তুমি আসবে বলে পর্ব-৩৮+৩৯+৪০

0
379

#তুমি_আসবে_বলে

#নুসাইবা_ইভানা

পর্ব- ৩৮

আরহা ফ্রেশ হয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মেঘের বলা কথাগুলো ভাবছে আর মিটি মিটি হাসছে। মাঝে মাঝে লজ্জা পাচ্ছে। হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকাচ্ছে। আর গুন গুন করে গান গাইছে, তুমি আশে পাশে থাকলে আরো খুশি খুশি থাকছি। আর যাচ্ছি ভুলে আমি কে কোথায়! এরমধ্যেই আরহার ফোনটা সশব্দে বেজে উঠলো দৃষ্টি ঘুরিয়ে ফোনটা হাতে তুলি নিয়ে দেখলো প্রান্ত কল করছে। আরহার মনে পরলো আজতো প্রান্তের আন্ডারে একটা কনসার্ট আছে। কলটা রিসিভ করে কানে তুলে নিলো, আরহা সালাম দিলে আসসালামু আলাইকুম।
– প্রান্ত সালামের জবাব নিলো,আরহার কথার টন বলে দিচ্ছে সে কথাটা আনন্দে আছে। প্রান্ত কোন ভণিতা ছাড়া বললো,আজকের কন্সার্টে আসবেন তো?

– প্রান্তর কথা শুনে আরহা খিলখিল করে হেসে উঠলো।
আরহার হাসির ধ্বনিতে প্রান্তর হার্ট বিট বন্ধ হওয়ার উপক্রম। নিজেকে সামলে কোনমতে বললো, মিস আরহা,আমি কি কোন জোক্স বলেছি।

আরহা হাসি থামিয়ে বললো, জোক্স নয়তো কি প্রান্ত সাহেব। মানে আপনি আমাকে আপনি করে বলছেন আবার এতো অপরিচিত মানুষের মতো ট্রিট করছেন।
– আপনি আমার ক্লাইন্ট সো আপনাকে সম্মান দিয়ে কথা বলাটা আমার নৈতিক দায়িত্ব।
– আরে আপনি আমার সাথে কথা বলছেন!আর তারচেয়ে বড় কথা এতোদিনে মনে হলো আমি সম্মানিত ব্যক্তি!

প্রান্ত কথা না বাড়িয়ে খট করে কল কেটে দিলো।
আরহা হাসতে হাসতে নিচে আসলো।
মেঘ বোকার মতো তাকিয়ে আছে আরহার দিকে হাসলে মানুষকে সত্যি সুন্দর লাগে। তবে ভালোবাসার মানুষের মুখের হাসি মনে হয় সবচেয়ে সুন্দর অমায়িক

আরহার শরীরে হালকা ক্রিম কালারের থ্রিপিস,যেনে এই রংটা আরহার জন্য তৈরী হয়েছে। এতো ভালো মানিয়েছে। এলেমেলো চুলগুলো হাটাঁর সাথে সাথে দুলছে। মেঘ তাকিয়ে থাকতে থাকতে আরহা কোন ফাঁকে মেঘের সামনে এসে হাত দিয়ে তুড়ি বাজিয়ে বলে, আমাদের সিঁড়িটা বুঝি দেখতে একটু বেশীই সুন্দর!

মেঘ নিজের খেয়ালে বিভোর থেকে বলে, না সিঁড়ি দিয়ে নামা মানুষটি সুন্দর।

আরহা মেঘের হাতে চিমটি কেটে বলে,ছিহহহহ আমি ভাবতেও পারিনি ওই বুড়া মহিলার দিকে আপনি এবাবে মুগ্ধ হয়ে তাকাবেন।

মেঘ জোড়ে চেচিয়ে বলে, এই আমি তো তোমাকে দেখছিলাম। এখানে বুড়ো মহিলা কোথা থেকে আসলো।
আরহা, আর ইমতিহান দু’জনেই হেসে দেয়। ইমতিহান বলে, ভাই তুইতো পাগল হয়ে যাচ্ছিস। দেখ সিড়ি দিয়ে মধ্য বয়স্ক একজন সার্ভেন্ট নামছে।

মেঘ কোন কথা না বলে আরহার হাত ধরে টেনে একপাশে নিয়ে এলো।

– এই আপনি আমাকে এভাবে টেনে নিয়ে আসলেন কেনো? জিজু কি ভাববে।

– আগে চুল বাঁধো।

-চুল বাঁধো মানে?

– মানে চুল খোলা রাখতে পারবা না

– বললেই হলো!

– হুম বললেই হবে, না বললে কি ভাবে হয়, এবার ঝটপট চুল বাঁধো।

– আরে কারনটা কি? সেটা তো বলবেন।

মেঘ আহার কানের পিছনে চুলগুলো গুজে দিয়ে বলে, আমার এলোকেশী কে, এই এলোমেলো খোলা চুলে শুধু আমি দেখবো। আর কেউ না।

মেঘের শীতল কন্ঠে আরহার হৃদয়ে অনূভুতির ঢেউ খেলে গেলো। হৃদযন্ত্র কেমন অস্থির হতে লাগলো। মেঘ আরহার কপালে চুমু দিয়ে বলে, তাড়াতাড়ি চুল বেঁধে আসো,আর শুনো এই লজ্জা রাঙামুখ নিয়ে সবার সামনে এসো না। সবাই কিনা কি ভাববে! আমি তো কিছুই করলাম না। বলতে বলতে আরহার ঠোঁটের সাথে নিজের ঠোঁটটা হালকা করে ছুয়ে দিয়ে উধাও।

আরহা এখনো বোকার মতো দাঁড়িয়ে আছে,ঘটনার আস্কমিকতায়। কিছুই তার মাথায় ঢুকলো না। শরীরে কেমন জ্বর জ্বর অনুভব হচ্ছে। নিজের ঠোঁট হাত রেখে বলে,উনি কি লি*প কি*স করলেন!নাকি আমি ভুল ভাবছি। দূর কি হলো টা কি বুঝতেই পারলাম না।
চুলগুলো খোপা বেঁধে নিলো। কয়েকবার নিশ্বাস নিয়ে নিজেকে ঠিক করে নিলো তারপর সবার সামনে গেলো।

এতোক্ষণে সবাই খবার টেবিলে খবার খেতে ব্যস্ত। আরহা একবার মেঘের দিকে দৃষ্টি দিলো। কেমন নির্লিপ্ত ভাবে খাবার খাচ্ছে মনে হয় কিছু সময় পূর্বে কিছুই হয়নি।

ইমতিহান বললো,শালী সাহেবা, আমার ফ্রেন্ড কি ডোজটা একটু বেশি দিয়েছে আপনি এখনো বিস্ময় কাটিয়ে উঠতে পারছেন না যে!

মেঘ কাশি দিয়ে বলে কি হচ্ছে কি ইমতিহান এসব কি ধরণের কথাবার্তা। খাচ্ছো খাও আর অন্যকেও খেতে দাও।

নীলু ইমতিহানের পিঠে জোড়ে নখ বসিয়ে দিলো। ইমতিহান উফ করে উঠলো।

মেঘ বললো, ডোজ কি কম পরছে এতো আস্তে আওয়াজ করছিস।
এবার চারজন এক সাথে হেসে উঠলো।

খাওয়া দাওয়া পর্ব শেষ করে, চারজন মিটিংয়ে বসলো।

প্রান্ত কল কাটার পর থেকে অপেক্ষায় আছে আরহা তাকে কল ব্যাক করবে। একটু পরপর ফোনের স্কিনের দিকে তাকাচ্ছে।

প্রান্তর এসিস্ট্যান্ট বললো, স্যার কিছু মনে না করলে একটা কথা বলতাম।

– বলো

– কি়ছু জিনিসের জন্য আমাদের অপেক্ষা ছেড়ে দিতে হয়,যে জিনিসটার জন্য অপেক্ষা করছি তা হয়তো কখনো আমাদদের কাছে ফিরে আসবে না। সেই অপেক্ষা আমাদের হৃদয়ে শুধু ক্ষত তৈরী করবে।তারচেয়ে সেই অপেক্ষাকে উপেক্ষা করে সামনে এগিয়ে চলাই শ্রেয়।

প্রান্ত উঠে দাঁড়ালো, এসিস্ট্যান্টকে উদ্দেশ্য করে বললো, ভালোবাসা যত সহজ, ভুলে যাওয়া তত সহজ না। সে কোনদিন ফিরবে না জেনেও তার জন্য অপেক্ষা করটা ভালোবাসা। সে আর ফিরবে না সেটা আমি জানি তবুও অপেক্ষা করে তৃপ্তি পাই। এই অনূভুতি তুমি বুঝবে না।তবে যদি বুঝতে তবে এই অপেক্ষাকে উপেক্ষা নয়, আলিঙ্গন করতে। কারণ তার সাধ বড়ই তৃপ্তিদায়ক। যাকে ভালোবাসি তাকে ছাড়লেও ভালোবাসা ছাড়া যাবে না। তাকে আমি ভালোবাসবো অনন্তকাল। আরেকটা কথা জানো। প্রিয় মানুষটা কখন অপ্রিয় হয়না।আমাদের জীবনে অনেকেই আসবে যাবে। তবে সেই বিশেষ প্রিয় মানুষটার জায়গা কেউ নিতে পারে না। সে জীবনে না থেকেও হৃদয়ে থেকে যায়।

– সরি স্যার আমি বুঝতে পারিনি।

– সরি বলতে হবে না।শুধু মনে রেখো! “আমি তার প্রেমে পরিনি, আমি তাকে ভালোবেসেছি।
প্রেম তো ফুরিয়ে যায় কালের বিবর্তনে।
ভালোবাসা রয়ে যায় শতজনম ধরে।
প্রান্ত চলে গেলো। মনে তার বিষাদ।

ভালোবাসার গভীরতা তারাই বুঝতে পারে! যারা ভালোবাসার মানুষটিকে নিজের করে পায়নি।

আরহা আর মেঘের মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে, আরহা বলছে বিয়ের ড্রেস হবে লাল খয়েরী রঙের। মেঘ বলছে সাদা। এনিয়ে দু’জনেই কথা কাটাকাটি করে যাচ্ছে।

নীলু বললো,আচ্ছা বিয়েটা আমার তাই কি রঙের ড্রেস পরবো, সেটা আমরা ঠিক করবো। তোদের বিয়ে হয়েগেছে,ভুলে যাস না।

মেঘ বলে উঠলো, তোমারা একাএকা বিয়ে করবে! এটা কেমন দেখায়, তারচেয়ে আসো মিলেমিশে বিয়ে করি।

তুই ঠিক আছিস ভাই, মিলেমিশে কিসের বিয়ে? নিজে যখন একাএকা বিয়ে করেছিস সেবেলায়।এবার আমার একা একা বিয়ে করার পালা। ইমতিহানের কথা শেষ হওয়ার আগেই নীলু বললো, না, না আমি একা বিয়ে করবো না। আগে বোনের বিয়ে তারপর আমার।

মেঘ বললো,আরে এতো চিন্তা করার কি আছে, দু’টো বিয়ে একসাথে হয়ে গেলেই তো হয়ে।

আমি আর বিয়েটিয়ে করতে পারবো না। আমি নাচবো গাইবো। আনন্দ করবো।আর বিয়ের দরকার কি?

মেঘ আরহার হাত ধরে বলে, বাচ্চা মানুষের কোন কথা নেই। তারা চুপ করে থাকবে আমরা বড়রা ডিসিশন নেবো।
– ও হ্যালো আপনি বাচ্চা বলছেন কাকে আর তিন মাস পরে ঊনিশ বছর হবে। আর আমার মতো এডাল্ট একটা মেয়েকে আপনি বাচ্চা বলছেন!সো ফানি।

– আমি তো ভুলেই গেছি আপনি তো বুড়ি হয়ে গেছেন
– আপনার সহস হয় কি করে আমাকে বুড়ি বলার।
– আমার অনেক কিছুই সাহস হয়। বুড়ি।

– বুড়ি আপনার বউ।

– হুম আমার বুড়ি বিবিজান।

কিরে শুধু শুধু আমার সুইট শালিকাকে কেনো খ্যাপাচ্ছিস!তোর মতো মেঘের লাইন পরে যাবে আমার শালীর এক ইশারাতে।

নীলু বললো, আহারে আর আমার ভাইয়ের জন্য মেয়ের তো খুব অভাব হবে। একবার হায় বললে, হাজার মেয়ে হ্যালো বলবে।
মেঘ বললো, থাক, থাক আমার হাজার লাগবে না। আমার বুড়ি বিবিজান হলেই হবে।

ইমতিহান বললো, তাহলে তোমরা রেডি হয়ে নাও সবাই মিলে নুরদের বাসায় যাই। বাবা, মা আসার সময় হয়েগেছে।

আরহা সেদিনের গাউন পরেছে যেটা মেঘ লন্ডন থেকে কিনেছিলো। সাথে মেচিং অর্নামেন্টস আর হালকা মেকাপ। ঠোঁটে বেবি পিংক কালারের লিপস্টিক।লিপিস্টিক দেয়া শেষ করে আয়নায় কারো প্রতিচ্ছবি দেখতেই আরহার হার্ট বিট বেড়ে গেলে। আরহা দৃষ্টি সরিয়ে নিলো। মেঘ আরহার একদম কাছে ঘেসে দাঁড়িয়ে, আরহার পিঠ থেকে চুল সরিয়ে দিতে লাগলো ….

#চলবে

#তুমি_আসবে_বলে

#নুসাইবা_ইভানা

পর্ব -৩৯

আরহার দম বন্ধ হয়ে আসছে। মেঘের উষ্ণ নিশ্বাস আরহা ঘাড়ে আছড়ে পরছে। নিজের ড্রেস শক্ত করে চেপে ধরে কাঁপা-কাঁপা গলায় বললো কি করছেন। কথাটা পুরোপুরি মুখ দিয়ে বের হলো না। মনে হয় মাঝ পথে কেউ আটকে দিয়েছে। মেঘ নিজের পকেট থেকে একটা নেকলেস বের করে, পরিয়ে দিলো আরহার গলায়। চুলগুলো আগের মতো পিঠে ছড়িয়ে দিয়ে আরহাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিলো। থুতনিতে হাত রেখে মুখটা উপরের দিকে তুললো,এ যেনো সদ্য লজ্জায় নুয়ে পরা লজ্জাবতী পাতা। আরহার বন্ধ চোখের পাপড়ি গুলো অনবরত নড়ছে। মেঘ আরহার চোখে ফুঁ দিলো। আরহা দু’হাতে নিজের ড্রেসটা আর একটু শক্ত করে আকড়ে ধরলো। মেঘ আরহার কানের ইয়ার রিং খুলে নিজে হাতে থাকা ইয়ার রিং পরিয়ে দিলো। মেঘের স্পর্শে আরহা কেমন কেঁপে কেঁপে উঠছে। পরানো শেষ হতে মেঘ আরহার দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে। আরহার নাকের ডগায় বিন্দু বিন্দু ঘাম জমা হয়েছে। ঠোঁট দুটো মৃদু কাঁপছে, শ্বাস প্রশ্বাস দ্রুত উঠা নামা করছে। মেঘ আলতে হাতে আরহার নাগের ঘাম টুকু টিস্যু দিয়ে মুছে দিলো। আরহার কপালে কপাল মিশিয়ে দিলো।দুজনের নিশ্বাস মিশে যাচ্ছে। মেঘ আরহার কপাল থেকে কপাল সরিয়ে আরহাকে জড়িয়ে ধরলে। আরহাও মেঘের সাথে মিশে রইলো। আরহার মাথায় চুমে খেয়ে বলে,তোমাকে আমি ভিষণ কষ্ট দিয়েছি তাই না? আরহার উত্তর না পেয়ে আবার কথাটা রিপিট করলো।

এবার আরহা কোমল স্বরে বললো, কিছু ব্যাথা না পেলে ভালোবাসার গভীরতা ঠিক মাপা যায় না। এই যে এতো ঝড় ঝাপটার পরেও আপনার জীবনে আমি, আমার জীবনে আপনি থেকে গেছেন।সম্পর্কের এতো তিক্ততাও আমাদের আলাদা করতে পারেনি। এতেই আমি ভিষণ খুশি। আপনার আর আমার মাঝে কেউ আসতে পারেনি।

-কি করে পারবে বলো, বছর খানেক আগেই তো কোন এক বোকারানী, আমার হৃদয় তার নামে করে নিয়েছে। সে নাম মুছে দিয়ে আমি যে নতুন কোন নাম লিখতে পারিনি। তার সেই বোকা বোকা কথার প্রেমে পরেছিলাম। তার সেই সহজ সরল হাসির মায়ায় আটকে গিয়েছিলাম। আর সারাজীবন এভাবেই আমার বোকারানীর হয়ে থাকতে চাই। কিছু সময় দুজনেই নিরব রইলো একজন আরেকজনকে আলিঙ্গনের মাধ্যমে উপলব্ধি করে নিচ্ছে। নিরবতা ভেঙে মেঘ বললো, আচ্ছা যদি তোমাকে আমি তোমার আরো একটা প্রিয় জিনিস উপহার দেই! আমার উপর ভরসা করে মেনে নেবে।

– আপনি আমার প্রিয় আমার আর কিছু চাই না।

– চাইনা বললেই হবে আমি তো দেবোই।

– না, না আমি এতো তাড়াতাড়ি চাই না।

– মেঘ ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলো,নিরাশ কন্ঠে বললো, কেনো চাওনা!

-আরহা মেঘের থেকে সরে দাঁড়িয়ে বলে, আমি এখন কোন বাচ্চা চাইছি না। এখন হানিমুনে যেতে পারলাম না। মন ভরে আপনার সাথে ঘুরতে পারলাম না।

-লাইক সিরিয়াসলি! তোমার মনে হলো আমি, বেবি প্লানিং করছি। মেঘ কথাটা বলে জোড়ে জোড়ে হাসতে লাগল।

আরহা বোকার মতো তাকিয়ে ভাবছে আমি কি কোন ভুল কথা বলে ফেলিছি। মেঘের হাসি দেখে রাগ হচ্ছে। তাই কাঁদো কাঁদো, স্বরে বললো, হাসবেননা তাহলে আমি যাবো না। এখনি ড্রেস চেঞ্জ করে ফেলবো।

– আরে সুইট বিবিজান এখন আমি ঔসব করতে পারবো না। এখন আমার একটা ইম্পরট্যান্ট কাজ আছে।তুমি বেবি চাইছো দেবো তোমাকে বেবি। তাই বলে এতো তারাহুরো করার কি আছে।তাছাড়া টাইমিংয়ের একটা ব্যপার আছে।

আরহা মুখ ঘুরিয়ে বলে অসভ্য লোক, মুখে কিছু আটকায় না।

– নিজে বললে সে বলায়!

– আমার ঘাট হয়েছে আর বলবো না।
– আচ্ছা তাড়াতাড়ি চলো আমার ওই বাসায় যাওয়ার আগে তোমার একজন প্রিয় আপনজনের সাথে তোমাকে দেখা করবো।

-সেই কখন থেকে বলে যাচ্ছেন আমার আপনজন আমার আপনজন বর্তমানে এই পৃথিবীতে, আপুই আর আপনি ছাড়া আমার আপনজন কেউ নেই।
শুনেন কাছের মানুষ অনেক থাকে। তবে আপনজন হাতে গোনা।

– বিবিজান আর কোন কথা শুনতে চাইনা যদি সত্যি আমাকে আপনজন মনে করে থাকো। তাহলে তুমি করে বলবে। আর না হলে কথা বলবা না।

আরহা আস্তে করে বললো দেরি হচ্ছে যাবেন না।

– কি বললে আবার বলো, আমি তোমার হ্যাসবেন্ড তুমি আমাকে ভালোবেসে ডাকবে।

আরহা নিশ্চুপ। মেঘ আবার বললো,তোমার চুপ থাকার অর্থ দাঁড়ায় তুমি মন থেকে আমাকে মেনে নিতে পারনি! ঠিক আছে তুমি থাকো আমি আসছি
মেঘ সামনের দিকে পা বাড়াতেই।
আরহা পেছন থেকে মেঘকে জড়িয়ে ধরে বলে, তুমি আমাকে ছেড়ে কোথায় যাবে।একবার যেতে পেরেছো, তখন তোমাকে আটকাতে পারিনি এবার আর যেতে দিচ্ছি না। মেঘ মনে মনে হাসছে। কারণ তার ট্রিকস কাজে লেগেছে নিজের আনন্দটাকে চেপে রেখে বললো,সত্যি আগলে রাখতে চাও তো?

– এভাবে বলছো কেনো তুমি আছো মানে আমি আছি
মেঘ সামনে ঘুরে আরহাকে বলে,ভালো অভিনয় শিখেছো বিবিজান।

– আচ্ছা এবার চলো আর কথা বাড়াবা না।

-হাতে হাত রাখো এখন থেকে বাকি জীবন এই হাত এভাবে ধরে রাখবে।

দু’জনে বের হয়ে আসলো মেঘ ড্রাইভ করছে আরহা মেঘের পাশে বসে আছে।

ইশতিয়াক সাহেব আসরের নামাজ পরে বারান্দায় দাঁড়ালেন আজ তার মনে কোন বিষন্নতা নেই। মেয়েটাকে নিয়ে চিন্তিত ছিলেন৷ এখন থেকে আর তাও করতে হবেনা। এবার হয়তো মরেও শান্তি পাবো।
মনে মনে বলছে,শারমিন তুমি হয়তো আমাকে ক্ষমা করবে না। আমার জন্য তোমাদের এতো কষ্ট হস্য করতে হয়েছে।পারলে ক্ষমা করে দিও শারমিন। আমি আবেগে গা ভাসিয়ে তোমাদের সাজানো জীবনটা নষ্ট করেছি। এই মুখ আমি আমার মেয়েকে দেখাতে চাইনা।

নীলু আর ইমতিহান এসেছে নূরদের বাসায়। নূর বললো, ওয়াও ভাবি তোমাকে তো পুরোই নতুন বউদের মতো লাগছে। কি ব্যপার বলোতো। নিজেরা কি একা একা বিয়েটা সেরে ফেলছো নাকি।

ইমতিহান বললো, এই তোর লজ্জা করেনা বড় ভাইয়ের হবু বউয়ের সাথে মজা করতে!
– এটা তুমি কি বললা ভাইয়া। ননদ, ভাবির মধ্যে কত কিছু হবে সেসব নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না। তারচেয়ে এটা বলো, এখনো হবু ভাবি তো নাকি ভাবি করে নিয়ে এসেছো।

ইমতিহান নুরের কান টেনে বলে তবে রে। নীলু এসে ইমতিহানের কান টেনে বলে, আমার কিউট ননদির কানটা ছেড়েদিন না হলে নিজের কানটা আর থাকবে না।

ইমতিহান নুরের কান ছেড়ে দিয়ে বলে দল ভারী করা হচ্ছে। একবার শুধু আমার কিউট শালীকাকে আসতে দাও!

– ভুলে যাচ্ছ কেনো সুইটহার্ট, সেখানে আমার দুলাভাইও আছে।

– তোমাকে বিয়েই করবো না।

– নীলু ইমতিহানের গলা টিপে ধরে বলে, তবে রে সাহস কতো বড় তোমার এই কথা বলার। যাও আমিও বিয়ে করবো না,তোমাকে।

এরমধ্যেই কারো কঠিন কন্ঠ ভেসে আসে কার এতো বড় সাহস আমার ছেলের গলা ধরে?

আরহা মেঘকে বলছে, এই আমরা কোথায় যাচ্ছি, এরাস্তা তো নূরদের বাসার রাস্তা না। না বললে আমি যাবোই না।

মেঘ আরহার কথাকে ইগনোর করে বললো, আচ্ছা তোমার বাবার ফ্যামিলি সম্পর্কে তুমি কতটুকু জানো?
– তেমন কিছুই জানিনা। শুধু জানি আমার দাদু,অনেক বড় বিজনেস ম্যান ছিলেন।

– আর কিছু জানো!

আমার চাচ্চু ছিলো একজন, কিন্তু বিপদের দিনে তারা কেউ আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি। আর তারা কোনদিন আমাদের খোঁজও নেয়নি। আরহার গলা ধরে আসলো চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পরার আগেই মেঘ নিজ হাতে তা মুছে দিয়ে বললো,তোমার চোখ থেকে যা অশ্রু ঝড়েছে তার মূল্যি দিতে পারবো না। নতুন করে কেনো ঋণী করছো! এখন থেকে কখনো কাঁদবে না। আমি আছি তো আর কখন তোমায় ছাড়বো না। বিশ্বাস আর ভরসা করতে বলবো না। কারণ সেটা তোমার মন থেকে জন্ম নেবে। আমি বলে বলে করাতে পারবো না। আরহা কিছু বলবে, তার আগেই দ্রুত গতিতে একটা বাস তাদের দিকে ধেয়ে আসতে লাগলো…..

#চলবে

#তুমি_আসবে_বলে

#নুসাইবা_ইভানা

পর্ব-৪০

অল্পের জন্য বড় একটা দূর্ঘটনার কবল থেকে বেঁচে ফিরেছে মেঘ,আরহা। মেঘ আরহার মাথাটা নিজের বুকে চেঁপে রেখেছে। কিছু সময় পূর্বের কথা ভাবতেই গাঁ শিউরে উঠছে।

আরহা বললো,ছাড়ুন কখন থেকে ধরে রেখেছেন। ছাড়বো না। একটুর জন্য তোমাকে হারাতে বসেছিলাম

– সব দোষ আপনার মাঝ রাস্তায় গাড়িতে বসে বউয়ের চোখের পানি মুছে দিতে হবে!

– মাঝ রাস্তায় গাড়িতে বসে বউয়ের কাঁদতে কেনো হবে!

আরহা মুখ ঘুরিয়ে বলে,বাস ড্রাইভার নেহাৎ ভালো মানুষ তাই বেঁচে আছেন। না হলে এতোক্ষণ পগার পাড়।

-তোমার মতো সেলিব্রিটি গাড়িতে আছে তো তাই বাস ড্রাইভার গাড়ি থামিয়ে দিয়েছে।
– একদম মজা করবেন তারা জানবে কি ভাবে। লোকটা সত্যি ভালো।

– হুম পৃথিবীতে ভালো মানুষ এখনো বেঁচে আছে তাই তো পৃথিবী এতো সুন্দর।

– ঠিক বলছেন

-আর-একবার আপনি করে বললে গাড়ি থেকে বের করে দেবো।

– আরে তুমি এতো রেগে যাচ্ছ কেনো। এবার তাড়াতাড়ি চলো। তোমার ফ্রেন্ডের বাবা,মা কেমন মানুষ কে জানে। আপুই একাকী ফিল করবে।

– নিজের বাবার চিন্তা করো আগে পরে সব দেখা যাবে।

– আরহা মন খারাপ করে বলে আমার বাবা।

– সরি বিবিজান কষ্ট দিতে চাইনি। আমি বলতে চেয়েছি হতেই পারে তোমার বাবা এখনো বেঁচে আছে। আমরা কোন ভাবে খুঁজে দেখবো যদি পেয়ে যাই।

– সে সব পরে হবে এখন চলুন তো।

– ভুলে যাচ্ছ কেনো তোমাকে একজন আপন মানুষের সাথে দেখা করাবো। ড্রাইভ করতে করতে বলে মেঘ।

– কখন থেকে একি কথা বলে যাচ্ছেন আর কত সময় লাগবে তাড়াতাড়ি করুন। আমিও দেখতে চাই আমার আপন মানুষটি কে?

– আর পাঁচ মিনিট তারপরেই পৌঁছে যাবো।

ইশতিয়াক সাহেব নিজের সব জিনিস পত্র গুছিয়ে নিচ্ছেন এখানে আর থাকবেন না। তিনি ঠিক করছেন সিলেটেই কাটিয়ে দেবে বাকি জীবন।

মেঘ গাড়ি থামিয়ে আরহার চোখ বেঁধে দিয়ে বলে, চোখ বন্ধ রেখে আমার উপর ভরসা করতে পারবে তো?

আরহা মাথা নাড়িয়া সম্মতি জানালো।

মেঘ আরহার হাত ধরে সামনে এগিয়ে আসলো, ইশতিয়াক সাহেব সবে নিচে এসেছেন ব্যাগ পত্র নিয়ে। মেঘকে দেখেই বলে তুমি এখানে।

– আমি কি তোমার কাছে আসতে পারিনা বাবা।

ইশতিয়াক সাহেব বলল, তুমি তো একা আসোনি।

– হুম একা আসিনি আজ আপনার বেঁচে থাকার উৎস কেও নিয়ে এসেছি।

– তুমি কেনো এটা করলে, আমার এই মুখ আমি দেখাতে চাইনা। এই চেহারা যে অভিশপ্ত।

– এভাবে কেনো বলছেন বাবা।আপনার মেয়ে জন্মের পর থেকে আপনার চেহারা দেখনি। আজ পর্যন্ত কাউকে বাবা বলে ডাকতে পারেনি।

আরহা আর চোখ বেঁধে রাখতে পারলোনা। হাতের সাহায্যে চোখের সামনে থেকে কাপড় সরিয়ে দিতেই, সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটির দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। চোখের কোন বেয়ে নোনা জল গড়িয়ে পরছে।
মেঘ সামনে থেকে সরে দাঁড়ালো।দীর্ঘ আঠারো বছর পর বাবা মেয়ে মুখোমুখি।

আরহা হাত বাড়িয়ে ছুয়ে দিলো ইশতিয়াক সাহেবকে। মৃদু স্বরে জিজ্ঞেস করলো সত্যি আপনি আমার বাবা!

ইশতিয়াক সাহেব মেয়েকে এতো কাছে পেয়ে জড়িয়ে ধরে বলে, হ্যাঁ মা,আমি তোর হতভাগা বাবা।

দু’জনেই কেঁদে কেঁদে নিজেদের মনের বাব প্রকাশ করছে।
প্রায় পঁচিশ মিনট পর মেঘ বললো, এখানে কি কান্নার প্রতিযোগিতা চলছে?

আরহা আর ইশতিয়াক সাহেব হেসে ফেললেন।
মেঘ বললো, বাবা এবার তো আমাদের যেতে হবে। ওদিকে ইমতিহান হয়তো অপেক্ষা করছে।
ইশতিয়াক সাহেব বললেন তবে চলো আমিও তোমাদের সাথে যাবো।

তিনজন রওনা হলো নূরদের বাসায়।

ইমতিহানের মা বললো, এই মেয়ে তোমার সাহস কি করে হলো আমার ছেলের গলা চেপে ধরার!

নীলু মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে আছে। হোসনেয়ারা বেগম নীলুর হাত ধরে বলে এবার থেকে কোন অন্যায় করল৷ দু’জন মিলে গলা টি*পে দেবো।

নীলু এখনো ঘোরের মধ্যে আছে। হোসনেয়ারা বেগম বললেন এতো বিস্মিত হতে হবে না। আমি তোমার শাশুড়ি ড,ট,কম “মা”। তাই এখন থেকে তুমি আমার ছেলের বউ প্লাস মেয়ে। নীলু কেঁদে ফেললো। হোসনেয়ারা বেগম বললেন এই বোকা মেয়ে এতো আনন্দের দিনে কাঁদতছো কেনো। আজ থেকে কোন কান্না কাটি নয়!

আরহা এসে দেখে নীলু কাঁদছে, একছুটে নীলুর কাছে এসে বলে, কি হয়েছে আপুই! তুমি কাঁদছো কেনো তোমাকে কে কি বলেছে আমাকে বলো?

ইমরান সাহেব (ইমতিহানের বাবা)আশ্চর্য দৃষ্টিতে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আছে এটা কি করে হতে পারে একজন মানুষের সাথে এতো মিল সেই ঊনিশ বছর আগের কথা মনে পরে গেলো, সেই চোখ সেই নাক। তার বিষ্ময় আর একটু বাড়িয়ে দিতে ইশতিয়াক সাহেব পেছন থেকে আস্তে করে বললেন নিজের রক্ত তো তাই পরিচিত মনে হচ্ছে!
এতো বছর পর পরিচিত কন্ঠ শুনতে পেয়ে পিছু ফিরে বললেন ইশতিয়াক তুই!

সবার দৃষ্টি তখন ইশতিয়াক সাহেবর দিকে নিবদ্ধ। ইমরান সাহেব এগিয়ে এসে ভাইকে জরিয়ে ধরতে চাইলে।ইশতিয়াক সাহেব সরে দাঁড়ালেন। কড়া কন্ঠ বললেন, তোর মত ভাই আমার প্রয়োজন নেই। যে নিজের স্বার্থে নিজের বোনের জামাইকে ভাই পরিচয় দিতে পারে সে আমার কেউ না। আমি এখানে আমার মেয়ের জন্য এসেছি।

ইনতেহা বেগম ছুটে এসে ইশতিয়াক সাহেবকে জড়িয়ে ধরে বললেন, ভাইয়া তুমি বেঁচে আছো?

ইশতিয়াক সাহেব ইনতেহা বেগমকে ছাড়িয়ে নিয়ে বললেন, আপনারা ভুল করছেন। আপনি যেই ইশতিয়াককে চেনেন সে আরো ২৪ বছর আগেই মা*রা গেছে। এখন যে বেঁচে আছে সে এক অসহায় ইশতিয়াক যার একমাত্র সহায়তা তার মেয়ে।

এদিকে সবাই একে অপরের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। কি হচ্ছে তারা কেউ বুঝতে পারছে না।

নূর ইমতিহানকে বললো তুমি আমার মামাতো ভাই এটা আগে জানতে?

– আরে না। এসবের কিছুই তো বুঝে আসছে না। কি হচ্ছে এসব?

মেঘ এগিয়ে এসে বলে, বাবা তুমি আমাদের বুঝিয়ে বলো এসব কি হচ্ছে?
– এসব শুনে কোন লাভ নেই বাবা।তারচেয়ে আমরা যে কাজের জন্য এসেছি সেটাই শেষ করি!

– তোমাকে জোড় করবো না। তবে জানার আগ্রহ আছে। তুমি না বলতে চাইলে জোড় করবো না।

ইশতিয়াক সাহেব সোফায় বসলেন তারপর বলা শুরু করলেন, শারমিনকে আমি নিজ পছন্দ বিয়ে করি। তাই বাবা,আমাকে আর শারমিনকে বাসা থেকে বের করে দেন। তখন তোমার বাবা আর আমি মিলে ব্যবসা. শুরু করি। এরপর এভাবেই আমাদের দিন কাটতে থাকে। কিন্তু আমার জ*ঙ্গি গোষ্ঠীর সাথে যুক্ত হওয়া সব শেষ করে দেয়। আমার জেল হয়। আর তোমার বাবা মা দেশ ছাড়া হন। এমন সময় আমার অসহায় স্ত্রী গর্ভাবস্থায় আমার পরিবারে কাছে সাহায্য চাইলে তারা তাকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়ে। জেল থেকে বের হতে হতে আমার সব ততদিনে শেষ। খবর নিয়ে জানতে পারি সম্পত্তির লোভে আমার বড় ভাই আমার ছোট বোনের হ্যাসবেন্ডকে নিজের ভাই বলে পরিচয় দেয়। এরা মানুষ না। তাই এদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই।

ইনতিহা বেগম ভাইয়ের পায়ের কাছে বসে বলে, আমাদের ভুল হয়েছে ভাইয়া আমাদের ক্ষমা করে দাও। তবে আরো একটা সত্যি কথা যেটা তুমি জানোনা। বাবা কিন্তু মা*রা যাওয়ার আগে অনেক খোঁজ করেছিলো ভাবির। কিন্তু পায়নি।

ইমতিহান আর আরহা একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে। ইনতিহা বেগম উঠে এসে আরহাকে জড়িয়ে ধরলেন এতো কাছে থেকেও আমি চিনতে পারলাম না। আমাকে ক্ষমা করে দিস মা। ইমরান সাহেবও আরহার কাছে ক্ষমা চাইছেন। আরহা উভয়ের হাত ধরে তার বাবার পাশে নিয়ে গেলো, বাবার পাশে বসে বলে, বাবা আমি সব ভুলে যেতে চাই! যা হারিয়েছি তা হয়তো ফিরে পাবোনা। তবে যা পেয়েছি তা হারাতে চাইছি না।
ইশতিয়াক সাহেব মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। উঠে এসে নিজের ভাইকে জড়িয়ে ধরলেন।

মেঘ দূরে দাঁড়িয়ে দেখছে আর ভাবছে, আজ বাবা,মা বেঁচে থাকলে কত ভালো হতো। এমন সময় নীলু মেঘের হাত ধরে বলে,মন খারপ করছো কেনো ভাইয়া তোমার আমি আছি তো এই ছোট বোন থাকতে তোমার আর কি চাই।

মান অভিমানের পালা শেষ করে সবাই মিলে বিয়ের ডেট ফিক্সড করলেন। আগমী ১৮ তারিখে বিয়ের দিন ধার্য করা হয়েছে।

নূর বললো,আজ ১০ তারিখ হাতে বেশি সময় নেই বহুত কাজ করতে হবে।

ইমতিহান বলে তোর আবার কিসের কাজ রে।
– শপিং করা,পার্লারে যাওয়া, মেহেদী দেওয়া, তোমাদের বউকেে পাহারা দেওয়া।নাচ প্রাকটিস করা। আরো কত কি।

– সেটাই আমি ভাবলাম তুই না জানি কি রাজকার্য উদ্ধার করবি।

#চলবে

ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

হ্যাপি রিডিং 🥰