#তুমি_আছো_মনের_গহীনে 💖
#পর্ব- ৫৫+৫৬ [ রহস্যের মায়াজাল সমাধান]
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)
‘ অভ্র আত্মহত্যা করেছে ‘কথাটি শুনে একপ্রকার স্তব্ধ হয়ে বসে থাকে মেহেভীন। চোখের কোন জল চিকচিক করতে থাকে। প্রাক্তনের এমন দুঃসংবাদ শুনার জন্যে সে মোটেও প্রস্তুত ছিলো না। মেহেভীনকে চুপ থাকতে দেখে আরহাম নিজেই মেহেভীনের থেকে ফোনটা কানে নিয়ে শুনতে পাই ইশরা বেগমের গলা ফাটানো আর্তনাদ। অভ্র নাকি নিজের হাত কেটে ফেলেছে। হাত থেকে নিগত রক্ত ফ্লোরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলো। ইশরা বেগম ছেলের জন্যে খাবার নিয়ে এসে এই কান্ড দেখে মুহুর্তেই
থমকে যান। রক্তাক্ত অবস্হায় মেঝেতে অজ্ঞান হয়ে শুয়ে ছিলো তার ছেলে। নিজের একমাত্র ছেলেকে এই অবস্হায় দেখে শব্দহীনভাবে মেঝেতে বসে কাতরাতে লাগলেন। অতঃপর পাড়ার কয়েকজন মিলে অভ্রকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছে। অভ্রের মা আর অপেক্ষা করেনা তিনি বুঝে গিয়েছেন আজ মেহেভীনকে না পাওয়ার কষ্টেই তার ছেলে এমন একটা কাজ করেছে। তাই তিনি দ্রুত মেহেভীনের নাম্বারে ফোন দিয়ে জানান বিষয়টি। ঘটনাটি শুনার পরে আরহামের মাথাও কেমন ফাঁকাফাঁকা লাগছে। এমন একটা মুহুর্তে তার ঠিক কি করা উচিৎ সে বুঝতে পারছে না। যতই হোক অভ্র তাই ভাই। তার ভাইয়ের এমন পরিনতি সে কখনোই আশা করেনি। আরহাম মেহেভীনের দিকে তাকাতেই সে দেখতে পায় মেহেভীন নির্বিকার ভঙ্গিতে ঠায় বসে আছে। অশ্রু গুলো বাঁধন ছাডা হয়ে শান্ত ভঙ্গিতে গড়িয়েই পড়ছে।
মেহেভীনের এমন নিরবতা আরহামের অস্হিরতাকে দ্বিগুনভাবে বাড়িয়ে তুলছে। আরহাম ঠোট নাড়িয়ে বলে,
‘ মেহেভীন হসপিটালে যাবে তো? ‘
‘ হ্যা যাবো আমি। আমায় নিয়ে চলুন আরহাম সাহেব।’
মেহেভীন স্পষ্টভাবেই জবাব দিলো। আরহাম অপেক্ষা করলো না তৎক্ষনাৎ গাড়ির চাবিটা নিয়ে
আরিয়ানকে সাথে নিয়ে মেহেভীন এবং সে বেড়িয়ে গেলো হসপিটালের উদ্দেশ্যে।
___________
হসপিটালে এসেই আরিয়ান এবং আরহাম সর্বপ্রথম ডাক্তারদের সাথে কথা বলতে চলে গেলো। ডাক্তারদের ভাষ্যমতে অভ্রের শরীর থেকে যথেষ্ট রক্তপাত হয়েছে। সঠিক সময়ে অভ্রকে হাসপাতালে নিয়ে না আসলে হয়তো অতিরিক্ত রক্তপাতে অভ্রের মৃত্যু ঘটতো। এখনো অভ্রের যথেষ্ট ঝুঁকি রয়েছে।
তাই অভ্রকে আই সি ইউ তে ভর্তি করা হয়েছে। সবকিছু শুনে আরিয়ান এবং আরহাম দুজনেই দুশ্চিন্তার ভাবনায় ঢুবে গেলো।
আই সি ইউ এর সামনে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। কাঁচের জানালা দিয়ে অভ্রের কাঠ কাঠ শক্ত মুখখানা কিছুটা দেখা যাচ্ছে। অক্সিজেন মাস্ক অভ্রের মুখে দিয়ে রাখা হয়েছে। মেশিং দিয়ে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে অভ্রের হৃদয়ের স্পন্দন কতটা ধীরে ধীরে কম্পিত হচ্ছে। অভ্র এখন মেহেভীনের প্রাক্তন স্বামী হলেও এইটা তো সত্য অভ্র একসময় তার ভালোবাসার মানুষ ছিলো। এর থেকে কঠিন সত্যি আর কিছু হতে পারে না আদোও। তখনি পাড়ার একজন চিকন খাটো ছেলে
মেহেভীনের হাতে একটি চিঠি ধরিয়ে দিয়ে বলে,
‘ মেহু আপু! অভ্র ভাইয়ের ঘর থেকে পেয়েছিলাম চিঠিটা। আপনার নাম লিখা ছিলো। তাই আপনাকে দিলাম। ‘
মেহেভীন কাঁপা কাঁপা হাতে চিঠিটা নিলো। চিঠিটাতে
অভ্রের রক্ত লেগে রয়েছে। মেহেভীন চিঠি খুলেই দেখতে পেলো তাতে লেখা,
‘ মেহু কেমন আছিস তুই? যদিও আমি জানি না
তোকে মেহু বলে ডাকার অধিকার আছে কিনা তবুও ডাকলাম। জানি তুই ভালো আছিস। আরহামের সাথে। ভালো থাকারই কথা। আরহামই পারে তোকে সুখী রাখতে। তা আজ নিজ চোক্ষে দেখলাম। জানিস মনটা বড় বেহায়া তুই সুখে আছিস তবুও আমার কষ্ট হয়। মরণ যন্ত্রনা অনুভব নয়। যতই খারাপ হই না কেন ভালোবাসি তোকে।
নিজেকে সবসময় ঘৃণিত মনে হয়। আজ যদি আমি তোর সাথে প্রতারণা না করতাম। তাহলে আমাদের জীবনটা তো অন্যরকম হতে পারতো তাইনা? আমাদের সন্তান আজ বেঁচে থাকতো। আমি সত্যিই বড্ড খারাপ। আমি মায়রার জীবনটাও শেষ করে দিয়েছি। আমার এখন নিজেকে দেখলে শুধু ঘৃণা হয়। অতিষ্ট হয়ে উঠছে এই জীবনটা। আমি আর পারছি না। জীবনের সাথে পেড়ে উঠছি না। তাই আমি এইবার সবাইকে মুক্ত করে দিবো। চলে যাবো বহুদূর। পড়তে দিবো না তোদের জীবনে অভ্র নামক কোনপ্রকার কালো ছায়াকে। ভালো থাকিস মেহু। ভালোবাসি। ‘
ইতি…..
বাকিটুকু আর লিখতে পারনি অভ্র হয়তো তার আগেই চোখ বুজে ফেলেছিলো সে।
চিঠিটা পড়ে মেহেভীন মুখ চেপে কেঁপে কেঁপে কেঁদে উঠলো মেহেভীন নিজের অজান্তেই। অভ্রকে সে এই অবস্হায় দেখবে কখনো আশা করেনি। হ্যা সেই চেয়েছিলো অভ্রের কঠিন শাস্তি হোক। যাকে বলে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। তাই বলে অভ্রের মৃত্যু সে কখনোই কামনা করেনি।
গালে কারো হাতের আলতো স্পর্শে আখিজোড়া বন্ধ করে ফেললো মেহেভীন। স্পর্শেই সে খুব ভালো করে অনুভব করতে পারে। এই স্পর্শ তার স্বামীর।
মেহেভীন ঠোট জোড়া কামড়ে চিঠিটা দেখিয়ে আরহামের দিকে অশ্রুসিক্ত নয়নে চেয়ে বলল,
‘ আরহাম সাহেব দেখুন না অভ্র এইসব কি লিখেছে।’
আরহাম তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলে স্বান্তনার রেশ ধরে বলে,
‘ উত্তেজিত হওয়ো না মেহেভীন। কঠিন পরিস্হিতিতে যত নিজেকে শান্ত রাখবে ততটাই পরিস্হুতি শান্ত থাকবে। ‘
মেহেভীন শান্ত হলো না বরং আগের থেকেও বেশি অস্হির হয়ে জানতে চাইলো ডাক্তার কি বলেছে অভ্রের ব্যাপারে? আরহাম নিরবতা পালন করলো কিছুক্ষন। স্হীর হয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকলো। মেহেভীন কিছু বলার আগেই, ইশরা বেগম হন্তদন্ত হয়ে হাসপাতালে ছুটে এলেন। এসেই মেহেভীনকে দেখে কাঁদতে কাঁদতে, মেহেভীনের হাত জোড়া ধরলেন। অনুনয়ের সুরে বললেন,
‘ আমাকে ক্ষমা কর মেহু মা। আজ যা কিছু হয়েছে সব আমার জন্যে। বিশ্বাস কর আমার ছেলের দোষ ছিলো না। হ্যা তার শুধু একটাই দোষ ছিলো যে, সে মা ভক্ত হয়ে অন্যায় কাজে নিজেকে যুক্ত করেছিলো। ‘
ইশরা বেগমের কথায় আরহাম মেহেভীন দুজনেই অবাক হয়। ইশরা বেগমের কথায় মাঝেই উপস্হিত হয় মেহেভীনের মা নয়না। তিনি হাত নাড়িয়ে বলে,
‘ মেহু মা আমার। ‘
এতো বছর পরে নিজের মাকে দেখে অনেকটাই বিস্মিত হতভম্ব হয়ে যায় মেহেভীন। এ কি করে সম্ভব? তার মা আজ এতো বছর পরে তার সামনে?
আদোও সেইটা মানা যায়? মেহেভীনের মাকে চিনতে এক দন্ড ও সময় নিলো না আরহাম। সে চিনে ফেললো মেহেভীনের মাকে। মেহেভীন তখন খুব ছোট তখন মেহেভীনের আম্মু তাদের বাড়িতে আসতো। ইশরা বেগমের আপন বোন বলে কথা। বোনের শ্বশুড় বাড়িতে প্রায় যাতায়াত ছিলো তার। তাই আরহাম খুব ভালো করেই চিনে ফেলে মেহেভীনের মাকে।
মেহেভীনের মুখ থেকে আপনি আপনি বেড়িয়ে এলো,
‘ মা! ‘
নয়না নামক মধ্যবয়সী মহিলা চোখ আঁচল দিয়ে মুছে কাছে ডাকলো তার মেয়েকে। মেহেভীন কি ভেবে এগোতে গিয়েও গেলো না। পা দুটো থামিয়ে দিলো অভিমানে। অভিমানি কন্ঠে অভিযোগ নিক্ষেপ করে বললো,
‘এতো বছর কোথায় ছিলে তুমি মা? কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলে তুমি? বলো আমায়? ‘
মেহেভীনের কথায় ফোড়ন কেটে, ইশরা বেগম মুখটা শক্ত করে নয়নার দিকে তাকিয়ে বলে,
‘ কোন মুখে বলবে নিজের পাপের কথা? আমি বলছি। ‘
নয়না অসহায় হয়ে মাথা নিচু করে। মেহেভীন ইশরা বেগমের দিকে তাকাতেই ইশরা বেগম খুলে বললেন
সমস্ত অতীত।
____________
অতীতে যখন মেহেভীনের বাবা এক্সিডেন্টে মারা যায় তখন মেহেভীন এবং তার মা একেবারে একা হয়ে পড়ে। মেহেভীন তখন খুব ছোট। মেহেভীনের মায়ের এবং মেহেভীনের সমস্ত দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন অভ্রের বাবা ইশরা বেগমের সম্মতিতে। অভ্রের বাবার প্রায় সেই সুবাধে মেহেভীনদের বাড়িতে আশা যাওয়া ছিলো। অনেকসময় নানা কাজের বাহানায় তিনি সেখানে থেকেও যেতেন। ইশরা বেগম ও সরল মনে এতোটা তলিয়ে দেখেননি ব্যাপারটা। কিন্তু তিনি জানতেন না তার স্বামী এবং বোনের মনে অন্য কিছু ছিলো। তারা পরক্রিয়ার সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে পড়ে।
তখন নয়নার মাথায় শুধু ছিলো মাথায় কোন হাতের।
যার ছায়াতলে সে এবং তার মেয়ে জীবনটা শান্তিতে পাড় করে দিতে পারবে। অন্যদিকে রকিব অর্থাৎ অভ্রের বাবার চোখে শুধু ছিলো এক রাশ মোহ নয়নার প্রতি। একদিন ইশরা বেগম অভ্রের বাবা এবং নয়নাকে কাছাকাছি দেখে সবকিছু বুঝে যান। তখনি অভ্রের বাবা ইশরা বেগমের গাঁয়ে হাত তুলে তাকে চুপ থাকতে বলে। ইশরা বেগম চুপ থাকেনা বরং খুলে বলে সব টা সবাইকে। সবকিছু শুনে আরহামের বাবা-মা অভ্রের বাবাকে শাসন করলেও সে শুনে না। বরং অভ্রের মাকে ডিভোর্স দিয়ে, পরেরদিন নয়নাকে নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমান একপ্রকার লুকিয়ে। নয়নার মাথায় তখন তার মেয়ের কথাও ছিলো না।
অভ্রের মা ইশরা বেগম রাগে অভিমানে অপমানে
তালুকদার বাড়ি থেকে চলে আসে অভ্রকে নিয়ে। সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় তালুকদার বাড়ি থেকে। এমনকি মেহেভীনকেও তিনি তার কাছে নিয়ে রেখে বড় করতে থাকেন। অভ্রকে ছোট থাকতেই তিনি বিদেশে পাঠিয়ে দেন।
এই ঘটনার ঠিক এক মাস পরে অভ্রের বাবা হার্ট অ্যাটাকে মারা যান।
সময়ের পালাবদলে মেহেভীন বড় হতে থাকে। দেখতে দেখতে কেটে যায় অনেকগুলো বছর।
অভ্র ও দেশে ফিরে আসে,কিন্তু মেহেভীন তো জানতো না তার জন্যে ঠিক কি অপেক্ষা করছে। অভ্র দেশে এসেই মায়রাকে নিয়ে তার মায়ের সাথে দেখা করিয়ে বলে,
‘ মা ও হচ্ছে মায়রা। যার কথা আমি তোমাকে বলেছিলাম। ‘
মায়রাকে অভ্রের মা জড়িয়ে ধরে বলে,
‘ বাহ মাশা-আল্লাহ তো। আমার কিন্তু বেশ পছন্দ হয়েছে। ‘
অভ্র কিছুটা লাজুক ভঙ্গিমায় বলে,
‘ আমি ওকে অনেক ভালোবাসি। আমরা দুজন বিয়ে করতে চাই।’
ইশরা বেগম কিছুটা নিরবতা থেকে মুখে হাসি ফুটিয়ে বললেন,
‘ তা না করবে কিন্তু তার আগে যে তোমাকে কয়েকটা মাস অপেক্ষা করতে হবে বাবা। ‘
অভ্র ও মায়রা দুজনেই অবাক হলো। অভ্র ভ্রু কুচকে বলে,
‘ হঠাৎ কেন মা? ‘
‘ তোমাকে মেহেভীনের সাথে প্রেমের অভিনয় করে
বিয়ে করতে হবে। তারপর না হয় ডিভোর্স দিয়ে মায়রাকে বিয়ে করো। ‘
ইশরা বেগমের কথায় অভ্র এবং মায়রা দুজনেই বিস্মিত হয়। অভ্র এগিয়ে এসে অবিশ্বাসের সুরে বলে,
‘ এইসব তুমি কি করছো মা? আমি এইসব কেন করতে যাবো? মেহেভীনের সাথে মিথ্যে নাটক কেন করবো? ‘
[লেখিকাঃ জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি]
‘ প্রতিশোধ নিবে তুমি। ‘
ইশরা বেগমের নির্লিপ্ত উত্তর। অভ্র নির্বিকার। ইশরা বেগম চশমাটা চোখে লাগিয়ে, অধরের কোণে হাল্কা হাসি ফুটিয়ে বললেন,
‘ শুনলাম নয়না নাকি দেশে ফিরেছে। মেয়ের খোঁজ খবর নিচ্ছে। যতই হোক নিজের মেয়ে তো,কিন্তু নিজের কৃতকর্মের জন্যে সামনে আসতে পারছে না। তাই এইটাই সুযোগ। ও আমাদের সংসার ভেঙ্গেছে। তাই আমি ওর মেয়ের সংসার ভেঙ্গে বুঝিয়ে দিবো সংসার ভাঙ্গার কতটা কষ্ট। তাই তুমি মেহেভীনের সাথে মিথ্যে বিয়ের নাটক করবে। ‘
‘ কিন্তু তাই বলে মা এইটা অন্যায়। এখানে মেহেভীনের কি দোষ?’
অভ্র আর কিছু বলার সুযোগ পেলো তার আগেই ইশরা বেগম ভেজা গলায় বলে,
‘ তুই তোর মায়ের জন্যে এইটুকু করতে পারবি না?
দেখ অভ্র আমি হয়তো আর বেশিদিন বাঁচবো না,কিন্তু তার আগে আমি নয়নার কাছে প্রতিশোধ নিতে চাই। ফিরিয়ে দিবো সমস্ত যন্ত্রনা যা ও আমাকে দিয়েছে। মেয়ের যন্ত্রনায় মায়ের পরাণ ঠিক কাঁদবে। তা আমি তৃপ্তি ভরে দেখতে চাই অভ্র।
তুমি যদি তোমার মাকে ভালোবাসো তাহলে কাজটি তুমি করবে। ‘
অভ্র অসহায় দৃষ্টিতে তার মায়ের দিকে তাকালো।
না চাইতেও সে অন্যায় কাজটি করে ফেলে। এমনকি ভালোবেসে মায়রাও অভ্রের সাথে প্রতিশোধের নোংরা খেলায় যুক্ত থাকে।
বর্তমান,
সবকিছু শুনে দাঁড়িয়ে থাকা দায় হয়ে পড়ে মেহেভীনের। সে পড়ে যেতে নিলে আরহাম এসে তাকে ধরে ফেলে। মেহেভীনের বিশ্বাস হচ্ছে না তার মা এতোটা নীচ। সে ঘৃণার চোখে তার মায়ের দিকে তাকায়। তার মায়ের দৃষ্টি নীচে। অপরাধীর ন্যায় মাথা নিচু করে রয়েছেন।
আরহাম রোষপূর্ন দৃষ্টিতে ইশরা বেগমের দিকে তাকিয়ে বলে,
‘ ছোট মা তুমি প্রতিশোধের নেশায় এতোটা অন্ধ হয়ে গিয়েছিলে? মাথা ঠিক আছে তোমার? একজন এর প্রতিশোধ আরেকজন এর উপরে নিচ্ছো। এই খারাপ কাজটি অভ্রকে দিয়ে একটুও বিবেকে বাঁধলো না তোমার? আজ তোমার জন্যে সবার জীবন এতোটা এলোমেলো হয়ে গেলো।’
‘ হ্যা তাই। আমারই দোষ। প্রতিশোধের নেশায় মাথা কাজ করেনি আমার। নির্দোষ মেহেভীনকে শাস্তি দিয়েছি আমি। তারই শাস্তি পাচ্ছি আমি। আজ আমারই জন্যে আমার ছেলেটা মৃত্যুর মুখে রয়েছে।’
ইশরা বেগম মুখ চেপে কেঁদে দিলেন। মেহেভীনের মাথায় ঘুড়পাক খাচ্ছে অভ্রের কথাগুলো। অভ্র তাকে এই কথাগুলো বলতে চাইতো, কিন্তু সে শুনেনি। মায়রার গর্ভবতী অবস্হায় হসপিটালে চলে আসে।
ডাক্তার জানিয়েছে অভ্রের নাকি বাঁচার তেমন একটা আশা নেই। অভ্রের এমন অবস্হা শুনে মায়রা তৎক্ষনাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়ে……..
চলবে…..