ঝিলমিল রোদ্দুরে পর্ব-৬১

0
163

#ঝিলমিল_রোদ্দুরে🖤 [পর্ব-৬১]
~আফিয়া আফরিন

উসমান খন্দকার তার পরিচিত এক উকিলের সাহায্য নিয়ে আপাতত কিছু সময়ের জন্য জেল থেকে বেরিয়েছেন। তার জীবনের একটাই লক্ষ্য, যারা তার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে তাদেরকেও শেষ করে দেওয়া। সরকার পরিবারের নামটা চিরতরে মুছে দেওয়া।
যেদিন রেহানা খাতুন মারা গেলেন হেদিন’ই তিনি ছাড়া পেয়েছেন। তারপর নিজেকে আড়াল করে রেখেছেন। তক্কে তক্কে আছেন, তার জাত শত্রুদের প্রতিটা পদক্ষেপ নজরে রাখছেন। সময়মতো ছোবল বসাতে ভুল করবেন না। তার ছেলেদের বিরুদ্ধে মাম’লা বেশি, তাই অনেক চেষ্টা করেও আর টাকা খরচ করেও তাদের ছাড়ানো যায় নাই। উসমান খন্দকারের বিরুদ্ধে তুলনামূলক অপরাধের দায় কম, উকিলকে একটু বেশি অফার করতেই তিনি কেস লড়তে রাজি হলেন এবং জিতিয়ে দিলেন। থানার ওসি যেনো চুপচাপ থাকে সেজন্যও কিছু টাকা পয়সা খসাতে হয়েছে। একটা পান চিবুতে চিবুতে খসখসে গলায় বলেছেন, ‘শালা যেদিকে যাই সেদিকেই টাকা আর টাকা। দু’পয়সা ছাড়া এই চামচিকা গুলো লড়তে পারে না।’
আড়ালে বসে সুন্দর করে একটা পরিকল্পনা এঁটেছেন। রেহানা খাতুন মারা গিয়ে তার একটা বড় উপকার করে দিয়েছে। এই সময় বাড়ির অবস্থাও বিধ্বস্ত… আর ভাইয়ে ভাইয়ে ঝামেলা যে লেগেই আছে এটা তো তার জানা কথা কারণ মূল কারিগর তো তিনি নিজেই।
সুখানপুরের পাশ ঘেঁষে একটা ছোট্ট গ্রাম। সেই গ্রামে উসমান খন্দকারের বিশেষ গুপ্তচর সিরাজের বাড়ি। ওখানেই রয়েছেন কিছুদিন। আজ এসে সিরাজ খবর দিল, ‘আফজাল সরকার চাইতাছে বাড়ি ভাগাভাগি করতে। কিন্তু হের ভাইয়ের পোলা একটা, ওই ব্যাডা কিছুতেই রাজি না। কিছুদিন আগে বিয়া করল না? আইজকা বউ লিয়া ঢাকা যাইতাছে গা। যা করার আইজকাই কইরা লন। এহন মাত্র দুপুর, ওরা যাইব সন্ধ্যার পর; খোঁজ লইছি।’
উসমান খন্দকার এক মুহূর্ত ভাবলেন। তিনি যেহেতু বেশ কিছুদিন আগে থেকেই মনের মধ্যে পরিকল্পনা সাজিয়ে রেখেছেন তাই সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে খুব একটা সময় লাগবে না। এমনভাবে করবেন যে কেউ তাকে ধরতেও পারবে না।
হাতে খুব বেশি সময় নেই। সিরাজকে ব্যবস্থা করতে বললেন। তিনি নিজে এই ছোট্ট গ্রামে থেকে সব পরিচালনা করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিলেন। ওই বাড়ির… মানুষগুলোর কী অবস্থা হবে ভেবে চোখমুখে ক্রুদ্ধ হাসি ফুটে উঠল।
.
দুপুরে খাওয়া-দাওয়ার পর একটা আলস্য সময় কাটে। রোদ্দুর ছোট চাচ্চুর সাথে বের হয়ে গিয়েছিল। অর্থাৎ বাড়ির ছেলেরা সকলেই নিজেদের কাজে। দাদিকে শেষবার দেখার জন্য যারা এসেছিল তারা সবাই দু’দিন বাদে চলে গেছে। সবার’ই নিজেদের সংসার রয়েছে, জীবন রয়েছে। যে মানুষ চলে গেছে, সে তো গেছেই!
বাড়িতে শুধুমাত্র সাবরিনা, নীলিমা, শিমু, রিমঝিম, তানিশা আর ঝিলমিল ছিল। জার্নিতে ঝিলমিলের সমস্যা হয় বলে সে নিজের ঘরে শুয়ে আগে থেকেই বিশ্রাম করছিল। তানিশা ছাদে ছিল আর রিমঝিম মায়ের কাছে।
বিষয়টা সর্বপ্রথম তানিশার নজরে এলো। বিকালে সূর্য যখন ডুবতে শুরু করবে তার ঠিক একটু আগমুহূর্তে কেমন ধোঁয়া উড়ে উড়ে আসছে। প্রথমে পাত্তা দেয় নাই কিন্তু পরক্ষণেই খেয়াল করল, বাড়ির পেছন দিকটা ইতোমধ্যে জ্বলে গেছে… এখনও দাউ দাউ করে জ্বলছে।
তানিশা ভয় পেয়ে গেল। চিৎকার করার মত শক্তি পেল না। নিজেকে ধাতস্থ করে কোনোরকম নিচে নামল ‘মা, মা’ করে। এত বড় বাড়িতে সবাই কোথায় কে জানে? তানিশা মাঝপ্রান্তে এসে চিৎকার করে উঠল, ‘মা!’
সাবরিনা বেরিয়ে এলেন। বাড়িটা এত বড় যে, তারা এখনও আগুন লাগার বিষয়টা আন্দাজ করতে পারেন নাই। মাকে দেখে তানিশা মুখে বলবে কী— চোখের পানি নাকের পানিতে ভেসে গেল। কোনোরকম ভাসা ভাসা তিনি যা বুঝলেন। উত্তরের বারান্দায় ছুটে গিয়ে যা দেখলেন তাতে মাথা ঘুরে উঠল। দরজা ধরে নিজেকে সামলালেন। আর কিছু ভাবার মত অবস্থায় নেই। দ্রুত সকলকে ডাকলেন নিজে গিয়েই। ভয়ে একেকজনের আত্মারাম খাঁচাছাড়া!
ঝিলমিল ঘুমিয়ে গিয়েছিল, এইরকম চেঁচামেচিতে ঘুম ভেঙ্গে গেল। বড় চাচি তাকেও ডাকতে এসেছেন। ঘুম ভেঙ্গে আচমকা কিছু বুঝতে পারল না, একটা ঘোরের মধ্যে নিচে নেমে এলো। তখন প্রায় সন্ধ্যা! আগুনের গরম হলকা ঘরের মধ্যে ঢুকতে শুরু করেছে।
বের হতে পারছেন না কারণ আগুন ছড়িয়েছে চারিদিকে। সবাই আহাজারি করতে লাগলেন, কান্নাকাটি করছেন। ঝিলমিলের একলা ঘরে গিয়ে ফোনটা আনার সাহস নেই। ইশশশ… এই সময় রোদ্দুর পাশে নেই। না থেকেও ভালো হয়েছে। আজ যদি ভালোমন্দ কিছু একটা হয়ে যায়, রোদ্দুর থাকলে তো… নাহ আর ভাবতে পারছে না।
বাড়ির বাইরে থেকেও শোরগোল ভেসে আসছে। ঝিলমিল দেখে নাই, তবে মন বলছে সেখানে রোদ্দুর রয়েছে। খুব করে চাইছে, রোদ্দুর না আসুক এখানে। বাকিদের পাগলপ্রায় অবস্থা। বড় চাচি এরইমধ্যে একবার জ্ঞান হারিয়েছেন। কিছু সময় পর অবস্থা এমন হলো যে, ধোঁয়ার কারণে আর নিঃশ্বাস নেওয়া যাচ্ছে না। চোখে অন্ধকার দেখছে সকলে… বাঁচার তীব্র আকাঙ্ক্ষা! ঝিলমিল গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরল।
শিমু বোধহয় এখনও বুঝতে পারেন নাই, কেমন বোকা বোকা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন! অবশ্য বুঝবে কী করে? ভালো থাকা, বিশ্রাম করা মানুষগুলো যদি হঠাৎ করে দেখে এক অসীম মৃ’ত্যুপুরী তাদের ঘিরে ধরেছে, তবে তা কখনও বিশ্বাস হয়?
এই ছয়জন মানুষের মরণের অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছু করার নেই। ঝিলমিলের বুকের ভেতরটায় কেমন ভাংচুর হচ্ছে! শেষ একবার রোদ্দুরকে দেখতে পারবে না সে? তার শত রাগারাগি আর অভিমানের পেছনে যে ভালোবাসা ছিল, তা আর কোনোদিন প্রকাশ করতে পারবে না? সে যদি আজ চলে যায় তবে রোদ্দুরের জীবনে তার জায়গাটা কি অন্যকেউ দখল করে নিবে? এত কষ্ট… এত দীর্ঘশ্বাস… এত বুকে ব্যথা… এত যন্ত্রণা! ঝিলমিল ঝাপসা দৃষ্টিতে দেখল, তার আপন মানুষগুলো কীরকম নিস্তেজ হয়ে পড়ে আছে। সেও আর দাঁড়িয়ে থাকার মত শক্তি পাচ্ছে না। ধীরে ধীরে লুটিয়ে পড়ল মেঝেতে, বুকটা ভীষণ ভারী লাগছে, নিঃশ্বাস নিতে পারছে না। একেবারে জ্ঞান হারানোর আগে অস্পষ্টভাবে রোদ্দুরকে দেখতে পেল। তবে এটা সত্যিই রোদ্দুর নাকি তার ভ্রম বোঝার আগেই জ্ঞান হারাল।
.
রোদ্দুর আর ছোট চাচ্চু বাড়ি ফিরে আসছিল। তাদের বাড়ির থেকেও কিছুটা দূরে অবস্থান করছিল যখন তখন’ই আকাশে বাতাসে ধোঁয়া উড়ে বেরাচ্ছে। বুঝে উঠার আগেই মানুষজনের চেঁচামেচি শুনতে পেয়েছিল। ‘আগুন লেগেছে, আগুন লেগেছে’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত হচ্ছিল চারিপাশ। ইতোমধ্যে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দিয়েছে তারপর ফায়ার সার্ভিসে।
খবর শুনে রোদ্দুর আর ছোট চাচ্চু দৌড়ে এসেছিলেন। কিন্তু এখানে যে নিজেদের বাড়ি জ্বলতে দেখবে, তা ভয়াবহ দুঃস্বপ্নেও কখনো কল্পনা করতে পারে নাই। তারপর থেকে মায়ের কাছে, ঝিলমিলের কাছে, একেরপর এক ফোনকল; কিন্তু কেউ রিসিভ করছে না।
সকলেই বাড়ির ভেতরে, বের হতে পেরেছে কিনা ওদের কারো জানা নেই। এইদিকে ফায়ার সার্ভিসের খবর নেই, পৌঁছাতে সময় লাগবে তো। কিন্তু রোদ্দুর এতক্ষণ জান হাতে নিয়ে বসে থাকার মানুষ নয়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোট চাচ্চুকে এইদিক সামলাতে বলে বাড়ির ডানপাশে থেকে মই দিয়ে ছিলে উঠেছে। তখন আগুন কেবল ছড়াতে শুরু করেছে। ধোঁয়া যে ভাড়া সৈন্য সামন্ত নিয়ে এগিয়ে আসছে, তাতে সামনে এগিয়ে যাওয়া দুষ্কর। যেহেতু এই পথ ব্যবহার করতে হবে, তাই রোদ্দুর উপুড় হয়ে এগিয়ে গেল। সিঁড়ি বেয়ে কীভাবে যে নিচ পর্যন্ত এসেছে তা নিজেরও অজানা। তখন ফায়ার সার্ভিস চলে এসেছে, গাড়ির আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল।
ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন চারিপাশ, তবুও খুঁজে বের করতে পেরেছে তাদের কিন্তু রোদ্দুরের পক্ষে সম্ভব হয় নাই, তাদের বাইরে বের করে নিয়ে আসার। দ্রুত আগুন ছড়াচ্ছিল। ঘরের মাঝামাঝি স্থান দাউ দাউ করে জ্বলে গেল আর মাঝখানে আগুনের ব্যাড়িকেড পড়ে গেল।

যেহেতু ফায়ার সার্ভিস এসে পড়েছিল, তাই তারা বাড়ির একদিকের আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছিল। ভেতরে ঢুকে সবাইকেই অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা গেল, তবে কারো জ্ঞান ছিল না। আগেই এম্বুলেন্স কল করা হয়েছিল, ওদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হলো।
খবর সবাই পেয়ে গিয়েছিল। বাড়ি বাদ দিয়ে সকলে কাজকর্ম ফেলে হাসপাতালের উদ্দেশ্য ছুটল। ওইদিকে তিথি পড়েছে ব্যাপক বিপদে। কিছুদিন আগেই বাংলাদেশ থেকে ঘুরে গিয়েছিল। দাদি মারা গেল, তবুও সে আসতে পারল না। আজ এত বড় একটা বিপদ অথচ সে যেতে পারছে না। দূর থেকে আহাজারি করা ছাড়া আর কোনো উপায় নাই।
এই অসীম পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত কত দুর্ঘটনা ঘটে। সাম্প্রতিক এই দুর্ঘটনায় ওদের খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয় নাই। ধোঁয়ার কারণে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিল। চিকিৎসার সংস্পর্শে এসে দ্রুতই জ্ঞান ফিরল। তবে একটু আগে নিজের চোখের সামনে আগুন যেভাবে আগ্রাসীরূপ নিয়ে এগিয়ে আসছিল, ওই মুহূর্তটা কিছুতেই ভোলা গেল না। ফজলুল করিম যিনি বেশ শক্ত ধরণের মানুষ তিনিও স্থির থাকতে পারলেন না, চোখের কোল বেয়ে অশ্রু গড়াতে লাগল‌। ডাক্তারের সাথে কথা বললেন, ওদের চিকিৎসায় যেনো কোনো খামতি না থাকে।
বাড়ির সবাই সুস্থ আছে, ঠিক আছে— আপাতত এটুকুই স্বস্তি!
পুলিশ এলো জিজ্ঞাসাবাদ করতে। যেহেতু তানিশা প্রথম দেখেছিল, তাই তাকেই জিজ্ঞেস করা হলো সর্বপ্রথম। কিন্তু ওর মুখ থেকে একটা কথাও বের হলো না। ভয়ে শিটিয়ে গেছে।
ততক্ষণে ওদের পুরো বাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে, তবে বাড়িটা পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। দূর থেকে দেখলে কেমন গা ছমছম করে, ভয় লাগে!
রোদ্দুর ঝিলমিলের কাছে গেল কথা বলার জন্য। এখানে ওরা এখনও রেস্টে।
রোদ্দুর গিয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘এখন কেমন লাগছে?’

ঝিলমিল মাথা নাড়িয়ে বলল, ‘ঠিকঠাক। তুই ওখানে কেনো এসেছিলি? যদি কিছু হয়ে যেত।’
রোদ্দুর ঝিলমিলের পাশে বসল। ওর হাত ধরে বলল, ‘নিজের কথা তো চিন্তা করি নাই। আমি দেখতেছি, আমার আপনজনেরা সব ওই অগ্নিকুণ্ডে… আমি কি করে স্থির থাকি বল তো?’

ঝিলমিল ঠোঁটের কোণে সামান্য হাসির রেখা ফুটিয়ে তুলল। চোখ পাকিয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘যদি আজ আমাদের কিছু হয়ে যেত?’

রোদ্দুর ঝিলমিলের হাত চেপে ধরে বলল, ‘যা হয় নাই, সেটা বলার দরকার নাই। হতে পারত অনেককিছুই কিন্তু সৃষ্টিকর্তা ম’রণ এভাবে লিখে রাখেন নাই।’
রোদ্দুরের মধ্যে আর কোনো ভাবান্তর লক্ষ্য করা গেল না। তবে মায়ের মত তার’ও বলতে ইচ্ছে করছে, ‘কার বদনজর পড়ল আমাদের বাড়ির উপর? বিপদ কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না। কী হচ্ছে এসব?’
কিন্তু বলা হলো না। সে কিচ্ছু করে নাই— না অনুভূতি প্রকাশ, না রাগারাগি, না চিৎকার চেঁচামেচি। অসহ্য লাগছে সবকিছু। বুকের মধ্যে ভাঙচুর চলছে। দাদি কেনো এভাবে চলে গেল? তিনি থাকাকালে কোনো বিপদ শুধু তাদের কেনো… বাড়িটাকেও ছুঁতে পারে নাই।
রোদ্দুর হাসপাতাল থেকে বের হলো, খোলা আকাশের নিচে অনেকক্ষণ গিয়ে দাঁড়িয়ে রইল।

পুলিশ নিজেদের মত তদন্ত চালাচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে জানিয়ে গিয়েছে, ‘বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে আগুন লেগেছে। কিছু সমস্যা হয়ত আগে থেকেই ছিল, কেউ খেয়াল না করার কারণে পরবর্তীতে সেটা ভয়ঙ্কর রূপ নিয়ে বাড়িঘর পুরো জ্বালিয়ে দিয়ে গেছে।’
কেউ আর কিছু বললেন না। এককথায় সকলের ভেতরটা কেমন মিইয়ে গেছে। মানুষগুলো সবাই বেঁচে আছে তবে নিষ্প্রাণ!
বাড়ির অবস্থা দেখে নাই তবে শুনেছে, বেশ ভালোই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে নাকি! আজকের রাতটুকু হাসপাতালেই কাটিয়ে দিল কোনোরকম। সাবরিনা একটু অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তারও বয়স হচ্ছে, তার উপর পরপর কয়েকদিন এত ধকল গেল। ধকলের কথা বলতে গেলে, সবার অবস্থাই দেখার মত। তবে বাড়ি ফিরে যেতে কেউ মানা করল না। সূর্যি মামা জাগার আগে সকলে তৈরি হয়ে বসে রইলেন। হাসপাতাল থেকে বাড়ির দূরত্ব বেশি নয়, কিছুক্ষণের মাথায় পৌঁছে গেলেন গন্তব্যে। কিন্তু এ কী? বাড়িঘর কোথায় তাদের? এতো একটা ধ্বংসস্তূপ… পোড়াবাড়ী… ভূতের বাড়ি! সকলে বাড়ির অবস্থা দেখে আর্তনাদ করে উঠলেন। এই অবস্থায় সবাই ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল। কী বলে সান্ত্বনা দিবে নিজেদের? কীভাবে বোঝাবে? একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল রোদ্দুর! হাহ, এই বাড়িটাই কিছুদিন আগে পর্যন্ত ভাগাভাগির কথা হচ্ছিল। নিয়তির নির্মম পরিহাসে আজ ভাগাভাগি করার জন্য একটুকরো ইট অক্ষুণ্ন নেই। এখান কি তবে তারা এই পুড়ে যাওয়া ছাইগুলো ভাগাভাগি করবে? করতে পারবে? সম্ভব কখনও?
.
.
.
চলবে….
[কার্টেসি ছাড়া কপি করা নিষেধ]

আগামীকাল হয়ত গল্প দিতে পারব না, তবুও যদি সম্ভব হয় আমি দেওয়ার চেষ্টা করব।
শব্দ সংখ্যা— ১৬২৫