তুমি ছুঁয়ে দিলো এ মন পর্ব-১৩

0
152

#তুমি_ছুঁয়ে_দিলো_এ_মন

পর্ব ১৩

#জান্নাতুল_মাওয়া_লিজা

“আ’ম ইন লাভ উইথ ইউ ত্রিশা”

হঠাৎ আহনাফের মুখে একথা শুনে ঝটকা খেলো ত্রিশা। অনাকাঙ্ক্ষিত! আহনাফ স্যার! নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিলো ত্রিশার। নদী তীরের কাশবনে তখন মাতাল বিকেল হাওয়া বইছে। দোল খাচ্ছে নদীতীর ঘেঁসে দাঁড়িয়ে থাকা জারুল গাছের ফুল ও পাতাগুলোও। প্রকৃতি অত্যানুকুল ও শীতল, তবে ঘটনার আকস্মিকতায় ত্রিশার কান দিয়ে গরম হাওয়া বের হলো। কাঁধে রাখা বই খাতা পত্রের ব্যাগটা ওর কাছে ভীষণই ভারি মনে হচ্ছিলো। কয়েক মিনিট দুজনেই চুপ!

আহনাফই নিরবতা ভেঙ্গে বলে উঠলো,

” ডোন্ট ওরি ত্রিশা, এটা ভেবো না যে, আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি বলে তোমাকেও ভালোবাসতে হবে! এটা আমার মনের বোকা একটা অনুভূতি যে, আমি প্রেমে পড়েছি! তাই বলে এতটা লোভী নয় এ বোকা মন যে, প্রতিদান চাইবে। আমার ভালোবাসার বিনিময়ে তুমি ভালো বাসবে নাকি বাসবে না, সেটা সম্পুর্ন তোমার নিজস্ব ব্যাপার, নিজস্ব অভিমত। আর তোমার প্রতি আমার আকাঙ্খার সাথে আমাদের ছাত্রী শিক্ষক সম্পর্ককে মিলিও না। আমার পড়া ঠিকমতো কমপ্লিট না করতে পারলে তোমার শাস্তির কোনো হেরফের হবেনা! একদম কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে দিবো। চলো তোমাকে এগিয়ে দিই”

এসব কথা শুনে ত্রিশা যেনো একধরনের চেপে রাখা হাপিত্যেশ হতে মুক্ত হলো। ত্রিশা মুখ বন্ধ রেখে পুরোটা শুনে শুধু মাথা নাড়লো। তারপর শুনশানভাবে হেঁটে এগিয়ে চললো আহনাফের অনুসরনে।

আহনাফ ওকে অটোরিকশায় উঠিয়ে দিয়ে নিজে বাইক নিয়ে চলে গেলো।
অটোরিকশায় বসে বসে ত্রিশা অনেক কথাই ভাবলো। বিশেষ করে রবি ভাইয়ের কথাটা। কারন রবি প্রায়ই ত্রিশাকে বলতো,
” ত্রিশা যদি বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষার আগেই প্রেম করিস তাহলে সাপ লুডুর প্রথম চালেই তুই সাপের পেটে যাবি। ভর্তি পরীক্ষায় তুই মা*রা খাবি! এই দেখ যদি ভুলেও ত্রিনার সাথে আমার এই প্রেমটা খালি ভর্তি পরীক্ষার আগে হইতো, তাহলে আমি জীবনেও যা কিছুই হইতাম, ইঞ্জিনিয়ার আর হইতে পারতাম না! সো বি কেয়ারফুল ত্রিশা। তোর দৃষ্টি শুধু তোর গোলের দিকেই থাকে যেনো ত্রিশা! এর হেরফের করিস না!”

ত্রিশার এই কয়েকটা কথা যেনো মগজের মধ্যে সিলমোহর হয়ে ছিলো। সে আর যাই হোক বুয়েটে চান্স পাওয়ার আগে প্রেমে পড়বেনা বলে পণ করেছিলো। মনে মনে আবার সেই প্রতিজ্ঞাটাকে শান করে নিলো যে, “আহনাফ তোমার প্রতি যতই দুর্বল হোক না কেনো, প্রেমে পড়া যাবে না ত্রিশা! কারন, তোমার প্রেমে পড়া বারণ”

কারন এর আগেও একটা প্রেমের প্রস্তাব সে প্রত্যাখ্যান করেছে, এলাকারই ছেলে রোমেলের! রোমেল কয়েকদিন বেশ পাগলামি করে পরে ত্রিশার পাত্তা না পেয়ে পরে ওর পিছ ছেড়ে দেয়।

তবে ত্রিশাকে এই বলে রাখে যে, ” আমারে ভালোবাসলি না রে ত্রিশা, তবে ভবিষ্যতে কোনোদিন যদি দেখি কারো লগে প্রেম করছিস তবে তার খবর করে ছাড়বো”

রোমেলের এই কথাকে ত্রিশা তখন মোটেও কর্ণপাত করেনি।
তাছাড়া ছেলেদের সাথে কখনো বিশেষ কথাবার্তা না বলার দরুন ওর সাথে কোনো ছেলেই পাত্তা পায় না।

এসব ভাবতে ভাবতেই অটোরিকশা বাসার সামনে এসে গেলো।
বাসায় এসে ত্রিশা দেখে যে কনকচাপা নেই। আজো কনকচাপা বাসার সব রান্না বান্না শেষ করে স্নিগ্ধ আর মুগ্ধকে ববিতার কাছে রেখে তার মায়ের কাছে গিয়েছে।

” ওর নানী হসপিটালে এডমিট আছে, প্রাণ যায় যায় অবস্থা! আর ওর একমাত্র কুলাঙ্গার মামা কি একটা মামলার আসামী হয়ে পলাতক আছে। আমি বলি, ঐ রকম ভাইরে আমি হলে ত্যাজ্যভাই করে দিতাম, আর বোকা কনক? ”

যখন ত্রিশা বাড়িতে প্রবেশ করলো তখন, ড্রয়িং রুমে বসে বসে পান খেতে খেতে ববিতা এক চাকরানীর সাথে এ ধরনের আলাপেই মজে রয়েছিলো। ত্রিশা মনে মনে ভাবলো, “হ্যাঁ, দাদীমা, আমার মা তো একটা বোকাই! নইলে আপনার মতো জালিম শাশুড়ী আর জহিরের মতো লম্পট স্বামির অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করে? ”

নিজের কক্ষে গিয়েই ত্রিশা কাপড় পালটে বই খাতা নিয়ে বসে পড়লো পড়তে। ঠিক তখনি ইন্দুর স্বামী নয়ন এলো ওর রুমের দরজায়। দরজা লক না করেই শুধু ভীড়ানো ছিলো। রুমের দরজায় দাঁড়িয়ে ঠকঠক করে নয়ন বললো,
“আসতে পারি মামনী? ”

ত্রিশা বই থেকে মুখ উঠিয়ে আহ্লাদী হয়ে বললো,

” আসুন! আবার অনুমতি নেওয়া লাগে? ”

নয়ন হেসে বললো,
“মেয়ে এখন বড় হয়েছে, অনুমতি তো নিতে হবেই”

নয়নের বয়স চল্লিশার্ধো! ত্রিশার স্কুল কলেজে যখন গার্ডিয়ান মিটিং হতো তখন কনকচাপা ও জহিরের পরিবর্তে নয়নই যেতো । আর জহিরই শুরু থেকেই নয়নকে আর পাভেলকে পাঠাতো ত্রিশার গার্ডিয়ান হিসেবে। কারন ব্যবসায় সামান্য সাহায্য করে বাসায় শুয়ে বসে থাকা ছাড়াতো নয়ন আর পাভেলের কোনো কাজই ছিলো না। পাভেল আর নয়নই যেনো ত্রিশার বাবা!

জহিরের আচার আচরন তার দুই বোন ইন্দু ও বিন্দুও জেনেটিক্যালি পেয়েছে অনেকটা। জহির যেমন নারীলিপ্সু ; ইন্দু আর বিন্দুও তেমনি পুরুষলিপ্সু! পাভেল আর নয়ন যেনো ওদের শুধু লোক দেখানো হাজবেন্ড। কারন ইন্দু আর বিন্দু দু বোনেরই একাধিক এক্সট্রা মেরিটাল এফেয়ার আছে। কিন্তু পাভেল আর নয়নকেউ তারা ছাড়বে না। হাই সোসাইটি মেইন্টেইন করতে হলে হাজবেন্ড নামক চিজটারও দরকার আছে। আর পাভেল আর নয়ন এক্ষেত্রে একেবারে যথোপযুক্ত। পাভেল আর নয়ন যেনো পিঞ্জিরা বদ্ধ পাখি, কয়েকটা ভাত কাপড়ের বিনিময়ে খাঁচার বন্দী জীবনকেই তারা বরণ করে নিয়েছে। কনকচাপার মতো ওরাও ইন্দু আর বিন্দুর সকল অপকর্মই মুখ বুজে সহ্য করে আসছে শুরু থেকেই। ত্রিশা যেমন পাভেল আর নয়নকে পিতৃবৎ শ্রদ্ধা করে পাভেল আর নয়নও তেমনি ত্রিশাকে সন্তানসম স্নেহ করে। কিন্তু ত্রিশা যতই বড় হতে লাগলো ইন্দু আর বিন্দু যেনো ততই ত্রিশার প্রতি জ্বলতে থাকলো। এর একমাত্র কারন ছিলো ত্রিশার সৌন্দর্য! পাভেল আর নয়ন যদি ত্রিশার সৌন্দর্যে পাগল হয়ে যায় এই ভয়ে ইন্দু বা বিন্দু কেউই পাভেল আর নয়নকে ত্রিশার সাথে কথা বলতে দিতো না। কিন্তু তারপরো লুকিয়ে লুকিয়ে পাভেল আর নয়ন ত্রিশাকে এটা সেটা পড়া বুঝিয়ে দিতো।

তবে ইন্টারমিডিয়েটে উঠার পর পাভেল আর নয়নের সাথে ত্রিশার দূরত্ব বেড়ে যায় একমাত্র ইন্দু আর বিন্দুর কটাক্ষের জন্য।

নয়ন রুমে ঢুকলো মাথা নত করে।

” মামনি, পড়ছো? তোমার পড়ার তো আর খবর রাখতে পারিনা, ভাইজানের নতুন টেক্সটাইল মিলটায় আমি আইসিটি ম্যানেজার হিসেবে আর পাভেল আইসিটি চিফ একাউন্টেন্ট হিসেবে বসি তো, বহু দায়িত্ব”

ত্রিশা একটু উপহাসের স্বরে বললো,
” হুউম, জানি তো! বাসায় বসেই ল্যাপটপে আইসিটি ম্যানেজার আর আইসিটি একাউন্টেন্ট!”

নয়ন হেসে বললো,

” জানি, জানি, মামনী, তুমি আমাকে উপহাস করছো! আমি আর পাভেল ভাই হলাম মেরুদন্ডহীন মানুষ মামনী, নইলে কি আর এখানে এতটা বছর এভাবে পড়ে থাকি? আর তাছাড়া উপায়ই বা কি আমাদের? এখান থেকে চলে যেতে চাইলে ইন্দু আর বিন্দু যে আমাদের নামে নারী নির্যাতন সহ আরো কয়েকটা মামলা ঠুকে দিবে? তাই আর কি করার, গোটা জীবনটা এই খাঁচায়ই কাটিয়ে দিতে হবে! আর তোমার মায়ের কথা তো বলাই বাহুল্য!”

ত্রিশা গুরুগম্ভীর স্বরে বললো, আই হেইট অল অফ ইউ আংকেল!”

নয়ন হেসে বললো,

” ঘৃণা করো! সে অধিকার তোমার আছে! তো, তোমার পড়াশুনা কেমন চলছে? সাইন্স নিয়েছো, ইন্টারের সাইন্স তো অনেক কঠিন, কিভাবে সামাল দিচ্ছো সব পড়া”

ত্রিশা বললো,
” ক্লাশগুলো মনোযোগ দিয়ে করার চেষ্ঠা করি, আর বান্ধবীরা নোটপাতি দেয় সব, আর একটা প্রাইভেট পড়ি, ম্যাথ!”

” বেশ! হয়েছে! তো একটা প্রশ্ন করি?”

” জ্বী, করেন অবশ্যই”

“মামনি শুনলাম, ভাইজান নাকি তোমার বিয়ে ঠিক করেছে, আমেরিকার এক পাত্রের সাথে? কথাটা সত্য?”

” না, সত্য নয়, আমি ঐ বিয়েতে রাজী নই”

” তবে শাশুড়ী আম্মা যে বললো, তুমি নাকি রাজী?”

” আংকেল, বিশ্বাস করেন, আমি একবারো বলিনি যে আমি রাজী, তবে মা সবাইকে এই বলে দিয়েছে যে, আমি নাকি রাজী!”

” তোমার মা যখন এটা বলেছে, তাহলে এর পেছনে নিশ্চয়ই কোনো না কোনো উদ্দ্যেশ্যে আছে! ”

ত্রিশা মুখ বাঁকিয়ে বললো,

” হুউম উদ্দ্যেশ্যে তো আছেই, ফুললি ব্যাবসায়ীক উদ্দ্যেশ্য হাসিল, তারা ব্যাবসা করতে চায় আমাকে দিয়ে।”

নয়ন চিন্তিত মুখে বললো,

” তবে আমি এটুকু শুনলাম আসছে নভেম্বরেই নাকি তোমার আর ঐ ছেলের এংগেইজমেন্ট, আর আগামী বছর জানুয়ারি কি ফেব্রুয়ারী নাগাদ বিয়ে, আর তারপরই আমেরিকা নিয়ে চলে যাবে! ”

এসব কথা শুনে ত্রিশার মাথায় রাগ চড়ে গেলো, অন্য কারো উপর নয় বরং মায়ের উপর! আগে বাড়ি আসুক সে!

সে রাগান্বিত স্বরে বললো,
” শুনে রাখুন! মুখ বুজে আপনারা সব সহ্য করেছেন, তাই বলে আমি করছি না!”

নয়ন মনে মনে ভাবলো, ” যাক! এই মেয়ে তাহলে মায়ের মতো হবে না, এখান থেকে রক্ষা পেতে হলে একটা বিপ্লব খুবই জরুরি ”

.
.

ত্রিশাকে অটোরিকশায় উঠিয়ে দিয়ে আহনাফ সোজা বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে যায়।
বন্ধুদের মধ্যে রাতুল ওর বেস্টফ্রেন্ড। পেশায় ডাক্টার। সে ও বিসিএস ক্যডার। বিসিএস এ উত্তীর্ণ হয়ে সে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়োগ পেয়েছে।
রাতুল আহনাফের এতো ভালো বন্ধু যে, চোখের পানে চেয়েই সে আহনাফকে পড়ে নিতে পারে।
নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের কাজের সময় দুজনেই দলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলো। কিন্তু ঝড়ের মতো সে দল ভেঙ্গে যায় ক্ষমতাসিন দের দৌরাত্ম্যে। দুজনেই ভালো আহত হয়। আহনাফ প্রথম বারের চেষ্ঠায় ক্যাডার হলে রাতুল দ্বীতিয়বার।

রাত নয়টা পর্যন্ত আহনাফ বাইকের উপর বসেই পূরবী নদীর ব্রিজের উপর আড্ডা দিলো রাতুল সহ আরো কয়েকজন। গ্রুপের সবাই বিবাহিত রাতুল আর আহনাফ বাদে।
রাতুল আর আহনাফকে রেখে তাই সবাই অনেক আগেই চলে গেলো বাড়ি। কিন্তু রাতুল আর আহনাফের তো কোনো পিছুটান নেই বাড়ি যাওয়ার। সবাই চলে যাওয়ার পর রাতুল একটা সিগারেট ধরিয়ে আহনাফকে বললো,

” বন্ধু না খাও নারী আর না খাও সিগারেট! তোমার মতো পবিত্রকে ছুঁতেও ভয় করে আমার”

আহনাফ বন্ধুর এ ধরনের ইয়ার্কি শুনে হো হো করে হেসে দিলো।

রাতুল আবার বললো,

” কিন্তু আমি বুঝি, সব বুঝি, তুমহারা দিল তো আব পাগাল হে! কন হে ও?”

আহনাফ বিষম খেয়ে বলল,

” সিরিয়াসলি বন্ধু, তুই ক্যামনে বুঝলি রে?

রাতুল ধোঁয়া ছুঁড়ে বলল,

” তোর চোখ বলছে, তুই প্রেমে পড়েছিস, আর তুই অস্বীকার করছিস?”

” নারে! দোস্ত! তোরে অস্বীকার করার উপায় আছে?”

” মেয়ে রাজী রে দোস্ত? ”

” কিছু বলে নাই রে! আমার স্টুডেন্ট! শুনে ঘাবড়ায়া গেছে! উত্তর আর কি দিবে? ক্লাশে যেভাবে আমি সবাইকে কান ধরাই! ভয় পায় আমাকে দেখে”

” ও আই সি…”

বলে খ্যাক খ্যাক করে হেসে দিলো রাতুল।

” যদি পালায়া বিয়ে করতে চাস বন্ধু, এনি টাইম, এনি হেল্প, বান্দা হাজির হবে”

” থ্যাংক ইউ দোস্ত, তবে তা যেনো না করতে হয়, বাসায় মা বাবা যেনো ভালোই ভালোয় রাজী হয়ে যায়, কিন্তু জানিস? বাবা আমার জন্য অন্য একটা পাত্রী ঠিক করেছে! যে মেয়েটা আমার দু চোক্ষের বিষ সে মেয়ে!”

রাতুল হেসে বললো,

” মনের ব্যাপার বন্ধু অলওয়েজ কম্পলিকেটেড। অলওয়েজ, অলওয়েজ। জানিস তো কতবার আমি ছ্যাকা খেলাম। তবে, শুভকামনা তোর জন্য, বাই দোস্ত! ”

” আচ্ছা, দোস্ত বাই”

বলে আহনাফ রাতুলের থেকে বিদায় নিলো।

কিন্তু রাস্তায় বাইক চালানোর সময় দূর হয়ে একটা সি. এন. জি দ্রুতবেগে আহনাফকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় ধাক্কা মেরে পালিয়ে গেলো।

বিকট শব্দ সহযোগে বাইক সহ আহনাফ রাস্তার পাশের খাদে পড়ে গেলো।

(চলবে)