তোমার ছোঁয়ায় বসন্তের গন্ধ পর্ব-২৮ এবং শেষ পর্ব

0
3

#তোমার_ছোঁয়ায়_বসন্তের_গন্ধ
২৮.[অন্তিম পর্ব]
ফেব্রুয়ারী মাস অতিক্রম করে মার্চের আজ পঞ্চম দিন। ষড়ঋতুর সর্বশেষ ঋতু বসন্ত। বসন্তকে ঋতুর রাজা বলা হয়। ফাল্গুন এবং চৈত্র মাস মিলে হয় বসন্ত ঋতু। বসন্ত ঋতুর আগমন ঘটে শীত চলে যাবার পর এবং গ্রীষ্ম আসার আগে। পৃথিবীর অনেক প্রান্তে এই ঋতুতে ফুল ফুটে, গাছে নতুন পাতা গজায়, নতুন গাছের জন্ম হয়। শীতল, উষ্ণ হাওয়া শরীর ও মনকে ফুরফুরে করে তুলে। বেলকনিতে দাঁড়িয়ে বসন্তের উৎপত্তি দেখতে ব্যস্ত রাহা। এই ঋতু তার খুবই প্রিয়। সে তীব্র অপেক্ষায় থাকে এই ঋতুর। এবারের বসন্ত তার জীবনের শ্রেষ্ঠ বসন্ত হিসেবে যুক্ত হলো। পেছন থেকে অতি আদুরে দু হাত তার কোমড় আঁকড়ে ধরেছে। আলতোভাবে তার কাঁধের উপর থুতনি ঠেকিয়ে রায়ান বুকভরে নিঃশ্বাস নিলো। কোমলভাবে শুধালো,
‘তোমার ছোঁয়ায় বসন্তের গন্ধ আজ পরিপূর্ণতা পেল প্রিয়তমা।’
রাহা কিঞ্চিৎ লজ্জাবোধ অনুভব করলো রায়ানে এই সুমিষ্ট কথনে। রায়ানের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ বহু আগেই ঘটেছে। এখন কেবল রাহার অনুভূতি প্রকাশ্যে আসা বাকি। রায়ানের স্পর্শে রাহা ঈষৎ কেঁপে উঠছে। তার স্পর্শ আজই প্রথম ছিল না। আগেও পেয়েছে। রাহার নৈশব্দতায় রায়ান বিরক্ত হয়ে ভারী গলায় বলল,
‘আমাকে ধৈর্যের পরিক্ষায় আর ফেলো না। আমি তোমার উত্তরের জন্য মরিয়া হয়ে আছি। আমার মন – মস্তিষ্ক বিদ্রোহ আরম্ভ করেছে রীতিমতো। প্লিজ, অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে দেও বসন্ত বালিকা।’
‘বসন্ত বালিকা….’ নামটা শুনতেই রাহার বক্ষে শীতল হাওয়া বয়ে যায়। বারংবার আওড়িয়ে যাচ্ছে মনে মনে ‘বসন্ত বালিকা’।
রায়ান তাকে আরেকটু শক্ত ভাবে আঁকড়ে ধরে কানের কাছে মুখ নিয়ে নেশালো কণ্ঠে বলল,
‘বিদ্রোহ কিন্তু বেড়েই চলেছে….।’
বলা শেষ হতেই রাহা উল্টো দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে এনে রায়ানকে শক্তভাবে জড়িয়ে ধরে। রায়ানের কাঁধে মাথা রেখে নম্র গলায় বলল,
‘বিদ্রোহ এখানেই থামিয়ে দিন। আমি হার স্বীকার করছি। আজ এই বসন্তকে সাক্ষী রেখে বলছি আপনাকে ভালোবাসি।’ সম্পূর্ণ বাক্যগুলো বলে রায়ানের শার্ট খামচে ধরে। ভীষণ লজ্জা অনুভব হচ্ছে এখন। রায়ানের ঠোঁটে প্রশান্তির মৃদু মুচকি হাসি। ডান হাতের সাহায্যে রাহার ঘাড় থেকে চুল সরিয়ে চুম্বন করল। রাহা চোখ বুঁজে ফেলে। নিজেকে ফাল্গুন ও বসন্তের ন্যায় মিলেমিশে একাকার করে দিতে চায় রায়ানের মাঝে। এখন আর দ্বিধাবোধ নেই। নেই সংকোচ। তাঁদের ভালোবাসা এখন পরিপূর্ণ বসন্তের ছোঁয়ায়।
__
ঘন অন্ধকারের কালো রাতের আকাশ। আরান এক পলক ফেলে নজর সরিয়ে নিলো জানালা থেকে। হেলার দিলো সিটে। কয়দিন আগে তার হৃদয় এমনই ঘন অন্ধকারে ছেঁয়েগিয়েছিল রাহাকে হারিয়ে। এখন সেই অন্ধকারের আভাস কেঁটেছে। রায়ান ও রাহার দাম্পত্য জীবনে সুখী দেখে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে। এখন জীবন গুছিয়েও নিবে নতুনভাবে।
তবে তার জন্য মনের কোঠায় ছোট্ট একটা স্থান সর্বক্ষণ থাকবে শেষ অব্ধি। যেহেতু প্রথম ভালোবাসা তার। সব ভেবে দীর্ঘশ্বাস ফেলল আরান। সে প্লেনে চড়েছে কয়েক মিনিট আগেই। কাজের সুনাধে লন্ডনের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছে। হঠাৎ ফোনে একটি টেক্সট এলো। সেটি রাফিয়ার ছিল। আরান কেবল মাথা তুলেছিল রাফিয়ার টেক্সট পেয়ে। বার্তাটি পড়ে ফের মাথা ঠেকালো। রাফিয়া রাহার বিষয়টি জেনেও তার ভালোবাসা প্রকাশ করেছে। খুব সুন্দর ভাবে লিখেছে।
‘আমি রাহা আপুর স্থান নিতে পারব না। নিতে চাইছি না। তবুও আপনার মনের এক কোণায় আমার স্থান হোক আমি তা চাই। জোর করে না। আপনার মন মর্জিতে। আপনার উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম। ভালোবাসি!’
আরান রাফিয়ার প্রতি অনুভূতি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দে রয়েছে। সে এই মুহূর্তে রাফিয়াকে তার জীবনে জড়াতে চাইছে না। রাহার মতো করে তাকে কবু ভালোবাসতে পারবে কি-না আদৌও জানা নেই। তবে সে রাফিয়াকে তার জীবনে জড়াতে চায়। নতুনভাবে রাফিয়ার জন্য অনুভূতি তৈরী করতে চায়। রাফিয়া হবে তার আগামী জীবনের পথচলার সঙ্গী।
.
দু’হাতে মেহেদী পড়ে সোফায় বসে টেবিল ফ্যান চালিয়ে শুকাতে বসেছে ফারিন। ছোট ননদ এক প্রকার জোরপূর্বক ভাবে মেহেদী পড়িয়ে দিয়েছে। অবশ্য সন্ধ্যার পর থেকে অনেক কিছু খাইয়েও দিয়েছে এজন্য। আনমনে এক সপ্তাহ আগের ঘটনা মনে করছিল। ক্ষণে ক্ষণেই সেদিনের ঘটনা মনে উঠে। এতে সে এক বুক স্নিগ্ধ অনুভূতি অনুভব করে মেশকাতের প্রতি।
অগাধ ভালোবাসা এসে ভর করে মনের কোটরে।
বিয়ে বাড়ি থেকে ফিরে সবাইকে হল রুমে ডেকে এনেছিল। সকলের সামনে পাঁচ বছর আগের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছে। এবং এ-ও বলেছে ফারিন তাকে ডিভোর্স দিবে। প্রথমে সবাই রেগে মেশকাতকে শতভাগ কঁড়া কথা শুনতে হয়। সবচেয়ে বেশী কথা শুনতে হয় বাবার নিকট। এতে তার কোনো প্রকার মনঃক্ষুণ্ন হয় না। ফারিনকে সমর্থন করে সকলে। তবে ফারিনকে ডিভোর্স না দেবার জন্য বোঝাতে আরম্ভ করে বাড়ির গিন্নিরা। ফারিন কেবল অবাক হয়। মেশকাত কেবল ডিভোর্সের বিষয়টি বললেও তাকে বিয়ে করার পরিকল্পিত প্লান উল্লেখ করেনি। তার এই ভালোর রূপ আদৌও কি সত্যি নাকি পুরোটাই মিথ্যের আশ্রয় ছিল? ফারিন কেবলই দ্বিধাদ্বন্দে ভুগছে। বাবার নিকট কটুবাক্য মাথা পেতে শুনেছে মেশকাত। পরক্ষণেই সকলের সামনে ফারিনের নিকট ক্ষমা প্রাথনা করে। নিজেকে সকলের সামনে ছোট করে তার কাছে ক্ষমা চেয়েছে দেখে ফারিনের দ্বিধাবোধ কেঁটে যায়৷ এ যেন নতুন মেশকাতের আবির্ভাব ঘটেছে। কেবল বিস্মিত নয়নে দেখেছে। সেই মুহূর্তে ক্ষমা সূচক দৃষ্টিতে তাকিয়ে মন থেকেই ক্ষমা করে দিয়েছে তাকে। রাগ-ক্ষোভ কিচ্ছুটি নেই মনের কোঠায়। সমুদ্রের বিকট ঢেউয়ের ন্যায় সব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। এরপর থেকেই মেশকাত তার সঙ্গে কথা বলা কমিয়ে দিয়েছে। কাজের বাহিরে কোনো প্রকার আগ বাড়িয়ে কথা বলার আগ্রহ দেখায় না। তার পানে তাকায় যেন সময় মেপে। কেবল মৃদু মসৃন নজরে। ফারিনের ভীষণ খারাপ লাগে। তীব্র কষ্ট অনুভব হয় হৃদয়ে। তবে তা মেশকাতের সামনে প্রকাশ করতে পারে না। সবকিছু ভেবে দু’চোখ আলতোভাবে বন্ধ করে নেয়। পরপরই মেলে নজর ফেলে হাতের উপর। খুব সুন্দর ভাবে ছোট্ট করে মেশকাতের নাম লিখেছে হাতের তাঁরায়। আদৌও কী মেশকাত দেখবে? নাকি বরাবরই তাকে উপেক্ষা করবে?
সরু নিশ্বাস ফেলল। হঠাৎ পায়ের আওয়াজ ভেসে এলো। দরজায় করাঘাত করে ভেতরে প্রবেশ করেছে মেশকাত। এই কাজ সে ঐদিনের পর থেকেই করছে। ফানিরের হৃদয় জুড়ে ফের কালো মেঘের ভেলা ভেসে উঠে। তার দিকে খেয়াল না করে শার্টের বোতাম খুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ফারিন আবারও বড়ো নিশ্বাস নিলো। আজ এর একটা হেস্তনেস্ত করবে ভেবেই উঠে এগিয়ে এলো মেশকাতের পেছনে। দৃঢ় গলায় শুধালো,
‘আর কতদিন?’
মেশকাত বিস্ময়কর দৃষ্টিতে তাকাল। এক ভ্রু উঁচু করে জানতে চাইলো,
‘কী?’
ফারিন হাত দু’টো উঁচু করে তুলে ধরে। বলে,
‘দেখুন।’
সে সেকেন্ড কয়েক চুপ থেকে তাকাল। দেখল। তারপর শান্ত ভাবে বলল,
‘হুম, সুন্দর।’ এরপর আগের ন্যায় শার্ট খুলতে ব্যস্ততা দেখালো।
ফারিনের হৃদয়ে মেঘের ছায়া আরো এসে জড়ো হয়। ভীষণ পীড়িত হয় সে। একটু জোর গলায় বলল,
‘শুধুই সুন্দর? আপনার নাম….’
‘দেখেছি।’ তাকে পুরোটা বলতে না দিয়ে নিজেই বলল।
ফারিন দৃষ্টি নিচু করে আহত হয়ে হাত নামিয়ে নিলো। মেশকাত আয়নার মাধ্যমে এক পলক ফেলে নজর সরিয়ে নিলো। পাশ কাঁটিয়ে চলে যাবার সময় ফারিন চিল্লিয়ে বলল,
‘আমি মানতে পারছি না আর..’
মেশকাত কপালে ভাজ ফেলে ফিরে তাকায়। গম্ভীর গলায় শুধালো,
‘কী?’
‘আপনার এই নীরবতা। আমাকে প্রতিনিয়ত উপেক্ষা করে চলা। কথা না বলা। ঠিকমতো তাকান পর্যন্ত না আমার পানে। আমি কি এতোই অবহেলিত আপনার কাছে?’
‘নাহ!’ মেশকাত খুব শান্তভাবে ছোট্ট করে উত্তর দেয়। যার ফলে ফারিন বিরক্ত হয়ে রাগে খিটমিট করছে। বলে,
‘আমি পাগল হয়ে গিয়েছি আপনার আচরণে।’
‘তুমি কী পাবনা যেতে চাইছো? কল দিবো পাবনার হাসপাতালে?:
রাগে ফুঁসছে ফারিন। চোখমুখে তীব্র রাগের আভাস স্পষ্ট দেখছে মেশকাত। চেঁচিয়ে উঠলো,
‘চুপ করুন। যখন আপনি আমাদের সম্পর্ক ঠিক করতে চেয়েছেন। আমার আপত্তি ছিল। এখন আমি ঠিক রাখতে চাইছি অন্য পাঁচটা সম্পর্কের মতো আপনি মুখ ঘুরিয়ে রেখেছেন। কী করলে আপনি স্বাভাবিক হবেন?’
‘কেন তুমি পীড়িত?’
‘হ্যাঁ।’
‘সত্যি?’
‘প্রমাণ আমার হাতে।’ মেহেদী পরানো হাত উঁচু করে ধরে গড়গড় করে বলল।
মেশকাত কাঠিন্য স্বরে বলল,
‘কী দরকার? আমায় ভালোবাসো না তুমি।’
‘হ্যাঁ আমি ভালোবাসতে শুরু করেছি।’ বলেই রাগে তিরতির করে কাঁপছে। মুখশ্রী লালচে দেখাচ্ছে। মেশকাত তার এরূপ মুখশ্রী দেখে উল্টোদিকে ফিরে হেসে দেয়। এগিয়ে এসে এক হাত ফারিনের মাথার পেছনে ও অন্য হাত দ্বারা পিঠ ঠেকিয়ে বুকে টেনে নেয়।
হাস্যমুখে বলে,
‘এটাই তো শুনতে চেয়েছি আমি। থ্যাংকস!’
ফারিন রাগ ফেলে মেহেদী পরানো হাত দিকে শক্তভাবে জড়িয়ে ধরে বুকে মাথা ঠেকায়। আজ প্রিয় মানুষটির নাম হাতের লেখাটা স্বার্থক হলো। চোখ টলমল তার। অবশেষে কঠিনতম মেয়েটা ভালোবাসতে পেরেছে মেশকাতকে।
কিছু কিছু মানুষ যাকে তীব্রভাবে ঘৃণা করে। এক সময় তাঁকেই ভালোবেসে ফেলে। হোক সেটা বন্ধুত্বপূর্ণ কিংবা ভালোবাসার ক্ষেত্রে।
মেশকাত ফারিনকে সেভাবে আঁকড়ে রেখে মুচকি হেসে বলল,
‘তোমার হাতের ছবি আগেই আমাকে দিয়েছে তোমার একমাত্র ননদ।’
ফারিন চোখ তুলে বিস্মিত চোখে তাকায়। মেহেদী সম্পূর্ণ করার পর ছবি তুলেছিল। তবে ভাবেনি বোন তার ভাইকে আগেভাগে দিবে। মেশকাত ঠোঁটে দুষ্টু হাসি ফুটিয়ে তুলে বলল,
‘আজ তাহলে বাসর কনফার্ম?’
‘হুম।’ মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ সূচক জবাব দিয়েই লজ্জায় আরো বুকের মাঝে মুখ লুকিয়ে রাখল সে। মেশকাত শরীর দুলিয়ে হেসে ফেলে এবার। এ হাসি পূর্ণতার, সুখের। যা আজ ধরা দিয়েছে।
____
খশখশ কলম দ্বারা আওয়াজ তুলে মনোযোগ দিয়ে নিজের জীবনের ঘটনাগুলো ডায়েরীতে লিখছিল রুহি। সেলিমের সঙ্গে অর্ধ জীবনের সম্পূর্ণটা লিখে ডায়েরী বন্ধ করে ফেলে। শেষটা লিখতে গিয়ে চোখ ভারী ভারী লাগে জলের কারণে। চেয়ারে মাথা ঠেকিয়ে পিটপিট করে পলক ফেলে পানিগুলো শুকিয়ে ফেলতে থাকে। মুহূর্তে উবে যায় জল। দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজেকে ধাতস্থ করে। ভবিষ্যতে এমন কিছু লিখা ছিল জানলে। কখনোই বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হতো না। সবই ভাগ্য! সেদিনের পর থেকে বহুবার সেলিম তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল। ফিরে পেতে চাইছিল তাকে। কিন্তু সে ফিরে যায়নি। নিজেকে সম্পূর্ণভাবে সরিয়ে নিয়েছে সেলিমের জীবন থেকে। এক পর্যায় সেলিমও হার মেনে নিয়েছে। মুক্তি দিয়েছে তার প্রিয়তমা স্ত্রীকে। তবে সে শেষ বারের মতো বলেছে দরজা তার জন্য চিরকাল খোলা থাকবে। সেলিম চলে গিয়েছে থাইল্যান্ড। সেই বিষাক্ত ঘৃণিত হৃদয়ের দরজায় কক্ষণো পা রাখবে না রুহি। আজীবনের জন্য তালাবদ্ধ থাকবে। ভাবনাগুলো পাশে ফেলে ফেসবুকে প্রবেশ করে। প্রথম পেইজেই একটি নিউজ টেলিকাস্ট হচ্ছে। একটি মেয়ে পুলিশের গাড়ির সঙ্গে দূর্ঘটনায় আহত হয়েছিল কাল। জ্ঞান ফিরার পর জানা গেছে মেয়েটি মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছে। চিকিৎসার জন্য তাকে পাবনার মেন্টাল হসপিটালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মেয়েটাকে দেখে রুহির চিনতে অসুবিধা হলো না। খুব শান্তভাবে দেখছিল তাকে। তার মধ্যে এমন কী স্পেশাল ছিল যার ফলে সেলিম তাকে জীবনের অংশ হিসেবে বেছে নিয়েছিল? হায় কপাল! দিনশেষে সেই স্পেশাল মেয়েটি তাকে ঠকিয়েছে। খুবই ভয়ংকর ভাবে!
আর ভাবতে ইচ্ছে হলো না। মাথায় যন্ত্রণা হচ্ছে। ফোন টেবিলে ছুঁড়ে ঔষুধের পাতা থেকে দুটি ঘুমের পিল সেবন করে। চোখ বন্ধ করে বিছানায় শরীর এলিয়ে দিতেই নিদ্রায় চোখ বন্ধ হয়ে আসে। তলিয়ে যায় এক গভীর নিদ্রার জগতে।

সমাপ্ত।