কাননে ফুটিল ফুল পর্ব-১৯

0
152

কাননে ফুটিল ফুল — ১৯ (১৬০০+ শব্দ)

সাব্বির দেখল, রায়হানের কথায় যুক্তি আছে। ও রওয়ানা হতে চাইল। কিন্তু এবার গো ধরে বসে থাকল নৈশী। হাসপাতাল থেকে সে কিছুতেই বাসায় যাবে না।

সাব্বির, রায়হান, আফরোজা বেগম অনেক করে বোঝালেন কিন্তু তাতে কোনো কাজ হলো না। নৈশীর এক কথা, সে সারজিমের কাছেই থাকবে।

রায়হান বলল, “নৈশী, একটু বোঝার চেষ্টা করো বোন, তোমার এই অবস্থায়..।”

“প্লিজ রায়হান ভাই, এই অবস্থার দোহাই আর দেবেন না। গর্ভাবস্থায় সব মেয়েরাই আরামের জীবন পায় না। বিদেশে আমি বহু মেয়েদের দেখেছি যারা প্রেগন্যান্ট অবস্থায় সকাল থেকে সন্ধ্যা অব্দি অফিস করছে, দৈনন্দিন কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি দেশে এসে আমি দেখেছি, মেয়েরা গর্ভাবস্থায় শ্রমিকের কাজ করছে, ইট ভাঙছে, বালু টানছে। তারাও তো মা হচ্ছে। আর আমি তো শুধু বসে থাকব। আল্লাহ চাইলে এতে তেমন কোনো ক্ষতি আমার হবে না।”

এমন অকাট্য যুক্তির পর কারোরই কিছু বলার রইল না। নৈশীর সাথে আফরোজা বেগমও থেকে গেলেন শেষপর্যন্ত। সাব্বিরকে বাসায় ফিরতে হলো কারণ জ্যোতি একা আছে।

আরও একটা মাস এভাবেই কাটল। সারজিমের ট্রিটমেন্টে কোনো ত্রুটি রাখা হলো না। তবুও ওর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলো না একবিন্দুও। সবাই আশা ছেড়ে দিল প্রায়। তারপর এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। যেদিন প্রথমবার রেসপন্স করল সারজিম।

এতগুলো মানুষের প্রার্থনা বিফলে গেল না। আশা ছেড়ে দেওয়া ডাক্তারও আশাবাদী হলেন আবার। এভাবে আরও কতগুলো দিন কাটল। এবং অবিশ্বাস্যভাবে আস্তে আস্তে সুস্থতার দিকে এগুতে শুরু করল সারজিম।

যেদিন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে বেডে উঠে বসল সারজিম সেদিন ওর চেহারা দেখে আফরোজা বেগম কেঁদেই ফেলতেন। যেই ছেলের হাসিমুখের দিকে নজর লাগার ভয়ে তিনি ভালো করে তাকাননি কখন। তার সেই সুদর্শন ছেলের চেহারার হাল মেনে নিতে কষ্ট হলো খুব। তবুও তিনি রবের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন। শেষপর্যন্ত আল্লাহ তার কোলে ছেলেকে ফিরিয়ে দিয়েছেন।

আনন্দঘন একটি মুহূর্ত পার হলো। নিজের সেন্সে পুরোপুরি আসার পরই সারজিম পুলিশ ডাকতে বলল৷ পুলিশকে স্টেটমেন্ট দেওয়ার সময় জানা গেল সব। সারজিম নিজেই দিল সেই লোমহর্ষক বর্ণনা।

বান্দরবান যাওয়ার পথে দুপুরের খাবার খাওয়ানোর জন্য বাস থামানো হয়েছিল ওদের। ওখানে দুপুরের খাবার খেয়ে আবার বাসে উঠতে যাচ্ছিল সারজিম। তখন একটা লোক এসে ওর সামনে দাঁড়াল। তারপর মাথাটা কেমন চক্কর দিয়ে। এরপর আর কিছুই মনে নেই ওর।

সারজিমের যখন সেন্স ফিরল তখন অন্ধকার রাত। বন্ধ গাড়ির মধ্যে হাত পা বাঁধা অবস্থায় পড়ে আছে ও। সারজিম অনেক চেষ্টা করল বাঁধন খোলার। ওর জ্ঞান ফিরেছে সেটা টের পেয়ে কয়েকজন মিলে টেনে হিঁচড়ে গাড়ি থেকে নামাল। একটা জঙ্গলের মধ্যে নিয়ে বেধড়ক মারতে শুরু করল ওকে। তখনও সারজিম জানত না ওকে কেন মারা হচ্ছে। একটা সময়ের পর শরীরে আর কোনো শক্তি অবশিষ্ট রইল না ওর। কোনো মুভমেন্ট না দেখে লোকগুলো ধরে নিয়েছিল সারজিম মরে গেছে। কিন্তু শরীরে শক্তি না থাকলেও সারজিমের মস্তিষ্ক সজাগ ছিল তখনও। ওদের নিজেদের মধ্যে বলা কথাবার্তা সবই শুনতে পাচ্ছিল সারজিম। সারজিমের সামনে বসেই ওরা কল করল একজনকে যার নির্দেশে ওরা সারজিমকে মেরেছে। মোবাইলের সেই কন্ঠস্বর শোনার সাথে সাথেই চিনতে পেরেছিল সারজিম৷ চিনবেই বা না কেন, এত বছরের বন্ধুত্ব ওদের। এই কন্ঠস্বর এর আগেও হাজারবার শুনেছে ও। আন্দালিব।

সারজিমের মুখে নামটা শোনার সাথে সাথে সবাই থমকে গেল যেন। আন্দালিবের মুখোশের আড়ালের নোংরা রূপটা সবার সামনে প্রকাশ হয়ে গিয়েছিল অনেক আগেই। কিন্তু তাই বলে মানুষ খুন করার মতো ভয়ংকরও যে আন্দালিব হতে পারে, সেটা ওদের ভাবনার উর্ধ্বে ছিল।

সারজিমের স্টেটমেন্ট অনুযায়ী পুলিশ গেল আন্দালিবকে এরেস্ট করতে। কিন্তু ততক্ষনে আন্দালিব পগারপার। জানা গেল, আরও এক সপ্তাহ আগে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গেছে আন্দালিব। সারজিমের খোঁজ পাওয়া গেছে শুনেই সম্ভবত ও বুঝতে পেরে গিয়েছিল যে ওর নামটা প্রকাশ হয়ে গেলেও যেতে পারে৷ তাই নিজের বেশিরভাগ প্রপার্টি বেচে দিয়ে চলে গেছে আন্দালিব।

২৩.

বন্ধু। খুব ছোট্ট একটা শব্দ হলেও এর পরিধি বিশাল এবং বিস্তৃত। একজন বন্ধু শুধুই বন্ধু থাকে না। সময়ের সাথে সাথে সে হয়ে ওঠে একজন বিশ্বস্ত সহযোগী, একজন শুভাকাঙ্ক্ষী। একজন বন্ধুর সামনে নিজেকে মেলে ধরা যায় খোলা বইয়ের মতো। একজন বন্ধুর সাথে নিজের হাসি আনন্দ যেমন ভাগ করে নেওয়া যায়, ঠিক তেমনি নিজের মন খারাপের গল্পগুলোও তার কাছেই অকপটে বলা যায়।

আমরা সবাই একজন ভালো মনের মানুষকে বন্ধু হিসেবে চাই সবসময়। তারপরেও মাঝে মাঝে ভুল হয়ে যায় আমাদের। বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য আমরা বেছে নেই ভুল মানুষকে। সেই ভুলের মাশুলও আমাদের দিতে হয় একটা সময়ের পরে।

একজন ভালো বন্ধু যেমন ভালো থাকার অন্যতম কারণ হতে পারে , ঠিক তেমনি একজন খারাপ বন্ধু মানুষকে পৌঁছে দিতে পারে মৃত্যুর দুয়ার পর্যন্ত।

আন্দালিবের মতো স্বার্থপর, বিশ্বাসঘাতকের সাথে বন্ধুত্ব হয়েছিল বলেই এই উপলব্ধিগুলো হলো সারজিমের।

সারজিমকে হসপিটাল থেকে রিলিজ করে বাসায় আনা হয়েছে আরও একমাস আগে। এমনিতে এখন সুস্থ হলেও পায়ে একটা ফ্রাকচার রয়েই গেছে। সেদিন রাতে মোটা লাঠি দিয়ে ওর পায়ে আঘাত করা হয়েছিল অনেকবার। এই পা ঠিক হতে অন্তত বছরখানেক সময় তো লাগবেই। স্বাভাবিকভাবে তাই হাঁটতে পারে না ও। ক্রাচের সাহায্য নিতে হয়৷

দীর্ঘ অসুস্থতায় শরীর শুকিয়ে কঙ্কালসার হয়ে গেছে। নৈশী আর আফরোজা বেগম তাই উঠেপড়ে লেগেছে সারজিমের যত্ন নিতে। নৈশীতো নিজের পুরোটা সময় সারজিমের পিছনেই ব্যয় করছে। সারজিমের দিকে তাকালে ওর কষ্ট হয় খুব। তবুও সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া আদায় করে, সারজিম সুস্থভাবে ফেরত এসেছে ওর কাছে। এই যে ঠিক আগের মতোই এখন সারজিমের বুকে মাথা রেখে ঘুমাতে পারে, এটাই অনেক নৈশীর জন্য।

সারজিম অবশ্য কেমন একটা গুটিয়ে রাখে নিজেকে। রাতে ঘুমানোর সময় নৈশীর মাথা বুকের উপর নিয়ে চুলে হাত বুলিয়ে নিজের সংকোচের কথা বলল সারজিম, “নিজেকে আজকাল খুব অকর্মন্য মনে হয় নৈশী। আম্মা অসুস্থ, তোমার এই অবস্থা। এই সময় আমার উচিৎ ছিল তোমাদের প্রতি খেয়াল রাখা, অথচ দেখ তোমাদেরই উলটো আমার দেখভাল করতে হচ্ছে।”

“তোমাকে এসব নিয়ে কে ভাবতে বলেছে? মানুষের জীবনে খারাপ সময় আসে, আবার সেই সময় চলেও যায় সারজিম। আমাদের এখন শুধু ধৈর্য ধরতে হবে ভালো সময় আসার।”

“জানো নৈশী, ওরা যখন আমাকে রাতের অন্ধকারে সেই গভীর জঙ্গলে যখন একা ফেলে গিয়েছিল তখন ভেবেছিলাম আমি মরেই যাব। তখন তোমার কথা খুব মনে পড়ছিল। আমাদের অনাগত সন্তানের কথা মনে হচ্ছিল। ভেবেছিলাম ওর মুখটা কখনও দেখতে পাব না আমি।”

নৈশী শুনতে শুনতে ওর বুকের কাছের টিশার্ট খামচে ধরল। ফোঁপানোর শব্দ পেয়ে সারজিম বলল, “একি নৈশী, তুমি কাঁদছ কেন? আচ্ছা যাও, ওসব কথা আর তুলব না। এখন তো আমাদের ভালো থাকার দিন। মন খারাপের দিনগুলোর স্মৃতি আমরা মুছে ফেলব জীবন থেকে।”

নৈশী আরও গভীরভাবে লেপ্টে গেল সারজিমের বুকে। এই উষ্ণতাটুকুর অভাবে এতদিন ছটফট করছিল ও ভীষণভাবে।

আরও দুই মাস চলে গেল। নৈশীর প্রেগন্যান্সির নয়মাস চলছে এখন। নৈশীর আজকাল মনেহয় প্রেগন্যান্সির সবচেয়ে কঠিন সময়টা পার করছে ও। হাঁটাচলা করতে খুব বেশি কষ্ট হয় ইদানিং, পায়েও পানি এসে গেছে। রাতগুলো এখন কাটে নির্ঘুম।

নৈশীর ঘুমাতে অসুবিধা হচ্ছে বুঝতে পারলে সারজিমও জেগে থাকে ওর সাথে। সারজিম ঘুমিয়ে যাওয়া অব্দি নৈশী তাই চুপটি করে অপেক্ষা করে। সারজিম ঘুমিয়ে গেলে তারপর উঠে হাঁটাহাঁটি করে রুমের বাইরে।

আজও রাতে ঘুম না হওয়ায় রুমের বাইরে বের হলো নৈশী। বেরিয়ে দেখল, সাব্বির ওর মেয়েকে কোলে নিয়ে বারান্দায় পায়চারি করছে। মেয়েটার দুদিন থেকে জ্বর হয়েছে। রাতে খুব কান্নাকাটি করে। কোলে নিয়ে পায়চারি করলে অবশ্য থামে কিছুক্ষনের জন্য।

নৈশী তাকিয়েই থাকল সাব্বিরের দিকে। সাব্বির খেয়াল করল সেটা। মেয়েকে নিয়ে এগিয়ে এসে প্রশ্ন করল নৈশীকে, “এভাবে তাকিয়ে কী দেখছ?”

নৈশী হেসে উত্তর দিল, “আমি একটা ছেলেকে দেখছি। ছেলেটা ছিল খুব বাউন্ডুলে আর স্বাধীনচেতা। যে বলেছিল চাকরি করে তার পোষাবে না। সে করবে ব্যাবসা। অথচ সেই ছেলেটাকে এখন দেখি ছাপোষা চাকরি করতে। সেই ছেলেটা, একটা রাত যার ঘুম না হলে পরেরদিন চেঁচিয়ে বাড়ি মাথায় তুলত। সে এখন রাতের পর রাত নিজের ঘুম বিসর্জন নিয়ে বাচ্চা কোলে নিয়ে হাঁটাহাঁটি করে, যাতে তার স্ত্রী একটু আরাম করে ঘুমাতে পারে।”

সাব্বিরও হাসল এবার নৈশীর কথা শুনে, “তুমি যার কথা বলছ সে সত্যিই একটা বাউন্ডুলে ছন্নছাড়া ছেলে ছিল। যার উপর দায়িত্বের ভার ছিল না। মায়ের আদরে বড় হওয়া পিছুটানবিহীন একটা ছেলে ছিল সে৷ যার মাথার উপরে বড় ভাইয়ের ভালোবাসার ছায়া ছিল। তাই তার কোনো চিন্তাও ছিল না। কিন্তু এখন যাকে তুমি দেখছে সে শুধুই কারও ছেলে কিংবা ভাই নয়৷ সে একজন স্বামী যার উপরে তার স্ত্রীর ভালো থাকা নির্ভর করছে। সে একজন বাবা যে সন্তানের জন্য সব ধরনের ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত সবসময়। পরিবর্তন আসাটাই তো স্বাভাবিক।”

একটু দাঁড়িয়ে কথা বলায় সাব্বিরের মেয়ে আবার কাঁদতে শুরু করেছে। সাব্বির মেয়েকে নিয়ে হাঁটতে লাগল আবার। নৈশী নিজের রুমের দিকে রওয়ানা হলো। পিছন থেকে সাব্বির ডাকল ওলে, “নৈশী আপু, তোমার শরীরের এখন কী অবস্থা?”

“আলহামদুলিল্লাহ, ভালো। তবে তোমার সাথে একটা বিষয়ে ফাইনাল ডিসিশনে আসা উচিৎ এবার আমার।”

“কী ব্যাপারে বলো তো।”

“তুমি আগে ডিসাইড করো যে আমাকে আপু ডাকবে নাকি ভাবি। নইলে কয়েকদিন পর তোমার মেয়েও কনফিউশনে পড়ে যাবে, আমাকে ফুফু ডাকবে নাকি চাচি সেটা নিয়ে।”

সাব্বির হাসতে হাসতে বলল, “আমি নিজেই তো এখনও কনফিউজড৷ নিজের কোনো বোন নেই তাই প্রথমে ভেবেছিলাম আপু বলেই ডাকব তোমাকে। এরমধ্যে ভাইয়ার সাথে বিয়েটা হয়ে গেল তোমার। ভাইও তো আমার একটা, তাই ভাবি বলে না ডাকলেও তো নয়৷ তাই ভেবেছি দুটোই ডাকব তোমাকে। আমার মেয়েও নাহয় আমার মতোই ডাকবে, কখনও চাচি আবার কখনও ফুফু।”

সাব্বিরের সাথে কথা বলে রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ল নৈশী। আশ্চর্যজনকভাবে শোয়ার পরপরই ওর চোখে ঘুম চলে এলো৷ ঘন্টা দুয়েক পরেই পেটে তীব্র ব্যাথায় ঘুম ভেঙে গেল ওর। যন্ত্রনায় একটা শব্দও উচ্চারণ করতে পারল না ও মুখ থেকে৷ তাই সারজিমের হাত খামচে ধরল৷ সারজিম উঠে বসল সাথে সাথে। বুঝল এক্ষুনি হাসপাতালে নিতে হবে নৈশীকে৷ ক্রাচে ভর করে কোনোরকমে সাব্বিরের রুমের সামনে গেল ও৷ চেঁচিয়ে ডাকল সাব্বিরকে। মেয়েকে ঘুম পারিয়ে সবে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েছিল সাব্বির৷ ভাইয়ের এক ডাকেই উঠে বসল ও। দরজা খুলে বাইরে বের হলো সাথে সাথে।

তারপরের সব কাজ সাব্বিরকেই করতে হল। সেই রাতের বেলা গাড়ি অ্যারেঞ্জ করা, হাসপাতালে পৌঁছে এডমিট করা থেকে শুরু করে নৈশীকে অপারেশন থিয়েটারে ঢোকানো অব্দি সব কাজ একাই ছোটাছুটি করে করল সাব্বির। সারজিম পা নিয়ে সেভাবে হাঁটতে পারে না বিধায় তেমন কিছুই করতে পারল না।

নৈশীকে ওটিতে নিয়ে যাওয়ার পরে একটু রিল্যাক্স হয়ে বসল সাব্বির। সারজিম তাকিয়ে দেখছিল নিজের ছোট ভাইকে। সারাদিন অফিসে কাজের চাপ, বাচ্চাটার জন্য রাতে ঘুম হয় না ঠিকভাবে এদিকে আজ আবার নৈশীর জন্য ছোটাছুটি করতে হয়েছে। সব মিলিয়ে সাব্বিরের চেহারা বিধ্বস্ত লাগছে। নিদ্রাহীনতায় চোখ লাললে বর্ণের হয়ে গেছে। সারজিম ওকে বলল, “জানিস সাব্বির, আজ মনেই হচ্ছে না যে তুই আমার ছোট। মনে হচ্ছে তুই আসলে আমার বড় ভাই।”

সাব্বির ভাইয়ের কথা শুনে বলল, “ধুর ভাইয়া, তুমি যে কী বলো।”

ওরা সবাই অপেক্ষা করতে লাগল। একসময় নজাতকের কান্নার আওয়াজ জানান দিল সে পৃথিবীতে এসে গেছে। নার্সের কোলে তোয়ালে মোড়ানো ফুটফুটে এক শিশু। সে হাসিমুখে জানাল, “ছেলে হয়েছে।”

আফরোজা বেগম এগিয়ে গিয়ে কোলে নিলেন বাচ্চাকে। তারপর সারজিমের কাছে নিয়ে গেলেন। সারজিম ছেলের কানে আজান দিল।

(চলবে ইনশাআল্লাহ)

🔴নোট-
আসসালামু আলাইকুম।
কাননে ফুটিল ফুল❞ আগামী পর্বে শেষ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। আমার রানিং প্রত্যেকটা গল্পের শেষদিকের পর্ব লেখার পাশাপাশি আমি পরের গল্পের প্রথমাংশটুকু লেখা শুরু করে দেই। সেই হিসাবে আমার নতুন গল্পের কয়েক পর্ব লিখে ফেলার কথা। কিন্তু বিক্ষিপ্ত মনমেজাজ নিয়ে এবার আমি নতুন করে একটা অক্ষরও লিখতে পারছি না। এই মুহূর্তে কম করে হলেও একশো গল্পের প্লট ঘুরছে আমার মাথায় কিন্তু লিখতে পারি না একটা লাইনও। এরকম মনস্তাত্ত্বিক টানাপোড়েনে আমার জীবনে কখনও পড়িনি। যেখানে আমি শুধু একদিকে আর আমার কাছের মানুষগুলো সব আমার প্রতিপক্ষ। আমি জানি, তারাও হয়তো আমার ভালোর জন্যই বলে কিন্তু আমি মেনে নিতে পারি না। যাই হোক, কাননে ফুটিল ফুল’র শেষ পর্ব লেখা শেষ। রিচেক করে কাল অথবা পরশুর মধ্যে আপলোড দিয়ে দেব ইনশাআল্লাহ। আর সম্ভবত এই রানিং গল্পটি শেষ হওয়ার পর লম্বা একটা বিরতি নেব। অন্তত যতদিন এই মেন্টাল ক্রাইসিস থেকে বের না হতে পারছি ততদিন কীবোর্ডে আঙুল রাখব না। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন আমার জন্য সবটা সহজ করে দেন।