#তৃষ্ণা_তব_নাহি_মেটে
#পর্ব১৩
#রাউফুন
জুহাইরের প্রিয় স্যার মফিজুর রহমান হাসপাতালে ভর্তি। খবরটা শোনামাত্রই জুহাইর সব কাজ ফেলে ছুটে এলো হাসপাতালে। এই স্যার তার জীবনে অনেক বড় ভূমিকা রেখেছেন। ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার প্রথম দিন থেকেই স্যারের আন্তরিকতা এবং স্নেহ তাকে মুগ্ধ করেছিল। স্যার শুধু একজন শিক্ষকই ছিলেন না; তিনি ছিলেন একজন পথপ্রদর্শক, একজন অভিভাবক, যিনি সবসময় তার ছাত্রদের জীবনে আলোর দিশা দেখানোর চেষ্টা করতেন। আজ সেই স্যার হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছেন। এই দৃশ্যটা জুহাইরের হৃদয়কে প্রচণ্ড ভারী করে তুলেছে।
হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছেন স্যার, শরীরটা খুবই দুর্বল। জুহাইর স্যারের কাছে এসে ধীরে ধীরে বললো,
“স্যার, আপনি এখন কেমন আছেন? আপনার কি হয়েছিল?”
স্যার কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলেন। এরপর একটা গভীর নিঃশ্বাস ফেলে বলতে শুরু করলেন,
“জুহাইর, তুমি জানো তো, আমার একমাত্র ছেলে বিদেশে পড়তে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতো। আমি তার সেই স্বপ্ন পূরণ করতে চেয়েছিলাম। তাই দশ লাখ টাকা লোন নিয়েছিলাম ব্যাংক থেকে। সব ঠিকই চলছিল। কিন্তু গতকাল সন্ধ্যার দিকে একটা ভয়ংকর ঘটনা ঘটলো। আমার ফোনটা রাস্তায় ছিনতাই হয়ে গেল। প্রথমে ভেবেছিলাম, ফোনটাই হারিয়েছি। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই একটা চিন্তা আমাকে অস্থির করে তুললো, চোর যদি আমার ফোনের পিন কোড খুলে ফেলে, তাহলে তো আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের টাকা হাতিয়ে নিতে পারবে। আমি দ্রুত ব্যাংকের অ্যাপ চেক করলাম। তখনই দেখলাম, আমার অ্যাকাউন্ট একদম খালি। সব টাকা উধাও। আমার জীবন যেন মুহূর্তেই স্তব্ধ হয়ে গেল। আমি বুঝতে পারছিলাম না, কি করবো। সেই ধকল আর সহ্য করতে পারিনি। হার্ট অ্যাটাক হলো। এরপর থেকেই আমি এখানে আছি।”
স্যারের চোখে একটা গভীর বিষণ্ণতা। তিনি যেভাবে কথাগুলো বললেন, তাতে জুহাইরের নিজের ভেতর একটা তীব্র কষ্ট অনুভূত হলো। মফিজুর স্যার সবসময় তার ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছেন। আর আজ সেই স্যার নিজেই এমন একটা কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছেন।
জুহাইর নিজেও দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করেছে তাই সে দরিদ্রতার ভার বহন করা যে কি কঠিন তা খুব ভালো করেই জানে। স্যারের প্রতি তার ভালোবাসা এবং সম্মান এতটাই গভীর যে, সে আর চুপ থাকতে পারলো না। তার প্রিয় স্যার, যিনি তাকে এতবার সাহায্য করেছেন, তার এই বিপদে সে কি করে পাশে না দাঁড়ায়? তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বড় একটা এমাউন্টও আছে এখন। চাইলেই সে টাকা দিতে পারবে।
জুহাইর স্যারের হাতটা শক্ত করে ধরলো। আশ্বাস দিয়ে বললো,
“স্যার, আপনি চিন্তা করবেন না। আমি আছি। ইনশাআল্লাহ, আল্লাহ্ আমাদের সাহায্য করবেন। আপনি ভালো হয়ে যাবেন। আর আপনার সমস্যার একটা সমাধান হবেই।”
স্যারের মুখে একটা ক্লান্ত হাসি ফুটে উঠলো। তিনি জুহাইরের দিকে তাকিয়ে বললেন,
“জুহাইর, তোমার মতো ছাত্র আমার জীবনে পাওয়া সত্যিই সৌভাগ্যের ব্যাপার। আল্লাহ্ তোমার মঙ্গল করুন।”
জুহাইর মনে মনে আল্লাহ্র কাছে প্রার্থনা করলো। সে ঠিক করেছে, যেভাবেই হোক, তার প্রিয় স্যারের পাশে দাঁড়াবে।
জুহাইর সিকান্দার, ভার্সিটির সবাই যার দারিদ্র্যের গল্প জানে, আসলে সে একজন সম্পদশালী ব্যক্তি। তার বাবা ওর জন্য রেখে গেছেন অঢেল সম্পত্তি, যা সে পঁচিশ বছর বয়সে ব্যবহারের অধিকার পেয়েছে। কয়েকদিন আগেই জুহাইরের বয়স পঁচিশ হয়েছে, আর এখন সে তার প্রয়োজন অনুযায়ী সেই সম্পত্তি থেকে টাকা তুলতে এবং ব্যবহার করতে পারে। এই সত্যিটা কারও অজানা থাকলেও জুহাইর কখনও চাইনি যে তার প্রকৃত অবস্থান প্রকাশ পাবে। সে সবসময় সাধারণ জীবনযাপন করেই শান্তি পেয়েছে।
হাসপাতাল থেকে ফেরার পর থেকেই জুহাইর তার প্রিয় স্যার মফিজুর রহমানের সমস্যার সমাধান করার পরিকল্পনা করতে শুরু করেছিল। স্যার তাকে জীবনের প্রতিটি ধাপে সাহস জুগিয়েছেন। আজ যখন স্যার বিপদে, তখন জুহাইরের মনে হয়েছে যে এটাই সঠিক সময় কিছু করার। কিন্তু সে সরাসরি স্যারকে সাহায্য করতে পারবে না। কারণ, তাতে তার প্রকৃত পরিচয় প্রকাশ পেয়ে যাবে।
জুহাইর অনেক ভেবে একটা বুদ্ধি বের করলো। সে ঠিক করলো, একটা চিঠি লিখে স্যারের ডিপার্টমেন্টের রুমে রেখে আসবে, যেন স্যার মনে করেন কেউ তার টাকা ফেরত দিচ্ছে। এতে স্যারের সম্মানও রক্ষা পাবে, এবং জুহাইরের পরিচয়ও গোপন থাকবে।
চিঠিটা লিখতে বসে জুহাইর খুব যত্ন নিয়ে প্রতিটি শব্দ বাছাই করলো।
স্যার,
“আমি আপনার থেকে টাকা নিয়েছিলাম। সে সময়ে বুঝতে পারিনি আমার কাজটা কতটা ভুল ছিল। কিন্তু এখন বুঝতে পেরেছি। তাই আপনার সেই টাকা ফিরিয়ে দিচ্ছি। এই টাকাটা আপনাকে ফেরত দিয়ে আমি আমার ভুল শুধরে নিতে চাই। দয়া করে আমাকে ক্ষমা করবেন। আশা করি, আপনি এই বিষয়টা কাউকে জানাবেন না।”
ইতি,
জুহাইর সিকান্দার
চিঠির নিচে নিজের নাম সই করে জুহাইর এটাকে একটা খামে ভরে সিল করে রাখলো। তার পরিকল্পনা ছিলো, ডিপার্টমেন্টে গিয়ে স্যার যেখানে বসেন, সেই রুমে চিঠিটা রেখে আসবে।
পরের দিন সন্ধ্যায়, ডিপার্টমেন্টে প্রায় কেউ ছিল না। জুহাইর সুযোগ বুঝে স্যারের রুমের দিকে এগিয়ে গেল। সে খুব সাবধানে দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলো। কিন্তু সে জানতো না, শিপা তাকে ফলো করছে।
শিপা, যে অনেকদিন ধরে জুহাইরের আচরণ নিয়ে সন্দেহ করছিল, দূর থেকে তাকে নজরে রেখেছিল। আজ যখন সে দেখলো জুহাইর চিঠি নিয়ে ঢুকছে, তখন আর থেমে থাকতে পারলো না।
শিপা হঠাৎ রুমে ঢুকে পড়লো। জুহাইর হতভম্ব হয়ে গেল। তার হাতে থাকা খামটা শিপার চোখ এড়ালো না।
“এটা কী?” শিপা রাগান্বিত কণ্ঠে বললো।
“তোমার এসব জানার দরকার নেই,” জুহাইর বললো শান্তভাবে।
“না, আমি এটা জানবোই। এই খামে কী আছে, দেখাতে হবে। চোরের মতো কেন আচরণ করছো?” শিপা একদম দৃঢ় ছিল।
শেষমেশ, শিপা খামটা ছিনিয়ে নিলো। খাম খুলে চিঠিটা পড়তে শুরু করলো। তার কণ্ঠে যেন বিদ্রূপ ফুটে উঠলো।
“তাহলে তুমি চোর, জুহাইর? নিজের প্রিয় স্যারের টাকা মেরে দিয়েছো, তাই না?”
জুহাইর কোনো কথা বললো না। সে জানতো, শিপা যা বলছে তার অর্থ অন্য হলেও, এটা প্রমাণ করা কঠিন হবে যে সে আসলে স্যারকে সাহায্য করতে চেয়েছিল। সে নিজের জালে নিজেই মরিচীকার ন্যায় আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেলো। এখন এখান থেকে বেরোনো যে খুব একটা সহজ হবে না তা ও বুঝে গেলো।
শিপা রুম থেকে বেরিয়ে গিয়ে সবার সামনে জুহাইরকে চোর বলে ঘোষণা করলো। হলে যারা ছিলো শিপার চিৎকার চেচামেচিতে বেরিয়ে এলো। বেরিয়ে এলো জাকিয়া, তুলি আর শারমিনও। ওরা সবকিছু বুঝে ইচ্ছেকে কল করে ভার্সিটিতে আসার জন্য তাগদা দিলো। মফিজুর রহমান স্যারও এই খবর পেয়ে তৎক্ষনাৎ চলে রওনা দিয়েছেন। আজকেই উনাকে রিলিজ করা হয়েছে হাসপাতাল থেকে।
“সবাই শোনো! জুহাইর সিকান্দার চোর। সে স্যারের টাকা চুরি করেছে। দেখো, এই চিঠি তারই প্রমাণ।”
স্যারের বাড়ি ভার্সিটি থেকে বেশি দূরে নয়, তিনি এসেই সেই চিঠিটা নিলেন। মফিজুর রহমান, যিনি সবসময় জুহাইরের প্রতি আস্থা রেখেছেন, প্রথমে এই অভিযোগ বিশ্বাস করতে চাইছিলেন না। কিন্তু চিঠি দেখার পর তিনি কিছু বলতেও পারলেন না।
জুহাইর স্থির দাঁড়িয়ে ছিল। তার মন ভেঙে যাচ্ছিল, কারণ তার প্রিয় স্যার তার দৃষ্টিতে সন্দেহের ছায়া নিয়ে তাকিয়ে ছিলেন। সে বুঝি আর স্যারের প্রিয়র তালিকায় থাকতে পারবে না? এই দুঃখেই ওর ভেতরটা ঝাঝড়া হয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু জুহাইরের মনে একটা দৃঢ় সিদ্ধান্ত ছিল। সময় এলে সে প্রমাণ করবে, সে চোর নয়; বরং স্যারের প্রতি তার ভালোবাসা এবং দায়িত্ববোধই তাকে এই কাজ করতে বাধ্য করেছে।
শিপার চিৎকার চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে ভার্সিটির মাঠে। জুহাইরকে চোর হিসেবে ঘোষণা করার পর সবার মুখে একটাই প্রশ্ন, “এটা কি সত্যি?” শিপা স্যারের হাতে থাকা চিঠিটা নিয়ে উঁচিয়ে ধরে বললো, “এই যে প্রমাণ। জুহাইর নিজেই লিখেছে। স্যারকে চুরি করা টাকা ফেরত দিতে চেয়েছে চিঠিতে।”
প্রায় সবাই বিস্মিত, ইচ্ছে ছুটতে ছুটতে এসেছে। সে হাপড়ের মতো হাঁপাচ্ছে। তার মুখে অস্পষ্ট একটি অভিব্যক্তি। সে অবিশ্বাসের চোখে তাকিয়ে ছিল জুহাইরের দিকে। ইচ্ছের বিশ্বাস হচ্ছিল না, যে মানুষটা এত সৎ, এত নম্র, তার নামে এ ধরনের অভিযোগ উঠতে পারে। সে কোনো ভাবেই বিশ্বাস করে না জুহাইর একাজ করেছে। ইচ্ছে জানে, তার স্বামী কতটা সৎ। এইসব অপমানের জবাব একদিন সবাই পাবে সেটাও জানে। কেবল আল্লাহর উপর ভরসা হারালে চলবে না। যেকোনো বিপদে এক আল্লাহ ব্যতীত কেউ সাহায্য করবে না।
“ফোন কোথায়, স্যারের?” শিপা ঠাণ্ডা অথচ রাগান্বিত কণ্ঠে বললো।
তারপর আবারও ইচ্ছেকে দেখে বললো,
“ওর বউর কাছে গতকাল একটা নতুন ফোন দেখেছি। এখনো নিশ্চয়ই সেই ফোনটা আছে। স্যার, জুহাইরের বউ, মানে ইচ্ছের কাছে যে ফোনটা আছে আমি নিশ্চিত সেটা আপনার। এই চোরের সব কাজ তার স্ত্রীও জানে!”
ইচ্ছের মুখ লাল হয়ে গেল, অপমান আর রাগ মিশ্রিত অনুভূতিতে। ঠিক তখনই ইচ্ছের মনে পড়লো, গতকাল বিকেলে পুকুরপাড় থেকে ফেরার সময় তারা একটা ফোন পেয়েছিল। সে ফোনটা ব্যাগে রেখে দিয়েছিল আর সেটা স্যারের অসুস্থতার কথা শুনে ভুলে গেছিলো ফোনটার কথা। তারা ভেবেছিল পরে কারো খোঁজ পেলে ফেরত দেবে।
“আমার কাছে যে ফোনটা দেখেছেন আপনি ওটা আমার নিজেরই।”
ইচ্ছের কথা শেষ হওয়ার আগেই শিপা চিৎকার করে উঠলো, “দেখুন সবাই! আমি বলেছিলাম, চোরের বউও চোর! চোর কখনো বলবে চুরি করে, যে আমি চোর? ওর ব্যাগটা এক্ষুনি চেক করছি আমি।”
শিপা হঠাৎ ইচ্ছের ব্যাগ নিয়ে টানাটানি শুরু করলো। ইচ্ছ কিছু বলতে গেলেও শিপা ততক্ষণে ব্যাগ খুলে ফেলেছে। সেখান থেকে দুটো ফোন বের করলো সে। একটা সত্যিই ইচ্ছের আর অন্যটাও সবার সামনে ধরলো। দুটো ফোনের একটা দেখতেই মফিজুর রহমানের পিলে চমকে উঠে যেনো।
“একটা তো সত্যিই আমার ফোন!” মফিজুর রহমান নিজের ফোনটা হাত দিয়ে নিলেন।
“এই যে! এই ফোনটাই স্যারের। প্রমাণ হয়ে গেছে!” শিপা বাকা হেসে কটাক্ষ করে বললো।
মফিজুর রহমান, যিনি এতক্ষণ পর্যন্ত জুহাইরের সৎ চরিত্রের প্রতি আস্থা রাখছিলেন, এবার গভীরভাবে চিন্তায় পড়ে গেলেন। ফোনটি দেখে তিনি চুপ হয়ে গেলেন। তার চোখে যেন হতাশার ছায়া।
“স্যার, এটা একটা ভুল বোঝাবুঝি, আমি বুঝিয়ে বলছি।”
একটু থেমে জুহাইর শান্তভাবে বলার চেষ্টা করলো,
“ফোনটা আমরা কুড়িয়ে পেয়েছি। আমি চোর নই, আর এই চিঠিটা… সেটা…”
“থামো!” মফিজুর রহমান তার হাত তুলে বললেন।
“আমি তোমাকে সবসময় আমার সন্তান মনে করেছি, জুহাইর। তুমি আমার প্রিয় ছাত্র। কিন্তু এখন এই প্রমাণ দেখার পর আমি আর কিছু বলতে পারছি না। তুমি টাকাটা ফেরত দিতে চাইছ, এটা ভালো। আমি পুলিশ ডাকার প্রয়োজন মনে করছি না। কারণ বাবা হিসেবে আমি আমার ছেলেকে একটা সুযোগ দিতে চাই। তবে মনে রেখো, এটা তোমার শেষ সুযোগ।”
মফিজুর রহমানের কথা শুনে জুহাইরের মাথা নত হয়ে গেল। সে দেখলো ইচ্ছের চোখে জল। ইচ্ছ কিছু বলতে চাইলো, কিন্তু কেউ তাদের কথা শুনতে রাজি ছিল না।
“দেখলে সবাই? এটাই আসল জুহাইর!” শিপার চোখে জয়ের হাসি। সে সবার সামনে জুহাইর আর ইচ্ছেকে অপমান করার একটুও সুযোগ হাতছাড়া করলো না।
শিশির, যিনি সবসময়ই জুহাইরের প্রতি ঈর্ষান্বিত ছিলেন, এই ঘটনার সুযোগ নিয়ে মজা করতে শুরু করলেন। “তোরা বলিস, লোকটা সৎ! আসলে গরীব হয়ে জন্মেছে তো, তাই গরিব থেকে রাতারাতি বড়োলোক হতে চাইছিলো, কিন্তু হাটে হাড়ি ভাঙলো তো? ওর ভালোর মুখোশ খসে পড়লো, দেখলে সবাই? কেমন সবার সামনে আসল রূপটা বেরিয়ে এলো।”
চারপাশে হাসাহাসি আর অপমানের শব্দে ইচ্ছের কান ঝাঁঝাঁ করে উঠলো। সে জুহাইরের দিকে তাকালো, যিনি নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে ছিলেন। তার চেহারায় কোনো প্রতিক্রিয়া নেই।
শিপা প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিল, কিন্তু মফিজুর রহমানের পুলিশ না ডাকায় তার প্রতিশোধের আগুন নিভে গেলো।
শিপা বললো।
“ঠিক আছে স্যার, আমরা মেনে নিলাম। তবে মনে রেখো জুহাইর, স্যার যদি পুলিশ ডাকতেন, তুমি আর ইচ্ছে হয়তো এখানেই শেষ হয়ে যেতে। এই ভার্সিটিতে পড়াটা বোধহয় হতো না। আসলেই ভাগ্য ভালো তোমাদের।”
জুহাইর আর ইচ্ছে, দুজনেই মাথা নিচু করে রইলো। চারপাশের শোরগোল, কটূক্তি আর অপমান তাদের হৃদয়কে বিদ্ধ করতে থাকলো, দগ্ধ, ক্ষত-বিক্ষত হলো মন,হৃদয়।
#চলবে