#জলতরঙ্গের_সুর
পর্ব – ১০
লেখা – আসফিয়া রহমান
অনুমতি ছাড়া কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ❌
আকাশে তখনও আলো ফোটেনি পুরোপুরি, পূর্ব দিগন্তে একটা দেখা যাচ্ছে কমলা রেখা। সেন্ট মার্টিনের নির্জন ঘাটে একটার পর একটা ব্যাগ নামিয়ে রাখা হচ্ছে বোটে। ঢেউ তখনও শান্ত, নিঃশব্দ।
ঊর্মির হাতে কফির কাপ, চোখেমুখে ঘুমের ছাপ থাকলেও কৌতূহল তার চেয়ে বেশি। মেহরিন মুখ ধুয়ে আসছে, নিশাতের হাতে ফোন, তবে টাওয়ারের আভাস নেই।
“গুড বাই, নেটওয়ার্ক!” বলে সে হেসে ফোনটা ব্যাগে ঢুকিয়ে ফেলল।
রুবেল একপাশে দাঁড়িয়ে পুরো চেকলিস্ট মিলিয়ে নিচ্ছে।
“পানি? আছে। মেডিকেল কিট— ঠিক আছে। সিগন্যাল লাইট? ওকে।”
তানিয়া ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে বলে,
“এই বোটটা তো একটু ছোট মনে হচ্ছে… পাঁচজনের জন্য হবে তো?”
রুবেল মাথা নেড়ে আশ্বস্ত করে,
“একদম ঠিক আছে। আমরা যেখানে যাচ্ছি, সেখানে বড় বোট নিয়ে গেলে ভালো হবে না। এইটাই পারফেক্ট।”
একজন মাঝি ইতিমধ্যে ইঞ্জিনের প্রাথমিক প্রস্তুতি নিচ্ছে। সে স্থানীয়, বয়স চল্লিশের কাছাকাছি, চোখেমুখে অভিজ্ঞতার ছাপ আর কিছুটা উদ্বেগও।
ঊর্মি বোটে পা রাখার মুহূর্তে থেমে যায় একবার। সামনে সমুদ্রের বিশালতা, আর ওরা যাচ্ছে এমন এক জায়গায়, যার কোনো নাম নেই, মানচিত্র নেই, পৌঁছানোর নিশ্চয়তা নেই।
তবু ওর মুখে একটুখানি স্মিত হাসি।
এই অজানার দিকেই টানছে যেন কিছু একটা।
সবাই বোটে উঠে বসে। রুবেল বসে সামনের দিকে, মাঝির পাশে। ব্যাগগুলো পেছনে গুছিয়ে রাখা।
ঊর্মি আর মেহরিন দুজনে বসেছে বোটের পেছনের দিকটায়, চারপাশে নীল জল আর আকাশের মিশ্রণ। শান্ত সময়। ওরা একে অপরের দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসল।
ইঞ্জিন স্টার্ট দেয় মাঝি।
বোটটা ধীরে ধীরে ঘাট ছাড়ে।
শুরু হয় সমুদ্রের বুক চিরে অচেনার দিকে যাত্রা।
একটা হালকা বাতাস বইছে, ঢেউ এখনও শান্ত, আর দূরে দেখা যাচ্ছে দ্বীপের ক্ষীণ রেখা—
নামহীন, নীরব, অপেক্ষমাণ।
সবাই বেশ উচ্ছ্বসিত, ক্যামেরায় ছবি তুলছে একের পর এক, সাথে ননস্টপ বকবকানি তো আছেই।
সমুদ্রের বুক জুড়ে ভেসে চলেছে বোট।
আকাশে তখনও সূর্য ওঠেনি পুরোপুরি, ধূসর আর হালকা সোনালি আলো মিশে একরকম ধোঁয়াচ্ছন্ন অনুভূতি তৈরি করছে। ঢেউ এখন একটু একটু করে জেগে উঠছে, যেন জানিয়ে দিচ্ছে—তোমরা সহজে যেতে দেবে না আমায় ছুঁতে!
ঊর্মি পেছনের দিকে বসে আছে। চুল এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে বাতাসে, ঠোঁটের কোণায় বিস্তীর্ণ হাসির রেখা।
অ্যাডভেঞ্চার বরাবরই ওকে টানে।
তার মধ্যে এমন নির্জন, অনিশ্চিত কোনো জায়গায় যাত্রা… এই টানটা আরও বেশি, আরও গভীর।
নিশাত বলছে, “উফ! ঢেউগুলো ক্রমেই বাড়ছে না? কি দারুন লাগছে দেখতে!”
তানিয়া একটু নিচু গলায় বলে, “আমার মাথাটা একটু একটু ঘুরছে…”
মেহরিন কপাল কুঁচকে বলে, “ওখানে পৌঁছাতে আমাদের কতক্ষণ লাগবে রুবেল?”
রুবেল চোখ সরায় না দিগন্ত থেকে, জবাব দেয়,
“কমপক্ষে এক ঘণ্টা। যদি আবহাওয়া ঠিক থাকে।”
ঊর্মির কানে সেই কথাগুলো ঢোকে, কিন্তু মন যেন অন্য কোথাও। সমুদ্রের ঢেউয়ের তালে তালে ওর হৃদয়টাও যেন দুলছে।
একটা অদ্ভুত রোমাঞ্চ ঢেউ তুলছে ওর বুকের ভিতরে,
যেন কোনো পুরোনো ডাক, কোনো চেনা অস্পষ্টতা ওকে টেনে নিয়ে চলেছে গহীন সাগরে।
কেউ জানে না এই যাত্রার শেষে কী অপেক্ষা করছে।
কিন্তু ঊর্মির মনে হয়, অনিশ্চয়তার মাঝেই তো লুকিয়ে থাকে জীবনের সবচেয়ে নিখাদ, গভীর মুহূর্তগুলো।
সূর্য তখন লুকোচুরি খেলছে মেঘেদের পেছনে, ঠান্ডা বাতাস শীতল করে দিচ্ছে শরীর।
কিন্তু মাঝখানে বাতাস হঠাৎ করেই ঘন হতে লাগল। মেঘ জমতে শুরু করল কালচে ছায়ায়, আর সমুদ্রের রং বদলে যেতে শুরু করলো ধূসর নীলচেতে।
মাঝি মুখ তুলে তাকাল আকাশের দিকে। তার চোখে একরাশ চিন্তা, কপালে ভাঁজ। চিন্তিত মুখে বলে ওঠে সে,
“মায়া লাগতেছে না ভাই, বাতাসডা ভালো নায়… মেঘে হঠাৎ হাওয়াডা উল্টাইয়া গ্যাছে। ইঞ্জিনে চাপ বাইর করতেছে!”
রুবেল সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাঁড়ায়, মাঝির পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে ভাবে, কী করলে সবচেয়ে ভালো হয়। ওদের বোট এখন মাঝ সমুদ্রে। এখান থেকে যদি ওরা আবার সেন্টমার্টিনেই ফিরতে চায় তবুও অনেকটা সময় লাগবে। কি করবে বুঝে উঠতে পারছে না রুবেল।
তানিয়া ভয় পাওয়া গলায় জিজ্ঞেস করল,
“রুবেল, ঝড় আসবে নাকি?”
রুবেল ঠান্ডা স্বরে বলল, “ভয় পেও না কেউ। আমি আছি।”
ঊর্মি তাকায় মাঝির মুখের দিকে। সে আবার বলছে,
“এইডা অগো ঠারার দিক থেইক্কা আসতেছে। ওই সাইডে ঢেউডা লম্বা হয়… সাবধানে চালাইতেছি ভাই, কিন্তু খালি ইঞ্জিনডা যেন ধইরা রাখে।”
নিশাত কিছু বলার আগেই একটা বড় ঢেউ এসে আঘাত করে বোটের একপাশে। চিৎকার করে ওঠে সবাই।
ঊর্মির শরীরটা হালকা দুলে ওঠে, কিন্তু অদ্ভুতভাবে ওর চোখে ভয় নেই। বরং আশ্চর্য নির্ভরতায় সে তাকিয়ে থাকে দিগন্তের দিকে।
যেন এই ঝড়ের বুক চিরেই ও খুঁজে পেতে চায় নিজেকে।
__________________________________
দিগন্তের আরেক প্রান্তে, ধাতব ধূসর রঙের বিশাল একটা নৌসেনা জাহাজ চলছে নির্ভুল গতিতে।
ক্যাপ্টেন আবরার ইমতিয়াজ কল্লোল এখন কোনো অপারেশনের মধ্যে নেই। তার হাতে এক কাপ কফি, তিনি এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আছেন ক্যাপ্টেনস ডেকে, পাশের স্টিল রেলিংয়ে হালকা ভর দিয়ে। তার চোখের নিচে হালকা ক্লান্তির ছায়া। আগের রাতটায় ছিল গভীর প্রহর পর্যন্ত ডিউটি।
তার চোখ সামনের ধূসর-নীল জলরাশিতে, কিন্তু মন যেন অন্য কোথাও।
নির্জনতা পছন্দ করে সে। ডিউটিতে না থাকলে, জাহাজের সীমানা আর সমুদ্রের প্রশান্ততা— এটাই যেন তার আশ্রয়।
হঠাৎ পেছন থেকে একজন ডিউটি অফিসার এগিয়ে এলেন।
“Captain, we’ve received a civilian distress signal. Appears to be off-grid… about 30 nautical miles southwest of St. Martin’s.”
কল্লোল ধীরে মাথা ঘুরিয়ে চায় তার দিকে।
“Details?”
“Unregistered private boat. Possibly tourists. Signal’s weak, but seems urgent. Weather’s also worsening in that sector.”
কল্লোল মনে মনে খানিকটা অবাক হলেও তার কোনোরকম ছাপ পরলো না চেহারায়। এই সময় তো কোনো ট্যুরিস্ট বোট থাকার কথা না ওদিকটায়। তাহলে প্রাইভেট বোটটা কিসের?
তার চোখে হঠাৎ ক্ষণিকের আলো ঝলকায়, অন্তর্দৃষ্টি বা পূর্বাভাসের মতো। সে মাথা নিচু করে নিঃশব্দে শেষ চুমুক দেয় কাপে।
তারপর কাপটা একপাশে রেখে হেঁটে গেলেন কন্ট্রোল ডেকে। বড় মনিটরে চোখ বুলিয়ে দেখে নিলেন লোকেশন। ঢেউয়ের স্তর দেখে বোঝা যায়, ঝড় সত্যিই আসছে।
কয়েক মুহূর্ত নিঃশব্দ থাকার পর বললেন,
“Prepare Alpha team. Ready the raft. I’ll lead.”
অফিসার একটু দ্বিধায় পড়লেন এবার।
“Sir… are you sure?”
কল্লোল তাকালেন তার দিকে, গলার স্বর শান্ত কিন্তু দৃঢ়।
“We’re not losing anyone today.”
___________________________________
সমুদ্র তখন আর আগের মতো শান্ত নেই।
আকাশ অন্ধকার হয়ে এসেছে। দিগন্ত জুড়ে ঘনকালো মেঘ। বাতাসে হু হু শব্দ। এখন যে দিনের অগ্রভাগ তা বোঝার কোন উপায় নেই। ঢেউ একটার পর একটা ধাক্কা মারছে বোটের গায়ে। টপ টপ ফোটায় বৃষ্টি পড়তে শুরু করেছে উত্তাল সমুদ্রের বুকে।
ঊর্মি কাঁপা হাতে ধরে আছে নৌকার সাইড রেলিং।
রুবেল চেঁচিয়ে উঠল, “সবাই লাইফ জ্যাকেট পরে ফেলো! বোট ডানদিকে টান দাও, টান দাও!”
মাঝি আতঙ্কিত কণ্ঠে বলে উঠল, “বাবাগো, দেইখা টানেন! ইঞ্জিন তো আর চলতাছে না!”
নিশাত ভয়ে কেঁপে উঠে বলে, “রুবেল! আমরা কি ডুবে যাবো?!”
তানিয়া মেহরিনকে শক্ত করে ধরে আছে। ওদের চোখে ভয়। ঊর্মি তখনো তাকিয়ে আছে সামনে। অবাক চোখে দেখছে মেঘের গর্জন, ঢেউয়ের উন্মত্ততা… যেন এই বিশাল সমুদ্র ওকে গ্রাস করতে এসেছে।
হঠাৎ করেই বোটের একপাশে একটা জোরাল ঢেউ আছড়ে পড়ল। বোট কাত হয়ে গেল, চারপাশে কেবল জল আর আতঙ্ক।
কেউ একটা চেঁচিয়ে উঠল বোধহয়।
ঊর্মি জলে ছিটকে পড়ে যাওয়ার আগেই হাতে পায় একটা কাঠের টুকরো। আশ্রয়ের মতো আঁকড়ে ধরে সেটা।
চারপাশ ঘোলা, থেকে থেকে শোনা যাচ্ছে জলের গর্জন আর নিজের শ্বাসের শব্দ, বাকিদের কী খবর কে জানে…
ঊর্মির বুকের ভেতরে তখন শুধু বাজতে থাকে একটা দৃঢ় বিশ্বাস…
“কারও না কারও সাহায্যের হাত নিশ্চয় আসবে… কোনো না কোনো আলো ঠিক এগিয়ে আসবে এই অন্ধকারে…”
__________________________
জাহাজ ছুটে চলেছে ধূসর অন্ধকারের বুক চিরে। জাহাজের মাথায় দাঁড়িয়ে কল্লোল দূরবীন চোখে তাকিয়ে আছে দিগন্তের দিকে। চারপাশে কালো জলরাশি, মাঝে মাঝে আকাশ চিরে বিদ্যুৎ ঝলকায়। এক সেকেন্ডের জন্য চারপাশ আলোকিত হয়, আবার ডুবে যায় গভীর নীল অন্ধকারে।
রাডারে স্পট হওয়া SOS লোকেশন একদম কাছাকাছি।
“Signal’s closing in, Sir!” “We’re almost there!”
কল্লোল কিছু বলে না। ওর চোখ একটা দিকেই স্থির—ম্যাপের কো-অর্ডিনেট থেকে পাঠানো SOS ফ্লেয়ার সিগনালের উৎসে।
“Team Alpha, standby. Confirm visual scan as soon as we’re close enough.”
স্পটলাইটগুলো চালু হয়। জাহাজের বুকে তৈরি হয় ছোট ছোট স্পিডবোট নামানোর প্রস্তুতি।
“There! Portside!” একজন অফিসার চেঁচিয়ে ওঠে,
“I see something floating— multiple debris, possible survivors!”
কল্লোল দ্রুত বলে ওঠে,
“Launch all teams. Full surface sweep. Prioritize unconscious victims first.”
——
ঝড়ের একটানা গর্জনে গুমরে উঠছে সমুদ্র।
তিনটি স্পিডবোট একসাথে সাগরে নামল। প্রত্যেকটিতে দুজন করে রেসকিউ ডাইভার, একজন চিকিৎসা সহায়ক, আর একজন রেডিও অপারেটর। চারপাশে শুধু ঢেউ, দুলে ওঠা বাতাস, আর কখনো-কখনো ম্লান আলোর রেখা।
কল্লোল আছেন প্রথম বোটে। তার চোখ স্ক্যান করে যাচ্ছে উত্তাল জলের বুক। চোখে পেশাদার দৃষ্টি, কিন্তু ভিতরে ভিতরে অদ্ভুতভাবে একটা চাপা অস্থিরতা টের পাচ্ছেন তিনি।
স্পটলাইট ঘুরে গিয়ে পড়ে কাঠের একটা টুকরোর উপর।
তার সঙ্গে জড়িয়ে আছে একটা নিস্তেজ শরীর।
কল্লোলের একজন ডাইভার লাফিয়ে পড়ে, এক হাতে ধরে রাখে কাঠ, অন্য হাতে আঁকড়ে ধরে শরীরটাকে।
“Female! Weak pulse!”
কল্লোল ততক্ষণে বোট থেকে ঝুঁকে পড়েছে। নিজের হাতে টেনে তোলে ভেজা, প্রায় ওজনহীন একটা পাতলা শরীর।
শুইয়ে দেওয়া হয় বোটের ফ্ল্যাটপ্যাডে। কল্লোল তখনও দেখতে পায়নি মেয়েটার মুখ। ভেজা চুল লেপ্টে আছে মুখে, শ্বাস চলছে খুব মৃদু।
“Check vitals. Start warming. অক্সিজেন রেডি আছে?”
“O2 on.”
মেডিক কনফার্ম করে।
কল্লোল তখন আস্তে করে হাত রাখে মেয়েটার কপালে।
ঠান্ডায় জমে আছে শরীর, নিস্তব্ধ দেহটা পড়ে আছে নিঃসাড়ভাবে।
কল্লোল দু আঙ্গুলের সাহায্যে মেয়েটার মুখের উপর থেকে চুল গুলো সরিয়ে দিলেন। বোটের আলোতে স্পষ্ট হয়ে উঠল মুখটা। চেহারাটা একপলক দেখার সাথে সাথে একটা বড়সড় ধাক্কা খেলেন তিনি।
ঊর্মি!
নামটা নিজের অজান্তেই ফিসফিস করে বেরিয়ে এল কল্লোলের ঠোঁট থেকে।
চোখে পড়ল ওর ভেজা চুল লেপ্টে থাকা প্রায় রক্তহীন সাদা মুখটা, ফ্যাকাশে ঠোঁটদুটি স্থির। মুখটা শান্ত, নিস্তব্ধ… যেন তলিয়ে আছে নিদ্রার অতল গহ্বরে।
রেডিও অপারেটর পাশ থেকে কিছু জিজ্ঞেস করছিলেন তাকে, কিন্তু কল্লোল শুনলেন না।
সামান্য ঝুঁকে গিয়ে আরও একবার ছুঁয়ে দেখলেন মেয়েটার কপাল, যেন তার স্পর্শেই নিঃশ্বাস ফিরে আসবে মেয়েটার।
মেডিক এগোতেই কল্লোল এক হাতে ইশারা করে থামিয়ে দিলেন তাকে। নিজেই একবার ঠাণ্ডা আঙুল ছুঁইয়ে দেখলেন পালস… খুব ধীরে চলা স্পন্দন।
মেয়েটার মুখের উপর থেকে চোখ সরাতে পারছিল না ও।
হঠাৎ করেই সমস্ত পেশাদারিত্ব যেন পিছিয়ে গেছে কোথাও। চারপাশে ঢেউয়ের গর্জন, টিমের ব্যস্ততা—সবকিছু থেকে আলাদা একটা নিঃশব্দ ঘূর্ণিপাকে যেন আটকে গেল কল্লোল।
তার চোখে তখন শুধুই একটি প্রশ্ন—
“ও এখানে কীভাবে…?”
কল্লোল ধীর স্বরে স্পষ্ট গলায় আদেশ ছুঁড়ে দিলেন রেডিও অপারেটরের উদ্দেশ্যে,
“She’s critical. No delay. We’re going back— full speed.”
——
কল্লোলদের সঙ্গে আসা অন্যান্য দুই স্পিডবোটও আশেপাশে ছড়িয়ে পড়েছে। উত্তাল ঢেউয়ের ফাঁকে ফাঁকে তারা খুঁজে পায় বাকিদেরও।
নিশাত অজ্ঞান অবস্থায় ভেসে ছিল লাইফজ্যাকেট পরে, তাকে ধরে রেখেছিল তানিয়া।
মেহরিন আর রুবেলকে উদ্ধার করা হয় কাছাকাছি একটা কাঠের বাক্স ধরে থাকা অবস্থায়। সবাই ক্লান্ত, আহত কেউ কেউ।
সবাইকে দ্রুত তোলা হয় বোটে।
কমিউনিকেশন টিম জানিয়ে দেয় মূল জাহাজে—
“All victims secured. Returning to base.”
To be continued…