#গালিব_মির্জা
#পর্ব_১২
#তাসমিয়া_তাসনিন_প্রিয়া
গালিব ও তামসী বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত একেবারে গভীর হলো। চারদিক তখন নিস্তব্ধ, কেবল কুকুরের মাঝে মাঝে ডেকে ওঠা কিংবা দূরের কোনো গাড়ির শব্দ শোনা যাচ্ছিল। গাড়ি থেকে নেমে বাড়িতে ঢুকতেই যেনো সারা বাড়ি অচেনা এক নীরবতায় ডুবে আছে। তামসী রুমে ঢুকে, দরজা আঁটকে দিয়ে দেয়ালে হেলান দিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল। বুকের ভেতর ধপাধপ শব্দ হচ্ছে, যেন হৃদপিণ্ড গলা দিয়ে বেরিয়ে আসবে। নিজের ঠোঁটে অচেনা উষ্ণতার ছোঁয়া টের পেয়ে লজ্জায় তার গাল জ্বলে উঠল।
হঠাৎ করেই হেসে ফেলল সে। কিন্তু এই হাসি ছিল আনমনা, খেয়ালী। হাসিটা নিজেকেই অবাক করছে।
“এই ভদ্রলোক! সবসময় এমন ভান করে চলে, যেন ভীষণ গম্ভীর, ভীষণ আনরোমান্টিক… অথচ! অথচ…”
কথাগুলো মনে মনে বলেই গালিবের আজকের আচরণ ভেবে আবার গাল রাঙা হয়ে উঠলো।
বিছানায় গিয়ে বসতেই শরীরটা কেমন কাঁপতে লাগল। মনে হচ্ছে এখনো গালিবের দু’হাত তার কোমরে রাখা আছে, এখনো বুকের সাথে বুক লেগে আছে। চোখ বুঁজলেই মনে পড়ছে সেই মুহূর্তটা,যখন হঠাৎ করে পৃথিবীটা থমকে গিয়েছিল। আর তার শ্বাস-প্রশ্বাস এক হয়ে গিয়েছিল গালিবের সাথে।
তামসী বিছানায় শরীর এলিয়ে দিলো। বালিশে মুখ গুঁজে চাপা স্বরে হেসে উঠল আবার। এত সুখকর মুহূর্ত সে আগে কখনো পায়নি। এর নাম কি ভালোবাসা? নাকি পাগলামি? কে জানে!
ধীরে ধীরে সেই স্মৃতির মায়াজালেই আটকে পড়তে লাগল সে। চেতনার সাথে অবচেতন মিশে যাচ্ছিল। চোখ ভারী হয়ে এলো, পাপড়ি বন্ধ হতে লাগল ধীরে ধীরে। হাসির রেখা এখনো খেলা করছে ঠোঁটের কোণে। আর কিছুক্ষণ পরেই অজান্তে নিস্তব্ধতার গভীর ঘুমে হারিয়ে গেল তামসী– যেনো স্বপ্নেও গালিবের উষ্ণতা আঁকড়ে ধরে আছে।
ইদানীং রাবিনের মধ্যে অদ্ভুত পরিবর্তন এসেছে। আগে যেখানে সে নিয়মিত ক্লাস করতো, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতো, সেখানেই এখন একরকম গুটিয়ে গেছে। ক্লাসেও আসে না তেমন। এ বিষয়টা অন্য কেউ হয়তো খেয়াল করেনি, কিন্তু ফিজা খেয়াল না করে পারে না। কারণ এই ভ্যাবলা ছেলেটির প্রতি ফিজার দুর্বলতা আজকের নয়। প্রায় দু’বছর আগে থেকেই ওর প্রতি একটা টান অনুভব করে আসছে ফিজা। অথচ, রাবিন সে ব্যাপারে একেবারেই অজ্ঞ। সেও যদি কিছুটা বোঝার চেষ্টা করতো, হয়তো ফিজা কখনো এভাবে দূর থেকে নিঃশব্দে ভালোবাসতে থাকতো না।
তবুও ফিজার কোনো অভিযোগ নেই।
রাবিনকে সে খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করেছে। ওর সরলতা, বেখেয়ালি স্বভাব, আবেগপ্রবণ মন – এসব তাকে একেবারেই আলাদা করে তুলেছে। রাবিনের সেই সহজ-সরল ভঙ্গিটাই ফিজার সবচেয়ে ভালো লাগে। ফিজা নিজে সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিবেশে বেড়ে ওঠা মেয়ে। মা তাকে ছোটবেলায় ছেড়ে চলে গেছে, বড়লোক বাবার ছায়াতেই বড় হতে হয়েছে। কিন্তু সেই ছায়া কেবল আর্থিক সচ্ছলতায় সীমাবদ্ধ ছিলো। বাবার ভালোবাসা, মমতা, একান্ত যত্ন– এসব কোনোদিন তেমনভাবে পায়নি সে। একমাত্র ছোট বোনটিই তার সঙ্গী।
এখন ফিজা লেখাপড়া শেষ করে বাবার ব্যবসার হাল ধরেছে। দিনের পর দিন অফিস, মিটিং, ফাইল, হিসাব এসব নিয়েই কাটছে সময়। বাইরে থেকে সবাই ভাবে– ফিজা খুব শক্ত মেয়ে, দৃঢ় চরিত্রের, ঝগড়াটে মেজাজের। ছেলেদের মতো সবসময় জিন্স-শার্টে বের হয়, অল্পতেই রেগে যায়। কিন্তু ভেতরে ভেতরে ফিজা ভীষণ নরম, ভীষণ সংবেদনশীল। এই কঠিন আবরণের আড়ালে তার ভিতরে জমে আছে প্রচুর না বলা কথা, অসংখ্য একাকিত্ব। আর সেই শূন্য জায়গাটাতেই এসে জায়গা করে নিয়েছে রাবিন।
কিন্তু বয়সের পার্থক্য সবসময় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ফিজার সামনে। রাবিন তার থেকে ছোট, আর এই পার্থক্যটা নিয়ে সবসময় দ্বিধায় থেকেছে ফিজা। ভাবছে– যদি কখনো বলে বসে, যদি রাবিন মেনে নিতে না পারে? যদি হাসাহাসি করে? তাই এতদিন চুপ থেকেছে সে। দূর থেকে দেখেই তৃপ্ত হয়েছে। রাবিন যখন ক্লাসে মজা করতো, বন্ধুদের সাথে হাসাহাসি করতো ফিজা একপাশে দাঁড়িয়ে তার চোখ দিয়ে সেই আনন্দ দেখেই সুখ খুঁজেছে।
কিন্তু এখনকার রাবিন আলাদা। ক্লাসে আসে না, মুখে আগের মতো প্রাণোচ্ছ্বলতা নেই। ফিজার বুকের ভেতর কেমন অস্বস্তি কাজ করে। তার মনে হয় , ছেলেটা কষ্ট পাচ্ছে। আর এই কষ্ট সে একদমই সহ্য করতে পারে না। মনের ভেতর ফিজার একটা প্রশ্নই ঘুরপাক খায়–
“আমি যদি ওকে আমার মনের কথা বলতাম, তাহলে কি ওর জীবন অন্যরকম হতো? নাকি সবকিছু আরও জটিল হয়ে যেত?”
সকালটা আজ যেন একেবারেই অলস। জানালার ফাঁক গলিয়ে হালকা রোদ ঘরে ঢুকে পড়েছে, বাতাসে এখনো রাতের ঠান্ডা আভাস রয়ে গেছে। আশেপাশে পাখির ডাক শোনা গেলেও ঘরটা নিস্তব্ধ। এই সময়েই ঘুমঘুম চোখে কোনোমতে ফোনটা হাতে তুলে নিল রাবিন। স্ক্রিনে নাম ভেসে উঠতেই কল রিসিভ করল।
“হ্যালো…”
কণ্ঠে ঘুমের ভার স্পষ্ট।
ওপাশ থেকে ভেসে এল তীক্ষ্ণ গলা,
“শালা! বেলা দশটা বাজে, আর তুই এখনও ঘুমের ঘোরে হ্যালো বলছিস!”
কথা শুনে রাবিন চমকে উঠে বসল। চোখ দুটো আধবোজা, শরীরটা এখনো ঢলে আছে বিছানায়। আড়মোড়া ভেঙে বিড়বিড় করে বলল,
“সক্কালবেলা তোর কী মাথা খারাপ হলো নাকি, ভাই?”
“আমি তোর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছি। বের হ, আজকে একটা জায়গায় যাবি আমার সাথে।”
“তুই… আমার বাড়ির সামনে!”
রাবিন বিস্ময়ে প্রায় চিৎকার করে উঠল।
“হ।”
“আরে ভেতরে আয়! দাঁড়া, আমি আসতেছি।”
রকিকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই কল কেটে দিল সে। তাড়াহুড়ো করে চোখেমুখে পানি ছিটিয়ে নিল, এলোমেলো চুল হাত দিয়ে সামলে নিলো কোনোভাবে। একটা টি-শার্ট গায়ে চাপিয়ে দরজা খুলে রুম থেকে বেরিয়ে গেল।
ড্রইং রুমে বসেছিল লামিয়া, মেঘলা আর রাফি। রাবিনকে অমন হন্তদন্ত হয়ে ছুটে যেতে দেখে লামিয়া খিলখিল করে হেসে বলল,
“কী রে রাবিন ভাইয়া? যেভাবে ছুটে যাচ্ছো, তোমার বউ এলো নাকি?”
রাবিন যেতে যেতেই দুষ্টু ভেংচি কাটল, চোখে ঝিলিক মিশিয়ে উত্তর দিল,
“আমি গে নই। আসলে তোর জামাই আসছে।”
কথাটা ছুঁড়ে দিয়েই রাবিন বাইরে বেরিয়ে গেল। কিন্তু কথাগুলো যেন ড্রইংরুমে বাজতেই থাকল। লামিয়ার গাল টকটকে লাল হয়ে উঠল। সে চোখ নিচু করে চুপ মেরে বসে রইল। মেঘলা আর রাফি তো হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে, থামতেই পারছে না।
বাড়ির সামনে তখন দাঁড়িয়ে রকি। এলোমেলো চুল, শার্টের দুটো বোতাম খোলা, হাতার কাপড় কনুই পর্যন্ত গোটানো। ঠোঁটের কোণে সিগারেট ঝুলছে, আর নাকমুখ দিয়ে ধোঁয়ার কুণ্ডলি পাক খেয়ে বেরিয়ে আসছে। দূরে রাবিনকে আসতে দেখে ঠোঁট বাঁকিয়ে এক চিলতে মুচকি হাসি ফুটিয়ে তুলল। সিগারেটে শেষ টান দিয়ে সেটা ছুঁড়ে ফেলে দিলো মাটিতে।
রাবিন কাছে এসে ভুরু কুঁচকে বলল,
“তুই এমন কেন রকি? বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে কেউ ঘরে না গেলে কেমন দেখায়, ভাই!”
রকি হাসল, একরকম অচেনা নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে রাবিনের কাঁধে হাত রেখে বলল,
“হয়ে গেছে? এত ফর্মালিটি দেখাতে হবে না। আয়, তাড়াতাড়ি রেডি হ। নতুন একটা মেয়ে পছন্দ হয়েছে, তোকে দেখাতে চাই।”
রাবিন দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। হতাশ হওয়ার ভান করে গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
“তোরই কপাল ভাই! নিত্যনতুন মেয়ে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিস… আর আমি? শালার মনুষ্যি জীবনটাই খারাপ।”
রকি হেসে হঠাৎ বলে বসল,
“ফিজা আছে তো তোর। সিনিয়র আপু!”
ফিজার নাম শুনে চমকে উঠল রাবিন। মুখটা যেন এক মুহূর্তে ফ্যাকাসে হয়ে গেল। ওদের দু’জন হাঁটতে হাঁটতেই বাড়ির দিকে এগোতে শুরু করেছে।
“ফিজা আপু? উনি এলো কোত্থেকে?”
রাবিনের কণ্ঠে বিস্ময় আর অস্বস্তির ছাপ।
রকি ভুরু নাচিয়ে, দুষ্টু গলায় বলল,
“ছেলের ঢং দেখে বাঁচি না। ওই মেয়ে যে তোকে নিয়ে পাগল, এটা তুই বুঝিস না?”
সত্যি সত্যিই অবাক হয়ে গেল রাবিন।
“না তো… আমি বুঝতেই পারিনি।”
“না বুঝলে এখন তো বুঝলি! বড়লোক বাবার মেয়ে, রূপেও কম কিছু নয়। শুধু একটু মারকুটে টাইপ এই যা! তবে তোদের কপালে জমবে জোশ।”
রকি হেসে উঠল।
রাবিন মাথা নিচু করে লজ্জা চেপে গেল যেন।
এমন সময় দু’জনে বাড়ির দরজা পেরিয়ে আবার ড্রইং রুমে ঢুকল। ভেতরে তখনও বসে আছে মেঘলা, লামিয়া আর রাফি। এর মধ্যে শুভও এসে যুক্ত হয়েছে। ঘরে ঢুকতেই চোখাচোখি হলো রকি আর লামিয়ার। মুহূর্তের জন্য যেন সময় থমকে গেল। লামিয়ার দৃষ্টি কয়েক সেকেন্ড রকির চোখে আটকে রইল, তারপর দ্রুত সরিয়ে নিল। রকিও হালকা মুচকি হাসল নিজের অজান্তে।
রাবিন সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলল,
“এই যে পঙ্গপালের দল, এটা আমার বন্ধু–রকি।”
সব চোখ এবার রকির দিকে ঘুরল। সে নিঃশব্দে হাসল, ঠোঁটের কোণে একরকম আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গি ঝুলে রইল। রাবিন একে একে তার সব কাজিনের সাথে আলাপ করিয়ে দিল। কিছুক্ষণ পর চা-নাশতা এল টেবিলে, সবাই আড্ডায় মেতে উঠল। আর এদিকে রাবিন দ্রুত রেডি হয়ে নিতে লাগল।
সকাল সকাল মেয়ের কল আসাতে ভীষণ খুশি মনে আছেন আয়মান। একটু আগে নওশিনের সাথে কথা হয়েছে। ও জানিয়েছে, গালিব আর তামসীর বিয়েতে আসবে। খবরটা শুনে আনন্দ সামলানোই কঠিন হয়ে পড়েছে আয়মানের। অনেকদিন পর মেয়ে আসছে– এটাই তার কাছে সবচেয়ে বড় সুখের ব্যাপার। আজ রাতে তামসী আর গালিবের বিয়ের তারিখ ঠিক করার কথা। আয়মান মনে মনে ভাবলেন, খুব বেশি দেরি না করাই ভালো। চার–পাঁচ দিন নয়তো তিনদিনের মধ্যেই বিয়েটা দেওয়া যায়। মেয়ের আগমনের খবর আর বিয়ের আয়োজন সব মিলিয়ে আয়মানের মন ভরে গেছে এক অদ্ভুত আনন্দে।
সারাদিন অফিসের ব্যস্ততা সামলিয়ে ফিজা তালুকদার কেবল বাসায় ফিরেছে। ক্লান্ত শরীর, ব্যথা সব মিলিয়ে মনটা শিথিল। গোসল সেরে চুল মুছতে মুছতে বিছানায় বসে পড়ল সে।
হঠাৎ ফোনের রিংটোনে চোখ উঠে গেল সামনের টেবিলের দিকে। ক্লান্ত শরীরে কল রিসিভ করতে ইচ্ছে হয়নি, তাই সে আর উঠলো না। কিন্তু ফোনের অপরপ্রান্তে বসে যে কল দিচ্ছে, সে নাছোরবান্দা নয়। ক্রমাগত কল আসছে, একটুও কমছে না। অবশেষে ফিজা বাধ্য হয়ে ফোনের কাছে গিয়ে পৌঁছাল। অপরিচিত নম্বর দেখে কিছুটা দ্বিধা পেলেও রিসিভ করল।
“হ্যালো! ফিজা আপু বলছো?”
রাবিনের কণ্ঠস্বর শুনে ফিজা এক মুহূর্তে থমকে গেল। সমস্ত ক্লান্তি, চাপ আর রাগ যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেল। অজান্তে মুচকি হাসি ফুটল তার মুখে। বিছানায় বসে সে আবার শান্ত হয়ে শুয়ে পড়ল।
“হ্যাঁ। কী খবর তোমার? হঠাৎ কল! সবকিছু ঠিক আছে তো?”
“হ্যাঁ সবকিছু ঠিক আছে। শুধু আমি ঠিক নেই।”
ফিজা হাসলো। রাবিনের দুষ্টুমি সে একঝটকা অনুভব করল।
“কেন? কী হয়েছে?”
“অসুখ হয়েছে গো।”
ফিজা অবাক হওয়ার ভান করে বলল,
“কী অসুখ?”
“প্রেমাসুখ!”
ফিজা হেসে বিছানায় লুটিয়ে পড়ল। ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা যেন সরতেই চাচ্ছে না।
“এটা আবার কী অসুখ?”
“বুঝেও না বোঝার ভান করলে কী আর বলবো!”
“তাই না?”
“হ্যাঁ, তাই তো। তুমি এসে একটু দেখবে আমার অসুখ কীভাবে সারবে?”
ফিজা ঠোঁট টিপে হাসল, চোখে ঝিলিক ফুটল।
“আগামীকাল চেকআপ করতে হবে। তারপর বলা যাবে।”
“ওকে। চেকআপ করতে গিয়ে বাসায় যেতে হবে, না-কি ইউনিভার্সিটিতে আসবে?”
“কফিশপে।”
“ওকে ফিজা আপু। টেক্সট করে দিও, আমি পৌঁছে যাবো।”
“ওকে। বায়!”
“বায়।”
কল কেটে দিলেই রাবিন, তামসী, লামিয়া, মেঘলা, শুভ ও রাফি– সবাই একসাথে শব্দ করে হেসে উঠল। বিকেলেই ফিজার বিষয়টি সবকিছু রাবিন ওদেরকে জানিয়ে দিয়েছিলো। তাই রাবিন আর ফিজার রিলেশনশিপটা কোথায় গিয়ে ঠেকবে সেই ভেবে সবাই এক্সাইটেড হয়ে আছে।
রাত অনেকটা গড়িয়েছে। মির্জা বাড়ির ড্রইংরুমে সবাই বসে আছে। বড় ঝাড়বাতির আলোয় ঘরটা ঝলমল করছে, অথচ পরিবেশটা বেশ শান্ত। তামসী একটু আড়ালে, সোফার কিনারায় বসে আছে। মাঝে মাঝে লাজুক চোখে গালিবের দিকে তাকাচ্ছে, আবার দ্রুত চোখ নামিয়ে আনে। মেয়েটা আজকাল ঢ়েন বেশি লজ্জা পাচ্ছে! গালিবও চুপচাপ বসে, তবে তার ঠোঁটের কোণে অদৃশ্য হাসি লুকিয়ে আছে।
সাইদ মির্জা কাশিমা গলা খাঁকারি দিয়ে বললেন,
“ তোরা দু’জনেই তো রাজি আছিস। এবার তারিখটা ঠিক করতে হবে। আমি চাই না বেশি দেরি হোক।”
নির্জর মির্জা মাথা নাড়লেন,
“ আমিও তাই ভাবছি। দেরি করার কোনো কারণ দেখি না।”
চলবে….