#_ঘর_কুটুম_
#_মারিয়া_রশিদ_
#_পর্ব_১০_
রাত ২টা ৩০মিনিট
হাসপাতালের করিডোর জুড়ে নেমে এসেছে এক গভীর নিস্তব্ধতা। চারিদিকে যেন সময় থেমে গেছে। কোথাও কোনো শব্দ নেই। করিডোরের এক প্রান্তে বসে আছে রুপন্তি। তার পাশেই দেওয়ালে হেলান দিয়ে বসে আছে অরুনিমা। তিতলি এখন অবজারভেশনে। ডাক্তার কাউকে তিতলির কাছে যেতে দিচ্ছে না। বাইরে থেকে শুধু অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছু করার নেই। রুপন্তির চোখ বেয়ে পানি পড়ছে নীরবে, নিঃশব্দে। যেন, বুক ফেটে চিৎকার করতে ইচ্ছে করছে, কিন্তু সে পারছে না। মা হয়ে এমন অসহায় বোধ কখনো হয়নি তার। এই মুহুর্তে যে সে, মেয়েটাকে স্পর্শ করতে পারছে না, কোলে নিতে পারছে না, বুকের কাছে টেনে নিতে পারছে না। অরুনিমা চোখটা বন্ধ করে রেখেছে। ক্লান্ত লাগছে তার।
এমন সময় করিডোরে হঠাৎ একজোড়া পায়ের দ্রুত শব্দ ভেসে আসে। গভীর রাতের নিস্তব্ধতায় শব্দটা যেন দ্বিগুণ তীব্র। কেউ দৌড়ে এদিকেই আসছে, বুঝতে দেরি হয় না। রুপন্তি চোখ তুলে তাকায়। কুশান আসছে। ভিজে চুল, মুখে আতংক স্পষ্ট। কিন্তু, তাতে রুপন্তির চোখে বিন্দুমাত্র কোমলতা নেমে আসে না। বরং, চোখ দুটো আরও কঠিন হয়ে যায়। সে ধীরে ধীরে উঠে দাড়ায়। অরুনিমা পাশে নড়াচড়া টের পেয়ে চোখ খুলে তাকায়। সেও দেখে, কুশান দ্রুত পায়ে এগিয়ে আসছে। কুশান এসে রুপন্তির সামনে দাড়ায়। চোখে দ্বিধা ভেসে উঠেছে তার।
কুশান রাত দুইটার সময় বাসায় ফিরে। বাসার দারোয়ানের কাছে জানতে পারে তিতলির অসুস্থ হওয়ার কথা, পাশাপাশি তিতলিকে হাসপাতালে নেওয়ার কথা। দ্রুত ফোন বের করেছিলো কুশান। রুপন্তির অনেক গুলো কল এসে রয়েছে। তখন ফোন সাইলেন্ট ছিলো কুশানের। কারন, সেই সময় কুশান অন্য জগতে ছিলো। সাথে সাথে কুশান গাড়ি ঘুরিয়ে দ্রুত হাসপাতালের দিকে রওনা দেয়।
রুপন্তির গলা ঠান্ডা, কিন্তু ধারালো,
–” কেন এসেছো তুমি?”
কুশান আস্তে করে বলে,
–” আই এ্যাম সরি, রুপন্তি! আমি জানতাম না বাবু এতোটা অসুস্থ।”
রুপন্তির চোখে আগুন। গলার স্বর তীব্র হয়ে ওঠে,
–” নো নিড ইওর সরি, মিস্টার কুশান রহমান! চলে যাও এখান থেকে।”
কুশান এবার একটু বিরক্ত হয়।
–” চলে যাবো মানে? আমার মেয়ে হসপিটালে ভর্তি, আর আমি চলে যাবো?”
রুপন্তি শব্দ করে হেসে উঠে। একটা তিক্ত হাসি। কুশানের ভ্রু কুঁচকে যায়। রুপন্তি কঠিন স্বরে বলে ওঠে,
–” তোমার মেয়ে? এতোক্ষণ কোথায় ছিলো তোমার এই পিতৃত্ববোধ? সকালে অফিস যাওয়ার আগে তুমি দেখোনি মেয়েটার জ্বর? সারাদিন একটা ফোন দাওনি। এতোটুকু চিন্তা হয়নি জানার, কেমন আছে তোমার সন্তান?”
–” আমি ব্যাস্ত ছিলাম, রুপন্তি!”
মৃদু স্বরে বলে কুশান।
এইবার রুপন্তি চিৎকার করে ওঠে,
–” ব্যাস্ত ছিলে? তিতলির থেকেও কি গুরুত্বপূর্ণ তোমার ঐ ব্যস্ততা? একটা মেয়ের অসুস্থতায় যদি বাবার সময় না হয় খোঁজ নেওয়ার, সে কি সত্যিই বাবা? শুধু স্পার্ম ডোনার করলেই বাবা হওয়া যায় না।আরে না, আমি কাকে কি বলছি। তুমি তো মানুষের মাঝেই পড়ো না। তিতলি যে তোমাকে পাপা বলে ডাকে, তোমার তো লজ্জা হওয়া উচিত। দরকার নেই আমার মেয়ের তোমাকে। বাবা বলে কখনো কিছু ছিলে না তুমি। চলে যাও এখান থেকে।”
কুশান এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে রুপন্তির দিকে। এক অদ্ভুত দলা পাকিয়ে বেঁধে আছে গলার কাছে। অরুনিমা তাড়াতাড়ি এসে রুপন্তিকে ধরে সরিয়ে নেয়।ধীরে বলে,
–” রুপন্তি! শান্ত হ। সিনক্রিয়েট করিস না, প্লিজ! এমনিতেই গভীর রাত এখন।”
রুপন্তির মুখে কান্না আর রাগ।
–” না, অরু! আজকে না বললেই না। এই লোকটার কোনো অধিকার নেই তিতলির কাছে আসার। আজ শুধু আমার না, আমার মেয়েও তার প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হয়েছে৷ ওকে চলে যেতে বল, অরু! ওকে বল, ওর মেয়ে আর স্ত্রী ম*রে গেছে। এমন দায়িত্বহীন মানুষের আমাদের জীবনে কোনো প্রয়োজন নেই। শুধু রক্তের সম্পর্ক থাকলেই কেউ বাবা হয় না। বাবা তো দুরে থাক, মানুষ বলতেও ঘৃ*ণা লাগে ওকে।”
কুশান আর দাড়ায় না। চুপচাপ করিডোর ধরে চলে যায়। তার পায়ের শব্দ মিলিয়ে যায় হসপিটালের নিঃসঙ্গ পথ ধরে। রুপন্তি অরুনিমার বুকের কাছে মাথা গুঁজে কান্নায় ভেঙে পড়ে। অরুনিমা চুপচাপ ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে। রাত আরও গভীর হয়। বাইরের আকাশ ভারি মেঘে ঢাকা। মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ চমকায়।
…
হাসপাতালের বাইরেটা এখন নিস্তব্ধ, ভারী, চুপচাপ। রাতের এই সময়ে শহর যেন নিজের সমস্ত ব্যাস্ততা ঝেড়ে ফেলে কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। দিনের আলোয় যেখানে পা ফেলার জায়গা থাকে না, মানুষের ভিড়ে করিডোরগুলো গমগম করে, সেই হাসপাতাল এখন নিঝুম, শান্ত, চুপচাপ। নিচে হসপিটালের বাউন্ডারির মূল প্রবেশদ্বারের এক পাশে দাড়িয়ে আছে কুশান৷ লাল, নীল, হুলুদ আর সাদা নিয়ন বাতির আলো এসে পড়ছে তার শরীরে। মাথার চুল গুলো এলোমেলো হয়ে আছে। পরনে সাদা শার্ট আর কালো প্যান্টে চিরচেনা অফিস লুক। কিন্তু, আজকের রাতের মতো কোনো দিন তাকে এতোটা বিধ্বস্ত দেখায়নি। এই মানুষটাই সকালবেলা আয়নায় তাকিয়ে অফিস যাওয়ার আগে নিজেকে পরিপাটি করেছে। আর এখন সেই মানুষটা নিজের মেয়ের হাসপাতালে ভর্তির কথা শুনে দাড়িয়ে আছে এই ব্যর্থ রাতের নিচে৷
রুপন্তির বলা কথাগুলো এখনো কানে বাজছে কুশানের। শুধু স্পার্ম ডোনার করলেই বাবা হওয়া যায় না। রুপন্তির বাক্যগুলো র*ক্ত মাখা ছু*রির মতো এসে বিঁধে যাচ্ছে কুশানের ভেতর। অপমান? হয়তো। কিন্তু, তার চেয়েও বেশি কিছু। এক ধরনের আত্নঅভিযুক্তি যা ভাষায় ব্যাখা করা করা যায় না। কান জ্বলে যাচ্ছে তার একদম। ভাবতে থাকে নিজের একটা জগতের কথা। নিজের তৈরি করা অদ্ভুত একটা জগতে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছে কুশান৷ সে জানে না ঠিক কিভাবে সেখানে ঢুকে পড়েছিলো, কিভাবে কি হলো, কিছুই জানে না কুশান। জানবে কি করে, সেই জগতে কুশান এতোটাই মশগুল, কখনো ভাবেইনি এইভাবে। রুপন্তি জানে না কিছুই। জানলে, সে কি করবে কে জানে? হয়তো নিজেও থাকবে না আবার তিতলিকেও আর দেখতে দেবে না। তাই সেই জগতটা খুব গোপন করে রাখে কুশান।
সব কিছুর পরে এসেও তিতলি তো তার সন্তান। যখন শুনলো তিতলিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, তার বুক কি কাপেনি? শ্বাস কি আটকে আসেনি মুহুর্তে? যন্ত্রণা হয়নি বুকের ভেতর? আর সেখানে কি রুপন্তি শুধুই তাকে একজন স্পার্ম ডোনার ভাবছে? কুশান আশেপাশে তাকায়। হাসপাতালের শেষ প্রান্তে একটা পানির টেংকি দেখতে পায় সে। সেইদিকে এগিয়ে যায় কুশান। ট্যাপ ঘুরিয়ে ঠান্ডা পানির ছিটে চোখে মুখে দেয়। নিঃশ্বাস ফেলে, চোখ বন্ধ করে কিছু সময় দাড়িয়ে থাকে। পকেট থেকে একটা ছোট্ট রুমাল বের করে মুখ মুছে নেয় সে। মাথাটা ব্যাথায় দুমড়ে যাচ্ছে। চোখ দুটো লাল হয়ে আছে তার। নিজেকে অস্থির, অচেনা লাগছে আজ।
তিতলির বর্তমান অবস্থা কি জানে না কুশান। ডক্টর কিছু বলেছে কিনা কিছুই জানে না সে। রুপন্তি যেন এখন কিছুই বলবে না, খুব ভালো ভাবেই বুঝতে পারছে কুশান। এক পলক হাসপাতালের ইমার্জেন্সি এরিয়ার দিকে তাকায় কুশান। মেয়ের খোঁজ জানাটা তার অধিকার। চোখে মুখে একটা অনড় দৃঢ়তা নিয়ে এগিয়ে যায় হাসপাতালের ইমার্জেন্সি ডিপার্টমেন্টেের দিকে। ডাক্তারের মুখ থেকেই সে জেনে নিতে চায়, তার সন্তানের বর্তমান অবস্থা। আশেপাশের বাতাড ভারি হয়ে আসে। আকাশের অবস্থাও ভালো না। একটু পর হয়তো বৃষ্টি নামবে। ভিজিয়ে দিবে গভীর রাতের নিস্তব্ধ শহরখানা।
…
গায়ে এখনো হালকা জ্বর ছোয়ার। শরীরটা একদম নিস্তেজ হয়ে আছে। শরীরে হাড়ে হাড়ে ব্যাথা। খাওয়া দাওয়ার রুচিও চলো গেছে। মুখটা বেশ শুকিয়ে গেছে। দু-চোখ ভার হয়ে আছে ঘুমের অভাবে, কিন্তু ঘুম আসে না। তবুও আজ অনেকটাও ভালো আগের দিনগুলোর তুলনায়। শরীরের দূর্বলতাকে সঙ্গী করেই বিছানায় বসে আছে ছোয়া। জানালার পর্দা টেনে রেখেছে, যেন বাহিরের আলো চোখে ধাক্কা না দেয়। শিশির অফিসে গেছে। এই কয়দিন ছোয়ার জ্বরের জন্য ছুটি নিয়েছিলো অফিস থেকে। ওষুধপত্র, খাওয়া দাওয়া সবই করেছে শিশির। চোখে মুখে ভালোবাসার ছাপ। একজন আদর্শ স্বামী হিসাবে শিশির নিঃসন্দেহে শ্রেষ্ঠ। কিন্তু, একটা জায়গায় এসে সব গুলিয়ে যায় ছোয়ার কাছে।
যখন সন্তান না থাকার সত্যি কথাটা সবাইকে বলার দরকার হয়ে পড়ে, তখনি শিশিরের মুখের চেনা চেহারাটা অচেনা হয়ে উঠে। নিজের দায় নিতে চায় না সে। বাস্তবে সে নিজের অক্ষমতা প্রকাশের ভয় আর লজ্জা মুছে ফেলতে পারে না। অথচ যদি তার মা প্রতিদিন মানসিক অত্যাচার গুলো না করতেন ছোয়ার উপর, তাহলে ছোয়া কখনোই সত্যিটা বলার কথা বলতো না। সেইদিন তো শিথী বলেই দিয়েছে ডিভোর্সের কথা। ছোয়া এখনো জানে না, শিশির সেইটা শুনেছে কিনা। সে নিজেও এই কয়দিন জ্বরের প্রকোপে উঠতে পারেনি, শিথী রান্নাবান্না করেছে।
শিশির বাসা থেকে যাওয়ার সময় সবাইকে বলেছে, ছোয়াকে কাজ করতে না দিতে, শরীর স্বাভাবিক হয়নি এখনো। তাই নিয়ে শাশুড়ী এসে বিদ্রুপ করেছে ছোয়াকে। শ্রেয়া এসে মাকে সরিয়ে নিয়ে গেছে। শ্রেয়া কিছুক্ষণ পাশে বসে ছোয়াকে একটু স্বান্তনা দিয়েছে, একটু স্বস্তিও। দুইদিন কৌশিক কল করেছিলো, কিন্তু কল ধরতে পারেনি ছোয়া। পরে আর কল ব্যাক করা হয়নি শরীর খারাপের জন্য। হালকা মাথা ব্যাথা হচ্ছে ছোয়ার। হাতের তালু দিয়ে কপাল চেপে ধরে কিছুটা হালকা অনুভব করে সে। এমন সময় ফোনটা বেজে উঠে। হাত বাড়িয়ে ফোনটা হাতে নেয় ছোয়া। অরুনিমা কল করেছে। কল রিসিভ করে ছোয়া বলে,
–” হ্যা! অরু! বল।”
ওপাশ থেকে অরুনিমা বলে,
–” তোর শরীর কেমন এখন?”
–” অনেকটাই ভালো। দূর্বল লাগছে, তবে ঠিক হয়ে যাবে। তোর কি অবস্থা?”
অরুনিমা একটু থেমে যায়। তারপর নিচু গলায় বলে ওঠে,
–” আমি হাসপাতালে।”
ছোয়া চমকে উঠে। ভ্রু কুচকে বললো,
–” হাসপাতালে? কি হয়েছে তোর?”
–” আমার কিছু হয়নি। তিতলি অসুস্থ হয়ে পড়েছে অনেক।”
তিতলির নাম শুনে এক ঝটকায় উঠে বসে ছোয়া।
–” তিতলি অসুস্থ? কি হয়েছে ওর?”
অরুনিমা বিস্তারিত জানায়। তিতলির অসুস্থতা, রুপন্তির করা তার কল, কুশানের আচরণ, সব কিছু। ছোয়া তাড়াতাড়ি জিজ্ঞেস করে,
–” তিতলি এখন কেমন আছে?”
–” অবজারভেশনে আছে। রুপন্তি একদম ভেঙে পড়েছে। কাউকে এলাউ করছে না ডক্টর।”
ছোয়ার বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠে। মনে পড়ে, তিতলির সাথে সময় কাটানোর মুহুর্তগুলো, তিতলির মিষ্টি স্বরে বলা কথাগুলো, সব কিছু। ছোয়া তাড়াতাড়ি বলে ওঠে,
–” তুই ফোন রাখ, অরু! আমি আসছি, এখনি।”
–” এতো দূর্বল শরীর নিয়ে আসবি?”
–” ওটা নিয়ে ভাবিস না। তিতলি অসুস্থ আর আমি ঘরে বসে থাকবো? কিছুতেই পারবো না।”
কল কেটে কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থাকে ছোয়া। মাথার ভেতর কেমন এক অস্থিরতা ঘুর পাক খায়। তারপর এক দমকে উঠে পড়ে। ফ্রেশ হয়ে জামা বদলায়। চুল আচড়িয়ে গুছিয়ে নেয় নিজেকে। ওড়না গলায় জড়িয়ে রুমের দরজা খুলতেই মুখোমুখি হয়ে যায় শাশুড়ির। পরিপাটি অবস্থায়, ব্যাগ কাঁধে ছোয়াকে দেখে ভ্রু কুচকে যায় তার।
–” কই যাও?”
ছোয়া শান্ত গলায় বলে,
–” রুপন্তির বাবু অনেক অসুস্থ। হাসপাতালে ভর্তি। সেখানে যাচ্ছি।”
আনজিলা বেগম কটাক্ষ সুরে বললো,
–” অসুস্থতার জন্য ঘরের কাজ করতে পারো না। কিন্তু, বাইরে ঘুরতে যাওয়ার সময় ঠিকই শরীর ভালো হয়ে যায়, তাই না?”
ছোয়া চোখ বন্ধ করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। তারপর নিজেকে সংবরণ করে বলে,
–” মা! আপনি বোধহয় শুনতে পাননি। আমি ঘুরতে যাচ্ছি না, হসপিটালে একটা অসুস্থ বাচ্চাকে দেখতে যাচ্ছি।”
আনজিলা বেগম থেমে যায় না। সোজা আঘাত হানে এবার।
–” থামো! এইসব অভিনয় আর ভালো লাগে না। না জানি, আমার ছেলেকে কি দিয়ে বশ করে রেখেছো। নাহলে, কেউ একটা বন্ধা মেয়ের সাথে সংসার করে? নিজে গর্ভে কিছু ধরতে পারো না। আর এখন যাচ্ছো অন্যের বাচ্চা দেখতে। লজ্জা করে না? নিজের ঘরে সন্তান নাই, আর অন্যের সন্তানের পাশে দাড়াতে যাচ্ছে।”
কথাগুলো বলে আনজিলা বেগম চলে যায় নিজের রুমের দিকে। কিন্তু, তার বলা কথাগুলো ছোয়ার বুকে বিদ্ধ হয় ছুরির মতো। চোখ ছলছল করে উঠে। আবার সেই মিথ্যা কলঙ্ক। বুকের ভেতর জমে থাকা অপমানের বোঝা যেন এবার গলগলিয়ে বেরিয়ে আসতে চায়। তবুও নিজেকে শক্ত করে সে। চোখ মুছে ফেলে হাতের পেছনে। নিজেকে শক্ত করে পা বাড়ায় বাইরে।
#_চলবে_ইনশাআল্লাহ_🌹