জুলিয়েট পর্ব-১০

0
541

গল্প #জুলিয়েট
লেখনীতে #মেহরিমা_আফরিন

১০.

রাত বেড়ে তখন বারোটা পয়তাল্লিশ।ঘড়ির কাটা চলছে টিক টিক করে,ছন্দোময় গতিতে।শোহরাব আস্তে করে দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করলো।

রূপসা বসেছিল খাটের একদম মাঝামাঝি।মাথা নুয়ানো।চোখের দৃষ্টিটা স্পষ্ট ঠেকলো না।শোহরাব তার থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে বসলো।দুই মিনিট চলে যাওয়ার পরেও রূপসা মাথা তুলল না।তাকে কেমন জীবন কোনো জড় পদার্থের মতো মনে হলো।কেমন যেন নির্বিকার,শরীরে কোনো প্রাণ নেই এমন।শোহরাব ডাকলো,’রূপসা! শুনছো?’

রূপসা আগের মতোই বসে থাকলো।শোহরাবের কথার প্রেক্ষিতে সামান্য একটু নড়লো বোধহয়।বাইরে থেকে ঠিক বোধগম্য হলো না ব্যাপারটা।শোহরাবের ইচ্ছে হলো হাত বাড়িয়ে একবার রূপসার হাতটা ছুঁয়ে দিতে।অথচ সে তেমন কিছুই করলো না।উল্টো বিনীত স্বরে আবারো ডাকলো ,’রূপসা!’

রূপসা আস্তে করে মাথা তুলল।তার চোখ দেকেই শোহরাব দমে গেল।বিষন্ন,মলিন আর দীর্ঘসময়ের কান্নাকাটি রক্তিম হয়ে উঠা এক জোড়া চোখ।শোহরাব একটা শুকনো ঢোক গিলে বলল,’তুমি কেঁদেছো?’

রূপসা উত্তর দেয় না।খাট থেকে উঠে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ায়।শরীরটা কেমন ভার ছেড়ে দিচ্ছিল।দুর্বল পা টা কোনোরকমে টেনে টেনে সে ব্যালকনির রেলিংয়ে হাত রেখে দাঁড়ালো।তার অনুভূতি সব ভোঁতা হয়ে গেছে।একটু আগেও সে কান্না করেছে।একদম বাচ্চাদের মতো।এখন আর কান্নাও আসছে না।চোখ দু’টো শুকিয়ে টান টান হয়ে আছে।বাবার সাথে কথা বলতে ইচ্ছে হচ্ছে খুব।

সে শম্বুক গতিতে ভেতরে এলো।এদিক সেদিক দেখে ব্যস্ত সুরে বলল,’আমার ফোন কোথায়?’

শোহরাব আস্তে করে বলল,’আছে।’

‘আমায় দিন।’

শোহরাব কপাল কুঁচকায়।এমন ধমক দিয়ে দিয়ে কথা বলছে কেন মেয়েটা?সে শান্ত গলায় বলল,’কাল দিবো।’

‘আমি আজ চাইছি।’

‘আশ্চর্য! এমন ধমক দিয়ে কথা বলছো কেন?’

‘তো কিভাবে কথা বলবো তোর সাথে?’

‘তুমি আবার তুই তোকারি করছো।’

‘একশোবার করব।’

শোহরাব চোখ মুখ শক্ত করে তার দিকে তাকালো।তারপর কম্বল মুড়ি দিয়ে ধপ করে খাটে শুয়ে গজ গজ করে বলল,’করো।সারারাত খ্যাক খ্যাক করো।আমি ঘুমুচ্ছি।’

‘আমার ফোন দে আগে।’

‘দিবো না।’

শোহরাব চুপচাপ চোখ বন্ধ করে।হঠাৎই কিছু একটা মনে পড়তেই ফট করে চোখ খুলে।তারপর ছুটে এসে ঘরের দরজা বন্ধ করে।তারপর বন্ধ করে বারান্দার থাই গ্লাস।দরজায় একটা মাঝামাঝি আকারের তালা ঝুলিয়ে সে নিশ্চিন্তে ঘুম দেওয়ার প্রস্তুতি নেয়।রূপসা দাঁত কিড়মিড় করে বলল,’দরজা বন্ধ করলি কেন?চড় দেবো একটা।দরজা খোল।’

‘সকালে খুলব।’

‘না।এখন।’

‘পারব না।’

‘তুই একটা কুত্তা।’

শোহরাব চোখ খুলল।মাথা তুলে প্রসন্ন কন্ঠে বলল,’থ্যাংকস।আর তুই কুত্তার বউ।এখন ঘুমা।’

রূপসার শরীরটা ছ্যান ছ্যান করে জ্বলে উঠল।সে ক্রোধ উপচে পড়া কন্ঠে গিরগির করল,’তুই কয়দিন আমায় আটকে রাখবি?তোকে আমি ভয় পাই?লুচ্চা,লাফাঙ্গা,মেয়েবাজ কোথাকার!’

‘উহু।মেয়েবাজ না।রূপসা বাজ আমি।’

রূপসা থতমত খেয়ে চুপ হয়ে গেল।একবার ছুটে গিয়ে দরজায় ঝুলানো তালা টা নেড়ে চেড়ে দেখল।নাহ্,বের হওয়া সম্ভব না।হঠাৎই তার কান্না পেল।বাবার কি অবস্থা কে জানে।সবাই নিশ্চয়ই তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করছে খুব।

শোহরাব ততক্ষণে গাঢ় ঘুমে তলিয়ে গেছে।একেবারে নিশ্চিন্ত ঘুম।কয়েক ঘন্টা আগে যে সে এতো বড়ো কেলেঙ্কারি ঘটিয়েছে,সেটা তার ঘুমের প্রগাঢ়তা দেখে মনেই হলো না।তাকে একদমই নিশ্চিন্ত মনে হচ্ছে।একটা মেয়েকে জোর জবরদস্তির পর বিয়ে করে কেউ এতো শান্তিতে কিভাবে থাকতে পারে?

রূপসা ভঙ্গুর পায়ে হেঁটে ঘরের এক কোণায় গিয়ে দাঁড়ালো।তারপর গা ছেড়ে মেঝেতে গিয়ে বসলো।মাথাটা ঠেকালো হাঁটুতে।আপনাআপনি একটা দীর্ঘশ্বাস বুক চিরে বেরিয়ে এলো।একটু আগে চোখ দু’টো টানছিলো।এখন আবার কান্না পাচ্ছে।

সে চোখ তুলে একবার শোহরাবের দিকে তাকায়।প্রথমবার এলোমেলো উদাসীন চোখে।দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বার সতর্ক চোখে।তাকানোর পরেই তার শরীরে মৃদু তড়িৎ খেলে গেল।শোহরাবের বালিশের নিচে দরজায় ঝুলানো তালার চাবি রাখা।সেটার এক মাথা বেরিয়ে আছে।বালিশের নিচ থেকেই রূপসা সেটার অস্তিত্ব টের পেল।তারপরই সে আচমকা এক লাফে উঠে দাঁড়ালো।

এখন সময় কতো?রূপসা জানে না।জানার কোনো শখও নেই।কিন্তু এই চাবিটা তার প্রয়োজন।এই চাবি দিয়ে সে দরজা খুলবে।তারপর সে এই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাবে।মাঝ রাতে নগরীর বিশালাকার সড়কগুলো তার জন্য নিরাপদ না।তবুও রূপসা এই টুক ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত।অন্তত এই বাড়ি থেকে ঐ সড়ক তার জন্য ঢের নিরাপদ।

সে পা টিপে টিপে খাটের কাছে গেল।শোহরাব খুব নিশ্চিন্তে ঘুমুচ্ছিলো।গভীর ঘুম,হুট করে ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।রূপসা অতি সাবধানে এক হাতের উপর ভর দিয়ে সামান্য ঝুকলো।উৎকন্ঠা,উত্তেজনায় সে নিশ্বাস বন্ধ করে নিয়েছে।যদি তার নিশ্বাসের শব্দে শোহরাব জেগে যায়।তখন?

চাবিটা হাতে আসামাত্র রূপসা একেবারে নিঃশব্দে সেটা বালিশের নিচ থেকে টেনে বের করলো।তার শরীর দরদরিয়ে ঘামছে।হৃদপিণ্ডের ধুকপুকানি সে নিজেই শুনতে পাচ্ছে।

চাবিটা হাতে পাওয়া মাত্র সে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ে।তারপর সেটা বুকের সাথে চেপে ধরে পা টিপে টিপে দরজার দিকে এগিয়ে যায়।

চাবি দিয়ে তালা খুলতে গিয়ে খট করে একটা শব্দ হলো।রূপসা দাঁত দিয়ে নিচের ঠোঁট কামড়ে মুখটা খিঁচে ধরল।তারপর পিটপিট চোখে পেছন ফিরে শোহরাবের দিকে তাকালো।নাহ্,ঘুম এখনো ভাঙেনি।সে দ্রুত দরজা খুলে গুটি গুটি নিঃশব্দ কদমে সদর দরজার দিকে এগিয়ে যায়।

অর্কিড প্যালেসের মূল দরজা পার হতে রূপসার খুব একটা সময় লাগলো না।সময় লাগলো বাড়ির সামনের বিশালাকার বাগানটা পার হতে।রূপসার পরনে তখন সকাল বেলার পরে থাকা সেই সাদামাটা সালোয়ার কামিজ।ওড়না টা বার বার মাথা থেকে পড়ে যাচ্ছে।রূপসা বুকে হাত চেপে ধীর কদমে বাড়ির লোহার গেইটের দিকে এগিয়ে গেল।

সাড়ে আট ফুট উচ্চতার বিশাল প্রাচীর।রূপসা চোখ তুলে গেইটের উচ্চতা অনুমান করল।চারপাশের কংক্রিটের প্রাচীরও তো বেশ উঁচু।সে প্রাচীর টপকাবে কেমন করে?

রূপসা চঞ্চল চোখে চারপাশ থেকে।একটা কিছু পেলে ভালো হতো।তার উপর দাঁড়িয়ে প্রাচীর টপকানো যেতো।কিন্তু কিছু তো দেখতে পাচ্ছে না।হঠাৎই কেউ একজন পেছন থেকে ফিসফিস করে ডাকলো,’মই লাগবে রূপসা ম্যাডাম?একটা মই এনে দিবো?’

রূপসা উপরনিচ মাথা নেড়ে বলল,’হ্যাঁ।’

আচমকাই তার দুই চোখ রসগোল্লার মতো বড় হয়ে গেল।সে আতঙ্কিত চোখে পেছন ফিরতেই ভূত দেখার মতো চমকে উঠল।হতভম্ব হয়ে সে সাথে সাথে কয়েক কদম পিছিয়ে এলো।

শোহরাব দাঁড়িয়ে আছে তার পেছনে।দাঁতের পাটি শক্ত করে কামড়ে ধরে মুখ বন্ধ করে আছে।চোখে স্পষ্ট ক্ষোভ,হাত দু’টো মুষ্টিবদ্ধ।রূপসা ভীত চোখে তার দিকে তাকাতেই ভেতরের রাগটা আরো একটু বেড়ে গেল বোধহয়।

রূপসা মুখে একটা হাত চেপে বাগানের দিকে ভোঁ দৌড় দিলো।শোহরাব ধমকের সুরে বলল,’স্টপ ইট রূপসা।আমার মেজাজ খারাপ করো না।’

রূপসা তার কথা শুনলো না।চুল গুলো কানের পেছনে গুজে সে দিকবিদিকশুন্য হয়ে এদিক সেদিক ছুটে গেল।কোনো রাম্তাই বুঝি পাবে না বের হওয়ার?কোনো ছোট গেট বুঝি নেই এই বাড়িতে?

শোহরাব চোয়াল শক্ত করে তার অহেতুক ছুটোছুটি দেখে।তারপরই শার্টের হাতা গুটিয়ে নিয়ে তার পেছন পেছন দৌড়ে যায়।

রূপসার শ্বাস উঠে গলা পর্যন্ত এসে আটকে ছিল।সে হাঁপাতে হাঁপাতে দুই দিক দেখে।ঐ যে বাগানের পেছন দিকে একটা ছোট গেট দেখা যাচ্ছে।দেলোয়ার কাকা নতুন চারা আনলে,সেখান দিয়ে ভেতরে আসে।সেই পথটা দেখামাত্র রূপসার মুখে হাসি ফুটল।তৃষ্ণার্ত পথিক সামান্য জলের খোঁজ পেতেই যেমন ছটফট করে উঠে,রূপসাও তেমন করেই ছটফটিয়ে উঠল।সে প্রাণপণ ছুটে যায় প্রস্থান পথের দিকে।

অথচ বিধি বাম।প্রায় কাছাকাছি পৌঁছে যেতেই শোহরাব ছুটে এসে খপ করে তার হাতের কবজি চেপে ধরলো।রূপসা পেছন ফিরল।একনজর শোহরাবকে দেখেই হাতটা ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলো।অথচ পুরুষালি হাতের শক্ত থাবা উপেক্ষা করে পালিয়ে যাওয়া তার পক্ষে অসম্ভব।

রূপসা হাত টানতে টানতে ক্ষেপাটে গলায় বলল,’হাত ছাড়।’

‘পারলে ছাড়িয়ে নাও।’

কতক্ষণ মোচড়া মুচড়ি করে রূপসা নিজ থেকেই শান্ত হয়ে এলো।তবুও শেষ একবার শরীরে যেটুকু শক্ত অবশিষ্ট ছিলো,তা দিয়ে হাতটা হ্যাঁচকা টানে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করল।

শোহরাব এগিয়ে এলো দুই কদম।রূপসা সন্দিহান চোখে তার দিকে তাকালো।কড়া গলায় বলল,’কি চাই?গা ঘেঁষছিস কেন?’

শোহরার রহস্য করে হাসলো।তারপর আচমকাই একটু ঝুকে রূপসাকে পাঁজাকোলা করে কোলে তুলে নিল।রূপসা প্রথমে হতবিহ্বল হলো,তারপর হুশ আসতেই হাত পা ছুড়ে বলল,’নামা।নামা বলছি।ধরে একটা চড় দিবো বলে দিচ্ছি।’

‘সে তো তুমি মুখে মুখে রোজই দাও।এটা আর নতুন কি?’

‘ছাড়।’

‘না।’

রূপসা হাত পা ছুড়ে বার কয়েক শোহরাবের বুকে কিল ঘুষি দিলো।দাঁতে দাঁত ঘঁষে বলল,’থাপ্পড় খেতে না চাইলে নামা আমায়।’

‘তোমার হাতে থাপ্পড়ও কবুল জুলিয়েট।দিতে পারো।মাইন্ড করবো না।’

রূপসা শক্তিতে,গায়ের জোরে শোহরাবের সাথে পারলো না।শোহরাব তাকে এমন ভাবে নিজের সাথে চেপে রেখেছিল,যে রূপসার মনে হলো সে হাত পর্যন্ত ঠিক মতো নাড়তে পারছে না।

ঘরে এসেই শোহরাব তাকে খাটের উপর ছুড়ে ফেলল।তারপর বিকেলের মতো করেই তার দুই হাত টাই দিয়ে বাঁধলো।রূপসা বাজখাঁই গলায় চেঁচালো,’কু/ত্তার বাচ্চা।ছাড় বলছি।’

শোহরাব কানে হাত চেপে বিরক্ত হয়ে বলল,’উফফ! এতো গালি কেমন করে দিচ্ছো?মেয়েরা এতো গালি দেয় বুঝি?’

রূপসা কটমট চোখে তার দিকে তাকালো।আগের মতোই কর্কশ স্বরে বলল,’তুই আয়নায় নিজেকে দেখেছিস?কুকুরও তোর চেয়ে ভালো।’

‘জানি তো।এজন্যই তো তোকে জোর করে বিয়ে করেছি।নয়তো এই জীবনে বিয়ে হতো না।’

শোহরার চোখ নামিয়ে রূপসার ওড়নাটা দেখলো।রূপসা সাথে সাথে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে বলল,’কি দেখিস?চোখ সরা বলছি।’

শোহরাব কেমন বিদ্রুপ করে হাসলো।দায়সারা হয়ে বলল,’সরাবো না।কি করবে?আমার বউ।আমি দেখতেই পারি।’

‘এই বিয়ে মানে কে শুনি?’

‘তোমার মানতে হবে না।দেশ আর সমাজ মানলেই হলো।’

শোহরাব সাইড বক্সের ড্রয়ার থেকে একটা রুমাল বের করে রূপসার মুখ চেপে মাথার পেছনে নিয়ে গিঁট দিলো।রূপসা অস্পষ্ট স্বরে চেঁচালো।কাই কুই করে কিছু একটা বলল বোধহয়।কিন্তু কোনো উচ্চারণই স্পষ্ট শোনালো না।শোহরাব হাসি হাসি মুখ করে বলল,’পারফেক্ট।নাও ইউ আর লুকিং পারফেক্ট।’

শোহরাব আরাম করে বালিশে শোয়।মাথার নিচে একটা হাত রেখে রূপসাকে শুধায়,’বলো।চুপচাপ থাকবে নাকি চেঁচামেচি করবে?চুপ থাকলে মুখ খুলে দিবো।’

রূপসা ফুসতে ফুসতে কি যেন একটা বলল।বাইরে থেকে কেবল ক্যার ক্যার শব্দ শোনা গেল।শোহরাব কানে বালিশ চেপে বলল,’বুঝেছি।তুমি এভাবে থাকাই প্রেফার করছো।ওকে গুড নাইট।আমি ঘুমালাম।তুমি উমমম উমমম করতে থাকো রাতভর।’

সে চোখ বুজল।তারপর কয়েক মিনিট যেতেই গভীর ঘুমে অসাড় হলো।রূপসা কেবল অসহায় চোখে বসে বসে তার দিকে তাকালো।একটা রাত পার হয়ে গেছে।বাবা নিশ্চয়ই চিন্তায় অস্থির হয়ে যাচ্ছে।রূপসা কিভাবে তার সাথে যোগাযোগ করবে?কিভাবে সব গুছিয়ে বলবে তাকে?তার বুক চিন চিন করছিলো।কষ্টগুলো কন্ঠনালি বরাবর এসে দলা পাকিয়ে যাচ্ছিলো।ঢোক গিলতেই সমস্ত বুকে একটা সূক্ষ্ম যন্ত্রণা ছড়িয়ে গেল।

___
ভোরের একটু আগেই শোহরাবের ঘুম ভাঙলো।সে চোখ ডলতে ডলতে আবিষ্কার করলো তার ঘরে সে বাদেও আরো একজন আছে।মেয়েটা তার সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী।যে এখন পর্যন্ত তুই ব্যতীত অন্য কোনো শব্দ ব্যবহার করে তাকে ডাকে নি।

শোহরাব চোখ তুলে সামনে তাকাতেই দেখলো রূপসার দুই চোখ বন্ধ।সে বসে বসে এক পাশে হেলে ঘুমুচ্ছে।শরীরটা নড়বড়ে।যেকোনো সময় পড়ে যাবে যাবে অবস্থা।

এক লাফে উঠে বসলো সে।তাড়াহুড়ো করে এসে রূপসার হাত পায়ের বাঁধন খুলে দিলো।তারপর মুখ থেকে রুমালটা সরিয়ে নিলো।হাতের গিট টা খুলতেই রূপসা ডান দিকে কিছুটা ঝুকে গেল।শোহরাব খপ করে তার কাঁধ চেপে ধরল।রূপসার মাথা গিয়ে ঠেকলো তার কাঁধ বরাবর।শোহরাব বোকা বোকা চোখে রূপসার দিকে তাকায়।তারপর আনমনেই একটা ঢোক গিলে।মেয়েটা কাঁধে মাথা রাখতেই বুকের ভেতর একটা ঝড় বয়ে গেল।অদ্ভুত তো! এমন দম বন্ধ লাগছে কেন তার?

চলবে-