তুমি অজান্তেই বেঁধেছ হৃদয় পর্ব-৩০ এবং শেষ পর্ব

0
1

#তুমি_অজান্তেই_বেঁধেছ_হৃদয়
#পর্ব_৩০ (অন্তিম পর্ব)
#মুন্নি_আক্তার_প্রিয়া
_________
সবকিছু শান্ত ও শিথিল। ঠিক যেন স্বপ্নের মতো। গতকাল শাপলার বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এত বড়ো বাড়ি থেকে বিয়ের প্রস্তাব এসেছে, তাই শাপলার পরিবার আর দ্বিমত করেনি। তমালেরও কোনো পছন্দ ছিল না আগে। তাই শাপলাকে বিয়ে করতে তারও সমস্যা নেই। ঐভাবে শাপলাকে পর্যবেক্ষণ না করলেও যতটুকু দেখেছে বা চোখে পড়েছে ততটুকুতেই সে বুঝতে পেরেছে, শাপলা খুব ভালো মনের একটা মেয়ে। বিশেষ করে অনুকে অনেক পছন্দ করে। এছাড়া ভীষণ মিশুকও সে। প্রতিটা ছেলেই তো নিজের জীবনসঙ্গী হিসেবে এমন কাউকেই আশা করে।

বিয়ে ঠিক হওয়ার পর থেকে ওদের ফোনে কথা হচ্ছে। তাও খুব কম। আজ সারাদিনে অবশ্য কথা হয়নি। গতকাল ডেট ফিক্সড হওয়ার পর দুবার কথা হয়েছিল। একবার তমাল ফোন করেছিল, আরেকবার শাপলা নিজেই।

শাপলা এখন হোস্টেলে থাকে। বিয়ের আগে সে শ্বশুরবাড়িতে থাকতে চায় না, তাই বাকিরা বলার পরও থাকেনি। তমাল তাই আজ ওর হোস্টেলে এসেছে দেখা করার জন্য। সাথে এনেছে তিনটা লাল গোলাপ ও শাপলার পছন্দের চকোলেট। এসব ব্যাপারে সে আনাড়ি। মাথায় ছিল না বা আসেওনি। আসার সময় আয়ান বারবার বলে দিয়েছে ফুল আর চকোলেট নিয়ে যেন আসে। মেয়েদের এই ছোটো ছোটো জিনিসগুলোই খুব পছন্দ। আয়ানের প্রেমের অভিজ্ঞতা আছে। কীসে মেয়েরা খুশি হয় সেটা জানাও খুব স্বাভাবিক। তাই আসার সময় ফুল আর চকোলেট নিয়ে এসেছে। কিন্তু ওর এখন খুবই লজ্জা লাগছে। না আনলেই বোধ হয় ভালো হতো।

শাপলা হোস্টেলের গেইট দিয়ে বের হচ্ছে। তমাল ওকে দেখেই ফুলগুলো পেছনে লুকিয়ে ফেলল। বুক ধুকপুক করছে। শাপলা তমালকে দেখতে পেয়ে মুচকি হেসে এগিয়ে এলো। তমালের অস্বস্তি মিশ্রিত মুখ দেখে জিজ্ঞেস করল,

“কী হয়েছে?”

তমাল রীতিমতো যেন ঘামছিল। হাসার চেষ্টা করে বলল,

“কই? কিছু না তো!”

“আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে, আপনি খুব নার্ভাস।”

“না, না আমি ঠিক আছি।”

“আচ্ছা। কোথায় যাবেন এখন?”

“কোনো রেস্টুরেন্টে গিয়ে বসি?”

“ঠিক আছে।”

শাপলা হাঁটা ধরলেও, তমাল না হেঁটে দাঁড়িয়ে আছে। শাপলা সন্দেহজনক দৃষ্টিতে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল,

“কী?”

“তোমার জন্য।” সাহস সঞ্চয় করে ফুলগুলো এগিয়ে দিল তমাল।

শাপলা যতটা না অবাক হয়েছে, তারচেয়েও বেশি খুশি হয়েছে। সে ভাবতেই পারেনি যে, তমাল ওর জন্য ফুল আনবে। কারণ তমালকে ওর শুরু থেকেই নিরামিষ মনে হতো। ফুলগুলো নিয়ে শাপলা সুন্দর একটা হাসি উপহার দিয়ে বলল,

“থ্যাঙ্কিউ।”

শাপলাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে, সামান্য ফুল পেয়েও অনেক খুশি হয়েছে মেয়েটা। আয়ান তাহলে মিথ্যে বলেনি। রিকশা ঠিক করে দুজনে উঠে বসেছে। পাশাপাশি বসেছে দুজন। তমাল জড়তা কাঠানোর চেষ্টা করে বলল,

“শাপলা, আরেকটা জিনিস আছে।”

শাপলা অবাক হয়ে জানতে চাইল,

“কী?”

তমাল পকেট থেকে তিনটা কিটক্যাট চকোলেট বের করে দিয়ে বলল,

“তোমার জন্য।”

শাপলা হেসে ফেলল। চকোলেট নিয়ে বলল,

“এতকিছু আমার জন্য? আমিই না প্রেমে পড়ে যাই আগে!”

তমাল লজ্জা পেয়ে মাথা নত করল। পরক্ষণে অন্যদিকে তাকিয়ে মুচকি হাসতে লাগল। শাপলা একহাতে তমালের হাত জড়িয়ে ধরে বলল,

“হবু বরের প্রেমে তো পড়া-ই যায়। যায় না?”

তমাল মাথা নাড়িয়ে হেসে বলল,

“যায়।”

“অনুমতি দিচ্ছেন তাহলে?”

“দিচ্ছি। এবং নিচ্ছিও?”

“কী নিচ্ছেন?”

“ভালোবাসার অগ্রাধিকার।”

শাপলা নিজেও এবার মাথা নত করে হাসছে লজ্জায়।
.
.

“এখন শুধু আর কিছুদিনের অপেক্ষা।”

জুঁই উঠানে বসে আচার খাচ্ছিল। আয়ান পাশে এসে বসেছে। জুঁই জিজ্ঞেস করল,

“কীসের অপেক্ষা?”

“কীসের মানে? আমাদের বিয়ের। তমাল ভাইয়ের বিয়েটা হয়ে গেলেই আমাদের বিয়েটাও হয়ে যাবে।”

“আচ্ছা।”

“খুব ভালো হতো যদি দুই ভাইয়ের একসাথেই হতো। আব্বু এবং চাচ্চুরা তো এটাই চেয়েছিল। মাঝখানে দাদু বাঁধা দিল। ভালো লাগে না!”

“খুব যে দেখছি বিয়ে করার তাড়া?”

“তাড়া থাকবে না? রিয়াদ ভাইয়া, রায়ান ভাইয়া মিলে আজ বউদের নিয়ে হানিমুনে যাচ্ছে। ওরা ফিরে এলে আবার তমাল ভাইয়ার বিয়ে। তারপর ওরাও যাবে হানিমুনে। আমার কি ইচ্ছে করে না?”

জুঁই লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে। লজ্জা ঢাকতে চোখ রাঙিয়ে বলল,

“একটা থা’প্প’ড় দেবো। মুখে কোনো লাগাম নেই। লজ্জা-শরমও কি দেয়নি আল্লাহ্ তোমাকে?”

“এখানে লজ্জার কী বললাম? বিয়ে করে হানিমুনে যাব না?”

“যাও ভাই যাও। তুমি এক্ষুনী যাও।”

আয়ান মনমরা হয়ে বলল,

“এক্ষুনী যদি যেতে পারতাম তাহলে তো ভালোই হতো। কিন্তু সেই কপাল তো আর নেই।”

“কত যে শখ তোমার!”

“কেন তোমার শখ নেই?”

জুঁই আবার লজ্জা পেয়ে গেল। কীসব প্রশ্ন! ধমক দিয়ে বলল,

“চুপ!”

“সবসময় এমন ধমকের ওপর রাখো কেন? একটু ভালোবেসে কথা বলতে পারো না?”

“না, পারি না।”

আয়ান মুখ কালো করে ফেলল। বিষণ্ণ কণ্ঠে বলল,

“মাঝে মাঝে মনে হয় তুমি আমাকে ভালোই বাসো না।”

“ঠিক বলেছ।”

“কী?”

“যা শুনলে।”

“আচ্ছা বেশ!”

আয়ান গাল ফুলিয়ে বসে আছে। জুঁই ঠোঁট টিপে হাসল কয়েক সেকেন্ড। এরপর আচমকা আয়ানের গালে চুমু খেয়ে বলল,

“ভালোবাসি কিনা এতবার মুখে বলতে পারব না।”

আয়ান জবাব দেওয়ার আগেই দেখতে পেল অনু নামছে সিঁড়ি দিয়ে। না চাইতেও দৃশ্যটা সে দেখে ফেলেছে। খুশি হওয়ার তাই আর সময় পায়নি আয়ান। উলটো ছোটো বোনের সামনে এখন লজ্জা পেতে হচ্ছে। জুঁই তো একছুটে চলে গেছে দাদার রুমে। এদিকে লজ্জার সমুদ্রে রেখে গিয়েছে আয়ানকে। সে থতমত খাচ্ছে বারংবার। অনুরও লজ্জায় ম’রি, ম’রি অবস্থা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে না কোনোভাবেই। উপায়ান্তরহীন হয়ে অনু নিজেই আবার ওপরে নিজেদের রুমে চলে গেল।

রায়ান লাগেজ নিয়ে বের হবে সেই সময় অনু এলো রুমে। ভ্রু কুঁচকে রায়ান জিজ্ঞেস করল,

“কী হয়েছে? ফিরে এলে কেন?”

অনু স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করে বলল,

“আপনার দেরি হচ্ছিল তাই।”

“আমার কোথায় দেরি হলো? এখনই তো বের হচ্ছিলাম।”

“আচ্ছা আপনি যান, আমি ভাবিকে ডেকে নিয়ে আসি।”

“ঠিক আছে।”

রায়ান নিচে নেমে দেখে রিয়াদ আগেই লাগেজ নিয়ে নিচে দাঁড়িয়ে আছে। মা, চাচিরা বারবার সাবধান করছেন। সতর্ক হয়ে যেন জার্নি করে। এদিকে ছোটোভাই আর সে একসাথে হানিমুনে যাবে বলে লজ্জায় ম’রে যাচ্ছে রিয়াদ। সে চেয়েছিল আরো কয়েকটা দিন পরেই যেতে। স্নিগ্ধার আবদারের কাছে অবশেষে হার মানতে হয়েছিল ওকে। হানিমুনে যাচ্ছে চারজন একসাথে মেঘের দেশে, সাজেক।

অনু স্নিগ্ধাকে নিয়ে নিচে নামল। ওকে দেখেই ছুটে এলো রোমিও। অনু ওর মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে দিচ্ছে। আয়ান বলল,

“যাওয়ার সময় আবার ওকে কোলে নিলি কেন?”

অনু না তাকিয়েই জবাব দিল,

“তাতে কী হয়েছে? রোমিও তোমার থেকেও পরিষ্কার।”

আয়ান ঢোক গিলল না। আর কিছু বলল না। অনু রোমিওর মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,

“আমি জলদিই ফিরে আসব কেমন? তুই কিন্তু একদম দুষ্টুমি করবি না। লক্ষ্মী বাচ্চা হয়ে থাকবি কেমন?”

রোমিও জবাবে বলল,

“ঘেউ, ঘেউ।”

অনু হাসল। আলমগীর চৌধুরী মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,

“সাবধানে যাস, এবং সাবধানে থাকিস মা।”

তাহমিনা বেগম বললেন,

“একা একা কোথাও যাবি না কিন্তু খবরদার। সবসময় রায়ানের সাথে সাথে থাকবি।”

“ঠিক আছে। তোমরা এত চিন্তা কোরো না তো।”

সবার থেকে বিদায় নিয়ে রায়ান, অনু, রিয়াদ এবং স্নিগ্ধা বেরিয়ে পড়েছে। প্রথমে এখান থেকে রেলস্টেশন যাবে। ট্রেনে কখনো অনুর চড়া হয়নি। এজন্য সে খুবই এক্সাইটেড এবং আনন্দিত। পুরোটা পথে ফুরফুরে মেজাজে ছিল। ট্রেনে উঠেও সে আনন্দে আত্মহারা। এই অল্পটুকু সময়ে স্নিগ্ধার সাথে মনে হয় হাজারটা ছবি তুলে ফেলেছে। এদিকে রায়ান এবং রিয়াদের মনে হচ্ছে ঘুরতে যাচ্ছে আসলে অনু ও স্নিগ্ধা। ওরা দুই ভাই তো আসলে ওদের বডিগার্ড জাস্ট। অবস্থা তো সেরকমই।

এতক্ষণ তোলা ছবিগুলো বসে বসে স্নিগ্ধার সাথে দেখছিল অনু। হঠাৎ সামনে তাকিয়ে দেখে রিয়াদ ঘুমুচ্ছে। রায়ান নেই। সে চারদিকে চোখ বুলিয়ে দেখতে পেল গেইটের কাছে দাঁড়িয়ে আছে। অনু উঠে গেল সেখানে।

“এখানে কী করছেন?”

রায়ান তাকিয়ে পালটা প্রশ্ন করল,

“তুই এখানে কী করছিস?”

“মা তখন কী বলেছে শুনেননি? আপনার সাথে সাথে থাকতে বলেছে সবসময়।”

রায়ান হেসে ফেলল। হেসে বলল,

“তুই তো আর এত বাধ্য মেয়ে নোস, অনু।”।

“তা ঠিক। কিন্তু বাধ্য বউ তো আমি।”

“তাই?”

“একদম।”

মাঝরাতে এসে রিসোর্টে পৌঁছাল ওরা। যতটা সময় লাগবে ভেবেছিল, ততটা সময় লাগেনি। রিয়াদ ফ্রেশ হয়েই শুয়ে পড়েছে। স্নিগ্ধা ওকে ধাক্কা দিয়ে বলল,

“আপনি আবার ঘুমাচ্ছেন?”

“রাতে ঘুমাব না তো কী করব?”

“কী করবেন মানে? এটা কি ঘুমানোর সময়? ট্রেনেও বসে বসে ঘুমিয়েছেন।”

“তাছাড়া আর কী করতাম? তুমি তো অনুর সাথে লেপ্টে ছিলে সারাক্ষণ। এত ছবি তোলা লাগে?”

“লাগে। আপনি সেসব বুঝবেন না। আপনি তো একটা নিরামিষ লোক।”

স্নিগ্ধা রাগ করে উঠে চলে যাচ্ছিল। রিয়াদ ওর হাত ধরে টেনে কাছে নিয়ে এলো। জড়িয়ে ধরে শুয়ে বলল,

“নিরামিষ আমিটাকে আমিষ বানিয়ে নিলেই তো পারো।”

স্নিগ্ধা লজ্জা পেয়ে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে বলল,

“আমার বয়েই গেছে।”

“বেশ! তাহলে আমি নিজে থেকেই আমিষ হই কী বলো? যা করতে এসেছি তা করে ফেলি।”

“ঘুমে মাথা গেছে?”

“উঁহু! মধু চন্দ্রিমায় এসেছি আর মধু খাব না তা কি হয়?”

স্নিগ্ধাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ওর ঠোঁট দুটো নিজের আয়ত্তে নিয়ে নিয়েছে রিয়াদ।
.

ঘুমে কাতর অনু। পুরো পথে তেমন ঘুম হয়নি। তাই এসেই ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়েছে। বালিশে মাথা রাখতে না রাখতে ঘুমিয়েও পড়েছে। সুখী মানুষ! রায়ানের চোখে ঘুম নেই। নির্ঘুম রাত জেগে সে অনুকে দেখছে। সে কখনোই ভাবেনি, এতটা গভীরভাবে অনু তার মনে দাগ কাটবে, ভালোবাসার বীজ বপন করবে। সে কখনোই ভাবেনি, অনু তার বউ হয়ে আসবে, দুজনে সারাজীবন একসঙ্গে থাকার প্রতিজ্ঞা নেবে। না ভেবেও আজ অনু তার বউ, তার ভালোবাসার মানুষ। কীভাবে যে অজান্তেই হৃদয়ের গভীরে জায়গা করে নিল তা রায়ান এখনো বুঝতে পারেনি। অবশ্য বুঝতে চায়ও না। কিছু জিনিস অমীমাংসিতই সুন্দর।

রায়ান উঠে গিয়ে অনুর পায়ের কাছে বসল ফ্লোরে। অনুর পায়ের পাতায় আলতো চুমু খেল। অনুর ঘুম ভেঙে গেল তখন। সে উঠে বসল আশ্চর্য হয়ে।

“কী করছেন!”

রায়ান মৃদু হেসে বলে,

“চাচ্চু যা করে।”

“আপনি…”

“হ্যাঁ, আমিও জানি। তুই বলেছিলি, তোর প্রতি নাকি আমার মোহ কাজ করছে। তোকে পেয়ে গেলে আর মূল্যায়ন করব না। কিন্তু তোকে পাওয়ার পর ভালোবাসা শুধু বেড়েই চলেছে। কেন বলত? কীভাবে অজান্তেই তুই হৃদয় চুরি করলি আমার?”

অনু তখনও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। রায়ান উঠে কাছে গেল। অনুর পাশে বসে হাত ধরে বলল,

“এত অবাক কেন হচ্ছিস? চাচ্চুর চাঁদকুমারী রাজকন্যাকে আমি তার মতোই আগলে রাখব।”

অনুর আনন্দে কান্না পাচ্ছে। সে কোনো জবাব দিল না। রায়ানের কাঁধে মাথা রাখল আলতো করে। রায়ান বলল,

“চল বারান্দায় যাই। খুব সুন্দর চাঁদ উঠেছে।”

অনুকে নিয়ে রায়ান বারান্দায় গেল। অন্ধকার হলেও চাঁদের আলোতে দূরের পাহাড় দেখা যাচ্ছে। কী সুন্দর লাগছে দেখতে! অনু মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে। রায়ান ওকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরল। কোমরে হাত রেখে জিজ্ঞেস করল,

“সুন্দর না?”

অনু মুগ্ধতা মেশানো কণ্ঠে বলল,

“ভীষণ!”

“ভোরের আলো ফুটবে যখন তখন তো চোখ-ই ফেরাতে পারবি না। যেমনটা আমি পারি না।”

“কী?”

“এইযে তোর থেকে চোখ ফেরাতে।”

অনু লজ্জা পেলেও হেসে বলল,

“হুম জানা আছে সব!”

অনুকে নিজের দিকে ফিরিয়ে বলল,

“তাই না? খুব জানিস? তাহলে বল তো কীভাবে আমি তোর প্রেমে পড়লাম?”

অনু ঠোঁট উলটে বলল,

“তা আমি কী করে জানব?”

“একটু আগেই তো বললি, সব জানা আছে।”

“ওটা তো আপনার কথার প্রেক্ষিতে বলেছি।”

“যাই হোক, অজান্তে যখন হৃদয় বেঁধেই ফেলেছিস, তখন কিন্তু আর এই বাঁধন ছেঁড়া যাবে না।”

“ছিঁড়তে কে চাইছে শুনি?”

“কেউ না। চাইলেও আর সম্ভব না। আমি তোর, তুই আমার।”

“আমি কে আপনার?”

রায়ান অনুর নাকে নাক ঘষে বলল,

“আমার লক্ষ্মী বউ।”

(সমাপ্ত)