#জোছনায়_ঘর_তোর_আমার
#পর্ব৫(প্রথমাংশ)
#মহুয়া_আমরিন_বিন্দু
তিশা কে চেপে ধরেছে পুষ্পিতা।জেসি,পাপড়ি আঁড়চোখে তাকাচ্ছে,ভাবছে কখন তাদের কে না আবার ধরে।
বেচারি তিশা পাপড়িকে ইশারা করছে বাঁচিয়ে নে বইন।
পুষ্পিতা আবার প্রশ্ন করলো —,,নিশাদ ছেলেটা তোদের বাড়িতে কি করে রে?তোদের কি আত্নীয় হয়?তোর ওই ভাইটার কিছু হয় নাকি?
তিশা কাঁপা কন্ঠে বললো–,,ভাইয়ার বেস্ট ফ্রেন্ড!বেশির ভাগ সময় এখানেই থাকেন।আমাদের ফ্যামিলি মেম্বারের মতোই।
তিশা মনে মনে বললো–,,আল্লাহ মাফ করো সত্যি টা জানতে পারলে না জানি কি করে এ মেয়ে।এখনই সন্দেহ করা শুরু করছে।
পুষ্পিতা বললো–,,ওহ!
তিশা বললো–,,হঠাৎ নিশাদ ভাইয়ার বিষয়ে জানতে চাচ্ছিস কেনো?
পুষ্পিতা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে সব বললো,তিশা একবার কিছু দূর দাড়িয়ে থাকা নিজের ভাইয়ের দিক তাকালো।তার ভাই যেখানে সব জায়গায় মাথা উচু করে চলে,কাউকে পরোয়া করে না,নিজে যা বলে তাই, সে কিনা ছেঁছ’ড়ার মতো পুষ্পর পিছনে পড়ে আছে!সত্যি ভাইয়া পুষ্পকে ভীষণ রকম ভালোবাসে না হয় জীবনে ও এসব তার দ্বারা সম্ভব হতো না।রাগের পাহাড় তার ভাই,সেখানে পুষ্পিতা তাকে রাগানোর মতো কথা ছাড়া কিছুই বলে না কতো ধৈর্য থাকলে এগুলো সহ্য করছে তার ভাই!
পুষ্পিতা,তিশা আবার এগিয়ে গেলো সামনে,পুষ্পিতার বাবা এসে মেয়ে আর তার বান্ধবীদের সাথে কথা বললো।
নিশাদ হেসে বললো–,,আংকেল জানেন তো,আজকে ভয়েস স্কুলের পূর্ব দিকে একটা সমাবেশ হবে।ঝা’মেলাও হতে পারে,শুনলাম আপনার মেয়েরা সেখানে যাচ্ছে যাওয়া কি ঠিক হবে বলেন?আমি ছোট মানুষ তাদের বললেও তো শুনবে না!
পুষ্পিতা রাগী চোখে তাকালো কি ব’দ লোক ভাবা যায়?এমন একটা কথা তুললো বাবা তো ভুলেও এখন যেতে দিবে না।পুষ্পিতার দিকে তাকিয়ে চোখ মার’লো রাহাদ!পুষ্পিতা থতমত খেয়ে গেলো, এলোমেলো দৃষ্টি নামিয়ে ফেললো।
পুষ্পিতার বাবা বলে উঠলো—,,মা বাড়ি চলে যাও,বাবা সাথে করে নিয়ে যাবো সবাইকে একদিন।
পুষ্পিতা মাথা নেড়ে সম্মতি দিলো।সবাই মার্কেট ছেড়ে বের হয়ে গেলো।গেইটের কাছে আসতেই রাহাদ পুষ্পিতার এক হাত চেপে ধরলো।পুষ্পিতা ঝা”মটা মে’রে হাত ছাড়িয়ে কিছু বলতে যাবে, রাহাদ কন্ঠ খাদে নামিয়ে বললো—,,শশী জান!
পুষ্প বলে উঠলো –,,নাউজুবিল্লাহ! এই আপনি কোন ধাতু দিয়ে তৈরি বলুন তো।অদ্ভুত বেশ”রম লোক।আমার সামনে আসতে মানা করেছি না আপনাকে কেনো এসেছেন আবার।
—,,চলো বিয়ে করে ফেলি তোমাকে দেখলেই আমার কেমন প্রেম প্রেম পায়,গভীর প্রেম জান!তুমি এততো কিউট এততো কিউট মন চায় তো,,,
রাহাদ নিজের দু হাত পুষ্পিতার গালের দিকে এগিয়ে আনতে আনতে কথা টা বলছিলো,পুষ্পিতা দ্রুত সরে গেলো,কি অসভ্য এই ছেলে।
পুষ্পিতা লম্বা শ্বাস টেনে হাঁটা ধরলো।এ ছেলেকে কিছু বলেও লাভ নাই।পাপড়ি সামনেই দাড়িয়ে ছিলো,পুষ্পিতা এগিয়ে যেতেই বললো–,,কি বললো ছেলেটা?
–,,চলো বিয়ে করে ফেলি প্রেম প্রেম পাচ্ছে!
পাপড়ি পুষ্পকে ঠেস মে’রে বললো–,,হায় হায় কিয়া বাত হে।
পুষ্পিতা বিরক্ত হয়ে অটোতে উঠে বসলো।পাপড়ি বলছে আর গাড়িতে উঠছে এতো রাগ করিস কেনো ছেলেটা তো খারা’প না!
পুষ্পিতা রেগে বললো–,,তাহলে তুই গিয়ে গলায় ঝুলে পড়। দেখ প্রথমত এরকম উ’গ্র ছেলে আমার পছন্দ না।আমাদের বংশের কেউই আব্বু বা চাচ্চুরা কেউই এরকম ছেলেকে পছন্দ করবে না।যদি ওকে আমার পছন্দ হতো তাহলে একটা কথা ছিলো,মানলাম ছেলেটা গুড লুকিং তার মানে এই না প্রেম ভালোবাসার মতো ফিলিংস চলে আসবে,এগুলা জোর করে হয় না।তার উপর ছেলেদের অবস্থান আর আমাদের টা দেখ,মা সব সময় বলে যে আম ধরে চিপতে পারবে না সে আম ছুঁয়ে ও দেখবে না!ওদের সাথে আমাদের যায় না আমরা সাধারণ একটা পরিবারের মানুষ এতো বড়লোকদের সাথে কোনো অংশেই মানানসই না,এখন ওনার আমাকে পছন্দ এমনও তো হতে পারে খনিকের মোহ কয়েকদিন পর কে’টে যাবে।ওনার বাবা মা যে পছন্দ করবে না এটা তো নিশ্চিত থাক,বড়লোক পরিবারের মানুষ জন তো মধ্যবিত্তদের গোনায় ও ধরে না।যদি আমার পছন্দ হতোও তার পরও আমি জড়াতাম না,আমার মা বাবার সম্মান আমার সাথে জড়িয়ে, আমি তাদের সম্মান নষ্ট করতে পারবো না।বাবার কতো ইচ্ছে স্বপ্ন আমাকে নিয়ে জানিস, আমি চাই না একটা বোকামির জন্য আমার বাবার সব স্বপ্ন ভেস্তে যাক!
পাপড়ি বললো–,,নিশাদের কথা বাদ দে,রাহাদ ভাইয়া?
পুষ্পিতা কিছু সময় চুপ থেকে বললো–,,আমার কেনো যেনো মনে হয় রাহাদ আর নিশাদ একই ব্যক্তি!
পাপড়ি শুকনো ঢোক গিললো,পরে বললো–,,এমন কেনো মনে হলো হঠাৎ?
–,,তোর কাছে ছবি আছে না?দে তো দেখবো রাহাদ কে!
পাপড়ি আমতা আমতা করে বললো–,,ছ….বি?আমি কোথায় পাবো,তুই দেখ ফেইসবুকে পেয়ে যেতেও পারিস!
পাপড়ি ভুলেও এখন ফাঁসতে চায় না যা একটা বান্ধবী না এখানেই মা’রা শুরু করে দিবে সব জানতে পারলে!
পুষ্পিতা নাক মুখ কুঁচকে বললো–,,কি দিন কাল আসলো,এখন একটা গু’ন্ডাকে দেখার জন্য সময় ব্যয় করতে হবে!এর থেকে ভালো আমি তিন বেলা মরিচ ভর্তা দিয়ে ভাত খাবো।
পাপড়ি ফা’টা চোখে তাকালো,যে মেয়ে এক চিমটি মরিচ খেতে পারে না সে কিনা খাবে মরিচের ভর্তা!বুদ্ধি দাও মাবুদ,এদের বুঝ দান করো।
———
চোখের পলকেই কেটে গেলো মাস,অনেকটা সময়,এইতো কয়েকদিন আগেই পুষ্পিতারা পরীক্ষা দিয়েছে,এখন আবার টিচার রা বলতে শুরু করেছে ইয়ার চেঞ্জ পরীক্ষা নাকি চলে এসেছে,কলেজ লাইফটা যেনো রকেটের গতিতে কেটে যাচ্ছে।সময় পেরিয়ে শীতের শেষ,বেশ শীত পড়ে ইদানীং! গরমের সাথে তাল মিলিয়ে,শীত টা ও যেনো বেশিই পড়ে,কেউই দমবার পাত্র নয়!
পুষ্পিতার জন্মদিনে উল্টো পাল্টা শুভেচ্ছা জানিয়েছে,
পাপড়ি,জেসি,তিশা।তিশা পূর্বে প্রতিটা ক্লাস করলেও এখন পুষ্পিতাদের জন্য মিস দেওয়া হয়।তিশা হতাশ হয়ে ভাবে কয়েকদিন পরই পরীক্ষা এরা পাশ করবে তো আদো?যদিও সে ভাইয়ের কথায় বন্ধুত্ব করতে এসেছে,কিন্তু এতো দিন ঠিক বুঝে গেছে এরা সত্যিই বন্ধু হওয়ার যোগ্য, ভালো মনের অধিকারী মানুষ।
পুষ্পিতা তিন দিন হলো কোথাও বের হচ্ছে না,কারো সাথে যোগাযোগ ও করছে না।মেয়েটার জন্মদিনে বান্ধবীরা এতো ফাল’তু মার্কা শুভেচ্ছা জানিয়েছে তাও কিছু বললো না?গ্রুপে কথা বলছিলো তিনজন পাপড়ি,তিশা,জেসি চিন্তিত তিনজনই।
জেসি বলে উঠলো —,,সকালেই মহিলার বাড়ি গিয়ে হাম’লা দিবো আমি,কি হয়েছে একবার বলার সময় হলো না?আর এই পাপড় ফাপড় বাড়ির কাছে বসে কি ডিম পারিস?একবার গিয়ে খোঁজ নিতে পারলি না!
পাপড়ি মুখ বাঁকিয়ে বললো–,,রাগ করিস কেনো, আমি তো এখন মামার বাড়িতে চার দিন ধরে,তোরা তো জানিস,কাল বাড়ি যাবো!
জেসি বললো–,,মামা বাড়ি কাছে পেয়ে বার বার চলে যাস কেন।এখনই যেতে হবে কেনো তোর,না জানি মেয়েটার কিছু হলো কিনা!
তিশা বললো–,, কিছু হবে না,ভালো চিন্তা কর।এখন ঘুমা সব সকালে দেখা হচ্ছে।
তিশা মোবাইল টা রেখে বিছানায় বসা ভাইয়ের দিক তাকালো,রাগে গজগজ করতে করতে রাহাদ আবার বললো–,,মেয়েটার কানের নিচে একটা দিতে পারলে শান্তি লাগতো আমার।আমাকে মারা’র প্ল্যান করেছে পুঁচকে টা।তুলে ধরে দিবো আছাড়, হুটহাট কাউকে কিছু না বলে লাপাত্তা হওয়ার সখ ঘুচিয়ে দিবো।বেয়া’দব ম্যানা”রলেস কোথাকার!
রাহাদ গটগট করে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে,তিশা হতাশ শ্বাস ছাড়লো,তার ভাইটা তো রাগী ছিলোই এখন যেনো একটু বেশিই রাগে।
পুষ্পিতার সাথে কি হয়েছে কে জানে,মাস খানেক আগে পুষ্পিতা ভাইয়াকে ডেকে কিছু একটা বলেছিলো তার পর থেকে ভাইয়া পুষ্পর বাড়ির আশেপাশে এমন কি রাস্তায় ও কোথাও ওর সাথে কথা বলে না।ভুলেও দেখা হয়ে গেলে অপরিচিতদের মতো থাকে।কিন্তু পুষ্প, সেও আগের মতোই সে বললো তেমন কিছুই হয়নি তাদের মধ্যে ভাইয়া নাকি নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে,তাই এখন বিরক্ত করে না।পুষ্পিতার ধারনা যে সম্পূর্ণ ভুল তা শুধু তিশা,তিহান,আর রাহাদের মা জানে,ছেলেটা নিয়মের বাহিরে সব কিছু করে,গুছানো জীবন টা নিজ ইচ্ছেতে এলোমেলো করে দিয়েছে।
একবার তো মাকে উদাসীন হয়ে বলছিলো–,,আমি অন্ধকারে পা বাড়াচ্ছি মা শশী নামক চাঁদ যদি না উঠে, এ অন্ধকার জীবন কখনো আলো ফুটবে না।সে এসে গুছিয়ে না দিলে রাহাদ আর কোনো দিন নিজেকে গুছিয়ে নিবে না,এটাই আমার প্রতি”জ্ঞা, আমার বিশ্বাস আমার শশী ঠিক একদিন আমার জীবনে ফিরবে, তাকে তো ফিরতে হবেই মা!
শীত কালে রাত এগারোটা মানেই গভীর রাত,তা যদি গ্রাম হয় তো বলার অপেক্ষা রাখে না।গায়ে কেবল একটা পাতলা শার্ট জড়িয়েই বেরিয়ে পড়লো রাহাদ,উদ্দেশ্যে প্রেয়সী কে একবার দেখা,কতো দিন মেয়েটাকে চোখের দেখা দেখে না রাহাদ!মেয়েটা কেনো যে জে’দ করে এতো,শর্ত দিলো এমন শর্ত কেনো?যেখানে প্রিয়তমাকে দেখারও অধিকার থাকবে না।আজ যে নিয়ম ভাঙ্গবেই রাহাদ,মেয়েটার কি হলো না জেনে শান্তি হচ্ছে না প্রেমিক মনের।মেয়েটা অদৃশ্য এক শক্ত বাঁধনে আটকে রেখে নিজে মুক্ত ভাবে উড়ে বেড়াচ্ছে এ কেমন অবিচার?
পুষ্পিতার মোবাইল টা বেজে বেজে কে’টে যাচ্ছে বার বার।মেয়েটা ঔষধ খেয়ে ঘুম দিয়েছে কিছুক্ষন আগে, তিন দিন ধরে জ্বরের তোপে নাজেহাল অবস্থা তার।
ঘুমে টলমল করা চোখে তাকালো একবার,অচেনা নাম্বার দেখে আবার চোখ বুঝলো।রাহাদ হতাশ হয়ে ম্যাসেজ পাঠালো,যদি একবারের জন্য ও বারান্দায় না আসো তো সারা রাত এখানেই দাড়িয়ে থাকবো!ঠান্ডায় জমে ম’রে যাবো দায় ভার সব তোমার হবে।
পুষ্পিতার কানে টুং করে বাজা শব্দ টা বেশ প্রভাব পড়লো,ঘুম কিছুটা কে’টেছে ফোনটা আলগোছে হাতে তুলে নিলো,হুম’কি মূলক বার্তা একজন ছাড়া কেউই পাঠাতে পারে না। পুষ্পিতা জেনেই গেছে রাহাদ,নিশাদ দুজনই একই ব্যক্তি তবুও সে চুপ আছে না বুঝার ভান করেছে, সে ও দেখতে চায় কতোদিন লুকোচুরি করতে পারে ছেলেটা।
পুষ্পিতা আলতো হাতে বারান্দার দরজা টা খুললো,বারান্দায় জ্বলছে সাদা বৈদ্যুতিক বাতিটা।
পুষ্পিতার এলোমেলো চুলগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কপালে গলায় ঘাড়ে।ওড়নাটা গায়ে কোনো রকম জড়ানো!
চলবে,,,,,
#জোছনায়_ঘর_তোর_আমার
#পর্ব৫(শেষ অংশ)
#মহুয়া_আমরিন_বিন্দু
কনকনে ঠান্ডায় শীতল শ্রোত বয়ে গেলো পুষ্পিতার ছোট্টখাট্টো দেহে।এলোমেলো চুলগুলো কানের পাশে গুঁজে দিতে ব্যস্ত হলো যেনো,মস্তিষ্ক আজ ভুলে গেলো এলোকেশে সে কোনো এক পুরুষের সামনে দাড়িয়ে যার সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই।নেই কোনো বন্ধন তবুও কোন এক অদৃশ্য মায়া টেনে আনলো এই গা হীম করা শীতে তাকে বারান্দায়?কেনোই বা আসলো?কেউ তো জোর করেনি,কেনো পুষ্পিতার অবচেতন মন সারা দিলো রাহাদ নামক অভদ্র ছেলেটার ডাকে,যদি কেউ দেখে ফেলে এই ভয়টাও কেনো আজ উবে গেলো?কিসের এতো টানাপোড়ন যার জন্য আসতেই হলো পুষ্পিতার!
মিলবে কি এই অদ্ভুত অনুভূতি নামক প্রহেলিকার উত্তর? করা হবে কি কোনো দিন এই অনুভূতি নামক ফোয়ারার নামকরণ!
পুষ্পিতার ফোলে ফেঁপে উঠা চোখ দুটো আজ বড্ড মায়াবী লাগছে রাহাদের কাছে,মেয়েটাকে দেখে তার অশান্ত মন শান্ত হলো,ভিতর ভিতর খুশিরা টগব”গিয়ে ফুটলো যেনো!
কুয়াশা ঘেরা এই রাতে তার মতো কাঙ্গালির ঘরে চাঁদ নিজে এসে ধরা দিলো,আর কি চায় সে জীবনে?এতোটুকুতে কি সন্তুষ্ট হওয়া যায় না?তবে ভালোবাসায় যেনো সন্তুষ্টি নামক শব্দটা বেমানান,ভালোবাসার কেনো সীমারেখা থাকে না,ভালোবাসা বাড়ে, সময়ের সাথে সাথে তা তাল মিলিয়ে ছড়িয়ে যায় বহুদূরে,কোনো একসময় মানুষ জানতেই পারে না কেনো ভালোবাসলো?কেনো এতো এতো ভালোবাসার পরও মনে হয় কোথায় যেনো কিছু কম রয়ে গেলো!প্রিয় মানুষটার জন্য সব কিছু করে ফেললেও মনে হয়,এই রে কম হয়ে গেলো বুঝি!
পুষ্পিতা কাঁপা কন্ঠে বললো–,,এতো রাতে, এই শীতের মধ্যে কেনো এসেছেন নিশাদ?এ কেমন ছেলেমানুষী!
রাহাদের শীতল কন্ঠস্বর–,,তোমাকে আজ বড্ড ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে করছে পুষ্প কানন!
পুষ্পিতা কেঁপে উঠলো যেনো,কি আছে এই লোকের কন্ঠে?কি মিশিয়ে কথা বলে?কেনো এতো এতো অপছন্দতার মাঝেও তার কথা গুলো আকৃষ্ট করে পুষ্পিতা কে?
–,,পাগ’লামো কেনো করছেন?চলে যান প্লিজ,আপনি অসুস্থ হয়ে পড়বেন।এভাবে রাতবিরেতে আসা কিন্তু অশোভনীয়!
–,,তোমাকে দেখার তৃষ্ণা কবে মিটবে বলতে পারো?কেনো দাও এতো মর’ণ যন্ত্র”ণা শশী!একটু ভালোবাসলে কি খুব বেশি ক্ষ’তি হয়ে যাবে জান?
রাহাদের কন্ঠে জড়ানো অসহায়ত্ব! মানুষ বুঝি ভালোবাসার মানুষের কাছে বড্ড অসহায় হয়?এভাবেও বুঝি ভালোবাসা যায়,এতোটা আকুল কেনো হবে ছেলেটা?যা পুষ্পিতার শক্ত আবরণে আবৃত হৃদয় কেও ছুঁয়ে যায়!
—,,বাহিরে অনেক ঠান্ডা নিশাদ।প্লিজ চলে যান,এরকম একটা পাতলা শার্ট পড়ে কেউ বের হয় নাকি?আপনার কি বুদ্ধিশুদ্ধি কিছু হবে না?ভালো হবেন কবে বলুন তো?
–,,তুমি আমার হয়ে যাও!পৃথিবীর শুদ্ধতম পুরুষ হয়ে দেখাবো তোমায়,কোনো অভিযোগের সুযোগ পাবে না পুষ্প কানন!
–,,এতোটা বেপ’রোয়া কেনো হচ্ছেন?নিজের আত্মসম্মান বিস’র্জন কেনো দিচ্ছেন?আপনি কেনো বুঝছেন না আমি আর আপনি একসাথে কোনো ভাবেই সম্ভব না!
—,,ভালোবাসার মানুষের কাছে এতো সম্মান নিয়ে বসে থেকে কি করবো।আমি জানি আমি তার হলে সে আমাকে নিজের সম্মান বানাবে,তার মাথার তাজ করে রাখবে,এখন না হয় সম্মান নাই পেলাম।
প্রেয়সীর মাথার তাজ হওয়ার থেকে বড় সম্মান কি হতে পারে বলো?
পুষ্পিতা হার মানলো যেনো,তপ্ত শ্বাস ছেড়ে বারান্দা ছাড়ার জন্য প্রস্তুত হলো।রাহাদ পিছু ডেকে বললো–,,এরকম হুটহাট করে উদাও হলে এর পরের বার এসে তুলে নিয়ে যাবো বলে রাখলাম!
পুষ্পিতা ভ্রু কুঁচকে তাকালো,রাহাদ হেসে বললো–,,এখন বিয়ে করতে কোনো বাঁধা নেই, বিবাহযোগ্যা হয়েছেন পুষ্প কানন তার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
“শুভ জন্মদিন আমার ভালোবাসা”!
পুষ্পিতা বিমুঢ় হয়ে তাকিয়ে রইলো,তার সত্যি মনে ছিলো না তার জন্মদিন,অসুস্থতার তোপে এতো কিছু মাথা থেকে বেরিয়ে গেছে কখন কে জানে!এই পাগ’লটা রাতের বেলা জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে এসেছে?হায় আল্লাহ!মোবাইলে শুধু হুম’কি দিতেই পারে ছোট করে শুভ জন্মদিন লিখে দিলেই পারতো বাড়ি বয়ে কাহিনি কেনো করতে হবে! অদ্ভুত মানব।
–,,ভালোবেসে দিতে চাই ভালোবাসার উপহার, জন্মদিনের উপহার ও তোলা থাক!
পুষ্পিতা কি বলবে বুঝলো না,কখন জানি বাবা মা উঠে চলে আসে,আর তার ভাইটা কি কম বাদর নাকি একবার যদি দেখেছে তো ব্লাকমে”ইল করতে করতে জীবন নাই বানাইয়া ফেলবে!
পুষ্পিতা বলে উঠলো–,,হয়েছে এবার যান।কখন থেকে দাঁড়িয়ে আছি,পা ব্যাথা করছে!
রাহাদের কন্ঠস্বর গম্ভীর শোনালো–,,কালকের মধ্যে যেনো সুস্থ সবল দেখতে পাই!তোমার সাহস তো কম না মেয়ে,আমার জানটাকে অসুস্থ বানিয়ে বিছানায় ফেলে রেখেছো।যাও গিয়ে চুপচাপ শুয়ে পড়ো, বেশি রাত জাগবে না, পড়াশোনা যেনো পৃথিবীতে কেউ আর করে না, নিশাচর পাখি না হয়ে আমার মনের তোতা পাখি হলেও তো পারো!
পুষ্পিতা রাগী চোখে তাকিয়ে চাপা ধমকের সুরে বলে–,, চুপচাপ যান এখান থেকে,না হয় কিন্তু বাবাকে ডাকবো আমি ব’দ লোক!
পুষ্পিতা দরজা আটকে গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো।বেশ কিছুক্ষণ এভাবেই পার হলো।পুষ্পিতার ঘুম আসছে না,ছেলেটা এই ঠান্ডায় এখনো দাড়িয়ে নেই তো,একবার গিয়ে কি দেখা উচিত?
বিছানা থেকে উঠার জন্য উদ্যোগ নিতেই মোবাইলে টুং করে শব্দ হলো
–,,বাহিরে গিয়ে দেখার দরকার নেই,আমি বাড়ি চলে যাচ্ছি, চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়ো!
পুষ্পিতা চোখ বড় বড় করে তাকালো,মন টন পড়তে পারে নাকি?নাকি রাহাদের বেশে কোনো জি’ন এসেছে।পুষ্পিতা দোয়া পড়ে ফু মারলো, কি ভয়া’নক কান্ড বাবা, কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়লো!
———
সকাল হয়েছে পুষ্পিতা কে কুয়াশার মধ্যে যেতে দেয়নি শেফালী বেগম।পরীক্ষার আগ মুহুর্তে মেয়েটার অসুস্থ হওয়া যেনো লাগবেই।
শেফালী বেগম বের হলেন সারে আটটায় স্কুলে আজ কাজ আছে কিছু।তিনি বেরিয়ে যেতেই মিনিট পাঁচেক পর বাড়িতে হুড়োহুড়ি করে ঢুকলো তিন বান্ধবী।
পুষ্পিতা ভেবেছে আজও যাবে না একেবারে শনিবার চলে যাবে!
পুষ্পিতা বিছানায় বসেছে সকালে বারান্দায় পাওয়া গিফট বক্স টা খুলতে,এখন কেউ নেই শান্তি মতো কাজটা করা যাবে!
কলিং বেল বাজায় বিরক্ত হলো যেনো।উঠে গিয়ে হা হয়ে গেলো তিনজন রাগী চোখে তাকিয়ে পুষ্পিতার দিকে!
পুষ্পিতা ফিচলে হেসে দরজা খুলে দিলো,তার পর দিলো ভো দৌড়।পাপড়ি দরজা আটকে দিল তিন জন আসলো পুষ্পিতার ঘরে।
এসেই ক্লাস নেওয়া শুরু যেনো, প্রশ্ন করে করে তুলতুলে পরোটা বানিয়ে ছাড়লো সকাল সকাল!
খাটের উপর ছোট সাইজের তিনটা গিফট বক্স দেখে আগ্রহ নিয়ে তিশা বললো–,,গিফট ও পেয়ে গেছিস?তা কে দিলো?
জেসি টেনে নিয়ে বললো–,,যে খুশি দেক দেখি ভিতরে কি আছে,এই পাপড় কাঁ’চি টা দে তো।
পুষ্পিতা দাঁত কেলিয়ে বললো–,,কে আবার দিবে,ওই লাউয়ের সবজি টা মাঝরাতে এসেছিলো ওইটার কান্ডই হবে এসব!
তিশা ভ্রু কুঁচকে বললো–,,কে?
–,,তোর ভাই!
তিশা চোখ বড় বড় করে বললো–,,আমার ভাইয়া?
—,,নিশাদ তোর ভাই না?
তিশা বুঝদারের মতো মাথা নাড়লো।জেসি একটা বক্স খুলে দেখলো,জ্বলমলে একটা চাঁদ উঠিয়ে এনে দেখলো লকেট সাথে চেইন।নিচে একটা চিরকুট, যাতে মোটা অক্ষরর লিখা—,,পড়বে না আমি পড়িয়ে দিবো!
অন্য বক্স থেকে বের হলো একটা রিং তার নিচেও চিরকুট –,,আঙুলে ছোঁয়া ও লাগাবে না,আমি নিজ হাতে তোমার অনামিকায় পড়াতে চাই শশী!
তৃতীয় বক্সটা পুষ্পিতা কে ধরিয়ে দিলো পাপড়ি বললো–,,তুই খোল বইন,কখন জানি নিশাদ ভাই এসে বলে এই যে শালিকারা গিফটে হাত দিয়েছো কেনো?দিবো হাত মুচড়ে!
পুষ্পিতা বিরক্তি নিয়ে বক্স টা খুললো-,,বক্স থেকে বেরিয়ে এলো স্প্রীং যুক্ত একটা বিড়ালের মাথা যার হাতে ছোট্ট ফুল।বিড়াল টা বলছে –,,ভালোবাসি পুষ্প কানন, ভালোবাসি পুষ্প কানন…….!
পুষ্পিতা এবার হো হো করে হেসে উঠলো। সত্যি মানুষ কতোটা পা’গল হলে এরকম গিফট আনে!
পুষ্পিতা হাসি থামিয়ে তিশার দিক তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো–,,তোর এই ভাই কি ইন্জিনিয়ারিং এ পড়ে?
তিশা বললো–,,হুম!কেনো জিজ্ঞেস করলি হঠাৎ?
–,,গিফট দেখে!
বলে আবার হাসলো পুষ্পিতা।
ওইদিন আর কারোই কলেজে যাওয়া হলো না,হাসি আড্ডায় সময় পাড় হয়ে গেলো ওদের।
———
অনেকদিন পর আজ পুষ্পিতার বোন আসবে বাড়িতে সাথে আসবে পুঁচকে রাঈমা!পুষ্পিতার বোনের মেয়ে,পুষ্পিতার বোন ঈশিতার বিয়ে হয়েছে,স্বামীর চাকরির সুবাদে শহরেরই থাকা হয়।রাঈমা ছোট্ট থাকতে এসেছিলো একবার, এখন আসবে কতোদিন পর।শেফালী বেগম ছুটি নিয়েছেন তিনদিন নাতনির সাথে মেয়ের সাথে কিছু সময় না কাটালে হয়,তার উপর মেয়ের জামাই আসবে,
রান্নাবান্নার একটা আয়োজন আছে।
পুষ্পিতা কখন থেকে রাস্তায় দাড়িয়ে, পড়ন্ত বিকেল পুষ্পিতা রাস্তায় দাড়িয়ে কথা বলছে তার চাচাতো বোন সীমার সাথে।পুষ্পিতার দাদী একবার ভিতর থেকে ডেকে বললো–,,কিরে পুষ্প ঈশু আইছেনি?
পুষ্পিতা বললো–,,না দাদী মনে হয় আইসা পড়বো তুমি ঘরে গিয়া বসো।
সীমা চলে গেলো উঠোনে বাকিদের সাথে খেলতে। পুষ্পিতা রাস্তার অপর পাশে দাড়িয়ে হাত ঝুলিয়ে হাঁটছে, আবার আগের জায়গায় আসছে,দূর থেকে কয়েকটা মেয়েকে হেঁটে আসতে দেখলো,পোশাক দেখে মনে হলো শহরের ম’র্ডান কাল’চারে বড় হওয়া ছেলে মেয়ে!
তিনটা পরিচিত মুখের ও দেখা মিললো তিশা,সানজিদা,
রাহাদ!
পুষ্পিতা দৃষ্টি নামিয়ে অন্য পাশ ফিরলো,এক পাশ হয়ে দাড়িয়ে পড়লো।
তিশার কাজিন হবে হয়তো সব গুলো সমবয়সী মনে হলো দেখে।সব গুলো মেয়ের মাঝে এই একটা মাত্ররো ছেলে।
কপাল কুঁচকে ফেললো পুষ্পিতা।মুখে বললো বিরক্তিকর!
পুষ্পিতার সামনে থেকে যাওয়ার সময় একজন ইচ্ছাকৃত পুষ্পিতাকে ধাক্কা দেয় পুষ্পিতা কিছুই বললো না চুপচাপ আরো একটু চেপে দাড়ালো,পর পর আরো একজন একই কাজ করলো।পুষ্পিতা এবার চোখ তুলে তাকালো।রাহাদ সবার পেছনে ফোন কানে গুঁজে কথা বলছে।তিশা পুষ্পিতার দিক তাকায়,তিশা জানে পুষ্পিতা রেগে গেলে এখন বোন গুলার তবলা বাজিয়ে দিবে!
পুষ্পিতা কে তাকাতে দেখে মেয়েটা বলে উঠলো–,,এই মেয়ে ধাক্কা দিলে কেনো?কোনো কমন সে’ন্স নেই?গ্রামের ক্ষে’ত কোথাকার,শহরের সুন্দর স্মার্ট মেয়ে দেখলেই গা ঘেঁষতে মন চায়?
পুষ্পিতা রাগ যেনো সপ্তম আকাশে উঠলো,মেয়েটার এক হাত হুট করে চেপে ধরলো রাগে হিসহিসিয়ে বললো–,,তোর সাথে কি আমার পিরিতের সম্পর্ক মাইয়্যা যে গা ঘেঁষাঘেঁষি করমু!এক চ’ড়ে চাপার দাঁত যদি না ভাঙ্গছি তো দেখিস। রাস্তা দিয়া যাবি যা, এতো লাফালাফি করোস কেন?শরীলে কি কেউ মরিচ বাটা দিয়া দিছে নাকি?ভদ্র ভাবে থাকতে না পারলে রাস্তায় বের হোস কেন?বাপ মা কোনো শিক্ষা দেয় নাই?বেয়া’দব কোথাকার!
তিশা মিনতি করে বললো–,,ছেড়ে দে দোস্ত!
রাহাদ এগিয়ে এসে বললো–,,পুষ্প ছাড়ো ওকে!কি করেছে এমন করছো কেনো?
পুষ্পিতা রেগে বললো–,,ওই একদম চুপ থাকেন আপনি!কি করছে না আমার মাথা করছে,এই কার্টুন গুলা সাথে করে নিয়ে রাস্তায় বের হয়েছেন কেনো?যা নয় তাই করে বেড়ায়,মানুষ কে মানুষ মনে করতে বলবেন এই শহুরে গা’ভী গুলাকে না হয় না পরের বার এই হাত ভেঙ্গে দিবো আমি!
পুষ্পিতা হাত ঝাড়া মে’রে ফেলে দিলো রাগে নাক মুখ লাল হয়ে এসেছে ইতিমধ্যে তিশা মিন মিন করে নিজের ভাইকে সব বলতেই,রাহাদ চেঁচিয়ে বলে উঠলো–,,রাখি,ফারহানা স্যরি বলো পুষ্পিতা কে!
রাখি তো কেঁদে দিয়েছে হাত না ধরতেই যেনো এমন ভাব করছে কেউ মে’রেছে।সে কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বললো–,,স্যরি।
ফারহানা শক্ত চোখে তাকালো পুষ্পিতার দিকে পরে স্যরি বললো নিচু স্বরে!
সবাইকে সামনে আগাতে বলেই রাহাদ পুষ্পর হাত চেপে ধরলো,পুষ্পিতা চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বললো–,,রাস্তার উপর হাত ধরেছেন কেনো?আপনি তো চরম অসভ্য। হাত ছাড়ুন আমার ভালো হবে না বলছি নিশাদ আপনার কোনো অধিকার নেই আমার হাত ধরার!
রাহাদ হাত ছেড়ে নিজের চুল টেনে ধরে রাগ নিয়ন্ত্রণ করলো পরে হেসে বললো–,,অধিকার অধিকার অধিকার?তাই তো,অপেক্ষা করো ওইটা নিয়েই আসবো,শুধু কয়েকটা দিনের অপেক্ষা!
পুষ্পিতা বিরক্ত হলো, রাহাদ ফ্লাইং কিস ছুঁড়লো!যা দুূর থেকে দেখে নিলো ফারহানা,মুহুর্তেই সে মোবাইল উচিয়ে কাউকে কিছু একটা লিখে পাঠালো।
পুষ্পিতা সামনে তাকিয়ে হঠাৎ হেসে উঠলো,এক দৌড়ে গেলো সেদিকে,একটা প্রাইভেট কার এসে থামলো রাহাদ পকেটে হাত গুঁজে দেখতে থাকলো মেয়েটার কান্ড।
গাড়ির দরজা খুলে যেই না কিছু বলতে যাবে একটা ছেলে বের হলো যার ফলস্বরূপ পুষ্পিতার মাথা ঠুকে গেলো আগত ব্যক্তির মাথায়!যা দেখে মুহুর্তেই কপালের শিরা ফুলে উঠলো রাহাদের।পুষ্পিতা মাথা ঢলে সরে দাড়ালো ছেলেটা ভিতর থেকে বেরিয়ে এসে বললো–,,স্যরি স্যরি পুষ্প!
পুষ্পিতা তাকিয়ে দেখলো তার আপুর দেবর রতন!
পুষ্পিতা ছোট করে বললো–,, ইট’স ওকে!
অপর পাশ থেকে ঈশিতা নামতেই পুষ্পিতা এগিয়ে গিয়ে কোলে থাকা রাঈমা কে নিজের কাছে নিলো,মুচকি হেসে বলে উঠলো–,,মামনি,কেমন আছে আমার মা টা?
পর পর চুমু খেলো বাচ্চাটার মুখ জুড়ে।রাহাদের যেনো হিং”সায় জ্বলে পু’ড়ে গেলো ভিতরটা তার শশী কেনো অন্য কাউকে চুমু দিবে?হোক সে মেয়ে বা বাচ্চা কিছুতেই মানতে পারবে না এসব।কিছু দূর ঘুরে আবার ফিরে এসেছে তিশারা।তিশা কে ডেকে রাহাদ বললো–,,তোর বান্ধবী কে গিয়ে রুমাল টা দিবি আর বলবি,কপাল যেনো ঘষে ঘষে পরিষ্কার করে!
তিশা তাই করলো এই মুহুর্তে ভাইয়ের কথা না শোনা মানে ধম’ক খাওয়া।দেখেই বুঝা যাচ্ছে রেগে আছে।
পুষ্পিতা বাড়িতে ঢুকার আগে তিশা ওর হাত টেনে থামালো পুষ্পিতা তখন রতনের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলো বিরক্ত হয়ে থামানো তে যেনো ভালোই লাগলো তার।
পুষ্পিতা বললো–,, ভাইয়া আপনি ভিতরে যান আমি ওর সাথে কথা বলে আসতেছি!
তিশা বললো–,,ভাইয়া রেগে আছে,এটার সাথে কথা কম বল না হয় এটাকেও হসপিটালে পাঠিয়ে দিবে!
পুষ্পিতা অসহায় দৃষ্টিতে তাকালো রাহাদের দিকে,ছেলেটা কতোজন কে যে মে’রে ছে আল্লাহ জানে,কেউ তাকালেই মা’রে এখানে তো রতন টা গায়ে পড়া স্বভাবের!
পুষ্পিতা কে তিশা বললো–,,কপাল ঘষে পরিষ্কার করতে বলেছে।কি হলো আবার তোর কপালে?
পুষ্পিতা চিবিয়ে চিবিয়ে বললো–,, কপাল পু,ড়ছে আমার,তোর ভাইয়ের নজর যে পড়লো এর থেকে ভালো আর কি হবে।
পুষ্পিতা ওড়না দিয়ে কপাল মুছে নিলো।
রাহাদ চেঁচিয়ে বললো–,,ওড়নাটা আজকেই চু’লায় নিয়ে জ্বালিয়ে দিবে।না হয় না ওই রতন কে আমি চু’লায় দিয়ে দিবো!
পুষ্পিতা করুন চোখে তাকালো যার অর্থ এমন করবেন না প্লিজ!রাহাদ ঠোঁট কাম’রে হেসে চলে গেলো।পুষ্পিতা হতাশ চিত্তে তাকিয়ে রইলো সেদিকে।
চলবে….