ঘর কুটুম পর্ব-০৫

0
4

#_ঘর_কুটুম_
#_মারিয়া_রশিদ_
#_পর্ব_৫_

রাতটা গভীর। ঘড়ির কাটা একেক করে এগিয়ে চলছে। বারোটা বাজতে আর মাত্র এক মিনিট বাকি। বিছানার উপর একটা ডার্ক ফরেস্টের মাঝারি আকৃতির কেক রাখা। তার পাশেই বসে আছে তিতলি আর রুপন্তি সময়ের অপেক্ষায়। রুপন্তি মন দিয়ে দেখছে, মেয়ের মুখে উজ্জ্বলতা। মেয়েটি বড্ড উত্তেজিত। বারোটা বাজলেই জন্মদিনের শুভেচ্ছা আড্ডা। ঘড়ির কাটা যখন বারোটা স্পর্শ করলো, রুপন্তি মৃদু হেসে তার মেয়ের কপালে ধীরে চুমু একে দিলো।
–” হ্যাপি বার্থডে, আমার সোনা মা!”

তিতলি হেসে উত্তর দেয়,
–” থ্যাংকিউ, মাম্মাম!”

এই মুহুর্তে রুপন্তির ফোনে ম্যাসেজ টোন ভেসে আসে। সে ফোন হাতে নিয়ে দেখে অরুনিমা আর ছোয়ার কাছের থেকে বার্থডে উইশ এসেছে। রুপন্তি মৃদু হেসে বলে,
–” মামনি! তোমার অরু আন্টি আর ছোয়া আন্টি তোমাকে বার্থডে উইশ করেছে। এখন তুমি ভয়েসে ওদের থ্যাংকিউ বলো।”

তিতলি এক পলকে উত্তর দেয়,
–” ওকে, মাম্মাম!”

ভয়েস ম্যাসেজে তিতলি মিষ্টি কন্ঠে ধন্যবাদ জানায় অরুণিমা আর ছোয়াকে। রুপন্তি হাসিমুখে বললো,
–” চলো, এবার আমরা কেক কাটবো সোনা।”

তিতলি হঠাৎ মুখ ঘুরিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
–” পাপা কোথায় মাম্মাম? আজও পাপা কেন লেট কলছে?”

রুপন্তির হাসি এক বিষাদ ছোয়ায় স্লান হয়ে গেলো। মন খারাপ হলো। কুশান আজ অফিস যাওয়ার আগে বার বার রুপন্তি বলে দিয়েছিলো তাড়াতাড়ি ফেরার জন্য, আবার অনেকবার ম্যাসেজও করেছে তাড়াতাড়ি আসার জন্য, তবুও মানুষটা আসলো না। মেয়েটা কতোটা অপেক্ষা করেছিলো তার বাবার জন্য। তিতলি আবার বললো,
–” পাপা তো আমাকে উইশও কললো না, মাম্মাম! পাপা কি আমাল বার্থডে ভুলে গেছে?”

রুপন্তির যেন হৃদয় ভেঙে গেলো। মেয়েটার ছোট্ট কন্ঠে কষ্ট স্পষ্ট। রুপন্তির চোখে জলরাশি গুলো এসে ভিড় করেছে। মেয়েটার এই অনাবিল ভালোবাসার প্রতি কুশানের উদাসীনতা, সব মিলিয়ে অসহনীয় হয়ে উঠছে। রুপন্তি মৃদু কন্ঠে বলে,
–” আম্মু! তুমি এখন কেকটা কাটো। তারপর আমি আর পাপা মিলে আগামীকাল তোমার সাথে আরও একটা কেক কাটবো।”

তিতলি কাঁচা কন্ঠে বললো,
–” থাক, তাহলে আজ কেক কাটলাম না। কালকে পাপাল সাথে কাটবানি।”

রুপন্তির চোখ ভরে যাচ্ছে পানিতে। বাচ্চা মেয়েটির মনের অন্তরালে যে ভালোবাসার জড় বয়ে যাচ্ছে, এই রুপন্তি খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে। মেয়েটা কতো অপেক্ষা করেছিলো তার বাবার জন্য। আর মানুষটা কিভাবে এতো দায়িত্বজ্ঞানহীন হতে পারে? এই ভাবনায় রুপন্তির বুকের ভেতরটা ছিঁড়ে যাচ্ছে। রুপন্তি কোমল হাসি দিয়ে বলে,
–” এখন একটু কেক কাটো। মাম্মামের সাথে কেক কাটবে না?”

তিতলি একদম চুপ হয়ে গেলো। তারপর চোখ থেকে দু’ফোটা পানি ফেলে বললো,
–” আমি পাপাকে মিস কলি, মাম্মাম! পাপা তো আন্টিদেল মতো ফোনে উইশ কলতে পালতো।”

রুপন্তি তৎক্ষনাৎ মেয়েকে কাছে টেনে নিলো। তিতলি রুপন্তির বুকে মুখ গুঁজে ফুপিয়ে উঠলো। রুপন্তিও মেয়েকে আকড়ে ধরে চোখের পানি ফেলে। তাদের দুজনের এই ছোট্ট পৃথিবী যেন সেই মুহুর্তে সবচেয়ে বড় শক্তি তারা দুইজনই। কষ্ট আর অপেক্ষার মাঝেও মায়ের উষ্ণ আলিঙ্গনে তিতলির মন শান্ত হলো। আর রুপন্তির হাড়ে হাড় অনুভুত হলো, একজন মা হিসাবে তার সংগ্রাম, ভালোবাসা আর সব কিছুই তিতলির জন্য।

রুপন্তির বুকে মাথা রেখে গভীর ঘুমে তলিয়ে গেছে তিতলি। ছোট্ট মেয়েটার রাত জাগার অভ্যাস নেই। মায়ের বুক ভিজিয়ে দিতে দিতে এক সময় ঘুমেই ভেসে গেছে সে। যে কেকটা তিতলির জন্মদিনের জন্য আনা হয়েছিলো, সেই কেক এক পাশে পড়ে আছে। যেন এক বোবা সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে মেয়ের ছোট্ট মনের অভিমানের কাছে। রুপন্তি মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। চোখের কোণে বার বার জমে উঠে জলকণা। সেই কণাগুলো চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ার আগেই রুপন্তি মুছে ফেলে। যেন নিজের অস্থিরতা মেয়ের শান্ত ঘুমে বিঘ্ন না ঘটায়।

রাত একটার ঘর পেরিয়েছে। কুশান এখনো ফেরেনি। না কোনো ফোন, না কোনো ম্যাসেজ। আজকের এই বিশেষ দিনে, যেদিন তার ছোট্ট মেয়েটা রাত ভর বাবার জন্য অপেক্ষা করেছে, সেই মানুষটা যেন সেই জগতেই নেই। চোখ বন্ধ করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে রুপন্তি। দুঃখ, অসহায় ভালোবাসা তার বুকের ভেতর পাথরের মতো চেপে বসে। বিছানায় তিতলিকে আলতো করে শুইয়ে দেয় সে। চাদরটা গায়ে টেনে দেয়। তারপর মেয়ের কপালে আলতো করে চুমু দিয়ে ফিসফিস করে বলে ওঠে,
–” তুমি কষ্ট পেয়ো না, সোনা মা আমার। মাম্মাম সব সময় তোমার পাশে থাকবে। তোমাকে আগলে রাখবে। মাম্মাম কখনো তোমাকে একা হতে দেবে না। আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি, সোনা! খুব খুব ভালোবাসি।”

রুপন্তি আরও কয়েকটা চুমু খায় মেয়ের মুখে। তিতলির মুখটা কেমন শান্ত, কেমন নিষ্পাপ। তারপর রুপন্তির চোখ যায় মাঝারি আকৃতির ডার্ক ফরেস্ট কেকটির দিকে। তিতলি নিজে পছন্দ করে এনেছিলো কেকটি। রুপন্তি উঠে গিয়ে কেকটা নিয়ে ফ্রিজে রাখে।কেক রাখার সময় একটা চাপা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে রুপন্তির মুখ থেকে। তারপর হাঁটতে হাঁটতে বারান্দায় এসে দাড়ায় রুপন্তি। আকাশে আজ পূর্নচাদ। কিন্তু চাদের মুখে ঢাকা পড়েছে ভেসে বেড়ানো কালো মেঘ। কয়েকদিন ধরেই আকাশ এমোন৷ গুমোট, ভারি কিন্তু বৃষ্টি নেই। প্রচন্ড গরম আবহাওয়া। যেকোনো সময় ঝড় আসতে পারে। ঠিক তেমনই ঝড় আজ রুপন্তির মনে বইছে, স্মৃতির ঝড়।

চোখের সামনে সিনেমার মতো ভেসে উঠে কুশানের সেই রুপ। কুশান যখন প্রথম শুনেছিলো, রুপন্তির গর্ভের তার সন্তান এসেছে, সেই দিনটা যেন রুপন্তি কোনোদিন ভুলবে না। কি আনন্দ, কি উচ্ছ্বাস ছিলো সেই মামুষটার চোখে। কী উত্তেজনায় না ছিলো তখন। রুপন্তির প্রতি কুশানের সেই সময়কার যত্ন ছিলো অতিরিক্ত। রুপন্তির সব কিছুতেই নজর রাখতো কুশান। সময় মতো খাওয়া, ওষুধ, চলাফেরা, সব কিছুতেই কুশান ছিলো দায়িত্বশীল, যত্নশীল। প্রতিদিন অফিস থেকে ফিরে এসে ক্লান্ত শরীরে হাত বুলিয়ে দিতো রুপন্তির পেটে, ফিসফিস করে কথা বলতো বাবুর সাথে।

যেদিন তিতলি জন্মালো, রুপন্তির জীবনে ছিলো এক নতুন অধ্যায়ের শুরু। কুশানের কাছে সেটা ছিলো এক অলৌকিক আনন্দ। তিতলি নামটা কুশানই দিয়েছিলো। তিতলি মানে প্রজাপতি। কুশান বলেছিলো,
–” ও আমাদের জীবনে একটা প্রজাপতির মতো এসেছে। প্রজাপতি যেমন সৌন্দর্য বয়ে আনে, আমাদের মেয়েটা আমাদের জীবনে সেরকম রং ছড়িয়ে দিতে এসেছে। তাই ওর নাম তিতলি।”

ছোট্ট মেয়েটার প্রতি কুশানের ভালোবাসা ছিলো অনিন্দ্য। মেয়েকে কোলে নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতো। মেয়েকে কোলে নিয়েই থাকতে চাইতো সে। অফিসেই যেতে চাইতো না মেয়ের জন্য। অফিস যাওয়ার পরও কতশত ফোন করতো, মেয়ের খবর নেওয়ার জন্য। তিতলি সামান্য কাশি দিলেও কুশান যেন নিজের জ্ঞান হারিয়ে ফেলতো। মেয়ে সামান্য অসুস্থ হলেও, রাত জেগে বসে থাকতো মেয়ের পাশে। তিতলি যখন প্রথম বার পাপা বলে ডাকলো, কুশান কেঁদে ফেলেছিলো আনন্দে। তিতলির প্রথম জন্মদিনে তো যেন গোটা দুনিয়াই তার মেয়ের জন্য আয়োজন করেছিলো কুশান। কতো জাঁকজমক, কতো আয়োজন, সব নিজের হাতে করেছিলো কুশান।

আর আজ? আজ সেই মানুষটা, সেই কুশান, সেই বাবা নিজের মেয়ের জন্মদিন ভুলে গেছে? না একটা ফোন, না একটা ম্যাসেজ। ছোট্ট মেয়েটার অপেক্ষা করাটাও নষ্ট করে দিলো সেই মানুষটা। রুপন্তি দীর্ঘ সময় ধরে দাড়িয়ে আছে বারান্দায়। তার চোখে জল ভরে আসে। কিন্তু, সেই জল ঝরে না। কারন, তার কান্নার তো জায়গা নেই। রুপন্তি ভাবতে থাকে, মানুষ স্বামী হিসাবে বদলে যায়, প্রেমিক হিসাবেও বদলে যায়। কিন্তু, একজন বাবা? একজন বাবা কিভাবে বদলে যেতে পারে? একজন বাবা কিভাবে এতো উদাসীন হতে পারে? একটা ছোট্ট মেয়ের এতোটুকু অপেক্ষা কি করে সে অনুভব করতে পারে না?

আজ মেয়েটা শেষ পর্যায়ে শুধু, বাবার থেকে ফোন কলের মাধ্যমে বার্থডে উইশ চেয়েছিলো। যেইটা চাইলেই হতো। রুপন্তির চোখে এখন মেয়ের কান্নারত মুখটা ভাসছে। বাবার অভাবটা মেয়েটার জন্মদিনে হাহাকার বয়ে নিয়ে আসলো। রুপন্তির বুক ভার হয়ে আসে। মেঘগুলো গাড় হচ্ছে। হয়তো ঝড় আসবে, অথবা ঝড় পেরিয়ে যাবে। কিন্তু, রুপন্তির হৃদয়ে যে ঝড় উঠেছে তার শেষ কোথায় সেইটা সে জানে না।

রাত পেরিয়ে গভীর রাতে পা দিয়েছে অনেক সময় হলো। ঘড়ির কাটা এখন ২টা ছুঁই ছুঁই। হঠাৎ করেই কলিং বেলের আওয়াজ ভেসে আসে। নিশ্চয় কুশান এসেছে। বারান্দায় দাড়িয়ে থাকা রুপন্তি ধীর পায়ে এগিয়ে আসে দরজার দিকে। দরজা খুলতেই চোখে পড়ে তার সন্তানের অনুপস্থিত পিতা কুশান দাড়িয়ে। কুশান এক পলক তাকায় রুপন্তির দিকে। তারপর ভেতরে যাওয়ার জন্য কয়েক পা ফেলতেই রুপন্তি বলে ওঠে,
–” আজ অন্তত একটু তাড়াতাড়ি আসা যেতো না?”

কুশান থেমে যায়। ভ্রু কুচকিয়ে তাকায় রুপন্তির দিকে। রুপন্তি তীক্ষ্ণ অভিমান মেশানো কন্ঠে বললো,
–” তোমার মেয়েটা আজ কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়েছে। কেকটাও কাটেনি। শুধু তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলো।”

কুশান এবারও চুপ। রুপন্তি কয়েক পা এগিয়ে এসে কন্ঠে একটু রুঢ়তা মিশিয়ে বলে,
–” তাড়াতাড়ি আসতে না পারো, একটা ম্যাসেজ কি দিতে পারতে না? একটাও কলও কি দিতে পারোনি? এতোটুকু সময় কি নেই তোমার কাছে?”

কুশান একটুখানি নিঃশ্বাস ফেলে বলে ওঠে,
–” আসলে খেয়াল ছিলো না।”

রুপন্তি ভ্রু কুচকিয়ে তাকায়। হতবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে,
–” খেয়াল ছিলো না? আমার পাঠানো ম্যাসেজগুলো কি চোখে পড়েনি তোমার?”

–” ফোন ধরার সময় ছিলো না। সকালে উইশ করে দিবো।”
নির্বিকার ভাবে বলে কুশান।

এই কথাটুকু রুপন্তির শরীরে বিদ্যুৎ খেলে যায়। রাগে অভিমানে, ক্ষোভ নিয়ে বললো,
–” কি বললে তুমি? সকালে উইশ করবে? তোমার মেয়েটা আজ চোখের জল ফেলেছে। আর তুমি বলছো সকালে উইশ করবে। কুশান ও তোমার সন্তান। তোমার এইসবে ও আজ মারাত্মক কষ্ট পেয়েছে। তুমি কি সত্যিই নিজেকে চিনতে পারো এখন? এতোটা পরিবর্তন কিভাবে হতে পারো তুমি?”

কুশান বিরক্ত হয়ে বলে,
–” রুপন্তি! খুব টায়ার্ড লাগছে। প্লিজ! এখন এইসব বন্ধ করো। ভালো লাগছে না এইসব ক্যাচাল।”

কুশান কথাটা বলে রুমে চলে যায়। মোবাইলটা চার্জে দিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। যেন কিছুই হয়নি। রুপন্তি কিছুক্ষণ দরজার পাশে দাড়িয়ে থাকে চোখ বন্ধ করে। বুকের ভেতরটা ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যাচ্ছে তার। ধীরে ধীরে ঘরে আসে রুপন্তি। মেয়েটা গভীর ঘুমে, মুখটা নিষ্প্রভ, কান্নায় ক্লান্ত মুখ। হৃদয়টা হাহাকার করে উঠে রুপন্তির। কুশান ফ্রেশ হয়ে এসে বিছানার অন্যপাশে শুয়ে পড়ে। মোবাইল স্ক্রল করে কয়েকবার, তারপর পাশ ফিরে ঘুমিয়ে পড়ে। আজ রুপন্তি তার দিকে ঘুরেও তাকায় না। খাওয়ার কথাও বলে না। সে জানে, কুশান নিশ্চয় বাইরে থেকে খেয়ে এসেছে। রুপন্তির জন্য এ আর নতুন কি?

রুপন্তির চোখে ঘুম নেই। অনেক সময় ধরে চেষ্টা করেও ঘুম আসছে না কিছুতেই। মন বলছে, ঘরের এই দেয়ালগুলো তাকে গিলে খাচ্ছে। সে বিছানা থেকে উঠে পড়ে। নরম কদমে বারান্দার দিকে যায়। বাইরে রাত নিস্তব্ধ, কিন্তু তার ভেতরটা বড্ড অশান্ত। ডিভানে বসে পড়ে সে। মাথা হেলিয়ে দেয় পেছন দিকে। রুপন্তি গভীর ভাবে শ্বাস নেয়, যেন বুকের ভার হালকা কারতে চায়। গলার ভেতরটা জ্বলছে। চোখে জল জমেছে আবার। কিন্তু, সে চায় না সেগুলো পড়ুক। রুপন্তি উপলব্ধি করতে চাইছে, যে মানুষটা তার সবটুকু জুড়ে ভালোবাসার অনুভুতি হয়ে ছিলো, আজ সেই সবচেয়ে বড় অনাত্মীয় হয়ে উঠছে ধীরে ধীরে।!!

#_চলবে_ইনশাআল্লাহ_🌹