তোমাতেই রহিব বিলীন পর্ব-১৪

0
996

#তোমাতেই_রহিব_বিলীন
#পর্ব_১৪
#নিশাত_জাহান_নিশি

ইতোমধ্যেই আহনাফ পার্লারের বদ্ধ দরজাটা ওপেন করে পার্লারে প্রবেশ করলেন। সাথে সাথেই পার্লারের ১০ থেকে ১২ জন মেয়ে আমাদের দিকে হা করে তাকালেন!

আহনাফ ভ্রু যুগল কিঞ্চিৎ উঁচিয়ে পার্লারের সবক’টা মেয়েকে উদ্দেশ্য করে রাগী কন্ঠে বললেন,,

“কি হলো? সার্কাস দেখছেন? এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো? চোখ নামান বলছি!”

মেয়ে গুলো আর এক সেকেন্ড ও সময় ব্যয় করলেন না। আহনাফের খড়তড় কন্ঠে চোখ নামিয়ে নিতে বাধ্য হলেন। আমি রাগে লাল হয়ে অবিরত ধস্তাধস্তি করে আহনাফের কোল থেকে নামার চেষ্টায় অটল প্রায়। ক্ষান্ত হয়ে আমি পরিশেষে দাঁত কিড়মিড়িয়ে আহনাফের কানে গুঞ্জন তুলে বললাম,,

“ছাড়ুন বলছি। এটা একটা পাবলিক প্লেইস। নোংরামো করার জায়গা না।”

“নোংরামো করছি কোথায় হুম? উডবি ওয়াইফকে কোলে নেওয়াটা সিরিয়াসলি নোংরামি?”

“ছাড়বেন কিনা বলুন? আমি কিন্তু ভীষন রেগে যাচ্ছি।”

আহনাফ আচমকা বাঁকা হেসে বললেন,,

“রেগে গেলে কি করবে হুম? এক্সট্রা আদর দিবে?”

আমি দাঁতে দাঁত চেঁপে বললাম,,

“কিক চিনেন কিক? কিক দিবো! বুঝেছেন?”

আহনাফ অট্ট হেসে আমাকে কোল থেকে নামিয়ে দিলেন। ইতোমধ্যেই পার্লার মালিক আমাদের সম্মুখে এসে হাজির হলেন। শান্ত দৃষ্টিতে মহিলাটি আহনাফের দিকে চেয়ে বললেন,,

“ভাইয়া। প্লিজ ডোন্ট মাইন্ড। একচুয়েলি পার্লারে বয়েজ এলাউড না।”

আহনাফ শার্টের কলারটা বাঁ দিকে ঝাঁকিয়ে ভাবশূন্য কন্ঠে বললেন,,

“আই নো দ্যাট ম্যাম। পার্লারে বয়েজ এলাউড না। আমি জাস্ট আমার উডবি ওয়াইফকে পার্লার অবধি পৌঁছে দিয়ে গেলাম। যতো রূপচর্চা আছে, যতো ফেসিয়াল ট্রিটমেন্ট আছে সব এক এক করে আমার উডবি ওয়াইফকে ট্রাই করাবেন। আমি বাইরে ওয়েট করছি। আর হ্যা, জাস্ট ওয়ান আওয়ারের মধ্যে সব ট্রিটমেন্ট আপনাকে শেষ করতে হবে। ওকে?”

আহনাফের কথার মাঝখানে আমি মহিলাটিকে উদ্দেশ্য করে মৃদ্যু হেসে বললাম,,

“না আপু। সব ফেসিয়াল ট্রিটমেন্ট ট্রাই করতে হবে না। জাস্ট হোয়াইটনিং ফেসিয়ালটা করালেই হবে।”

মহিলাটি ম্লান হেসে বললেন,,

“ওকে ম্যাম। তাহলে চলুন ভেতরে। থার্টি মিনিটসের মধ্যেই আপনার হোয়াইটেনিং ফেসিয়াল কমপ্লিট হয়ে যাবে।”

মহিলাটি এবার আহনাফকে উদ্দেশ্য করে হালকা হেসে বললেন,,

“ভাইয়া। তাহলে আপনি এবার আসুন। জাস্ট থার্টি মিনিটস সময় দিন আমায়। ওকে?”

আহনাফ ডানে বায়ে মাথা ঝাঁকিয়ে হ্যাঁ সূচক সম্মতি জানালেন। নিষ্পলক দৃষ্টিতে আমার দিকে একবার তাকিয়ে আহনাফ আমার কানে ফিসফিসিয়ে বললেন,,

“গাড়িতে ওয়েট করছি আমি। কাজ শেষ করে তাড়াতাড়ি এসো।”

শরীরটা কেমন যেনো কেঁপে উঠল আমার। উষ্ণ শিহরণ বয়ে গেলো শরীরের সর্বাঙ্গে। না চাইতে ও চোখ জোড়া বুজে আমি আহনাফের কানে ঠোঁট ঠেঁকিয়ে বললাম,,

“ঠিক আছে। আপনি যান।”

আহনাফ মৃদ্যু হেসে হেলেদুলে পার্লার থেকে প্রস্থান নিলেন। আমি উনার যাওয়ার পথে তাকিয়ে মৃদ্যু হাসলাম। মানুষটা আসলেই পাগল। সামান্য ফেসিয়ালের জন্য গাড়িতে আধ ঘন্টা আমার জন্য ওয়েট করবেন? ছেলে মানুষের এতো ধৈর্য্য আছে বুঝি?

যাই হোক প্রায় আধ ঘন্টার মধ্যে আমার ফেসিয়াল শেষ হলো। বিল এলো প্রায় তিনশত টাকার মতো। আপাতত আমার কাছে কোনো টাকাই নেই। আহনাফের থেকেই টাকাটা নিতে হবে। পার্লারের দরজায় দাঁড়িয়ে আমি আহনাফকে খুঁজছিলাম। রাস্তার পাশ ঘেঁষে পার্ক করে রাখা আহনাফের গাড়িটায় নজর দিলাম। গাড়ির ডিক্কিতে দু দিকে পা মেলে বসে আছেন আহনাফ। উনার পাশেই নেহাল ভাই এবং তনিমা আপু চুপচাপ বসে আছেন। একটু ভালো করে নজর দিতেই দেখতে পেলাম আহনাফের হাতে জ্বলন্ত একটা সিগারেট। খুব আয়েস করে উনি সিগারেটটায় ফুঁক দিতে যাবেন অমনি আমি রাগে গজগজ করে উচ্চ আওয়াজে আহনাফকে ডেকে বললাম,,

“আহনাফ শুনছেন?”

সঙ্গে সঙ্গেই আহনাফ সিগারেটটা হাত থেকে নিচে ছুড়ে মারলেন। গাড়ির ডিক্কি থেকে নেমে আহনাফ হাত দিয়ে সামনের এলোমেলো চুল গুলো সেট করে ঠোঁটের কোণে ম্লান হাসি ঝুলিয়ে আমার দিকে অগ্রসর হলেন। আমার মুখোমুখি দাঁড়াতেই আমি চোয়াল শক্ত করে আহনাফের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে বললাম,,

“হাতে কি ছিলো ওটা?”

আহনাফ শুকনো কন্ঠে বললেন,,

“কি?”

“সত্যিই বুঝতে পারছেন না?”

“না তো!”

“নাটক করছেন?”

আহনাফ নির্বোধ কন্ঠে বললেন,,

“কই না তো!”

বুকের পাজরে দু হাত বেঁধে আমি ক্ষীপ্ত কন্ঠে বললাম,,

“স্মোকিং করছিলেন আপনি?”

আহনাফ ইতস্তত বোধ করে শুকনো ঢোক গিলে বললেন,,

“আরেহ্। ওটা তো নেহালের সিগারেট ছিলো। আমি তো জাস্ট একটু হাতে নিয়েছিলাম। এর মধ্যেই তোমার ডাক পড়ল! সো সিগারেটটা ছুড়ে ফেলে আমি তোমার কাছে ছুটে এলাম।”

“ওহ্ আই সি। তার মানে আপনি স্মোকিং করেন নি তাই তো?”

কপালে জমে থাকা বিন্দু বিন্দু ঘাম রাশি গুলো মুছে আহনাফ শার্টের কলারটা টেনে বললেন,,

“হুম করি নি! সিউর।”

আহনাফের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আমি রুক্ষ কন্ঠে বললাম,,,

“ওকে ফাইন। তাহলে মুখটা হা করুন। আমি চেইক করব।”

চোখে অস্থিরতা নিয়ে আহনাফ মুখে হাত দিয়ে অস্পষ্ট স্বরে বললেন,,

“মামামানে কি?”

“মানে আছে। দেখি? মুখ থেকে হাতটা সরান।”

“নো। আই কান্ট ডু দিজ।”

আমি রাগে গজগজ করে আহনাফের মুখ থেকে হাতটা সরানোর জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে উঠলাম। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে আমি সফল হলাম আহনাফের মুখ থেকে হাতটা সরাতে। সাথে সাথে সিগারেটের বিশ্রি স্মেল আমার নাকে ভেসে এলো। চোয়াল শক্ত করে আমি আহনাফের শার্টের কলার চেঁপে ধরে বললাম,,

“ইউ চিটার, লায়ার। মিথ্যে বললেন কেনো আপনি? আপনি স্মোকিং করেন নি?”

আহনাফ চোখে ভয়ে নিয়ে বিচলিত কন্ঠে বললেন,,

“স্যরি। একচুয়েলি মাঝে মধ্যে স্মোকিং করা হয়। ভয়ে সত্যিটা বলতে পারি নি তোমায়। যদি তুমি রাগ করো তাই!

আহনাফের শার্টের কলারটা ছেড়ে আমি রাগে গজগজ করে গাড়ির দিকে মোড় নিলাম আর পেছন থেকে আহনাফকে উদ্দেশ্য করে বললাম,,

“বিলটা দিয়ে আসুন। আমি গাড়িতে ওয়েট করছি।”

আহনাফ পেছন থেকে চেঁচিয়ে বললেন,,

“ওকে। প্লিজ ডোন্ট এংরি উইথ মি। আই উইল কাম ইন জাস্ট ফাইভ মিনিটস।”

হন্ন হয়ে গাড়ির দরজা খুলতেই তনিমা আপু আমার পাশে এসে দাঁড়ালেন। শান্ত কন্ঠে আপু আমায় উদ্দেশ্য করে বললেন,,

“আহনাফ খুব ভালো ছেলে, খুব ভালো বন্ধু, খুব ভালো প্রেমিক ও বটে। আই থিংক নিঃসন্দেহে সে ভালো একজন হাজবেন্ড ও হবে! তোমাকে খু্ব সুখে রাখবে। ইউ উইল বি দ্যা হ্যাপিয়েস্ট ওয়াইফ ইন দিজ ওয়ার্ল্ড৷ সো প্লিজ, ডোন্ট বি এংরি উইথ হিম।”

ভাবশূন্য দৃষ্টিতে আমি তনিমা আপুকে প্রশ্ন ছুড়ে বললাম,,

“আহনাফ কি শুধুই আপনার বন্ধু? কখনো বন্ধু থেকে প্রেমিক হয়ে উঠে নি?”

তনিমা আপু তব্ধ শ্বাস ছেড়ে বললেন,,

“আমাদের মধ্যে কখনোই কোনো প্রেম জাতীয় সম্পর্ক হয় নি। উই আর জাস্ট গুড ফ্রেন্ডস।”

ইতোমধ্যেই নেহাল ভাই আমার অন্য পাশে দাঁড়িয়ে অনুশোচিত কন্ঠে বললেন,,

“স্যরি টু সে প্রভা। ঐ দিন তনিমার শুনানো কল রেকর্ডিং গুলো ফেইক ছিলো। খু্ব সাজানো গোছানো একটা প্ল্যান ছিলো। এ সবকিছুর পেছনে কিছুটা হয়তো আমি ও জড়িয়ে ছিলাম! তবে আমি ইচ্ছাকৃতভাবে জড়াই নি। নিজের অজান্তেই জড়িয়ে পড়েছিলাম। কিছুদিন পর সমস্ত ঘটনা গুলো তোমার কাছে ক্লিয়ার হবে। সেই পর্যন্ত ধৈর্য্য ধরে থাকার হাম্বেল রিকুয়েস্ট করছি!”

নেহাল ভাইয়ের দিকে চেয়ে আমি অধৈর্য্য কন্ঠে বললাম,,

“আর কতো ওয়েট করতে হবে আমায় বলুন? আর কতো ধৈর্য্য ধরতে হবে? ধৈর্য্যের বিচ্যুতি তো আমারো ঘটে। সিরিয়াসলি আমি হাঁফিয়ে উঠছি আপনাদের এসব মিস্ট্রিয়াস ব্যাপারে।”

পেছন থেকেই মনে হলো আহনাফের কন্ঠস্বর আমার কর্নকুহরে ভেসে এলো। শান্ত কন্ঠে আহনাফ পেছন থেকে আমায় উদ্দেশ্য করে বললেন,,

“সবুরে মেওয়া ফলে। জাস্ট হাতে গোনা ২/৩ দিন সময় দাও আমাদের। সব রহস্য ভেদ করে সত্যিটা ঠিক সামনে আসবে।”

পিছু ঘুড়ে আমি সন্দিহান চোখে আহনাফের দিকে তাকালাম। আহনাফ ক্ষীন হেসে আমার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বললেন,,

“কি? আর মাএ ২/৩ দিন ওয়েট করতে পারবে না?”

আমি সন্দিহান কন্ঠে বললাম,,

“আই উইল ট্রাইং!”

সংকোচ বোধ করে আমি নাক, মুখ কুঁচকে আহনাফকে বললাম,,

“আ’ম হাংরি। আই হেভ টু ইট সামথিং নাও।”

আহনাফ অস্থির চোখে রোড সাইটে দৃষ্টি বুলিয়ে রাস্তার ঠিক বাম পাশে ছোট খাটো একটা রেস্টুরেন্ট দেখা মাএই আমার দিকে উদ্বেগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললেন,,

“রাস্তার অপজিটে একটা রেস্টুরেন্ট দেখা যাচ্ছে। কাম অন, হারি আপ।”

আহনাফ আমার হাত ধরে পিছু ফিরে নেহাল ভাই এবং তনিমা আপুকে উদ্দেশ্য করে ব্যতিব্যস্ত কন্ঠে বললেন,,

“এই তোরা ও চল। আজ আমরা রেস্টুরেন্টে ডিনার করেই বাড়ি ফিরব।”

নেহাল ভাই তনিমার আপুর হাতটা খপ করে ধরে আহনাফ এবং আমার পাশাপাশি দাঁড়ালেন। তনিমা আপু আশ্চর্যিত চোখে নেহাল ভাইয়ার দিকে দৃষ্টি বুলাতেই নেহাল ভাই ম্লান হেসে বললেন,,

“এতো অবাক হওয়ার কি আছে? এর আগে ও বহুবার আমি তোর হাতে ধরেছিলাম। আজ নতুন কি আছে?”

তনিমা উৎসুক কন্ঠে বললেন,,

“আজ তোর স্পর্শ একটু অন্যরকম ই লাগছে। কেনো বল তো? তোর ছোঁয়ায় আজ বিশেষ কিছু আছে?’

নেহাল ভাই ভ্রু যুগল উঁচিয়ে তীক্ষ্ণ কন্ঠে বললেন,,

“বিশেষ কিছু নেই। নরমালি হাতটা ধরেছি জাস্ট!”

তনিমা আপু নিশ্চুপ হয়ে মাথা নিচু করে নিলেন। আহনাফ বাঁকা হেসে তাদের দুজনকেই উদ্দেশ্য করে বললেন,,

“আমি জানি, নেহালের স্পর্শে আজ নতুন কি আছে। তবে এখনই কাউকে কিছু বলব না। আই হোপ সো, কিছুদিন পর তোরা নিজেরাই তোদের মনের কথা নির্দ্বিধায় বুঝতে পারবি।”

চারজন এক সাথে রাস্তা পাড় হয়ে রেস্টুরেন্টের ভেতরে ইন করলাম। আহনাফ চার প্লেইট ফ্রাইড রাইস, চিকেন, বিফ, মাটান এন্ড কোল্ড ড্রিংকস অর্ডার করলেন। রাতে জমিয়ে ডিনার করে আমরা ঠিক ১০ টা নাগাদ বাড়ি ফিরে এলাম। বাড়ি ফিরতেই আম্মু এবং আপুর ঝাড় শুনতে হলো। আত্নীয় স্বজনদের হেয় দৃষ্টি এবং নিন্দে মন্দ সহ্য করতে হলো। সব উপেক্ষা করে রুমে প্রবেশ করতেই জিজুর মুখোমুখি হতে হলো। বুকে হাত বেঁধে জিজু রাগী দৃষ্টিতে আমার দিকে প্রশ্ন ছুড়ে বললেন,,

“এতো রাত হলো কেনো বাড়ি ফিরতে? কোথায় ছিলে তোমরা?”

আমি স্বাভাবিক কন্ঠে বললাম,,

“পার্লারে গিয়েছিলাম। তাই একটু লেইট হয়ে গেলো!”

“সিরিয়াসলি? পার্লারে তুমি ৩/৪ ঘন্টা ব্যয় করে এসেছ?”

“অবাক হওয়ার কি আছে জিজু? পার্লারে ৩/৪ ঘন্টা ব্যয় করা অবশ্যই আশ্চর্যের কিছু না!”

জিজু আমার দিকে খানিক ঝুঁকে বেশ উত্তেজিত কন্ঠে বললেন,,

“আমার বিরুদ্ধে আহনাফ ঠিক তোমার কান কতোটা ভাঙ্গিয়েছে? কাইন্ডলি একটু বলবে?”

“আপনার মধ্যে এতো সন্দেহ, কৌতুহল, ভয়, উৎকন্ঠা কাজ করছে কেনো জিজু? আপনি কি সত্যিই কিছু করেছেন?”

জিজু থতমত খেয়ে গলা খাঁকারি দিয়ে মুহূর্তের মধ্যে রাগান্বিত ভাব ভঙ্গি পাল্টে কিঞ্চিৎ নরম কন্ঠে বললেন,,

“কে আমায় কি ভাবল আই জাস্ট ডোন্ট কেয়ার। আমি নিজের বিবেকের কাছে অন্তত পরিশুদ্ধ আছি। রুমে যাও। ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়ো!”

জিজু দ্রুত পায়ে হেঁটে প্রস্থান নিলেন। জিজুর যাওয়ার পথে তাকিয়ে থেকে আমি সন্দিহান কন্ঠে বললাম,,

“কি হচ্ছে কি এসব? জিজুর ভাব ভঙ্গি দেখে তো মনে হচ্ছে না জিজু কোনোভাবে অপরাধী! আহনাফ হঠাৎ জিজুর থেকে আমাকে দূরে থাকতে বললেন কেনো? জিজু কি সত্যিই কিছু করেছেন?

হাজারো প্রশ্ন, উৎকন্ঠা, উদগ্রীবতা নিয়ে আমি রুমে প্রবেশ করলাম। ফ্রেশ হয়ে রুমের লাইট অফ করে কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করছিলাম। আহনাফকে ভীষষষনভাবে মিস করছি। উনার হাতের স্পর্শ, উনার ঠোঁটের স্পর্শ, হুট করে আমাকে পাজা কোলে তুলে নেওয়া, লোকমা তুলে আমাকে খাইয়ে দেওয়া, অবশেষে আমার যত্ন নেওয়া। প্রতিটা মুহূর্তকে ভীষন মিস করছি। তৎক্ষনাৎ হাতে থাকা আংটিটায় চোখ বুলিয়ে আমি মৃদ্যু হেসে বললাম,,

“আগের বার আংটি টা হাতে পড়ে অতোটা রিলিফ ফিল করি নি আমি। তবে এবার আংটি টা হাতে পড়ে খুব রিলিফ ফিল করছি। মনে হচ্ছে যেনো আহনাফ শেখ আমার শরীরের একটা বিস্তর অংশ দখল করে আছেন। যাকে আমি যখন ইচ্ছে তখনই ছুঁতে পারছি, তার ভালোবাসাটাকে মন থেকে উপলব্ধি করতে পারছি!”

পরক্ষনে মুখটা কালো করে আমি নাক ছিটকে বললাম,,

“ছ্যা। মি চাশমিশ আহনাফ তো স্মোকিং করেন। ভাবতেই কেমন ঘেন্না লাগছে। এই স্মোকারকে আমি বিয়ে করব? তার সাথে সংসার করব?”

এসব ভাবতে ভাবতে কখন যেনো ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘুমের মধ্যেই হঠাৎ মনে হলো কেউ যেনো আমার গাঁয়ে জড়ানো কাঁথাটা শক্ত হাতে টানছেন। অত্যধিক ভয়ে জর্জরিত হয়ে আমি ফটাফট ঘুমন্ত চোখ জোড়া খুলে পাশ ফিরে তাকাতেই চোখ জোড়া প্রকান্ড করে উচ্চ আওয়াজে চেঁচিয়ে বললাম,,

“আআপনি? আআপনি আমার রুমে কি করছেন?”

#চলবে….?