গোধুলির শেষ বিকেলে তুমি আমি পর্ব-২০

0
181

#গোধুলির_শেষ_বিকেলে_তুমি_আমি
#পর্ব২০
#Raiha_Zubair_Ripti

সাঝ সন্ধ্যা, পশ্চিম আকাশে সূর্য ঢলে গিয়েছে অনেকক্ষণ আগেই। চারিপাশে আঁধার ঘনিয়ে এসেছে। ঝিঁঝি পোকার গুনগুন করা আওয়াজ ভেসে আসছে বাড়ির পেছনে থাকা জঙ্গল থেকে। ছাঁদের কার্নিশ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে রুয়াত আর সাদমান দু’জনের হাতে কফির মগ। পাশেই রজনী দাঁড়িয়ে আছে। সাদমান কফি খাচ্ছে আর আড় চোখে রজনী কে দেখছে। আকস্মিক নিচে চোখ যেতেই জবা কে দেখতে পেয়ে সাদমান বলে উঠে –
-“ রুয়াত শুনো।
রুয়াত কফির মগে চুমুক বসিয়ে বলে-
-“ হু ভাইয়া বলুন।
-“ তুমি তো ইতিমধ্যে জবা কে জেনে গিয়েছো তাই না?
-“ হ্যাঁ উনার ফুপির মেয়ে।
-“ দেখেছো সামনাসামনি?
-“ নাহ্ মনে হয়।
-“ শুনো মেয়েটার থেকে সাবধানে থাকবা। আর ব্রে কেউ সাবধানে রাখবা।
রজনী ভ্রু কুঁচকে বলল-
-“ কেনো?
-“ আসলে ব্রো কে জবা পছন্দ করতো।
রুয়াত ফট করে প্রশ্ন করে বসে-
-“ আর উনি?
-“ ব্রো পছন্দ করতো না জবা কে।
-“ কেনো?
-“ সেটা তো ব্রো ই বলতে পারবে। তবে সাবধানে থেকো।
-“ ভয় দেখান কেনো ভাই। উনি তো আর পছন্দ করে না।
-“ তাতে কি জবা তো করে। ব্রো এর দিকে নজর দিবে। ও খুব একটা ভালো মস্তিষ্কের না।
রুয়াত শক্ত মুখ করে বলল-
-“ চোখ উ’পড়ে ফেলে দিবো। আমার উনির দিকে তাকিয়ে ছ্যাচড়ামিপনা করলে।
-“ তা করো মানা নেই। হেল্পম্যান হিসেবে কাউকে লাগলে আমায় নিও। এখন চলো বসি গিয়ে।

বাড়ির ছাঁদে মাদুর পেতে বসে পড়লো শাফায়াত, রুয়াত,সানজিদা, নাইমুর, সাদমান রজনী, রুনা আর রুনার বড় ভাই মৃদুল। মৃদুল গ্রামেরই গ্রামীণ ব্যাংকে জব করে। মাদুরের মাঝখানে জলছে হারিকেন। হারিকেনের রশ্মিতে আলোকিত হয়েছে বসে থাকা জায়গা টুকু।

শাফায়াত ফোন স্ক্রোল করছে সেটা দেখে সাদমান ফোন টা থাবা দিয়ে কেঁড়ে নিয়ে বলে-
-“ উফ ব্রো ফোন পরে টিপো। চলো আগে ট্রুট ডেয়ার খেলি। আজকের আকাশটায় জোশ জোশ একটা ফিলিংস আছে।

শাফায়াত মুখ গম্ভীর করে বলল-
-“ না এসব খেলা টেলা খেলবো না। তোরা খেল।
শাফায়াত উঠে চলে আসতে নিলে রুয়াত ফিসফিস করে বলে উঠল-
-“ খেলুন না। নাকি ভয় পান এসব ট্রুথ ডেয়ারে?
শাফায়াত তাকালো রুয়াতের দিকে। ফের বসে বলল-
-“ শাফায়াত ইমতিয়াজ নোয়াস কোনো কিছুতে ভয় পায় না ওকে?
-“ তাহলে খেলুন।
শাফায়াত সাদমানের দিকে তাকিয়ে বলে-
-“ শুরু কর খেলা।
সাদমান রুনার মাথার চুল টেনে বলে-
-“ এই পিচ্চি যা তো একটা পানির বোতল নিয়ে আয়।
রুনা দৌড়ে ছাঁদ থেকে নেমে একটা বোতল নিয়ে আসলো। সাদমান হারিকেন টা এক সাইডে রেখে সবার দিকে চেয়ে বলল-
-“ রেডি সবাই? ঘুরালাম তাহলে বোতল টা।
নাইমুর তাড়া দিয়ে বলল-
-“ ব্যাটা ঘুরা বোতল টা।
সাদমান ঘুরাতে নিবে বোতল টা এমন সময় জবা এসে বলল-
-“ আমাকে ছেড়েই খেলা শুরু করতে চাইছো সাদমান।
সাদমান তাকালো সামনে। লাল কালারের সেলোয়ার-কামিজ পড়া জবা দাঁড়িয়ে আছে। সাদমান শাফায়াত এর দিকে তাকিয়ে মেকি হাসি দিয়ে বলল-
-“ আরে হ্যাঁ জবা আসো বসো,খেয়ালই নেই তোমাকে বলতে।
জবা মুচকি হেঁসে এগিয়ে এসে বলে-
-“ কোথায় বসবো?
সাদমান শাফায়াত এর দিকে ঘেঁষে বসে সাইডে বসতে বলবে তার আগেই জবা শাফায়াত এর পাশে বসে পড়লো। রুয়াত আর জবার মাঝখানে শাফায়াত। শাফায়াত রাগী চোখে তাকালো সাদমানের দিকে। সাদমান স্মিত হাসলো। রুয়াত এতক্ষণে বুঝে গেলো এই মেয়েটা জবা। এর সাথেই শাফায়াত এর বিয়ের কথা শুনেছিলো। সত্যি মেয়েটা সুন্দর। কিন্তু তার স্বামীর পাশে বসেছে এটা ভালো লাগছে না রুয়াতের। সেজন্য রুয়াত উঠে দাঁড়ালো। সবাই রুয়াতের দিকে তাকালো। সাদমান বলে উঠল-
-“ কি হয়েছে উঠলে কেনো?
রুয়াত সাদমানেট কথার উত্তর না দিয়ে শাফায়াত এর দিকে তাকিয়ে বলে-
-“ এই আপনি আমার জায়গায় বসুন তো৷ আমি আপনার জায়গায় বসবো।

শাফায়াত বেশ বুঝলো বউ তার জেলাস হচ্ছে পাশে জবা বসায়। বউয়ের বাধ্য স্বামীর মতো বউয়ের জায়গায় বসলো। আর রুয়াত শাফায়াতের জায়গায়।

সাদমান বোতল ঘুরালো। প্রথমেই গিয়ে থামলো শাফায়াত এর দিকে। রুয়াত উৎফুল্ল হলো। আগ্রহ নিয়ে তাকালো শাফায়াত ট্রুথ নিবে নাকি ডেয়ার নিবে সেটা শোনার জন্য। সাদমান জিজ্ঞেস করতেই শাফায়াত ট্রুথ নিবে বলে জানায়। রুয়াত মুখ খুলে প্রশ্ন করতেই রুয়াতের মুখের কথা কে কেড়ে নিয়ে জবা বলে উঠে –
-“ তোমার লাইফের প্রথম ভালোবাসার মানুষ টি কে ?

রুয়াত তাকালো জবা আর শাফায়াত এর মুখের দিকে। শাফায়াত কি বলবে সেটা শোনার অপেক্ষায় আছে। তার জীবনের প্রথম ভালোবাসা আবার এই জবা টবা না তো? যদি হয়েও থাকে আর সেটা যদি শাফায়াত মুখে বলে আজ তাহলে রুয়াত শাফায়াত সহ এই জবা কে ছাঁদ থেকে ফেলে দিবে।

জবার মুখে হাসি ঝুলছে। শাফায়াত জবার মুখে ঝামা ঘষা দিয়ে বলল-
-“ আমার মা।
জবার মুখের হাসি গায়েব হয়ে গেলো। তৎক্ষনাৎ বলে উঠল-
-“ আমি সেই ভালোবাসার কথা বলি নি। আমি তো….
সাদমানের হাসি পেলো জবার চুপসে যাওয়া মুখ টা দেখে। বোতল টা ফের ঘুরাতে ঘুরাতে বলল-
-“ এক বারে এতো প্রশ্ন করা যাবে না জবা। তুমি আগে বলে দাও নি কেনো কেমন ভালোবাসা। এখন আর হবে না।
সাদমান বোতল টা ঘুরালে এবার গিয়ে থামে নাইমুরের কাছে গিয়ে। নাইমুর ডেয়ার নিলো। সাদমান বলে উঠল-
-“ তোমার গলার কন্ঠ অনেক দারুন। একটা গান শোনাও।
নাইমুর চুল গুলো পেছন দিকে ঠেলে বলে-
-“ গিটার পাওয়া যাবে?
মৃদুল বলল-
-“ আমার আছে। রুনা নিয়ে আয় তো রুম থেকে।

রুনা ফের উঠে রুম থেকে গিটার টা নিয়ে আসলো। নাইমুর গিটার টা নিয়ে সুর তুললো। তারপর সানজিদার দিকে তাকিয়ে গেয়ে উঠলো-

তোমার এলোমেলো চুলে
আমার সাদা মনে
হারিয়ে যেতে চাই
কোন হুড তোলা রিকশায়
এক মুঠো প্রেম এড়িয়ে
আমার শূন্য পকেটে
হারাতে দ্বিধা নাই
অচেনা গলিতে
এক শহর ভালবাসা দিতে চাই

এই নরম বিকেলে
মুখোমুখি দাড়িয়ে
শুধু বলতে ভয়
ভালোবাসাতে চাই
দ্বিধার আদরে
আমি খুব সাধারন
সাদামাটা একজন
মরতে পারি
বাঁচতে শিখি
না দ্বিধা ছাড়াই…..

থেমে পড়লো নাইমুর। সাদমান গিটার টা ছিনিয়ে নিয়ে বলল-
-“ বুঝে গেছি কাকে উদ্দেশ্য করে গান টা গেয়েছো নাইমুর ব্রো। তার এলেমেলো চুল,সাদা মন তোমার শূন্য পকেটেও পাশে থাকবে।

নাইমুর হাসলো। সানজিদা লজ্জা মাখা মুখ নিয়ে অন্য দিকে ঘুরলো। বাড়ির সবাই জানে নাইমুর আর সানজিদার প্রণয়ের কথা। মাস কয়েক হলো দু’জনে প্রণয়ে আবদ্ধ হয়েছে। নাইমুর বেশি দেরি করবে না এই মেয়েটা কে বউ করে নিয়ে যেতে। শুধু ঢাকায় ফেরার অপেক্ষা।

রুয়াত এবার বোতল টা নিয়ে ঘুরালো। আর ভাগ্যক্রমে বোতল টা গিয়ে জবার কাছে থামলো। রুয়াত জিজ্ঞেস করলো-
-“ ট্রুথ ওর ডেয়ার?
জবা সাহসিকতার সহিত বলল-
-“ ডেয়ার।
-“ ওকে। আমার জন্য কফি বানিয়ে নিয়ে আসেন। এক মগ খেয়ে পুষায় নি।
জবা অবাকের সুরে বলে-
-“ কিহ!
-“ কানে শুনেন নি? আমি তো হিন্দি ইংলিশ বলি নি। খাঁটি বাংলা বলেছি।
-“ আমি পারবো না এটা।
-“ তাহলে খেলা থেকে আউট আপনি। রুমে গিয়ে ঘুমান।

অপমানে জবার মুখ থমথমে হয়ে গেলো। তবুও বসে রইলো। সাদমান ডেয়ার পূরণ করতে না দেখে বলল-
-“ যাও জবা ডেয়ার নিয়েছো পূরণ তো করতেই হবে।
জবা চলে গেলো রান্না ঘরে। দু মগ কফি বানিয়ে নিয়ে আসলো। রুয়াত ভ্রু কুঁচকালো দু মগ কফি দেখে। রুয়াত নিজের টা নিয়ে জবার কাহিনি দেখতে লাগলো। জবা শাফায়াত এর দিকে আরেক মগ বাড়িয়ে দিলে রুয়াত সেটাও নিয়ে নেয়। জবা রেগে বলে-
-“ শাফুর টা নিচ্ছ কেনো?
রুয়াত ভ্রু কুঁচকে বলল-
-“ হোয়াট শাফু? কল হিম শাফায়াত। আমার বর আমার হাতের কফি ছাড়া অন্য কারো হাতের কফি খায় না। আর উনার জন্য কফি আনতে বলা হয় নি।

কথাটা বলে রুয়াত কফির মগে চুমুক বসিয়ে আর খেতে পারলো না। চিনিও দিয়েছে আবার নুন ও দিয়েছে কফিতে! এটা কফি নাকি অন্য কিছু বুঝতে পারলো না রুয়াত।

সাদমান বোতল ফের বোতল ঘুরালে বোতল টা রুয়াতের সামনে এসে থামে। রুয়াত ট্রুট নেয়। সাদমান জিজ্ঞেস করে-
-“ ব্রো কে নিয়ে তোমার অনুভূতি কেমন রুয়াত?
রুয়াত শাফায়াত এর বাহু জড়িয়ে ধরে টেনে টেনে সুরে বলে-
-“ দারুননন। দোয়া করবেন আমার অনুভূতি তে যেনো কোন সাতচুন্নি নজর না লাগায়।

কথাটা জবা কে ঠেস মে’রে বলল রুয়াত। তারপর বোতল ঘুরাতেই বোতল টা গিয়ে ঠেকলো সাদমানের কাছে। সাদমান ট্রুথ নিলো। নাইমুর বলল-
-“ কারে ভালোবাসিস সেটা বল।
সাদমান আড়চোখে রজনীর দিকে তাকিয়ে বলল-
-“ সত্যি টা বলবো?
-“ ব্যাটা ট্রুথ নিছিস কি মিথ্যা বলার জন্য নাকি?
-“ ওকে তাহলে ট্রুথ টাই বলছি। রুয়াতের বোন কে তো সবাই চিনো তাই না?
রুয়াত ভ্রু কুঁচকালো। নাইমুর রজনীর দিকে তাকিয়ে বলল-
-“ রজনী?
সাদমান বলল-
-“ হুমম। মিস সিনিয়র।
-“ উনাকে ভালোবাসিস তুই?
রজনী ত্বরিত গতিতে তাকালো সাদমানের দিকে। সাদমানের মুখে লেগে আছে হাসি। সাদমান মাথা ঝকিয়ে হ্যাঁ বলছে। রজনী সহসা বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো। রুয়াতের দিকে তাকিয়ে বলল-
-“ রুয়াত আমি আসছি। রাত অনেক হয়েছে মেডিসিন খেয়ে ঘুমাতে হবে।
রজনী চলে গেলো। সাদমান হাই তুলতে তুলতে বলল-
-“ তোমার বোন পালিয়ে গেলো রুয়াত। বুঝাবে না ওকে? দেবরের কষ্ট টা বুঝো একটু।
রুয়াত কি বলবে বুঝতে পারলো না। সাদমান কে বলে দেওয়া উচিত রজনীর ব্যপারে সব কথা। তারপর হয়তো এমন করবে না তার বোন কে নিয়ে। রুয়াত ফোনে সময় দেখে নিলো। তারপর বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে শাফায়াত এর দিকে তাকিয়ে বলে-
-“ আমি রুমে গেলাম।
রুয়াত চলে গেলো। মৃদুলের ও সকালে উঠে অফিসে যেতে হবে দেখে সেও চলে গেলো। রুয়াত মধ্য সিঁড়িতে এসে বসে শাফায়াত কে মেসেজ পাঠালো

-“ কি হলো আপনি আসছেন না কেনো?
শাফায়াত টাইপ করলো-
-“ কেনো?
-“ কেনো মানে কি? আমি চলে আসার পর ও আপনি ওখানে বসে কেনো? আপনার উচিত ছিলো আমার পেছন পেছনই চলে আসা।
-“ আচ্ছা রুমে যাও আসতেছি।
-“ আমি সিঁড়িতে বসে আছি। তাড়াতাড়ি আসেন।

শাফায়াত তপ্ত শ্বাস ফেলে বসা থেকো উঠে চলে আসলো। সিঁড়িতে রুয়াত কে বসে থাকতে দেখে বলল-
-“ এবার উঠো।
রুয়াত বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো। পেছন তাকাতেই দেখে জবা হন্ত হয়ে আসছে। রুয়াত সিঁড়ি থেকে নামার সময় ইচ্ছে করে উষ্ঠা খেয়ে পড়ে যেতে নিলে শাফায়াত ধরে ফেলে। ধরে ফেলার জন্য রুয়াত মনে মনে শাফায়াত কে হাজার টা গালি দেয়। তার কেনো ধরতে হবে? সে কি ধরে ফেলার জন্য পড়ে যাওয়ার এক্টিং করেছে? শাফায়াত রুয়াত কে সোজা করে দাঁড় করিয়ে বলে-
-” সাবধানে হাঁটতে পারো না?
রুয়াত পা টা খোঁড়ার মতো করে মন খারাপ করে বলল-
-“ পা দুটে ভীষণ ব্যথা করছে শাফু। একটু রুম অব্দি নিয়ে চলুন না কোলে করে।
শাফায়াত ভ্রু কুঁচকালো। সন্দিহান হয়ে বলল-
-“ সত্যি পা ব্যথা করছে? কিন্তু পড়ার আগেই তো আমি ধরে ফেললাম।
শাফায়াত এখনও জবা কে খেয়াল করে নি। রুয়াত বলল-
-“ আমি কি মিথ্যা বলি? সত্যি ব্যথা করছে। ধরে ফেলেছেন তো কি হয়েছে। ধরে ফেললে কি ব্যথা পাওয়া যায় না?

শাফায়াত তর্ক না করে রুয়াত কে পাঁজা কোলে নিয়ে রুমে চলে আসলো। জবা রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বলে উঠল-
-“ তোমাকে আমি দেখে নিব রুয়াত। আমাকে রাগাতে চাইছো? তুমি চিনো না আমাকে। আমার জিনিসের উপর নিজের অধিকার স্থাপিত করেছো। এর ফল তো ভোগ করবেই।

সাদমান জবা কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বলে-
-” আরে সিঁড়ির মাঝখানে দাঁড়িয়ে কেনো? এক সাইডে দাঁড়াও। যেতে দাও।
জবা সরে দাঁড়ালো সাদমান রুনা কে নিয়ে নিচে নামলো।

ছাঁদে কেবল রইলো সানজিদা আর নাইমুর। সানজিদা ছাঁদ থেকে নামার জন্য উদ্যোত হলে নাইমুর বলে উঠে –
-“ আসার পর থেকে কথা বলছে না কেনো সানজু?

চারদিন পর মানুষ টার মুখে সানজু নাম টা শুনে কলিজা ঠান্ডা হয়ে গেলো। পিছু ফিরে বলল-
-“ আপনি বলেছেন কথা আমার সাথে? আমি কেনো যেচে আগে কথা বলবো?
-“ এই যে বলছি আগ বাড়িয়ে।
-“ আমিও তো কথা বলতেছি।
-“ চলে যাচ্ছো কেনো তাহলে। পাশে এসে বসো।
-“ ঘুমাবো না?
-“ একটু পরে না হয় ঘুমিয়ো।
সানজিদা এগিয়ে আসলো। সে ঢের জানে কেনো পাশে বসতে বলছে তাকে। সানজিদা নাইমুরের পাশে বসে বলল-
-“ বসলাম। পাক্কা পাঁচ মিনিট পাবেন তাকিয়ে থাকার জন্য। নাইমুর হাসলো। পাঁচ মিনিট মৌনব্রত পালন করে সানজিদা কে দুচোখ ভরে দেখলো। পরিশেষে কপালে ওষ্ঠ ছুঁইয়ে দিয়ে বলল-
-“ ধন্যবাদ সানজু আমার জীবনে ভালোবাসা হয়ে আসার জন্য। ভালোবাসি।
সানজিদা মুচকি হেঁসে বলল-
-“ ভালোবাসায় ভালোবাসি আপনাকে।

শাফায়াত রুয়াত কে নিয়ে সোজা রুমে ঢুকে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে বলে-
-“ কই ব্যথা পাইছো বলো আমি মলম লাগিয়ে দেই।
কথাটা বলে শাফায়াত ড্রয়ার খুঁজতে লাগলো। রুয়াত বিছানায় শুয়ে বলে-
-“ আপাতত ব্যথা নেই। সকাল হলে আবার ব্যথা শুরু হবে পায়ের সাথে মাথা। এখন শান্তি লাগছে।

শাফায়াত বুঝলো না রুয়াতের কথার কোনো মানে। একটু আগেই বলল ব্যথা করছে পা। আর এখন বলছে ব্যথা নেই!

#চলবে?