(রুমান্টিক এলার্ট,অতিরিক্ত রুমান্টিক গল্প পছন্দ না তারা দূরে থাকুন)(১৮+ এলার্ট🌚)
#তুই_আমার_আসক্তি
#পর্ব_৭
#লেখিকা_তাসনিম_তালুকদার_বুশরা
কপি করা বিশেষ ভাবে নিষিদ্ধ ❌
নেহার: কণ্ঠটা কেঁপে উঠলো। স্নেহার চোখের দিকে তাকিয়েই বললো,জান, প্লিজ রাগ করিস না। আমি আর তোর সাথে কখনো এমনটা করবো না, সত্যি বলছি। আমি আর কোনোদিন রাগ করবো না। তুই আমাকে যা-ই বলিস, আমি সব মাথা পেতে মেনে নেবো। আমি মাথা ঠিক রাখতে পারি নি তুই আমাকে অবিশ্বাস করেছিস ভেবেছিলাম।
স্নেহা: তীব্র কণ্ঠে উত্তর দিলো,ওটা অবিশ্বাস না নেহার ভাই, ওটাকে বলে জেলাসি। আমি তোমাকে ভালোবাসি, আর তোমাকে অন্য কোনো মেয়ে গোলাপ দিলে আমার খারাপ লাগবে না নাকি? আমাকে যদি অন্য কোনো ছেলে গোলাপ দেয়, তোমার ভালো লাগবে?
নেহার: হঠাৎ থমকে গেল। গলায় যেন কাঁটা বেঁধে এলো। নরম সুরে বললো,আমি বুঝতে পারি নি জান আমি সত্যিই সরি। এবারের মতো ক্ষমা করে দে।
স্নেহা আর কিছু বললো না। তার চোখ ভিজে উঠলো। ধীরে ধীরে মাথা নিচু করে কান্না চেপে রাখতে না পেরে ফুপিয়ে উঠলো। নেহার অসহায়ের মতো তার দিকে তাকিয়ে থাকলো, যেন পৃথিবীর সব শব্দ থেমে গেছে, শুধু স্নেহার কান্নার শব্দ বুকের ভেতর ছুরি চালিয়ে যাচ্ছে।
হঠাৎ আকাশটা কালো মেঘে ঢাকা দিলো, দূরে বিদ্যুৎ ঝলকাতে লাগলো। হালকা বৃষ্টির ফোঁটা ভিজিয়ে দিচ্ছে চারপাশ। ঠান্ডা বাতাস বইছে, কিন্তু তার চেয়েও শীতল হয়ে আছে স্নেহার বুকের ভেতর। চোখ নামিয়ে কান্না সামলাচ্ছিলো সে।
হঠাৎ নেহার আস্তে করে তার থুতনিতে হাত রাখলো। আঙুলের ছোঁয়ায় স্নেহা চমকে মাথা তুললো। ঠিক তখনই নেহার ঝুঁকে এলো আর কোনো সতর্কতা না দিয়েই ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দিলো।
স্নেহা প্রথমে হতবুদ্ধি হয়ে গেলো। লোকটা কী করছে! ভেতরে ভেতরে ধাক্কা দিতে চাইলো, নিজেকে ছাড়াতে চাইলো। কিন্তু নেহার তার কোমর শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। সেই বন্ধন থেকে বেরোনো আর সম্ভব হলো না।
বৃষ্টি তখন আরও ঘন হয়ে আসছে, চারপাশ নিস্তব্ধ। শুধু হৃদস্পন্দনের শব্দ যেন বেজে উঠছে তাদের বুকের ভেতর। নেহার একের পর এক গভীর চুম্বনে তাকে গ্রাস করতে লাগলো। ধীরে ধীরে স্নেহার ভেতরের প্রতিরোধ গলে যেতে লাগলো।
কিছুক্ষণ পর সে চোখ বন্ধ করে দিলো স্নেহা আর নিঃশব্দে আত্মসমর্পণ করলো সেই চুম্বনের কাছে। ঠান্ডা বাতাস, ভিজে যাওয়া চুল আর বৃষ্টির ফোঁটায় ঘেরা মুহূর্তে, দু’জন হারিয়ে গেলো এক অচেনা, অদ্ভুত মায়াবী অনুভূতিতে।
কিছুক্ষণ পর নেহার টের পেলো স্নেহার নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসছে। হঠাৎই সে তাকে ছেড়ে দিলো। মুক্তি পেয়ে স্নেহা হাঁপাতে লাগলো, বুক ওঠানামা করছে দ্রুত ছন্দে। নেহার দাঁত দিয়ে নিজের ঠোঁট কামড়ে তাকে গভীর দৃষ্টিতে দেখতে থাকলো—সেই দৃষ্টিতে ছিলো এক অদ্ভুত অস্থিরতা, যা স্নেহাকে আরও কাঁপিয়ে দিলো।
স্নেহা যখন একটু স্বাভাবিক হলো, ঠিক তখনই নেহার হঠাৎ তার ওড়নাটা টেনে খুলে দিলো। স্নেহার চোখ বিস্ময়ে বড় হয়ে গেলো, কিন্তু প্রতিবাদ করার আগেই নেহার তার গলায় মুখ গুঁজে দিলো। ভেজা চুলের গন্ধ, ত্বকের উষ্ণতা আর ঠান্ডা বৃষ্টির ফোঁটা একাকার হয়ে যাচ্ছিলো।
স্নেহা: কাঁপা গলায় ফিসফিস করে বললো,নে… নেহার ভাই.. এ..খানে বৃষ্টি আ…সছে রু…রে চ…লুন।
কিন্তু ততক্ষণে নেহার তার গলদেশ ভিজিয়ে দিয়েছে উন্মত্ত চুম্বনে। তার ঠোঁটের ছোঁয়া যেন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছিলো স্নেহার শরীরজুড়ে। স্নেহার কথাগুলো কানে যেতেই নেহার কণ্ঠ গভীর হয়ে উঠলো, যেন অন্ধকার রাতের গহ্বর থেকে ভেসে এলো
নেহার: ডোন্ট ডিসটার্ব মি, জান…
সেই স্বরটা এতটাই তীব্র আর অস্থিরতায় ভরা যে স্নেহার শরীর শিহরে উঠলো। তার ঠোঁট কাঁপলো, কিছু বলতে চাইলেও শব্দ আর বের হলো না। সেও জানতো—এই মুহূর্তে নেহারকে থামানোর ক্ষমতা তার নেই।
বৃষ্টি তখন আরও জোরে পড়ছে। আকাশজুড়ে বজ্রপাত, কিন্তু সেই ঝড়ের চেয়েও তীব্র ঝড় বয়ে যাচ্ছে তাদের দু’জনের ভেতর।
নেহার আস্তে আস্তে স্নেহার জামার চেইন নামিয়ে দিলো। মুহূর্তেই জামাটা খুলে গায়ে থেকে ছিটকে পড়লো ভিজে বেলকনির মেঝেতে। ঠান্ডা বাতাসে স্নেহার শরীর হালকা কেঁপে উঠলো। নেহার এক ঝটকায় হাঁটু গেড়ে বসলো তার সামনে, তারপর নিঃশ্বাস মিশিয়ে দিলো স্নেহার নাভির ওপরে। এক দীর্ঘ, গভীর চুম্বন—যেনো সেখানে নিজের নাম খোদাই করে দিলো।
স্নেহার শরীর কেঁপে উঠলো অনিয়ন্ত্রিতভাবে। নিজেকে সামলাতে সে নেহারের ভেজা চুল শক্ত করে খামচে ধরলো, কিন্তু চুল খামচে ধরা মানে তার কাছে আত্মসমর্পণ।
কিছুক্ষণ পর নেহার উঠে দাঁড়ালো, স্নেহার মুখের খুব কাছে মুখ নিয়ে এসে কানে ফিসফিস করে বললো,
নেহার:জান.. তোর শরীরে কি মধু মেখে রেখেছিস? যেখানে ঠোঁট রাখি সেখানেই অদ্ভুত মিষ্টি লাগে..!
স্নেহার ঠোঁট কাঁপলো, কিন্তু শব্দ বের হলো না। শুধু লজ্জায় তার গাল লাল হয়ে উঠলো। বৃষ্টির ফোঁটার আলো-ছায়ার খেলা সেই লজ্জাকে আরও স্পষ্ট করে তুললো।
হঠাৎই নেহার স্নেহার সেই লাল টকটকে হয়ে যাওয়া গালে দাঁত বসিয়ে দিলো। স্নেহা বিস্মিত হয়ে গেলো। নেহার থামলো না। সে কামড় থেকে ঠোঁট সরিয়ে নিলো, আর সঙ্গে সঙ্গে গালের সেই জায়গায় গভীর চুষে দিতে লাগলো। বৃষ্টির ফোঁটায় ভিজে তার ঠোঁট আর ত্বকের খেলা যেন এক পাগল করা ঝড়।
স্নেহার বুক দ্রুত ওঠানামা করছে, যেনো তার প্রতিটি নিঃশ্বাস ভেঙে যাচ্ছে ঝড়ে আক্রান্ত সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো।
নেহার আবারও স্নেহার ঠোঁটে ঠোঁট মেলালো। প্রথমে তার স্পর্শ ছিলো কোমল, সাবধানী কিন্তু মুহূর্ত পেরোতেই চুম্বনে ছড়িয়ে পড়লো অদ্ভুত এক উন্মাদনা। স্নেহা চেষ্টা করলো নিজেকে সামলাতে, কিন্তু নেহারের গভীর টান থেকে সে যেন ধীরে ধীরে হার মানতে শুরু করলো।
নেহারের হাত অনবরত খুঁজে বেড়াচ্ছিলো স্নেহার শরীরের প্রতিটি কোণ—প্রথমে তার আঙুলগুলো ছিলো নরম, সতর্ক—যেনো কেবল অনুভব করতে চাইছে প্রিয় মানুষটাকে। স্নেহা সেই স্পর্শে কেঁপে উঠলো, নিঃশ্বাস ভারী হয়ে এলো।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নেহারের হাতের চলন হয়ে উঠলো তীব্র, অস্থির। তার আঙুলগুলো যেন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছিলো স্নেহার শরীর জুড়ে। স্নেহা বারবার নিজেকে সামলাতে চাইলো, কিন্তু নেহারের আগ্রাসী স্নেহ তাকে পাগল করে দিচ্ছিলো।
নেহার ধীরে ধীরে ঠোঁট সরিয়ে নিলো স্নেহার ঠোঁট থেকে। মুহূর্তেই তার মুখ নামতে লাগলো নিচের দিকে, তারপর থেমে গেলো স্নেহার বুকের ওপর। ঠান্ডা বাতাসে ভিজে ওঠা ত্বকে নেহারের উষ্ণ ঠোঁট স্পর্শ করতেই স্নেহার সারা শরীর কেঁপে উঠলো।
প্রথমে তার ঠোঁট ছিলো মৃদু, পরখ করে দেখা চুম্বনের মতো। কিন্তু ধীরে ধীরে তা রূপ নিলো তীব্র, অনিয়ন্ত্রিত উন্মাদনায়। নেহারের প্রতিটি চুম্বন যেন দখলদারীর মতো গভীর হয়ে উঠছিলো, আর সেই অনুভূতি সামলাতে না পেরে স্নেহার ঠোঁট ফসকে বেরিয়ে এলো অদ্ভুত, অচেনা শব্দ।
সেই শব্দ নেহারের ভেতরে যেন আগুন ধরিয়ে দিলো। তার চোখ জ্বলে উঠলো অন্ধকারে, দমকহীন বৃষ্টির ফোঁটার মতো তার আবেগ আর নিয়ন্ত্রণ গড়িয়ে পড়তে লাগলো। স্নেহার নিঃশ্বাস, তার অস্থির কণ্ঠ, সব মিলিয়ে নেহার আরও পাগলপারা হয়ে উঠছিলো।
বেলকনির ওপর ভারী বৃষ্টি পড়ছিল। ঠান্ডা বাতাস ভিজে যাওয়া চুলে লাগছে, এবং ফোঁটার শব্দ তাদের চারপাশে গুমোট এক রহস্যময়তা তৈরি করছে। নেহার কিছুটা শান্ত হলে, স্নেহার নিঃশ্বাস সঙ্গে সঙ্গে তার বুকের ওঠানামা স্পষ্ট হয়ে উঠলো।
নেহার হঠাৎ স্নেহাকে আরও কাছে টেনে নিল। কানে ফিসফিস করে বললো,
“আল্লাহুম্মা জান্নিবনা শয়তান, ওয়া জান্নিবিশ শয়তান মা রাযাকতানা।”
স্নেহার চোখ বড় হয়ে গেল। ভিজে থাকা চোখে আতঙ্ক আর বিস্ময় একসাথে ফুটে উঠলো। সাথে সাথে চিৎকার করে উঠলো,
“ওহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহ…!”
নেহার কণ্ঠ ধীরে, গভীর—জান, একটু ধৈর্য ধর।একটু পর মজা পাবে।
স্নেহা নেহারের পিঠে হাত দিয়ে চাপ দিতে থাকলো। তার স্পর্শ নেহারের ভেতর এক অদ্ভুত উত্তেজনা জাগাচ্ছিল। বৃষ্টির ফোঁটার সঙ্গে মিশে সেই মুহূর্ত যেন সময়কে থমকে দিয়েছে।
স্নেহা নিজেকে সামলাতে দাঁত দিয়ে নিচের অধর খানা কামড়ে ধরলো।
নেহারের চোখে দেখা যাচ্ছিল আবেগ, যত্ন আর একধরনের অধিকারবোধ। স্নেহার নিঃশ্বাস, বারংবার কেঁপে ওঠা আর “ওহহহ” শব্দ যেন তাদের দু’জনের আবেগকে আরও গভীর করে তুলছিল।
~~
কিছুক্ষণ পর নরম কণ্ঠে বললো,
নেহার: জান, মজা পাচ্ছিস…?
স্নেহা হালকা কণ্ঠে উত্তর দিলো,
“হুমম”
নেহারের চোখে ঝিলিক খেললো। সে আরও কাছে ঝুঁকলো, হাতের স্পর্শ দিয়ে স্নেহাকে সামলাতে লাগলো।
নেহার: তাহলে আরও রেসপন্স করো,ফিসফিস করে বললো।
স্নেহা: লজ্জায় মুখ ঝাপসা করে, হালকা কণ্ঠে বললো, “হুমম.. করছি তো।”
নেহার: হেসে বললো—আরও একটু কর, জান। দেখবি, আরও মজা লাগবে।
স্নেহা: সামান্য লজ্জায় মাথা নিচু করে বললো,”এর থেকে আরও বেশি রেসপন্স কিভাবে করে, আমি জানি না।”
নেহারের চোখে উন্মাদনা বেড়ে গেলো। সে আরও কাছে ঢোকলো, কণ্ঠ গভীর করে বললো—
“চেষ্টা কর… পারবি, জান।
বাহিরে ভারী বৃষ্টি চলছিল। ভিজে বাতাস আর ঠান্ডা ফোঁটার মধ্যে, তাদের দু’জনের মধ্যে সেই রেসপন্সের খেলাটা যেন সময়কে থমকে দিলো—শুধু শারীরিক নয়, আবেগের টানাপোড়েনও বেড়ে গেল।
~~
রাত তিন টা কুড়ি।(বিশ🙂)
বেলকনির আলো আধো অন্ধকার, বাইরে এখনো বৃষ্টি ঝরে পড়ছে টুপটাপ শব্দে।
নেহার ক্লান্ত শরীর নিয়ে স্নেহার বুকে মাথা রাখলো। বৃষ্টির ছন্দের সঙ্গে যেন তার নিঃশ্বাসও মিশে গেল। স্নেহা আস্তে আস্তে নেহারের চুলের ভাঁজে হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলো—একটা অদ্ভুত শান্তি ছড়িয়ে পড়ছিলো ওদের মাঝে।
নেহার: ধীরে ধীরে ডাকলো,
“জাননন…”
স্নেহা কানে মুখ এনে বললো
“হুম?”
নেহারের: গলা কেঁপে উঠলো
এখনো রেগে আছিস আমার উপর…?
স্নেহা: মৃদু হেসে বললো,
না রাগ করে আর থাকতে দিলেন কোথায়…?
নেহার হেসে বুকের উপর থেকে মুখ তুলে স্নেহার চোখে চোখ রাখলো। গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে ফিসফিস করে বললো,
নেহার: তোকে ছাড়া দূরে থাকলে আমার কলিজাটা ফেটে যায়, জান। আমি তোর দূরত্ব একটুও সহ্য করতে পারি না। বল তো, কিভাবে আমাকে এতোটা আকৃষ্ট করলি তোর প্রতি…?
স্নেহা একটু ভ্রু কুঁচকে মিষ্টি স্বরে বললো,
স্নেহা: আমি কি জানি? আমি কি কাউকে বলেছি আমাকে ভালোবাসতে…?
নেহারের ঠোঁট বাঁকলো এক মায়াবী হাসিতে। তারপর এগিয়ে গিয়ে স্নেহার ঠোঁটে এক শব্দময় চুমু খেলো। তারপর গলায় গভীর স্বরে বললো,
বলে কি আর ভালোবাসা হয়? এটা তো এমনি এমনি হয়ে যায়।
এরপর হঠাৎই নেহার উঠে স্নেহা কে দুই হাতে কোলে তুলে নিলো। স্নেহা অবাক হয়ে তার বুকে মাথা গুঁজে ফেললো। পুরো শরীরে কাপড়ের ছিটেফোঁটা নেই—এতে তার ভেতর কেমন যেন শিহরণ আর লজ্জা মিলে এক অদ্ভুত অনুভূতি তৈরি হলো।
নেহার দৃঢ় ভঙ্গিতে বাথরুমের দিকে পা বাড়ালো। বৃষ্টির শব্দের মতোই ওদের হৃদয়ের ধ্বনি তখন ক্রমে জোরে বেজে উঠছিলো।
~~
বাথরুমের মৃদু আলোয় ভেজা কাঁচের গায়ে বৃষ্টির ছায়া খেলা করছিলো। স্নেহা কাঁপতে কাঁপতে দাঁড়িয়ে ছিলো, আর নেহার ধীর হাতে তার শরীর আস্তে আস্তে পরিস্কার করে দিলো। প্রতিটি স্পর্শে একধরনের যত্ন, একধরনের অধিকার মিশে ছিলো। কাজ শেষ হলে নেহার নিজের আলমারির থেকে একটা ঢিলেঢালা সাদা শার্ট এনে স্নেহাকে পরিয়ে দিলো।
তারপর কোমল ভঙ্গিতে কোলে তুলে বিছানায় বসিয়ে দিলো। স্নেহার দিকে তাকিয়ে হালকা হাসি দিয়ে বললো,
নেহার: জান, তুই বস আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।
স্নেহা শুধু মাথা নাড়লো। শরীর ঢেকে থাকলেও বুকের ভেতর কেমন যেন অদ্ভুত লজ্জা, অপরিচিত শিহরণ দোলা দিয়ে যাচ্ছিলো।
কিছুক্ষণ পর নেহার ফ্রেশ হয়ে ফিরে এলো। দরজার কাছে দাঁড়িয়েই তার চোখ আটকে গেলো স্নেহার দিকে সে একইভাবে চুপচাপ বসে আছে, ভেজা চুল থেকে ফোঁটা ফোঁটা পানি ঝরছে বিছানার চাদরে।
নেহারের মনে হালকা আতঙ্ক জাগলো। ভাবলো, এভাবে চুল থেকে পানি ঝরতে থাকলে অসুস্থ হয়ে যাবে।
তখনই সে হঠাৎ এগিয়ে এসে স্নেহাকে কোলে তুলে নিলো। অপ্রস্তুত স্নেহা ভয়ে নেহারের গলায় শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
স্নেহা: কাঁপা গলায় বললো,কি হয়েছে? কোলে নিচ্ছেন কেনো…?
নেহার: ঠোঁটে খেলাচ্ছলে কামড় দিয়ে হেসে উত্তর দিলো,তার মানে, তোর আমার সাথে থাকার ইচ্ছে?
স্নেহা: চোখ নামিয়ে উদাস স্বরে বললো,ইচ্ছে থাকলেই কি থাকতে তো আর পারবো না, তাই না?
কথাগুলো শুনে নেহারের চোখে গভীর দৃঢ়তা নেমে এলো। সে নিচু স্বরে বললো,প্রবলেম নেই, বউ খুব তাড়াতাড়ি আমি তোকে আমার কাছে নিয়ে আসবো।
এরপর কোনো উত্তর না দিয়ে স্নেহাকে আঁকড়ে ধরে নিজের বুকে আগলে নিয়ে নেহার ধীর পদক্ষেপে স্নেহার রুমের দিকে হাঁটতে লাগলো।
স্নেহার রুমে ঢুকে নেহার আস্তে করে তাকে খাটে বসিয়ে দিলো। তারপর টেবিলের ড্রয়ার থেকে হেয়ার ড্রায়ার নিয়ে তার ভেজা চুল শুকিয়ে দিতে লাগলো। মৃদু বাতাসে স্নেহার চুলগুলো এলোমেলো উড়ে যাচ্ছিলো, আর নেহারের চোখ আটকে ছিলো কেবল তার মুখে। যেন প্রতিটা ভেজা কণা নেহারের ভেতর অদ্ভুত মমতা জাগাচ্ছিলো।
চুল শুকানো শেষ হলে নেহার স্নেহাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে হালকা স্বরে বললো,
নেহার: তাহলে তুই থাক… আমি যাই?
স্নেহা: ঠোঁট উল্টে বাচ্চাদের মতো ভঙ্গিতে কাঁদো কাঁদো গলায় বললো,প্লিজ যাবেন না.. আমার একা একা ঘুমাতে ভালো লাগে না।
ওর নিষ্পাপ অনুরোধে নেহারের বুক হালকা কেঁপে উঠলো। আর না করতে পারলো না। চুপচাপ শুয়ে পড়লো স্নেহার পাশে। তারপর আস্তে করে তাকে টেনে নিজের বুকের ভেতর জড়িয়ে ধরলো। এমনভাবে আঁকড়ে ধরলো, যেন তাকে ছাড়া আর কিছুই প্রয়োজন নেই। দুই পায়ে স্নেহার শরীরটা সম্পূর্ণ নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো।
স্নেহা: নরম স্বরে বললো,আমি না কিছুদিন সত্যিই বাড়িতে গিয়ে থাকতে চাই।আপনি প্লিজ না করবেন না।
নেহার: কপালে ভাঁজ ফেলে দৃঢ় কণ্ঠে উত্তর দিলো
এসব কথা যদি আর একবার বলিস, তাহলে কিন্তু তর খবর আছে। তুই এখানেই থাকবি, যতোদিন না আমাদের বিয়ের কথা সবাইকে জানাই।
স্নেহা: ঠোঁট কামড়ে চুপ করে রইলো। কিছুক্ষণ পর মন খারাপের সুরে ফিসফিস করে বললো,কতো দিন পরে জানাবেন…?
নেহার: স্নেহার মুখের দিকে তাকিয়েই বুঝলো আবার ওর মন খারাপ হচ্ছে। তাই কোমল গলায় হাত বুলিয়ে বললো,আর তো কিছুদিন। আমার গ্র্যাজুয়েট শেষ হোক, তারপরই সবাইকে জানাবো। তোর তো সামনে পরীক্ষা—এখন কিভাবে যাস?
স্নেহা: নিঃশ্বাস ছেড়ে ধীর গলায় বললো আমি তো আপনার বউ তাহলে এত পড়ে কি হবে?
নেহার: ঠোঁটের কোণে হালকা হাসি ফুটলো। সে মাথা নাড়লো ধীরে ধীরে—পড়াশোনার ক্ষেত্রে কোনো কম্প্রোমাইজ নেই, জান। সবকিছু পরে, আগে তুই পড়াশোনা শেষ করবি। এখন ঘুমা পরে কথা হবে।
স্নেহা আর কিছু বললো না। নেহারের বুকে মুখ গুঁজে চোখ বন্ধ করলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলো।
নেহার দীর্ঘক্ষণ স্নেহার দিকে তাকিয়ে রইলো। চোখে চোখে যেন ওকে আগলে রাখলো। কখন যে তাকিয়ে থাকতে থাকতে তার নিজেরও ঘুম এসে গেলো, সে নিজেও বুঝতে পারলো না।
চলবে…..