#ছদ্মবেশে_লুকানো_ভালোবাসা
#মৌমি_দত্ত
#পর্ব_১৫
আফিম ঘুম থেকে ধীরে সুস্থে উঠে বসলো। আজও ইনায়াত তাকে ডাকতে আসেনি দেখে বিরক্তিতে ভ্রু কুঁচকে এলো তার। আসবেই বা কেন?? আজাদ গ্রুপের সাথে তার মিটিংয়ের ১১ টা দিন পার হয়ে গেলো। ইনায়াত এখন স্পন্দন বলতেই পাগল। আর স্পন্দনও বোন বোন করে ইনায়াতকে পাগল করে দেয়। ইদানীং বেশির ভাগ সময় তারা দুজন একসাথেই কাটায়। আফিমের কথা যেন ভুলেই গেছে ইনায়াত। অবশ্য এতে আফিমের দোষ শত ভাগ। আজ থেকে ১১ দিন আগে নিজের জন্মদিন আফিমই ইনায়াতকে বলেছিলো মুখ না দেখাতে। মুখ তো দেখতেই হয়। কিন্তু আগের ইনায়াত হারিয়ে গেছে। আফিম মদ খেলে রাগ করে না,,, সকালে ঘুম থেকে উঠায় না,, ব্রেকফাস্টের জন্য জোড় করে না,,লাঞ্চ বা ডিনার না করলে মাথা ঘামায় না। প্রফেশনাল হয়ে গেছে ইনায়াত খুব। লাবিবা আর জোসেফকে আংকেল আন্টি ডাকে না। ইনায়াত জন্মদিনের পর সকালে বাসায় এসেছিলো শেষ বারের মতো। গত ১১ দিনে আর আসেনি। আফিম দীর্ঘশ্বাস ফেলে টাওয়েল হাতে নিয়ে ওয়াসরুমে ঢুকে গেলো। ইনায়াতকে সে বড্ড মিস করে। করবে নাই বা কেন?? মেয়েটা তার জীবনে কোথায় নেই?? সকালের ঘুম ভাঙ্গা,,, ফ্রেশ হওয়া,, কি জামা পড়বে তা নিয়ে ভাবনা,,, রেডি হয়ে ব্রেকফাস্ট করা,,, ইনায়াতের সাথে অফিস যাওয়া,,,, ইনায়াতের হাতের চা আর কফি,,, লাঞ্চের জন্য তাড়া দেওয়া,,, অফিস শেষে বাসায় এসে ইনায়াতের সাথে টুকটাক কথাবার্তা,,, রাতে ডিনার করানো জোড় করে,, মদের বোতল নিয়ে কাড়াকাড়ি,,, এই সবের মাঝেই ইনায়াত আছে। ইনায়াত ছাড়া একটা কিছুও এই ঘরে অবশিষ্ট নেই।
আফিম গম্ভীর মুখে বের হয়ে রেডি হয়ে নিলো অফিসে যাওয়ার জন্য। এই ১১ দিনে সে অসংখ্যবার ইনায়াতের সামনে ছিলো। কিন্তু মুখ ফুঁটে কেন যেন একবারও সরি বলতে পারেনি। তবে আজকে সে সরি বলবে বলে কড়া সিদ্ধান্ত নিলো। আজকে ইনায়াতকে ডিনারে ডাকিয়ে আফিম সরি বলবেই। এমন মনস্থির করে নিচে নেমে এলো। লাবিবা আর জোসেফ কিছু নিয়ে কথা বলছিলো খাওয়ার টেবিলে,, আফরাও ছিলো সেখানটায়। তখনই আফিম নামছে দেখে তিনজনই কথা থামিয়ে দিলো। আফিমের গম্ভীর মুখ দেখে তিনজনেরই হাসি পাচ্ছে। জোসেফ আর লাবিবা একে অপরের দিকে তাকিয়ে চোখে চোখে ইশারায় হাসাহাসি করলো। ছেলে যে ভালোবাসার রঙ্গে ডুবে গেছে নিজের অজান্তেই তা বুঝতে কষ্ট হলো না তাদের। অবশ্য এর পুরো ক্রেডিট যায় আফরাকে। জহুরির চোখ বলতে হবে আফরার। কিভাবে সে প্রথমদিন এসে ইনায়াতকে ভাবী বলে ফেললো?? এখন আফিমের হাব ভাবে নিশ্চিত মনে হচ্ছে যেকোন ভাবে তা সত্যি হতে পারে।
.
.
স্পন্দন রেডি হচ্ছে দ্রুত। আজকে ইনায়াতের বাসায় ব্রেকফাস্ট করবে স্পন্দন। একেই হয়তো বলে মনের সম্পর্ক। ইনায়াত এখনো জানেনা স্পন্দন আসলেই ওর ভাই। অথচ এর মধ্যেই আপন করে নিলো স্পন্দনকে। কামাল স্পন্দনের পিছনে দাঁড়িয়ে একটা ভাইয়ের তার বোনের জন্য করা পাগলামি দেখছে।
– কামাল!! বোনুর চকলেটস নিয়েছো তো??
– হ্যাঁ স্যার!! ম্যামের প্রিয় চকলেটগুলোই নিয়েছি তাও বেশ করে।
– গুড!! আচ্ছা ইরশাদের কি খবর?? আর তাহজিব??
– স্যার!! ইরশাদ সাহেব ইদানীং কেন যেন একদম চুপচাপ হয়ে গেছে। খাওয়া দাওয়া করেন না,, কথা বলেন না। আই থিংক উনার অনুশোচনা হচ্ছে।
– সম্ভব না কামাল!! উনার দ্বারা অনুশোচনা সম্ভব না। নজর রাখো উনার উপর। আমার মন বলছে উনি কিছু করবেই।
– ওকে স্যার!! আর তাহজিব খান এতোদিন রুহিকে নিয়ে ভালোই ছিলো। ইনায়াত ম্যাম সম্পর্কে অনেকটাই ভুলে থাকতো। কিন্তু,,
– কিন্তু কি কামাল??
– কালকে রুহি তাহজিবকে ইনায়াতের ঠিকানা দিয়েছে। রুহির লিউকেমিয়া তা তো জানাই আছে। ইমিডিয়েট ট্রিটমেন্টের জন্য যদি বিদেশ না যায় তাহলে বাঁচবে না। তবে যায় হোক না কেন স্যার!! মেয়েটা আসলেই তাহজিবকে ভালোবাসে।
– ভালোবাসার এটাই নিয়ম কামাল!! কেও পায়,, কেও পায় না!!
– স্যার আপনার ভালোবাসা?? আপনি বিয়ে করবেন না??
অনেক সাহস সঞ্চয় করে বলে ফেললো কামাল নিজের মনের কথা। গলার টাঁই বাঁধতে থাকা হাত দুটো থেমে গেলো মূহুর্তের জন্য। চোখের সামনে ভেসে উঠলো আবছায়া একটা মুখ। তাচ্ছিল্য ভরে হাসলো স্পন্দন।
– যে মনের ঘরে উঁকি দেয়,, বাস্তবে সে আমাকে নাও মানতে পারে।
স্পন্দন আর কিছু বললো না। কামালও আর ঘাটালো না।
.
.
ইনায়াত পুরো ঘর গুছিয়ে রেখেছে কাল রাতে। এখন খুব যত্নে ওভেন থেকে কেক বের করে আনছে। ফ্রিজে হাই ভোল্টেজে রেখে দেবে। তাই ভাই আসছে বলে খুশী যেন ধরছেই না তার। মাঝে মাঝে ইনায়াতের খুব বড় প্রশ্ন জাগে মনে। কি এমন হতো যদি এই ছেলে তার আপন ভাই হতো?? ভালোবাসাটা আরো দ্বিগুন হতো। ইনায়াত চলে গেলো স্নান করতে। জোসেফের থেকে সে ছুটি নিয়ে নিয়েছে আজকের। কিন্তু আফিমকে বলা হয়নি। আফিমের ব্যবহার দিনকে দিন অদ্ভুত ঠেকতে ইনায়াতের কাছে। কেমন এক ছটফট ছটফট ব্যাপার!! গম্ভীর,, মুডি আর রুড আফিমটাকে ভালোই চেনা আছে ইনায়াতের। কিন্তু চোখে চোখ রাখা,,, ইনায়াতের পছন্দের কাজ কর্ম করা আর স্পন্দনকে নিয়ে বিরক্ত হওয়া আফিমকে একদমই চিনতে পারছে না ইনায়াত।
– কে জানে স্যার ঠিক আছেন কিনা?? আই থিংক উনি খুব শোকে পাগল হয়ে গেছেন।
নিজেকেই নিজে এই বুঝ দিয়ে দ্রুত পায়ে ওয়াসরুমে ঢুকে পড়লো।
.
.
আসিফ রুহির বাসায় এসেছে। রুহি হাসি হাসি মুখে চা নাস্তা এনে আসিফের সামনে রাখলো।
– ভাইয়া,, খাওয়া ধরো জলদি। এখন না খেলে সারাদিনে খাওয়া হবে না তোমাদের।
আসিফ মৃদু হেসে চায়ের কাপটা তুলে নিলো। এক চুমুক দিয়েই কাপটা আবারও নিজের জায়গাতে রেখে বললো,,
– আমিও তোমার সাথে যাবো বোন। মানা করো না প্লিজ। বিদেশে তুমি কিভাবে একা একা সামাল দেবে?? তুমি এডাল্ট না। অনেক কাজে অভিভাবক লাগবেই।
রুহি চুপ করে রইলো। মাথা নিচু করে থেকে বললো,,
– ঠিক আছে। তুমি আমার সাথে যেতে পারো ভাইয়া নিঃসন্দেহে। তবে দুইটা শর্তে!!
আসিফের চোখ চকচক করে উঠলো খুশীতে।
– কি শর্ত বলো বোন!!
– এক,, আমাকে আপন বোনের মতো তুই করে বলবে এখন থেকে।
রুহির এমন শর্ত শুনে হাসি ফুটলো আসিফের মুখে।
– ঠিক আছে।। আমার বোন হিসেবে তোকে তুই করেই বলবো। আরেকটা শর্ত কি বোন??
– আমার আর তোমার ঠিকানা,,, খোঁজ যেন কেও না জানে। এমনকি তোমার বস আর আমার বাবাও না।
অবাক হলো আসিফ।
– কিন্তু??
– প্লিজ ভাইয়া?? বোনের জন্য এটুকু করে। ৬/৭ মাসেরই তো ব্যাপার!! আমি একটু আলাদা থাকতে চাই সবার থেকে।
আসিফ চুপ করে রইলো কিছুক্ষন।
– ঠিক আছে!! সব রেডি হতে ১৫/২০ দিন লাগবে। এরপরেই আমরা রওনা দেবো।
আসিফ চায়ের কাপটা শেষ করে উঠে চলে আসছিলো। তখনই পিছু ডাকলো রুহি।
– উনি সকালে খেয়েছে ভাইয়া??
আসিফ অবিশ্বাস দৃষ্টিতে তাকালো রুহির দিকে। রুহির মাথা নিচের দিকে করা। আসিফ উত্তর না দিয়েই বের হয়ে এলো।
পৃথিবীতে হাতে গোণা কিছু মানুষ ভালোবাসা পায়। অথচ কেও তা চিনে না,, কেও চিনেও মানতে চায় না।
.
.
অফিসে এসেছে অনেকক্ষন আফিম। কিন্তু এখনো এলো না ইনায়াত। বিরক্তি ও রাগে ভ্রু কুঁচকে এলো আফিমের। হচ্ছে টা কি এসব??
– যথেষ্ট হয়েছে।
টেবিলে এক হাত দিয়ে স্বজোরে আঘাত করলো আফিম রাগে। গাড়ির চাবি নিয়ে উঠে দাঁড়ালো। বেরিয়ে এলো অফিস ছেড়ে আফিমের গাড়ি। গন্তব্য হয়তো ইনায়াতের বাসা।
ইনায়াতের বাসার ঠিকানা জানা ছিলো আফিমের। কিন্তু কখনোই আসা হয়নি। আজকে সে প্রথম যাচ্ছে। গাড়ি এসে থামলো দুইতলা বাড়িটার সামনে। গাড়ি থামিয়ে দাড়োয়ানের কাছে গিয়ে জানতে চাইলো আফিম।
– ইনায়াত কতো নাম্বার ফ্লোরে থাকে??
– একদম ছাদে স্যার!! কাঁচের বাসাটা।
আফিম চোখে সানগ্লাস পড়ে সিড়ি বেয়ে উঠতে লাগলো। ছাদে উঠেই পা দুটো থেমে গেলো আফিমের। ছাদের ভিতরে আর প্রবেশ করতে পারলো না। ছাদের ঠিক মাঝখানে ইনায়াত মেঝেতে বসে স্পন্দনের বুকে মুখ লুকিয়ে আছে। আর স্পন্দন শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে ইনায়াতকে। আফিমের হঠাৎই সব কেমন যেন রঙ্গহীন আর খাপছাড়া লাগছে। কেন লাগছে এমন?? কেন??
আফিম তবুও কোনমতে টেনে পা দুটো নিয়ে গেলো ইনায়াত পর্যন্ত। ইনায়াত চুপটি মেরে বসে থেকেই জড়িয়ে আছে স্পন্দনকে। ফুঁপিয়ে যাচ্ছে রীতিমতো। স্পন্দন কাওকে আসতে দেখে মাথা ঘুরিয়ে দেখলো আফিম। আফিমকে কেমন যেন বিদ্ধস্ত দেখাচ্ছে তার কাছে।
– হ্যালো আফিম!! তুমি এখানে??
অবাক হয়ে জানতে চাইলো স্পন্দন। আফিম এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে স্পন্দনের বুকে থাকা ইনায়াতের দিকে। ইনায়াত আফিমের নাম শুনে অবাক হয়ে স্পন্দনের বুক থেকে হালকা মাথা তুলে তাকালো অবাক হয়ে আফিমের দিকে।
– আফিম??
স্পন্দন এবার জোড়েই ডাকলো আফিমকে। আফিমের হুশ ফিরলো। কোনমতে হেসে বললো,,
– না না,,, কিছু না।
বের হয়ে এলো ইনায়াত আর আফিমের চোখের সীমানার বাইরে। নিচে নেমে এলোমেলো পায়ে উঠে বসলো গাড়িতে। হাতিগুলো স্টিয়ারিংয়ের রাখতে গিয়ে বুঝলো অস্বাভাবিক কাঁপছে তা। একবার হাতগুলো তুলে নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে আবারও স্টিয়ারিংটা ধরলো। গাড়ি স্টার্ট দিয়ে চলতে লাগলো ফাঁকা রাস্তায়।
স্পন্দন আর ইনায়াত যখন অবাক হয়ে আফিমের চলে যাওয়া দেখছিলো। তখনই বরফ কাপড়ে গুঁজে নিয়ে এলো কামাল।
– এই নিন স্যার!!
বরফ সহ কাপড়টা এগিয়ে দিলো স্পন্দনের দিকে। স্পন্দন কাপড়টা নিয়ে ইনায়াতের পায়ে দিতে দিতে কপট রাগ দেখিয়ে বললো,,
– এটা কি ছিলো বোনু?? এভাবে কেও লাফায়,, ছুটাছুটি করে?? পেলি তো ব্যাথা?? বেশি ব্যাথা লাগছে??
ইনায়াত ঠোঁট উলটে অন্যদিকে ফিরে বললো,,
– তুমিও বকছো ভাইয়া?? আমি তো তোমার জন্য কিনে রাখা গিফট আনতে দৌড়ে যাচ্ছিলাম। মাঝেই যে এভাবে পড়ে যাবো কে জানতো??
ইনায়াতের ঠোঁট উলটে বলা কথার ধরনে মিছে রাগও ধরে রাখা গেলো না স্পন্দনের। স্পন্দন মিষ্টি হেসে বললো,,
– এত্তো দেখতে পারিস কেন আমাকে বোনু?? আমি তো তোর নিজের ভাই না। নিজের ভাই হলে কি করতি??
ইনায়াতকে যাচাই করতে বললো কথাটা। ইনায়াত পিটপিট করে তাকিয়ে রইলো স্পন্দনের দিকে। পরমূহুর্তে হেসে ফেললো।
– আমি তো বাপি আর মার একটা মাত্র সন্তান। নিজের ভাই কিভাবে আসবে?? তবে আমি কিন্তু তোমাকে নিজের ভাই ডাকি আর ভাবি। তাহলে নিজের ভাই না মানে কি হ্যাঁ??
– স্যার!! ম্যামকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেলে ভালো হতো না??
– হ্যাঁ ঠিক বলেছো কামাল।
– এইইই!! কি ঠিক বলেছো?? আমি একদম ঠিক আছি। আরো একশটা আছাড় খেতে পারবো আমি। দেখবে??
ইনায়াতের এমন বাচ্চা বাচ্চা কথায় হেসে ফেললো কামাল আর স্পন্দন।
– না মহারাণি,, আছাড় খেয়ে দেখাতে হবে না। চলুন বাসার ভিতরে যাই।
ইনায়াতকে ধরে ধরে বাসার ভিতর নিয়ে গেলো স্পন্দন।
.
.
আফিম সোজা চলে এলো বাসায়। বাসায় এসেই ঘরের সব কিছু তছনছ করতে লাগলো আফিম। নিচে আওয়াজ পৌছাতেই দৌড়ে এলো আফরা আর লাবিবা। আফিমকে উন্মাদের মতো আচরণ করতে দেখে আফরা ছুটলো নিজের ফোন আনতে জোসেফ সাহেবকে কল দেবে বলে। লাবিবা দ্রুত সময় পিছন থেকে হাত চেপে ধরলো আফিমের।
– কি হচ্ছে আফিম এসব??
আফিম লাবিবার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলো। এরপরেই লাবিবাকে মেঝেতে বসিয়ে লাবিবার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো।
– দেরি হয়ে গেছে আম্মু!! অনেক দেরি হয়ে গেছে।
লাবিবা ছেলের কথা কিছুই বুঝলো না।
– কি বলছিস এসব??
আফরা সবে কল করে এসেছে ভাইয়ের রুমের সামনে।
– আবারও ভালোবাসলাম মা আমি। ঠিক আগের মতো,,,, না না,, আগের থেকেও অনেক বেশিই ভালোবাসলাম মা। তবে আবারও ভুল মানুষকেই ভালোবাসলাম।
আফিম লাবিবা কোলে মাথা রেখেই চিৎকার করে কেঁদে উঠলো।
– ইনায়াত তো অনেক ভালো ছিলো। ওকে ভালো ও বেসে ফেললাম নিজের অজান্তে। কিন্তু পেলাম না মা। পাবো কিভাবে?? আমি তো নিজ হাতে ওকে দূর করেছি নিজ থেকে। আমি কি করতাম মা?? আমি যে খুব ভয়ে থাকতাম আবারও ভালোবাসার ভয়ে। আর আমি যে জিনিসটার জন্য ওকে দূরে করেছি। ঐ ভুল,, ঐ একই ভুল আমি করে ফেলেছি মা। আমি ওকে ভালোবেসে ফেলেছি।
লাবিবার মুখে ফুঁটে উঠলো হাসি। শেষমেশ কি তাহলে তার ছেলে তার মনের ইচ্ছা পুরণ করবে??
আফিম তো লাবিবার কাছে বলেই ফেললো নিজের অনুভুতি। কিন্তু ইনায়াত আর স্পন্দনের মধ্যে খিঁচুড়ি তৈরি হচ্ছে ভাবা আফিম কিভাবে ইনায়াতের মন জয় করবে?? আর স্পন্দন ও আফরার মিল কিভাবে হবে??? রুহি কি বিদেশে চলে যাবে সত্যি?? তাহজিব এর কি হবে?? ইরশাদের অন্ত কি??
চলবে,,,