চোখের তারা তুই পর্ব-০৭

0
87

#চোখের_তারা_তুই
#পর্বঃ৭
#লেখিকাঃতাইয়েবা_বিন_কেয়া

রাত বারোটা বাজে আঁধার দরজা খুলা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছে রাতে খাওয়া দাওয়া করে নাই। সবাই অনেক বলেছে কিন্তু সে একটা দানা মুখে দেয় নাই আর তাই ঔষধ খেতে পারে নাই।

ফারিশ রাতে বাড়ি ফিরে আসে রুমের দরজা খুলা দেখে ভিতরে ঢুকে যায় দেখে আঁধার ঘুমিয়ে আছে। হাতের লাল ভাব একটু ও কমে নাই বরং ফুলে গেছে। ফারিশের এবার রাগ উঠে যায় সে আঁধারে হাত টান দিয়ে তাকে তুলে নেয়।

হঠাৎ হাতে টান অনুভব করে ঘুম ভেঙে যায় আঁধারের চোখে খুলে দেখে ফারিশ। রাগে ফারিশের চোখ লাল হয়ে গেছে একটু ভয় পেয়ে যায় আঁধার কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বলে:

“আপনি এতো রাতে এভাবে হাত ধরে রেখেছেন কেনো হাত ছাড়ুন।আমার ব্যাথা করছে হাতে ফারিশ। ”

ফারিশ কোনো কথা না বলে আঁধারের হাত ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসে। আঁধার একটু ভয় পেয়ে যায় বুঝতে পারে। ফারিশ সামনে যেতে থাকে আর আঁধার পিছাতে থাকে একসময় দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়। তখন ফারিশ বলে:

“একটু আগে কি বললেন আপনি আমার চাহিদা আছে আপনার থেকে। এখন সেই চাহিদা মিটিয়ে নেই কি বলেন “।

ফারিশের কথা শুনে আঁধার একটু ভয় পেয়ে যায় আর ওর রাগী চোখ মনে হচ্ছে রক্ত বের হবে এমন চোখ। ফারিশের এমন ব্যবহার দেখে ভয় করছে একটা শুকনো ঢুক গিলে আঁধার বলে :

“আপনি কি করছেন ফারিশ। আমার কাছে আসবেন না আপনি এরকম খারাপ না তাহলে এমন ব্যবহার কেনো করছেন। ”

আঁধারের কথা শনে ফারিশ একটু কাছে নিয়ে আসে ওকে দেয়ালের সাথে একটু চেপে ধরে বলে :

“আপনার কি মনে হয় ফারিশ ফারহান চৌধুরী নিজের চাহিদা মিটাতে আপনার সাথে বিয়ে করেছে। শুনুন আমি চাই তাহলে আপনার মতো একশো মেয়ে এখানে নিয়ে আসতে পারি। কিন্তু আমি মেয়েদের সম্মান করি যদি চাহিদা থাকতো তাহলে সেটা অনেক আগে মিটিয়ে নিতে পারতাম “।

ফারিশের কথা শুনে আঁধার একটু ভাবে সত্যি লোকটা যদি চাই তাহলে আমার সাথে যাহ ইচ্ছা করতে পারতো। কিন্তু ওনি সেটা করেন নাই ফারিশকে শান্ত করতে আঁধার বলে :

“আসলে তখন বড় আব্বুর প্রতি রাগ ছিলো সেইজন্য আপনার সাথে এই ব্যবহার করেছি সরি”।

আঁধারের কথা শুনে বুঝতে পারে মেয়েটা তখন রাগ করে বলে ফেলেছে। তাই ওর হাত ছেড়ে দেয় একটু দূরে গিয়ে বলে :

“সরি আঁধার আসলে আমার যখন মাথায় রাগ উঠে যায় তখন সব ভুলে যায়। শুনুন আঁধার বড় আব্বু আপনার মায়ের সাথে কি করেছে সেই বিষয়ে আমার ধারণা নাই। কিন্তু আমি কোনো খারাপ ব্যবহার করব না আপনার সাথে কারণ চৌধুরি বংশ রক্ত আমার শরীরে আছে বলে আমি খারাপ হয়ে যাবো না।”

ফারিশের কথা শুনে একটু খারাপ লাগে আসলে আঁধার ফারিশকে অনেক কথা বলে ফেলেছে। ফারিশ সত্যি ওর সাথে কোনো খারাপ ব্যবহার করে নাই শুধু শুধু ওকে তখন কথা শুনতে হলো :

“সরি ফারিশ আসলে বুঝতে পারি নাই তখন মামার সাথে কথা বলে মায়ের বিষয়ে শুনে একটু রাগ হয়। তাই আসলে রাগ করে বলে ফেলেছি”।

আঁধারের কথা শুনে একটু রাগ কমে যায় ফারিশের। রাগ নিয়ন্ত্রণ করে নিচে যায় ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে নিয়ে আসে বেশি ঠান্ডা হয়ে যায় নাই। ফারিশ বলে :

“এই খাবার খেয়ে নেন হাতে ফুলে গেছে সমস্যা হতে পারে।এরপর ঔষধ খেতে হবে। ”

ফারিশের কথা শুনে আঁধার দাঁড়িয়ে না থেকে খাটে বসে যায়। এই লোকটা অদ্ভুত কেনো এতো কথা শুনে তারপর আমার খাবার নিয়ে চিন্তা করেন। ছয়মাস পরে কি সত্যি আমাকে ভুলে যাবেন ওনি । আঁধার বলে:

“আচ্ছা আপনি আগে নিজে খেয়ে নেন রাতে খাবার খান নাই। তাছাড়া এই বাড়িতে পুরুষ না খেলে মহিলা খেতে পারে না খেয়ে নেন। আচ্ছা প্রেমিকার বাড়ি থেকে খেয়ে এসেছেন বুঝি “।

ফারিশ একটু আঁধারের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে বেশ রাগ উঠে গেছে। মনে হয় সত্যি ভেবেছে আমি প্রেমিকার বাড়ি থেকে খাবার খেয়ে এসেছি। ফারিশ একটু হেঁসে উত্তর দেয় :

“বেশি কথা না বলে খাবার খেয়ে নেন ঔষধ খেতে হবে। আর মাথার মধ্যে এইসব আজব চিন্তা না রেখে ঠিক করে পড়াশোনা করেন।আমি পরে খাবার খেয়ে নিবো “।

ফারিশের কথা শুনে আঁধার খুশি হয়ে যায় কারণ ফারিশ প্রেমিকার বাড়িতে যায় নাই। তবে একটু খারাপ লাগে কারণ ফারিশ খাবার খেতে পারে নাই। আঁধার বলে:

আপনি আগে খাবার খান না হলে আমি খেতে পারব না। আমি ওনার মুখে খাবার তুলে দেয় যদিও চামচ ধরতে একটু অসুবিধা হচ্ছে।

আঁধারের খাবার খেয়ে নেয় ফারিশ না হলে এই মেয়ে খাবার খাবে না। ফারিশ বুঝতে পারে চামচ ধরতে আঁধারের একটু সমস্যা হচ্ছে তাই চামচ নিয়ে ওকে খায়িয়ে দেয় :

” ঔষধ না খেয়ে হাত ফুলে গেছে গেছে। সবসময় বাচ্চাদের মতো না করে নিজের দায়িত্ব নিতে শিখেন না হলে ছয়মাস পরে আপনার খেয়াল রাখবে কে শুনি। ”

ফারিশের কথা শুনে একটু মন খারাপ হয়ে যায় তবুও সত্যি মেনে নিতে হবে। তাই আঁধার বলে :

“আরে তখন আপনার মতো এরকম একজন ফারিশ ফারহান চৌধুরী খুঁজে নিয়ে বিয়ে করে ফেলব। আর আপনি ও একটা ভালো মেয়ে দেখে বিয়ে করবেন যে বাচ্চা হবে না নিজের দায়িত্ব নিজে নিতে পারবে। আচ্ছা ছয়মাস পরে কি আপনি বিয়ে করে নিবেন আরেকটা “।

ফারিশ একটু হাসে কারণ সে বিয়েতে বিশ্বাস করে না। আর আঁধারকে দেখার পর বিয়ে করতে আরো ইচ্ছা করে না কারণ একটা বাচ্চা বউকে নিয়ে সারাজীবন চলা সম্ভব না।তাই ফারিশ বলে :

“না বিয়ে করতে পারব না কারণ বিয়ে বিষয়ে আমি বিশ্বাস করি না। আর একটা বউ নিয়ে যে ঝামেলা আরেকটা বিয়ে করলে সেই বউ কেমন হবে সেটা বুঝতে পারছি না। ”

ফারিশের মুখে বউ কথা শুনে খুশি হয়ে যায় আঁধার আর ফারিশ আর বিয়ে করবে না জেনে আরে খুশি হয়ে যায়। খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।

#চলবে