ঝিলমিল রোদ্দুরে পর্ব-২+৩

0
882

#ঝিলমিল_রোদ্দুরে🖤 [পর্ব-০২]
~আফিয়া আফরিন

রোদ্দুর হতবাক হয়ে আশেপাশে তাকাল। কিছু উৎসুক জনগণ এইদিকেই তাকিয়ে রয়েছে। কেউ কেউ আবার একধাপ এগিয়ে আসার চেষ্টা করছে। রোদ্দুর ইশারায় ঝিলমিলকে চোখ রাঙাল। ঝিলমিল সেসব পাত্তা না দিয়ে বলল, ‘শেষবারের মত বলছি হাত ছেড়ে দে, নাইলে কিন্তু কিডন্যাপের দায়ে গণপিটুনি খাবি।’

‘আচ্ছা! তো ঠিক আছে। ডাক দে। আমিও দেখি কার কত বড় সাহস আমার গায়ে হাত দেয়।’
কাউকে ডাক দিতে হলো না। কিছু লোকজন নিজ দায়িত্বে এগিয়ে এলো‌। দু’জনের উদ্দেশ্য বলল, ‘কী সমস্যা আপনাদের?’

ঝিলমিল কিছু বলতে যাবে সেই মুহূর্তে রোদ্দুর বলে উঠল, ‘তেমন কিছু না, আসলে পাগলা গারদ থেকে এই মেয়েটা পালিয়ে চলে এসেছিল। কত জায়গায় যে খোঁজাখুঁজি করেছি, তার ইয়ত্তা নেই। অবশেষে আজকে পেলাম। দেখেন, নিয়ে যাব তাতেও পাগলামী করছে। আপনারা চেহারা দেখেছেন ওর? দেখতে একদম পাগলের মত না? কী বলব দুঃখের কথা! প্রেমিকের কাছ থেকে ধোঁকা খেয়ে বেচারা মেয়েটার এই অবস্থা। যাইহোক, কিছু বলবেন আপনারা?’
যে কয়জন এসেছিল তারা ফের মুখ বেজার করে উল্টো পথে পা বাড়াল। যেচে শখ নাই পাগলের দৌড়ানি খাওয়ার।
ঝিলমিল রোদ্দুরের কথা শুনে এতটাই হতভম্ব হয়ে গেল যে মুখ দিয়ে আর কোনো কথা ফুটল না। শত্রু এভাবেই সারাজীবন তার সাথে শত্রুতা করে এসেছে।
ঝিলমিল বাড়ি ফেরার পর সকলের সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেল। ততক্ষণে বাড়ির অন্যান্য সবাই ‘ও চলে এসেছে। ছোট চাচ্চু এসে রোদ্দুরের পিঠ চাপড়ে বললেন, ‘এই কারণেই তোকে বলি, তুই আমাদের সকল সমস্যার মুশকিল আসান। গতকাল এসে দেখলি, সবাই বিয়ের অনুষ্ঠানে মুখ ভার করে ঘুরে বেড়াচ্ছে; আর আজ’ই সকলের মুখে হাসির ব্যবস্থা করে দিলি। ব্রাভো!’

রোদ্দুর বেশ একটা ভাব নিয়ে কলার নাচিয়ে বলল, ‘ইট’স রোদ্দুরের কামাল! বুঝতে হবে তো।’
ঝিলমিল পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল। রোদ্দুরের কথা শুনে ভেংচি কেটে তার নিজস্ব স্টাইলে সামনের চুলগুলো পেছন দিকে ঝটকা মেরে চলে এলো। তিথি আপুকে দেখতে পেল পথিমধ্যে, ওর ছেলেটা কাঁদছে। সে কোলে নিয়ে এপাশ ওপাশ পায়চারি করছিল। ঝিলমিল সেদিকেই এগিয়ে গেল। তিথি ওকে দেখে বলল, ‘ওকে একটু নে না বোন। আর পারি না। ইদানিং প্রচুর যন্ত্রণা করছে। বোঝালেও কিছু বোঝে না। দুনিয়ার অবুঝ।’

ঝিলমিল মাহিনকে কোলে নিতে নিতে বলল, ‘কেনো? কান্না করছে কেনো?’

‘ওর বাবা বাইরে বেড়িয়েছে, নিয়ে যায় নাই বলে কান্নাকাটি। তোর কাছে রাখা কিছুক্ষণ। কতদিন পর এলাম, এখনও সেভাবে কারো সাথে দেখাই করতে পারলাম না। কে যে কখন কোথায় ব্যস্ত থাকে বুঝি না বাপু। রোদ্দুর কোথায় জানিস? ভাইটাকে দেখলাম ‘ও না একবার।’

রোদ্দুরের কথা শোনা মাত্র ঝিলমিল মুখটা বিষিয়ে গেল। সে বিড়বিড় করে বলল, ‘চুলোয় গেছে তোমাদের রোদ্দুর।’
তিথি অবশ্য সে কথা শুনল না। ছেলেকে ঝিলমিলের কাছে দিয়ে নিশ্চিন্তে চলে গেল। ঝিলমিল’ও নিজের ঘরের উদ্দেশ্য পা বাড়াল।
.
বিকালবেলা ছাদে উঠে রোদ্দুরের দেখা মিলল। সূর্য্যি মামার তাপ আর জলজ্যান্ত রোদ্দুর ভালোই ভেল্কিবাজি দেখাচ্ছে। আজ এই ছেলেটা জনসম্মুখে তাকে পাগল বলেছে, অপমান করেছে। প্রতিশোধ তো একটা নিতেই হবে। ছেড়ে দেওয়া যাবে না কিছুতেই। ঝিলমিল ভাবতে লাগল, কী করা যায়! কীভাবে বেয়াদবটাকে একটা চরম শিক্ষা দেওয়া যায়! কীভাবে ওর তেজ কমানো যায়! কীভাবে শায়েস্তা করা যায়! হঠাৎ একটা বুদ্ধি এলো, কতটুকু যুক্তিসঙ্গত তা ভাবার প্রয়োজন মনে করল না। বাংলা সিনেমার ভিলেনদের মত ‘ইউরেকা ইউরেকা’ করতে করতে নিচে নেমে এলো, সোজা চলে গেল রান্নাঘরে। সেখানে গিয়ে দেখতে পেল বাড়ির মেয়ে বউরা সব এক হয়ে গল্পগুজবে মত্ত। এত বড় বাড়ি, এত জায়গা থাকা সত্ত্বেও এরা কেনো রান্নাঘরে এসে পড়ে আছে ঝিলমিল বুঝতে পারল না। যে কাজে এসেছিল সেটাই হবে না এদের জন্য। অন্য উপায় বের করল। দাদির ঘরে গিয়ে চুপিচুপি ফার্স্ট এইড বক্স থেকে ছোট্ট স্যাভলনের কৌটা’টা বের করল। সেটা নিয়ে রোদ্দুরের ঘরের সামনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিয়ে শয়তানি হাসি হেসে আবারও উপরে উঠল।
রোদ্দুরকে দেখল ফোনে হেসে হেসে কথা বলতে। ঝিলমিল একটু আড়ালে গিয়ে আড়ি পাতার চেষ্টা করল। ওখান থেকে কথাগুলো খুব স্পষ্ট শোনা গেল না। ভাসা ভাসা ভেসে এলো, ‘হ্যাঁ হ্যাঁ, এইতো মাত্র আর কিছুদিন….. আপুর বিয়েটা হোক……এইতো এখনও পাঁচদিন…….তুমি পারবে না আর এক সপ্তাহ ওয়েট করতে?…..ওকে জান……লাভ ইউ!’
ওহ আচ্ছা! তারমানে লাভ কেস। ঝিলমিল বিড়বিড় করে বলল, ‘জান? আরে শয়তান তোর মুখে এত মধুর শব্দ মানায় না রে। তুই যেমন সবসময় ক্যাঁচ ক্যাঁচ করিস, ওটাই ভালো মানায়। হঠাৎ ভালো কথা বললেও মনে হয়, ভূতে ধরেছে নাকি? তোর ওই গার্লফ্রেন্ডের কপাল খারাপ রে, নয়ত তোর মত গাধার সাথে প্রেম করে। হুহ।’
রোদ্দুরের কথা শেষ হতেই ঝিলমিল এগিয়ে গেল। নির্বিকার ভঙ্গিতে বলল, ‘তোর ঘরে মাহিনকে দুষ্টুমি করতে দেখলাম। দেখ গিয়ে কী আবার এলোমেলো করছে।’

রোদ্দুর জিজ্ঞেস করল, ‘কখন?’

‘এইতো মাত্র দেখে এলাম।’
ঝিলমিলের বলতে দেরি হলো, রোদ্দুরের দৌড়াতে এক মুহূর্ত’ও দেরি হলো না। ঝিলমিল হাসি চেপে রাখতে পারল না। গালে হাত দিয়ে অপেক্ষা করতে লাগল কখন নিচ থেকে চিৎকার চেঁচামেচি ভেসে আসবে। ঝিলমিল অধৈর্য হয়ে অপেক্ষা করে যাচ্ছিল, একবার রেলিংয়ে হেলান দিয়ে আরেকবার সিঁড়িতে বসে।
ঝিলমিল নিচে নেমে এলো। রোদ্দুরের ঘরের সামনে গিয়ে দরজা খোলা দেখতে পেল, কিন্তু তাকে কোথাও দেখতে পেল না। ঝিলমিল আরেকটু এগিয়ে যেতেই নিজের ফাঁদে নিজেই পা দিয়ে ফেলল। ধপাস করে পড়তে যাবে সেই মুহূর্তে রোদ্দুর এসে ধরে ফেলল।
ঝিলমিল খেঁকিয়ে উঠল, ‘আমি এখানে পড়ে যাচ্ছিলাম কেনো? তুই কীভাবে এখনও ঠিকঠাক ভাবে হাঁটতে পারছিস?’
রোদ্দুর চোখ পিটপিট করে মৃদু মৃদু হাসতে লাগল। ওর হাসি দেখে ঝিলমিলের শান্তশিষ্ট মেজাজটাই বিগড়ে গেল।
সে পুনরায় জিজ্ঞেস করল, ‘তুই এখানে কি করিস?’

‘আমার ঘরে আশেপাশে আমি থাকব না? ওখান থেকে দেখলাম একটা পাগলী আমার ঘরে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছিল। দিতে দিতে হঠাৎ ধপাস! তাই বাঁচাতে এলাম। এইভাবে হাত পা ভাঙ্গলে চিকিৎসা করতে কত খরচ জানিস? আইডিয়া আছে কোনো? আমার চাচার কতগুলো টাকা খসে যাবে তোর পেছনে। আমি বেঁচে থাকতে আমার বাড়ির মানুষদের এত বড় লোকসান কখনোই হতে দিব না….হতে দিতে পারি না।’

ঝিলমিল দাঁত কিড়মিড় করে বলল, ‘ম’রে যা তুই।’
ওখান থেকে সরে এসে নিজের ঘরে রাগে গজগজ করতে লাগল। কোনো পরিকল্পনা’ই সফল হচ্ছে না, বারবার নিজেই নিজের জালে ফেঁসে যাচ্ছে। নাহ, বড় আপুর বিয়ে শেষ হোক; তারপর যেভাবেই হোক এই বংশের মানুষের আদরে বাঁদর হয়ে যাওয়া একমাত্র বেয়ারা ছেলেটাকে সে টাইড দেবেই।
.
রোদশীর বিয়ের দিনগুলো দ্রুতি ঘনিয়ে এলো। আজ ঘরোয়াভাবেই মেহেদি অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ করা হলো। আগামীকাল গায়ে হলুদের জন্য স্টেজ সাজানোর দায়িত্ব দেওয়া হলো রোদ্দুর এবং মনোয়ার সরকারকে। নিজের ঘরে বা রাখল, তখন রাত একটা বাজে। টেবিলের উপর ফোনটা ভাইব্রেট করছিল। দ্রুত এগিয়ে গেল, দেখল সানিয়া ফোন করছে; একবার নয়, পরপর বেশ কয়েকবার! রোদ্দুর কল ব্যাক করল।
সানিয়া বেশ আহ্লাদী সুরে বলল, ‘জান! কখন থেকে ফোন করছি। ফোন ধরছ না কেনো? আমার বুঝি তোমার জন্য টেনশন হয় না। কি করছিলে? ঘুমিয়ে পড়েছিলে!’

‘না জান। কাল আপুর গায়ে হলুদ। কিছু কাজকর্ম বাকি ছিল, সেসব করলাম।’

‘ওহ আচ্ছা, এখন কি করছ?’

‘মাত্র ঘরে এলাম এবং এই মুহুর্তে আমার জানের সাথে কথা বলছি। তুমি কি করো?’

‘আমিও তাই করছি যা তুমি করছ! খাইছো জান?’

‘ইয়েস…….’ ননস্টপ কথা বলে গেল দু’জন। রোদ্দুরের সাথে সানিয়ার সম্পর্ক একবছরের একটু বেশি। মেয়েটা যথেষ্ট ভালো। রোদ্দুরের একসময় মনে হয়েছিল, প্রেম ভালোবাসা একটা বড়সড় প্যারা। কিন্তু মেয়েটার সাথে ব্রেকআপ করার জন্য যুক্তিসঙ্গত কোনো কারণ খুঁজে পায় নাই, তাই আজ’ও লেগে আছে। কতটুকু ভালোবাসে, জানা নেই! তবে মেয়েটাকে না ভালোবাসার মত কোনো কারণ’ও অবশিষ্ট নেই। এইভাবেই চলছে দু’জন। রোদ্দুরের ইচ্ছে আছে, খুব শীঘ্রই সানিয়াকে নিজের পরিবারের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার। এইদিকে রোদশী আপুর বিয়েটা হয়ে যাক, তারপর সময় সুযোগ বুঝে একদিন সানিয়াকে নিয়ে সকলের সামনে উপস্থিত হবে!
.
সকালে সবাই বসে গল্প করছিল। হঠাৎ দমকা হাওয়ার মত ঝিলমিল উড়ে এসে রোদ্দুরকে বলল, ‘কিরে, তোর গার্লফ্রেন্ডের গল্প করিস নাকি? আমিও শুনব, আমিও শুনব।’

তন্বী আপু অবাক হয়ে বলল, ‘কী রে ভাই! তুই প্রেম করিস?’
রোদ্দুর কিছু বলার আগে ঝিলমিল ওর পিঠে দু’টো চাপড় দিয়ে বলল, ‘তোর গার্লফ্রেন্ডের সাথে দেখা করতে যাব। দেখা করাবি না?’

রোদ্দুর এক ঝটকায় ঝিলমিলের হাতটা সরিয়ে দিল। বিড়বিড় করে বলল, ‘শকুনদের সাথে আমার জানের দেখা করাব না। নজর দিয়ে দিবে।’

ঝিলমিল ফেল সকলের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘মেয়েটা কিন্তু সুন্দর। তোমাদের ভাইয়ের পছন্দ আছে বলতে হবে। দু’জনকে সুন্দর মানিয়েছে।’

তন্বী আপু বলল, ‘তাই নাকি রে রোদ্দুর? আমরা কবে দেখব?’

‘ধুর, ও বানিয়ে বানিয়ে কি না কি বলে সেটা আবার বিশ্বাস করো নাকি? এসব তো ওর বাজে অভ্যাস। ওসব বাদ দাও, যা বলছিলাম আর কী……!’

ঝিলমিল রোদ্দুরের পুরো কথা শেষ হতে দিল না। নিজে বলল, ‘আরে ভাই আমার, কথা ঘুরাচ্ছিস কেনো? আপু তোর গার্লফ্রেন্ডের ছবি দেখতে চেয়েছে। তুই লজ্জা পাচ্ছিস বলে না হয় দেখাবি না। আমাকে বল, আমি দেখাই। আমার তো এখানে লজ্জা পাওয়ার কিছু নাই তাইনা?’
ঠিক ওই সময় তন্বী আপুর ডাক পড়ল ভেতরের ঘরে। সে উঠে চলে গেল।
রোদ্দুর ঝিলমিলের হাত চেপে ধরে বলল, ‘কি শুরু করেছিস তুই?’

‘যা আমার মন চাচ্ছে। কিন্তু মেয়েটা আসলেই সুন্দর।’ নির্বিকার জবাব তার।

‘তুই কীভাবে দেখলি?’

ঝিলমিল বাঁকা হেসে আরেক হাতে ধরে রাখা ছবিটা সামনে নিয়ে এলো। রোদ্দুরকে একনজর দেখিয়েই আবার লুকিয়ে ফেলল। তারপর নিজের ওড়না ঘোরাতে ঘোরাতে বলল, ‘চিনতে পেরেছিস? আবার দেখবি? দেখে কি করবি? রোজ’ই তো দেখিস।’
রোদ্দুরের চেহারার ভাবভঙ্গি নিমিষেই বদলে গেল। সানিয়ার কথা এই মুহুর্তে সে বাড়ির কাউকে জানাতে চায় না। আগে সানিয়ার অনুমতি নিবে, তারপর সব! কিন্তু দশ্যি মেয়েটা কোথা থেকে যেনো ছবিটা পেয়ে গেছে। তাই সে মুখে মিষ্টি হাসি ফুটিয়ে তুলে বলল, ‘লক্ষী মেয়ের মত ছবিটা আমায় দিয়ে দে।’

ঝিলমিল একগাল হেসে বলল, ‘দিব তো। তোর গার্লফ্রেন্ডের ছবি দিয়ে আমি কি করব? একটু পর দিই কেমন! বাড়ির সবাইকে দেখাই গিয়ে।’

রোদ্দুর বাধ্য ছেলের মত বলল, ‘ওমা! তূই কেনো দেখাবি। আমাকে দে, আমি দেখাই সবাইকে।’

‘তুই দেখাবি?’

‘হুঁ।’

‘আচ্ছা? তো দেখিয়ে কি বলবি শুনি?’

‘তুই আগে আমার কাছে দে। ওর ছবি আমি যার তার কাছে রাখি না। ও আমার একমাত্র ভালোবাসার মানুষ। তোর নজর লাগবে, ছবিটা ফেরত দে ঝিলমিল।’

ঝিলমিল বিরক্ত হয়ে বলল, ‘সর তো। কি করছিলি, তাই কর। আমি যাই ভাই, আমারও অনেক কাজ আছে। সবাইকে তো সুখবর টা দিতে হবে নাকি? আমাদের বাড়িতে নতুন বউ আসতে চলেছে বলে কথা।’
ঝিলমিল হেলতে দুলতে চলে গেল। রোদ্দুর রাগে লাল হয়ে গেল। মেয়েটা চরম বেয়াদব হয়ে গেছে। ওকে যদি এখন বাড়ির পেছনের ডোবায় দু’টো চুবানি দেওয়া হয়, তবে কি পাপ হবে? চাচা-চাচি, দাদি কি অনেক বেশি কষ্ট পাবে? তারা কি রোদ্দুরকে ক্ষমা করতে পারবে? আদরের মেয়েকে চুবানি দেওয়ার জন্য ছোট চাচ্চু কি রাগারাগি করবে?
.
.
.
চলবে……

#ঝিমমিল_রোদ্দুরে🖤 [পর্ব-০৩]
~আফিয়া আফরিন

রোদশীর বিদায়ের শেষে ফের সকলের মন খারাপ হয়ে গেল। রেহানা খাতুন আহাজারি করে বলতে লাগলেন, ‘আমার ভরা ঘরবাড়ি। সব ফাঁকা শুনশান হয়ে যাবে একদিন। বড় গুলোর বিয়ে হয়ে গেছে, সবাই আলাদা আলাদা কত দূরে থাকছে! আর রোদটাও চলে গেল। কিছুদিন বাদে ঝিলমিল আর তানিশাকেও বিদায় দিতে হবে। কত বড় বাড়িটা আমার খালি পড়ে থাকবে।’

রোদ্দুর এগিয়ে এসে বলল, ‘আমি আছি না?’

‘তুই আর কি করবি দাদুভাই? তুই তো নিজেই থাকিস না আমাদের কাছে। বিয়ে দিলে বউ কি এখানে রেখে যাবি? তা তো তুই বউ নিয়েই আগে দৌড়াবি।’

‘উহুঁ, তুমি একদম চিন্তা করো না। আমি কয়টা বিয়ে করব জানো? চারটা। তিনজনকে তোমাদের এখানে রেখে যাব, একটাকে আমি নিয়ে যাব আমার সেবাযত্ন করার জন্য। ভালো হবে না বলো?’

তিনি হেসে বললেন, ‘পাগল ছেলে একটা। যা দাদুভাই ঘরে যা। আমিও যাই, একটু বিশ্রাম নিই গিয়ে। শরীর আর চলে না।’

রোদ্দুর ইতস্তত করে বলল, ‘শোনো আমাকে একটা হেল্প করতে হবে। আমি হয়তো কাল চলে যাব। মাকে এখনও বলি নাই, বললেই কান্নাকাটি শুরু করে দিবে। তুমি সকাল সকাল উঠে মাকে বলবে আমার কথা। শুধু বলবেই না, মাকে ম্যানেজ করতে হবে।’
রেহানা খাতুন মুখে কিছু বললেন না, তবে এক লহমায় তার মনটা যে খারাপ হয়ে গেল সেটা চেহারাই বলে দিল। দাদী ঘরে যাওয়ার পর রোদ্দুর’ও চলে এলো নিজের ঘরে। লাগেজ বের করে নিজের কাপড়-চোপড় গুছিয়ে নিল। হঠাৎ মনে পড়ল আসার পথে সানিয়ার জন্য একটা আংটি কিনেছিল। তার ঘরে যেহেতু কেউ আসে না তাই আংটিটা রেখেছিল ওয়ারড্রবের উপরে। কোথায় গেল? তার যতদূর মনে পড়ে সে তো আংটিটা কোথাও সরিয়ে রাখে নাই। ওহ আচ্ছা! কেউ তাকে বলে দিল না, কিন্তু সে নিশ্চিত বুঝতে পারল এটা ঝিলমিলের কাজ। যখন ছবি নিয়েছে, তখন নিশ্চয়ই আন্টিটাও সরিয়েছে। রোদ্দুর বোঝে না, এই মেয়েটা কেনো তার সাথে এমন শত্রুতামি করে! একদম ছোটো বেলা থেকেই, রোদ্দুরকে দু’চোখে দেখতে পারে না। তার একটাই কথা— সবাই তো ওকে ভালোবাসে; চোখে হারায়; তবে আমি আর ভালোবাসব কেনো?
হিংসুটে মহিলা কোথাকার! ঠোঁটের আগায় সবসময় রি’ভলবার নিয়ে চলাফেরা করে। কেউ কিছু বলতে গেলেই সেই রি’ভলভারের আ’ঘাতে তাকে চূর্ণ বিচূর্ণ করে দেয়।
রাত বলে রোদ্দুর ছেড়ে দিল। এখন চিৎকার চেঁচামেচি করার মত ধৈর্য বা শক্তি কোনোটাই নেই, আজ সারাদিন ভালোই খাটাখাটুনি করতে হয়েছে। রোদ্দুর ঘরের বাতি অফ করে শুয়ে পড়ল। বিভিন্ন চিন্তায় জর্জরিত মস্তিষ্ক তাকে খুব সহজে ঘুমাতে দিল না। তারপর কখন ঘুমিয়ে গেল, নিজেও আর টের পেল না।
.
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেই ঝিলমিল বাড়ি থেকে বের হলো। শিউলিকে ডেকে নিয়ে দু’জন উত্তর দিকের পুকুর পাড়ে গিয়ে বসল। এটা তার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা। সব খারাপ হোক অথবা ভালো, এখানে এসে বসে থাকে। আর সাথে বান্ধবীদের পেলে তো কথাই নেই! তখন যত রকমের বাঁদরামি করা যায়, কোনোটাই ছাড় দেয় না। কিছুদিন আগে একটা ছেলের সাইকেলের চাকা পাংচার করে দিয়েছিল, সেই ছেলেটার সাথে হঠাৎ দেখা হয়ে গেল।
ঝিলমিল পালাতে চেয়েছিল কিন্তু সেই ছেলেটা এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করল, ‘ভালো আছো তুমি?’

ঝিলমিল মুখে প্লাষ্টিক হাসি ঝুলিয়ে উত্তর দিল, ‘আমি ভালো আছি তো। ভালোই থাকি সবসময়।’
তারপর শিউলিকে ফিসফিস করে বলল, ‘অ্যাই, আমরা কিছুদিন ওর সাইকেলের চাকা পাংচার করে দিয়েছিলাম, সেটা কি দেখেছিল নাকি ও?’

‘আমি কি জানি!’ সেও ফিসফিস করে বলল।

ঝিলমিল হেসে জিজ্ঞেস করল, ‘আর কিছু বলবেন কি? আমাদের আসলে কাজ ছিল একটু।’

‘না। কিছু বলব না।’

‘তাহলে আমরা যাই, ঠিক আছে ভাইয়া।’ ফাজলামির স্বরে সুর টেনে বলল ঝিলমিল।
ছেলেটা মাথা নাড়াল। ঝিলমিল আর শিউলি দু’জনের সামনের দিকে এগিয়ে গিয়ে একটা বড় গাছের আড়ালে দাঁড়াল। ছেলেটা গাছটা যখন ক্রস করে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে ঠিক সেই মুহূর্তে সে পেছন থেকে পা বাড়িয়ে দিল, আর তাতে পা আটকে ছেলেটা ধপাস করে হুমরি খেয়ে পড়ে গেল। ঝিলমিল আর শিউলি উল্টো পথে দৌড় দিল। কিছুটা দূরে এসে দু’জনেই দাঁড়িয়ে পড়ল। শিউলি হাঁপাতে হাঁপাতে বলল, ‘ভাই তুই কি পাস এসব করে? ছেলেটাকে এভাবে ফেলে দিলি?’

‘খুব দরদ হচ্ছে তোর তাই না? তো যা গিয়ে বাঁচা ওকে। সেবা যত্ন করে সারিয়ে তোল, তারপর একটা বেনারসি পড়ে ওর সাথে বিয়ের আসরে বসে যা।’

‘ধুর সব সময় বেশি বুঝিস তুই। সেদিনও ওর সাইকেলটা নষ্ট করলি আর আজকে ওরেই….. তোর বাসায় যদি কোনদিন বিচার নিয়ে যায়, কি হবে ভাবতে পারছিস? আমরা যে ধাক্কা মেরেছি, তা দেখেছে কিনা কে জানে?’

ঝিলমিল ঘাসের উপর বসতে বসতে বলল, ‘রোদ্দুর অভদ্রটাকে যদি এইরকম একটা শিক্ষা দিতে পারতাম, তবে আমার জীবনের ষোল আনা পূর্ণ হতো। সেদিন ওর গার্লফ্রেন্ডের ছবি হাতে পেয়েছি। সেটা নিয়ে কয়েকবার ব্ল্যাকমেইল করেছি। বেচারা ফাঁদে পড়ে আমাকে পাঁচটা চকলেট করে দিয়েছে। বলেছে, ছবিটা যেনো কাউকে না দেখাই এবং ওকে দিয়ে দেই। আমি অবশ্য কাউকে দেখাই নাই তবে ওর হাতেও দেই নাই। থাকুক আমার কাছে, আবার সুযোগ বুঝে কাজে লাগাব। হিহিহি!’
শিউলি হতাশ দৃষ্টিতে ঝিলমিলের দিকে তাকাল। এই মেয়েটাকে কিছু বোঝানো মুশকিল। যা ইচ্ছে হয়, তাই করে। প্রাইভেট পড়তে গিয়ে স্যারের সাথে পর্যন্ত বদমাইশি করে। শিউলিকে অনিচ্ছা সত্ত্বেও সায় দিতে হয়। কী করবে? একাও ছাড়তে পারে না, আবার সহ্যও করতে পারে না।
ঝিলমিল কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল, ‘একটা উপায় বাতলে দে তো দোস্ত।’

‘কীসের?’

‘এক শয়তানকে শায়েস্তা করতে হবে। বেশি বাড়াবাড়ি করতেছে ইদানিং। বাড়ির সবাই ওরে এত ভালোবাসে, এত আদর-আহ্লাদ করে যে একদম মাথায় চড়ে নাচতেছে। আমার এসব বিরক্ত লাগে, অসহ্য লাগে। বল তো, ওরে কেনো সবসময় এত মাথায় তুলে রাখতে হবে?’

‘রোদ্দুর ভাইয়ের কথা বলছিস তাইনা। আচ্ছা তুই তাকে এত হিংসে করিস কেনো?’ জিজ্ঞেস করল শিউলি।

‘বাদড় ছেলে একটা। একদম দেখতে ইচ্ছে করে না আমার। সবসময় হাঁসের ছানার মত প্যাক প্যাক করতে থাকে। বাড়িতে আসবে, সাধারণ কিছু একটা করবে; আর সবাই ভাববে, ও বাবা রোদ্দুর তো পৃথিবীর সবচেয়ে আশ্চর্যজনক কাহিনী করে ফেলল।’ মুখ ভেংচাল ঝিলমিল।
শিউলি হাসল, কিছু বলল না। আরেকটু বাদে দু’জন উঠে গেল। শিউলিকে বাড়ি এগিয়ে দিয়ে ঝিলমিল’ও বাড়ি এলো। আজ দুপুরের পর সবাই মিলে আপুর বৌ-ভাতের অনুষ্ঠানে যাবে, তার’ই আয়োজন চলছে। ঝিলমিল’ও যাবে, তবে সে তৈরি হবে আরোও কিছুক্ষণ পর।
ছাদে যাওয়ার পথে রোদ্দুরকে দেখতে পেল। রোদ্দুর ওকে দেখতে পেয়ে এগিয়ে এলো। সরাসরি বলল, ‘আমার আংটি কই?’

ঝিলমিল কিছুটা অবাক হয়ে প্রশ্ন করল, ‘আংটি? তোর? তুই আবার কবে থেকে আংটি পড়া শুরু করলি?’

‘ফাজলামি করবি না। ওয়ারড্রোবের উপর একটা আংটি ছিল, তুই নিয়েছিস? ফেরত দে। ওইটা আমার দরকারি জিনিস।’

‘ওমা! আমি কখন নিলাম। তুই তো আমাকে দিলি।’

‘আমি কখন দিলাম?’

‘কখন মানে? কাল তুই আমাকে চকোলেট নিতে বললি না, ওখানেই তো ছিল। ভাবলাম তুই তো ছেলে মানুষ, তুই এই চিকমিকি টাইপের আংটি দিয়ে কি করবি? মনে হয় আমার জন্য রেখেছিস। তাই নিয়ে নিলাম।’ ঝিলমিল নির্বিকার ভাবে বলল।

নাহ, মাথা গরম করা যাবে না একদম। রোদ্দুর ঠান্ডা মাথায় অথচ তেজি গলায় বলল, ‘ওটা আমাকে দিয়ে দে।’

ঝিলমিল কোমড়ে এক হাত রেখে আরেক হাত নাড়াতে নাড়াতে বলল, ‘ছিঃ একটা জিনিস দিয়ে আবার ছোটো লোকের মত চাইতে লজ্জা করে না তোর? তোর মনটা একদম নর্দমার মত অপরিষ্কার।’

‘এই এই…… আমার মন নিয়ে কোনো জাজমেন্ট হবে না। আমার মন হচ্ছে বেবি ক্রিমের মত নরম এবং পরিষ্কার।’

‘হুহ, এত ফাল পারিস না। চুপ থাক। তোর ফালতু বকবক শোনার মত সময় বা শখ কোনোটাই আমার ইচ্ছা নাই। আমার থেকে দূরে দূরে থাকবি, ১০০ হাত দূরে। বুঝলি?’

‘দেখ তোকে ভালোভাবে বলতেছি, আংটি ফেরত দে। ওটা আমি আমার গার্লফ্রেন্ডের জন্য কিনেছিলাম। ফেরত দে বলছি।’
ঝিলমিল মোটেও পাত্তা দিল না। চুল উড়িয়ে চলে গেল। রোদ্দুর শুধু ওর গমনপথের দিকে চোখ গরম করে তাকাল। ঠিক সেইসময় বড় চাচী এসে দু’জনের উদ্দেশ্য বললেন, ‘তোরা দুজন এত ঝগড়া করিস কেন? একটু মিলেমিশে থাকতে পারিস না বাপু? কি হয়েছে ঝিলমিল? রোদ্দুর কি চাইল? দিয়ে দে ওকে ওর জিনিস।’

ঝিলমিল এগিয়ে এসে বলল, ‘উহুঁ, তোমাদের আদরের ছেলে তার কোন কিছু নিতে চায় নাই। হবু ভাবীর……’
রোদ্দুর ইশারায় ঝিলমিলকে চুপ করতে বলল। ঝিলমিল চুপ করে গেলে চাচী ফের জিজ্ঞেস করলেন, ‘কি? হবু ভাবীকে?’

ঝিলমিল বলল, ‘আমি কি জানি? ওকেই জিজ্ঞেস করো। আমি যাই গো, আমাকে আবার আমার আপুর শশুর বাড়ী যেতে হবে। রেডি হতে হবে, সাজগোজ করতে হবে; বহুত দেরি। এখন শুরু না করলে পরে আবার দেরি হয়ে যাবে। তোমাদের সাথে আর সময়মতো বের হতে পারব না। পরে দেখা গেল, তোমরা চলে গেলে এই অধমকে একলা ফেলে।’
ঝিলমিল চুল নাড়াতে নাড়াতে চলে গেল। রোদ্দুর বলল, ‘আমিও তাই বুঝলে! তোমার শাশুড়ি আম্মা আমাকে কড়া ভাষায় বলে দিয়েছে, আমিও যেনো আপুর বৌ-ভাতের অনুষ্ঠানে তোমাদের সাথে যাই। আমাকে আবার কাল ঢাকা ফিরে যেতে হবে, কাজকর্ম আছে।’
বড় চাচী রোদ্দুরের ফিরে যাওয়ার কথা শুনেই আগের সব ভুলে গেল। আর্দ্র কণ্ঠে বলল, ‘চলে যাবি বাবা? এই না দু’দিন আগে এলি।’

‘আজ নিয়ে নয়দিন হবে আমি এসেছি।’ রোদ্দুর হেসে বলল।
তবুও তিনি মনখারাপ করে রইলেন। রোদ্দুর চলে গেল। মনে মনে ঝিলমিলের চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করল। তারপর মনে পড়ল, ঝিলমিল তো তার নিজের গোষ্ঠীর মধ্যেই পড়ে। তারপর আবার নিজের কপাল চাপড়াল।
.
আজকের দিনটা রোদ্দুর থেকেই গেল। ওখান থেকে ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে গেছিল, রোদ্দুর অবশ্য রাতেই ফিরতে চেয়েছিল। কিন্তু বাড়ির সবাই নারাজি। কেউ এইরাতে তাকে যেতে দিবে না। মনোয়ার সরকার বললেন, ‘তুই এত তাড়াহুড়া করছিস কেনো? এইজন্য তোকে চাকরিতে যোগ দিতে নিষেধ করেছিলাম। বাড়ির ব্যবসা-বাণিজ্যে যোগ দিলে বাড়িতেই থাকতে পারতি, এত প্রেসার পড়ত না। সবদিক থেকে শান্তি।’

রোদ্দুর ঝটপট বলল, ‘মাফ চাই। আমি কাল’ই যাব। তবুও আমাকে তোমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্যে টেনে নিও না। বিরক্তিকর, একদম বিরক্তিকর।’
রোদ্দুর মনের মাঝে একরাশ হতাশা নিয়ে ঘরে গেল। ঘড়ির দিকে তাকাল, এগারোটা বাজে। রাত কখন শেষ হবে? সানিয়া ফোন করে আজ একটু মন খারাপ করেছিল। রোদ্দুরের মনটাও অলক্ষ্যে ওইদিকে টানছে।
অবশেষে ভোরের আলো ফুটল। সূর্য্যি মামার সাথে রোদ্দুর’ও তৈরি হয়ে গেল। বাড়ির সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে দ্রুত বেড়িয়ে পড়ল। রিমঝিম, ঝিলমিল, তানিশা এদের দেখা পায় না, এরা এখনও পড়ে পড়ে মোষের মত ঘুমাচ্ছে।

মোড়ের মাথায় সাইফুল ভাইকে দেখতে পেল সাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে। এগিয়ে গিয়ে দু’য়েক কথা বলে জিজ্ঞেস করল, ‘সাত সকালে এখানে কি করছেন ভাই?’

সে হেসে সলজ্জ মুখে উত্তর দিল, ‘ঝিলমিলের জন্য অপেক্ষা করছি।’

রোদ্দুর হতবাক হলো। জিজ্ঞেস করল, ‘আমাদের ঝিলমিল?’

‘হুঁ।’

‘ওকে দিয়ে কি করবেন?’

‘একটু দরকার ছিল ভাই। আপনি কোনদিকে যাচ্ছেন? বাড়ির দিকে নাকি? গেলে ওকে একটু মোড়ের মাথায় আসতে বইলেন তো।’
রোদ্দুর মাথা নেড়ে সামনের দিকে এগিয়ে গেল। হুম, কাহিনী তো কিছু একটা আছে। খতিয়ে দেখতে হবে!
.
.
.
চলবে….
[কার্টেসি ছাড়া কপি করা নিষেধ]
শব্দ সংখ্যা —১৫৭২