ওহে প্রিয় পর্ব-৪১

0
1363

#ওহে_প্রিয়
#জান্নাতুল_নাঈমা
#পর্ব_৪১ (প্রথম অংশ)
_________________
নারী চরিত্রটি বড়ো রহস্যপূর্ণ। শুরু থেকেই এই সত্যিটা মেনে আসছে হ্যাভেন৷ এতো কিছু ঘটে যাওয়ার পরও এই ধারণাটি থেকে এক চুল পরিমাণও মনচ্যুত হয়নি তার। গতকাল থেকে একটি বারের জন্যও আহির সামনে যায়নি সে। এমন কি খাবারটা অবদি আলাদা রুমে খেয়েছে। তাই বলে আহিকে না দেখেও থাকতে পারেনি। আড়াল থেকে ঠিক লক্ষ্য করেছে। সেই সাথে লক্ষ্য করেছে আহির আকাঙ্ক্ষণীয় দৃষ্টিজোড়াকে। সে দৃষ্টিজোড়াতে যতোবার নিজ দৃষ্টি নিক্ষেপ করেছে ততোবার তার বুক কেঁপে ওঠেছে৷ রহস্য! বিরাট রহস্য লুকিয়ে আছে ঐ দৃষ্টিজোড়ায়। সে রহস্য উদঘাটন না করা অবদি কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না বলে মনে করছে হ্যাভেন৷
.
সন্ধ্যায় রিদির হলুদ সন্ধ্যা পার্লারের মেয়েরা তাকে সাজাতে ব্যাস্ত৷ আর বাড়ির মেয়েরা নিজেরা সাজতে ব্যাস্ত। কিন্তু এসবে মন বসাতে পারেনি আহি। গতকাল নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করা এতোটাই দুরূহ হয়ে গিয়েছিলো যে আবারও হ্যাভেনের সঙ্গে বাজে আচরণ করে ফেলেছে। সেটা নিয়েই রাত থেকে প্রচন্ড গিল্টি ফিল হচ্ছে। এতোটা গিল্টি ফিল হতো না যদি না হ্যাভেন স্বাভাবিক থাকতো৷ বরাবরের মতোই তার সামনে আসতো তার দিকে একটি বার মোহিত দৃষ্টিতে তাকাতো ইভেন একটুখানি কেয়ার নিতো তার। বুকটা পুড়ছে খুব কেমন যেনো একটা ভয় কাজ করছে মনে। কিন্তু ভয়টা কি নিয়ে সঠিক বুঝতে পারছেনা। নাকি বুঝতে চাইছেনা তার অবচেতন মন যে হ্যাভেনের থেকে দূরে যেতে বা হ্যাভেনকে হারিয়ে ফেলতে চাইছেনা৷ এটা কি বুঝতে পারছেনা সে? যদি বুঝে যায় তাহলে তো মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, এতো অপরাধের পরও মানুষ’টার থেকে দূরে যেতে, মানুষটাকে হারিয়ে ফেলার এতো ভয় কেনো? এর যৌক্তিক কারণ কি? মানুষ টা তার হাজব্যান্ড তাই? নাকি মানুষটাকে সে অন্তর থেকেই ভালোবেসে ফেলেছে? অন্যায়কারীকে শাস্তি তখন দেওয়া যায় যখন মানুষ অন্যায় করে সে অন্যায়কেই সমর্থন করে। কিন্তু একজন মানুষ যখন প্রতিটা মূহুর্তে তার করা অন্যায়ের জন্য অনুতপ্ততার আগুনে পুড়তে থাকে এটাই কি তার সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারেনা? অপরজন শাস্তি দেওয়ার চেয়ে নিজে নিজেই শাস্তি ভোগ করার মতো বড় শাস্তি আর হতে পারে নাকি?

রিদির রুমের জানালা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে একমনে নিজের মনের সাথে বিদ্রোহ করে চলেছে আহি। এমন সময় হঠাৎই তার দৃষ্টিজোড়া এক জায়গায় স্থির হয়ে যায়।

দুপুরের খাবার খেয়ে দিলারা ভবনের পিছনে বিস্তর জায়গার এক পাশে মাচার ওপর বসে আছে হ্যাভেন। এক হাঁটু লম্বা করে মেলে দিয়ে আরেক হাঁটু ভাঁজ করে তার ওপর এক হাত ঠেস দিয়ে বসে আছে। আহির মতোন তারও নিজ মনের সাথে বিদ্রোহ চলছে। পার্থক্য এটুকুই তার মনের যুদ্ধ, বিদ্রোহ বাহির থেকে একটু হলেও আচ করা যাচ্ছে। আর আহির বিদ্রোহগুলো নিরবঘাতক হিসেবে অবস্থান নিয়েছে। হ্যাভেনের চারপাশে পুরোটাই ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে। আহি নিজের দৃষ্টিজোড়া তীক্ষ্ণ করে চেয়ে বুঝলো হাঁটুর ওপর রাখা হাতটিতে সিগারেটের শেষ অংশটুকু রয়েছে। আশেপাশে নজর বুলিয়ে দেখলো হ্যাভেনের থেকে খানিকটা দূরে হ্যারি কয়েকজন ছেলের সঙ্গে কথা বলছে। ড্রাইভার তমাল পুকুরে ছিপ ফেলেছে। সবার অবস্থান দেখে নিয়ে আবারো হ্যাভেনের দিকে দৃষ্টি স্থির করলো। হ্যাভেন এক ধ্যানে চেয়ে আছে। বিস্তর জায়গাটির শেষ সীমানা অবদি হয়তো পৌঁছে গেছে তার দৃষ্টিজোড়া। চোখ বুজে এক দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো আহি। জানালার গ্রিলে শক্ত করে ছুঁয়ে আবারও তাকালো হ্যাভেনের পানে। ঠিক সেসময়ই হিয়া দরজার সামনে দাঁড়িয়ে চেঁচিয়ে বললো,

-‘ এই যে ভাবি সাহেবা কি ব্যাপার আপনি রেডি হবেন না ‘?

চমকে ওঠলো আহি পরোক্ষণেই নিজেকে ধাতস্থ করে নিয়ে মলিন হেসে বললো,

-‘ আমি এভাবেই ঠিক আছি হিয়া। তোমায় কিন্তু খুব সুন্দর লাগছে ‘।

এগিয়ে এলো হিয়া আহিও কয়েক কদম এগিয়ে দাঁড়ালো। হিয়া বললো,

-‘ থ্যাংকিউ ভাবি এবার তুমি জলদি রেডি হয়ে নাও তো৷ রিদির কাবার্ডে তোমার শাড়ি প্লাস জুয়েলারি সব রেডিই আছে ‘।

-‘ প্লিজ বোন আমার বোঝার চেষ্টা করো ‘।

আহির কথার প্রতুত্তরে হিয়া বায়না শুরু করে দিলো তাকেও শাড়ি পড়তে হবে। অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার পূর্বেই যেনো আহি রেডি হয় এই অনুরোধও করতে থাকলো। যদিও মন সায় দিচ্ছিলো না তবুও হিয়ার জোরাজুরিতে আহি রাজি হয়ে গেলো।
.
বাসন্তী রঙের লাল পাড়ের শাড়ি পড়েছে হিয়া। সাথে ম্যাচিং জুয়েলারিও। শুধু সে নয় বাড়ির প্রতিটি সদস্যই আজ লাল হলুদের সংমিশ্রণে থাকবে৷
কতো মাস হয়ে এলো শাড়ি পড়ে না আহি৷ সে হয়তো জানেওনা এক জোড়া কাতর দৃষ্টি সর্বক্ষণ তাকে শাড়ি পড়িহিতা অবস্থায় দেখতে চায়৷ সে হয়তো জানেওনা একটি বার শাড়ি পরিহিতা আহিকে দেখার জন্য অধীর আগ্রহে বসে আছে মানুষ টা৷ তাই তো বোনদের আদেশ দিয়েছে আজ,কাল,পরশু সকলকেই শাড়ি পড়তে যাতে করে তারা আহিকেও জোর জবরদস্তি করে শাড়ি পড়াতে পারে৷ আর সেও পারে আড়াল থেকে তার চোখের তৃষ্ণা মেটাতে।
_______________
গায়ে হলুদের সকল নিয়মকানুন শেষে রিদিকে গোসল করাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওঠানে প্যান্ডেলের ভিতরে চেয়ার পেতে বসে আছে সকলেই। চলছে আড্ডা। এসব আড্ডায় সকলে উপস্থিত থাকলেও উপস্থিত নেই রিজভী এবং হ্যাভেন৷ তারা দুজন ড্রয়িংরুমের সোফায় বসে টুকটাক কথাবার্তা বলছে। আড্ডার আসর ছেড়ে হিয়া ওঠে গেলো ড্রয়িং রুমে। কারণ সে জানে বাড়ির ভিতরেই রয়েছে তার একমাত্র মামার আদরের বড় ছেলেটা। এই একটা মানুষের জন্যই মাসের পর মাস সে মামার বাড়ি পরে থাকে৷ এই একটা মানুষের জন্যই ভার্সিটিতে কোন ছেলের প্রপোজ একসেপ্ট করেনি কখনো। অথচ এই ছেলেটা তাকে এক মূহুর্তের জন্যও কখনো পাত্তা দিলো না। অসহ্য লাগে খুব অসহ্য লাগে। এই যে আজ সে শাড়ি পড়েছে কার জন্য পড়েছে এই মানুষ’টার জন্যইতো। অথচ সেদিকে মানুষ’টার একটুখানি নজরও নেই। একটাবার তাকায়নি অবদি। এতো কষ্ট করে শাড়ি পড়েছে কাঙ্ক্ষিত মানুষ টা এক পলক তাকালেওতো মনকে শান্ত করা যেতো তাইনা?

ড্রয়িং রুমে প্রবেশের মূহুর্তেই রিজভী আর হ্যাভেনকে দেখে বিরক্তিতে কপাল কুঁচকে গেলো হিয়ার।
“ওখানে বাড়ির সকলে কতো মজা করছে আড্ডা দিচ্ছে আর এই দুই এলিয়েন এখানে বসে গুজুরগুজুর ফুসুরফুসুর করছে হুহ” ভেবেই কয়েক কদম এগিয়ে গেলো। রিজভীর সঙ্গেও চোখাচোখি হয়ে গেলো কয়েক সেকেন্ডের জন্য। সঙ্গে সঙ্গে রিজভী ত্বরিত গতিতে চোখ সড়িয়ে নিলো। যেনো আর একটিবার হিয়ারপানে তাকালে তাকে কেউ মৃত্যুদন্ড দিয়ে দেবে৷ তার এই অসহ্য ভাবটাকে হিয়া মনে মনে ভয়ংকর এক গালি দিয়ে ঠোঁট ফুলিয়ে আহ্লাদী সুরে হ্যাভেনকে উদ্দেশ্য করে বললো,

-‘ দাদান কেমন লাগছে আমায় বললে না তো ‘?

রিজভী আশপাশে চোখ ঘোরাতে ঘোরাতে পকেট থেকে ফোন করে সেথায় মন দিলো। আর হ্যাভেন বোনের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো,

-‘ ফাইন লাগছে ভেরি বিউটিফুল ‘।

হিয়া আড়চোখে রিজভীর দিকে চেয়ে উচ্চকন্ঠে বললো,

-‘ সত্যি ভালো লাগছে তো? আমি কিন্তু আজ ফার্স্ট টাইম শাড়ি পড়েছি ‘।

হ্যাভেন তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চেয়ে গম্ভীর কন্ঠে বললো,

-‘ এখান থেকে যা ‘।

হকচকিয়ে গেলো হিয়া। রিজভীও মনে মনে ভীষণ অপ্রস্তুত হয়ে গেলো। হ্যাভেনের দৃষ্টি তখনো বোনের দিকে তীক্ষ্ণ। হিয়া এক ঢোক গিলে আমতা আমতা করে বললো,

-‘ আমিতো পানি খেতে এসেছিলাম। যাই পানি খাই তোমরা কথা বলো,কথা বলো ‘। বলেই জোর পূর্বক ঠোঁটে হাসি টেনে ডাইনিং টেবিলের কাছে গিয়ে এক গ্লাস পানি ভরে ঢকঢক করে পানিটা খেয়ে নিয়ে বুকে হাত চেপে লম্বা এক শ্বাস ছাড়লো।
.
সকল ভাই,বোনরা মিলে আড্ডা দিচ্ছে তাদের সঙ্গেই বসে আছে আহি। হ্যাভেন বসার রুম থেকে আহিকে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে। হলুদ রঙের জরজেট শাড়ি পড়িহিতা আহিকে দেখতে বেশ সুশ্রী লাগছে। খোলা চুলে হলুদ শাড়ি, দু’হাত ভর্তি হলুদ রঙের ব্রাইডাল চুড়ি, ধূসর রাঙা দৃষ্টিজোড়ায় গাঢ় কাজলের স্পর্শ,ঠোঁট ভর্তি গাঢ় গোলাপি লিপস্টিক, এক কথায় হার্ট ব্লক হয়ে যাওয়ার উপক্রম সুন্দর লাগছে আহিকে। মেয়েটাকে সাজহীন যেমন স্নিগ্ধ, শুভ্র লাগে তেমন সাজলে লাগে মুগ্ধ ও মোহনীয়। একজোড়া চোখ গিলে খাচ্ছিলো আহিকে। যা আহি টের না পেলেও শিফার নজরে সহজেই ধরা পড়ে গেলো। শশী পাশের বাসার কয়েকটা মেয়ের সঙ্গে গল্প করছিলো।আহিও তাদের সঙ্গে টুকটাক কথা বলছিলো। হ্যারি,হিরা,আর রিমন তাদের থেকে এক হাত দূরে বসে কিসব বাজি টাজি ধরছে। সকলের দিকে নজর বুলিয়ে আহির পাশে ঘেষে বসলো শিফা। বললো,

-‘ শুনলাম তোমাদের বিয়েটা স্বাভাবিক বিয়ে ছিলো না’।

আহি চমকে তাকালো শিফার দিকে। আহির চমকানো দেখে কুটিল হাসলো শিফা। বললো,

-‘ মানতেই হবে বেশ রূপবতী তুমি। কিন্তু জানতো রূপবতী নারীদের ভাগ্য ভীষণ খারাপ হয় ‘।

ভ্রু কিঞ্চিৎ কুঁচকে ফেললো আহি কিছু বলতে উদ্যত হতেই শিফা বললো,

-‘ বুঝলে না তো? এই দেখো রূপ আছে তোমার গুণও তো কম নেই তাইনা? শুনেছি একা হাতে সংসার সামলানোর যোগ্যতা রয়েছে, শিক্ষিতও হচ্ছো, পারিবারিক অবস্থা আমাদের মতোন না হলেও খুব একটা খারাপ নয়। কিন্তু ভাগ্য দেখো কোথায় নিয়ে এলো তোমায় ‘।

-‘ হুম ভাগ্যটা সবার সমান হয় না আপু। আমাদের পুরো জীবনের একাংশে দুঃখ থাকে আরেক অংশে সুখ থাকে। যদি শুরুর অংশে দুঃখ থাকে তাহলে শেষটা অবশ্যই সুখময় হবে আবার যদি শুরুটা সুখে সুখেই কাটে তাহলে শেষ জীবনে দুঃখ পেতে হবে।এটাই চির ধারিত নিয়ম। দূর থেকে হয়তো সবাইকে সুখী মনে হবে কিন্তু ভিতরটা খুঁজতে গেলে ঠিক বুঝতে পারবেন এই পৃথিবীতে কেউ সুখী নয়৷ কোন না কোন দিক দিয়ে কেউ না কেউ ঠিক দুঃখী জীবন পার করছে। এই যেমন ধরুন আপু আপনিও কিন্তু সুখী নন’।

-‘ মানেহ!

-‘ জ্বি আপু বুঝিয়ে বলছি এই দেখুন না আপনিও কিন্তু কম সুন্দরী নন। একটু আগেই বললেন সুন্দরী মেয়েদের ভাগ্য খারাপ হয়। তার মানে আপনার ভাগ্যটাও ভীষণ খারাপ। আপনিও ভীষণ অসুখী’।

প্রচন্ড দাম্ভিকতার সুরে শিফা বললো,

-‘মোটেই নয় আমার সব আছে সব সুখী আমি ভীষণ সুখী। টাকা,পয়সা,রূপ,গুণ,ক্ষমতা কিছুরই অভাব নেই আমার ‘।

-‘ অনেক বড় একটা অভাব যে আপনার চোখে, মুখে ফুটে ওঠেছে আপু ‘।

-‘ মানে কি বলছো তুমি ‘?

-‘ ইয়েস এই দেখুন না মাত্র বিশ বছর বয়সে আমার স্বামী,সংসার সব হয়েছে সুখী হওয়ার জন্য বেশী কিছুর প্রয়োজন তো নেই তাইনা। অথচ পঁচিশ বছর বয়সে এসেও আপনি এক মরিচীকার পিছনে ছুটে বেড়াচ্ছেন। তার সুখ দেখে অন্তর জ্বালিয়ে ঝাঁজরা করে দিচ্ছেন। আপনার এই দঃখ দেখে সত্যি আমার খুব খারাপ লাগছে আপু ‘।

ফুঁসে ওঠলো শিফা দাঁতে দাঁত চেপে বললো,

-‘ এমন ভাব করছো যেনো তোমরা দুজন দুজনকে ভালোবেসে বিয়ে করেছো। আর তোমাদের সম্পর্কটা খুব মধুর ‘।

তাচ্ছিল্যে হাসলো আহি। বললো,

-‘ ভালোবেসে বিয়ে করি বা না করি সম্পর্কে তো জরিয়েছিই। আর রইলো সম্পর্ক মধুর না বিষের তা আমি আপনাকে তখন বোঝাতাম যদি আপনি ইমম্যাচিওর হতেন৷ যেহেতু ম্যাচিওর সেহেতু বোঝানোর প্রয়োজন মনে করছিনা। শুধু এটুকু বলি আমি আমার হাজব্যান্ডকে সব ধরনের সুখ দিতেই সক্ষম। হয়তো এখন আমাদের মধ্যে বোঝাপড়া চলছে তাই বলে এই নয় আমরা সুখী দাম্পত্য জীবন কাটাতে পারবো না। আমি চাইলেই সব সম্ভব’।

দৃঢ় চোখে চেয়ে দৃঢ় কন্ঠে কথাগুলো বলেই ওঠে পড়লো আহি। আর এক মূহুর্তও সেখানে দাঁড়ালো না সে দ্রুত ভিতরে চলে গেলো। দুহাত মুঠ করে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলো শিফা। ভেবেছিলো মেয়েটাকে বেশ নাস্তানাবুদ করবে সেই সাথে হ্যাভেন থেকে যেনো আরো দূরে সরে যায় সেই উৎসাহ দেবে। কিন্তু মেয়েটা এতো বুদ্ধিমতি সেই সাথে এমন খোঁচা দিয়ে দিয়েও কথা বলতে পারে জানা ছিলো না। সকলের মুখে মেয়েটার সম্পর্কে যা শুনেছিলো আর আজ যা দেখলো এবং শুনলো তাতে অনেকটা দমেই গেলো সে৷
.
হ্যাভেন বসার ঘর থেকে বাইরে বের হওয়ার জন্য দরজার সামনে আসতেই আহির মুখোমুখি হলো। আহির দিকে চেয়ে নিচু স্বরে বলতে চাইলো,
‘অনেকদিন পর শাড়ি পড়েছো খুব সুন্দর লাগছে’ কিন্তু মুখ থেকে বের হলো,

-‘শাড়ি পড়েছো ‘?

অতিরিক্ত উত্তেজনায় থাকলে এমনটিই হয়৷ আমরা যখন অতিরিক্ত উত্তেজনায় থাকি তখন বলতে চাই এক আর হয়ে যায় আরেক। এমনটিই হয়েছে হ্যাভেনের সঙ্গে। এমনিতেই মেজাজ চটে আছে আহির। শিফার আচরণ একদমই ভালো লাগছেনা তার। শিফা তাকে লাকড়ি দিয়ে খোঁচাতে এসেছিলো তাই সে কাঁটা দিয়ে খুঁচিয়ে রক্তাক্ত করে এসেছে একদম। অস্বাভাবিক ভাবে মাথা বিগরে আছে এ মূহুর্তে। তাই এমন একটা পরিস্থিতি তে হ্যাভেনের করা উদ্ভট প্রশ্নটি চরম পর্যায়ে রাগ তুলে দিলো। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে চোখ কটমট করে তাকিয়ে দাঁত চিবিয়ে চিবিয়ে উত্তর দিলো,

-‘ কেনো আপনি কি আমাকে নাইটি পড়া দেখতে পাচ্ছেন ‘?

চলবে….

#ওহে_প্রিয়
#জান্নাতুল_নাঈমা
#পর্ব_৪১ (শেষ অংশ)
-‘ কেনো আপনি কি আমাকে নাইটি পড়া দেখতে পাচ্ছেন’?

নির্বোধের মতো প্রশ্ন করে মনে মনে ভীষণ লজ্জা পেলো হ্যাভেন৷ সেইসাথে আহির দেওয়া উত্তরটি শুনে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো। মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি এলো খুব। নিজের মতোন করে একটি উত্তর দিয়ে ভীষণ লজ্জায় ফেলতে মন চাইলো আহিকে। কিন্তু পারলো না। আহির মেজাজ যে খানিকটা চটে আছে তা তার মুখশ্রী তে চোখ বুলিয়েই টের পেলো। তাই আহির তীক্ষ্ণ দৃষ্টিজোড়ায় শীতল দৃষ্টি মিলিয়ে বুঝিয়ে কিছু বলতে যাবে তৎক্ষনাৎ পাশ কাটিয়ে চলে গেলো আহি। প্রচন্ড অপমানবোধ করলো হ্যাভেন। চোখ বুজে ছোট্ট একটি শ্বাস ত্যাগ করে বেরিয়ে গেলো সেও।
__________________
রাত তখন আটটা ছুঁই ছুঁই। রিদি নানুমনির কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে। পাশে শশী আর শিফা বসে আছে। তারা চারজন মিলে গল্পগুজব করছে। হ্যারি,হিরা, রিমন ছাদে সাউন্ড বক্স বাজাচ্ছে। রিদির মামি, মামাতো ভাই,বোন এবং মা,চাচি,ফুপুরা টুকটাক কাজের পাশাপাশি গল্প করছে। ছোট ছোট বাচ্চা’রা হৈচৈ করছে। হঠাৎই নানুমনি হিয়ার কথা জিগ্যেস করলো। তখনি টনক নড়লো সবার। সত্যি বেশ অনেকক্ষণ যাবৎ হিয়াকে আশেপাশে কোথাও দেখতে পায়নি তারা। শশী চট করে হিয়ার ফোনে কল করলো তিন,চার বার বেজে কেটেও গেলো ফোনটা ধরলো না। নানুমনি তখন আহির কথাও জিগ্যেস করলো এবং ফোন করে তার ঘরে আসতে বললো। শশী আহিকে ফোন করে দেখলো নাম্বার ওয়েটিংয়ে রয়েছে। দশমিনিট বাদে আবারও কল করলো তখনো ওয়েটিং। শিফা বিষয় টাকে জটিল করার পরিকল্পনা করে ওদের থেকে দূরে সরে হ্যাভেনকে কল করে জিগ্যেস করলো,

-‘ শোনো না আমরা অনেকক্ষণ যাবৎ আহিকে কল করছি পাচ্ছি না তুমি কি একবার ট্রাই করে দেখবে’?

-‘ কথা বলার জন্য এই বাহানা ছাড়া অন্য বাহানা খুঁজে পেলি না নিশ্চয়ই? তোরা ফোন করেই পাচ্ছিস না আর আমি ফোন করে পাবো? দিবাস্বপ্ন দেখাতে আসছিস ফোন কাট’।

হ্যাভেনের ধমকে কেঁপে ওঠলো শিফা নাক,মুখ কুঁচকে সটান সটান পা ফেলে আবারো নানুমনির কাছে এসে বোনদের পাশে বসলো।
.
শিফাকে ধমক দিয়ে ফোন কেটেই আহির ফোনে কৌতূহল বশে কল করলো হ্যাভেন কিন্তু ওয়েটিং পেলো। ভ্রুযুগল কুঁচকে বাড়ির ভিতর ঢুকতে ঢুকতে ড্রাইভার তমালকে বললো,

-‘ আজ আর বাইরে যাবো না গাড়ি ওঠিয়ে রাখো ‘।

ওঠানে মানুষে গিজগিজ করছে। গ্রামের বিয়ের আমেজ টা সত্যি অসাধারণ। সব মহিলারা বিয়ের আগের রাতে একসঙ্গে বসে কাজ করে। তাদের মধ্যে চলে নানারকম হাসি-ঠাট্টা। সকলের দিকে অল্প সময় চোখ বুলিয়ে ভিতরে চলে গেলো হ্যাভেন। উদ্দেশ্য রিদির রুম কারণ সেখানেই রয়েছে আহি। রিদির রুমের দরজার কাছে যেতেই দেখতে পেলো আহি পুরো রুমে পাইচারি করছে আর হেসে হেসে ফোনে কথা বলছে। যতোদূর বুঝলো অনার সঙ্গেই কথা বলছে সে। তাই আর এগিয়ে গিয়ে ডিস্টার্ব করলো না। তবে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আহির হাস্যজ্জ্বল চেহেরাটা উপভোগ করতে লাগলো।
.
একঘন্টার বেশী সময় ধরে রিজভীর রুমে বসে আছে হিয়া। রিজভী গম্ভীর ভঙ্গিতে বেতের সোফায় বসে দৃষ্টিজোড়া স্থির রেখেছে মেঝেতে। একঘন্টা যাবৎ হিয়া অনেক কথা বললেও রিজভী শুধু একটি বাক্যই উচ্চারণ করেছে আর তা হলো,

-‘ বেরিয়ে যা রুম থেকে ‘।

কিন্তু হিয়া নাছোরবান্দা সে আজ রিজভীর থেকে সব প্রশ্নের উত্তর না নিয়ে যাবেই না৷ সে প্রশ্ন গুলো হচ্ছে – তার দিকে কেনো একটিবার চেয়ে দেখে না রিজভী?, এতোগুলো বছর ধরে মনের কথা জানিয়ে আসছে সে রিজভীকে। ভালোবাসে সে ভীষণ ভালোবাসে ভীষণ চায় তাহলে কেনো রিজভী তাকে একসেপ্ট করে নেয় না। হাজার বার আই লাভ ইউ বাক্যটি শুনেও একটিবার কেনো বলে না আই লাভ ইউ হিয়া। এই যে সে আজ শাড়ি পড়েছে এখন অবদি খোলেনি৷ বার বার বলছে একটি বার পূর্ণ দৃষ্টি মেলে তার দিকে তাকাতে তবুও কেনো একটিবার তাকাচ্ছে না রিজভী? তার মনে কি অন্যকারো বাস রয়েছে যদি তাই হয়ে থাকে স্পষ্ট ভাবে কেনো বলছে না? সব উত্তর তার আজ চাই, চাই মানে চাই।

বিছানায় চুপটি করে বসে ছিলো হিয়া। এক পর্যায় অধৈর্য হয়ে ওঠে গিয়ে রিজভীর সামনে মেঝেতে হাঁটু মুড়িয়ে বসে পড়লো। এবারে রিজভীর দৃষ্টি হিয়ার দিকে কিছু সময়ের জন্য পড়লেও আবারও দৃষ্টি সড়িয়ে নিলো রিজভী। খুব কান্না পেয়ে গেলো হিয়ার। ইচ্ছে করলো রিজভীর সব চুল টেনে ছিঁড়ে ফেলতে৷ নিজেকে কোনরকমে সংযত করে বললো,

-‘ তোমার মতোন গোমড়ামুখে আর দুটো দেখিনি আমি। এতো ভাব দেখাও কেনো হুম? বাড়িতে অফিসে সবজায়গাই কি এই ভাবটা দেখাও নাকি ভাবটা শুধু আমার জন্যই বরাদ্দ ‘?

ডান পাশের দেয়ালে দৃষ্টি স্থির রেখে রিজভী উত্তর দিলো,

-‘ দেখ হিয়া বাড়াবাড়ি না করে বের হো রুম থেকে। কেউ দেখলে বিপদ ঘটে যাবে ‘।

-‘ ঘটে যাক বিপদ আজ আমি একটা বিপদ ঘটিয়েই ছাড়বো যদি না আমার করা প্রশ্ন গুলোর উত্তর পাই। দেখো তুমি যদি অন্য কাউকে ভালোবেসে থাকো ক্লিয়ারলি জানাও আমাকে। চলে যাবো চিরজীবনের জন্য তোমার জীবন থেকে বিদায় নেবো আমি। কিন্তু এভাবে চুপ থেকে আমাকে শাস্তি দিও না প্লিজ ‘।

বুকটা কেঁপে ওঠলো রিজভীর। তবুও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে নিয়ে বললো,

-‘ হ্যাঁ আমি অন্যকাউকে ভালোবাসি ‘।

চমকে ওঠলো হিয়া বসা থেকে ওঠে দাঁড়িয়ে রিজভীর দুগালে স্পর্শ করে ক্রন্দনরত কন্ঠে বললো,

-‘ আমার চোখের দিকে চেয়ে একটিবার এ’কথাটি বলো ‘।

বুকটা হুহু করে ওঠলো রিজভীর। হিয়া জোরপূর্বক রিজভীকে নিজের দিকে ফেরালো। দুজনের দৃষ্টিজোড়া স্থির হয়ে গেলো দু’জনাতে। হিয়া কন্ঠে কাতরতা মিশিয়ে বললো,

-‘ বলো অন্যকাউকে ভালোবাসো ‘?

-‘ ভালোবাসি ‘।

ডুঁকরে কেঁদে ওঠলো হিয়া। রিজভীকে ছেড়ে শাড়ির আঁচলে মুখ চেপে সেখান থেকে দৌড়ে চলে যেতে উদ্যত হতেই শাড়ির আঁচল টেনে ধরলো রিজভী। থমকে দাঁড়ালো হিয়া। রিজভীও দাঁড়িয়ে পড়লো হিয়ার দিকে কয়েককদম এগিয়ে গিয়ে সম্মুখে দাঁড়িয়ে বললো,

-‘ এভাবে কাঁদছিস কেনো? আমিতো বললাম ভালোবাসি যেটা শুনার জন্য এতোকাল অপেক্ষা করেছিস ‘।

ঠোঁট ফুলিয়ে হুহু করে কেঁদে ওঠলো হিয়া। তার সে কান্নায় আরো দ্বিগুণ দূর্বল হয়ে পড়লো রিজভী আচমকাই প্রচন্ড শক্ত করে জরিয়ে ধরলো হিয়াকে। দু’জনই দুজনাতে এতোটাই মগ্ন হয়ে গেলো যে আশেপাশের আর কিছুতে কারো নজর ছিলো না। রিজভী বললো,

-‘ এই সম্পর্ক’টা কেউ মেনে নেবে না হিয়া। তুই কেনো পাগলামি করলি? কেনো আমায় এভাবে কাছে টেনে নিলি’?

-‘ ভালোবাসি খুব ভালোবাসি আর কিছু জানিনা আমি ‘।

মাথায় পরপর তিনটা কিস করে হিয়ার গালদুটো নিজের হাতের আঁজলে নিয়ে নিলো রিজভী। কপালে ওষ্ঠ ছুঁইয়িয়ে বললো,

-‘ অনেক বড় ঝড় আসবে হিয়া ‘।

-‘ কিছু হবেনা দাদানকে বুঝাতে পারলেই সব ঠিক হয়ে যাবে ‘।

হিয়ার এতো পাগলামি এতো কনফিডেন্সের ওপর আর কোন কথা রাখতে পারলো না রিজভী। এতো দিনের চেপে রাখা সকল অনুভূতি’কে উজার করে দিতে লাগলো তার ওষ্ঠজোড়ায় লিপ্ত হয়ে।
.
রিদির রুম আর রিজভীর রুমটি পাশাপাশি। রিদির রুমে যেতে হলে আগে রিজভীর রুম পড়ে। আর রুম থেকে চলে যেতে হলে রিজভীর রুমের সামনে দিয়েই যেতে হয়। হ্যাভেন রিদির রুমের সামনে থেকে সরে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো। রিজভীর রুমের দরজা লক করা থাকলেও জানালা খোলাই ছিলো। যার ফলে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবেই রিজভী এবং হিয়াকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলে হ্যাভেন। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলো না হ্যাভেন। হিয়ার প্রতি বিশ্বাস, ভরসা কোনটা না থাকলেও রিজভীর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস ছিলো তার। সে বিশ্বাসে যেনো নিমিষেই ফাটল ধরে গেলো। সেই সাথে মাথায় রক্তও চড়ে গেলো। চোখ দুটো হয়ে ওঠলো রক্তিম। হিয়া তার বোন। রিজভী তার মামাতো ভাই। দুজন মানুষ দুজন মানুষ কে পছন্দ করতেই পারে তাই বলে এতোটা অধঃপতন। নিজের বোনকে কোন ছেলের সঙ্গে এমন অবস্থায় দেখলে কোন ভাই’ই সহ্য করতে পারবেনা। যদি হয় হ্যাভেনের মতোন ডেঞ্জারাস পার্সন তাহলেতো কখনোই না। প্রচন্ড হিংস্রতার সঙ্গে দরজার সামনে গিয়ে গায়ের সর্বস্ব শক্তি দিয়ে আঘাত করতে শুরু করলো হ্যাভেন। হতভম্ব হয়ে রিজভী,হিয়া দুজনই ছিটকে সরে গেলো। হিয়ার শরীরে কম্পন ধরে গেলো কেমন। ঘামতে থাকলো রিজভীও। তবুও চোখ বুজে হিয়াকে ভরসা দিয়ে দরজা খুলে দিলো। সঙ্গে সঙ্গে হ্যাভেন রিজভীর নাক বরাবর এক ঘুষি দিয়ে রক্তাক্ত করে ফেললো। এবং ক্রমান্বয়ে আঘাত করতেই থাকলো। হিয়া চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করে দিলো। এতো শব্দ শুনে আহিও রুম ছেড়ে দৌড়ে বেরিয়ে রিজভীর রুমে ঢুকলো আর দেখতে পেলো হ্যাভেনের ক্ষিপ্ত রূপ। রিজভীকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে সমান তালে মেরেই যাচ্ছে। উপায় না পেয়ে আহি হিয়া দুজনই ছাড়াতে চেষ্টা করলো হ্যাভেনকে। এক পর্যায়ে হিয়া চিৎকার করে বললো,

-‘দাদান ওর কোন দোষ নেই আমি ওকে ভালোবাসি আমি নিজে থেকেই ওর কাছে এসেছি ‘।

চোখ বড় বড় হয়ে গেলো আহির। সেইসাথে নিজেই ভয়ে থরথর করে কাঁপতে শুরু করলো। হিয়ার কথা শুনে হ্যাভেন রিজভীকে মারা স্টপ করে হিয়াকে ঠাশিয়ে এক থাপ্পড় মারলো। বিনিময়ে মেয়েটা মেঝেতে মুখ থুবড়ে পড়ে গেলো। হ্যাভেন আবারো ওকে ওঠিয়ে থাপ্পড় দিতে যেতেই আহি হ্যাভেনের হাত টেনে ধরলো। হ্যাভেন এতোটাই ক্ষিপ্ত হয়ে ছিলো যে হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হয়ে গেছিলো তার তাই ক্রোধের বশে আহিকে এক ধাক্কা মেরে চিৎকার করে বললো,

-‘ এই তোর এখানে কি এখুনি বের হো রুম থেকে’।

স্টিলের মোড়ার সঙ্গে কপালে বাড়ি খেয়ে মেঝেতে পড়ে গেলো আহি। অসহনীয় ব্যাথায় আর্তনাদ করে ওঠলো সে।

আহির আর্তনাদ শুনে স্তব্ধ হয়ে যায় হ্যাভেন কয়েক সেকেন্ড স্তব্ধতায় কাটিয়ে ছুটে গিয়ে ‘আহি’ বলেই চিৎকার করে ওঠে। হিয়াও ভাবি বলে ছুটে যায় কাছে। কিন্তু হিয়া আহিকে স্পর্শ করার আগেই হ্যাভেন হিয়াকে এক ধাক্কায় সরিয়ে দেয় চিৎকার করে বলে,

-‘ এই ওকে একদম স্পর্শ করবিনা তুই ‘।

চলবে…
ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।