টিপ টিপ বৃষ্টিতে পর্ব-১৭+১৮

0
596

#টিপ_টিপ_বৃষ্টিতে
#পর্ব_১৭
লেখিকা #Sabihatul_Sabha

বিথী এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রাস্তায় জমে থাকা পানির দিকে।

অচেনা যুবকটি ওর দিকে তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলো। নিম্ন সুরে বলে উঠলো,’ সংসার সামলাচ্ছেন দিব্যি কিন্তু এখনো শাড়ি সামলাতে পারেন না..শাড়ি ঠিক করে বসুন।’
বিথী লজ্জায় তারাতারি নিজের শাড়ির দিকে তাকালো। শাড়ি অনেকটা পেট থেকে সরে গেছে কখন যেনো।

অচেনা ছেলেঃ সব তো ঠিক ছিলো। আপনার বিয়ে তো আপনার প্রেমিকের সাথেই হয়ে ছিলো কিন্তু তারপরেও আপনি গাড়ির নিচে কেনো যেতে চাচ্ছেন..??

ছেলেটির কথা শুনে বিথী অন্ধকার আকাশের দিকে তাকাতে চাইলো কিন্তু বৃষ্টির ফোঁটার জন্য আর তাকানো হলো না। চোখ বন্ধু করে একটা গোপনে দীর্ঘ শ্বাস ফেললো।

ছেলেটা হঠাৎ বলে উঠলো,’ আমি বাকি গল্পটা শুনতে চাই..??’

বিথী শান্ত চোখে ছেলেটার চোখের দিকে তাকালো। এতো, এতো কৌতুহল কেনো জানার জন্য এই ছেলের..?

বিথী তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে আবারও চলে গেলো অতীতে….

বিথী তখন বউ সেজে দাঁড়িয়ে ছিলো আকাশের বাড়ির সামনে। বাড়ি দেখে বিথী অবাক হয়ে ছিলো। এটা কার বাড়ি..?? ওরা এখানে কেনো.?? আকাশের কথার সাথে তো কিছুই মিলছে না। তাহলে কি দারোয়ান আঙ্কেলের কথাই সত্যি!!

তখনি সদরদরজা দিয়ে বেড়িয়ে আসে এক সুন্দরী মহিলা। উনার পিছু পিছু আসেন কয়েক জন মহিলা আর মেয়ে, সাথে পুরুষ ও আছে।

উনি অবাক হয়ে কিছু সময় বিথীর দিকে তাকিয়ে থাকে। উনার হাসি হাসি মুখটা সাথে সাথে চুপসে যায়।

হয়তো ছেলের পাশে অন্য কাউকে আশা করে ছিলো।
সুন্দরী মহিলাটি আকাশের দিকে তাকিয়ে বড় বড় পা ফেলে বাসার ভেতর চলে যায়।

আকাশ তখন বিথীর দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে নিজেও ওই মহিলার পিছু পিছু চলে যায়। বিথী তাকিয়ে রই ওদের যাওয়ার দিকে। বিথীর চোখের সামনে শুধু বাসে উঠে ছিলো আকাশের অগ্নি দৃষ্টিতে তাকানো দৃশ্য টা। আগে তো আকাশ যখনি তাকাতো এই চোখে থাকতো শুধুই মুগ্ধতা।
একজন মেয়ে এসে বিথীকে নিয়ে গেলো বাড়ির ভেতর।

ভেতরে গিয়ে বিথী যেনো আরো স্তব্ধ হয়ে গেলো। যখন শুনলো এই মহিলা আকাশের জন্মদায়িনী মা। বিথী একদম ভেতরে ভেতরে ভেঙে চুরে চুরমার হয়ে গিয়েছে। এতো বড় ধোঁকা!!

আকাশের কথায় এই সুন্দরী মহিলা বিথীকে বরন করে নেয় । বিথীর জানা নেই ঠিক কি বলে আকাশ ওর আম্মুকে রাজি করিয়েছে।

তারপর সুন্দর করে বিথীকে রেখে আশা হয় একটা ফুলে ফুলে সাজানো রুমে।

বিথী সুন্দর করে ঘোমটা দিয়ে বসে অপেক্ষায় ছিলো নিজের বরের কিছু সময় পর রুমে পা রাখে আকাশ।

আকাশ রুমে এসেই বিথীর দিকে তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো কিছু সময় তারপর হুঁ হুঁ করে হেঁসে উঠলো।

বিথী কল্পনাও করতে পারেনি এমন কিছু হবে। সে চোখ তুলে তাকালো আকাশের দিকে ততক্ষণে আকাশের হাসি থেমে গেছে।

সে তাচ্ছিল্যের সুরে বলে উঠে তোদের মতো পতিতা দের জন্য এই সুন্দর ফুলে ফুলে সাজানো বিছানা নয়। তোর শরীরের এই কলঙ্ক নিয়ে এই ফুল ধরলে ফুলটাও যে কলঙ্কিত হয়ে যাবে।

“পতিতা ” কথাটা যেনো ঠিক ওর বুকে গিয়ে বিঁধেছে ।

বিথী দুর্বল শরীরের দিক দিয়ে হলেও মনের দিক দিয়ে সে অতটাও এখন দূর্বল নয়। সে রাগে অগ্নিরূপ ধারণ করলো। মাথায় চড়ে বসলো রাগ, জেদ।

সে উঠেই থাপ্পড় বসিয়ে দেয় আকাশের গালে। রাগে হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হয়ে যায়। বলে উঠে, ‘ কার জন্য আজ আমি এমন কলঙ্কিত..?? কার জন্য বলো..?? ঠিক তোমাদের মতো কিছু নরপশুদের জন্য। যাদের টার্গেট হলো মেয়েদের ভুলিয়ে বালিয়ে, নিজের প্রেমের ঝালে ফাঁসিয়ে নিজের পুরুষত্ব মিটিয়ে নেওয়া তাই না!! তারপর মন ভরে গেলে সে নারী নষ্টা নারী, সেই নারী অপবিত্র নারী, সেই নারী পতীতা, সেই নারী কলঙ্কিত তাই তো..??

আকাশ অট্ট হাসিতে ভেঙে পরে। তারপর আসতে আসতে চোখ মুখ শক্ত করে বিথীর গাল শক্ত করে চেপে ধরে।

~ হুম একদম ঠিক বলেছিস।

বিথী ব্যথায় চিৎকার করে আকাশকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দেয়। আর কাঁদতে কাঁদতে বলে উঠে,’ আকাশ তুমি তো এমন নও। আমার আকাশ এমন নয়, হতেই পারে না। সব আমার দুঃস্বপ্ন তাই না..? ঠিক বলেছি তো বলো..?? তুমি তো এমন নও। তোমার চোখে এমন নিষ্ঠুরতা মানায় না, তোমার চোখে তো শুধু ছিলো আমার জন্য মুগ্ধতা। তুমি এমন পাল্টে গেলো কেনো আকাশ। মানুষ পাল্টায় শুনেছি কিন্তু এতটা পাল্টায় তা বুঝতে পারিনি। তুমি জানো আকাশ আমার পেটে তোমার বাচ্চা তুমি বাবা হতে যাচ্ছো আর আমি মা৷

আকাশ ধাক্কা দিয়ে বিথীকে দূরে সরিয়ে দেয়। আর বলে উঠে, ‘ খবর্দার এই বাচ্চা আমার বলবি না। এই বাচ্চা আমার না। এই বাচ্চা তোর কোন প্রেমিকের গিয়ে জিজ্ঞেস কর।

বিথীঃ আকাশ প্লিজ চুপ করো… তুমি খুব ভালো করে জানো এই বাচ্চা কার আর আমার প্রেমিক তো তুমি।

আকাশ আচমকা বিথীর গলা টিপে ধরে। এতোটাই শক্ত করে ধরে যে বিথীর চোখ বড় বড় হয়ে যায়। এক সময় মনে হয় এই বুজি সে এই নিষ্ঠুরতম পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিলো। কিন্তু না আকাশ তাকে তো এভাবে মারবে না তিলে তিলে মারবে কিন্তু কেনো..? কি দোষ ছিলো তার??।

আকাশ বিথীকে ধাক্কা দিয়ে দূরে ফেলে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।

বিথী নিস্তেজ হয়ে যাওয়া শরীরটা নিয়ে পড়ে থাকে রুমের এক কোনায়। একটু পর আকাশ আবার ফিরে এসে বলে উঠে, ‘ এই বাসার একটা খবর যদি বাহিরে যায় তাহলে তোর প্রান প্রিয় বোন ঐশী আর ভাই তীব্র কে এই পৃথিবী থেকে বিদায় করে দিবো। সাথে তোর পরিবারের লোক গুলোকে রাস্তায় নিয়ে নামাবে।

বিথীও তাই বিশ্বাস করে নেয়। ওর ভাই বোনের জন্য সে এমন কষ্ট কেনো মরতেও রাজি। কিন্তু বোকা বিথী জানতেই পারলো না এই ছেলেকে শেষ করতে ঐশী একাই যথেষ্ট।

শুরু হলো ওর কঠিন থেকে কঠিন তম দিন। শাশুড়ী, স্বামী তাদের হাতের মার, বকা সব আসতে আসতে হজম করে নিতে শিখে গেলো। এর মধ্যে কারো সাথে আর যোগাযোগ ও আর করতে পারলো না। মোবাইল ছাড়া কি দিয়ে যোগাযোগ করবে। এর মধ্যে সব চেয়ে আশ্চর্য বিষয় হলো ওর পরিবারের কেউ একদিন ও ওর খবর নেয়নি। কেনো কেউ খবর নেয়নি..? সে কি ওই বাড়ির কেউ ছিলো না..? সেই যে বিয়ের পরে একবার বাবার বাড়ি গেলো তারপর আর তাদের কারো ছায়াও চোখে পড়েনি। এই সব ওকে মানুষিক ভাবে অশান্ত করে তুলতো।

এরি মধ্যে আকাশের অত্যচার ও বেড়ে গেলো। যখন তখন গায়ে হাত তুলা। সামনে যা থাকে তাই ছুড়ে মারা। বিথীর মনে প্রশ্ন জাগায় আকাশ ওকে কেনো এতো ঘৃণা করে..? এমন কি কাহিনী যার কারনে ওর প্রতি আকাশের আম্মুর আর আকাশের এতো রাগ..?? কিন্তু মাথায় কিছুই ধরা দেয় না। শুধু কি ঐশীকে বউ করে আনতে পারেনি তাই আকাশের আম্মুর এতো রাগ,ঘৃণা নাকি অন্য কিছু রহস্য লুকিয়ে আছে যা বিথী জানেনা..? আকাশ কেনো হঠাৎ পাল্টে গেলো। এগুলো কি সব প্লেন ছিলো..?

এইসব ভাবতে ভাবতে ও যে কখন নিজের শাশুড়ীর রুমের কাছে চলে এসেছে নিজেও জানেনা। হঠাৎ কানে ভেসে আসলো শাশুড়ীর কিছু কথা। কার সাথে যেনো ফোনে বলছে, ‘ সত্যি এটা খাওয়ালে বাচ্চা ম*রে যাবে তো। আমি কিছু চাই না শুধু চাই এই বাচ্চা ন*ষ্ট হয়ে যাক। আর দেখতে চাই চোখের সামনে এই মেয়ের ছটফটানি। বাচ্চার জন্য আমার কাছে ভি*ক্ষা! হাতে পায়ে ধরে মিনতি তাহলে যে আমার অশান্ত মনটা শান্ত হবে। বলেই হুঁ হুঁ করে হেঁসে উঠলো।

ভয়ে বিথীর হাত পা কাঁপছে নিজের রুমে গিয়ে এক গ্লাস পানি এক নিঃশ্বাসে খেয়ে নিলো৷ বুকের ভেতর ধুকধুকানি ক্রমশ বেড়েই চলছে। এক হাতে ঘন-কালো চুলগুলো খোঁপা করে নিলো অন্য হাতে একটা চিরকুট আলতা দিয়ে লেখলো আকাশর জন্য তারপর এক ছুটে বেরিয়ে গেলো বাড়ি থেকে। সিদ্ধান্ত নিলো আর কারো বোঝা হয়ে থাকবে না, কারো কষ্টের কারন হবে না, কারো লজ্জার কারন হবে না, কারো জীবনে অন্ধকার হয়ে আগমন করবে না। চলে যাবে বহুদূর যেখান থেকে চাইলেও ফিরা যায় না। এই নিকৃষ্ট মানুষদের সামনে তার সন্তান কে জন্ম দিবে না।
কিন্তু তা আর হতে দিলো না এক অচেনা যুবক।

এতো টুকো বলে তাকালো যুবকটির দিকে। কেমন অনুভূতি শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে যুবকটি ওর দিকে।

যুবকটির দিকে তাকিয়ে হেঁসে বলে উঠলো বিথী,’ আমার এখন যাওয়া উচিৎ… ‘

যুবকটি বলে উঠলো,’ কোথায়..?
বিথীঃ নিজের সন্তান কে নিয়ে বহুদূর যেখানে গেলে সে ভালো থাকবে।

ছেলেটি কিছু সময় চুপ থেকে কি যেনো ভাবলো৷

অচেনা ছেলেঃ আপনি এখন আপনার পরিবারের কাছে ফিরে যাবেন৷

বিথী শক্ত কন্ঠে বলে উঠলো,’ কখনো না।’
অচেনা ছেলেঃ কেনো..?? তারা খুঁজ নেয়নি বলে..??

বিথী কেমন অসহায় চোখে তাকিয়ে বললো,’ আমি না হয় একটা ভুল করেছি তাই বলে আম্মু আব্বু আমাকে এভাবে ভুলে যাবে। আমার কলিজার টুকরো ভাই বোন আমার একটা খুজও নিলো না। আমি মরে গেলেও যাদের কিছু যায় আশে না। আমি তাদের কাছে কেনো ফিরে যাবো বলতে পারেন..?।
অচেনা ছেলেঃ হয়তো তার পিছনেও কোনো না কোনো কারন আছে।
বিথী তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে উঠলো,’ হুম কারন আছে । আমার মতো মেয়েকে বাড়িতে জায়গা দিলে, খুঁজ খবর নিলে তো উনাদের মানসম্মান থাকবে না।’

~ আপনি বাড়িতে যান। ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নেন। জোকের মাথায় কিছু করা ঠিক হবে না। ভালো করে ভেবে দেখুন হয়তো আপনার পেছনে এমন কিছু সত্যি লুকিয়ে আছে যা আপনি জানেন না। আগে সত্যি টা জেনে তারপর না হয় আপনার আর আপনার সন্তানের ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত নিবেন।

বিথী ভাবলো কিছু সময় তারপর উঠে হাঁটা ধরলো।

~ কোথায় যাচ্ছেন..??

বিথীঃ রহস্যের সমাধান করতে।

ছেলেটার মুখে হাসি ফুটে উঠলো।

ছেলেটা বিথীর যাওয়ার পথের দিকে তাকিয়ে আছে। আর মনে মনে একবার আওরালো ” আপনার এই দিনের জন্য কোথাও না কোথাও হয়তো আমিও দায়ী ”

বিথী যেতে যেতে পিছন ফিরে ছেলেটার উদ্দেশ্য বলে উঠলো,’ আপনার নাম..??

ছেলেটার মুখে মৃদু হাসির রেখা ঝিলিক খেয়ে গেলো,’ মুনতাসীর ‘

***

বাহিরে যত বৃষ্টি বাড়ছে সোনিয়ার মনে চিন্তাও বাড়ছে এই রাতে বৃষ্টির মধ্যে শুভ গাড়ি নিয়ে কখন বেড়িয়েছে এখনো আসছে না। বার বার সোনিয়া দরজার দিকে তাকাচ্ছে।

তখনি দরজা ঠেলে ভেতর ঢুকলো শুভ।

শুভকে দেখে খুশি হওয়ার বদলে সোনিয়ার মুখ কালো আঁধারে ডেকে গেলো।

শুভর কোলে ঘুমন্ত ঐশীকে দেখে।

রাগে সোনিয়া হাত মুষ্টি বদ্ধ করে বিড়বিড় করে বলে উঠলো,’ এই মেয়ে এমন শুভর আগে পিছে চিপকে থাকে কেনো!! আজ তো একদম কোলে উঠে গেছে আর আমি ওই দিন জড়িয়ে ধরায় কতো গুলো থাপ্পড় পরলো। রাগ হলো প্রচুর রাগ হলো ঐশীর উপর।

শুভ ঐশীকে নিয়ে চলে গেলো নিজের রুমে।
এটা দেখে আগুনে ঘি ডালার মতো ছিলো। সোনিয়া অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো শুভর রুমের দিকে। হঠাৎ মনে হলো ঐশীর তো শরীরে ভিজা কাপড় ও কি শুভ চেঞ্জ করবে..?? বুক ভার হয়ে আসলো সোনিয়ার৷ সে দৌড় দিলো শুভর রুমের দিকে…।

চলবে….

#টিপ_টিপ_বৃষ্টিতে
#পর্ব_১৮
লেখিকা #Sabihatul_Sabha

সোনিয়া শুভর রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। দরজা ভেতর দিয়ে লাগানো।
সোনিয়া রাগে হাত কচলাচ্ছে আর ভাবছে ভেতরে একটা অবিবাহিত যুবতী মেয়ে সাথে একটা পুরুষ ছি! এখন কি ওর খালামুনিকে ডাকা উচিৎ…??

সোনিয়া শুভর দরজার থেকে সরে যাওয়ার সময় মনে হলো দরজা একটু ফাঁক একদম লাগানো নয়। সে হাত দিয়ে সাবধানে দরজা একটু খোলে রুমে উঁকি দিলো। সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে এক দৌড়ে নিজের রুমে চলে গেলো।

দরজার সামনে কিছুর আওয়াজ শুনে শুভ ঐশীর শাড়ির আঁচল রেখে দরজার সামনে আসলো। কেউ তো নেই! মনের ভুল ভেবে দরজা লাগিয়ে গিয়ে দাঁড়ালো ঐশীর সামনে।

এই মেয়ের তো কাপড় চেঞ্জ করতে হবে।
শুভ বার কয়েক ঐশীর চোখে মুখে পানি ছিটা দিলো। কিন্তু না ঐশী চোখ খুলছে না।
শুভ ঐশীর গালে হাত রাখতেই চমকে উঠলো। বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে গেছে।
শুভ ভয় পেয়ে কি করবে মাথায় আসছে না। সে ঐশীর গালে হাত রেখে ঐশীর মুখের দিকে তাকিয়ে ওকে ডাকা শুরু করলো, ‘ প্লিজ ঐশী চোখ খুলো। কি হয়েছে তোমার..? বিশ্বাস করো আমি সন্ধ্যায় তোমাকে এভাবে হার্ট করে কথা গুলো বলতে চাই নি। অন্য কারো সাথে তোমাকে আমার সয্য হয় না। ঐশী প্লিজ একবার তাকাও। হাত পা মালিশ করা শুরু করলো কিন্তু না ঐশীর মুখটা কেমন ফেঁকাসে হয়ে গেছে শুভ যেনো আরো বেশি ভয় পেয়ে গেলো, শ্বাস ও কেমন ধীরে ধীরে ফেলছে। ঐশীকে নিজের বুকের সাথে চেপে ধরে ওর এক ডাক্তার বন্ধু কে কল দিলো।
ওই ডাক্তার বন্ধু বলে দিলো এখন তো বৃষ্টির জন্য আসতে পারবে না শুভকে তাই কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা বুঝিয়ে দিলো।
শুভ ফোন রেখে চিন্তায় পরে গেলো। ঐশীর প্রথম কাপড় চেঞ্জ করতে হবে।

সে একবার ভাবলো আম্মুকে ডাকবে তার নিজেই নিজে কে বললো,’ কেমন পুরুষ তুই যে কিনা নিজের বিয়ে করা বউ এর কাপড় চেঞ্জ করতে আম্মু কে ডাকতে যেতে হবে লজ্জা বলেও তো কিছু একটা আছে।’

নিজেই ঐশীর শাড়ির আঁচল ধরে আবার ফেলে দিলো। ঐশীর মুখের উপর ঝুঁকে বলে উঠলো,’ এই মেয়ে তোমার মাঝে এমন কি জাদু আছে যা আমাকে চুম্বকের মতো তোমার কাছে টানে’

শুভ রুম থেকে বের হয়ে পূর্ণা কে নিয়ে আসলো।

পূর্ণা ঐশীর এমন অবস্থা দেখে রেগে ভাই কে বললো,’ এই অবস্থা কি করে হলো ভাই..?’

শুভ গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠলো,’ থাপ্পড় না খেতে চাইলে চুপচাপ নিজের কাজ করে রুম থেকে বের হ্ ‘

পূর্ণা শুভর গম্ভীর কন্ঠ শুনে আর কিছু বলার সাহস পেলো না। তবে বিড়বিড় করে শুভ কে বকতে বক তে বললো রুম থেকে বের হতে।

শুভঃ আমি কেনো বের হবো..??
পূর্ণাঃ তুমি যদি বের না হও তাহলে নিজেই চেঞ্জ করে দাও না। নিজের বউ এর কাপড় চেঞ্জ করবে তাও পারো না।

শুভ নিজেও কিছুটা লজ্জা পেলো। রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।

পূর্ণা ঐশীকে একটা রাউন জামা পড়িয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বললো,’ আপুকে আমার রুমে কি নিয়ে যাবো..?

শুভ কিছু না বলে পূর্ণার মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিলো।

পূর্ণা হা করে তাকিয়ে আছে দরজার দিকে এতো বড়ো অপমান!!

শুভ কম্বল দিয়ে ঐশীকে মুড়িয়ে শুয়ে পরলো। ঐশীকে শক্ত করে বুকে জড়িয়ে নিলো। ঐশীর ঘুমন্ত মুখটার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,’ তুমি এতো মিষ্টি কেনো মায়াবিনী। এই যে তোমার ঘুমন্ত মুখটা দেখে মনে হচ্ছে, আমার সামনে পবিত্র একটা ফুল ফুটে আছে। যার মিষ্টি সুবাস ছড়িয়ে পরছে রুমের আনাচে কানাচে। ঐশীর কপালে ভালোবাসার পরশ এঁকে দিয়ে তাকিয়ে রইলো ঐশীর ঘুমন্ত মুখটার দিকে।

আজকের সকালটা যেনো অন্য রকম । অন্য দিনের তুলনায় অনেক বেশি সুন্দর। ঐশীর ঘুম ভাঙ্গে মোবাইলের রিংটোন এ। সে বালিশের নিচ থেকে মোবাইল সামনে নিয়ে ফোন ধরে কানে চেপে ধরলো।
ওপাশ থেকে রাশভারি কন্ঠ শুনে লাফ দিয়ে শুয়া থেকে উঠে বসলো। হাতের মোবাইলটির দিকে তাকিয়ে আরও অবাক। এই মোবাইল তো ওর নিজের নয়। আসতে আসতে কালকের রাতের কথা মনে করতে চাইলো তেমন কিছুই মনে পরলো না। নিজেকে শুভর রুমে দেখে কিছুটা অবাক হলো। বিছানা থেকে নেমে মোবাইল রেখে এদিক ওদিকে শুভকে খুঁজলো শুভ নেই। রুম থেকে বেরিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামলো।

সোনিয়া,নানু শাশুড়ী, পূর্ণা,ড্রয়িং রুমে বসে আছে। আর শাশুড়ী রান্না ঘরে সাথে কাজের নতুন বুয়া। আদিত্য নেই শুভও নেই।

ঐশীকে দেখে পূর্ণা দৌড়ে এসে বললো,’ আপু তুমি ঠিক আছো,ভালো আছো তো..??

ঐশীর মাথাটা অনেকটা ভার হয়ে আছে তাও বললো ভালো আছে৷ ঐশী পূর্ণাকে জিজ্ঞেস করলো শুভ কোথায়..??

পূর্ণাঃ ভাবিপু ভাই তো ভার্সিটি চলে গেছে।
ঐশীঃ ওহ্হ।
পূর্ণাঃ তোমাকে নিষেধ করে গেছে আজ ভার্সিটিতে যেতে।

ঐশী কিছু না বলে চুপচাপ নিজের রুমের দিকে হাঁটা ধরলো।

পিছন থেকে সোনিয়া রাগী লুকে তাকিয়ে আছে ঐশীর দিকে। তারপর নিজের নানুর দিকে তাকালো ওর নানু চোখের ইশারায় কি যেনো বুঝালো।

ঐশী রুমে এসে মাথাটা প্রচন্ড ভার হয়ে আছে তাই গোসল করে নিলো। ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখে সোনিয়া বসে আছে ওর বিছানার উপরে।

সোনিয়া কে দেখে হাসি দিয়ে জিজ্ঞেস করলো, ‘ কিছু বলবেন আপু..?’

সোনিয়া প্রথম ঐশীর চুলের দিকে তাকালো টপ টপ করে পানি পরছে।

রাগে সোনিয়ার চোখ মুখ লাল হয়ে উঠলো। সে ঐশীর সামনে গিয়ে ঐশীর বাহু শক্ত করে ধরে বলে উঠলো,’ নিজেকে আর কতো নিচে নামাবে… আমি তোমাকে ভালো মেয়ে ভেবে ছিলাম। ছি! এখন আমার তোমার দিকে তাকাতেই ঘৃণা হয়।’

ঐশী সোনিয়ার কথার মানে কিছুই বুঝলো না। সে বোকার মতো তাকিয়ে বললো,’ এই সব কি বলছেন আপু। আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।’

সোনিয়া ঐশীর এমন বোকা কথা শুনে আরও বেশি রেগে গেলো,’ তুমি বুঝতে পারছো না আমি কি বলছি..? সারা রাত একজন অবিবাহিত যুবতী মেয়ে হয়ে একটা ছেলের সাথে ছিলে তারপর সকালে এসে গোসল করলে আরও বুঝাতে হবে তোমাকে। তুমি যতোটা বোকা সেজে থাকো তার থেকে কয়েকগুণ বেশি চালাক তুমি। কি ভেবেছো শুভ তোমাকে বিয়ে করবে৷ তোমার এই বোকা বোকা তাকানো দিয়ে ওকে তোমার রূপের ঝালে ফাঁসাবে। কখনো না শুভ শুরু আমাকে ভালোবাসে ও শুধুই আমার৷ তোমার সাথে কয়দিন পুতুল পুতুল খেলে তারপর ডাস্টবিন এর ময়লার মতো ছুড়ে ফেলে দিবে।’

ঐশী সোনিয়ার কথা শুনে কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেললো।

সোনিয়া তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে উঠলো,’ কি ভাবছো এই সব কিভাবে জানলাম আমি..? কাল রাতে আমি সব দেখেছি। ছি! তুমি নারী জাতীর কলঙ্ক। তুমি তো দেখতে মাশাল্লাহ বাবা-মা কে বলো বিয়ে দিয়ে দিতে অন্য কারো জিনিসে হাত দাও কেনো। আমি ভাবতে পারছি না শুভ তো এমন না। এমন কি জাদুকরেছো যে শুভ তোমাকে বিছানায় নিয়ে গেলো..? নষ্টামি করার জায়গা এটা নয়। আমি যদি এই কথা গুলো এখন খালামুনিকে বলি ভাবতে পারছো কি হবে..? তোমাকে ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিবে।’

ঐশী এখনো তাকিয়ে আছে সোনিয়ার দিকে। শান্ত দৃষ্টির পেছনে যেনো আগুন ঝড়ছে। ভেতরে ভেতরে নিজের সাথে নিজের যুদ্ধে লেগে গেছে ঐশী। এতো খারাপ ভাবে অপমানিত সে কখনো হয়নি। আজ কিনা বাহিরের একটা মেয়ে ওকে এতো গুলো কথা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে গেলো শুধু মাত্র এই লোকটার জন্য।

সোনিয়াঃ চুপ করে আছো কেনো কথা বলো.. নাকি কথা বলার মতো মুখ নেই।

ঐশী সোনিয়ার দিকে তাকিয়ে একটা বাঁকা হাসি দিয়ে সোনিয়ার সামনে গিয়ে ঠাসস করে ওর গালে পর পর দুইটা থাপ্পড় বসালো। তারপর চিৎকার করে বললো, ‘ এই মূহুর্তে আপনি আমার রুম থেকে বেরিয়ে যান বলছি না হলে আমি কি করবো নিজেও জানিনা। আজ আমার বড় না হয়ে যদি ছোটো হতেন তাহলে আরও চারটা থাপ্পড় গালে বসাতাম।

সোনিয়া অপমানে ঐশীর দিকে তেরে গেলে ঐশী ওকে থামিয়ে দেয়।

ঐশীঃ সাবধান আমার সাথে লাগতে আসলে আগে আপনাকে ট্রেনিং দিয়ে আসতে হবে। আর কি বললেন আমি এখানে নষ্টমি করি..? আমি শুভর কে উনাকে ভালো করে জিজ্ঞেস করে নিবেন যদি উনি পুরুষ হয়ে থাকে তাহলে সঠিক উত্তর দিবে । আর বাকি গুলোর উত্তর আমার থেকে নয় আপনার ভালোবাসার শুভর কাছ থেকে জেনে নিবেন। এখন বের হয়ে যান আমার রুম থেকে।

সোনিয়া গালে হাত দিয়ে ফুসফুস করতে করতে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।

ঐশী দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে পূর্ণা এক কোনায় চুপটি করে দাঁড়িয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।

ঐশীঃ ওখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো ভেতরে আয়৷

পূর্ণা ঐশীর সামনে এসে বললো,’ আপু তুমি একদম সঠিক কাজ করেছো। আমার নিজেরো প্রচুর রাগ উঠে ছিলো সোনিয়া আপুর কথা শুনে ।

ঐশী পূর্ণার দিকে তাকিয়ে বললো,’ ওর কোনো দোষ নেই পূর্ণা। উনি আমার আর তোমার ভাইয়ার সম্পর্কে কিছু জানে না। স্বাভাবিক একটা মেয়েকে একটা ছেলের রুম থেকে সকালে বের হতে দেখলে যে কেউ এমন কথা বলতে পারে। সেটা সোনিয়ার জায়গায় তুমি হলেও বলতে । তুমি সত্যি টা জানো তাই তোমার কাছে এটা কোনো বিষয় না।

পূর্ণা ঐশীকে জড়িয়ে ধরে বললো,’ এই জন্যই তোমাকে আমি এতো ভালোবাসি ঐশী আপু সব সময় সঠিক কথাটা তুমি বলো৷ তুমি অন্য দের মতো না৷ তাহলে থাপ্পড় কেনো দিলে।

ঐশী পূর্ণার কথার উত্তর না দিয়ে বললো,’ কাল কি হয়েছে..??’

পূর্ণা বুঝলো ঐশী কথা এরিয়ে যেতে চাচ্ছে। তাই সেও হেঁসে বলে উঠলো, কাল কি কি হয়েছে সব বললো। এটাও বললো কাপড় শুভ নয় ও চেঞ্জ করেছে। এটা শুনে যেনো ঐশীর কলিজায় পানি এলো।

পূর্ণা রুম থেকে বেরিয়ে যেতেই ঐশী এক কঠিন সিদ্ধান্ত নিলো। আর যাই হোক এই পুতুল খেলার বিয়েতে সে জড়িয়ে থাকবে না। আর মাত্র ১৫দিন তারপর মুক্তি দিবে এবং মুক্তি নিবে । নিজেও মুক্তি নিবে শুভ কেও মুক্তি দিবে৷

ব্যাগ হাতে রুম থেকে বেরিয়ে আসতেই ঐশীর শাশুড়ী ওকে বললো, এখন কোথায় যাচ্ছে । ঐশী বললো আব্বু-আম্মুর কথা ভীষণ মনে পড়ছে তাই কয়দিন থাকতে যাচ্ছে। সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সোনিয়া কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
সোনিয়া অবাক হয়ে গেলো।
ঐশী সোনিয়ার কানে ফিসফিস করে বললো,’ সুযোগ করে দিয়ে গেলাম পারলে নিজের করে নাও ‘ বলে দরজা খুলে বেরিয়ে পরলো।
পূর্ণা তাকিয়ে আছে ঐশীর যাওয়ার দিকে হয়তো সে কিছুটা বুঝতে পেরেছে উপরের দিকে তাকিয়ে বললো,’ আল্লাহ সব ঠিক করে দাও প্লিজ ‘

****

ঐশীকে দেখে সবাই জড়িয়ে ধরলো। তীব্র বললো,’ জিজু কোথায় আপু..?’
সাথে সাথে হাসি হাসি মুখটা চুপসে গেলো ঐশীর জোরপূর্বক মুখে হাসি ঝুলিয়ে বললো,’ আসবে সময় হলে ‘

সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে বিথী তাকিয়ে আছে ঐশীর হঠাৎ মলিন হয়ে যাওয়া মুখটার দিকে।

ঐশীর চোখ গেলো বিথীর উপর খুশিতে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো বিথী কে।
ঐশী অভিমানী সুরে বললো,’তুমি খুব পঁচা আপু। আমি তোমার সাথে কথা বলার জন্য কতো তোমার নাম্বার চেয়েছি বড় আম্মুর কাছে কিন্তু তুমি নাকি সময় পাওনা মোবাইল ধরার বলি কি কাজ এমন তোমার ছোটো বোনটার খোঁজ খবর নেওয়ার সময় নেই। আমি তো সব সময় তোমার খোঁজ খবর নিয়েছি বড় আম্মুর কাছ থেকে।

বিথী ঐশীর মুখটা সামনে ধরে বললো, ‘ তা কি বলতো তোর বড় আম্মু…? ‘

ঐশীঃ বলেছে আমার মিষ্টি আপুটা খুব ভালো আছে।

বিথী তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে নিজের আম্মুর দিকে তাকিয়ে বললো,’ যাক একটা তো ভালো কাজ করেছেন উনারা।’

ঐশী তাকালো বিথীর মুখের দিকে অবাক হয়ে কিছু বলতে গেলে বিথী বলে উঠলো, ‘ পরে কথা হবে আগে ফ্রেশ হয়ে আসো। ‘

ঐশী কৌতুহল ভরা মন নিয়ে গেলো ফ্রেশ হতে।

বাসার সবাই আজকে অনেক খুশি দুই মেয়ে বাড়িতে। তাদের পছন্দের রান্না বসালো।

ঐশী ফ্রেশ হয়ে বিথীর রুমে আসতেই বিথী ঐশীর হাতে শাড়ি দিয়ে বললো,’ তারাতারি রেডি হ্।
ঐশীঃ কেনো..??
বিথীঃ আজ তো মৌ এর বিয়ে।
ঐশী মাথায় হাত দিয়ে বললো, ‘ ইসস আপু আমার মনে ছিলো না৷ তুমি জানলে কিভাবে..??
বিথীঃ সকালে শান্ত এসে ছিলো।
ঐশীঃ ওহ্হ, কি বললো..?
বিথীর মুখের রং পাল্টে গেলো।
বিথীঃ ঐশী তোর বিয়ের খবর কেনো এখনো কেউ জানেনা..??
ঐশী কি বলবে..? সত্যি টা কি বিথীকে বলে দিবে..? কিন্তু এখন না।
ঐশী কে চুপ থাকতে দেখে বিথী হেঁসে বললো,’ এই সব বাদ এখন সুন্দর করে রেডি হ। দেরি হয়ে যাচ্ছে। ‘

ঐশী বিথীর দেওয়া শুভ্র রঙের শাড়ি পড়ে নিলো৷ বিথী নিজের মন মতো করে সাজিয়ে দিলো ঐশী কে।

ঐশী এমনি তেই খুব সুন্দর এখন যেনো আরও বেশি সুন্দরী লাগছে ঠিক যেনো নেমে আশা কোনো দেশের কল্পনার রাজকন্যা।

ঐশীকে বিথী বার বার বলে দিয়েছে যেনো বাসার গাড়ি করে যায় কিন্তু ঐশী তাও রিক্সা নিলো।
রিক্সা চলতে শুরু করবে তখন একজন এসে ঐশীর পাশে বসে পরলো।
ঐশী নিজের পাশে কখনো উনাকে আশা করেনি তাও এই সময়।
ঐশী অবাক হয়ে বললো,”আপনি”

চলবে….
ভুলত্রুটি মার্জনীয়।