তার শহরের মায়া পর্ব-৩৮

0
1010

#তার_শহরের_মায়া 😍
#পার্ট_৩৮
#Writer_Liza_moni

অফিস থেকে এসে তনু কে কোথাও দেখতে পেল না মাহির।টাই টা খুলতে খুলতে রুমে গিয়ে কিছুক্ষণ তনু কে ডাক দিল। কিন্তু তনুর কোনো সাড়া শব্দ পেল না।

ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে কোট টাই খোলার সময় চোখ পড়লো প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিটের দিকে।
মাহির সেটা হাতে নিয়ে দেখে পজেটিভ। তখন যেনো মাহিরের খুশির বাঁধ ভেঙ্গেছে।এত খুশি হয়েছে বলার মতো না।

ও আচ্ছা এই জন্য তাহলে আমার তনু রানি আমার সামনে আসছে না। লজ্জা পাচ্ছে আমাকে এটা বলতে,,,

তনু তখন মাহিরের রুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে মাহিরের আনন্দ দেখছিলো। একটু আগেই সে অনুর ওখান থেকে এসেছে। রুমে এসে মাহিরের হাতে প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট টা দেখে আর এগোয় নি। সেখানে দাঁড়িয়ে দেখছিলো মাহির কেমন রিয়েকশন করে,,,,

মাহিরের চোখ দরজার দিকে পড়তে সে আনন্দিত কন্ঠে বলে উঠলো তুমি আমাকে কতটা খুশি করেছো তুমি নিজে ও জানো না। মাহির তনু কে পাজ কোলে তুলে ঘুরতে লাগলো।
তনুর কোনো রিয়েকশন নেই।সে স্তব্ধ হয়ে আছে।

হঠাৎ মাহির ভ্রু কুঁচকে তনু কে কোল থেকে নামিয়ে বিছানায় বসিয়ে নিজে ফ্লোরে হাঁটু গেড়ে বসে বললো ,,,

তনু তুমি খুশি হওনি? তোমার চোখ মুখের এই অবস্থা কেন?তনু তুমি মা হবে এর চেয়ে খুশির খবর আর কি আছে বলো,,? ছোট্ট একটা প্রান তোমার পেটে ধীরে ধীরে বড় হবে,, তুমি তার নড়াচড়া অনুভব করবে,,
যখন সে দুনিয়াতে আসবে তখন ছোট ছোট হাত দিয়ে তোমার আমার হাত ধরে খেলা করবে,, ছোট ছোট পা দিয়ে এক পা দু’পা করে হাঁটবে,,,আধো আধো বুলিতে আমাদের মা বাবা বলে ডাকবে,,, তখন এক অন্যরকম অনুভুতি হবে,,, তুমি খুশি নও তনু,,,,

তনু এক দৃষ্টিতে মাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে। চোখের মধ্যে পানি টলমল করছে। এখনই গড়িয়ে পড়বে,,,
এই মানুষটা আমাকে ঠকাচ্ছে ?এত নিখুঁত অভিনয় করে,,,?

তনুর চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়লো। মাহির চমকালো,,,ফ্লোর থেকে উঠে তনুর পাশে বসে তনুর চোখের পানি মুছে দিল,,,

অস্থির কন্ঠে বললো তনু কী হয়েছে তোমার বলো আমাকে ? তুমি কান্না করছো কেন?এই তনু কিছু বলো,,,?

তনু মাহিরের চোখের দিকে তাকিয়ে বললো,,
আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কিছু সত্যি কথা বলবা?

হ্যাঁ অবশ্যই বলবো,,,তার পর ও তোমার কী হয়েছে আমাকে বলো তনু,,,

তোমার অফিসের কলিগ রিয়ার সাথে কত দিনের অবৈধ সম্পর্ক তোমার ?

তনুর কথা শুনে মাহিরের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো।সে বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বললো,,
রিয়া, রিয়া তো আমার বন্ধু রাশেদের বউ,,, আমরা একই অফিসে চাকরি করি। কিন্তু ওর সাথে আমার সম্পর্ক ,,,এই গুলো কী বলছো তুমি?

তনু বিছানার উপর থেকে মাহিরের মোবাইলটা হাতে নিলো।তার পর মেসেঞ্জারে গিয়ে ভ্রু কুঁচকে ফেললো,,, এখানে কোনো চ্যাট নেই তো রিয়ার সাথে,,,

মাহির বুঝলো সব কিছু,,,
মাহির একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে তনুর পাশে বসলো,,,
আমার প্রতি তোমার এই বিশ্বাস তনু,,?
শুনো তাহলে,,
তুমি যে মোবাইল টা দেখে ছিলে সেটা রাশেদের ছিল। মোবাইলে কিছু প্রবলেম হয়েছিল বলে সেটা আমাকে দিয়ে ছিল আমাদের ফ্লাটের সামনের যে মোবাইল সার্ভিসিং এর দোকান টা আছে সেখানে ঠিক করে দেওয়ার জন্য,,,
ও বনানী থেকে মিরপুর আসতে চায়নি।তাই আমাকেই দিয়ে ছিল।ওর মোবাইলে লক ছিল না তাই তুমি ওদের মেসেজ গুলো দেখে ভেবেছো আমি,,,

মাহির থামলো,,,
আমার বুঝতে ভুল হয়েছে,,,এত বড় ভুল,,

মাহির আবারো বলতে শুরু করল,,
আমার মোবাইল তুমি চিনো না,,? কিছু কী পেয়ে ছিলে আমার মোবাইলে,,?

মেসেজ গুলো দেখে তনুর মাথাই ঠিক ছিল না,,মাহিরের ফোনের মডেল কেমন আর সেই ফোনের মডেল কেমন,,?

আমি মোবাইল টা দোকানে দিয়ে আসছি,, তুমি চাইলে আমি মোবাইলটা এনে সব কিছু তোমাকে দেখাতে পারি,,,

অনু কে কেন ঠকিয়েছো ?

মাহিরের বুকের মাঝে ধক করে উঠলো।গলা শুকিয়ে গেল। কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,,
তনু বিশ্বাস করো আমি,,,,
মাহিরের মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না।তনু তাচ্ছিল্য হাসলো।বসা থেকে উঠে গিয়ে এক গ্লাস পানি এনে মাহির কে দিল।

মাহির ডগডগ করে পানি খেয়ে নিয়ে ফোঁস করে একটা নিঃশ্বাস ছাড়লো।

তনু শান্ত কন্ঠে বললো,,
সামান্য বাজি ধরে তুমি আমার বোনের জীবনটাকে শেষ করে দিয়ে ছিলে ? আমি জানতাম আমার বোনটার কারো সাথে সম্পর্ক ছিল। তিন বছরের সম্পর্ক।যাকে আমার অনু সব থেকে বেশি বিশ্বাস করতো ভালোবাসতো,,,,
আমার বোনের গায়ে আমি কখনো একটা আছর দিইনি।ও আমার কলিজার টুকরা।ওরে ছাড়া আমি নিজেকে ভাবতে পারি না। আমার আর কোনো ভাই বোন নেই।অনুই আমার একটা মাত্র আদরের ছোট বোন। আমার সেই বোনকে কষ্ট দিতে তোমার বাঁধেনি বিবেকে?
তুমি কল্পনা করতে পারবা অনু কে ঠিক আমি কতটা ভালোবাসি?ওরে আমি ভেঙ্গে যেতে দেখে আমার নিজের মনটা ভেঙ্গে গিয়েছিল। আমার ভালোর জন্য, আমার পরিবারের সম্মান বাঁচানোর জন্য বিয়ের দিন অনু নিজের ভালোবাসা কে কোরবানি দিয়ে আমাদের কাউকে কিছু জানায়নি।সে দিন যদি ও আমাকে তোমার আর ওর সম্পর্কের কথা বলতো তাহলে কিন্তু আমি বিয়েটা করতাম না।

তনু থামলো,,, খুব কষ্ট হচ্ছে তার,,,
কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পরে আবারো বললো,,
জানো অনু যখন ঢাকায় থেকে আমাকে কল করতো,,
বেশিরভাগ সময় ধরে শুধু তার ভালোবাসার মানুষটির প্রশংসা করতো। আমি ও অনুর মুখে তার প্রশংসা শুনে মনে করতাম আমার বোনটা একজন ভালো মানুষ কে ভালোবাসেছে,,, সঠিক কাউকে বিশ্বাস করেছে,,মে আমার বোনের জন্য পারফেক্ট,,,
কিন্তু আমি ভুল,, আমার সব ধারণা ভুল,,,

মাহির থ মেরে বসে আছে।সব সত্যি তনু একদিন জানতো। কিন্তু সেই দিনটা যে আজই হবে তা ভুলে ও ভাবেনি সে।আজ জীবনের শ্রেষ্ঠ একটা দিন মনে হচ্ছে তার কাছে।এক দিকে তার বাবা হওয়ার আনন্দ,, অন্য দিকে তার সব কুকর্মর কথা ফাঁস তনুর কাছে,,,
কিন্তু অনু আজই কেন সব তনু কে বললো,,?

রিয়া মেয়েটা ঐ মোবাইলেই সকালে কল করে ছিল। দুনিয়ার সবাই জানে তোমার আর অনুর সম্পর্কের কথা,, শুধু আমিই জানতাম না। জানি না আমি ও মেয়েটা কেন আমাকে তোমার আর অনুর সব কথা বলে দিয়েছে ? কিন্তু ভালোই করেছে,,,
মাহির তুমি আমাকে এক দেখায় ভালোবাসতে পারলে কিন্তু তিন বছর অনুর সাথে থেকে ওকে ভালোবাসতে পারোনি ? তোমার মতো একটা নিকৃষ্ট মানুষের সাথে আমি সংসার করবো এই কথা ভুলে যাও তুমি। আমি তোমাকে ডিভোর্স দিবো মাহির,,,,

মাহিরের দুনিয়া যেনো থমকে গেছে।দম বন্ধ হয়ে আসছে তার। তনুর কথা টা হজম হচ্ছে না তার। বুকের বাঁ পাশে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে মাহির এর,,,,

মাহির একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,,,
তোমাকে দেখার পর থেকে আমার আর কাউকে ভালো লাগেনি তনু,,,অনুর সাথে আমি জোর পূর্বক রিলেশনে ছিলাম।ব্রেক আপ করার কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছিলাম না। সামান্য ঝগড়া হলেই অনু কান্না করে শেষ হয়ে যেতো। আমি কী করবো আমার মাথায় কিছু আসছিল না।তনু বিশ্বাস করো আমি সত্যিই তোমাকে ভালোবাসি। ভীষণ ভালোবাসি তনু।

মাহিরের গালে বেয়ে টপ টপ করে পানি গড়িয়ে পড়লো।নিজেকে ভীষণ অপরাধী মনে হচ্ছে। মাহির তনু কে কিছু বলতে না দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে অনুদের ফ্লাটে চলে গেল,,,

তূর্য একটু আগেই অফিস থেকে আসছে,,,ফ্রেশ হওয়ার জন্য ওয়াস রুমে চলে গেল।অনু তূর্যর জন্য খাবার গরম করতে লাগলো। এমন সময় কলিংবেল বেজে উঠলে অনু গিয়ে দরজা খুলে দেখে মাহির দাঁড়িয়ে আছে। তার কিছু টা দূরে তনু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কান্না করছে।মাহফিলের চোখ লাল হয়ে গেছে। চোখের মধ্যে পানি টলমল করছে।

ওদের এই অবস্থা দেখে অনুর বুকের মাঝে ধক ধক করে উঠলো।হাত পা আসাড় হয়ে গেল যেনো,,,
ওদের এই অবস্থা দেখে অনু ঠিক কী করবে বুঝতে পারছে না,,,
কোনো রকম দরজার সামনে থেকে সরে এসে দাঁড়াল।

মাহির ভেতরে ঢুকে গেল।তনু ও ভেতরে ঢুকল। মাহির অনুর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে বললো,,,

আমাকে তুমি মাফ করে দাও অনু। আমি বাজি ধরে তোমার জীবনের তিনটা বছর নষ্ট করে দিয়েছি,,,
অনু আমি তনু কে ভীষণ ভালোবাসি। আমার সন্তান কে আমার ভালোবাসার মানুষটিকে তুমি আমার কাছ থেকে কেড়ে নিও না অনু। আমাকে তুমি মাফ করে দাও। আমি একটা রাত ও শান্তি তে ঘুমাতে পারিনা অনু। নিজের কাছে নিজেকে অপরাধী মনে হয়। আমি বাজি ধরে তোমার জীবন টা নষ্ট করতে চাই নি। আমাকে তুমি ক্ষমা করে দাও অনু।

অনু স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।কী বলবে ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না। মাহিরের চোখ থেকে অনবরত পানি গড়িয়ে পড়ছে।তনু এক কোনায় দাঁড়িয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে। তার ও চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে অনবরত।

তূর্য ওয়াস রুম থেকে বের হয়ে তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে ড্রইং রুমে এসে দেখে মাহির অনুর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে আছে। মাথা নিচু করে,,,
তনু এক কোনায় দাঁড়িয়ে কাদঁছে।

তূর্য ভ্রু কুঁচকে অনুর দিকে তাকালো।অনু অসাহায় দৃষ্টিতে তূর্যর দিকে তাকিয়ে আছে।অনুর চোখ থেকে ও কয়েক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়লো।

মাহির আবারো বললো,,
অনু আমি তোমার পায়ে ধরে ক্ষমা চাইবো,,,তবু ও আমাকে তুমি ক্ষমা করে দাও।তনু কে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না,,ওরে বলো না আমাকে ছেড়ে না যেতে । আমি মরে যাবো অনু,,, আমার সন্তান, আমার তনু কে ছাড়া আমি সত্যিই মরে যাবো অনু,,,,

মাহির অনুর পা ধরতে গেলে অনু সরে গিয়ে বলল,,
কি করছেন এই সব,,? পাগল হয়ে গেছেন?

তূর্য অনুর পাশে এসে দাঁড়াল।মাহিরের দিকে তাকিয়ে থমকে গেল তূর্য।মাহিরের গালে বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে।
বিধ্বস্ত এক অবস্থা মনে হচ্ছে।

.
ড্রইং রুম জুড়ে পিনপতন নীরবতা।অনু চুপ করে সোফায় বসে আছে। তূর্য ও হাঁটুতে কনুই রেখে গালে হাত দিয়ে ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে আছে,,,

তনু স্বব্ধ হয়ে ফ্লোরে বসে আছে। মাহির ও ফ্লোরের বসে আছে।ডিভোর্সের কথা শুনে মাহিরের কলিজা টা যেনো ছিঁড়ে যাচ্ছে।আজ তার খুশির দিন।সে যে বাবা হবে,,,এর চেয়ে খুশির খবর আর কি আছে একজন বিবাহিত পুরুষের কাছে,,, একটা ছোট বাবু তাকে আধো আধো বুলিতে আব্বু আব্বু বলে ডাকবে,,,,আর আজকের এই দিনে মাহিরের কষ্ট হচ্ছে ভীষণ।

তনু ও তো মাহির কে ভালোবাসে,, ভালোবাসার মানুষের তো হাজার ভুল ক্ষমা করে দেওয়া যায়,,,তার পেটের মধ্যে থাকা প্রানটার বাড়াতো মাহির,,,কী করে এই লোকটা কে ছাড়বো আমি?
.
.
নিরবতা ভেঙ্গে অনু বললো,,,
ধন্যবাদ আপনাকে মাহির। আপনি আমাকে ছেড়ে গেছেন বলেই আমি তূর্যর মতো কাউকে পেয়েছি। তূর্য কে পাওয়ার পর এই কয়েক দিন আমার আর আপনার কোনো সম্পর্ক ছিল সেটা আমি প্রায় ভুলতে বসেছি। আপনার বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই।

আপু আমি যদি চাইতাম তাহলে বিয়ের দিন সব বলতে পারতাম। আমি জানি তুই উনাকে খুব ভালোবাসিস। উনি ও তোকে ভীষণ ভালোবাসে। ওনার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখ,,তোকে হারানোর ভয় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে তার চোখে।তোকে হারানোর ভয়ে কাঁদছে তিনি। অতীত সেটা সবার জীবনেই থাকে। অতীত আঁকড়ে ধরে থাকার কোনো মানে হয় না। আমি তো এই মানুষটার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছি। ভালো আছি তার সাথে।

একটা সত্যি কথা বলবো,,,
অনু তূর্যর মুখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো,,
এই তূর্য নামাক মানুষটাকে আমি ভালোবেসে ফেলেছি। ভীষণ ভালোবাসি আপনাকে তূর্য সাহেব।

তূর্য মুচকি হেসে বললো আমি ও এই মেঘুপাখি কে ভীষণ ভালোবাসি।

অনু মিষ্টি হাসলো।
তার পর আবার ও বললো,,,
আমি চাই না একটা অসুন্দর অতীত নিয়ে তোরা তোদের সংসার ভাং,,, তোরা একে অপরকে ভালোবাসিস। তোদের ভালোবাসার চিহ্ন হিসেবে একটা প্রান আসবে দুনিয়ায়।
তোরা সুখে থাক এটাই আমি চাই,,,,সব সময়,,,

চলবে,,,, 🍁