#গল্প_কাব্য_কথা
#লেখনীতে_ওয়াসেনাথ_আসফি
#পর্ব_১
এইযে আপনার সামনে আপনার গার্লফ্রেন্ডকে বিরক্ত করছে আর আপনি এখানে দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখছেন কথাটা বলেই কাব্যের ডান হাতটা চেপে ধরলো কথা। হঠাৎ এমন কথায় আর হাত ধরায় পিছন থেকে সামনে ঘুরে দাঁড়ালো এবং দেখলো একটা মেয়ে ভয়ের ছাপ মুখে নিয়ে নীচের দিকে তাকিয়ে তার হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে।
কী হয়েছে এমন ভয় পেয়ে আছো কেনো? কেউ কিছু বলছে?
কাব্যের এমন প্রশ্ন শুনে খানিকটা সাহস পেয়ে কথা আবারও বলতে শুরু করলো
এই ছেলে টা সেই কখন থেকে পিছু পিছু হাটছে আর আমাকে বলছে আমাকে নাকি ভালোবাসে। আমি কতবার মানা করেছি তাও আমার পিছু নিচ্ছে, আর এমনকি আমার হাত ধরে টানা টানি ও শুরু করে দিসে তাই বাধ্য হয়েই আপনার কাছে আসছি।
এবার কাব্য ছেলেটির কাছে গিয়ে কিছু একটা বলে আর ওমনি ছেলেটি কথার কাছে এসে মাফ চায় এবং যাওয়ার সময় সালাম দিয়ে ভাবী বলে ডাকে। ভাবী ডাক শোনার পর কথার চোখ বড়বড় হয়ে গেলো আর মাথা ভো ভো করছে যেকোনো সময় মাথা ঘুরে পড়ে যাবে মনে হচ্ছিল।
কাব্য কথার কাছে এসে ওকে জিজ্ঞেস করল, এই মেয়ে তোমার নাম কি আর তুমি আমাকে তোমার বয়ফ্রেন্ড কোনো বলেছো হুম ( জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
আসলে আমি অনেক ভয় পেয়ে গেছিলাম তাই এমন কথা বলছি (ভয়ে ভয়ে কথাটা বললো কথা)।
আবার একটু সাহস নিয়ে কাব্যকে প্রশ্ন করল, আর আমি না হয় নিজেকে বাঁচাতে আপনাকে আমার বয়ফ্রেন্ড বানাইছি, কিন্তু আপনি কোন দুঃখে আমাকে আপনার বউ বানাইসেন হুমম? ( ভ্রু কুঁচকে)
তোমাকে কে বলছে যে আমি তোমাকে আমার বউ বানাইছি? ( মুচকি হাসি দিয়ে)
কেনো ঐ ছেলেটা।
কি বলছে?
ভাবী।
তাহলে তুমি আমার বউ কমনে হইলা?
(কাব্যের এমন প্রশ্ন শুনে খানিকটা আহাম্মক হয়ে গেলো কথা)
হ্যা তাইতো,
কিন্ত আমি ওর ভাবী কিভাবে হলাম?
সেটা আমি কি করে জানবো তুমি গিয়ে জিজ্ঞেস করো। তার আগে বলো তোমার নাম কি?
আমার নাম নীলাঞ্জনা আহছান কথা। আর আপনার নাম কি ভাইয়া?
কথার মুখে ভাইয়া ডাকটা শুনে কাব্য রাগে গজগজ করতে লাগলো এবং বলে উঠলো আমি তোমার কেমন ভাই হ্যাঁ ( চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বললো) কো
কথার তো ভয়ে গলা শুকিয়ে গেল। একটা শুকনো ঢোক গিলে বললো আমি এখন আসি ভাইয়া। কথাটা বলেই এক দৌড়ে ভার্সিটির বাইরে চলে গেলো।
এদিকে কাব্য অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে কথার যাওয়ার পানে।
বাসায় ফিরে কথা লম্বা একটা সাওয়ার নিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিল আর সকালের ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো ভাবতে ভাবতে চোঁখের পাতা ভারী হয়ে গেলো আর পারি জমালো ঘুমের রাজ্যে।
ঘুম থেকে উঠে দেখে সন্ধ্যা হয়ে গেছে তাড়াতাড়ি বিছানা থেকে নেমে ফ্রেশ হয়ে রুম থেকে বেরিয়ে এলো।
রান্না ঘরে কথার মা রান্না করছিল, কথা তার মাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো আর বললো
এত সময় আমি ঘুমিয়েছি আমাকে ডাকো নাই কেনো?
মা: ভাবলাম হয়তো শরীর খারাপ লাগছে তাই ডাকি নি।
ওহহ আচ্ছা আব্বা কই এখনো বাসায় আসেনি?
মা: না।
রাত 8 বাজে কথার বাবা বাসায় ফিরে আসে তারা একসঙ্গে কিছুক্ষন আড্ডা দেয় তারপর রাতের খাবার খেয়ে যার যার মতো ঘুমিয়ে পড়ে।
সকাল সাড়ে 6টায় কথার ঘুম ভাঙ্গলো আড়মোড়া কাটিয়ে ওয়াশরুমে গেলো গোসল করে বেড়িয়ে এলো। আজকে কথা সাদা চুড়িদার পড়েছে। সাদা চুড়িদাররে তাকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে। নাস্তা করার জন্য কথা রুম থেকে বের হবে তখন তার ফোন বেজে উঠলো। জ্বলজ্বল করছে লম্বু নামটি, আসলে কথার বেস্ট ফ্রেন্ড এর নাম ইতিকা আর ইতিকা অনেক লম্বা তাই কথা তাকে লম্বু বলে ডাকে।
ফোনটা রিসিভ করতেই ওপর পাশ থেকে বলে উঠলো, কই তুই আমি কখন থাইকা দারাইয়া আছি।
তা তোরে দাড়ায় থাকতে কে কইসে? ভিতরে আয়।
না এখন না পড়ে। তুই তারাতারি আয়।
আচ্ছা 5মিনিট দাড়া আমি আইতাছি।
ওকে।
মা আমি ভার্সিটিতে গেলাম।
আরে নাস্তা করে যা।
না মা অনেক দেরি হয়ে গেছে যাই পড়ে কথা হবে। সাড়ে সাত টা বাজে ইতিকা এবং কথা ভার্সিটি গেটের কাছে দাঁড়িয়ে আছে এমন সময় বাইক নিয়ে ভিতরে ঢুকলো কাব্য।
কথা তো কাব্যের দিক থেকে চোখ সরাতে পারছে না কারণ কাব্য কে আজকে অনেক সুন্দর লাগছে। কথা তার ঘোর কাটিয়ে আশেপাশে তাকিয়ে দেখে সব মেয়েরা কাব্যকে চোঁখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে। সাথে ইতিকা ওও হা করে তাকিয়ে আছে কাব্যের দিকে।
এইবার মুখ বন্ধ কর নয়তো মশা মাছি পোকা মাকড় সব তোর মুখের ভিতরে ঢুকে যাবে।
আরে দোস্ত দেখনা কতো সুন্দর লাগছে কাব্য কে।
কাব্য? এই কাব্য টা কে শুনি?
কি বলিস তুই কাব্য ভাইয়া কে চিনিস না?
না?
ওইযে দেখ সাদা শার্ট আর কালো পেন্ট আর সাদা জুতা পড়া ছেলেটা যার সিল্কি চুল গুলো বাতাসে উড়ছে আর তার গোলাপী ঠোঁটের কোণে দুষ্টু মিষ্টি হাসি বিরাজ করছে আর যার জন্য এতোগুলা মেয়ের হার্টবিট বেড়ে গেছে সাথে আমারও তার নাম আনান আবরার কাব্য।
ইতিকার মুখে এমন বর্ণনা শুনতে শুনতে কখন যে আমি কাব্য এর মাঝে হারিয়ে গেছি সেটা আমি নিজেও টের পাইনি।
হঠাৎ করেই আমার সামনে কাব্য আসে দাড়ায় আর বলতে লাগলো,,,,,,,,,,,,,,
কেমন আছো?
জ্বি ভাইয়া ভালো। আপনি কেমন আছেন? আমার মুখে আবার ভাইয়া ডাকটা শুনে কাব্য চোঁখ বুজে নিল আর নিজেকে শান্ত করে বললো এতক্ষন তো ভালই ছিলাম।
আমি বুঝতে পারছিলাম যে আমার ভাইয়া ডাকে তার রাগ উঠে গেছে তাই আর ওখানে দাঁড়িয়ে না থেকে হাটা দিলাম আর পিছন ফিরে তাকালাম না খুব বুঝতে পারছি কাব্য আমার দিকে তার অগ্নিঝরা চোখ দিয়ে যে তাকিয়ে আছে।
করিডোর দিয়ে হাঁটছি উদ্দেশ্য লাইব্রেরী যাওয়া হটাৎ কেউ হেছকা টান দিয়ে আমাকে নিয়ে গেলো একটা অন্ধকার রুমের ভেতর………….।
চলবে…….