জল ফোয়ারা পর্ব-১১

0
185

#জল_ফোয়ারা |১১|
#লেখনীতেঃ Liza Bhuiyan

১৫.
চুড়ির ঝনঝন আওয়াজে রোহিণী খাঁট থেকে উঠে দাঁড়ালো, দরজার দিকে তাকাতেই দেখলো অদিতা গুটিগুটি পায়ে ওর কাছে আসছে। হাতে একগোছা চুড়ি আর মাথায় দুটো ঝুটি করা। হয়তো সৌহার্দ্য করে দিয়েছে, নুরের সাথে দেখা করার আগে রোজ অদিতাকে খাইয়ে, রেডি করে দিয়ে যায়। রোহিণী যেহেতু তার সামনে যায়না তাই সৌহার্দ্যও রোহিণীর সামনে আসেনা, হয়তো ওর বাবা-মায়ের ইঙ্গিত নিজেও কিছুটা বুঝতে পেরেছে।
রোহিণী কিছুক্ষণ ভাবলো কিন্তু সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে না পেরে না ভেবেই অদিতাকে কোলে নিয়ে বের হয়ে গেলো। নুরদের বাসায় যখন পৌঁছালো তখন সাড়ে সাতটা, নুর রেডি হচ্ছে ও জানে। রোহিণী দরজায় নক দিতেই মুগ্ধ দরজা খুললো, ও একবার সামনে থাকা মানুষটির দিকে একবার তাকিয়ে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিলো। পাশ কাটিয়ে যেতে নিবে তখনই মুগ্ধ বলে উঠলো

“তোমার দেখি খুব ভাব ওর মেয়ের সাথে, মায়ের মতোই ওকে আগলে রাখছো ইদানীং”

রোহিণী অনেক কিছুই বলতে চাইলো কিন্তু শেষমেশ কি ভেবে যেনো থেমে গেলো। নুরের ঘরের দিকে দ্রুত পায়ে এগিয়ে গেলো, মুগ্ধ সে দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকালো। যতো কিছুই হোক না, যতো মনমালিন্যই থাকুক না কেনো রোহিণী সবসময় ওর কথার পাল্টা জবাব দিতো। অন্তত এভাবেই ও রোহিণী নামক মেয়েটাকে চিনে, যার সাথে নুরের অদ্ভুত ঘনিষ্ঠতা ছিলো কৈশোর জীবন থেকে।
ছোট থেকেই নুর প্রচণ্ড মিশুক, সবাইকে খুব সহজেই আপন করে নেয়। রোহিণীর সাথেও হয়তো সেভাবে খুব ভাব হয়েছিলো, প্রায় বাসায় এসে রোহিণীর প্রশংসা করতো।রোহিণী প্রায়ই ওকে রান্না করে খাওয়াতো, ওকে ছবি এঁকে দিতো, গল্প শুনাতো আর সেসব নুর এসে ওকে বলতো। তা থেকেই হয়তো ভালোলাগার সৃষ্টি! একটা মেয়ে যার কিনা চুলগুলো অনেক সুন্দর, কেশবতী কন্যা যার কন্ঠ সুমিষ্ট। দূর থেকেই দুএকনজর খেয়াল করতো কিন্তু কখনো সামনে থেকে কথা বলার সাহস হয়নি।

এভাবেই ওদের বড় হওয়া, মুগ্ধ তখন ভার্সিটিতে উঠেছে এমন সময় ওর মায়ের মাথা ওদের দুই ভাই-বোনকে বিয়ে দেয়ার ভুত চাপলো। ওনার কথা হচ্ছে দ্রুত ছেলে মেয়েদের বিয়ে দিলে তারা নিজেরা পছন্দ করে যাচ্ছেতাই কাউকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিবে না।প্রথমে নুরকে চাপ দিলেও নুর মিষ্টি কথায় কি যেনো বুঝিয়ে মানিয়ে ফেললো ওর মাকে, ব্যস উনিও ওকে এক-দুইবছর সময় দিতে রাজি কিন্তু মুগ্ধর সেই অদ্ভুত টেকনিক জানা ছিলো না। এখন ওর বিয়ের ক্ষেত্রে মতামত চাইলেও তখন ওকে সেটার যোগ্যই মনে করতো না। মেয়ে যেহেতু আগে থেকেই পছন্দের তাই প্রস্তাব পাঠাতে দেরি হয়নি, মুগ্ধ শুনে বেশ রেগে গিয়েছিলো কিন্তু মেয়ে কে শুনার পর ও নিশ্চুপ হয়ে গেলো। বিয়ে এখন হবে না ও নিজেও জানতো কিন্তু নিজের পছন্দের মানুষের সাথে হলে জিনিসটা একটু বাজিয়ে দেখতে সমস্যা তো নেই।

কিন্তু সমস্যা হলো অন্য জায়গায়, রোহিণী প্রস্তাব শোনার পর মুখের উপর না বলে দিয়েছে। মুগ্ধর বয়স তখন খুব বেশি নয় তাই ও রেগে গেলো অনেকটা আর রোহিণীকে ডেকে পাঠালো ওদের ছাঁদে। রোহিণী আসতেই কোন প্রকার অভিবাদন ব্যতীত ওর বাহু চেপে ধরে বললো

“বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়ার কারণ?”

রোহিণী প্রথমে কপাল ভাঁজ করলেও পরক্ষণেই খিলখিল করে হেসে দিলো। ওর হাসির শব্দ নদীর জলের কলকল শব্দের ন্যায় শান্ত মনে হলো মুগ্ধর কাছে, যেনো অদ্ভুত এক স্নিগ্ধতা। রোহিণী হাসির মাঝেই সাবধানে বললো,

“আপনি না মারাত্মক সুন্দর দেখতে,যাকে বলে ভয়ঙ্কর সুন্দর মানুষ। আপনাকে আর যাইহোক বিয়ে করা যায় না!”

মুগ্ধ রোহিণীর দিকে ‘আর ইউ সিরিয়াস’ দৃষ্টিতে তাকালো, ও জানে ও ঠিকঠাক দেখতে কিন্তু মারাত্মক সুন্দর! এমন প্রশংসা প্রথম শুনলো তাও আবার পৃথিবীর সবচেয়ে হাস্যকর যুক্তিতে। একটা মানুষ সুন্দর বলে তাকে রিজেক্ট করা যায় কন্সেপ্টটা নতুন, ও ভ্রু কুঁচকে বলেই ফেললো

“সুন্দর মানুষদের বুঝি ভালোবাসা বা বিয়ে করার অধিকার নেই?”

রোহিণী মাথা নাড়লো, উদাসী গলায় বললো

“উহু! তা ঠিক নয় তবে কাঠগোলাপের মেলায় কদমফুল বড্ড সঙ্গতি রহিত। আপনার পাশে আমাকেও অপ্রিয় সত্যের মতো দেখাবে, তাই নিজের মানানসই কাউকে খুঁজুন”

বলেই আর দাঁড়ালো না। দরজা দিয়ে বের হওয়ার পূর্বমুহূর্তে মুচকি হেসে বললো

“পুরুষ মানুষদের কিন্তু এতো সুন্দর হতে নেই।নজর লেগে যায়!”

মুগ্ধ অবাক হয়েই বললো,

“সৌন্দর্যে কি শুধুমাত্র নারীদের একচেটিয়া অধিকার?”

রোহিণী পিছু না ফিরেই বললো,

“হয়তো”

এর পরেই ওদের চোখে চোখে কথা বলা শুরু হলো, রোহিণীর জানানো মতামতের পর ওর মাও একপ্রকার চুপ হয়ে গেছে। তাতে ও হাফ ছেড়ে বেঁচেছে! কিন্তু একটা সময় পর মনেই হয়েছিলো বিয়েটা হলে খারাপ হতো না, যতো ও রোহিণীকে দেখতো ততো মনে থাকা সুপ্ত অনুভুতিগুলো জেগে উঠতো। যাকে বলে কাউকে মাত্রাতিরিক্ত পছন্দ করা, রোহিণীও যে শায় দিতো না তা কিন্তু নয়। প্রায়ই লুকিয়ে কথা বলতো আর একা পেলেই বলতো

“এতো সেজেগুজে কাকে ইম্প্রেস করতে চাইছেন?”

কিংবা,,

“আপনি মেয়েদের মতো কাজল পড়ে বাইরে বের হবেন, নাহয় যদি কারো নজর লেগে যায়?”

মুগ্ধ হাল্কা শব্দে হাসতো কিন্তু জবাব দিতো না। রোহিণীর সাথে টুকটাক কথা ওকে আশাবাদী করে তোলে, হয়তো কোন একদিন ওরা উপযুক্ত বয়সে গেলে রোহিণী প্রস্তাব ফিরিয়ে দিবে না। কিন্তু সেই আশায় গুড়ে-বালি, এখন তো কথা তো দূর ওর দিকে ফিরিয়ে তাকায় না রোহিণী। তাতে কিন্তু দোষটা ওরই সিংগভাগ, একজনের দোষ আরেকজনকে দেয়ার মানেই হয়না কিন্তু ওদের মাঝের দুরত্ব অনেক বেড়ে গিয়েছে যে সেটা গুছানো সাধ্যের বাইরে। হয়তো ও রোহিণীর উপর ক্ষোভ প্রকাশ করতো না যদি রোহিণী সৌহার্দ্যের পক্ষ না নিতো, খুব সুপ্তভাবে ও চেয়েছিলো রোহিণী ওকে সাপোর্ট করুক কিন্তু সেটা না হওয়াতেই রেগে গিয়েছিলো। মুগ্ধ নিজের কামরায় গেলো রেডি হতে, মায়ের সামনে পড়লে হয়তো আবারো বিয়ের প্রসঙ্গ উঠাবে যেটা ও প্লেগের মতো এড়িয়ে চলার প্রচেষ্টায় আছে। আর যাইহোক বিয়ে সাদির মন মানসিকতা ওর এখন একদম নেই, ওর কেশবতীকে ছাড়া অন্যকাউকে নিজের পাশে ভাবাও কল্পনাতীত!

রোহিণী নুরের কামরায় এসে দেখে নুর ঘুম থেকে উঠে বসেছে মাত্র, ওকে দেখে জামাকাপড় ঠিক করে বললো

“তুমি? এতো সকালে? কোন দরকার বুঝি আপু?!”

রোহিণী মাথা নাড়ালো, নুরের কথা শুনে অদিতে ওর কাঁধে মুখ লুকালো। অপরিচিত মানুষের কথা শুনে হয়তো শঙ্কিত হয়ে গেছে। রোহিণীর জবাব না পেয়ে নুর মুখ ধুতে চলে গেলো। নুর বেরিয়ে যেতেই অদিতা মাথা উঁচু করে পিটপিট করে তাকিয়ে নুর ফিরে আসা পর্যন্ত, নুর অদিতার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো

“আরে এতো সুন্দর বাবুটা কে এখানে?”

অদিতা আবারো মুখ লুকিয়ে ফেললো, কিন্তু ওর শরীরের মৃদু কাঁপা দেখে যে কেউ বুঝতে পারবে ও হাসছে। নুরও মুচকি হাসলো তারপর রোহিণী দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো

“কে ও রোহু আপু? তোমাদের বাসায় কি মেহমান এসেছে?”

রোহিণী তাই বলতে চাইলো কিন্তু কি ভেবে যেনো বললো না বরং শান্তকণ্ঠে বললো

“ও অদিতা, শর্মি আপুর মেয়ে”

নুর চুপ হয়ে গেলো, শর্মি আপুর মেয়ে?মানে সৌহার্দ্যের বোনের মেয়ে কিন্তু তার তো বিয়েই হয়নি তাহলে মেয়ে কবে হলো। তাহলে কি ওর পরিচিত শর্মি নয়? কিন্তু পরিচিত না হলে তো রোহিণী নাম বলতো না, কিন্তু বিষয়টা কোনভাবেই বোধগম্য হলো, কি করে সম্ভব এটা?
রোহিণী ওর অভ্যন্তরীণ স্নায়ুযুদ্ধ টের পেলো, ও কেনো করছে বিষয়টা জানেনা কিন্তু মনে হলো নুরের জানা উচিৎ।

“এখন কতো সাল জানিস নুর? ২০২২ সাল চলছে, ২০১৪ সাল চলছে”

কথাটা শুনেই নুর হেসে দিলো, রোহিণী মজা করছে তাহলে কিন্তু রোহিণীর চোখেমুখে কোন হাসির ছাপ নেই বরং তার দৃষ্টি স্থীর। নুরের হাসি মিলিয়ে গেলো ধীরেধীরে, ও ভ্রু কুঁচকে ক্যালেন্ডার দেখলো কিন্তু সেখানে ২০১৪ লিখা। তবুও বিষয়টা মন থেকে সরিয়ে ফেলতে পারলো না, রোহিণীর এমন মজা করার মানেই হয়না।

রোহিণী নুরের ভেতরে থাকা ডিবেট দেখে কিছু বললো না, কথাটা বলা হয়তো ওর উচিৎ হয়নি,পরক্ষণেই ভাবলো নুর কিছুক্ষণ পর এমনিতেই ভুলে যাবে কিন্তু নুর ভুলে যায়নি। অদ্ভুতভাবে নির্দিষ্ট স্থানে যখন সৌহার্দ্যের সাথে দেখা করতে গিয়েছে তখনও ওর কাছে প্রতিটি শব্দ পরিষ্কার জলের মতো, কিছুটা ইতস্তত বোধ করলেও বলে ফেললো

“শর্মি আপুর মেয়েকে দেখলাম আজকে”

সৌহার্দ্য স্থীর হয়ে গেলো, কোন শব্দ গলা থেকে বের হলো না।নুর ভেবেছিলো সৌহার্দ্য হেসে উড়িয়ে দিবে কিন্তু তার কিছুই হয়নি দেখে আবারো বললো

“তাহলে কথা সত্যি, ও আসলেই শর্মি আপুর মেয়ে? কিন্তু কিভাবে, আ-আমি তো গতকালও…এখন কি সত্যিই বাইশ সাল সৌহার্দ্য?”

সৌহার্দ্য মাথা নিচু করা অবস্থায় হাল্কা করে মাথা নাড়লো, নুরের প্রচণ্ড তিক্ততায় হাসি দিতে ইচ্ছে হলো। জীবন কি খেলা খেলছে ওর সাথে? ওর মনে অনেক প্রশ্ন কিন্তু তার জবাব জানার শক্তি নেই। ও মৃদু কন্ঠে বললো

“শর্মি আপু এখন কোথায়?

সৌহার্দ্যের কথা জড়িয়ে এলো, কোনরকমভাবে বলে উঠলো

“নেই, ও নেই”

নুর থমকে গেলো! নেই মানে? এইতো কালও তার সাথে ও কথা বলেছে। আজ নেই মানে? কিন্তু সৌহার্দ্যের অবস্থা বুঝতে পেরে ও নরম স্বরে বললো

“ক-কিভাবে হলো এসব?”

সৌহার্দ্য জানেনা ও কেনো কথাগুলো বলছে, ও ওর কথা শোনার মতো কেউ নেই তাই? ও জড়ানো কন্ঠেই বললো

“বাবার আর আমার সম্পর্কের দিন দিন অবনতি ঘটছিলো তাই তাকে কিছুটা এড়িয়ে চলতাম। বাবার ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কথা ছিলো, মা বলেছে আমায় যেতে কিন্তু আমি ইচ্ছে করেই যায়নি। বাবার সাথে ঝ!গ*ড়া হবে এই ভয়ে। শর্মি আপু বাধ্য হয়েই বাবার সাথে গেলো কিন্তু আর ফিরে এলো না”

সৌহার্দ্যের চোখ ছলছল করতে লাগলো, কথা জড়িয়ে এলো তবুও কথা থামালো না

“সন্ধ্যার পরে তারা ফিরছিলো রিক্সা দিয়ে কিন্তু একটা প্রাইভেট কার দ্রুত গতিতে চালাতে গিয়ে তাদের রিক্সার সাথে এক্সিডেন্ট করে। বাবা ঘটনাস্থলেই…আর আপু হাসপাতাল পর্যন্ত শ্বাস নিলেও একসময় হাল ছেড়ে দেয়। আমি শেষবারের মতো তাদের সাথে কথাও বলতে পারিনি, অদিতার বয়স মাত্র একবছর ছিলো তখন।আপুর হাজবেন্ডকে তারা অন্যস্থানে বিয়ে করাবে তাই অদিতাকে নেয়নি, অবশ্যই চাইলেও আমি দিতাম না। কিন্তু আমার প্রায়ই মনে হয়, আপুর বদলে আমি গেলেই হতো। আমাদের ছোট্ট অদি মা হারা হতো না!”

সৌহার্দ্য কথাগুলো শেষ করতেই জল গড়িয়ে পড়লো গাল বেয়ে। নুর তা সযত্নে মুছে ওর হাত চেপে ধরে বসে রইলো। প্রায় অনেকক্ষণ পর সৌহার্দ্য শান্ত হলো, কিন্তু নুর তার ভাবনায় ব্যস্ত!
নুরের সবকিছু অবিশ্বাস্য মনে হলো, আট বছর! আট বছর হয়ে গেছে যেখানে ওর মনে হলো ও ঠিক কালই তো কোচিংয়ে যাচ্ছিলো! ওর মনে অনেক প্রশ্ন কিন্তু একটা প্রশ্ন না করেই থাকতে পারছে না। ও সৌহার্দ্যের দিকে তাকিয়ে ভয়ার্ত কন্ঠে জানতে চাইলো,

“তোমার সাথে কি আমার মাঝে কেটে যাওয়া বছরগুলোতে যোগাযোগ হয়েছে? আমরা কি এখনো একসাথে আছি
সৌহার্দ্য?”

নুর জানেনা এই হঠাৎ প্রশ্ন কেনো করলো, যদি সৌহার্দ্য ওর পাশে বসে থাকে তারমানে ওরা অবশ্যই এখনো একসাথে আছে। কিন্তু মনে থাকা অজানা ভয় কিছুতেই সরাতে পারলো না, ও খুব সাবধানেই বললো

“আ-আমাদের কি বিয়ে হয়েছে?”

সৌহার্দ্য মাথা নিচু করে রইলো, জবাব দেয়ার মতো ভাষা খুঁজে পেলো না। জবাব না পেয়ে নুর প্যানিক করা শুরু করলো, ওকে জোরে জোরে শ্বাস নিতে দেখে সৌহার্দ্য ভয় পেয়ে গেলো, ভীত কন্ঠে বললো

“আমাদের বিয়ে হয়নি কিন্তু ঠিক হয়ে আছে। সব ঠিক থাকলে খুব দ্রুতই সম্পন্ন হবে”

মিথ্যে!! ওদের বিয়ে তো দুরের কথা, নুর ঠিক হয়ে গেলে হয়তো ওর চেহারাও দেখতে চাইবে মা কিন্তু আপাদত ও এই মিথ্যের আশ্রয়ে নিতে রাজি, অন্তত যতোদিন না নুর সুস্থ হয়।কারণ এই মিথ্যে নুরকে সাহায্য করে।
নুর কথাগুলো শুনে শান্ত হয়ে হলো, ও এই আশ্বাসের শব্দই শোনার অপেক্ষায় ছিলো। ওদের বিয়ে হবে, ওর স্মৃতি ফিরে এলেই ওদের বিয়ে হবে। নুর আর কিছু না বলে শান্ত হয়ে আশপাশ উপভোগ করতে লাগলো, সৌহার্দ্য নুরলে শান্ত থাকতে দেখে ও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। এই সময়ে নুরকে একদম স্ট্রেস দেয়া যাবে না, তাতে খারাপ প্রভাব পড়বে ব্রেইনের উপর।
হয়তো এটাই ভালো ওর জন্য। মিথ্যের দুনিয়া সুন্দর, ঝমকালো, মনোমুগ্ধকর। তা মরিচিকার মতো আশা জাগায়, ভালো থাকার স্বপ্ন দেখায়, বাস্তবতা থেকে বহুদুর কোন এক ছোট্ট নীড়ে ঘর বাঁধতে শিখায়। নুর সেই ছোট্ট নীড়ে ভালো থাকুক, সময়টা যতোই ক্ষণিকের হোক…

#চলবে…
(ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন, প্রচণ্ড ঘুম পাচ্ছে তাই রিচেইক করার সময় পাইনি। স্যরি)