চোখের তারা তুই পর্ব-০৯

0
93

#চোখের_তারা_তুই
# ০৯
#লেখিকাঃতাইয়েবা_বিন_কেয়া

নীরব স্যারের কথা শুনে একটু অবাক হয় আঁধার। কারণ সে এখন চৌধুরী বাড়ির বউ। সবাই তাকে কি বাহিরে যেতে দিবে আর ফারিশ সে কি যেতে দিবে। তাই নীরব স্যারকে বলে :

“স্যার আসলে আমি আমার বন্ধুর বাসায় থাকি তাই ওরা এতো দূরে যাওয়ার অনুমতি কি দিবে”।

আঁধারের কথা শুনে নিবর ওকে বোঝায় :

“দেখো আঁধার তুমি অনেক ভালো একজন মেয়ে তাই এই মেডিকেল কলেজ থেকে তোমাকে যেতে বলছি। আর তুমি যদি যাও তাহলে আরো অনেক ঔষধ বিষয়ে জানতে পারবে আর সিনিয়র ছাত্রদের সাথে পরিচিত হতে পারবে। এইটা ভবিষ্যতে তোমার জন্য ভালো হবে তাই বলেছি।আর আমি সেখানে যাবো কোনা সমস্যা হবে না তোমার।”

নীরব স্যারের কথা শুনে একটু ভাবে আঁধার স্যার ভুল কিছু বলছে না। সত্যি মেডিকেল কাজে গেলে তার অনেক উপকার হবে আর নতুন জায়গায় ঘুরতে পারবে কিন্তু ফারিশ কি রাজি হবে। আঁধার বলে :

“স্যার আসলে আপনি ঠিক বলেছেন কিন্তু আমার একটু বন্ধুর পরিবারের সাথে কথা বলতে হবে। আশা করি তারা অনুমতি দিয়ে দিবে “।

নীরব ওর কথা বুঝতে পারে তবে আঁধার যেতে রাজি হবে সেই বিশ্বাস ওর আছে। নীরব তাই আঁধারকে বলে :

” আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে তোমার ফোন নাম্বার দেও রাতে ফোন করব। আশা করি তুমি যেতে রাজি হবে তখন আর কোনাে সমস্যা হলে তোমার বন্ধুর পরিবারের সাথে আমি কথা বলব ঠিক আছে “।

নীরব স্যারের কথা শুনে তাকে ভালো মানুষ মনে হয়েছে আর সে তার স্যার তাই নাম্বার দিয়ে ক্লাসে চলে যায়। তুলি সেখানে অপেক্ষা করছে।

” আরে আঁধার কি হয়েছে তোমাকে এতো টেনশনে দেখাছে কেনো। স্যার কি বলছে তোমাকে। ”

তুলির কথা শুনে একটু টেনশন থেকে বাহির হয়ে যায়। ওকে বলি :

“আরে তুমি চিন্তা করো না স্যার শুধু বলেছে মেডিকেল কাজে কোনো জায়গায় যেতে হবে। সেখানে অনেক সিনিয়র মানুষ যাবে তাদের সাথে আমাকে যেতে বলেছে “।

আঁধারের কথা শুনে তুলি খুশি হয়ে যায় কারণ এখানে অনেক সিনিয়র মানুষ যাবে। আঁধার তাদের সাথে গেলে অনেক কিছু শিখতে পারবে। তাই তুলি বলে

” আরে আঁধার এইটা অনেক খুশির সংবাদ। সেখানে অনেক ভালো সিনিয়র মানুষ থাকবে তুমি অনেক কিছু শিখতে পারবে। আর তুমি একটু ঘুরে আসতে পারবে জায়গা থেকে। ”

তুলির কথা শুনে আঁধার বলে :

“হুম সেটা পারব কিন্তু ফারিশ কি আমাকে যেতে দিবে। ওনি যদি বারণ করে আমাকে “।

আঁধারের কথা শুনে তুলি হাসি দিয়ে বলে

” আরে আঁধার তুমি ভাইয়াকে চিনতে পারো নাই এখনো। ভাইয়া একটু রাগী কিন্তু অনেক ভালো তুমি যদি ভাইয়াকে বুঝিয়ে বলতে পারো তাহলে ভাইয়া রাজি হয়ে যাবে। আর বড় আব্বুকে বললে সে তোমাকে যেতে দিবে”।

তুলির কথা শুনে আঁধার একটু সাহস পায় সে ঠিক করে বাসায় গিয়ে ফারিশকে সব বলবে। কলেজ শেষ করে বাড়িতে চলে আসে ফারিশ এখনো আসে নাই। এক ঘন্টা পরে ফারিশ রুমে আসে। আঁধার খুশি হয়ে বলে

” ফারিশ আপনি চলে এসেছেন এতো দেরি কেনো করলেন। আজ কি কাজ অনেক বেশি ছিলো”।

আঁধারের কথা শুনে ফারিশ একটু অবাক হয় কারণ সে প্রতিদিন এই সময় বাড়ি ফিরে। ফারিশ হাত থেকে ঘড়ি খুলতে থাকে আর জিজ্ঞেস করে

” আজকে আমার বাড়ি ফিরে আসা নিয়ে আপনি এতো খুশি কেনো। আর প্রতিদিন আমি এইসময় বাড়িতে আসি দেরি হয় নাই আজকে”।

ফারিশের কথা শুনে আঁধার ভাবে আসলে ফারিশ এই সময় বাড়িতে আসে প্রতিদিন। কিন্তু আজকে আঁধারের মনে হলো ফারিশ অনেক লেট করে ঘরে ফিরে এসেছে। আঁধার বলে

” আমার আপনার সাথে কিছু কথা আছে। আপনি ফ্রেশ হয়ে আসেন তারপর বলব”।

ফারিশ একটু ফ্রেশ হয়ে আসে। সে আঁধারের কাছে যায় ওর হাত দেখে লাল হয়ে যাওয়া অংশ এখন ঠিক হয়ে গেছে। তারপর ওকে জিজ্ঞেস করে

” হুম এখন বলেন কি কথা বলবেন। যার জন্য আমার অপেক্ষা করে বসে আছেন আপনি বলুন “।

আঁধার একটু সাহস নিয়ে ফারিশকে বলে সে কলেজের কাজে একটা জায়গায় যেতে চাই। আরো বলে

” নিরব স্যার আমাদের সাথে যাবে আর অনেক ছাএ যাবে। আমাকে যেতে হবে তাই আপনার অনুমতি চাই”।

ফারিশ সব কথা শুনে কিন্তু নীরব স্যার কথা টা শুনে একটু হতাশ হয়ে জিজ্ঞেস করে

” আপনার নিরব স্যার সবাইকে রেখে আপনার নাম দিয়েছে বেশ ভালো। আর আমার অনুমতির কি দরকার নীরব স্যার যখন যাবে তখন নিশ্চয়ই খুব ভালো করে খেয়াল রাখবে আপনার “।

ফারিশ অনুমতি দিয়ে দিয়েছে সেটা শুনে আঁধার অনেক খুশি।

” নীরব স্যার আমার অনেক ভালো করে খেয়াল রাখবে আপনি জানেন স্যার অনেক ভালো। আমার সাথে অনেক সুন্দর করে কথা বলে আর আমাকে পছন্দ করে অনেক। স্যারের মতো কেউ কারো জীবনে থাকলে সে অনেক সুখী হবে “।

ফারিশ একটু মলম নিয়ে আঁধারের হাতে লাগিয়ে দেয় আর নীরব স্যারের সম্পর্কে কথা শুনতে থাকে। কিন্তু ফারিশের একটু খারাপ লাগছে এই নীরব কথা শুনে। তাই ফারিশ বলে

” সেখানে গিয়ে কাউকে বিরক্ত করবেন না নিজের খেয়াল রাখবেন। আর আপনি চলে গেলে কেউ আমাকে বিরক্ত করবে না একটু শান্তিতে থাকতে পারব। ”

ফারিশের মুখে বিরক্ত কথা শুনে একটু মন খারাপ হয়ে যায় আঁধারের। সত্যি কি সে ফারিশকে সবসময় বিরক্ত করে।

” হুম কেউ আপনাকে বিরক্ত করবে না কিন্তু যখন বিরক্ত থেকে বিরক্ত হয়ে যাবেন তখন চলে আসবো। এখন ফিরে আসবো কিন্তু ছয়মাস পর আর ফিরে আসবো না তখন আপনি নিজের মতো থাকতে পারবেন”।

ফারিশ মলম লাগিয়ে দেয় এরপর নিরব স্যারকে ফোন করে আঁধার সব বলে। সে কালকে যাবে মেডিকেল কাজে। ফারিশ একটু দূর থেকে দেখে নীরব স্যারের সাথে আঁধার বেশ হেসে হেসে কথা বলছে সে কিছু না বলে রুম থেকে বের হয়ে যায়।

” সরি আঁধার আমি হয়তো আপনার জীবনে ভুল মানুষ ছয়মাস পরে নিশ্চয়ই নীরব স্যারের মতো ভালো মানুষ আসবে “।

#চলবে