তৃষ্ণার্ত প্রেম পর্ব-১৮+১৯

0
7
তৃষ্ণার্ত প্রেম
বাংলা রোমান্টিক গল্প | তৃষ্ণার্ত প্রেম

#তৃষ্ণার্ত_প্রেম|১৮|
#শার্লিন_হাসান

ভোরের আলো ফোটার কিছুক্ষণ আগে তাইজ্যিন বেড়িয়ে পড়ে খন্দকার বাড়ি থেকে। চৌধুরী মহলে এসে সোজা নিজের রুমে ঢুকে যায়। ওয়াশরুমে গিয়ে লম্বা একটা শাওয়ার দেয়। আজান হতে রুমে আসে। আজকে কী মনে হতে অযু করে নামাজ আদায় করে নেয়। সারারাত ঘুমানো হয়নি ভেবে বিছানায় গা এলিয়ে দেয়।

সকাল দশটায় শার্মিলা নাস্তা করার জন্য ড্রয়িং রুমে যায়। সিয়া তাকে দেখে শুধায়, “উহুম, বলে আসলে আয়োজন করতাম। এভাবে লুকিয়ে আসতে যায় কেন? এই শার্মিলা তুমি জিজুকে এসব শেখাওনি তো?”

“তুমি দেখেছ?”

“হ্যাঁ! বেলকনিতে ছিলাম। তোমার কী মনে হয় আমি সন্ধ্যায় ঘুমিয়ে যাওয়া পাবলিক?”

“না, দেখেছ ভালো কথা। কিন্তু ওকে এসবের কিছুই আমি শেখায়নি। ওর মর্জি!”

“বাজে লোক তো!”

“হয়ত…

কথা শেষ করে শার্মিলা নাস্তা খাওয়ায় মনোযোগ দেয়। আজকে একটু হেডকোয়ার্টারে যাবে সেজন্য আজকে নিজের ডিউটির ড্রেসই পরিধান করে। গাড়ি নিয়ে হেডকোয়ার্টারে আসতে আরোশ খানের সাথে দেখা। শার্মিলাকে দেখে আরেশ খান কুশলাদি বিনিময় করে। দুজন কথা বলতে,বলতে ভেতরের দিকে হাঁটে।

” নেক্সট প্লান তাহলে মেয়েগুলোকে উদ্ধার করা?”

“ইয়েস স্যার! সৌরভ ভিডিও করে রেখেছে। তবে হ্যাঁ কাজটা এমন ভাবে করতে চাই যাতে তাইজ্যিন এসবে না জড়ায়।”

“হুয়াটটট!!”

“হ্যাঁ! ভিডিওটা এডিট করে তাইজ্যিনের জায়গায় ইব্রাহিমের মুখ বসানো হোক। দূর থেকে ধারণ করা ভিডিও,আই হোপ তেমন বুঝা যায়না আমাদের কাছে ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে কোন প্রমাণ নেই। আর তাইজ্যিনের বিরুদ্ধের প্রমাণ উদ্ধার করা কোন ব্যপার না আমার জন্য,কজ তার বেডরুমে থাকি আমি।”

কিছুক্ষণ মৌনতা বজায় রাখে আরোশ খান। ব্যপারটা মন্দ না। তবে তিনি প্রথমে ভেবেছিলেন শার্মিলা বোধহয় তাইজ্যিনের প্রেমে টেমে পড়ে গেছে ;সেজন্য তাকে বাচাতে চায়। কিন্তু তার যুক্তি অনুযায়ী ধারণা বদলে গেছে।

“কথাটা মন্দ বলোনি। তবে এটার দায়িত্ব জুনিয়র ইন্সপেক্টর সায়েম সারোয়ারকে দেওয়া হলো।”

“ওকে স্যার! দ্যান নেক্সট আমরা তোফায়েল আহমেদ চৌধুরীর সবচেয়ে ভালো কোম্পানি আইমিন যেটা ভালো আলে ওইটার ডিটেইলস সাথে কোম্পানি ভিজিট করব। দ্যান বুঝে যেকোন একটায় বিস্ফোরণ ঘটাব।”

“সৈয়দ ইব্রাহিমকে মাথায় রেখো।”

“সে আছে। ওদের নতুন কোন ডিল হবে। তবে সেটা জেনে নেব খুব শীঘ্রই।”

আরোশ খানের রুমে প্রবেশ করতে,করতে কথাটা বলে শার্মিলা। দু’জন বসে কথা শুরু করতে, সায়েম সারোয়ার, অহনা,সৌরভ তিনজনই উপস্থিত হয়। শার্মিলা এবং আরেশ খান মিলে তারা পাঁচজনের একটা টিম। যাদের মূল উদ্দেশ্য চৌধুরীদের নিপাত করা। এসব দুইনাম্বারির ব্যবসা বন্ধ করা। পাঁচজন বসেই কিছুক্ষণ আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

গুণে,গুণে তিনটা দিন চলে যায়। সৈয়দ ইব্রাহিমের কথা মতো পার্টির অ্যারেন্জ করা হবে আজকে সন্ধ্যায়। মূলত তাঁদের ডিল ফাইনাল হবে আগামী কালকে। তাইজ্যিন পার্টির কাজ নিয়ে একটু ব্যস্ত। শার্মিলা এখনো আসেনি। সময়টা মধ্যাহ্ন প্রহর। তখন ইব্রাহিম রুম থেকে বেরিয়ে আসে। তাইজ্যিন সোফায় বসে ফোন স্ক্রোল করছে,তার সামনের সোফায় তারিন বসা। ইব্রাহিম এসেও একটা আসন গ্রহণ করে। তাইজ্যিন ইব্রাহিমকে দেখে কল রেখে দেয়। তখন ইব্রাহিম শুধায়, “শার্মিলা আসবে না আজকের পার্টিতে?”

“এখনো বলিনি আসতে। একটু পর কল করে বলব আসার জন্য।”

“আচ্ছা! আমি একটু সুপারশপে যাবো। ওর এড্রেস টা দিয়ে দিও আমি ড্রপ করে নিয়ে আসবো।”

“ড্রাইভার আছে। ও নিজেই চলে আসতে পারবে।”

“আমি নিয়ে আসলে প্রব্লেম কোথায়? এমনিতে তুমি কাজের প্রেসারে আছো! দেখো আমি বাইরে গেলে অফকোর্স আমার সাথে গার্ডস থাকবে। তুমি শুধু একটা ড্রাইভারকে কীভাবে ভরসা করতে পারো তাইজ্যিন? চারদিকে শত্রুর অভাব নেই। শার্মিলাকে জব্দ করে আমাদের অব্দি পৌঁছাতে সময় লাগবে না।”

ইব্রাহিমের কথা তাইজ্যিন এক কান দিয়ে ঢুকিয়েছে অন্য কান দিয়ে আউট করে দিয়েছে। তার বউকে অন্য পুরুষ কেন আনবে? ইব্রাহিমের চরিত্র সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা আছে তাইজ্যিনের। সে মরে গেলেও এই শর্তে রাজী হবে না। তাইজ্যিন জবাব দেয়না। উঠে দাঁড়াতে ইব্রাহিম ও দাড়ায়। মুখোমুখি দাঁড়িয়ে তাইজ্যিন জবাব দেয়, “আমার বউ একাই একশ! নিজের হাজবেন্ড ব্যতীত পরপুরুষ ছাড়া সে চলতে পারে। ওইরকম মুরোদ নিয়েই একটা শার্মিলা।”

“আর কী,কী গুণ আছে তোমার বউয়ের শুনি?”

“আমার বউয়ের অনেক গুণ আছে তবে বলব না। আমার মাঝেই থাকুক! শেনলে যদি কেউ প্রেমে পড়ে যায়? বাট, মাই ওয়াইফ, সী’জ ওয়ান ইন অ্যা থাউজ্যান্ড।”
তাইজ্যিনের কথায় ইব্রাহিম জবাব দেয়না। কিছুক্ষণ পর সে নিজেই গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে। খন্দকার বাড়ির ডিটেইলস নিয়েই এগিয়ে যায় সেদিকে। তার পেছনে আরেকটা গাড়ি আছে তবে সিকিউরিটি। এই গাড়িতে কাউকে নেয়নি সে।

ইব্রাহিম রওনা হওয়ার পেছন,পেছন তাইজ্যিন শার্মিলাকে কল দেয়। রিসিভ হতে শুধায়, “শোন, আমি একটু ব্যস্ত নাহলে আমি গিয়েই তোমায় নিয়ে আসতাম। তুমি ড্রাইভার নিয়ে চলে আসো।”

“হঠাৎ? আগে বলোনি কেন?”

“সময় পাইনি! সন্ধ্যায় পার্টি আছে বাড়িতে।”

“থাকুক,আমার এসবে আগ্রহ আসেনা।”

“পার্টিতে সুন্দর,সুন্দর মেয়ে আসবে। আর শকুন একটা অলরেডি তোমার বরের দিকে নজর দিয়ে বসে আছে। তুমি চাও নতুন করে শকুন আসুক?”

“না!”

“নজর টিপ দেওয়ার জন্য হলেও চলে আসো।”

“আচ্ছা।”

শার্মিলা কল কেটে রেডি হয়ে নেয়। আয়নায় দাঁড়িয়ে নিজেকে পরখ করে। মেরুন কালার জর্জেট পাতলা শাড়ীতে নিজেকে অদ্ভুত সুন্দর লাগছে। ছোট,ছোট চুলগুলো একপাশে সিঁথি করে রাখা। মুখশ্রীতে কোন প্রসাধনী নেই। ঝটপট রেডি হয়ে নিচে আসে শার্মিলা। পিয়াসাকে বলা শেষ হতে দেখে ইব্রাহিম বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করছে। পিয়াসা,শার্মিলা মুখ চাওয়াচাওয়ি করছে। তখন ইব্রাহিম পিয়াসাকে সালাম দেয়। শার্মিলার দিকে তাকিয়ে শুধায়, “তাইজ্যিন ব্যস্ত সেজন্য ভাবলাম আমি তোমাকে নিয়ে যাই। সুপারশপ থেকে ফিরছিলাম।”

“থ্যাংকস বাট আমার ড্রাইভার অলরেডি ওয়েট করছে আমার জন্য।”

“ওনাকে রেস্ট করতে বলো।”

“আমার প্রয়োজন মনে হচ্ছেনা তোমার সাথে যাওয়ার।”

তখন পিয়াসা শুধায়, “উনি যেহেতু এসেছে চলেই যাও। তাইজ্যিন তো ব্যস্ত।”

শার্মিলা জবাব দেয়না। পিয়াসাকে তো বলেনি কিছুই। পিয়াসা জানেও না ইব্রাহিমের চরিত্র সম্পর্কে। ভীষণ রাগ উঠে শার্মিলার। কাউকে পাত্তা না দিয়ে ট্রলিটা নিয়ে বেড়িয়ে যায়। ইব্রাহিম বিদায় নিয়ক শার্মিলার পেছনে ছুটে। শার্মিলা ড্রাইভারকে বলতে যাবে ইব্রাহিম তার হাত ধরে তার গাড়ির সামনে নিয়ে যায়। একপ্রকার জোর করেই গাড়িতে উঠে বসায়। শার্মিলার হাত ইব্রাহিমের হাতের দখলে। জোরাজুরি করেও ছাড়াতে পারছে না। তখন ইব্রাহিম একটানে শার্মিলাকে নিজের কাছে নিয়ে আসে। একহাত শার্মিলার কোমড়ে দিয়ে আরেকহাত সামনে দিয়ে,শার্মিলার হাতজোড় বাঁধনে নিয়ে নেয়। শার্মিলার ভীষণ রাগ হয়! এই ছোঁয়া তার পছন্দ না। তবে বুঝতে সমস্যা হয়নি, তাইজ্যিন তাকে পাঠায়নি। যদি পাঠানোর হতো তাহলে কলেই বলে দিতো, যে ইব্রাহিম আসবে। মুখ দিয়ে ইব্রাহিমের হাতে বেশ জোরে কাৃড় বসায় শার্মিলা। তাতে করে ইব্রাহিম নিজের একহাত ছিটকে সরিয়ে নেয়। অন্য হাত কোমড় স্পর্শ করা,শার্মিলা সেই হাতের একটা আঙুলই সামনের দিকে জোরে টান দেয়। যাতে ভেঙে দেয়। নিজের সর্বশক্তি দিয়ে কাজটা করে,সফল হয়েছে কীনা জানা নেই। তবে ইব্রাহিম দুহাতেই বেশ ব্যথা পেয়েছে। শার্মিলার দিকে হিংস্র দৃষ্টি নিক্ষেপ করে ইব্রাহিম শুধায়, “তোকে আজ রাতেই আমার বেডে নেব।”

কথাটা শেষ হতে বেশ জোরে গাল বরাবর চড় পড়ে ইব্রাহিমের। ক্ষেপা বাঘিনীর মতো তাকিয়ে আছে শার্মিলা। চেঁচিয়ে বলে, “আর একবার আমায় টাচ বা বেডের কথা বললে তোর মেশিন বরাবর লা’থি মেরে সেটা অকাজের বানিয়ে দেব।”
“শ্লী তোর এতো তেজ কোথা থেকে আসে।”
“চড় খেয়ে শিক্ষা হয়নি! কাপুরুষ একটা! জন্ম মনে হয় কোন পতিতা নারীর গর্ভে হয়েছে!”

কথাটা শেষ হতে ইব্রাহিম শার্মিলার চুলে ধরে। মুখ চেপে ধরে বলে, “আমার জন্ম যেখানেই হোক! তোর বাচ্চার বাবাটা আমিই হবো তুই দেখিস! এই কথার শোধ আমি না তুলেছি।”

কথাটা বলে ইব্রাহিম শার্মিলাকে ছেড়ে দেয়। তখন শার্মিলা চেঁচিয়ে বলে, “গাড়ি থামা!”

“থামবে না গাড়ি।”

“থামাতে বলেছি। নাহলে এই ড্রাইভারের মৃত্যু নিশ্চিত।”

“যদি গাড়ি থামে তাহলে তুই ওকে কী মারবি আমি এই মূহুর্তে ওকে মেরে দেব।”

ওদের কথোপকথনে ড্রাইভার দিশেহারা। থামালেও জীবন যাবে,চললেও জীবন যাবে। তাহলে সে করবে টা কী? গাড়ি আকাশে উড়াবে? কিন্তু গাড়ির তো পাখা নেই!

কিছুক্ষণের মধ্যে চৌধুরী বাড়ির গেট দিয়ে গাড়ি প্রবেশ করে। শার্মিলা নামতে তার ব্যাগ একজন গার্ডস নিয়ে যায় আগেই। অলরেডি সন্ধ্যা হয়ে গেছে। বাড়ি সজ্জিত হয়ে গেছে। শার্মিলা দৌড়ে ভেতরে চলে যায়। তাইজ্যিন তোফায়েল আহমেদ চৌধুরীর সাথে কথা বলছিলো। শার্মিলার ছুটে চলা তার চোখ এড়ায়নি।

শার্মিলা রুমে এসে ভাবছে তাইজ্যিনকে সব বলে দেবে? কিন্তু এখন তাইজ্যিন এসব জানলে তার প্লান সব বরবাদ। তাদের মধ্যেই শত্রুতার সৃষ্টি হবে। কিন্তু, তোফায়েল আহমেদ চৌধুরীর কথায় তাইজ্যিন সব করতে পারে। শেষমেশ দেখা যাবে, সে নিজেই মা-রা গেলো। কিন্তু এই ইব্রাহিম তো পথের কাটা। কী করবে?

এরই মাঝে তাইজ্যিন রুমে আসে। শার্মিলা তাকে দেখে শুধায়, “কেমন আছো?”

তাইজ্যিন চমকায়। শার্মিলা এটা? পরক্ষণে জবাব দেয়, “ভালো তুমি?”

“ভালো।”

শার্মিলা নিজে দরজা লক করে। তাইজ্যিন দাঁড়িয়ে আছে। শার্মিলা আচমকা তাইজ্যিনের বুকে নিজেকে লেপ্টে নেয়। তাইজ্যিন ও তাকে আগলে নেয়। প্রশ্ন করে,

“কী হয়েছে পাখি?”

“তাইজ্যিন অন্য কেউ আমায় বাজে ভাবে টাচ করতে চায়৷ যেমনটা তুমি করো, ঠিক সেভাবে।”

“সে কে শার্মিলা?”

শীতল কণ্ঠে জবাব দেয় তাইজ্যিন। শার্মিলা নিজেও জেনো ধাক্কা খেলো। তাইজ্যিন চুপ করে আছে কেন? রাগেনি কেন? তাহলে তার ধারণা ঠিক! তোফায়েল আহমেদ চৌধুরীর কথায় সে পরপুরুষের কাছে নিজের বউকে দিতে দু’বার ও ভাববে না। মূহুর্তে ঘৃণা ভরা দৃষ্টি নিক্ষেপ করে শার্মিলা। তাইজ্যিনকে ছেড়ে দাঁড়ায় সে। তখন তাইজ্যিন শুধায়, “বলো?”

“না থাক!”

“তুমি না বললেও, তাকে খুঁজে বের করা কোন ব্যপার না।”

“গুড!”

“আচ্ছা শোন?”

“বলো?”

“বুকে আসো তারপর বলছি।”
শার্মিলা তাইজ্যিনকে আলিঙ্গন করতে,তাইজ্যিন তার কপালে উষ্ণ পরশ দিয়ে বলে, “আমি থাকতে,অন্য কেউ তোমায় স্পর্শ করবে৷ তুমি ভাবলে কী করে?”

“তুমি যেভাবে কোমড়ে হাত রেখে আগলে নেওনা। সেও কোমড়ে হাত রেখেছে। আমার পছন্দ হয়নি তাইজ্যিন! আমি তাকে দুবারই চ’ড় দিয়েছি।”

মূহুর্তে তাইজ্যিনের মুখশ্রী চেঞ্জ হয়ে যায়। শার্মিলা নিজেও ভড়কে যায়। সব কী শেষ? নিজেকে কন্ট্রোলে রাখলে বোধহয়ন ভালো হতো। সামনে কিছু একটা হতে চলেছে এটাও ঠিক! কঠিন কিছু।

#চলবে

#তৃষ্ণার্ত_প্রেম|১৯|
#শার্লিন_হাসান

তাইজ্যিনের কথা মতো শার্মিলা রেডি হয়ে নেয় পার্টির জন্য। আজকে একটা গাউন পরিধান করেছে সে। সোনালী রঙের,পাথরের কাজ করা। বেশ গর্জিয়াস গাউন। তাইজ্যিন আজকে ব্ল্যাকে সেজেছে। ব্ল্যাক শার্ট,ব্ল্যাক প্যান্ট।

দুজনে একসাথেই পার্টিতে আসে। ইব্রাহিম কথা বলায় ব্যস্ত থাকলেও শার্মিলা আসতে তার লালসার দৃষ্টিতে শার্মিলা পড়ে। তাইজ্যিনের সাথেই সে বেশ হাসিখুশি ভাবে সবার সাথে কুশলাদি বিনিময় করছে।

তারিন আজকে ব্ল্যাক শর্ট টপসে এসেছে। বেশ সুন্দর ভাবেই সেজেছে সে। তাইজ্যিনের দিকে তাকাতে জেনো তার নজর আটকে যায়। ফর্সা গায়ে কালো রংটা ফুটে উঠেছে। এই তাইজ্যিন এতো কিউট কেন? প্রশ্ন করে তারিন। তার ফ্রেন্ড, ছোঁয়া, রাত্রি ইব্রাহিমের সাথে পরিচিত হয়৷ তবে তাঁদের নজরের কেন্দ্র বিন্দুতে আছে তাইজ্যিন আর শার্মিলা। দুজনকে একসাথে দারুণ মানিয়েছে। মেইড ফর ইচ অ্যদার কথাটা জেনো তাদের সাথেই যায়। অতিথিদের থেকে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে দু’জন। পুরোটা সময় শার্মিলা তাইজ্যিনের সাথেই ছিলো।

ইব্রাহিম তাদের আশেপাশে ও ঘেঁষতে পারেনি। পার্টি শেষে খাওয়াদাওয়া করে তাইজ্যিন এবং শার্মিলা একসাথেই রুমে আসে। চেঞ্জ করার জন্য শার্মিলা যাবে তখন তাইজ্যিন তাকে থামিয়ে দেয়৷ কয়েকটা শপিং ব্যাগ শার্মিলার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে, “তোমার জন্য গিফ্ট এনেছিলাম। দেওয়ার সুযোগ হয়নি।”

“চেঞ্জ করে এসে তোমার গিফ্ট দেখব।”

তাইজ্যিন সম্মতি দেয়। দু’জনে চেঞ্জ করে ফ্রেশ হয়ে বসে। শার্মিলা একটা শপিং ব্যাগে একটা শাড়ি পায়। জামদানী শাড়ি৷ শাড়িটা বেশ সুন্দর তার পছন্দ হয়। পরের ব্যাগে অনেকগুলো চকলেট। এরপর তাইজ্যিন একটা জুয়েলারির বক্স বের করে। তাতে একটা চেইন। যেটা হালকা ডিজাইন করা। শার্মিলার গলা খালি সেজন্য, স্বযত্নে সেটা পড়িয়ে দেয়৷

“ওইদিন জেদের বশে চ’ড় মেরেছিলাম। রাগ ভাঙানো হয়নি! এনেছিলাম তার আগে রাগ ভেঙে গেছে।”

শার্মিলা জবাব দেয়না। তখন তাইজ্যিন পুনরায় বলে, “স্যরি পাখি! আমি বুঝতে পারিনি।”

কথাটা বলে শার্মিলার দুগালে হাত রাখে তাইজ্যিন। শার্মিলার দৃষ্টি তাইজ্যিনের দিকে স্থির! তাইজ্যিন শার্মিলার দিকে তাকিয়ে শুধায়, “ইট’স ওকে!”

“ইট’স ওকে তে হবে না।”

“তাহলে?”

“বলো যে আমি সব ভুলে গেছি।”

“আচ্ছা, আমি সব ভুলে গেছি তাইজ্যিন।”

“গুড!”

শার্মিলা তাইজ্যিন শুয়ে পড়ে। তাইজ্যিন তাকে বুকে টেনে নেয় নিজের বাঁধনে আবদ্ধ করে নেয়। শার্মিলা জেনো নিরাপদ,নিশ্চিন্তে আছে। এই বাঁধনে কী এমন আছে? যেখানে আসলে নিজেকে নিরাপদ মনে হয়? আচ্ছা! তাইজ্যিনকে আজকাল বিরক্ত মনে হয়না কেন? কেমন জেনো আলাদা একটা টান কাজ করে৷ যেটা কখনো কারোর প্রতি আসেনি। শার্মিলা নিজের পরিবর্তন লক্ষ্য করে।

তাইজ্যিনের আশেপাশে থাকা। তার ছোঁয়া সবটাই জেনো ভীষণ পরিচিত এবং ভালো লাগার। শার্মিলা প্রেমে পড়ে যাসনি তো? মনে,মনে আওড়ায় সে। আজকাল তাইজ্যিন পাশে থাকলে জেনো সব পরিপূর্ণ লাগে। তাইজ্যিন ছাড়া ভালো সময় কাটে না। হাস্যকর! যে মানুষটাকে মারা-র জন্য এসেছিলো আজকে তার ছোঁয়ায় মাতোয়ারা। বদ্ধ উন্মাদ সে। কী এমন আছে এই ঘোর লাগার মাঝে? যাই হোক শার্মিলা! মনে যাই থাকুক সেটা কখনো প্রকাশ করা যাবে না। যাতে পেছন থেকে আঘাত করলে সে মানুষটা নিতে পারে। ভালোবাসা বলতে কিছু হয়না। এটা সাময়িক ভালো লাগা। অনেক কিছুই মাথায় আসছে। সেসব আর ভাবতে যায়না শার্মিলা।

★★★

পরের দিন নাস্তা সেরে তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী এবং ইব্রাহিম সিকিউরিটি নিয়েই বেড়িয়ে পড়ে, টি আই চৌধুরী গ্রুফ অব লিমিটেডে। তাইজ্যিন হাত ঘড়ি দেখে তড়িঘড়ি বেড়িয়ে পরে তাদের পেছন দিয়ে। শার্মিলা নাস্তা শেষ করে, নিজের পিস্তলটা নিয়ে তাইজ্যিনের পিছু দাওয়া করে। তার পেছন দিয়ে আবার তার সিকিউরিটি, তাইজ্যিন যাদেরকে তার জন্য এনেছিলো তারাও বেড়িয়ে পড়ে।

একটা রুমে বসে তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী এবং ইব্রাহিম আলোচনা করছে। মূলত মেয়েগুলোকে কী করবে সেটা নিয়ে।

গাড়িতে বসে শার্মিলা তাদের কথপোকথন শোনছে। তাইজ্যিন ভেতরে প্রবেশ করে লিফ্টে উঠে। ফোর্থ ফ্লোরে গিয়ে সে করিডোরে দাঁড়ায়। রুম খোঁজতে তেমন বেগ পোহাতে হবে না। সেজন্য নির্দিষ্ট রুমের দিকে হাঁটা ধরে। তার পেছন দিয়ে আবার শার্মিলা আসে। ফোর্থ ফ্লোরে গিয়ে সেও নির্দিষ্ট রুম খোঁজায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

দরজা খুলতে অন্ধকার একটা রুম আবিষ্কার করে শার্মিলা। নিজের জ্যাকেটের পকেট থেকে একটা লাইটার বের করে আলো জ্বালায়। সামনে থেকে মেয়েলী কন্ঠস্বরের গোঙরানি ভেসে আসছে কানে। তাতে জেনো শার্মিলা আঁতকে উঠে। রুমে প্রবেশ করে দেওয়াল হাতড়ে লাইট অন করতে পুনরায় আতকে উঠে সে। লাইটার টা হাত থেকে নিচে পড়ে যায়। হাত দু’টো আপনা আপনি মুখে চলে আসে।

শার্মিলা দেরী না করে সামনে বসে থাকা মেয়েগুলোর মুখ থেকে কাপড় সরায়। একটা মেয়ের থুতনিতে হাত রেখে ভেজা কন্ঠে শুধায়, “এখানে কে এনেছে?”

মেয়েটা কাঁপা কাঁপা গলায় জবাব দেয়, “তাইজ্যিন ইশতিয়াক চৌধুরী।”

শার্মিলা স্তিমিতনেত্র মুছে উঠে দাঁড়ায়। কোথা থেকে একদল লোক আসে। পড়নে তাদের কালো পোষাক। শার্মিলার চিনতে ভুল হয়নি এরা চৌধুরীদের লোক। শার্মিলাকে দেখে একজন কঠোর গলায় বলে, “ম্যাম নিজেই নিজের মৃ’ত্যুকে ডেকে এনেছেন।”

“তোর বসকে আসতে বল। আজকে তার সাথে শার্মিলার বুঝাপড়া আছে।”

কথাটা শেষ হতে, ঝড়ের গতিতে তাইজ্যিন রুমে প্রবেশ করে। শার্মিলাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তাইজ্যিন আশেপাশে চোখ বুলায়। শার্মিলার কঠোর দৃষ্টিতে দৃষ্টি স্থির করেই কোন শব্দ না করে একজন গার্ডসের পা বরাবর বুলেট গেঁথে দেয়। তার বুলেট মিস যায়নি। মূহুর্তে রক্তে ভেসে যায় জায়গাটা। হাতের ইশারা দিতে গার্ডটাকে দু’জন মিলে বাইরে নিয়ে যায়। খুব সম্ভবত হসপিটালে নিবে। তাইজ্যিন তেড়ে গিয়ে শার্মিলার গলা চেপে ধরে দেওয়ালের সাথে। খোলা ছোট চুলগুলোর মাঝ বরাবর চেপে ধরে। দাঁতে দাঁত চেপে শুধায়, “তোকে আমি অনেকবার বলেছি, ” ডোন্ট ক্রস ইওর লিমিট।” আজকে তোর মৃত্যু আমার হাতে লেখা জেনে নে।”

কথাটা শেষ হতে শার্মিলার গলা ছেড়ে পিস্তলটা পকেট থেকে হাতে নিয়ে কপাল বরাবর ঠেকায় তাইজ্যিন। বাকীরা ভয়ে কোন কথা বলছে না। বলা যায় সাপে নেউলের যুদ্ধ চলছে বাকীরা দর্শক দেখে যাবে। শার্মিলা বুঝে গেছে তাইজ্যিনকে সরানো তার পক্ষে সম্ভব না। তাই নিজের পায়ের জুতার চিকন হিল তাইজ্যিনের পায়ের উপর রেখে জোরে চাপ দিতে তাইজ্যিন কিছুটা সরে যায়। তখন আবার ইব্রাহিম এবং তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী আসে সেখানে। শার্মিলাকে দেখে তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে পারেনি। ঠাস করে চড় বসিয়ে দিয়ে শুধায়, “ওকে আজকে মেরে পুনরায় আমার কোম্পানি উদ্বোধন করবো। ওর লা-শ যাবে লা-শ।”

ইব্রাহিম শার্মিলাকে স্ক্যান করতে ব্যস্ত। তাইজ্যিন তখন তার বাবার উদ্দেশ্যে বলে, “আমার বউকে তুমি কেন মা-রবে?”

শার্মিলা তাইজ্যিনের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়। তার মাথায় কী চলছে কেউ বলতে পারবে না। এই শার্মিলাকে মারতে চায় আবার বাঁচানোর জন্য দরদ দেখাচ্ছে। ওদের বাবা ছেলের তর্কের মাঝেই শার্মিলা এক সেকন্ড ও দেরী করেনি। সময় ও নেয়নি মূহুর্তে ইব্রাহিমের বুকের ডান পাশটায় দু’টো বুলেট গেঁথে দেয়। তার বুলেট ও মিস যায়। উপস্থিত সকলে হতভম্ব হয়ে যায়। ইব্রাহিম নিজেও শার্মিলাকে মা-রার জন্য উদ্বুদ্ধ হবে তখন শার্মিলা তাইজ্যিনের বুকের বা পাশে বুলেট গাঁথে। তাইজ্যিন কিছু করার আগে, ইব্রাহিম নিজেও, বা হাতে থাকা পিস্তলটা থেকে একটা বুলেট শার্মিলার ডান হাতে গেঁথে দেয়। তাইজ্যিন নিজের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলতে তাকে তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী ধরে বসায়। শার্মিলার হাত বেয়ে র’ক্ত ঝড়ছে, চোখ বেয়ে নোনা জল। তবুও নিজেকে দমে যেতে দেয়নি। পাশে থাকা মেয়েগুলোর দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে চোখ দিয়ে আশ্বাস দেয়। তাইজ্যিনকে ধরাধরি করে হসপিটালের উদ্দেশ্য রওনা হয় কিছু গার্ডস সাথে তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী । ইব্রাহিমকে নিয়েও ব্যস্ত হয়ে পড়ে। যাওয়ার সময় শার্মিলাকে কড়া গলায় শাসিয়ে গেছেন তিনি।
বাকীরা শার্মিলার জন্য অপেক্ষা করে। বর্তমানে তাইজ্যিন শার্মিলা শত্রুর মতো তবে শত হোক তাইজ্যিনের ওয়াইফ সে। তাঁদের উপর আগে থেকেই হুকুম জারি করা হয়েছে শার্মিলার সবটা দেখভাল করার জন্য। নিশ্চয়ই হুকুম অমান্য করলে শাস্তি পেতে হবে। তাইজ্যিন রেগে যা করেছে থেমে গেলে শার্মিলার অযত্ন হলে আবার চিৎকার চেঁচামেচি করবে।

শার্মিলা জোর গলায় বলে, “ওদেরকে এখান থেকে বের করো আমি হুকুম দিয়েছি। নিশ্চয়ই তোমরা আমার হুকুমের দাস!”

শার্মিলার কথায় একজন গার্ডস বলে, “ম্যাম আপনার প্রচুর ব্রিডিং হচ্ছে। এক্ষুনি হসপিটালে যাওয়া দরকার।”

“এসবে আমি অভ্যস্ত আছি। আমি যা বলেছি তা আগে সম্পূর্ণ হোক।”

“আপনি চিন্তা করবেন না। ওদেরকে এখান থেকে বের করে দেব। তাইজ্যিন স্যারের হুকুম আছে।”

” যদি না করেছ তোমাদের বসকে যা বুলেট দান করেছি তার চার ডাবল তোমার কপালে দান করবো আমি।”

শার্মিলাকে দু’জন মেয়ে গার্ডস ধরে গাড়ীতে নিয়ে যায়। গায়ের জ্যাকেটটা খুলে দিতে সাদা রঙের স্লিভলেস টিশার্ট’টায় নজর যায়। রক্তে সাদা টি-শার্টটা রঙ চেঞ্জ হয়ে গেছে। কালো রঙের জিন্সটায় রক্তের দাগ লেগেছে তবে কালো রঙ হওয়ায় বুঝা যাচ্ছে না।

তিনজন মানুষকে হসপিটালে শিফট করিয়ে ইমার্জেন্সিতে নেওয়া হয়। তাইজ্যিনকে যে হসপিটালে নেওয়া হয় সেটায় শার্মিলাকেও নেওয়া হয়। আদেশ অনেক আগেই জারী করা হয়েছে। ইব্রাহিমকে সিকিউরিটি দিয়ে অন্য হসপিটালে নেওয়া হয়। অপারেশন থিয়েটারে দু’জন মানুষ অবস্থান করছে। তাঁদের দু’জনের অবস্থা তেমন একটা খারাপ না। মাত্র একটা করে বুলেট গায়ে নিয়েছে।

শার্মিলা অপারেশন থিয়েটারে থেকেই শান্তি ফিল করছে। ঠিক বুকের মাঝখানে! যেটা কেউ পারেনি,করেনি, অসম্ভব সেটা সে করেছে। ইব্রাহিমকে দু’টো বুলেট দান করেছে। তাইজ্যিনকে একটা বুলেট! তোফায়েল আহমেদ চৌধুরীকে একটা বুলেট দান করতে পারলে আরেকটু ভালো লাগতো। তবে খুব শীঘ্রই সেই ভালো লাগা অনুভব করবে।

শার্মিলা এবং তাইজ্যিনকে একই রুমে শিফট করানো হয়। চৌধুরী পরিবার একে,একে হসপিটালে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। তিথিয়া চৌধুরী তেঁতে আছেন। শার্মিলাকে কথা শোনাতে ভোলেননি তিনি। সেই সাথে তোফায়েল আহমেদ চৌধুরীকে। শার্মিলা চুপচাপ তিথিয়া চৌধুরীর কথা শুনে গেছে। তাঁদের বকাঝকা শেষ হতে তারিন আসে রুমে। শার্মিলা চোখ মেলে তাকিয়ে আছে। তাইজ্যিন ও হুঁশে আছে। তারিন তখন তাইজ্যিনের বেডের পাশে বসে। ন্যাকা কান্না করে বলে, “ইশশ ভাইয়া, এই মেয়েটা কত খারাপ হলে তোমায় গুলি করে। তোমার খায়,তোমার পড়ে আবার তোমাকেই লা’থি মারে।”

শার্মিলা তখন চেঁচিয়ে বলে, আমি আমার হাজবেন্ডকে মেরেছি, কারোর প্রোপার্টিকে না। বড়রা বলেছে মানা যায়! তুমি আমাকে এসবের খোঁটা দেওয়ার, কথা শোনানোর কে?”

“মুখ সামলে কথা বলো বেয়াদব মেয়ে।”

তারিন চেঁচিয়ে বলে। তখন শার্মিলা চেঁচিয়ে বলে, “নিজেরটা সামলে রাখো। আমার স্বামী তোমায় ডাকেনি এখানে এসে ন্যাকা কান্না করতে,আর তার বউ কী খায়,কী পড়ে সেসব নিয়ে আলোচনা বসাতে। এক্ষুনি রুম থেকে বের হও নাহলে গাড় ধাক্কা দিয়ে বের করব।”

শার্মিলার ব্যবহারে তাইজ্যিন,তারিন দু’জনে হতভম্ব হয়ে যায়। তাইজ্যিন বুঝতে পারছে না, নিজে মে-রে আবার নিজেই দরদ দেখাচ্ছে? যে মেয়ে হসপিটালের বেডে বসে অধিকার ফলানো বাদ রাখে না,অন্য নারীকে সহ্যই করতে পারেনা। সে সুস্থ থাকলে তারিনকে নিশ্চিয়ই পাশের রুমের একটা বেড উপহার দিতো।

তখন তারিন শুধায়, “রুমে তুমি একা না ভাইয়া ও আছে। আর আমি তোমার সীমানায় যাইনি ভাইয়ার সীমানায় আছি। আমাকে বের কার তুমি কে?”

“তোমার ভাইয়ার সীমানা মানে আমার সীমানা। আর আমার সীমানা মানে তোমার ভাইয়ার সীমানা। মেইড ফর ইচ অ্যদার বলে একটা কথা আছেনা? প্রোপার্টির ক্ষেত্রেও একইরকম।”

তারিন বুঝেছে শার্মিলার সাথে কথা বলে লাভ হবে না। উল্টো মানসম্মান নিয়ে টানাটানি। তাইজ্যিনের উপর বিরক্ত হয় সে। কোথা থেকে খুঁজে, খুঁজে এমন একটা ঝগড়ুটে মেয়ে বিয়ে করেছে কে জানে?

#চলবে