#তুমি_আসবে_বলে
#নুসাইবা ইভানা
পর্ব – ৩৫
দেখো আর যাই বলো, লুঙ্গী আমি পরতে পারবো না। আর লুঙ্গী কি ভাবে পরে আমি তো তাও জানি না।
আহা আপনি এতো টেনশন কেনো করছেন আমি আছি কি করতে! আজকে নায়কদের মতো আপানকে শাড়ি পরিয়ে দেবো।
-কিহহহহহহহ মাথা ঠিক আছে তোমার এসব কি আবোলতাবোল বলছো।
– আরে তুক্কু, আপনাকে আজ আমি নায়িকাদের মতো লুঙ্গী পরিয়ে দেবো।
– ওয়াট? কোন মুভিতে তুমি এসব দেখেছো।
– দেখেছি বললাম তো
– আগে মুভির নাম বলো
– আরে বাচ্চাদের মতো জেদ করছেন কেনো বললাম তো এমন মু়ভি আছে, আর মুভির নাম #তুমি_আসবে_বলে। বিশ্বাস না হলে সার্চ দিয়ে দেখুন
– সে যাইহোক আমি তোমার হাতে পরতে পারবো না। আর তারচেয়ে বড় কথা আমি লুঙ্গী পরবোই না।
– বললেই হলো পরবো না। পরতে হবে, মানে হবেই সেদিন রাতের ড্রেস এখনো পরে আছেন ছি।
-চল শহরে যেয়ে ড্রেস কিনে নিয়ে আসি
– হু এটা তো ঢাকা আপনি বের হবেন আর ড্রেস নিয়ে চলে আসবেন। এখান থেকে শহরে যেতে কম করে হলে চার থেকে পাঁচ ঘন্টার রাস্তা।
– হলে হোক তাও যাবো,
– যাবো তবে আগে গোসল করবেন, খাবেন তারপর যাবো। ততক্ষনে এগুলো ধুয়ে দেবো।
– না তোমার কিছুই করতে হবে না। আমি হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে শহরে যাবো।
– এটা পরবেন না!
– না পরবো না।
– তাহলে আপনার সাথে কথা নেই। বলেই লুঙ্গি আর গামছা রেখে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
আরে কোথায় যাচ্ছ? আর রাগ করছো কেনো এসব আমি পরতে পারিনা। কে শোনে কার কথা মেঘ ডাকছে আরহা পিছু না ফিরে বের হয়ে আসলো।
আরহা অদ্ভুত দৃষ্টিতে সামনের ছেলেটির দিকে তাকিয়ে আছে ঠিক চিনতে পারছে না তবে আপন মনে হচ্ছে। আরহা ছেলেটিকে জিজ্ঞেস করলো, কি নাম তোমার?
-হারিছ
– নাম শুনেই আরহার হৃদয়ে ধক করে উঠলো, ছোট বেলায় কত আদর যত্ন করতো হারিসেকে। আজ সেই ছোট হারিছ কত বড় হয়ে গেছে, চোখের জলটুকু মুছে নিয়ে, হারিছকে জড়িয়ে ধরে বলে আমাকে চিনতে পেরেছিস ভাই!
হারিছের চিনতে পারার কথা না, কারন হারিছের তখন ৬/৭ বছর বয়স ছিলো। আরহা হারিছকে ছেড়ে দিয়ে বলে দেখ আমি তোর বোন আরহা। এবার চিনতে পেরেছিস।
হারিছ অবাক হয়ে বলে, তুমি শারমিন ফুপির মেয়ে?
– হুম
– তাহলে আমাদের বাড়ি গেলেনা কেনো?
– যাইনি তাই কি হয়েছে এখন যাবো।
হারিছ কিছু না বলে বেরিয়ে গেলো। মেঘ পেছন থেকে বললো এটা তোমার মামার ছেলে! সিরিয়াসলি তুমি তাদের সাথে দেখা করতে যাবে?
– যাবো কারণ মামি তার পাপের শাস্তি পাচ্ছে, আর মায়ের পরে একমাত্র মামাই ছিলো যার কাছে ভালোবাসা পেয়েছি।
– ভুলে যাচ্ছো তারা তোমার সাথে কি করেছিলো?
– হুম ভুলে যেতে চাই! কারণ ক্ষমা করা মহত গুন
– সেটা আমার বেলায় মনে ছিলো না
– ছিলো তবে আপনার আর তাদের মধ্যে পার্থক্য আছে। কথা বলতে বলতে আরহা খিলখিল করে হেসে উঠলো,
– কি হলো এভাবে হাসছো কেনো?
– তো হাসবো না। আপনি লুঙ্গি গামছা দিয়ে বেঁধে রেখেছেন, এভাবে কেউ লুঙ্গী পরে।
– আমি যে ভাবে পরার পরেছি
– এদিকে তাকান আমি দেখিয়ে দিচ্ছি আপনি সেভাবে পরেনিন।
– এবার হয়েছে
– হুম পার্ফেক্ট এবার টি শার্ট খুলে দিন আর গলায় গামছাটা ঝুলিয়ে নিন।
– এই তুমি দিন দুপুরে আমার ইজ্জতের ফালুদা বানাতে চাইছো!
– আহা শখ কতো আপনি কি রানবির কাপুর নাকি! যে আপনার বডি দেখার জন্য মরে যাচ্ছি। এটাও ধুয়ে দেবো তাড়াতাড়ি খুলে দিন।
– না তোমার কিছু করতে হবে না।
– ঢং বাদ দিন আর এটা তাড়াতাড়ি খুলে দিন
– মেঘ ঘরে প্রবেশ করো শার্ট খুলে দরজা হালকা ফাঁকা করে শার্ট দিলো আরহার হাতে
আরহা দরজার পাশে দাঁড়িয়ে বলে, এতো কিসের লজ্জা আপনার হুম! যেখান থেকে এসেছেন সেখানে তো অ*র্ধ*ন*গ্ন মানুষ বেশি। আর তার উপর আপনি তো ছেলে।
মেঘ কিছু বলবে তার আগেই আরহা সেখান থেকে চলে যায়।
ইশতিয়াক সাহেব বসে আছেন পুলিশ স্টেশনে আরহার বিরুদ্ধে কেস ফাইল হওয়ার সম্ভাবনা ছিলো। তিনি সেটাই মিটমাট করে দিলেন।
আরহা মেঘের ড্রেস ধুয়ে দিয়ে মেঘের জন্য নাস্তা নিয়ে রুমে এসে মেঘে দেখেই সামনে দিকে ঘুরে গেলো।
– এখন দৃষ্টি ফিরিয়ে কেনো নিচ্ছ। আরে ছেলে মানুষ এমন থাকা তো স্বাভাবিক।
– শুনুন গামছাটা গলায় ঝুলিয়ে নিন আর নাস্তা রেখে যাচ্ছি খেয়ে নিন।
– তুমি কোথায় যাচ্ছ?
– বাহিরে
– এখন আমার সাথে বস এক সাথে নাস্তা করবো।
-আরহা চলে যেতে চাইলে মেঘ আরহার হাত ধরে নিজের পাশে বসিয়ে দেয়। আরহার চোখ বন্ধ করে রাখে।
চোখ বন্ধ রাখার মতো কিছু হয়নি বিবিজান। চোখ খুলুন। আর আমি তো আর রানবির কাপুর না। আমাকে দেখে আপনার দিল ফিসলে যাবে!
– মোটেই না! আই লাভ রনবির কাপুর
– তা ঠিক বলেছো মেয়েরা ভালোবাসবে রনবীর কাপুরের মতো ছেলেদের। আর বিয়ের সময় চাইবে দেবদাস টাইপ ছেলেদের।
– কি বোঝাতে চাইছেন হুম!আমার রনবিরকে নিয়ে একটাও ভুলভাল কথা বলবেনা বলে দিলাম। আর তাছাড়া ছেলে মানুষের বিয়ের আগে দু’চারটা গার্লফ্রেন্ড থাকতেই পারে।
-তারমানে তোমাকে বিয়ে করার আগে দু’চারটা গার্লফ্রেন্ড রাখতে পারবো।
– আপনি হয়তো ভুলে যাচ্ছেন আরো চার থেকে পাঁচ বছর আগেই আপনি বিয়ে করেছেন। তারমানে আপনি প্রেমের বয়সে বিবাহিত ছিলেন। সো প্রেম করবেন কিভাবে!
– সিরিয়ালি আমি বিবাহিত? কই আমার তো মনে হচ্ছে না।
– এই যে চোখের সামনে আপনার বউ বসে আছে, আর এমনিতে সারাদিন নিজেই তো বলেন বিবিজান বিবিজান। বিয়ে না করলে বিবিজান কোথা থেকে আসলো?
– না একবার বিয়ে করেছিলাম হয়তো? ঠিক মনে নেই তাই নতুন করে করতে চাইছি।
– তো করেন কে মানা করছে, বলেই আরহা উঠে যেতে চাইলে মেঘ আরহার হাত ধরে বলে, একবার বাচ্চা মেয়েকে বিয়ে করেছিলাম! যে কিনা বাসর রাতে বরের কোলে হাসপাতালে হাসপাতালে দৌড়েছে। এখন চিন্তা করছি কোন প্রাপ্ত বয়স্ক যুবতীকে বিয়ে করবো। যার সাথে বাসর রাতে চন্দ্র বিলাশ করা যাবে।
– দূর বিয়ে তো একবার হয়েই গেছে আর বিয়ে করতে হবে না।
– না করতেই হবে বাচ্চা বউ বড় হয়েছে এবার তাকে বউয়ের দ্বায়িত্ব বুঝে নিতে হবে।
– সে যখন বড় হয়েছে দায়িত্ব সে ঠিক বুঝে নেবে, তাকে শুধু একটু সময় দিতে হবে।
-আগে ঢাকা যাই তারপর দিচ্ছি সময়। এবার বসো।নাস্তা করি। দু’জনে এক সাথে নাস্তা করে নিলো। খাবার খেয়ে। মেঘ আরহাকে বললো, তুমি সত্যি আমাকে মন থেকে মেনে নিয়েছো!আচ্ছা তুমি আমাকে কবে থেকে ভালোবাসো।
– বিয়ের পর থেকে। জানেন আমি আপনাকে কত খুঁজেছি। বারবার মনে হতো, ছোট সাহেবের কারণে আপনি আমাকে ভুল বুঝে দূরে ঠেলে দিচ্ছেন। পরে জানতে পারলাম আপনি আমার….
– কি বলো
– আচ্ছা আপনি আমাকে কেনো বললেন নি?
– আমি যাওয়ার আগে বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরিস্থিতি আর বলতে দেয়নি। সে সব কথা বাদ আগে বলো তুমি আমাকে দেখলে কোথায়?
-নুরদের বাসায় আপনাকে জড়িয়ে ধরার পরে যখন আমি সুযোগ বুঝে সরে আসলাম তখন আপনি আমাকে খুঁজছিলেন আর আমি আড়াল থেকে আপনাকে দেখছিলাম।
– তুমি আমার সামনে কেনো আসলে না।
– কারণটা আপনার অজানা নয়।
– সত্যি আমি দুঃখিত জানিনা কি ভাবে তোমার কাছে ক্ষমা চাইবো! আমার জন্য তোমাকে অনেক সাফার করতে হয়েছে।
আরহা মেঘের ঠোঁট আঙুল রেখে বলে আর কিছু শুনতে চাইনা। যা হয়েছে সেসব ভুলে যেতে চাই। আপনি ছাড়া আমার আর আপন কেউ নেই, আমি আপনাকে…..
– প্লিজ বলো আজকে চুপ করে থেকো না তোমার মুখ থেকে একবার শুনতে চাই!
আরহা একটু সরে এসে বলে,এই কথাটা আগে ছেলেরা বলে,
– ভালোবাসি, ভালোবাসি, ভালোবাসি আমার বিবিজানকে।এবার তুমি বলো,
– এভাবে কেউ প্রপোজ করে! তার উপর আদিয়াত নুজহাত আরহা কে। তাকে তো গ্রান্ট প্রপোজ করতে হবে।যদি পছন্দ হয় রিপ্লাই পেয়ে যাবেন।
– আচ্ছা তবে তাই হবে। তার আগে একবার তোমার মুখ থেকে তুমি ডাক শুনতে চাই! এটা না করতে পারবে না।
– ইশ আমি পারবো না।
– কেনো পারবেনা। নিজের একান্ত প্রিয় মানুষকে একটু ভালোবেসে তুমি করে বলতে পারবে না!
আরহা কিছু বলবে এর আগেই হায়দার মিয়ার গলার আওয়াজ শোনা গেলো, আরহা “মা” আমার কই তুই একবার এই হতভাগ্য মামার সামনে আয়।
– আরহা দ্রুত দরজা খুলে বাহিরে এসে তার মামাকে জড়িয়ে ধরলো। দু’জনেই কাঁদছে কারো মুখে কোন কথা নেই।
হারিছ বললো, খালি কি কাঁদবা বাসায় নিয়ে যাইবা না হেগোরে?
হায়দার মিয়া আরহাকে ছেড়ে দিয়ে বলে, চল আমার বাসায় জানি মেলা কষ্ট জমা অইছে তবে এহন আর কষ্ট থাকবো না। সব কিছু বদলাইয়া গেছে।
মেঘ দাঁড়িয়ে দেখছিলো। হায়দার মিয়া মেঘ দেখে বলে, এইটা কি আমাগো জমাই বাবাজি?
আরহা মাথা নাড়িয়া সম্মতি জানালো।
মেঘ, হায়দার মিয়াকে সালাম জানলো। হয়দার মিয়া বললেন, তোমার বাবা মা কেমন আছে বাজান?
মূহূতেই মেঘের চেহারা রঙ পাল্টে গেলো।
#চলবে
#তুমি_আসবে_বলে
#নুসাইবা_ইভানা
পর্ব- ৩৬
আজকের সূর্য অস্তের মতোই আরহার জীবনে থেকে অস্ত নিলো সমস্ত ঝড়ঝাপটা। আকাশে অর্ধ চন্দ্রের আলো হাজারো নক্ষত্রের মেলা। তার মধ্যে উৎসব মুখর পরিবেশ। আরহার কল্পনার বাহিরে ছিলো এই আয়োজন। কথায় আছে একটু সুখের জন্য অনেক গুলো খারাপ সময় পার করে আসতে হয়।সুখ আসবেই তবে ধৈর্য ধরে খারাপ সময়টা পার করতে হবে। দুঃখ একটা দীর্ঘ রাতের ন্যয়! তা যতই দীর্ঘ হোক না কেনো, সব অন্ধকার দূর করে একদিন নতুন দিনের আলো ফুটে উঠবেই। চারদিকে সবাই আনন্দ করছে, আরহার কথা জানতে পেরে গ্রামের সাবাই মিলে ছোট একটা আয়োজন করেছে।অতীতের সব গ্লানি মুছে নতুন ভাবে শুরু হচ্ছে জীবন। গ্রামের কয়েকজন মেয়েরা নাচছে গ্রাম্য গানের তালে, একপাশে মাদুরে বসে আছে আরহা আর মেঘ।
যদিও মেঘের এসব বিরক্ত লাগছে, তবুও আরহার মুখের অমায়িক হাসির জন্য নিজেও হাসি খুশি থাকছে। এরমধ্যেই শিউলি বললো, আরহা আমাদের গান শোনাবে গানের তালে আমরা নাচবো। সবাই এক সাথে আরহাকে গান গাইতে বললো।আরহা মানা করতে পারলো না।
মেঘের কানে মুখে বললো, শুনুন আমি যখন গাইবো তখন আপনি আমার দিকে তাকাবেন না।
– বললেই হলো তাকাবো না। আমি তো তাকিয়েই থাকবো, তাকিয়েই থাকবো।
– তাহলে আমি গাইবো না
– যখন হাজার হাজর মানুষ তাকিয়ে থাকে তখন সমস্যা হয় না।
– না হয় না হাজার হাজর মানুষ আর আপনি কি এক হলেন!
– কেনো আমি কি এলিয়েন!
– আরে আপনি তাকালে আমার লজ্জা লাগবে তো বুঝেননা কেনো।
– তাহলে তো ভালো ভাবে তাকাবো তোমার লজ্জা রাঙা মুখ দেখতে।
– সেদিন তো আসলেন না।
– আসতাম তবে একটা ইম্পরট্যান্ট কাজে আটকে গিয়েছিলাম।
– সে যাইহোক প্লিজ আমার দিকে তাকাবেন না।
শিউলি পাশ থেকে বললো, তোরা কি এতো কথা বলছিস বল তো! সারাজীবন তো পরেই আছে কথা বলার জন্য। এবার গান ধর তো!
আরহা আর চোখে একবার মেঘের দিকে তাকালো, মেঘ সেই দৃষ্টির ভাষা বুঝতে পেরে চোখ সরিয়ে নিলো।
আরহা গান গাইতে শুরু করলো…..
আইলারে নয়া দামান আসমানেরও তেরা
বিছানা বিছাইয়া দিলাম
শাইল ধানের নেরা
দামান্দ বও দামান্ত বও
দামান্দ বও দামান্দ বও
সিলেটি সুন্দরী করলো মনতো আমার চুরি,
Walking like A Boss lady
Shaking All her churi man
Know that I’am Gon’be The one to
Call you my wifey
দামান লইয়া আইলে বন্ধু
In a গরুর গাড়ি Baby
সিলেটি ফেরারি Baby
সিলেটি ফেরারি
বও দামন কওরে কথা খাওরে বাটার পান
যাইবার কথা কও যদি কা*ই*ট্টা রাখমু কান
দামান্দ বও দামান্দ বও
আইলারে নয়া দামান আসমানেরো তের
বিছানা বিছাইয়া দিলাম
শাইল দানের নেরা
দামান্দ বও দামান্দ বও
দামান্দ বও দামান্দ বও
গানের তালে তালে সবাই নাচছে। মেঘ নিচের দিকে থেকে একবারের জন্যও চোখ ফিরিয়ে আরহার দিকে তাকায়নি ।
বিষয়টা আরহা খেয়াল করেছে। গান শেষ হতেই কড়া তালিতে মুখরিত হলো চারপাশ।
আরহা চুপটি করে মেঘের পাশে এসে বসলে আলতো ভাবে নিজের হাতটা মেঘের হাতের উপর রাখলো।কোমল কন্ঠ বললো,তুমি কি রাগ করছে!
আরহার মুখে তুমি ডাক শুনে মেঘের হৃদপিণ্ড কেঁপে উঠলো, বা’হাত দিয়ে বুকের বা’পাশ চেপে ধরলো। কেমন এক অনুভূতি, কেমন এক শীতল প্রবাহ বয়ে গেলো শরীর মন জুড়ে। যে অনূভুতি ভাষায় প্রাকাশ করার মতো না।
আরহা মেঘের আর একটু কাছাকাছি আসলো,তুমি আমার দিকে তাকালে সত্যি গাইতে পারতাম না। তবে কোন একদিন তোমার হাতে হাত রেখে,চোখে চোখ রেখে শুধু তোমার জন্য গাইবো।
মেঘ কি উত্তর দেবে আরহার কথা শুনে বেচারা শকট মনে হচ্ছে সে ভুল শুনছে। নিজেই নিজেকে চিমটি কাটলো।
আরহা এখনো সে ভাবেই মেঘের হাত ধরে আছে।
– এই তুমি এতোক্ষণ কি বললে আবার বলোতো!
– এবার আরহা ভিষণ লজ্জা পাচ্ছে।
– প্লিজ বলো না। আমি বিশ্বাস করতে পারছি না তুমি আমাকে তুমি করে বলেছো।
আরহা কিছু না বলে নিজের হাত সরিয়ে নিতে চাইলো মেঘ ছাড়লো না। একজন এসে খাবার দিয়ে গেলো আজকে সবাই কলাপাতায় খাবে।
– আরহা মৃদু স্বরে বললো, কি হলো ছাড়ুন কেউ দেখলে কি ভাববে!
– যা ভাবার ভাবতে দাও! আগে তুমি করে বলো তবেই ছাড়বো।
– ছেড়ে দাও আমাকে।
-কি বলল৷ শুনতে পাইনি আবার বলো।
– ছেড়ে দাও না।
– মেঘ আরহার কানের কাছে মুখ এনে বললো তোমায় হৃদ মাঝারে রাখবো ছেড়ে দেবো না।
– তাহলে আর কি ধরে রাখুন খেতে হবে না।
মেঘ হাত ছেড়ে দিলো।
দু’জনেই খাবার খেয়ে নিলো। খাবার শেষ করে আরহা বললো, আমরা কিন্তু সকাল সকাল বের হব, আমার জন্য কতকিছু ঘটে গেলো। আপুই কতটা কষ্ট পেলো আমার একদম উচিৎ হয়নি এভাবে না বলে আসা।
-সেটা এখন বুঝতে পারলে বিবিজান! তোমার একটা ভুলে কতগুলো মানুষ কষ্ট পেলো। এরজন্যই বড়রা বলে ভাবিয়া করিয় কাজ!করিয়া ভাবিও না। যা করেছে তা আর বদলাতে পারবেনা।
– বিশ্বাস করুন এই মানুষগুলো ছোট বেলায় আমার সাথে যা ব্যবহার করেছে তাই ভয়ে আমি আপুইকে নিয়ে আসিনি যদি এবারও কিছু করে। যানেন এখনোও সেদিন রাতের কথা মনে পরলে ঘুম ভেঙে যায়। ভয়ে কলিজা শুকিয়ে যায়। মনে হয় আঘাত গুলো এখনো লেগে আছে। কথা বলতে বলতে আরহার গলা ধরে আসছে।
মেঘ আরহার হাতের উপর হাত রেখে বলে, বিবিজান সেসব এখন অতীত, আর অতীতকে মনে রেখে বর্তমানকে নষ্ট করা যাবে না। আর এনিয়ে কিছু বলবানা। ওই যে দূর আকাশে অর্ধ চন্দ্র দেখতে পারছো, সেও কিন্তু পূর্ণ হয়!তবে মজার বিষয় হলো আবার পূর্ন থেকে শূন্য হয়ে যায়। ঠিক মানুষের জীবনেো এমন সময় আসে অনেক চড়াই-উতরাই পার করতে হয়। তাই বলে,সব শেষ!
যেখান থেকে শেষ সেখখান থেকেই নতুন করে শুরু করতে হয়।খরাপ থাকা ভালো থাকাটা আমাদের হাতেই থাকে, শুধু ভাগ্যটা উপর থেকে নির্ধারিত। আমরা পরিস্থিতি মেনে নিয়ে ভালো থাকতে পারি।আজ যে পাশে আছে কাল সে নাও থাকতে পারে! তাই বলে জীবন তো থেমে থাকবে না।সে তো নিজ গতিতে চলতে থাকবে। আরহা মেঘের কাঁধে মাথা রাখলো, এতোক্ষণে সবাই ঘরে চলে গেছে। খোলা আকাশের নিচে, প্রেয়সীর মাথা কাঁধে নিয়ে অর্ধ চন্দ্র উপভোগ করছে এক যুবক।
মেঘ কথা থামিয়ে দিয়ে আরহাকে নিজের সাথে আগলে নিলো। আরহার কপালে আসা ছোট চুল গুলো আলতো হাতে কানের পিছনে গুঁজে দিলো। ভালোবাসার অনূভুতি বরাবরি মধুর,আরহা চোখ বন্ধ করে মুহূর্তটাকে অনুভব করছে। মেঘ প্রেমময় কন্ঠে বললো,বাকিটা জীবন তোমাকে এভাবেই আগলে রাখতে চাই!তোমার জীবনের প্রতিটা দিন ভালোবাসাময় করে দিতে চাই! শুধু তুমি আমার পাশে থেকে সুযোগ দিয়ো আমাকে, তোমায় আগলে রাখার, তোমায় ভালোবাসার!
আরহা এতো গভীর কথার কোন প্রতিত্তোর করলোনা বরং নীরবে উত্তর দিলো।আর একটু মিশে গেলো মেঘের সাথে। এ যেনো না বলেও বলে দেওয়া হাজার কথা। মেঘ পরম আনন্দে আগলে নিলো আরহাকে। আজকের খোলা আকাশ, দূর আকশের চাঁদ, তারা আশে পাশের গাছপালা, আর নিশাচর পাখি যেনো সাক্ষী হয়ে রইলো এই ভালোবাসার। মেঘ আরহার কপালে আলতো করে ভারোবাসার পরশ এঁকে দিলো।
আরহার ইচ্ছে করছে এভাবেই জীবন পার করে দিতে, জীবনে এতো সুখ তার কঁপালে লেখাছিলো!আরহার খুব ইচ্ছে করছে মেঘকে একটু ভালোবাসতে! তবে তার লজ্জারা তাকে বাঁধা দিচ্ছে। খানিকক্ষণ চিন্তা ভাবনা করে মেঘের যে হাতটা আরহাকে আগলে রেখেছে সেই হাতেই আরহার উষ্ণ ঠোঁটের পরশ এঁকে দিলো। কিছু মূহুর্তে জন্য দুজনেই হারিয়ে গেলো। মনে হচ্ছে সময়টা এখানেই থমকে যাক। মেঘ মোটেই প্রস্তুত ছিলো না।তার ধারনার বাহিরে ছিলো।
একজনের ঠোঁট হাতে তো একজনের ঠোঁট কপালে। ভালোবাসা বুঝি সত্যি সুন্দর।
একজন দূর থেকে এ দৃশ্য দেখে দৃষ্টি সরিয়ে নিলো আলতো হাতে নিজের চোখের জলটুকু মুজে নিলো প্রান্ত। বুকের বাম পাশে চিন চিন ব্যথা অনুভব করছে সে কি এক তীব্র ব্যথা। নিজের ভালোবাসার মানুষটা অন্য কাউকে ভালোবাসছে। সেখানেই হাঁটু মুড়ে বসে পরলো প্রান্ত। মৃদু স্বরে বললো, তোমাকে শুধু এভাবে ভালো থাকতে দেখতে চাই! আমার না হও তবুও ভালো থাকো।
রাতের আধার কেটে যেয়ে নতুন ভোরের আলো পাখির কিচিরমিচির ধ্বনি, সকালের শীতল বাতাসে ঘুম উবে গেলো আরহার। নিজেকে মেঘের বাহুতে আবদ্ধ দেখতে পেয়ে ঠোঁটের কোনে ফুটে উঠলো মিষ্টি হাসি।ভালোবাসার দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ভালোবাসার মনুষটির দিকে। মেঘের চুলগুলো এলোমেলো হয়ে কপালে পরে আছে। আরহা মেঘের চুলগুলো নিয়ে খেলা করছে।
সাবু এসে বললো, তোমরা ঘরে আহো, এহন সবাই কামে যাইবো।
মেঘ আর আরহা উঠে পরলো, দু’জনের মন আজ প্রফুল্ল।
নাস্তা করে সবার থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলো।
ঢাকা পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রায় বিকেল হয়ে গেলো
নীলু অপেক্ষায় আছে আরহার ফিরে আসার,ইমতিহান সোফায় বসে আপলে খাচ্ছে আর নীলুর এক্সাইটমেন্ট দেখছে। মনে মনে ভাবছে কে বলবে, এরা দু’জন আপন বোন নয়।
কলিং বেলের আওয়াজ শুনেই নীলু দৌঁড়ে গিয়ে দরজা খুলে দিলো। তবে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটিকে দেখে মুহূর্তেই নীলুর হাসি খুশি মুখটা চুপসে গেলো।
#চলবে
#তুমি_আসবে_বলে
#নুসাইবা_ইভানা
পর্ব- ৩৭
হাসি খুশি মুখটা চুপশে গেলো নীলুর, এতো ভালো একটা মুহূর্তে হিয়াকে এখানে আশা করেনি। রুখ গলায় জিজ্ঞেস করলো, এখানে কি চাই?
– আমাকে ভেতরে আসতে বলবেনা।
– আমি মনে করি আপনার ভেতরে কোন কাজ নেই।
– একবার আসতে দাও এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হয়।
নীলু এবার খেয়াল করলো হিয়া আরেকজন উপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
সাইডে সরে দাঁড়ালো, হিয়া ভিতরে প্রবেশ করলো।
ইমতিহান বললো, কি এসেছে তোমার কলিজায় পানি। বলতে বলতে সামনে তাকিয়ে হতভম্ব হয়ে গেলো। সাথে সাথে চেহারায় ভয় বাসা বাঁধলো নীলুকে হারানোর ভয়।
ইমতিহানকে এখানে দেখবে মোটেই ভাবতে পারেনি হিয়া। ইমতিহানকে ধরার জন্য সামনে অগ্রসর হতেই পরে যেতে নিলে ইমতিহান হিয়াকে আগলে নেয়।
নীলু দাঁড়িয়ে দেখছে, মেজাজ তার চরমে একে তো এই মেয়েকে সে দু’চোখে সহ্য করতে পারে না তার উপর আবার তার ইমতিহানের বাহুতে। ঝড়ের গতিতে এসেই হিয়াকে নিজে ধরে বসিয়ে দিলো।
ইমতিহান কি বলবে বুঝতে পারছে না।
নীলু বললো, কি বলতে এসেছেন সেটা বলে চলে যান।
– তুমি একটু আমাদের স্পেস দিতে তাহলে আমি ইমতিহানের সাথে কিছু কথা বলতাম।
– তা আমার হ্যাসবেন্ডের সাথে আপনার কি কথা। কি গো তুমি একা একা ওনার কথা শুনবে!
ইমতিহান বোকার মতো তাকিয়ে আছে নীলুর দিকে
– এভাবে কি দেখছো তোমার বউ তুমি পরেও দেখতে পারবে, আগে কথার উত্তর দাও।
– নিজেকে সামলে নিয়ে বলল, যা বলার আমার ওয়াইফের সামনে বলুন!
হিয়া চোখের কোন নোনা জলে ভরে উঠলো, আজ এই জায়গায় তার থাকার কথা ছিলো। নিজের ভুলে সব হারিয়েছে। নীলকে উদ্দেশ্য করে বললো,তোমার হ্যাসবেন্ড কে তো আর কেড়ে নিতে আসিনি একটু কথা বলবো।
নীলু ইমতিহানের পাশ ঘেসে বসে বলে আমরা হলমা দুই দেহো এক প্রাণ তাই, যা বলার আমার সামনেই বলতে হবে।
– হিয়া দেখো তোমার কিছু বলার থাকলে নীলিমার সামনেই বলো, “সি ইজ মাই ওয়াইফ” আমার সব কিছুর ব্যপারে তার জানার অধিকার আছে।
হিয়ার ভেতরে ঝড় বয়ে গেলো, ধরে আসা গলায় বললো, কবে বিয়ে করেছো ইমতিহান!
– এইতে তিনমাস আগেই।
– আপনার এই অবস্থা কি করে হলো?
– সে এক বিশাল কাহিনী অন্য কোন সময় বলবো। নীলুকে তুমি কোথায় পেলে!
– কোথায় পেলে মানে কি! কেউ যখন ধোকা দিয়ে চলে যায়। কারো৷ সরলতার সুযোগ নেয়। সাময়িক সময়ের জন্য সে ভেঙে পড়লেও বিপরীত পাশের মানুষের ধোঁকার কথার ভেবে ঠিক উঠে দাঁড়ায়। আর তার জীবনকে রঙিন করে দেওয়ার জন্য এরকম একটা মানুষও খুঁজে নেয়। এই যে আমার পাশে বসে আছে মেয়েটা। জানো সে আমার জন্য কতটা দামী! আরে দামী কেনো বলছি সে অমূল্য। এরকম মানুষ জীবনে আসলে নিজের সবটুকু ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখতে হয়।
– আমার কথায় কষ্ট পেয়ো না। আর আমাকে আর অভিশাপ দিওনা ! আমার ভুলের শাস্তি আমি ভোগ করছি। তোমাকে হাসিখুশী দেখে ভালো লাগছে। শুভকামনা রইলো তোমাদের আগামী জীবনের জন্য।
– নীলু কিছু বুঝতে পারলে না শুধু বোকার মতো শুনেই গেলো।
ইমতিহান নীলুর হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বলে, এই হাত যতদিন ধরে আছি! ততদিন ভালোই থাকবো। আপনি ছেড়ে চলে যাওয়ার পর এই মানুষটি আমাকে ভীষণ ভাবে আগলে রেখেছে।তবে আপনাকে ধন্যবাদ।আপনি না গেলে এতো ভালো একটা মানুষের দেখা পেতাম না। আমি নীলিমার মতো একটা মেয়েকে পেয়েছি জীবনে আর কিছু চাওয়ার নেই।
– হিয়া শুধু বললো, ভালো থাকবেন আপনারা। আমি এসেছিলাম আরহার সাথে দেখা করতে।
এর মধ্যেই আরহা চলে আসলো, দরজা খোলাই ছিলো, এসেই আপুই বলে জোড়ে ডাক দিলো আরহার কন্ঠ শুনে একছুটে দৌড়ে এসে আরহাকে জড়িয়ে ধরলো।নীলু কেঁদে ফেললো, আরহা নীলুর চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে বলে কাঁদছো কেনো?এই দেখো আমি একেবারে ঠিক আছি। এটা আনন্দ অশ্রু তোকে এভাবে সুস্থ দেখে গড়িয়ে পড়লো চোখ থেকে।
মেঘ একটু এগিয়ে এসে হিয়াকে সোফায় বসা দেখে বলে,তুমি এখানে কি মনে করে?
– তোমাদের দেখতে আসলাম
– দেখতে এসেছেন নাকি আবার নতুন কোন মতলব আছে।
– এই অবস্থায় আর কি মতলব থাকবে।শুধু তোমাদের সবার কাছ থেকে ক্ষমা চাইতে আসলাম। যদিও আমি ক্ষমার যোগ্য নই তবুও যদি পারো ক্ষমা করে দিয়ো।
– তোমার ক্ষমা তোমার কাছেই রাখো দ্বিতীয় বার তোমার ছায়া যেনো আমাদের উপর না পরে। আর অবস্থার কথা বলছো এই অবস্থা কেনো এর চেয়ে ভয়াবহ অবস্থা তোমার কাম্য। তিন তিনটে মানুষ তোমার জন্য পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। একবার তাদের অবস্থার কথাটা চিন্তা করে দেখো। এবার আসতে পারো।
হিয়া মাথা নিচু করে বের হয়ে গেলো কেউ তাকে আটকালো না। নিজের কর্মফল নিজে ভোগ করছে।আজ তার জীবনটাও রঙিন থাকতো। একটা ভুল সব শেষ করে দিয়েছে। সাথে কেড়ে নিয়েছে তিনটি জীবন।
আরহা, নীলু, ইমতিহান, মেঘ একসাথে বসে কথা বলছে, এমন সময় আরহা বললো, তোমরা বসো আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি জরুরি মিটিং আছে। মেঘ আরহার পিছু পিছু উঠে চলে আসলো। ইমতিহান আর নীলু হাসছে।
ইমতিহান নীলুকে বললো,চলো আমরা আগামীকাল বিয়েটা করে ফেলি!
– মানে কি মাথা ঠিক আছে তোমার। বাবা, মা না আসতে কিসের বিয়ে?
– বাবা, মা তো আজকে রাতেই চলে আসবে
– আগে আসুক ওনারা যদি আমাকে মেনে না নেয়!
– মেনে নেবেনা মানে দুইশবার মেনে নেবে,আমার খুশিতেই তাদের খুশি। আর এতোক্ষণ তোমার পরিচয় তাদের জানা হয়ে গেছে।
– সেটাই তো ভয় আমি সামান্য একজন কাজের মানুষের মেয়ে।
– দেখো আর কখনো নিজেকে সামান্য বলবে না। শোন আমার কাছে তুমি অসামান্য। আর তোমার বিয়ের পর একটাই পরিচয় তুমি আর সেটা হলো, মিসেস ইমতিহান।
হইছে এখনো রিং পরাতে পারোনি আসছে মিসেস ইমতিহান।
আরে এসব রিংটিং কি তোমাকে ডিরেক্ট কবুল পড়াবো।
আরহা রুমে এসে ওড়নাটা বেডে রেখে সামনে ঘুরতেই
মেঘ দেখে বলে আপনি?
– অন্যকারো আসার কথা ছিলো বুঝি। আর আমার দিকে পিঠ করে কেনো দাঁড়ালে সামনে ঘুরে দাঁড়াও
– আরহা ওরনাটা গায়ে জড়িয়ে সামনে ঘুরে বলে, কি সমস্যা আপনার।
– তুমি আমার সমস্যা। এই তুমি আমাকে আপনি আপনি করে কেনো বলছো!
– তো কি বলবো
– বলো, ওগো তুমি এখানে কেনো এসেছো।
– আমি এসব বলতে পারবো না।
– বলতে হবে, দেখো হ্যাসবেন্ড ওয়াইফের মধ্যে এমন দূরত্ব ঠিক না। তুমি ফ্রেশ হও আমি বাসর সাজানোর ব্যবস্থা করছি। তারপর উঠতে বসতে তুমি আমাকে ওগো,কিগো,হ্যাঁ গো বলে পাগল করে দিবা। ইশ ভাবতেই ভাল লাগছে।
– এগুলো শুধু আপনার ভাবনায় হবে বাস্তবে না।
তাহলে আর কি করার আমাকে বাধ্য হয়ে তোমার জন্য সতীন আনতে হবে।
আরহা মেঘের একদম কাছে এসে বলে, কি বললেন আবার বলেন!
– মেঘ আরহার কোমরে হাত রেখে আরো কাছে টেনে নিয়ে বলে, আমি কিছু বলেছিলাম? কই আমার তো মনে পরছে না।
মেঘের এতো কাছে আসায় আরহার নিশ্বাস ভারী হতে লাগলো। মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না। কেমন দম বন্ধ কর পরিস্থিতি। মেঘ আরহার গালে নিজের ঠোঁট ছুয়ে দিয়ে বলে, এইটুকু তেই এই অবস্থা বিবিজান। তৈরি থাকুন আপনাকে আর দূরে রাখবো না। একেবারে নিজের করে নিবো। একদম এতোটা কাছে রাখবো যে আমার প্রতিটি নিশ্বাস তোমার নিশ্বাসে মিশে যাবে। আরহা মেঘের টি শার্ট দু’হাতে খামচে ধরে আছে। এ এক অন্যরকম অনূভুতি যার ব্যাখ্যা আরহার জানা নেই।মেঘ আরহার কানের কাছে মুখ এনে বলে,এখন ছেড়ে দিচ্ছি তবে খুব তাড়াতাড়ি নিজের করে নেবো।এমনিতে তুমি তো শুধু আমার। তবে এবার একেবারে আমার হবে। আরহা জোড়ে জোড়ে নিশ্বাস নিচ্ছে মেঘ আরহার কাছ থেকে সরে আসলো। রুম থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় আরহাকে চোখ মেরে বলে ভালোবাসি বউ পাখি।
#চলবে
ভুলত্রুটি মার্জনীয় দৃষ্টিতে দেখবেন।
হ্যাপি রিডিং 🥰