মাথা ধরে এলো। ওঠে বসে বারকয়েক শ্বাস নিয়ে আবারও অনার পাশে শুয়ে পড়লো আহি। কিন্তু খুব বেশী সময় শুয়ে থাকতে পারলো না৷ হ্যাভেন তাঁর নাম ধরে উচ্চকন্ঠে ডাকতেই ধড়ফড়িয়ে ওঠে বসলো। রাত প্রায় একটা ছুঁই ছুঁই। বিদঘুটে অন্ধকারের পাশাপাশি চারদিকে নেমে এসেছে তীব্র নিরবতা। সেই নিরবতাকে ছাপিয়ে দিয়েছে হ্যাভেনের এই উচ্চধ্বনি। চোখ বড় বড় করে গায়ে কোনরকম ওড়নাটা চাপিয়ে দৌড়েই খাবার ঘরে চলে গেলো। সোফায় পায়ের ওপর পা তুলে বসে আছে হ্যাভেন। আহিকে দেখা মাত্রই আবারো উচ্চস্বরে ডেকে ওঠলো তাঁর নাম ধরে। অবাক না হয়ে পারলো না আহি। সেই সাথে বেশ চটেও গেলো। এগিয়ে গিয়ে সম্মুখে দাঁড়িয়ে চোখ,মুখ কুঁচকে ক্ষিপ্ত মেজাজে বললো,
-‘ আশ্চর্য এভাবে ষাঁড়ের মতো চেচাচ্ছেন কেনো? এটা কি আপনার নিজের বাড়ি পেয়েছেন? আব্বু,আম্মু কি ভাববে পাড়ার লোকজনের ঘুমও তো হারাম করে ছাড়বেন দেখছি ‘।
-‘ বউ কাছে না এলে এভাবেই ডাকতে হয় সুন্দরী। পুরো এলাকা জানিয়ে ছাড়বো আমার বউ আমার কাছে আসেনা ‘।
উচ্চকন্ঠে কথাগুলো বলে ওঠতেই আহি ভয়ে আরেকটু এগিয়ে দু’হাত ওঠিয়ে বললো,
-‘ চুপ চুপ আস্তে বলুন আস্তে বলুন ছিঃ ছিঃ আব্বু,আম্মু বোধহয় শুনেই ফেললো দোহাই আপনার যা বলার নিচু স্বরে বলুন ‘।
পায়ের ওপর থেকে পা নামিয়ে চট করে ওঠে দাঁড়ালো হ্যাভেন। আহি হকচকিয়ে খানিকটা পিছিয়ে গেলো। হ্যাভেন সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর দিকে দু’কদম এগিয়ে গিয়ে চোখেমুখে দুর্বৃত্ত হাসি ফুটিয়ে তুলে কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললো,
-‘ ওকে ডান এভাবেই বলবো ‘।
তপ্ত শ্বাসের তীব্র স্পর্শে পুরো শরীর শিউরে ওঠলো আহির। নিজেকে ত্বরিতগতি তে ধাতস্থ করে নিয়ে রুক্ষ কন্ঠে বললো,
-‘ একদম চুপচাপ ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ুন নয়তো আমি কঠোর হতে বাধ্য হবো ‘।
-‘ ঘরে চলো আহি আর রেগে থেকো না আমি এ দহন আর সইতে পারছিনা ট্রাস্ট মি জান ‘।
গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে কথা গুলো বলতেই আহি দ্রুত তাঁর মুখ চেপে ধরে ফিসফিস করে বলে ওঠলো,
-‘ দোহাই আপনার চিল্লাবেন না এমন করছেন কেনো? আপনার না হয় লজ্জা নেই আপনি চরম পর্যায়ের একজন বেহায়া, বেশরম আমি জানি। কিন্তু আমার আব্বু,আম্মু,আমি বা, ছোট বোন কেউই আপনার স্বভাবের নয় তাই দয়া করে আস্তে কথা বলুন ‘।
-‘ লজ্জা নারীর ভূষণ নারীরা লজ্জা পেয়ে লালে লাল নীলে নীল হবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু শ্বশুর মশাইয়ের লজ্জা আছে বিষয়টা বড়ই দুঃখজনক ‘।
রাগে ফুঁসে ওঠলো আহি অগ্নি চক্ষু তে চেয়ে দাঁত কিড়মিড় করতে থাকলো শুধু। তাঁকে কে জব্দ করতে পেরে বেশ মজা পেলো হ্যাভেন। মনে মনে হিরা, হ্যারিকে অসংখ্য ধন্যবাদও জানালো। ভাগ্যিস তাঁর ভাই’য়েরা এবং বন্ধু’রা তাঁর খারাপ সময়ে এভাবে পাশে থাকছে। মাথা গরম হলে দ্রুত ঠান্ডা করা যাচ্ছে সেই সাথে বউ কন্ট্রোল করার পরামর্শও পাওয়া যাচ্ছে। আহির অল্প রাগ, অল্প অভিমান, অল্প ভয় মিশ্রিত মুখটা দেখে মুচকি হেসে হাতের তালুতে শব্দ করে চুমু খেলো হ্যাভেন। কারেন্টে শখড খেলে যেমন মানুষ আচম্বিত হয়ে ছিঁটকে যায় আহিও তেমন করে হাত সড়িয়ে ওড়না দিয়ে হাত মুছতে থাকলো। এতে কিছুটা বিরক্তবোধ করলো হ্যাভেন। ছোট করে একটি শ্বাস ত্যাগ করে হাত টেনে আহিকে নিয়ে গেলো শোবার ঘরে। দরজার সিটকেরী লাগাতেই আহি তীব্র মেজাজে বললো,
-‘ আপনি কিন্তু বাড়াবাড়ি করছেন ‘।
-‘ বাড়াবাড়ি নয় আহি আজ আমাদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী তুমি ভাবলে কি করে আজকের দিনটায় আমরা একে অপরের থেকে আলাদা থাকবো ‘?
তাচ্ছিল্য সহকারে হাসলো আহি। বললো,
-‘ না ভাবার কি আছে না এই বিয়েটা ভালোবাসার বিয়ে ছিলো আর না বিয়ের পর আমাদের মাঝে ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। যেখানে ভালোবাসা নেই সেখানে আলাদা থাকাটাই বাঞ্ছনীয় নয় কি ‘?
আহির কথায় রাগ হলো না বরং নিজের করা ভুলগুলোই মনে পড়ে গেলো। এই কথাগুলো তো আহির কথা নয় বরং তাঁর বলা কথাগুলোই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে আহি। তাহলে মেয়েটাকে দোষ দেবে কেনো? বিনাদোষে অনেক শাস্তি পেয়েছে মেয়েটা। আর না সবটা হজম করে নিয়ে মানুষ টাকে আপন করে নিতেই হবে। নিজের সবটা দিয়ে বোঝাতে হবে অভিমানীনির অভিমান ভাঙাতেই হবে। দীর্ঘ এক শ্বাস ছেড়ে আহির দিকে এগিয়ে যায় হ্যাভেন পিছিয়ে যায় আহি। ইশ আর সহ্য হয় না এই দূরত্ব ভেবেই চট করে এক হাতে আহির কোমড় জরিয়ে ধরে আরেক হাতে চুল চেপে ধরে মৃদুস্বরে বললো,
-‘ একটু শান্ত হয়ে দাঁড়াও জাষ্ট টেন মিনিটস ‘।
স্তব্ধ হয়ে চেয়ে রইলো আহি। বুকের ভিতরটা কেমন শীতলতায় ছেয়ে গেলো তাঁর। শুধু তাই নয় অতি সুক্ষ্ম এক ব্যাথাও অনুভব করলো। নিঃশ্বাসের বেগ থেমে থেমে চলতে শুরু করলো। তাঁর মৌনতায় অনেক কিছুই বুঝে নিলো হ্যাভেন। তাই তাঁকে ছেড়ে বিছানার একপাশে রাখা শপিং ব্যাগ থেকে লাল রঙের কুশন আকৃতির বক্স বের করলো। মৃদু হেসে আবারো আহির সম্মুখে দাঁড়িয়ে এক পলক তাঁর চোখের দিকে তাকিয়ে চট করে হাঁটু গেড়ে বসে পড়লো। চমকে গিয়ে একটু পিছিয়ে গেলো আহি। বিস্ময় চোখে চেয়ে রইলো হ্যাভেনের হাস্যজ্জ্বল মুখপানে। হ্যাভেন তৃপ্তিময় এক শ্বাস ছেড়ে বক্স থেকে ডায়মন্ডের একটি রিং বের করে অতিকৌশলে বক্সটা বিছানায় ফেললো। বাম হাতে আহির বাম হাত নিজের হাতে তুলে নিয়ে অতি সন্তর্পণে অনামিকা আঙুলটি নিজের দু’আঙুল দ্বারা স্পর্শ করলো। আহি তখনো বিস্ময়ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। হ্যাভেন চটপট রিং পড়িয়ে অনামিকা আঙুলের পিঠে আলতো করে চুমু খেলো। বুকের ভিতর টায় তীব্র মোচড় দিয়ে ওঠলো আহির। ছলছল চোখে চেয়েই রইলো হ্যাভেনের মুখপানে। হ্যাভেন ওঠে দাঁড়িয়ে শপিং ব্যাগ থেকে একটি গোলাপের স্তবক বের করে নিয়ে আবারো আগের ন্যায় হাঁটু গেড়ে বসে পড়লো। আহির দু-চোখ ভরে ওঠা অশ্রুকনাগুলো এবার গাল বেয়ে ঝড়তেও শুরু করেছে। তা দেখে হ্যাভেন দৃঢ় দৃষ্টি তে তাকিয়ে দৃঢ় কন্ঠে বললো,
-‘ ডোন্ট ক্রাই আহি। ইউ উইল নট ক্রাই এনিমোর। আ’ম সরি! আ’ম রিয়েলি রিয়েলি সরি! প্লিজ গিভ মি অ্যা চান্স টু লাভ ইউ ‘।
ফুলগুলো এগিয়ে দিতেই আহি খানিকটা দূরে সরে গেলো। ডানহাত দিয়ে বাম হাতটা চেপে ধরে ঠোঁট কামড়ে আটকানোর চেষ্টা করলো নিজের দূর্বলতাগুলোকে। কিন্তু পারছে না, কোনক্রমেই নিজের দূর্বলতাগুলোকে সে আঁটকে রাখতে পারছেনা। ইচ্ছে করছে সামনের এই মানুষ টার বুকে ঝাপিয়ে পড়তে৷ ইচ্ছে করছে মানুষ টার বুকে মুখ গুঁজে চিৎকার করে কাঁদতে, প্রশ্ন করতে স্বপ্নপুরুষরা তো এভাবেই জীবনে আসে হ্যাভেন আপনি কেনো এভাবে এলেন না? শুরুটা কেনো হলো তিক্তময়, যন্ত্রণায় ঘেরা? শুরুটা কেনো এমন হলো না? কেনো?
সমুদ্রের স্রোতধারার মতো করে দু’চোখ বেয়ে অশ্রুকণারা ঝড়ে পড়ছে। মাথাটা ঝিমঝিম করছে। হাত’পা অবশ হয়ে আসছে। বুকের ভিতর শুকিয়ে যেনো মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। আহির অস্বাভাবিকতা কিছুটা বুঝে আসতেই ওঠে দাঁড়ালো হ্যাভেন। ফুলগুলো বিছানায় রেখে আহির এক হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বিছানায় বসালো। নিজেও বসলো তাঁর পাশে। বেশ অনেকটা কাছাকাছিই বসে আছে দু’জন। আহির ভিতরের অস্থিরতা গুলো ক্রমশ বেড়েই চলেছে। হ্যাভেন আরো শক্ত করে আহির হাত চেপে ধরলো। এক ঢোক গিলে শান্ত ভঙ্গিতে আহির দিকে এক পলক তাকিয়ে দৃষ্টি স্থির রাখলো মেঝেতে। বললো,
-‘ আমি জানি তোমার সঙ্গে যা হয়েছে খুব খারাপ হয়েছে,অন্যায় হয়েছে ভুল করেছি আমি। আমি নিজের কাছে অনুতপ্ত। কিন্তু তোমাকে বিয়ে করে আমি অনুতপ্ত হইনি। তোমাকে ওভাবে বিয়ে করাটাকে আমি ভুল বলে গ্রহণ করতে পারছিনা। কারণ আমি ভুলের মধ্যেও সঠিক একজন মানুষ কে নিজের জীবন সঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছি। সঠিকের মাধ্যমে একজনকে মন, প্রাণ দিয়ে ভালোবেসে নিজের সবটা উজার করে দিয়ে বিনিময়ে পেয়েছিলাম বিশ্বাসঘাতকতা। কিন্তু দোষযুক্ত হয়ে অন্যায়কারী হয়ে তোমায় জীবনে এনে বিনিময়ে পেয়েছি সুস্থ,স্বাভাবিক, ভালোবাসাময় একটি জীবন। আমি তোমার সাথে অনেক অন্যায় করেছি। আমি তোমায় যোগ্য সম্মান, যোগ্য ভালোবাসা দিইনি। বিশ্বাস করো আমি দিতে পারিনি। আমার মন,মস্তিষ্ককে আমি নিজে নিয়ন্ত্রণ করতে পারতাম না। আমি খারাপ নই আমি খারাপ ছিলাম না। আমি অসুস্থ ছিলাম না আহি আমার সব ভালোকে ওরা খারাপ করে দিয়েছিলো। মানুষ থেকে অমানুষে পরিণত করেছিলো। কিন্তু দেখো উপরওয়ালা আমার জীবনে তোমাকে পাঠিয়ে আবারো আশার আলো দেখিয়েছেন। পথ হারিয়ে আমি যখন একে বারেই নিঃশ্ব ঠিক সেই মূহুর্তে উপরওয়ালা তোমার সাথে দেখা করালো আমায় ‘।
আহি নিশ্চুপ। হ্যাভেন অসহায় দৃষ্টিতে আহির দিকে তাকিয়ে আছে। সে কি গুছিয়ে বলতে পারছে তাঁর মনের কথাগুলো? আহি কি বুঝতে পারছে? আজ যদি সে বোঝাতে না পারে তাহলে কি আর কোনদিন বোঝানো সম্ভব হবে? এলেমেলো নিঃশ্বাস ফেলে আহিকে নিজের দিকে ঘোরালো দু’হাতে আহির হাতদুটো শক্ত করে চেপে ধরলো। আহি তখনো স্থির হয়ে নিশ্চুপ বসে রইলো। তবে তাঁর চোখ দুটো ছিলো রক্তিম আভা যুক্ত কি’জানি মেয়েটার মনে কি চলছে। হয়তো তাঁর সব কথা শোনার অপেক্ষাতেই আছে। ছোট্ট একটি শ্বাস ছেড়ে আবারো বলতে শুরু করলো ,
-‘ তুমি খুব কষ্ট পেয়েছো খুব যন্ত্রণা দিয়েছি আমি তোমায়। অচেনা একটা ছেলে হুট করে এসে নিজের ক্ষমতার জোরে তোমায় বিয়ে করে নিলো। বিয়ের পর প্রতিটা সেকেন্ড বিষিয়ে তুলেছিলো। তোমায় মানসিক, শারীরিক দুভাবেই টর্চার করা হয়েছে। তোমার প্রতিটা রাত হারাম করে দেওয়া হয়েছে। তোমার জীবন থেকে দু’টো বছর আনন্দ, উল্লাস কেড়ে নেওয়া হয়েছে। বন্দী জীবন কাটাতে হয়েছে তোমাকে। অন্যের আক্রোশ তোমাকে দিয়ে মেটানো হয়েছে। দুঃখ দিয়েছি,যন্ত্রণা দিয়েছি। কিছু সময় শরীরে আঘাতও করেছি। এতো কিছুর ভীরে একটুখানি ভালোবাসা, একটুখানি যত্নকে চোখে পড়ার কথা নয় আহি। তবুও কি তুমি কোন দিন কোন একটা সময়ও টের পাওনি এই মানুষ টা আসক্ত হয়ে পড়েছে। ভীষণ ভাবে আসক্ত এই মানুষ টা তোমার প্রতি। মনের সুপ্ত কোনে গভীরভাবে তুমিনামক মানুষ টা মিশে গেছো একটুখানি টেরও কি পাওনি প্রিয় ‘?
অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকালো আহি। হ্যাভেনের রক্তিম আভা যুক্ত ঝাপসা দৃষ্টি দু’টো তাঁর সর্বাঙ্গে কম্পন ধরিয়ে দিলো। বুকটা হুহু করে ওঠলো খুব। বলতে ইচ্ছে করলো,
– ‘আপনার কি কষ্ট হচ্ছে হ্যাভেন? কাঁদতে ইচ্ছে করছে খুব? আমারো যে খুব কান্না পাচ্ছে আসুন না দুজনই দুজনকে জাবটে ধরে হাউমাউ করে কাঁদি। কাঁদতে কাঁদতে সমুদ্র বানিয়ে ফেলি এই ঘর। শুনেছি পুরুষ মানুষের চোখে নাকি সহজে পানি ধরা দেয় না। পুরুষ মানুষের কান্না দেখা যে বড় ভাগ্যের ব্যাপার। এতো বড় ভাগ্য টা না হয় আজ আমারই হোক। আপনি না হয় আজ কেঁদেই দেখাবেন। দুজন মিলে একসঙ্গে কাঁদবো আমরা খুব কাঁদবো অনেকখানি কাঁদবো। চলুন না কাঁদি’?
কিন্তু মুখ ফুটে কিছুই বলতে পারলো না। হ্যাভেনও আর তাঁর উত্তরের অপেক্ষা করলো না। এক ঢোক গিলে নিজেকে শক্ত করে নিয়ে আহির হাতের পিঠে চুমু খেয়ে বলতে শুরু করলো,
-‘ বাবা,মায়ের একমাত্র ছেলে আমি। বড় আদরে মানুষ হয়েছি। পরিবার,পড়াশোনা, বন্ধু মহল, টুকটাক রাজনীতি এসবই ছিলো আমার ধ্যান,জ্ঞান। আমার সেই ধ্যান, জ্ঞান কে নিমিষেই বদলে দিলো রূপসা। ওকে পেয়ে সব কিছুকে তুচ্ছ মনে হতে লাগলো। শিশুরা যেমন বেড়ে ওঠার সময় আকাশ, মাটি,আগুন,পানির পার্থক্য বুঝতে শিখে। বাবা,মায়ের ভালোবাসা উপলব্ধি করতে শেখে। ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে নিজের সমস্ত সত্তাকে মজবুত করে গড়ে তুলে। আমিও করেছিলাম। কিন্তু আমার সেই মজবুত সত্তাকে আমি হারিয়ে ফেলি ভালোবাসা নামক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে। সহজসরল ধাচের মেয়েটাকে দেখে আমি তাঁর মায়ায় আঁটকে যাই। আমার সমস্ত অনুভূতিরা আবারো হয়ে যায় শিশুর ন্যায়। আবারো তাঁরা বেড়ে ওঠতে থাকে তখন খেয়াল করি দুনিয়া টা’কে যেভাবে চিনেছিলাম,বুঝেছিলাম আসলে দুনিয়াটা তেমন নয়। বরং দুনিয়াটা বড্ড সুখের বড্ড আনন্দের।এই যে রূপসা নামক মেয়েটার প্রেমে পড়ে গিয়ে তাঁর মায়ায় আঁটকে পড়ে সর্বক্ষণ তাঁকে নিয়ে ভাবতে ভালো লাগে। সর্বক্ষণ তাঁর আশেপাশে থাকতে ইচ্ছে করে৷ নিজের পাশে সর্বক্ষণ তাঁর উপস্তিতি টের পাই। বড্ড সুখ সুখ অনুভূতি হয়। চারদিকে যা দেখি সবই রঙিন লাগে। কই রূপসা যখন ছিলোনা তখন তো এমন অনুভূতির ছোঁয়া পাইনি। উন্মাদ হয়ে যাই মেয়েটার প্রেমে। যখন জানতে পারি মেয়েটাও আমাকে ভালোবাসে আমার প্রতি তাঁর অনুভূতি গুলো পজেটিভ তখন তাঁকে নিজের করে নেওয়ার জন্য একটুও সময় নেই নি। বিয়ে করে বউ করে ঘরে তুলেছি। বাবা,মায়ের সঙ্গে যুদ্ধ করেছি। একসময় তাঁরাও মেনে নিয়েছে। পড়াশোনার পাশাপাশি সংসার পেতেছি। দু’জন একসঙ্গে স্বপ্ন বুনেছি। করেছি কতোশতো কল্পনাজল্পনা। আমার সবটা জুড়েই ছিলো ঐ মেয়েটা। ভালোবাসার চাদরে মুড়িয়ে রেখেছিলাম তাঁকে আমি। সেও তো কম নাটক করেনি। এতো নিখুঁত অভিনয় সে করেছিলো যে তাঁর অভিনয় ধরা মাত্রই ভারসাম্যহীন হয়ে গিয়েছিলাম। ‘আহি’ তুমি তো কল্পনায় স্বপ্নপুরুষকে দেখতে। তোমার জীবনে সত্যি কোন স্বপ্নপুরুষ এসে এক আকাশ স্বপ্ন দেখিয়ে হুট করে সব ভেঙে চুরমার করে দিয়ে গেলে তোমার সহ্য করার ক্ষমতা কতোটুকু থাকবে? তুমি আমার দেওয়া আঘাতে কষ্ট পেয়েছো। আমরা পূর্বপরিচিত ছিলাম না। আমাদের মধ্যে প্রণয়ের সম্পর্ক ছিলো না। না ছিলো বিশ্বাস না ছিলো ভরসার সম্পর্ক। আমি অন্যায় করেছি, ভুল করেছি কিন্তু বিশ্বাসঘাতকা বা বেঈমানী করিনি। আমি বিশ্বাসঘাতকতা, বিঈমানীর শিকার হয়ে উন্মাদ হয়ে গিয়েছিলাম। ভুল কে ভুল, অন্যায়কে অন্যায় ভাবিনি। যার জীবনে এমন জঘন্য ভুল হয়ে যায় যার সাথে এমন জঘন্য অন্যায় করা হয় সেই মানুষ টাই একসময় চরম ভুল আর অন্যায়ে ডুবে যায়। সেই ভুল আর অন্যায়ের শিকার একটা সময় হয়ে যাও তুমিও। তুমি পবিত্র তুমি নিষ্পাপ তবুও তুমি শাস্তি পেয়েছো। আমার জন্য শুধুমাত্র আমার জন্য তোমার দু’টো বছর নষ্ট হয়ে গেছে। তোমার যা প্রাপ্য তুমি তা পাওনি। কিন্তু বিশ্বাস করো আহি আমার মাথা ঠিক ছিলোনা। আমি বুঝতে পারিনি আমার ঠিক কি করা উচিত বা কি করা উচিত নয়। সেদিন যখন তোমার বান্ধবী ঐভাবে আমাকে বিদ্রুপ করছিলো সে সময় আমার মনে পড়ে গিয়েছিলো রূপসার বলা সেই কথা গুলো। এতো কিছুর ভীরেও যখন আমি তোমার শুভ্র মুখটা এক পলক দেখি আমার যেনো কি হয়ে যায়। আরো পাগল হয়ে যাই আমি। একদিকে প্রতিশোধের নেশা অন্যদিকে তুমি। উন্মাদের মতো তোমার ডিটেইলস নিই তোমার বাড়ি যাই বিয়ের প্রস্তাব দেই। মাথায় তখন এটাই চলছিলো তুমিই সেই মেয়ে যাকে আমি খুঁজছি। তুমিই সেই যাকে পেয়ে আমার সব অন্ধকার দূরে সরে যাবে। আমাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে যে মেয়েটা চলে গিয়েছে তোমাকে তাঁর সম্মুখে দাঁড় করিয়ে মাথা উঁচু করে বলতে পারবো আমি আমার আসল ঠিকানা পেয়ে গেছি। আমি বলবো না আমি তোমার রূপ দেখিনি কিন্তু সর্বপ্রথম আমি যা দেখেছি তা হলো তোমার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। পুরুষ আমি নারী তুমি তোমার রূপ আমাকে মোহিত করেছে অস্বীকার করবো না কিন্তু তাঁর থেকেও বেশী মোহিত হয়েছিলাম তোমার স্বভাব,চরিত্র, আচরণ দেখে। মনে আছে সেদিন যখন তোমার হাত টেনে ধরেছিলাম? আমার করা প্রথম স্পর্শ? বিনিময়ে তুমি উপহার দিয়েছিলো একটি থাপ্পড়? ঠিক সেই মূহুর্তেই দ্বিগুন পাগল হয়ে যাই আমি। একদিকে আনন্দ অপরদিকে ক্রোধ দুটোতে মিলে যখন আমার বুকে লুটোপুটি খাচ্ছিলো সে মূহুর্তেই সিদ্ধান্ত নিই আর দেরি নয় এ মূহুর্ত থেকেই এই মেয়েটা শুধু আমার। হ্যাঁ আমি সময় নিতে পারতাম কিন্তু তোমার চরিত্র এতোটাই শক্তিশালী ছিলো যে এক সেকেন্ড দেরি করা মানেই তোমায় হারিয়ে ফেলা তাই সময় নেইনি তৎক্ষনাৎ তুলে এনেছি আমার ঘরে। বিয়ের পর ভেবেছিলাম বউ তো করেছি স্বাভাবিক হওয়ার জন্য সময় দেবো। নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া করে নিয়ে সুখের সংসার পাতবো। সর্বোপরি সবাইকে দেখিয়ে দেবো নিজের আসল জায়গাটা। কিন্তু তোমার প্রচন্ড রাগ,জেদ, ক্ষোপের কাছে আমি হেরে গিয়েছিলাম। সেই সাথে নিজের অসুস্থ মস্তিষ্কের সাথেও যুদ্ধ করে চলে ছিলাম। হারিয়ে ফেলবো না তো? চলে যাবে না তো? এসব ভয় থেকেই নিজের করে নেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠি। করে নিই নিজের। কিন্তু এতে তোমার মনে কতোটা বিরূপ প্রভাব ফেলবে একটুও ভাবিনি। সেই বিবেচনা বোধই ছিলো না আমার। তারপর যখন তুমি আমায় ছেড়ে চলে গেলে আমি তোমায় জিসানের সঙ্গে পেলাম বিশ্বাস করো বুকের ভিতর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। দ্বিতীয় বারের মতো মস্তিষ্কে চরমভাবে আঘাত পাই। রূপসার বলা কথাগুলো মস্তিষ্কে কিলবিল করতে থাকে এক মূহুর্তের জন্যও মনে হয়। প্রতিটি নারীই এক হ্যাঁ নারীরা যেমন অর্থের পূজারী তেমন বহু পুরুষেও আসক্ত থাকে তাঁরা। তাঁরা শুধু সুদর্শন পুরুষের সংস্পর্শে যেতে চায়। মাথায় রক্ত ওঠে গিয়েছিলো আমার শাস্তি দিয়েছিলাম ওকেও তোমাকেও। গায়ে হাত তুলেছি নির্মমভাবে আঘাত করেছি তোমায়৷ কিন্তু বিশ্বাস করো কষ্ট পেয়েছি খুব কষ্ট পেয়েছি। কারণ আমি যা করছি যা দেখাচ্ছি তা’তো আমি নই। কোথায় হারিয়ে গেলাম আমি? আমাকে আমার থেকে ছিন্ন করে দিলো ওরা। আমি আমার ব্যাক্তিত্ব থেকে ছিন্ন হয়ে গেলাম। সব বুঝেও আমি নিরুপায় ছিলাম। নিয়ন্ত্রণ করতে পারতাম না নিজেকে কোনভাবেই। একজন নারীর অশুভ শক্তি এতোটাই প্রখর যে আমাকে মানুষ থেকে অমানুষে পরিণত করে দিলো? অসহনীয় হয়ে পড়ি মদ খেয়ে মাতাল হয়ে নিজেকে শান্ত করি। তুমি কখনো খেয়াল করেছো আহি? আমি যখন নেশা করতাম আমি খুব শান্ত হয়ে যেতাম। আমি যখন নেশা করতাম আমি আমার আসল সত্তায় ফিরে আসতাম। নেশার ঘোরেও কি কখনো তোমায় আদর করিনি? বলিনি কখনো ভালোবাসি? তবুও কেনো একটিবার আমার আমিকে তুমি চিনলে না বলতে পারো ‘?
ডুঁকরে কেঁদে ওঠলো আহি। হ্যাভেন প্রচন্ড শক্ত করে বুকে জরিয়ে নিলো তাকে। বুকে মুখ গুজে শার্ট খামচে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকলো মেয়েটা। হ্যাভেনের দুচোখ বেয়েও দুফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়লো। ধরা গলায় বললো,
-‘ কিন্তু সে হেরে গেছে তোমার কাছে সে হেরে গেছে। তোমার পবিত্রতা দিয়ে তোমার সব ভালো দিয়ে তাঁর করে যাওয়া খারাপটা বিলীন করে দিয়েছো তুমি। আমি জানি আমার দোষের আমার ভুলের অন্ত নেই। আমি তোমাকে ডিভোর্স দিতে চেয়েছিলাম কারণ মিসক্যারেজের কথা শুনে শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম। আমি আমার সন্তান হারিয়েছি শুধু এজন্য তোমায় ডিভোর্স দিতে চাইনি বরং তোমার প্রতি আমি ঠিক কতোটা অন্যায় করেছি তুমি আমায় ঠিক কতোটা ঘৃণা করো যে আমার অংশকে তুমি পৃথিবীর আলো দেখাতে চাওনি। নিষ্ঠুরতা করেছো। ভুল তোমার নয় আমার তাই তোমায় এই সম্পর্ক থেকেই মুক্তি দিতে চেয়েছি রাগের মাথায় তোমায় দায়ী করেছি ঠিকি কিন্তু মনে মনে নিজেকে কম দায়ী করিনি। যখন তুমি বাড়ি ছেড়ে বেড়িয়ে এলে সাথে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলে আমার সব ভুল আমার সব অন্যায় যখন আমি সত্যি সিওর হলাম তুমিও কষ্ট পাচ্ছো, আমারই মতোন তুমিও আমাদের সন্তানের জন্য কষ্ট পাচ্ছো সে মূহুর্তে আমার সব ভুল ভেঙে যায়। তুমি সেদিন বলেছিলে হোঁচট খেয়ে পড়ে যাওয়ার পর কেউ যখন হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে ওঠে দাঁড়াতে হয়। হ্যাঁ আহি এটা সত্যি কিন্তু আমি যে আঘাতপ্রাপ্ত মানুষ। বিশ্বাসের কাছে হেরে যাওয়া ভগ্ন হৃদয় নিয়ে আছড়ে পড়েছি আমি। সেই আমার দিকে কেউ হাত বাড়ালে আমি সহজ ভাবে কি করে ওঠে দাঁড়াতাম। আমার মনে সব সময় একটা ভয় কাজ করতোই এই যে তুমি আমার বউ আমি তোমায় জোর করে ধরে রেখেছি ভালোবেসে আগলে রাখতে গেলে আবার ঠকতে হবেনা তো? বিশ্বাস করে আবার বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হতে হবে না তো? এসব ভয় থেকেই আমি কখনো প্রকাশ করিনি আমার ভালোবাসা। প্রকাশ করিনি আমার দূর্বলতা। কিন্তু সবসময় সবদিক দিয়ে তোমায় নিয়ে পজেসিভ থেকেছি। সাবা ম্যামের পরামর্শে তুমি নতুন করে আমার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার উদ্যেগ নিয়েছিলে সবটা জেনেও আমি চুপ থেকেছি। মানিয়ে নেওয়া আর ভালোবাসা এক নয় আহি আমি ভালোবাসা চেয়েছি৷ তোমার হৃদয়ে স্থান পেতে চেয়েছি। দায়িত্ব, মানিয়ে নেওয়া সবটাই ছিলো তোমার মাঝে ভালোবাসা কতোখানি ছিলো সেটাই দেখতে চেয়েছি। বিশ্বাস করো দেখতে পাইনি। তুমি চেষ্টায় কোন ত্রুটি রাখোনি। কিন্তু আমি দেখতে পাইনি ভালোবাসাটাকে। আমি জোর করে তোমার তোমার সঙ্গে ইন্টিমেট হয়েছি তুমি বাঁধা দিয়েছো। তুমি চাওনি আমার সঙ্গ তবুও সেটাতে কোন অভিনয় ছিলোনা। একে অপরের কাছে আমরা পরিষ্কার ছিলাম। কিন্তু ঐদিনের পর যখন তুমি নিজে থেকে আমার সংস্পর্শে আসতে আমি এড়িয়ে যেতাম কারণ সেখানে অভিনয় চলছিলো আমি চেয়েছি দুনিয়ার সকলের সামনে তুমি অভিনয় করো শুধু আমার কাছে থাকবে একদম পরিষ্কার অথচ তুমি বার বার অভিনয়ই করে গেছো। কিন্তু আহি দেখো সব কিছুর পরও যখন তুমি আমার থেকে আলাদা হয়ে গেলে। দরত্ব সৃষ্টি হলো আমাদের মাঝে আমি কেমন মরিয়া হয়ে ওঠলাম তোমাকে ফিরে পাবার জন্য। অশুভর সংস্পর্শে গিয়ে আমি যেমন অশুভ হয়ে ওঠেছিলাম শুভর সংস্পর্শে এসে আমি শুভ হয়ে ওঠার তীব্র চেষ্টা করছি। আমি একটা সুস্থ, স্বাভাবিক জীবন কাটাতে চাই তোমার সাথে। আমি তোমাকে ভালোবাসতে চাই আহি, সারাজীবন তোমার ভালো থাকার দায়িত্ব নিতে চাই। আমি ফিরে আসতে চাই আমার আসল সত্তায়। আমার সব ভুল শুধরে নিতে চাই। আমি তোমার প্রাপ্যটুকু তোমায় ফিরিয়ে দিতে চাই। তোমার যোগ্য স্থান, যোগ্য সম্মান, যোগ্য ভালোবাসা সবটাই ফিরিয়ে দিতে চাই। তুমি কি গ্রহণ করবে ? দেবে আমায় আর একটি সুযোগ’?
চলবে…