#তুমি_আমার_সেই_প্রিয়শী
লেখিকা:#শ্যামলী_রহমান
পর্ব:১৮
রিশাদ আর রুহির বিয়ের খবর শুনে সুইটি রাগে গিজগিজ করতে করতে ফোনের ওপাশ থেকে সাদিবকে গালি দেয়,
-রিশাদ রুহির বিয়ে হলো আর আপনি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলেন?কালকে তো মুখে বড় বড় কথা বললপন সব ঠিকঠাক হবে তাহলে এমন হলো কেন?
;সব তো ঠিকঠাক ছিলো কিন্তু ওই রিশাদ কোথা থেকে এসে সব প্ল্যান নষ্ট করে দিলো। আমায় অজ্ঞান করিয়ে নিজে বরের জায়গায় বসে বিয়ে করে নিলো এতে আমার কি দোষ।
-দোষ আপনার না আমার কারণ আপনার মতো গাঁধার উপর বিশ্বাস করেছিলাম আপনার জন্য রিশাদ হাত ছাড়া হয়ে গেল।
সাদিবকে গাঁধা বলায় চটে গেল।
;একদম বাজে কথা বলবে না নিজের নাম তো কথা বলছো তাহলে রিশাদ কে এতোদিনে পটাতে পারোনি? তুমি তোমার মতো আমি আমার এবার যা করার আমি করবো ওই রিশাদকে এতো তাড়াতাড়ি পেতে দিবো না তোমার যা করার করো রাখছি।
সাদিব ফোন কেটে দেয় দাঁতে দাঁত চেপে ধরে বলে,
;মিস্টার রিশাদ মির্জা রেডি হও নতুন কিছুর জন্য আজকে দাবার চাল তোমার জয় হয়েছে খুব শিগগিরই নতুন চাল নিয়ে আসছি এবার হার তোমার নিশ্চিত।আমার সাথে পাঙ্গা নিয়ে ঠিক করোনি কালকে থেকে শুরু হবে নতুন কাহিনি পরিচালনা করবো আমি আর অভিনয় করবে মিজানুর চৌধুরী।
বলে হেঁসে ওঠে মনে মনে ভাবতে থাকে পরবর্তী প্ল্যান।
এদিকে রুহি রিশাদের রুমে বসে আছে মুখ ভার। পুরো রুমটাকে একবার চোখ বুলিয়ে নিলো কত স্বপ্ন ছিলো বধু সেজে হাঁসি মুখে এই রুমে একদিন পারমানেন্ট আসবে।
সেই স্বপ্ন পূরন ঠিকই হয়েছে হয়নি শুধু হাঁসি মুখে আসা মনের মধ্যে নেই আনন্দ ।
ভাবনায় মাঝে রিশাদ রুমে প্রবেশ করে কারো পায়ের আওয়াজ শুনে রুহি সামনে তাকায় রিশাদকে দেখে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
“চেঞ্জ করে এসো এভাবে বসে আছো কোন?
রুহি কিছুক্ষণ পর গম্ভীর মুখে উত্তর দেয়,
‘আমার জামা কই পাবো যে চেঞ্জ করবো?
আপনি তো গুন্ডাদের মতো টেনে নিয়ে আসলেন।
” ভালোবাসার মানুষ কে পেতে আমি শুধু গুন্ডামী নয় যুদ্ধ করতে পারি আগেই বলেছি।
‘হ্যাঁ তা তো সেদিন দেখতে পেয়েছি যে বাবার বয়সি মানুষের গাঁয়ে হাত তুললে দ্বিধা করে না আমার ওই ঘটনা মনে পড়লে আপনার প্রতি ঘৃণা চলে আসে সাথে আমার নিজের প্রতি ছি ছি করতে মন চায় কিভাবে আপনার মতো কাউকে ভালোবেসেছিলাম। আপনি এমন না হলে আজকের দিনটা সুন্দর ভাবে হতো খুব কি ক্ষতি হতো যদি বাবার সাথে ওমনটা না করতেন।
কথা গুলো বলতে বলতে রুহি কেঁদে ওঠে রিশাদ কিছু বলেনা চুপচাপ বাহিরে চলে যায়।
আবার কিছুক্ষণ পর ফিরে আসে হাতে একটা ড্রেস রুহির দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলে ফ্রেশ হয়ে এটা পরে নেও রাফিয়ার ড্রেস আশা করি তোমার হবে আর কালকে তোমার জন্য ড্রেস এনে দিবো।
রুহি ড্রেসটা নিতে ওঠে হাত বাড়িয়ে নিতে গেলে রিশাদের হাতের সাথে ছোঁয়া লাগে রুহি হাত সরিয়ে আনতে চাইলে রিশাদ হাতটা শক্ত করে ধরে বলে,
“এই হাত ছাড়ার জন্য ধরিনি আজকে তো পারমানেন্ট ভাবে ধরার অধিকার পেয়েছি তোমার স্বামি তাহলে এমন করছো কেন?মনে হচ্ছে আমার শরীরে কারেন্ট আছে ধরলেই ঝটকা দিয়ে চলে যাচ্ছো।
‘অধিকার পেয়েছেন জোর করে ভালোবেসে পাননি।
” তাহলে বলছো তুমি আমায় ভালোবাসো না?
রুহি জবাব দেয় না কি বা বলবে মুখে যত কথা বলুক মনে প্রাণে তো রিশাদকেই ভালোবাসে।
রিশাদ রুহির হাত ছেড়ে দেয় মুখে কষ্টের হাঁসি নিয়ে বলে,
“যাও ছেড়ে দিলাম যেদিন নিজের ভুল বুঝতে পারবে সেদিন নিজের করা ব্যবহারের জন্য আফসোস করবে।
রুহি ওয়াশ রুমে যায় চোখে মুখে পানি দেয় মুখ চেপে কান্না করে নিজের মনে বলে,
‘কোন এমন হলো?তার কাছে এসেও কাছে যেতে পারছি না ভালোবেসেও ভালোবাসতে পারছি না মনে হচ্ছে যদি সেদিনের ঘটনাটা মিথ্যা হতো খুব ভালো হতো।
আচ্ছা উনি যে বলছেন ভুল বুঝতে পারলে আফসোস করবো এর কারণ কি? সত্যি কি কোনো কোনো রহস্য লুকিয়ে আছে?
নিজের মনে এসব ভাবছে তখনি রিশাদ দরজায় টোকা দিয়ে বলে,
“এতো সময় ধরে কি করছো তাড়াতাড়ি বের হও আমি যাবো।
রিশাদের কথায় নিজের ভাবনা থেকে বেরিয়ে তাড়াতাড়ি চেঞ্জ করে বাহির হয়।রুহিকে দেখে রিশাদ শান্ত হয় অনেকক্ষণ হয়ে গেল বাহির না হওয়াতে একটু ভয় পেয়েছিলো।
রুহির চোখ মুখ ফোলা মনে হচ্ছে কান্না করেছে দেখে বুঝা যাচ্ছে রিশাদ সেদিকে তাকিয়ে নিজে ফ্রেশ হতে যায়।
রিশাদ ওয়াশ রুম থেকে গোসল করে বের হয়। এসে দেখে রুহি কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়েছে চোখ বন্ধ করে আছে বোঝা যাচ্ছে না ঘুমিয়ে পড়েছে নাকি এমনি চোখ বন্ধ করে আছে। রিশাদ বেলকনিতে যায় টাওয়ালটা মেলে দিয়ে কাউকে ফোন লাগায় অপরপাশ থেকে ফোন ধরতে রিশাদ হেঁসে বলে ওঠে,
” থ্রাঙ্কিউ সমন্ধী সাহেব আপনার জন্য আজ তাকে নিজের করে পেলাম আপনার ঋন আমার সারাজীবন মনে থাকিবে।
অপর পাশ থেকে রোহান হেঁসে বে,
‘সালা তোর ঢংয়ের কথা রাখ আমি তোকে সাহায্য করেছি আমার বোনের জন্য বুঝেছিস।
“আমি তোর সালা কবে হলাম? তুই আমার কোন বোনকে বিয়ে করেছিস?
‘করিনি কিন্তু করতে কতক্ষণ! কথাটা রোহান আস্তে বললো।
” কিছু বললি?
‘না কিছু বলিনি। আমার বোনটা কি করছে?
রিশাদ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,
“ঘুমিয়েছে মনে হয়।আমায় ভালোবেসে ভুল করেছে বলছে।
‘ সে যাই বলুক তুই তো তাকে সত্যিটা বলতে পারিস যে তুই সেদিন আব্বুকে ধ্বাকা দিসনি?
” সময় হলে বলবো।
‘সালা নিজের দোষে তোকে ভুল বুঝছে ঠিকি করছে।
নিজের ভালোবাসা তো পেলি জীবনে আর কি চাই?
“নিজের করে পেলাম কিন্তু কাছে তো পেলাম না বউ ঘুমিয়ে গেছে।
‘সালা চুপ কর কিসব বলছিস আমি তোর বউয়ের বড় ভাই হই আমাকে এসব বলতে লজ্জা করছে না।
” লজ্জা তো মেয়েদের থাকে আমি তো ছেলেআর আমি যদি লজ্জা পাই তাহলে তাহলে তুই মামা হবি কিভাবে?
-হয়েছে এবার চুপ কর।
নিজের ভালোবাসাকে নিজের করে পাওয়ার আনন্দ একটি অতুলনীয় অনুভূতি যে অনুভূতির ব্যাখ্যা হয় না। এটি শুধু সম্পর্কের সুখ নয়, বরং একটি গভীর সংযোগ এবং আত্মিক আনন্দের প্রকাশ করে।
“বাহ তুই দেখছি ভালোবাসা বিশেষজ্ঞ হয়েগেছিস কাউকে বাসিস নাকি?
‘না এমনি বললাম।
রোহান রাফিয়ার কথা লুকিয়ে গেল সময় হলে ঠিকি বলবো।
শোন রিশাদ ফোন রাখি আব্বু ডাকছে কি বলে শুনে আসি তোর উপর অনেক রেগে আছে।
রোহান ফোন কেটে দেয় রিশাদ বেলকুনিতে দাঁড়িয়ে আছে।
রুহি ঘুমোয়নি রিশাদের সব কথা শুনতে না পেলেও কিছু কথা শুনতে পেয়েছে (থ্যাঙ্কিউ সমন্ধী তাকে নিজের করে পাওয়ার জন্য সাহায্য করার জন্য) এই কথাটা রুহিকে ভাবাচ্ছে সমন্ধী মানে রোহান ভাইয়া।
কিন্তু ভাইয়া সবকিছু জেনেও ওকে সাহায্য করবে?
না,না মনে হয় অন্য কেউ হবে হয়তো,
তবুও ভাইয়ার থেকে একবার শুনতে হবে।
রিশাদ বেলকুনি থেকে আসছে শব্দ শুনে রুহি ঝটপট চোখ বন্ধ করে নেয় রিশাদ রুহির কাছে এসে বসে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে কি সুন্দর মায়াবী লাগছে।
একদিন বলেছিলাম নিজের করে নিবো আজ তা পূরণ করেছি পেয়েছি তোমায় নিজের নামে নিজের আয়ত্তে এখন আর ভয় নেই হারাবার।
এখন শুধু দুটো কাজ বাকি সব প্রমান করে তোমার বাবার কাছে নিজেকে র্নিদোষ প্রমান করা আর দুই পরিবারের মধ্যের শত্রুতা শেষ করা।
কথা গুলো বিরবির করে বলে রুহির কপালে গভির চুম্বন আঁকে এতে রুহি কিছুটা নড়ে ওঠে। রিশাদ গিয়ে বেডের আরেক ওাশে শুয়ে পড়ে।
রিশাদ যেতেই রুহি চোখ খোলে নিজের কপালে হাত বুলোয় যেখানে রিশাদ চুমো খেয়েছিলো। মনে মনে ভাবে,
_আমি আপনার ভালোবাসার চুম্বন হতে চেয়েছিলাম,
হলাম ঠিকই কিন্তু পার্থক্য একটাই,ভালোবাসা আর ঘৃণা।
চলবে………?
#তুমি_আমার_সেই_প্রিয়শী
লেখিকা:#শ্যামলী_রহমান
পর্ব:১৯
রাতের আঁধার কাটিয়ে সবে সূর্যদ্বয়ের আলোর আর্বিভাব হচ্ছে রিশাদ অনেক আগে ওঠে পড়েছে কোনো এক কারণে ভোরবেলা ঘুম ভেঙে যায় আর ঘুম আসছিলো না বলে শোয়া থেকে ওঠে পড়ে রুহির দিকে তাকিয়ে কিছু ভাবে তার পর চলে আসে বেলকুনিতে তখনি চোখে পড়ে সূর্যোদয়ের সুন্দর মহূর্তটা।
সূর্যোদয়ের দৃশ্য অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। প্রভাতের প্রথম আলো যখন আকাশে ছড়িয়ে পড়ে, তখন হালকা গোলাপি ও সোনালী রঙের ছটা দেখা যায়। পাখির গান, সকালের নির্মল বাতাস এবং প্রকৃতির সজীবতা সব মিলে একটি অনন্য অনুভূতি তৈরি করে। অনেক সংস্কৃতিতে সূর্যোদয়কে নতুন শুরুর প্রতীক হিসেবে ধরা হয়, যা জীবনকে নতুন সম্ভাবনার দিকে নিয়ে যায়।
এই মুগ্ধকর দৃশ্য দেখে রিশাদ নিজ মনে বলে,
” সূর্যোদয় যেমন রাতের অন্ধকার কাটিয়ে সকালে আলো আর্বিভাব করে,
তেমনি আমিও আমাদের সম্পর্কের সব অন্ধকার কাটিয়ে আলো নিয়ে আসবো।
সকাল সাতটায় রুহির ঘুম ভাঙে চোখ খুলে দেখে পাশে রিশাদ নেই। মনে মনে ভাবে হয়তো গেছে কোথায় তাতে আমার কি? আমি ফ্রেশ হতে যাবো কিন্তু ড্রেস তো নেই তাহলে কি পরবো?
ভাবনায় মাঝে রাফিয়া রুমে আসে রুহিকে বসে থাকতে দেখে নিজের হাতে থাকা শপিং ব্যাগটা রুহিকে দেয়।
রুহি জিজ্ঞেস করে,
– কি আছে এতে?
‘আম্মু তোকে পরার জন্য শাড়ি পাঠালো তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিচে যেতে বললো তুমি ফ্রেশ হয়ে আয় আমি তোকে শাড়ি পড়তে হেল্প করছি
রুহি চুপচাপ ফ্রেশ হতো গেল।
ফ্রেশ হয়ে এসে শাড়ি পরার প্রস্তুতি নিয়ে নিলো রুহি মোটামুটি শাড়ি পরতে জানে তাই সমস্যা নেই রাফিয়া রুহির শাড়ির কুচি ধরে আছে সুন্দর করে সবকিছু ঠিকঠাক করে দিচ্ছে।
রুহি এক নজরে রাফিয়ার দিকে তাকিয়ে ভাবছে,
রাফিয়ার মতো বান্ধবী পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার এটা আমি আগে থেকে মানি এখন তো আরো বেশি মানি মা, বাবা আর ভাইয়া ছাড়া যদি কেউ কেয়ার করে তাহলে সেটা রাফিয়া নিজের বোন হলেও বোধহয় এতো ভালোবাসতো যেটা ওর কেউ না হয়েও স্কুলের পরিচয় থেকে বাসে ।
শাড়ির কুঁচি ঠিক করা শেষ রুহিকে ওর দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে চোখের সামনে তুড়ি বাজায় রুহির হুস আসে।
-এভাবে কি দেখছিলি?
‘তুই অনেক ভালো এতো কেয়ার করিস এজন্য তোকে এতো ভালোবাসি বলে রাফিয়াকে জড়িয়ে ধরে হেঁসে ওঠে।
হাজারো মন খারাপের মাঝে বেস্ট ফ্রেন্ড মন ভালো করতে পারে।
রাফিয়া একটু মজা করে বলে,
-আমাকে এতো ভালো না বেসে নিজের জামাইকে বাস তাহলে হবে। আর তোর জামাই থাকতে আমাকে শাড়ির কুঁচি ঠিক করে দিতে হলো সিমেনায় দেখতাম নায়ক নায়িকার শাড়ির কুঁচি ঠিক করে দেয় সাথে রোমান্টিক সিম হয়। ইসস তুই মিস করলি ভাইয়া যদি বাসায় থাকতো হবে ওকে পাঠাই দিতাম কিন্তু ভাইয়া সেই সকালে কোথায় ঢ়েন বেরিয়ে গেল।
রুহি তখনি জিজ্ঞেস করে কোথায় গেছে?
-সে তো জানিনা শুধু বললো কাজ আছে আর তুই ওঠলে যেন দেখে রাখি।
‘আমাকে দেখে রাখার কি আছে?
-যদি পালাই যাস এই ভয়ে। আমার ভাই ভয় পায় তোকে হারানোর।
রুহি আনমনে বলে,
‘যদি ভয় পাইতো তাহলে এমন কেন হলো?
-আচ্ছা আর কথা নয় নিচে চল।
রাফিয়া রুহিকে নিয়ে নিচে নামে।
রশিদ মির্জা মুখের সামনে ধরে খবরের কাজগ পড়ছে বলে রুহিকে দেখতে পায়নি। রাশেদা মির্জা রান্না ঘরে ছিলো রাফিয়া রুহিকে সেখানে নিয়ে যায় গিয়ে দেখে রান্না বসিয়েছেন তিনি রুহিকে দেখে হেঁসে দেয় পেখিতে রুহিও হাঁসে কারণ রিশাদ যাই করুক এই মানুষ গুলো তো কিছু করেনি যা আছে বাবার সাথে।
রুহি রাশেদাকে বলে আমি কি করবো বলেন?
‘না মা তোমায় কিছু করতে হবে না।
রুহি বারণ শুনে না রান্নার কাজে সাহায্য করতে যায় দেখে রাশেদা চা বানাতে বলে।
রুহি মোটামুটি রান্না পারে তেমন ভালো না হলেও খারাপ হয়না খাওয়া যায় আর চা বানাতে পারে বেশ এজন্য চা বানাতে শুরু করে রাফিয়া পাশ থেকে বলে,
-বাহ বউমা আর শাশুড়ীর দায়িত্ব এখন থেকে শুরু আম্মুর কাজে হেল্প করতে এসে গেছে রুহি।
রাশেদা রাগি চোখে বলে,
:তোর মতো নাকি যে কোনো কাজ করে না শুধু বসে বসে থাকে।
রাফিয়া মন খারাপের ভান করে বললো,
-আম্মু এখন খোটা দিচ্ছো তো দেখিও আমি একদিন শাশুড়ীর সবচেয়ে ভালো বউ হবো।
:তোকে কেউ বউ করবে না যে অলস আর বলিস সবচেয়ে ভালো বউ হবি।
রুহির মা মেয়ের কান্ডে হাঁসছে তখন ওর মায়ের কথা মনে পড়ে মা ও বলতো একটু কাজ শিখ শশুর বাড়িতে গিয়ে কিছু না পারলে কথা শুনতে হবে। তখন বাবা বলতো আমার মেয়েকে এমন জায়গায় বিয়ে দিবো যেখানে কাজ করতে হবে না।
একথা ভাবতে বাবার কথা মনে হয়।
চা বানানো শেষে তিনকাপে চা ঢালে রাফিয়া রাশেদা চা নেয় এবং রুহিকে রশিদ মির্জাকে চা দিয়ে আসতে বলে।
একথা শুনে একটু ভয় লাগে কালকে উনি অনেক রাগ দেখাচ্ছিলেন আব্বুর মতো তিনিও চাননা আমাদের সম্পর্ক।
রুহি ভয়ে ভয়ে চা নিয়ে রশিদ মির্জার কাছে যায় তিনি তখনো খবরের কাগজ পড়ছিলেন।
‘আংকেল আপনার চা। (ভয়ে ভয়ে বলে)
কারো কথা শুনতে পেয়ে রশিদ মির্জা খবরের কাগজটা সামনে থেকে সরায় এবং সামনে রুহিকে দেখতে পায় নিবর ভাবে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।
রুহি ভয়ে আছে যদি কিছু বলে।
রুহিকে ভুল প্রমান করে চা’য়ের কাপটা নেয় এতে রুহি সস্তি পায় আর মনে মনে ভাবে,
-মানুষ গুলো কেউই খারাপ না তাহলে এতো শত্রুতা কেন তৈরি হয়েছে কি কারণ তা অজানা চেষ্টা করেও বুঝতে পারিনি।
রিশাদ আর আকাশ খোরশেদের খোঁজ নিচ্ছে অল্প সূত্রে জানতে পেরেছে ও ঢাকায় আছে কিন্তু ঢাকার কোথায় আছে তা জানতে আরো একদিন সময় লাগতে পারে।
রিশাদ ভীষণ চিন্তিত দেখে আকাশ কাঁধে হাত দিয়ে বলে,
:এতো চিন্তা করিস সব ঠিক হবে একদিন দুদিন সময়ের মধ্যে সব প্রমান পাবো আর রুহিকে নিয়ে আপসেট থাকলে বলবো এতো ভাবিস না সে এখন তোর কেউ কিছু করতে পারবে না।
“আমি সেটা ভাবছি না তবে আমার মনে হচ্ছে নতুন কোনো ষড়যন্ত্র হতে চলেছে জানিস তো মোরশেদের মাস্টার মাইন্ড আছে তাকে ধরতে হবে যার কথায় এসব করেছে সে নিশ্চই পরবর্তী প্ল্যান করবে।
:শত্রু প্ল্যান করলে আমরা তার প্ল্যাননের উপর প্ল্যান করবো শুধু একটু ক্লু পাই।
আচ্ছা তোর কি কাউকে সন্দেহ হয়?
” আপাতত মনে পড়ছে না পরে জানাবো।
:ঠিক আছে তাহলে তুই যা আমি একটু মৌরির সাথে দেখা করতে যাবো।
“বাহ্ তাহলে মৌরি ফুলে গন্ধে মাতাল হয়ে গেলি?
:ঠাড্ডা করিস না তুই তো বলেছিস ও তোর বোন হয় ওকে ভালোবাসতে এজন্য একটু চেষ্টা করতেছি।
” বিয়েটা করে নে।
:তোর ঝামেলা আগে শেষ হোক তার পর বিয়ে করবো তুই আর রুহি সরি ভাবি না থাকলে তো বিয়ে হবে না।
“ঠিক আছে তুই যা আমিও যাই বলে দুই বন্ধু দুদিকে চলে যায়।
রিশাদ বাসায় এসে কলিং বেল বাজালে কাজের মহিলা দরজা খুলে দেয়।
রুমে গিয়ে দেখে রুহি নেই ভাবলো হয়তো মায়ের সাথে নয়তো রাফিয়ার সাথে আছে।
বাহিরে আসতে রাশেদার দেখা পায় জিজ্ঞেস করে,
” রুহি কোথায় আম্মু?
‘কেন রুমে নেই?
” না নেই আমি ভাবলাম তোমার সাথে আছে। রাফিয়ার রুহে আছে হয়তো দেখে আসি।
‘রাফিয়া তো কলেজে গেছে আজকে জরুলি ক্লাস আছে।
রিশাদ চিন্তায় পড়ে যায় সাথে অস্থির হয়ে পড়ে কোথায় গেল রুহি?
বাহিরে গিয়ে দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করে রুহি কে যেতে দেখেছে কিনা?
:হ্যাঁ বাবা যেতে দেখেছি একটু আগে গেল আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম কোথায় যাচ্ছেন কিন্তু উত্তর না দিয়ে দৌড়ে চলে গেল।
রিশাদ দারোয়ান কে ঝাড়ি দেয়।
দৌড়ে চলে গেল আপনি জানালেন না কেন? আপনাকে কি করতে রেখেছি?
দারোয়ান মাথা নিচু করে চুপ করে আছে। রিশাদের চিন্তা আরো বেড়ে যায় সাথে রাগ ও হয়।
ওই বাড়ি যায়নি তো আবার?
এভেবে রোহানকে কল দেয় কিন্তু আপসোস রোহান ও কল ধরে না। শেষে উপায় না পেয়ে তাড়াহুড়ো করে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে।
চলবে……….?