#তবুও ভালোবাসি
#পর্ব_২৮
#রেজওয়ানা_রমা
সকালে মেহুলের ঘুম ভাঙে রিয়ানের ফোনে। ঘুম ঘুম কন্ঠে বলে,
-হ্যালো
-গুড মরনিং জান
-গুড মরনিং
-ঘুম ভাঙে নাই?
-উম্মম্ম
-উঠো জানপাখি
-হুম। এই তো উঠছি।
মেহুল কথা শেষ করে ফ্রেস হয়ে নিচে চলে যায়। সকালের নাস্তা করে কলেজের জন্য রেডি হচ্ছে। এমন সময় রেহানা বেগম এসে বলেন,
-রিক কে দেখেছিস মা?
-রিক ভাইয়া? কই না তো মা। নিজের ঘরেই আছে হয়তো।
-না রে কোথাএ নেই। কাউ কে কিছু না বলে হঠাৎ কোথায় চলে গেল ছেলে টা
-তুমি চিন্তা করো না। আমি দেখছি।
মেহুল সোজা রিফার রুমে যায়।
-রিফা
– হ্যাঁ ভাবী
-রিক ভাইয়া কোথায়?
-আমি কিভাবে জানবো ( ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে)
-তুমি জানো না? কাল রাতের পর রিক ভাইয়া কে দেখি নি।
-কাল রাতে কি হয়েছে জানো?
– হ্যাঁ জানি। আমি সব কিছুই জানি
-জানো?
-হ্যা। এখন বলো রিক কোথায়?
-আমি সত্যি জানি না।
-একবার ছাদে যাও তো। ওখানেই আছে কিনা
-আমি?
-হ্যা তুমি। যাও।
বলে মেহুল রুম থেকে হন হন করে বেরিয়ে যায়। আর রিফা এক রাশ বিরক্তি নিয়ে ছাদে যায়। রিফা থ হয়র দাড়িয়ে থাকে। এটা কি অবস্থা। রিক ফ্লোরে শুয়ে আছে। আর পাশে অসংখ্য সিগারেট।
– তার মানে উনি কাল সারা রাত এখানেই ছিলেন। আর এই এতো গুলো সিগারেট উনি খেয়েছেন? এমন পাগলানি কেন করছেন উনি।
রিফা আস্তে আস্ত্র রিকে কাছে যায়। পাশে গিয়ে রিক কে ডাকছে,
-রিক ভাইয়া। রিক ভাইয়া উঠুন। আপনাকে সবাই খুজছে উঠুন।
রিক কোনো সাড়াশব্দ করছে না তাই রিফা এবার রিক কে ধাক্কা দিয়ে ডাকছে। রিক এবার চোখ খুলে সামনে রিফা কে দেখে একটু অবাক হয়। ঘুম জড়ানো কন্ঠে বলে,
-আবারও আমার কল্পনা। বার বার কেন তোমায় দেখছি রিফুপাখি। ভুলতে পারছি না কেন। সিগারেটেও এত নেশা হয় নি যত টা নেশা ধরিয়েছো।
রিফা জাস্ট থ হয়ে বসে থাকে। কি বলছে এগুলো। রিফা এবার জোরে ধাক্কা দিয়ে বলে,
-কি করছেন আপনি? আমি কোনো কল্পনা নই। আমি রিফা আপনার সামনে বসে আছি। উঠুন আপনি।
রিক এবার ধরফর করে উঠে দাড়ায়। সাথে রিফাও। রিফা কে এভাবে দেখে রিক অবাক। রিফা এসেছে ওকে খুজতে? নেশাক্ত চোখে তাকিয়ে রয় রিফার দিকে। আর এক পা এগিয়ে আসতেই রিফা বলে,
-সবাই আপনাকে খুজছে। তারাতারি নিচে আসুন
বলেই রিফা চলে যেতে নিলেই রিফার হাত ধরে এক ঝটকায় বুকে টেনে নেয় রিক। রিফার দুহাত ঘুরিয়ে পিঠের সাথে ধরে শক্ত করে। রিকের এমন আচরণে রিফা অবাকের চরমপর্যায়।
– আউউউ। হাতে লাগছে
– তুমি খুজো নি আমায়?
– ( মাথা নিচু করে )
– বলো।
– না।
-তাহলে এখানে কেন এসেছো?
– ভাবী আসতে…
– অজুহাত দিও না।
– ছাড়ুন আমায়। লাগছে
– লাগছে? ( আরো শক্ত করে হাত ধরে)
-আউউউচচ
-লাগছে? বলো?
-হুম। ছাড়ুন।
-আমারও লেগেছিলো এএ চেয়েও অনেক বেশি। এইখানে ( বুকের বা পাশে দেখিয়ে)
-(নিশ্চুপ)
-আমার ব্যাথার কি হবে? আমার ব্যাথা কে সারিয়ে তুলবে?
-ছাড়ুন আমায়। কলেজে লেট হয়ে যাচ্ছে
-আমার এনসার গুলো দিয়ে যাও
– এর কোনো এনসার আমার কাছে নেই। ছাড়ুন আমায় হাতে লাগছে
-লাগুক
-সিগারেট খেয়েছেন কেন?
-তার কৈফিয়ত কি তোমাকে দেবো?
– ছাড়ুন
-ছেড়েই তো দিয়েছিলাম। এসেছো কেন?
– (নিশ্চুপ)
– দেখতে এসেছো কেমন আছি?
-(মাথা নিচু করে)
রিক এবার রিফার দিকে আরো এগিয়ে আসে। রিকের গরম নিশ্বাস রিফার মুখের ওপর পড়ছে। রিফা এবার চোখ খিচ ধরে বন্ধ করে নেয়। রিক আস্তে আস্তে নেশাক্ত কন্ঠে বলে,
– তোমার মাঝে এতো নেশা কেন? নিজেকে দূরে রাখতেই পারছি না। কি নেশায় ডুবিয়ে দিলে।
রিফা বুকের ভিতর টর্ণেডো হয়ে যাচ্ছে। তবুও কোনো কথা বলতে পারছে না। নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে।
-লাগছে হাতে
রিক এবার একটু ছেড়ে দেয়। এই সুযোগে রিফা রিক কে ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। আর যাওয়ার সময় বলে যায়,
-এই বার যদি আমাকে ধরতে পারেন তাহলে আপনাকে নিয়ে ভেবে দেখবো। আর নিচে সবাই খুজছে আপনাকে আসুন
রিক রিফার এমন কান্ডে বোকা বনে চলে গেলো। কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থেকে মুচকি হেসে চলে আসে। ফ্রেস হয়ে রাইয়ান সাহেব কে চেকআপ করে হসপিটালে চলে যায়। আর রিফা মেহুল কলেজে।
রিক অনেক বার রিফার কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করেছে কিন্তু রিফা রিকের কাছে ধরা দেয় নি। সব কিছু ঠিক ঠাক চলছে। এভাবে চলে যায় তিন মাস,
এখন রাইয়ান সাহেব পুরোপুরি সুস্থ। চৌধুরী বাড়ি তে এখন আর বিপদ নেই। মিরা কে ছেড়ে দিয়েছে। মিরা তার বাবা মায়ের কাছে বিদেশ চলে গিয়েছে। ঈশান কে পুলিশের হাতে দেওয়া হয়। আর আদি এখনো রিয়ানের কাছে। আদি আগের তুলনার কিছু টা শান্ত। আদিও নিজের বাবা মায়ের কাছে ফিরতে চায়।
এই তিন মাসে রিফাও রিকের প্রতি দুর্বল হয়েছে। রিকের হুট হাট জড়িয়ে ধরা, হুট হাট গালে কিস করা, নেশাক্ত চোখের চাহনি। সব কিছু তেই রিফা আটকে যাচ্ছে। আজ রিয়ান আসছে ১০ দিনের ছুটি তে। বাড়ির সবাই অনেক খুশি। মেহুল আর রেহানা বেগম রিয়ানের জন্য রান্না করছে। আজ সব চেয়ে ব্যস্ত যেন মেহুল। একবার ঘর গোছাচ্ছে তো একবার রান্না ঘরে যাচ্ছে। এটা বানাচ্ছে ওটা বানাচ্ছে। এর মধ্যেই কলিং বেলের আওয়াজ হয়। মেহুল দৌড়ে দরজা খুলে দেখে,
#চলবে