ঝিলমিল রোদ্দুরে পর্ব-৫৭

0
209

#ঝিলমিল_রোদ্দুরে🖤 [পর্ব-৫৭]
~ আফিয়া আফরিন

রোদ্দুর তো তক্কে তক্কে রইল, কিন্তু ঝিলমিলকে সারাদিনেও খুঁজে পাওয়া গেল না। সবার মাঝে থেকে অলক্ষ্যে ঝিলমিলকে চোখের ইশারায় ঘরে আসতে বলছে। ঝিলমিল বুঝে ঠিকই তবে না বোঝার ভান করে নির্বিকার ভঙ্গিতে বসে থাকে।
এখনও রোদ্দুর ইনিয়ে বিনিয়ে কিছু বলছিল। তার উত্তরে ঝিলমিল বেশ শব্দ করেই বলে উঠল, ‘কি হয়েছে? অনেকক্ষণ যাবত কিছু বলতে চাইছিল মনে হচ্ছে।’
উপস্থিত সবাই রোদ্দুরের দিকে তাকাল। রোদ্দুর তৎক্ষণাৎ মেরুদন্ড সোজা করে বসল। অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে বলল, ‘হ্যাঁ বলছিই তো, অনেকক্ষণ যাবত।’

‘কী বলছিস?’

‘ইয়ে মানে… একটু বের হবো। আমি তো আমার শার্ট-প্যান্ট খুঁজে পাচ্ছি না। কোথায় রেখেছিস? বের করে দিয়ে আবার এসে গল্প কর। আমার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যে কোথায় কোথায় রেখে দিস।’

ঝিলমিল বলল, ‘তুই তো এখানেই বসে আছিস। ঘরে গেলি কখন আর তোর কাপড়চোপড়’ই বা খুঁজে দেখলি কখন?’
রোদ্দুর কী আর সাধে নিজেকে কপালপোড়া বলে নাকি? উত্তর দিতে হলো না এই যাত্রায় মা তাকে বাঁচিয়ে দিল।
তিনি ঝিলমিলকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘এই সন্ধ্যার সময় ও বাহিরে কোথায় যাবে? একটু আগেই তো অফিস থেকে ফিরল।’

‘জিজ্ঞেস করো তোমার আদরের সুপুত্রকে। সারাদিন তো বাহিরে বাহিরেই থাকছে… আমি কিছু বললে রাগারাগি করে ঘরবাড়ি উল্টে ফেলে। আমাকে তো কোনো প্রশ্নের জবাব দেওয়ার প্রয়োজন মনে করে না।’ ঝিলমিল করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল।

নীলিমা বেশ রাগান্বিত হয়ে ছেলের দিকে তাকালেন। তারপর শাশুড়ির দিকে তাকিয়ে বলল, ‘দেখেছেন আম্মা? এইরকম বেয়াদবি করার কোনো মানে হয়? এই ছেলে বয়সের সাথে সাথে পাগল হচ্ছে মনে হয়। আর ঝিলমিল তুই শোন, একটু টাইট দিয়ে রাখবি ওকে। তোকে প্রশ্নের জবাব দিবে না, তুই আদায় করে নিবি। আর তারপর আমি তো আছিই, এরপর উল্টাপাল্টা কিছু করলে সোজা আমাকে ফোন করবি। আজ কিছু বলছি না, পরবর্তীতে কখনো এইরকম ঘরের বউকে অবজ্ঞা করার কথা শুনলে ওর কানের নিচে দু’টো দিব।’
রোদ্দুর রা করল না। এই নারী শাসিত সমাজে যে কিছু বলে লাভ নেই, এটা বেশ ভালো করেই বোঝা হয়ে গেছে। ঝিলমিলের দিকে তাকাল… আহারে, মেয়েটা চোখেমুখে একটা বেচারা ভাব ফুটিয়ে রেখেছে। যেন কত নিষ্পাপ! অথচ যেই বেয়াদবি গুলো রোদ্দুরের ঘাড়ে চাপানো হয়েছে, তার একটাও সে করে না। রোদ্দুর উঠে গেল।
একটু আগে হাসান ফোন করেছিল। ইদানিং সবদিকের ব্যস্ততার কারণে বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো হয়ে উঠছে না। আজ সবাই সেই চৌরাস্তার মোড়ে একত্রিত হয়েছে। রোদ্দুরও রেডি হয়ে বের হচ্ছিল। ঝিলমিল এগিয়ে এলো ওর পিছু পিছু। জিজ্ঞেস করল, ‘কোথায় যাচ্ছিস?’

রোদ্দুর সুন্দর করে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বলল, ‘ইঁদুর মা’রার বি’ষ কিনতে যাচ্ছি। আমি সেটা খাব এবং খেয়ে ম’রে যাব।’

‘ওমা! মানুষ মা’রার বি’ষ পাওয়া যায় তো। তুই ওতো লো কোয়ালিটির বি’ষ কেন কিনতে যাবে?’ ঝিলমিল কিছুটা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল।

রোদ্দুর ফের হেসে বলল, ‘আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই।’

‘বাড়ি কখন ফিরবি?’

‘আমি বাড়ি ফিরে কি করব? আর তুই হঠাৎ আমার বাড়ি ফেরার খবর শুনতে চাচ্ছিস কেন? তোর কি কাজ? আমি আজ রাতে নাও ফিরতে পারি।’

ঝিলমিল এগিয়ে এসে সাফ সাফ জানিয়ে দিল, ‘এখন প্রায় আটটার কাছাকাছি বাজে। ঠিক নয়টা ঊনষাট মিনিটে আমি তোর বাড়ি ফেরা চাই। এর কম হলে সমস্যা নাই কিন্তু বেশি যেনো না হয়।’
রোদ্দুর আর বলার মত কোনো কথা খুঁজে পেল না।
চৌরাস্তার মোড়ে এসে রোদ্দুর হাসান বাদে অন্য কাউকে পেল না। হাসান বলল, ‘আসছে, আসছে কিছুক্ষণের মধ্যেই।’

রোদ্দুর হাসানের ঘাড়ে হাত রেখে চোখ পাকিয়ে বলল, ‘আজ তুই হঠাৎ এত তাড়াতাড়ি? সময়জ্ঞানে এত দক্ষ হলি কীভাবে? বাই দা ওয়ে, প্রেম-ট্রেম করছিস..’

হাসান রোদ্দুরকে থামিয়ে দিয়ে বলল, ‘না ভাই… ডিসগাস্টিং বিষয় এসব। করলে সরাসরি বিয়ে না করলে নাই।’

‘তো? পাত্রী খোঁজা হচ্ছে তাইনা নাকি নিজের পছন্দের কেউ? আমাদের তো জানালি না।’
হাসান একটু থতমত খেয়ে গেল। তার পছন্দের একজন আছে, রোদ্দুরের সাথে সম্পৃক্ত সে। রোদ্দুরকে বলা ঠিক হবে কিনা ভাবছিল। বাড়ি থেকে তো বিয়ের একটা প্রেসার আছেই… আর আপাতত সে তাকে ছাড়া অন্যকারো কথা ভাবতে পারছে না। এলোমেলো ভেজা চুলে মলিন মুখে বিষন্ন হয়ে বসে থাকা একটা মেয়ে যে অমোঘ টানে তাকে বেঁধে ফেলেছে, এটা বলবে কি করে! নাহ রোদ্দুরকে নয়, সময় সুযোগ বুঝে ঝিলমিলকে বলতে হবে।
.
ঝিলমিল সবাইকে খেতে দিয়ে রোদ্দুরের জন্য অপেক্ষা করছিল। দশটা তো বেজে গেছে, এখনও আসছে না কেনো? মা গেছে দাদিকে রাতের ঔষুধ খাওয়াতে, নীলিমা খেয়াল করল ঝিলমিলকে।
কাছে গিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন, ‘হ্যাঁ রে মা, রোদ্দুরের জন্য অপেক্ষা করছিস?’
ঝিলমিল মাথা নাড়াল। তিনি পুনরায় বললেন, ‘এত অপেক্ষা করে কাজ নেই, যা গিয়ে খেয়ে নে। ওকে খুব একটা বেশি বাহিরে ঘোরাফেরায় সায় দিবি না।’

ঝিলমিল তৎক্ষণাৎ বলে উঠল, ‘না না, ও সন্ধ্যার পর খুব একটা বেরোয় না। আর বের হলে আমাকে নিয়ে যায়। আজ যে কোথায় গেল? মনে হয় কাজ আছে। ফোন করেছিলাম ব্যস্ত আছে বলেই রিসিভ করে নাই।’

নীলিমা হেসে বললেন, ‘বাব্বাহ! এত্ত তাড়াতাড়ি স্বামীর দোষ ঢাকতে শিখে গেছিস! তোকে তো দিনের পর দিন দেখে অবাক হচ্ছি রে। এভাবেই থাকি সবসময়, দোয়া করি। আর এক্ষুনি খেয়ে নিবি, দেরি করবি না।’
ঝিলমিল তাই করল‌। রোদ্দুর নিশ্চয়ই গেছে, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে‌। কখন ফিরবে কে জানে?
রোদ্দুর অবশ্য কিছুক্ষণ পড়েই ফিরে এলো। এসে সরাসরি দাদির কাছে এসে বসে পড়ল। অবশ্য একটা মতলব নিয়ে এখানে এসেছে— আজ ঝিলমিলকে সাথে নিয়েই সে ঘরে ফিরবে। গতকাল আগে ছেড়ে যাওয়ার কারণে মেয়ের কত টালবাহানা শুনতে হয়েছিল, আজ আর রাজি নয়!
ঝিলমিলও রোদ্দুরের কাহিনী বুঝতে পেরেছিল। মূলত ইচ্ছে করেই রোদ্দুরকে রাগানোর জন্য সে এইরকম করছে। অসীম রাগের পর বিনি সুতার টানে যে ভালোবাসা আসে, সেটা ঝিলমিলের খুব পছন্দের!
এক পর্যায়ে রোদ্দুর আলস্য চালে হাই তুলে বলল, ‘তোমাদের কি ঘুম পায় না? ঘুমাবে কখন?’

দাদি বললেন, ‘তুমি গিয়ে শুয়ে পড়ো দাদুভাই।’ রোদ্দুর তৎক্ষণাৎ উত্তর দিল না। এরা তার একমাত্র বউকে আটকে রেখে তাকে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে যেতে বলছে, অসম্ভব!
রোদ্দুর উঠে দাঁড়াল। ঝিলমিলের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘ঘরে চল।’

ঝিলমিল নির্বিকার কণ্ঠে বলল, ‘পরে যাই। এখানে থাকতে ভালো লাগছে। তোকে রাতদিন দেখতে দেখতে বোরিং হয়ে গেছিলাম।’

রোদ্দুর জেদ ধরা কণ্ঠে বলল, ‘তোকে আমি যেটা বলেছি সেটা কর। সবসময় মুখে মুখে তর্ক করিস কেন? একদম বাজে অভ্যাস হয়ে গেছে।’
দাদি ওদের দু’জনের কথা শুনে হেসে উঠলেন। ঝিলমিলকে লজ্জায় পড়তে হলো। ভাগ্যিস মা শাশুড়ি নেই!
দাদি হেসে বললেন, ‘আমার একা থাকার অভ্যাস আছে। যা তোরা, ঘরে যা।’
ঝিলমিল রোদ্দুরের দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকাল। অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে বলল, ‘না না, ওর ভুজুং ভাজুং কথাবার্তা পাত্তা দিও না তো। আমার সমস্যা নাই, আমি আছি এখানে তোমার সাথে।’

‘আরে পাগলি আমার সাথে থাকতে হবে না। আমি হাত-পা না ছড়িয়ে ঘুমাতে পারি না। কাল তুই আমার এখানে ছিলি, কষ্ট হয়েছিল ঘুমাতে।’
এরপর আর ঝিলমিলের কিছুই বলার থাকে না। অগত্যা ওকে রোদ্দুরের সাথে ঘরে যেতেই হবে।এই ঘর ছেড়ে বের হতেই ঝিলমিল কোমড়ে দু’হাত গুঁজে বলল, ‘তুই এতো খারাপ কেনো? দাদির সামনে এইরকম কাহিনী করলি, ছিঃ লজ্জায় আমার মাথা কাটা যাচ্ছে। ঠোঁটকাটা কোথাকার!’
রোদ্দুর হেসে ঝিলমিলকে পাঁজাকোলা করে কোলে তুলে নিল। আচমকা ঝিলমিল টাল সামলাতে না পেরে রোদ্দুরের গলা জড়িয়ে ধরল। বুকে আলতো করে একটা কিল বসিয়ে বলল, ‘এতদিন অসভ্য ছিলি এখন হয়েছিস চরম নির্লজ্জ আর বেহায়া।’

রোদ্দুর ঝিলমিলের ঠোঁটে আলতো করে নিজের ঠোঁট ছুঁইয়ে বলল, ‘শুধু তোর জন্য!’
.
রাগ, অভিমান আর ভালোবাসায় দিনগুলো মন্দ কাটল না। চোখের পলকে দশটা দিন কেটে গেল। এরইমধ্যে রেহানা খাতুন ডাক্তার দেখিয়েছেন। তেমন গুরুতর কোনো সমস্যা নয় ডাক্তার শুধুমাত্র বলে দিয়েছেন, ‘দুশ্চিন্তা করবেন না। অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে আপনার শরীরের এই দুর্বলতা।’
এই ডাক্তারকে বোঝাবে, বয়স বাড়ার সাথে সাথে দুনিয়ার চিন্তাভাবনা পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলছে‌। তবে আপাতত সব রিপোর্ট ঠিকঠাক দেখে সকলে চিন্তামুক্ত হলো। এই কয়দিন বেশ ঘোরাঘুরি করেছে সকলে, রোদ্দুর’ও যতটা সম্ভব সময় ব্যয় করেছে।
এখন তারা ফিরতে চাচ্ছেন নিজেদের সংসারে। অনেকদিন তো হলো এখানে! ঝিলমিলের একদম যেতে দেওয়ার ইচ্ছে নেই। মা চলে যাবে— ভাবলেই বাচ্চাদের মত হাত-পা ছড়িয়ে কাঁদতে ইচ্ছে করে। প্রতিটা মানুষের’ই নিজেদের সংসারের প্রতি টান রয়েছে, ফিরতে তো হবেই।
দাদিও বলছিলেন, বাড়ি ফেরার কথা। অনেক বছর তিনি বাড়ি থেকে বের হন না; বিশেষ করে দাদা মারা যাওয়ার পর। এখানেও তো আসতে চায় নাই শুধু রোদ্দুর বলেছিল বলে!
কাল সকাল সকাল তারা রওনা দিবে। আজ ছোট চাচ্চুও এসেছে। রেহানা খাতুনের সংসার জীবনের অভিজ্ঞতা অনেকদিনের। এখানে এসে তো তার নাতি-নাতনির সংসার দেখলেন তো, ওদের দুষ্টুমিষ্টি খুনসুটির সাক্ষী হলেন। ঝিলমিলকে বলে দিয়েছেন, ‘মেয়ে মানুষের জীবন খুব অদ্ভুত, চক্রের মত। অনেক কিছু মেনে নিয়ে মেয়ে মানুষের জীবন পরিচালনা করতে হয়। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত অন্যের উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকতে হয়। যদিও এখন দিনকাল বদলেছে… তবুও যতই নিজের পায়ে দাঁড়া না কেনো মাথার উপর একটা বটবৃক্ষের ন্যায় ছায়ার প্রয়োজন পড়ে। বিয়ের আগে মা-বাবা সেই ছায়া দিয়ে মেয়েকে আগলে রাখে আর বিয়ের পর স্বামী সেই ছায়া দিয়ে বউকে আগলে রাখে। এই যে আমাকে দেখ, আমাকে কিন্তু একেকজনের উপর ভিত্তি করেই এত বছর বেঁচে থাকতে হয়েছে; এখনও হচ্ছে।
মেয়ে মানুষ অবশ্যই আবেগপ্রবণ। তবে সবসময় আবেগটাকে মাথা চাড়া দিয়ে দিবি না, ভেবেচিন্তে সবকিছু মোকাবেলা করবি। তোকে মনে রাখতে হবে, তুই হচ্ছিস ঘুড়ির লাটাই। ঘুড়ি সবসময় তোর অধীনে থাকবে। ঘুড়ি তুই যেভাবে ঘুরাবি ঠিক সেইভাবেই ঘুরবে। তার ঠিক না রাখলে সুতো কেটে যাবে আর তার ঠিক থাকলে সব ঠিক থাকবে। এই ঘুড়িটা কি জানিস? তোর সংসার! আরেকটু যখন দায়িত্ব বাড়বে তখন সংসারের মূল্য বুঝতে পারবি। আমার দাদু ভাইটাকে তোর হাতে তুলে দিয়েছি, তুই দেখে রাখিস।’
এতগুলো কথার প্রেক্ষিতে ঝিলমিল কিছুই বলল না। এই কঠিন কথাগুলো তাকে খুব ধাঁধায় ফেলে দেয়। এর সারমর্ম বুঝতে ভীষণ বেগ পেতে হয়। আর যখন বুঝতে পারে তখন বুকে টান লাগে।

পরদিন ঘুম থেকে উঠার পর থেকেই ঝিলমিলের মন খারাপ। চেহারায় যেনো অমাবস্যার আঁধার নেমে এসেছে। চোখের কোণে মাঝ নদীর মত পানি থইথই করছে। একটু টোকা দিলেই পরে যাবে। শিমু এসে ঝিলমিলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন, ‘তুই এইভাবে মনখারাপ করে থাকলে আমরা কীভাবে যাব বল তো? এই মুখে আমাদের বিদায় দিবি?’
মায়ের কথা শুনে ঝিলমিলের আরও কান্না পেল। সে নিঃশ্বাস বন্ধ করে কান্না চেপে রাখল।
রোদ্দুর ঝিলমিলকে কিছু বলার সাহস পেল না। তাড়াতাড়ি করতে করতেও ওদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিতে নয়টা বাজল। রোদ্দুর’ও রেডি হয়েছিল, ওরা যাওয়ার সাথে সাথে সেও ঝিলমিলের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে পড়ল। ঝিলমিল মনমরা হয়ে বসে রইল, এখন তার’ও বাড়ি যেতে ইচ্ছে করছে। আজকে ওদের সাথে ফিরে যেতে পারত কিন্তু সামনে আবার পরীক্ষা! বিগত কিছুদিন বাড়িটা পরিপূর্ণ ছিল এখন একদম খালি খালি লাগছে। রোদ্দুর’ও চলে গেছে… ঝিলমিলের ভালো লাগছে না। কী করবে, ভাবতে ভাবতেই রোদ্দুরের ফোন এলো। ও বলল, সন্ধ্যায় রেডি হয়ে থাকতে। বাহিরে বের হবে।

ঝিলমিল উত্তরে বলল, ‘তুই যা, আমার ভালো লাগছে না কোথাও যেতে।’

‘ঘরে বসে বসে কি করবি? বাইরে বের হলেই ভালো লাগবে। যাইহোক থাকিস রেডি হয়ে। আমি এসে ফোন করলে নিচে নামিস।’

‘ঠিক আছে।’
ঝিলমিল ফোন রেখে দিল। ওরা বাড়ি পৌঁছে ঝিলমিলকে ফোন করে জানিয়ে দিল। ঠিকঠাক মত বাড়ি পৌঁছেছে শুনে ঝিলমিল স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। রোদ্দুরের সাথে আবার দুপুরের পর কথা হলো। বের হতে এখনও বেশ দেরি আছে, তাই ঝিলমিল বালিশে মুখ গুঁজে শুয়ে থাকল অনেকক্ষণ। সকালে ঘুম থেকে উঠার কারণে ঘুম ধরেছিল, তাই কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ল। ওইদিকে সন্ধ্যা হয়ে এসেছে, রোদ্দুর নিচে এসে ঝিলমিলকে সমানতালে ফোনে দিচ্ছে, তার কোনো হুঁশ নেই। রোদ্দুর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল.. ঝিলমিল নিশ্চয়ই কোনো কারণে রাগ করেছে তাই ফোন ধরছে না!
.
.
.
চলবে….
[কার্টেসি ছাড়া কপি করা নিষেধ]
শব্দ সংখ্যা— ১৭০৮