#কৃষ্ণডাহুক – ২৫
আয়ানা আরা (ছদ্মনাম)
আচমকা এক বৃষ্টিস্নাত রাতে আদ্রিকের সাথে বিয়ে হয়ে গেলো মীরার! আচানক অদ্ভুত ভাবে বিয়ে হলো তাদের!
মীরা হন্তদন্ত করে নিচে নেমে দেখে আদ্রিক দাঁড়িয়ে আছে। মীরার হাত পা তখনো কাঁপছিলো তিরতির করে! মীরা শুকনো শুকনো ঢোক গিললো। আদ্রিক তখন তার দিকে তাকালো। মীরার চোখদুটো আবছা হয়ে আসছে। আদ্রিক ধীর পায়ে মীরার কাছে আসতে লাগলো। মীরা এক জায়গাতেই স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। আদ্রিক মীরার থেকে দুরুত্ব রেখে দাঁড় হলো, মীরা বলল,’ কারণ জানি, তারপর জিজ্ঞেস করছি এখানে কেনো আপনি? ‘
‘ তুমি যেই কারণ ভাবছো। ‘
‘ আদ্রিক! আপনার বিয়ে! ‘
‘ তুমি বিয়ে করলে এই বিয়ে বন্ধ! আমি করবোনা অরিনকে বিয়ে! ‘
মীরা ঢোক গিললো, বলল,’ অরিনের মধ্যে কি কমতি আছে? অরিন শিক্ষিত, দেখতে সুন্দর, চাইলে ভালো মানের চাকুরীও করতে পারে। অরিনের সামনে আমি কিছুই না! ‘
‘ তুমি কি মনে করো, আমি সৌন্দর্যের পিছনে ছুটি? যদি তাই হতো তাহলে এখন আমি তোমার সামনে থাকতাম না। আমি না চাইতেও বারংবার বেহায়া হয়ে যাচ্ছি তোমার সামনে! আমি তো এতোটাও বেহায়া না!’
মীরা অপলক দৃষ্টিতে তাকালো আদ্রিকের দিকে। আদ্রিক ধীর কণ্ঠে বলল,’ মীরা, আমি অরিনকে ভালোবাসিনা। অরিনের সাথে কখনোই আমার সম্পর্ক ছিলো না,ছিলো শুধু বন্ধুত্ব! এই বন্ধুত্বটাকেই সবাই সম্পর্ক, ভালোবাসা বলে চালিয়ে দিলো। ইচ্ছা,মনের বিরুদ্ধে যেয়ে অরিনের সাথে বিয়ে ঠিক করলো।আর যদি আমি অরিনের সাথে কমিটেড হতামই আমি কখনো আমার মনের এই অনুভূতিটা প্রকাশ্যে আনতাম না! আমি কিন্তু অতোটাও খারাপ নই তুমি যতটা ভাবো। ‘
মীরা জবাব দিলো,স্থির কণ্ঠে বলল,’ আপনি কি চাচ্ছেন? আমি আপনাকে বিয়ে করি? আপনার পরিবার কি মেনে নিবে? তারচেয়েও বড় কথা আপনি এই বিয়েটা আমাকে ভোলার জন্যই করছিলেন! ‘
‘ ভোলার জন্য এই বিয়েটা করলে, আমি আর যাই হোক এখানে দাঁড়িয়ে থাকতাম না। তোমার যাওয়ার পর প্রতিনিয়ত ওখানে আমার প্রেশারে থাকতে হতো! মা আর অরিন বিয়ে নিয়ে পাগল করে দিতো! প্রতিবারই না করতাম কিন্তু একদিন অরিন সুইসাইডের ট্রাই করে। ভাবতে পারো? বাধ্য হয়ে হ্যাঁ বলতে হলো কিন্তু মন থেকে একদমই মানতে পারছিলাম না। আমি তখনো তোমার খোঁজ করছিলাম! পেয়েও গেলাম। ‘
কথাগুলো বলেই আদ্রিক থামলো, একবার দম নিয়ে আবার বলল,’ আর আমার পরিবার তোমাকে মেনে নিবে কিনা? আমি কেয়ার করি না! আমি তোমার সাথে সংসার করবো এতে আমার পরিবার মেনে নিক আর না নিক এতে আমার কিছু আসে যায়না! ‘
ব্যস এইটুকু কথপোকথনের হয়ে গেলো তাদের বিয়ে! অতি সাদামাটা ভাবে! পাশের মসজিদের এক হুজুরের কাছে তিন কবুলে বিয়ে হয়ে গেলো! মীরা চায়নি বিয়েটা হোক! কিন্তু সুযোগটাও হাতছাড়া করতে চায়নি! এই সুযোগ দিয়েই যে সে নিজের পরিবার খুঁজে পাবে!
_
হুমায়ূন মঞ্জিলে হুলস্থুল কান্ড বেঁধে গিয়েছে। অরিন স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মীরা সাদামাটা পোশাকেই তাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। বড়দের মুখ বরাবরই গম্ভির। মার্জিয়া কি বলবে ভেবে পাচ্ছেন না। আদিলই শুরু করলেন,’ মীরা না চলে গিয়েছিলো? আবার এলো যে? ‘
‘ গতবার এসেছিলো মেহমান হয়ে এবার এলো বাড়ির বড় বউ হয়ে! ‘
আদ্রিকের ছোট কথাটাই ঝংকার দিয়ে তুললো সারা হুমায়ূন মঞ্জিল। সকলে হতভম্ব,হতবিহ্বল হয়ে তাকালো আদ্রিক আর মীরার দিকে। মীরা’র চোখে হাসিরা খেলা করছে। অরিন এগিয়ে এলো বলল,’ আদ্রিক, আমার সাথে তো তোমার বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো। ‘
‘ ছিলো এখন হবেনা। অরিন ট্রাস্ট মি, আমি কোনোদিন তোমাকে সেই নজরে দেখিইনি যে নজরে তুমি আমাকে দেখেছো! আমার বন্ধুত্বটাকে তুমি বিশ্রী ভাবে সবার সামনে উপস্থাপন করেছো! আমার সাথে তোমার বিয়ে হলেও না তুমি সুখী হতে আর না আমি! ‘
অরিন ততক্ষনাৎ কোনো জবাব দিতে পারলো! হতভম্ব চেহেরায় তাকালো। অরিন স্বাভাবিক রইলো তখনো! অরিনের স্তব্ধতা দেখে মার্জিয়া বেগম এইবার রাগ দেখিয়ে বললেন,’ আদ্রিক! আজীবন আদর, ভালোবাসা পেয়ে তুমি একদম উচ্ছনে চলে গিয়েছো! এই বিয়েটা কোনো বিয়েই না, শুধু শুধু অরিনের মন ভাঙার জন্য এমন করছো তাইনা? ‘
‘ না আমি, এই বিয়েটা সত্যি! আর আমি উচ্ছনে যাইনি শুধু তোমাদের বাধ্যতা মেনে চলতে পারিনি আমি। ‘
আদ্রিকের কথায় আদিল চটে গেলেন বললেন,’ তোমরা দুই ভাইবোন আমার সম্মান সমাজের সামনে নষ্ট করতে ব্যস্ত? প্রথমে তোমার বোন আমার সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে প্রেমিকের সাথে পালিয়েছে আর এখন তুমি! আমি এই বাড়িতে তোমাকে একদমই সহ্য করতে পারবো না! বের হয়ে যাও। ‘
আদিলের কথায় সাহিল এগিয়ে এলেন, তিনি গম্ভির সুরে বললেন,’ বাড়ির বড় ছেলেকে এভাবে বের করে দিলে সমাজ তোমাকে সম্মান দিবে? উল্টো থু থু ছিটাবে আর আদ্রিক যেহেতু মীরাকে বিয়ে করেছেই তোর উচিত, ওদের বিয়েটা সবার সামনে প্রকাশ্যে এনে, অনুষ্ঠান করে বিয়ে দেওয়া। ‘
‘ কিন্তু ভাই! মেয়েটার পরিবার নেই, এতিমখানায় বড় হয়েছে এখন মেয়েটার গার্জিয়ান কে হবে?খালি বিয়ে দিলেই হয়না, এইসবের খোঁজও রাখতে হয়। ‘
সাহিল হুমায়ূন বললেন,’ মীরা যেহেতু এতিমখানায় বড় হয়েছে তাহলে সেখানকার মানুষেরাই হবে মেয়েপক্ষ! আমি তোর বড়, আমার যা উপদেশ দেওয়ার দরকার ছিলো তা দিয়েছি! এখন এতিমখানার মানুষজন আনার দায়িত্ব তোর। ওদের বিয়ের আয়োজন যতটা সম্ভব দ্রুতই শুরু কর, বাহিরের মানুষ জানাজানির আগে। ‘
#চলবে?
#কৃষ্ণডাহুক – ২৬
আয়ানা আরা (ছদ্মনাম)
বাড়ির সকলে মত দিয়ে অরিনের পরিবর্তে মীরার সাথে আদ্রিকের অনুষ্ঠান করে আবারো বিয়ে পড়ানো হবে বলে ঠিক হলো। সেমূহুর্তে আদিলের একটাই কথা,’আমার মানসম্মান এই ভাই-বোনের একজনও থাকলো! আফসোস,ওদের মতো কুলাঙ্গার সন্তান জন্ম না দিলেও পারতাম!’। এরপর আদিল টু শব্দ করেনি, মার্জিয়া তো সেই থেকে মুখও খুলেনি। আদ্রিকের মুখটাও যেনো সে পরিদর্শন করতে চায়না! কিন্তু নিজের নাড়ি ছেঁড়া সন্তান তো! চাইলেই বাড়ি থেকে বের করে দেয়া যায়না! তারচেয়েও বড় কথা বাড়ির ছেলে যদি বাহিরে উঁকি দেয় তাহলে বাচাকুচা মানসম্মান টুকু হারাতে হবে, এই জন্য ছেলে যাকে পছন্দ করে তার সাথেই বিয়ে দিলে শান্তি! সেইদিন থেকে এখন অব্দি অরিন নিস্তব্ধ! নিস্তব্ধ মনটা খালি উঁকিঝুঁকি মারতে চায় আদ্রিকের রুমে! অথচ এই আদ্রিক তার না! আদ্রিকের ঘর উঁকি মেরেও এই একসপ্তাহে মীরাকে পায়নি সে! সাহিল হুমায়ূনের আদেশ নাকি! লোকে জানাজানির আগে মীরা-আদ্রিক কিছুতেই একসাথে থাকতে পারবেনা! আদ্রিক রাজী হয়ে গেলো সাথে সাথে কিন্তু মীরা ততক্ষনাৎ কিছু বলতে পারলো না, লজ্জা অনুভূত হলো তার। আড়চোখে অরিনকে দেখতে ভুললো না, অরিনের ছলছল দৃষ্টি তখন তার দিকে। দৃষ্টি যেনো বলছে,’জিতে গেলে তুমি মীরা! এতোদিন তো ঠিকই গাইগুই করতে,আদ্রিক কেউ না তোমার ইত্যাদি! এখন তবে কি হলো? মনোভাব মূহুর্তেই বদলে গেলো?’
মীরা জানে সে অপরাধ করেনি, কিন্তু আদ্রিককে বিয়ে করার কোনো স্পষ্ট কারণ নেই! ‘পৃথিবীতে কেউ তোমার আপন না, সবাই স্বার্থ খুঁজে!’ কথাটা ধরেই মীরা চলেছে, নিজের পরিবার পাওয়ার আশায় স্বার্থপর হয়েছে! তাই বলে কী সে সুখী হবেনা? না হলে নেই! সে তো পাপ করেনি কোনো! তাছাড়া আদ্রিক তাকেই ভালোবাসে। মীরা কখনো কোনো মেয়ের ক্ষতির কারণ হতে চায়নি! কিন্তু আজীবন মানুষের কথা ভেবে গেলে মানুষ তাকেই নির্বোধ ভাববে, অনেক ভেবেছে এই একসপ্তাহ মনকে মানিয়েছে, সবকিছুর জন্য প্রস্তুত করেছে মনকে।
হুমায়ূন বাড়িতে নিরব বিয়ে উদযাপিত হচ্ছে। মনমরা হয়ে সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছে হলুদের। সন্ধ্যা গড়িয়ে এসেছে। মীরা সাজছে, একা একাই! শাড়ি দিতে শুধু সাহিদুন খালা এসেছিলেন, এছাড়া সব নিজ হাতেই করছে মীরা। সাজতে সাজতে দরজায় শব্দ শুনতে পেলে মীরা ঘাড় কাত করে তাকালো। আদ্রিকাকে দেখে চমকালো, সেই সাথে হাসলোও! আদ্রিকা ভিতরে ঢুকে বলে,’ আমি ভাবতেও পারিনি, তুমি আমার ভাবি হবে! আমি খুশি খুব তোমাদের জন্য! ‘
‘এখানে যে এসেছো দেখে নি কেউ? ‘
‘ সবাই দেখেছে, কেউ প্রশ্ন করেনি, আর মা-বাবা নাকি ঘর থেকেই বের হচ্ছেনা! তাদের নজরে আসার প্রশ্নই আসেনা। ‘
‘ বসো। ‘
‘ না, বসতে আসিনি! সাজাতে এসেছি, ভাইয়া পাঠিয়েছে আমায়। ‘
কথাটা শুনেই লজ্জা হলো মীরার। লোকটা কিভাবে জানে এখানে সে একা সাজছে? কেউ নেই তার আশেপাশে? সকাল থেকে তো তাকে দেখেই নি মীরা! সে কিভাবে দেখলো? মীরার ভাবনার মাঝে চটপট সাজিয়ে দিলো আদ্রিকা। আয়নার সামনে মীরাকে দেখে বলল,’ সুন্দর লাগছে তোমাকে মীরা! শ্যামসুন্দর! চলো যাই। ‘
_
‘ কি ফ্যামিলি বাপরে! বিয়ে দিচ্ছিলো একজনের সাথে হলো আরেকজনের সাথে! আরে ভাই যেহেতু আরেকজনের সাথে বিয়ে হচ্ছেই তাহলে বিয়ের কার্ডে অন্য মেয়ের নাম দিলি কেনো? শুধু শুধু এতিম মেয়েটাকে এতোশত স্বপ্ন দেখিয়ে কি লাভ হলো? ‘
‘ শুনেছি, এর আগেও নাকি এই ছেলের বিয়ে হতে যেয়েও হয়নি তাও আবার একই মেয়ের সঙ্গে! ছেলে বিয়ের আগেরদিন নাকি মানা করে দেয়, পরে বোনের বিয়ে দিতে গেলে বোনটাও পালিয়ে যায়! কেমন সন্তান পেলেছে! মা-বাবার সম্মান রক্ষা করতে পারেনা! আমার ছেলে মেয়ে হলে এতক্ষণে ত্যাজ্য হয়ে যেতো! এতো অন্যায় আবার আমি সহ্য করতে পারিনা! ‘
মুখের কথা সবার! চুপ করে হজম করছে সকলে! কিছু বলার নেই তাদের! কি বলবে? কোন মুখেই বা বলবে? কিন্তু সাহিল হুমায়ূন এবারো চুপ থাকলেন না, বললেন,’ ঠিকই তো আপনারা অন্যের বাড়িতে এসে তাদের নামেই সমালোচনা করছেন! একটাবার বাড়ির পরিস্থিতি বুঝার চেষ্টা করেছেন?বাড়ির সবাই কেমন পরিস্থিতিতে পড়েছে সেটা শুধু আমরাই জানি অযথা আপনার মাথা ঘামানো লাগবে না। ‘
ব্যস! এতোটুকুই যথেষ্ট তাদের মুখ বন্ধ করতে। সাদামাটা ভাবেই সম্পন্ন হলো হলুদ, নিজ থেকে সব করেছেন সাহিল। সবটা সামলাতে পারেননি, তারপরও পেরেছেন কিন্তু হলুদেও অনুপস্থিত ছিলো মার্জিয়া আর আদিল! তাদের কেউ ডাকেওনি শুধু শুধু তামাশা করে কি লাভ?
_
মীরা দরজা বন্ধ করে বসে আছে। মন খারাপ তার। আদ্রিকা চলে গিয়েছে, কাল আবার আসবে। কিন্তু মন খারাপের কারণ এটা না! কারণ হলো তা বিয়েতে তার মা-বাবা উপস্থিত নেই! মা-বাবা না থাকার যে কি কষ্ট! যার নেই সেই বুঝে! আজ তার মা-বাবা থাকলে এমন একটা জীবন কাটাতে হতো না মীরার! শান্তিপূর্ণ একটা জীবন থাকতো! কিন্তু এখানে তো সে এসেছেই পিতা-মাতার খোঁজে! শুরু হলো সবে! ধীরে ধীরে সবই জানা যাবে!
মীরার ভাবনার মাঝে দরজায় শব্দ হলো, অদ্ভুত গোঙানির শব্দ। মীরা দরজা খুলে দিলো নির্ভীক ভাবে। দরজা খুলে টুলতে টুলতে প্রবেশ করলো আদ্রিক! মীরা তাকালো। বিশ্রী গন্ধ নাকে এলো, বুঝলো আদ্রিক মদ্যপান করেছে! আদ্রিক নিজেই বলল,’ মীরা! আমার খুব কষ্ট হচ্ছে! ‘
‘ কেনো? ‘
‘ আমি তোমাকে তোমার প্রাপ্য সম্মান টুকু দিয়ে এই বাড়িতে আনতে পারছিনা! কেউ তোমাকে মেনে নিচ্ছেনা! এমন একটা দিনেও আমি খুব দুঃখি! ‘
আদ্রিকের অসহায় কণ্ঠ! মীরা আলতো হাসলো,বলল,’ আপনি আমাকে প্রাপ্য সম্মান টুকু দিলেই হবে! বাকিদের মন নাহয় জয় করর নিবো! ‘
আদ্রিক হাসলো। মীরাকে বাহুতে জড়িয়ে বলল,’ চমৎকার মেয়ে তুমি! এজন্যই এতো ভালোবাসি তোমাকে! কেবল তুমিই বাসোনা। ‘
মনমরা কণ্ঠস্বর আদ্রিকের। মীরা শব্দবিহীন হাসলো,ফিসফিস করে বলল,’ হয়তোবা বাসি। ‘
আফসোস কথাটা আদ্রিকের কান অব্দি পৌঁছালো না! তার আগেই টুলতে টুলতে ঘর থেকে বের হয়ে গেলো।
#চলবে?