#তোমার_আমার_প্রেম (কপি নিষিদ্ধ)
#পর্ব_৬
#প্রিমা_ফারনাজ_চৌধুরী
মানুষের জীবনে প্রেম আশীর্বাদ হয়ে আসে নয়তো অভিশাপ হয়ে। চৌদ্দ বছর বয়সী টুসুর জীবনে কি হয়ে এসেছিল সেকথা টুসুকে জিজ্ঞেস করলেই টুসুর উত্তর হবে, তার যাবতীয় ভয় এবং অনিশ্চয়তা কাটানোর জন্যই এসেছিল অভিনব শারাফ।
নিজেকে নিয়ে হীনম্মণ্যতায় ভুগতে থাকা টুসুর জীবনে প্রেমের দরকার ছিল না। দরকার ছিল একটা বন্ধুর যে তাকে তার হীনম্মণ্যতা কাটাতে সাহায্য করবে।
কিন্তু অভিনব শারাফ বন্ধু প্রেমিক দুই হয়েই তার জীবনে এল। অথচ টুসু তাকে দেখেনি, জানেনা, চেনেনা। তবুও তবুও সে যেন টুসুর কি একটা হয়ে গেল। অদ্ভুতভাবে সে টুসুর জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠলো।
টুসু কখনো ভাবেনি যে ভার্চুয়াল দুনিয়ায় তার জীবনে এমন কাউকে পাবে, যে তার সমস্ত ইনসিকিউরিটিকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেবে। তার জীবনের সবচেয়ে অপ্রত্যাশিত অধ্যায় হয়ে এল এই অভিনব শারাফ।
তারপর কত শত সুখ দুঃখের কথা হলো।
কথাগুলোর মাঝে টুসু অনুভব করলো এই মানুষটি তাকে কিভাবে যেন বুঝতে পারে। এই অজানা নির্ভরতাটুকুই তো দরকার ছিল টুসুর।
যার প্রতিটি মেসেজ তার মনকে অদ্ভুত শান্তিতে ভরিয়ে দিত সেই মানুষটিকে মনেপ্রাণে খুব করে চাওয়ার মাঝে কি কোনো ভুল ছিল?
শুধু প্রেমিক প্রেমিকার সম্পর্কের মাঝে নিবদ্ধ থাকতে চায়না টুসু। সে যখন অনেক বড় হয়ে যাবে তখনো কি অভিনব শারাফ তার পাশে থাকবে এরূপ প্রশ্ন টুসুর মনে ঢেউ খেলতে লাগলো।
কিন্তু সে কীভাবে প্রকাশ করবে তার ভেতরের সমস্ত অনিশ্চয়তার কথা?
এইসব যখন সে ভাবছিল অভিনব শারাফ তখন মেসেজের মধ্যে অদৃশ্য হাত বাড়িয়ে টুসুর মনের প্রশ্নটা বের করে নিয়ে এল। আর জানালো, পৃথিবী উলটপালট হয়ে গেলেও সে টুসুর হাত ছাড়বে না। ব্যস এটুকুই শোনার ছিল টুসুর। আর কিচ্ছু না।
আর তারপর!
চঞ্চল, ছটফটে হাসিখুশি মেয়েটা একটা অন্যরকম মেয়ে হয়ে গেল। ঘরকুনো, নীরব, শান্ত।
হিসেব কষলো একমাস আগেই টুসুর চৌদ্দ বছর পূর্ণ হয়ে গেছে। এখন সে পনের বছরের কিশোরী। টুসুর জন্মদিন কোনোদিন উদযাপন হয়নি।
তাদের বাড়িতে এসবের প্রচলন নেই। টুসুরও কখনো এসব ইচ্ছে হয়নি। কেউ হয়তো কারো জন্মদিনটা অব্দি ঠিকঠাক জানেনা। তবে মা বলে। সে মায়ের কোল আলো করে এসেছিল। তার জন্মের পর বাবার বিজনেসটা অনেক বড় হয়ে গেল। বাবা সেদিন তাকে বলেছিল,
“তুমি আমার পৃথিবী আলো করে এসেছিলে রাইদারাণী। ওইদিনের পর আমার পকেট কোনোদিন খালি হয়নি। তোমার মায়ের হাঁড়িতে ভাতের অভাব হয়নি। তোমার দাদীর সব দোয়া সেদিন কাজে লেগে গিয়েছিল। আহসান বাড়ির বাগানেও সবুজ পাতার বাহার, আর কত ফুলফল। পুকুরভরা মাছ। ঠিক বসন্তে তুমি এসেছিলে কোকিল হয়ে।”
একদম ছোট্ট বেলা থেকে বাড়িটা টুসুর একটা সংসারের মতো। ছোট্ট পায়ে সারাবাড়িময় ছোটাছুটি করে সবার নাওয়াখাওয়ার খোঁজখবর নেয়া টুসুর অন্যতম একটা দায়িত্ব।
দাদীমার মুখে শুনেছে যখন সে প্রথম কথা বলা শিখলো তখন সে শুরুতেই বাবা জেঠুকে বলেছিল,”টুমরা ভাত খেছ?”
বাবা হো হো করে হেসে উঠে বলেছিল,
“দেখো দেখো আমার রাইদা রাণীর কত চিন্তা সবাইকে নিয়ে।”
দা ছুরি ভোঁতা হলেও কামারের কাছে ছুটে যাওয়া, কাপড়ে ময়লা হলে ধোপার কাছে ছুটে যাওয়া, বাড়িতে তেল মরিচ ফুরিয়ে এলে গায়ে ফ্রক চাপিয়ে স্যান্ডেল পায়ে দিয়ে বাজারের থলে নিয়ে দোকানে দৌড়ে যাওয়া, আর তারপর ফ্রকের পেছনের চেইনটা ছিঁড়ে গেলে বিবেক ভাইয়ের কাছে দৌড়ে গিয়ে চেইনটা ঠিক করে দিতে বলা। টুসুর মতে বিখ্যাত চেইন মাস্টার সে। জমাট বাঁধা চেইন সে অনায়াসে ঠিক করে ফেলতে পারে। চেইনটা ঠিক করে দেয়ার পর পিঠের উপর ধমাধম দিতেও ভুল করতো না বিবেক ভাই। তার কারণটা ছিল টুসু কেন চেইন লাগানোর সময় এত অধৈর্য হতো।
অভিনব শারাফ যখন তার জন্মদিন জানতে চাইলো টুসু বলল, “সেই দিনটা চলে গেছে। শুনে লাভ নেই।”
অভিনব শারাফ জেদ ধরলো। টুসু উপায়ান্তর না দেখে তার জন্মদিনের তারিখটা বললো। আঠারোই ফাল্গুন।
সেই আঠারোই ফাল্গুনের দিনটা অভিনব শারাফ উদযাপন করেছে পঁচিশে বৈশাখ এক কালবৈশাখীর ঝড়ের রাতে। প্রকৃতি তখন ভয়ংকর। নিভু নিভু মোমবাতি সাজিয়ে তার মধ্যিখানে একটা কেক রেখে তার জন্মদিন উদযাপন করলো অভিনব শারাফ। কেকের উপর লেখা ছিল,”শুভ জন্মদিন রাগিনী।”
ভিডিওর ওপাশে আধো অন্ধকারে বসে কেক কাটলো একটা সবল হাত। আর ভীষণ গম্ভীর একটা স্বর বলে উঠলো,
“শুভসুন্দর জন্মদিন। তোমার জীবনে আমি যেন জন্ম মৃত্যুর মতো ধ্রুব সত্যি হতে পারি।”
ঝড়ের শব্দের মাঝেও ওই গলার স্বরটা বারংবার কানে বাজলো টুসুর। কতবার সে গলার স্বরটা শুনলো। কেন শুনলো সে জানেনা। কিচ্ছু জানেনা।
পুরো ভিডিওটা দেখার পর হাসি, কান্না এমনকি মুখের কথাটুকুও হারিয়ে ফেলেছিল টুসু। ধরাছোঁয়ার বাইরে গিয়ে যতটা ভালোবাসা যায় একটা মানুষকে ঠিক ততটাই হয়তো তার চাইতেও বেশি ভালোবাসা তাদের মধ্যে হয়েছিল এই ছোট্ট ছোট্ট যত্নগুলোর মধ্যে দিয়ে।
অভিনব শারাফের আবদার ছিল টুসু একটা বাসন্তী রঙের শাড়ি পড়বে। কারণ সে বসন্তরাণী। গাঢ় লাল রঙের চুড়ি পরবে। দু-হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ছবি দেবে।
কিন্তু টুসুকে তো বাসন্তী রঙ মানায় না। বড্ড কালো লাগে। কি করবে সে? তার মুখ আর গলার চাইতে হাত পা আরও বেশি কালো। মা বলে সে রোদে দৌড়ে দৌড়ে হাত পা কালো করে ফেলেছে।
তাই টুসু কথা দিয়েছিল এই এক জীবনে তার এই আশাটা একদিন না একদিন টুসু ঠিক পূরণ করবে।
তারপরের দিন ছাদে হালকা বৃষ্টিতে টুসু ইচ্ছেমতো ভিজলো। মনের আনন্দে। একদম দুহাত মেলে বুক উজাড় করে। যতটা গভীর থেকে নিঃশ্বাস নেয়া যায় ততটা গভীর হতে নিঃশ্বাস টেনে অনেক বড় একটা শ্বাস ফেললো। নিজেকে খুব হালকা লাগলো।
পরক্ষনেই মন ভার হলো এই ভেবে, এবার দেখা কি করে করবে সে?
কারণ অভিনব শারাফ তাকে দেখতে চায় সামনাসামনি। টুসুর মনে আবারও অনিশ্চয়তা ঝেঁকে বসলো। রাতে অভিনবের সাথে কথা হলো। সে চাঁদের ছবি তুলে দিয়ে বলল,”আজ কি সুন্দর চাঁদ উঠেছে দেখো।”
টুসু বলল,”চাঁদটা আমিও দেখছি ছাদে দাঁড়িয়ে।”
অভিনব লিখলো,”চাঁদ চাঁদকে দেখছে নাকি?”
টুসুর লজ্জা হলো। ভারী লজ্জা। কান গরম হওয়া লজ্জা। ওই লাজুক মুখ নিয়ে কারো সামনে দাঁড়ানো যায় না। বুঝে ফেলবে সবাই। টুসু তাই ঘরে বসে থাকে বেশিরভাগ সময়।
শুধু ওই বিশেষণটুকু নয়। এরকম আরও কথা হয়েছে তাদের মধ্যে। যাকে বলে পাগল পাগল প্রেমের কথা। মন তোলপাড় করা প্রেম। সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ এরূপ কথোপকথন শুনেই পাগল হয়ে যাবে। আর তার মনে হবে প্রেম বুঝি এমনও হয়?
হয়তো হয় না। কিন্তু টুসু আর অভিনব শারাফের মধ্যে হয়েছে।
সমুদ্রের বালুচরে গড়াগড়ি খাওয়ার স্বপ্নগুলো, নীল জলে পা ডুবিয়ে সূর্যাস্ত দেখার স্বপ্নগুলো, সরিষা ক্ষেতে হলুদ শাড়ির আঁচল উড়িয়ে হলুদ ফুলের মাঝে হারিয়ে যাওয়ার স্বপ্নগুলো, নুপুর পড়ে ছাদে জমে থাকার বৃষ্টিতে পানিতে পায়ে পায়ে ভর রেখে ছন্দ তোলার স্বপ্নগুলো,
আকাশ বাতাস একাকার করে একে অপরকে ভালোবাসার কথা জানানোর স্বপ্নগুলোকে বুকে ধারণ করেই তো টুসুর নতুন করে বাঁচতে শেখা আর নিজেকে ভালোবাসা। নিজেকে এত ভালোবাসা তো অভিনব শারাফই তাকে শিখিয়েছিল।
নিজেকে ভালোবাসার মধ্যে যে কত আনন্দ টুসু তা বুঝতে পেরে মনে মনে অজস্র কৃতজ্ঞতা জানালো অভিনব শারাফকে।
চিরকাল সবার আদেশ নিষেধ মেনে আসা টুসুর এবার একটা মানুষ হলো যার উপর নিজের কর্তৃত্ব জাহির করতে পেরেছিল। অভিনবকে ঠিকমতো ঔষধ খাওয়া, বিশ্রাম নেওয়া, খাওয়াদাওয়া করার কথা মনে করিয়ে দিতে টুসুর একটুও ভুল হতো না। কারণ অভিনব শারাফকে সুস্থ হতে হবে। আর তারপর সেই দিনটা আসবে। যেদিন তাদের দেখা হবে।
এই দেখা হওয়ার দিনটাকে নিয়েও কতশত কল্পনা জল্পনার পানসী ভাসালো টুসু আর অভিনব শারাফ তাদের মেসেজে।
কথা হলো, তাদের দেখা হবে এক গোধূলী লগ্নে। টুসু অভিনবকে দেখে লজ্জায় মরে যাবে। আর অভিনব আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে হাসবে তাকে লজ্জা পেতে দেখে। টুসু তার কাছে নিজেকে ধরা দেবে না। দৌড়ে দৌড়ে বহুদূর চলে যাবে। অথচ অভিনব তার জায়গায় স্থির দাঁড়িয়ে হাসতে থাকবে টুসুর দিকে তাকিয়ে। কারণ টুসুর গন্তব্য সে নিজেই। পালাতে পালাতে যখন টুসু ক্লান্ত হয়ে যাবে তখন ওই জখমপূর্ণ, ছিন্নভিন্ন, বিক্ষত বুকেই টুসুর ঠাঁই হবে। তারপর টুসু খুব খুব কাঁদবে।
তারপর তারা এক মিষ্টি আলোয় মোড়া পূর্ণিমা রাতের চাঁদটাকে স্বাক্ষী রেখে একে অপরকে কবুল করে নেবে। টুসু লাল বউ সাজবে। হাতে লাল মেহেদী আর পায়ে লাল আলতা পরবে। লাল ঘোমটায় মুখ ঢাকবে।
আর অভিনব শারাফ বরবেশে আসবে ঢাকঢোল পিটিয়ে। পুরো পৃথিবী দেখবে টুসু কত সুখী। টুসুর মতো ভাগ্যবতী আর দুটো নেই।
তারপর আসবে সেই কাঙ্ক্ষিত মুহূর্তটা। টুসুর লাল ঘোমটা সরিয়ে অভিনব শারাফ তাকে ডেকে উঠবে,”আলতা বউ” বলে।
টুসুর আপাদমস্তক কেঁপে উঠবে অজানা শিহরণে।
তারপরের দিন অভিনব শারাফ ছুটে যাবে ধোপার কাছে সাদা পাঞ্জাবি হতে ঠোঁটের লাল রঙ ছাড়াতে। ফেরার পথে লাল নীল ব্যাথার ঔষধ নিয়ে হাজির হবে। টুসু ওই ঔষধ না খেয়ে আরও জ্বর তুলবে। আর জ্বরের ঔষধের বিনিময়ে তার খোঁপা এলোমেলো হবে।
একবুক স্বপ্ন নিয়ে টুসুর দিন কাটছিল। অপেক্ষার প্রহর গুণছিল কবে অভিনব পুরোপুরি সুস্থ হবে।
সেইরাতে টুসু অভিনবের সাথেই কথা বলছিল। অভিনব লিখলো,
“খেয়েদেয়ে ঘুমিয়ে পড়ো। কাল সকালে কথা হবে।”
টুসু দাদীর পাশে বসে আছে। হাসপাতাল থেকে দুদিন হয়েছে দাদীকে নিয়ে আসা হয়েছে। টুসু লিখলো,
“দাদী ঘুমিয়ে যাক। তারপর।”
অভিনব একটু বিরক্ত হলো। টুসু তা দেখে হাসলো। বলল,”আচ্ছা যাচ্ছি।”
হঠাৎ প্রশ্ন করলো,”আমাকে দেখার পর তোমার যদি পছন্দ না হয়?”
অভিনব লিখলো,”অপছন্দের মানুষ কখনো দুঃখ দেয় না। পছন্দের মানুষেরা দেয়। আমি চিরকাল অপছন্দের মানুষের সাথে থাকতে রাজী।”
“এটা কোনো কথা হলো?”
“এটাই আমি।”
“তুমি এত পাগল কেন?”
অভিনব মজার ছলে বলল,”এখনো দেখায় হলো না বুঝে গেলে আমি পাগল?”
টুসুর কান গরম হলো। সে লিখলো,
“তুমি আমায় খবরদার লজ্জা দেবেনা।”
অভিনব লিখলো,”দেব। ওটা আমার অধিকার।”
“আমি লজ্জায় মরে যাব।”
অভিনব লিখলো,”মরে যাও।”
টুসু আর ঘুমোলো না। কেন যেন ঘুম এল না। কারণ দাদীমা অন্যদিনের মতো আর ছটফট করছেনা। নির্জীব হয়ে গেছেন।
সেই রাত দুটো নাগাদ দাদীমা মারা গেলেন সবাইকে অবাক করে দিয়ে। এভাবে চুপিসারে কেউ চলে যায়?
টুসু পাগলের মতো কাঁদতে লাগলো। কেউ তাকে ধরে রাখতে পারলো না। বাবা তাকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে রাখলেন।
টুসু দাদীমার দিকে হাত বাড়িয়ে বলল,”না না আমাকে এভাবে রেখে তুমি চলে যেতে পারো না।”
কিন্তু দাদীমা চলেই গেল। তারপরের দিন জুমার নামাজের পর দাদীমার জানাজার সময় ঘোষণা করা হলো।
বিবেক ভাই এসেছে কিনা টুসু জানেনা। কারণ সে পুরোটা দিন অজ্ঞান ছিল। জ্ঞান ফিরতেই আবারও কেঁদে উঠে অজ্ঞান। টুসুর সবচেয়ে কাছের মানুষ ছিল তার দাদীমা।
খাটিয়া নিয়ে যাওয়ার আগে টুসুর জ্ঞান ফিরেছিল একটু। সবাই মিলে একফোঁটা পানি তার গলায় ঢাললো। সবাই সান্ত্বনা দিল। টুসু কারো কথা না শুনে একদৌড়ে বেরিয়ে গেল। খাটিয়া কাঁধে নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়া বাবার পা ধরে হাউমাউ করে কেঁদে উঠে বলল,
“কোথায় নিয়ে যাচ্ছ আমার দাদীকে? না আমি যেতে দেব না। দাদী যেওনা। আমার বাড়ি খালি করে তুমি কোথায় যাচ্ছ দাদী? কোথায় চলে যাচ্ছ। ওখানে কিভাবে থাকবে?’
তারপর শক্তপোক্ত একটা হাত টুসুকে টেনে ধরে রাখলো। ধমক দিয়ে বলল,
“এভাবে কাঁদতে হয় না। কাঁদিস না। এভাবে কাঁদা ভালো না। দাদীর কষ্ট হবে। টুসু থাম।”
টুসু বিবেক ভাইয়ের শুকনো চোখ দেখে থমকে গেল। চোখে একফোঁটা জল নেই। একটুও কষ্ট নেই। এত পাষাণ মানুষ! এত কঠিন। এত শক্ত মন।
দাদীর খাটিয়া পর্যন্ত তুলেনি সে বড় নাতি হয়েও। টুসু তার কোলেই অজ্ঞান হয়ে গেল।
চলমান…..