জুলিয়েট পর্ব-০৩

0
407

#জুলিয়েট
লেখনীতে #মেহরিমা_আফরিন

৩.

ঘরের বাতি নেভানো।পুরো ঘর ঢাকা পড়েছে আবছা অন্ধকারে।তবুও কিছুটা আলো আছে।যতোখানি আলো তে হাতড়ে হাতড়ে সামনে হাঁটা যায়,ঠিক অতোখানি।

রূপসা দরজা ঠেলে ভেতরে এলো।রাজিব সাহেব তখনও টান টান হয়ে শুয়ে ছিলেন।দুই চোখ বন্ধ।রূপসা বুঝলো না তিনি জেগে আছে নাকি ঘুমিয়ে আছে।সে আস্তে করে ডাক দেয়,’বাবা!’

রাজিব হাসান চোখ খুললেন।একটু মাথা উঠিয়ে মেয়েকে দেখার চেষ্টা করলেন।রূপসা এগিয়ে এসে বলল,’উঠতে হবে না।আমি কাছেই আছি।’

রাজিব চোখ ঘুরিয়ে তাকে দেখলেন।তার দৃষ্টি ঘোলাটে।কাঁপা হাতে একটা হাত তোলার চেষ্টা করলেন।রূপসা দ্রুত সেই হাতটা ধরে নিয়ে বলল,’তুমি কষ্ট করে হাত তুলছো কেন?আমি এখানেই আছি।’

রূপসা গিয়ে তার বাবার শিয়রে বসলো একটা হাত মাথায় রেখে বলল,’আর একটা মাস একটু কষ্ট করো বাবা।ডাক্তার বলেছে,এরপর থেকে তুমি হাঁটাচলা করতে পারবে।’

রাজিব বড়ো করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন,’দম বন্ধ লাগে রূপ।সারাদিন বাড়িতে থেকে কেমন হাঁসফাঁস লাগে।’

রূপসা একটু আনত হয়ে বলল,’এই তো বাবা।আর ক’টা দিন অপেক্ষা করো।সব ঠিক হয়ে যাবে।তোমার কতো বড়ো একটা অপারেশন হয়েছে।একটি ধকল তো যাবেই।’

রাজিব দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন।রূপসা তখনো তার চুলে হাত বুলিয়ে যাচ্ছিলো।রাজিব বললেন,’রূপ! একটা কথা জানিস?’

‘কি?’

‘বাড়িতে আসার পর রূপম একটি বারের জন্যও আমার সাথে দেখা করতে আসে নি।’

বলতে গিয়ে তার কন্ঠ জড়িয়ে এলো।রূপসা বলল,’আমি তার সাথে কথা বলবো বাবা।’

‘কথা বলে কি হবে?’
রাজিব আরেকবার দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন।
‘সে আমাকে ঘৃণা করে রূপ।ঘৃণা নিয়ে সামনে আসার চেয়ে না আসাই ভালো।’

রূপসা একটু সাফাই দেওয়ার চেষ্টা করল,’বয়স কম বাবা।এসব ব্যাপার একটু কম বুঝে।’

রাজিব সিলিংয়ের দিকে চোখ নিয়ে বললেন,’খুব বেশি ছোটও না রূপ।কলেজে উঠেছে এইবার।তুমি তাকে এখনো বাচ্চা রূপম ভাবছো।’

রূপসা কিছু বলে না।বাবার মতো করেই কয়েকটা তপ্ত শ্বাস ছাড়ে।রাজিব আস্তে করে চোখ বন্ধ করেন।একটু গলা কেশে কিছু বলার প্রস্তুতি নেন।

‘তোমার মা যখন মারা গেল,তখন তোমার বয়স সতেরো।আর রূপমের এগারো।আমি তখন দিশেহারা,ছন্নছাড়া।দুই সন্তান কে নিয়ে কোথায় যাবো,কি করবো,কিচ্ছু মাথায় আসছিলো না।আশে পাশের মানুষ বললেন পুনরায় বিয়ে করে নিতে।অথচ তোমার মায়ের স্মৃতি আমি ভুলতে পারছিলাম না।আমি বিয়ে না করেই জীবন পার করার সিদ্ধান্ত নিলাম।আমার পেশা ছিলো শিক্ষকতা।আয় খুব বেশি ছিলো না।তবে সম্মান ছিলো।আমার একটা স্টুডেন্ট ছিলো।গীত নামের।গীতের বড় বোন ছিলো জেসমিন।একদিন গীত ক্লাসে ভীষণ কান্নাকাটি করছিলো।আমি কারণ জানতে চাইলাম।সে বলল তার বোনকে নাকি শ্বশুর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে।আমি কৌতূহল দেখিয়ে আরো একটু জানতে চাইলাম।
পরে শুনলাম জেসমিনের গায়ের রং একটু চাপা ছিলো বলে তার বর তার সাথে সংসার করার আগ্রহ দেখায়নি।কি ভীষণ মায়া হলো আমার মেয়েটির প্রতি! বলা বাহুল্য,পৃথিবীতে তিনটি মেয়ের প্রতি আমার সীমাহীন মায়া কাজ করে।প্রথমটা তোমার মা,দ্বিতীয়টা তুমি,আর তৃতীয়টা জেসমিন।আমি তাকে বিয়ে করলাম,একটি সুন্দর জীবন দেওয়ার আশায়।সেই সাথে নিজের সন্তানদের একটি সুন্দর মা দেওয়ার আশায়।আমার মনে হচ্ছিল জেসমিন একটা বিশুদ্ধ হৃদয়ের অধিকারী।বিয়ের পর প্রতি মুহূর্তে জেসমিন সে কথা প্রমান করে গেল।সে তোমাদের বুকে আগলে নিল।পাঁচ বছর যাবত সে একগ্র চিত্তে সংসার করে গেল।অথচ রূপম তাকে কোনোদিন মানতে পারে নি।রূপমের প্রতি এই অভিমান আমার থেকে যাবে।তার একটা কুৎসিত বদঅভ্যাস আছে।সে কথায় কথায় জেসমিনকে ছোট করে।যেটা আমার অত্যন্ত অপছন্দ।সে যদি এমনটাই করতে থাকে,তবে তার সাথে আমার কথা না হওয়াই শ্রেয়।’

রূপসা শুধু শুনলো।না বিরোধ করলো,না পক্ষ নিল।বাবা বাবার নীতিতে স্বচ্ছ।এতো দীর্ঘ সময়ের শিক্ষকতায় বাবা সবকিছুতেই নিজের আদর্শ আর নিয়ম নীতি মান্য করে চলে।রূপসা সেটা জানে।রূপমের অবুধপনাও সে বুঝে।বুঝদার হয়েই তার যতো ঝামেলা হয়েছে।রূপমের কাছে জেসমিনের প্রসঙ্গ তোলা যায় না।বাবার কাছে রূপমের হয়ে সাফাই দেওয়া যায় না।রূপসা বিছানার চাদরে নখ দিয়ে আঁচড় কাটতে কাটতে অন্যমনস্ক হয়ে বলল,’তুমি ভেবো না বাবা।আমি ছোট কে বলবো।’

রাজিব সাহেব সিলিং দেখলেন কতোক্ষণ।তার চোখে পানি জমেছে।তার ভেতর একটা ব্যর্থ বাবা ঘাপটি মেরে বসে আছে।যখনই রূপম তার সামনে আসে,তখনই রাজিব টের পান তিনি ভীষণ ভীষণ ব্যর্থ।রূপম কেমন ভৎসনার চোখে তাকায় তার দিকে।সেই চাহনিতে রাজিবের কেমন লজ্জা হয়,মাথা হেট হয়ে আসে।সন্তান তার পিতাকে বিদ্রুপের নজরে দেখছে।এটা নোংরা।খুব বেশি অপমানজনক।
.
.
.
.
একটা রেললাইনের মতো আঁকাবাঁকা গলি।এক গলির ভেতরে অন্য গলির রাস্তা শুরু হয়েছে।গলির প্রস্থ এতোই কম যে দুইজন মানুষ পাশাপাশি হাঁটা দুষ্কর।সেই সংকীর্ণ গলিতে আবার ইট পাথর ফেলে চলার পথটাকে আরো বেশি সংকীর্ণ করা হয়েছে।রূপম মুখ খিঁচে গলির পথে হাটে।

চারদিকে কেমন পচা আবর্জনার গন্ধ।নাকে লাগে একটু পর।রূপম কিছুটা পথ নিশ্বাস বন্ধ করে হাঁটে।পাশাপাশি লাগোয়া অনেকগুলো ঘর।রূপমের দেখলেই বমি পায়।এসবে মানুষ থাকে কেমন করে?সে দ্রুত হেঁটে তার কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে এলো।

অর্ক তখন বাড়ির সামনের দরজায় বসে বই পড়ছিল।রূপম কোনো কথা না বলে তার পাশটায় এসে বসলো।অর্ক চমকায়।বইয়ের পাতা থেকে চোখ তুলে ঠোঁট গোল করে বলে,’রূপম! তুই?’

রূপম নির্বিকার।রয়ে সয়ে জবাব দেয়,’বাড়িতে ভালো লাগছিলো না।তাই চলে এলাম।’

অর্ক বলল,’ভেতরে আয়।ঘরে গিয়ে বোস।’

‘দরকার নেই।তুই পড়।তোর সাথেই আছি।’

অর্ক তবুও জোর করে তাকে বাড়ির ভেতর নিল।রূপম আর মুখের উপর বলতে পারল না,তোর বাড়িতে গেলে ভ্যাবসা গন্ধে আমার বমি পায়।সে কেবল মুখটাকে স্বাভাবিক রেখে ভেতরে এলো।
অর্ক ঘরে ঢুকতেই একটা চেয়ারের খোঁজ করল।সেই ঘরে চেয়ার কেবল একটাই ছিলো।রপম দেখলো সেই চেয়ারে বসে একটা মেয়ে পা দোলাচ্ছে।

অর্ক ডাকলো,’শতাব্দী! এ্যাই শতাব্দী! দেখছিস না বাড়িতে মেহমান এসেছে।যা চেয়ার থেকে উঠ।’

শতাব্দী নামের মেয়েটি পেছন ফিরে।খুব স্বাভাবিক ভাবেই রূপমের সাথে তার দৃষ্টি বিনিময় হলো।রূপম একবার দেখে আবার চোখ নামিয়ে নিল।এটা অর্কের বোন।সে চিনে।আগেও দেখেছে।বয়সে সম্ভবত তার চেয়ে দুই-আড়াই বছরের ছোট।এইবার ক্লাস নাইনে উঠেছে।

শতাব্দী চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো।অর্ক কাছাকাছি এসে গলার স্বর খাদে নামায়-
‘বাড়িতে কি আছে শতাব্দী?’

শতাব্দী ঠোঁট উল্টায়।নিচু স্বরেই জবাব দেয়,’কিছুই তো নাই।তুমি সেই কথা জানো না?’

অর্কের মুখটা মলিন দেখালো ভীষণ।রূপম বাড়ি এসেছে,অথচ তাকে আপ্যায়ন করার মতো কিছুই নেই তার কাছে।ব্যাপারটা কেমন যেন দেখায়।

রূপম মানিব্যাগ থেকে দু’টো একশো টাকার নোট বের করল।তারপর বাইরে যেতে যেতে বলল,’দাঁড়া।আমি একটু আসি।’

সে বেরিয়ে গেল ব্যস্ত কদমে।ফিরে আসলো দু’টো বিস্কুটের প্যাকেট,কয়েকটা আপেল,গুড়ো দুধ আর চা পাতার প্যাকেট হাতে।অর্ক আশ্চর্য হয়ে বলল,’এসব কি?’

রূপম গিয়ে সবকিছু টেবিলের উপর রাখলো।মাথা নেড়ে বলল,’তোর বাড়িতে আসলাম।খালি হাতে কিভাবে আসবো।’
অর্কর থেকে চোখ সরিয়ে সে শতাব্দী কে ডাকলো।বলল,’শতাব্দী! তুমি চা বানাতে জানো?’

শতাব্দী যন্ত্রের মতো উপরনিচ মাথা নাড়ে।রূপম মৃদ হেসে বলল,’তাহলে আমাকে এক কাপ চা করে খাওয়ায়।চিনি দিবে না।আমি চায়ের চিনি খাই না।’

শতাব্দী তক্ষুনি প্যাকেট হাতে রান্নাঘরের দিকে ছুটে।রান্নাঘরটা অতিমাত্রায় ছোট।শতাব্দী দাঁড়ানোর পর আর দাঁড়ানোর জায়গা অবশিষ্ট ছিলো না।এটা তাদের একার রান্নাঘর না।পাশের বাড়ি বিমলা চাচিরাও এই রান্নাঘর ব্যবহার করে।সে চুলোয় পানি বসিয়ে এতবার বাইরের ঘরটাতে উঁকি দেয়।

অর্ক ভাই তার বন্ধুর সাথে কথা বলছে।তার বন্ধুর নাম রূপম।শতাব্দী গোল গোল চোখে রূপমকে দেখে।তার কাপড়চোপড় বেশ পরিপাটি।কোনো ছেঁড়া ফাটা নেই।হাতে একটা ঘড়িও আছে।সুন্দর তো! ভারি সুন্দর।শতাব্দী আপনাআপনি বিড়বিড় করে,’কি সুন্দর মুখ! ভালো ঘরের ছেলে মনে হয়।নয়তো অতো টাকা পকেটে থাকে কেমন করে?’

****

আজ আবার বৃষ্টি হয়েছে।ধরণীর বুক চিরে চিরচির বৃষ্টি যাকে বলে।আধ ঘন্টার বর্ষণ শেষে প্রকৃতি তার সমস্ত অলসতা ঝেড়ে নতুন সজীবতায় উজ্জীবিত হয়েছে।চারপাশ তখন বেশ চকচকে দেখাচ্ছিলো।

রূপসা পা টিপে টিপে ছাদে যায়।তাদের বাড়ির ছাদটাও মন্দ না।মণি গত বছর কয়েকটা গাছ লাগিয়েছে নতুন।তারপর থেকে ছাদটা ভালো লাগে দেখতে।

তার সবচেয়ে প্রিয় নয়নতারা গাছ।ছাদে গিয়েই সে প্রথম নয়নতারা গাছের থেকে একটা ফুল ছিঁড়ে।বাতাসের সাথে একটা ভেজা মাটির ঘ্রাণ নাকে এসে লাগছে।রূপমা নাক টেনে সেই ঘ্রাণ নেয়।এই গন্ধটা দারুণ।

রূপম ছাদে এলো বিকেল করে।রূপসা তখন পা ছড়িয়ে রেলিংয়ে হেলান দিয়ে বসেছিলো।রূপম হাসলো।
‘কিরে দিদিয়া?তুমি এমন হাত পা মেলে বসে আছো কেন?ছাদের মেঝেতে কতো ময়লা থাকে।’

রূপসা মুখ বাঁকা করে বলল,’এই মাত্র বৃষ্টি হয়েছে ছোট।ছাদ একদম পরিষ্কার।’

রূপম হেঁটে এসে তারই মতো করে তার পাশে বসলো।রূপসা চোখ পাকিয়ে শুধায়,’কোথায় গিয়েছিস তুই?’

রূপম ভাবলেশহীন হয়ে বলল,’অর্কর বাড়িতে।’

রূপসা চুপচাপ গাছ দেখে।টব,ফুল,আকাশ-সব দেখে।রূপম রেলিংয়ের সাথে পিঠ ধাক্কা দিয়ে বলল,’জানো দিদিয়া।আমরা খুব বড়লোক।’

রূপসা কেবল ঘাড় বাকায়।
‘আমি তো কোনোদিন নিজেদের ছোটলোক ভাবি নি রূপম।আলহামদুলিল্লাহ।ভালোই তো আছে আমাদের।বড়লোক না হই,খুব বেশি খারাপ তো নেই আমরা।’

রূপম সম্মতিসূচক মাথা নাড়ে।হঠাৎই রূপসার দিকে ফিরে ব্যতিব্যস্ত কন্ঠে বলে উঠে,’জানো দিদিয়া।অর্কদের থাকার বাড়িটা এতো বাজে।দেখলেই গা গুলিয়ে আসে আমার।এত্তো ছোট্ট ঘরে তারা চারজন থাকে।বাড়িতে চা পাতা পর্যন্ত থাকে না তাদের।’

রূপসা চোখ ছোট করে বলল,’অর্ক কে?তোদের ক্লাসে প্রথম হতো যে,সে না?’

‘হ্যাঁ।সে ই তো।সেদিন আমি প্রথমবার নোট আনতে তার বাড়ি গেলাম।কি বিচ্ছিরি বাড়ি দিদিয়া।তুমি গেলে বমিই করে দিবে।’

‘কারো আর্থিক অবস্থা নিয়ে এভাবে বলতে নেই ছোট।’

রূপম বিস্মিত হয়।চোখ গোল গোল করে বলে,’অপমান করি নি দিদিয়া।কষ্ট পেয়েছি।আমার বয়সী একটা ছেলে ওমন বাড়িতে থাকে,এটা আমায় কষ্ট দিয়েছে।’

রূপম বোনের কাঁধে আলতো করে মাথা রাখলো।তার গলায় স্বর গম্ভীর।সে কৈশোরের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।রূপসা লক্ষ্য করেছে তার কন্ঠস্বর আজকাল ভারি শোনায়।রূপম পুরু স্বরে বলল,’দিদিয়া! আসলে আমরা সবাই কম বেশি ভাগ্যবান।অন্যের মন্দভাগ্য না দেখলে নিজের সৌভাগ্য উপলব্ধি করা যায় না।’

রূপসা সামান্য হাসলো।একটা হাত নিয়ে রূপমের মাথায় রাখলো।বিলি কাটতে কাটতে শুধালো,’অর্কর জন্য মায়া হয়েছে তোর?’

‘খুব।আমরা কতো ভালো বাড়িতে থাকি।তাও আমাদের কতো অভিযোগ।আর অর্কর পরণের জামাটাও তিনবার সেলাই করা।’

দুই ভাই বোন কিছুক্ষণ গম্ভীর হয়ে বসে থাকলো।রূপসা শেষে একটু গলা কেশে বলল,’রূপম! আমার একটা কথা শুনবি?’

রূপমের চোখ বুজে রাখা।চোখ বুজেই গাঢ় স্বরে বলল,’বলো।কিন্তু জেসমিন বাদে অন্য কোনো টপিক।ঠিক আছে?’

‘তোর সমস্যা কি রূপম?মণির সাথে এমন করিস কেন?’

‘তাকে আমার ভালো লাগে না।’

‘মণি খুব ভালো মানুষ।’

‘তোমার জন্য ভালো।আমার জন্য না।’

‘মা কখনো আমাদের এমন আচরণ শেখায় নি।’

রূপম খেঁকিয়ে উঠে,’তুমি মায়ের নাম নিবে না দিদিয়া।তোমরা সবাই মা কে ভুলে গেছো।মায়ের সংসারের চাবি আরেক মহিলার হাতে তুলে দিয়েছো।’

রূপসার হাত থামে।বিমুঢ় হয়ে শুধু বলে,’বাবা আর তার বিয়ে হয়েছে।এসব কথা বলিস না।বাবা রাগ হয় খুব।’

‘হোক রাগ।ঐ লোক রাগ হলেও বা কি?তার রাগ গুনে কে?’

রূপম গা ঝাড়া দিয়ে উঠে বসল।রূপসা দেখলো তার চোখ মুখ শক্ত।কন্ঠে অপ্রতিরোধ্য জেদ।দাঁত কটমট করে বলল,’উচ্চমাধ্যমিকটা শুধু শেষ হতে দাও।মরে গেলেও এই বাড়িতে পা দেব না।ঐ লোক সংসার পাতুক তার জোয়ান বউকে নিয়ে।আমি থাকবো না এসবে।যত্তসব!!’

চলবে-