#তোমার_ জন্য
Writer: জুঁই
পর্ব: পনেরো
.
.
ইচ্ছে: বাবা আমার কথা…[ ইচ্ছেকে ধমক দিয়ে থামিয়ে দিয়ে ]
ইচ্ছের বাবা: চুপ একদম চুপ..আর একটা মিথ্যা কথাও শুনতে চাই না..অনেক বড় হয়ে গেছো নিজের বাবা মায়ের সাথে মিথ্যা কথা বলতে দুবার ভাবো না…! তুমি ওই ছেলেটার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলি কেনো…?
ইচ্ছে:বাবা আমি তো….
ইচ্ছের বাবা: তুমি তো শালীনিদের সাথে বেড়াতে গিয়েছিলে এটাই বলবে তাই তো…কিন্তু তুমি বেড়িয়ে যাবার ৩০ মিনিট পর ওরা আসছিল তোমাকে নিয়ে বেড়াতে যাবে বলে…এখনো কি তোমার কিছু বলার আছে…?
ইচ্ছে মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে…!
ইচ্ছের মা এগিয়ে এসে…
কেনো এমনটা করলি..? তুই কি ভুলে যাচ্ছিস তুই অন্য কারো আমানত…!
ইচ্ছের বাবা:দেখো ইচ্ছে তুমি ভুলে কেনো যাচ্ছো তোমার বিয়ে অন্য কারো সাথে ঠিক হয়ে আছে..এখন যদি তুমি বলো ওই ছেলেটাকে ভালোবাসো তাহলে আমার কিছু করার নাই..এটা যদি আগে হতো আমি হয়তো তোমার ইচ্ছেকেই প্রাধান্য দিতাম…আশা করছি এরকম কিছু বলবে না..আমি দিহানের বাবার সাথে ওয়াদা বদ্ধ….আমি আমার কথায় অনড় থাকবো…!
ইচ্ছে: কিন্তু বাব..
ইচ্ছের বাবা: তোমার মুখ থেকে একটা কথাও শুনতে চাই না..তুমি ঘরে যাও…আর আজকেই আমি দিহানের বাবার সাথে কথা বলবো…যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব বিয়ের ব্যবস্থা করবো…!
ইচ্ছে রুমে এসে কাদতে লাগলো..এই প্রথম ইচ্ছের গায়ে হাত তুললো তার বাবা…!
কিছুক্ষণ পর…
ইচ্ছে আশিসকে ফোন দিতেই…
আশিস: কি ব্যপার আমার বউ আমায় মিস করছিল বুঝি…?
ইচ্ছের কোনো সারা শব্দ নেই.. শুধু ফোপানোর শব্দ বুঝা যাচ্ছে ও কাদছে…
আশিস ব্যস্ত হয়ে জিঙ্গেস করলো…
কি হয়েছে ইচ্ছে…? তুমি কাদছো কেনো…?
ইচ্ছে: বাববা..বাববা আআমার…
আশিস: Don’t cry আমার হবু বাচ্চার মা…আগে শান্ত হও..কি হয়েছে বলো আমায়….!
ইচ্ছে সব বললো আশিসকে…কিন্তু আশিসের কোনো পাত্তাই নাই…!
আশিস: তাতে এতো কাদার কি আছে..? তুমি তো তোমার বাবার পছন্দ করা ছেলেকেই বিয়ে করতে চেয়েছিলে..তো করে নাও বিয়ে…!
ইচ্ছে: আপনি মজা করছেন..? এখন মজা করার সময়..!
আশিস: মজা করার সময় কেনো হবে… সেলিব্রেট করার সময়.. সেলিব্রেট করো..!
ইচ্ছে: এখন কিন্তু ধৈর্যের বাদ ভেঙে যাচ্ছে..! সব কিছু ফাজলামি মনে হয়..? বিয়েটা কি ছেলে খেলা মনে হয় আপনার..?
আশিস: তুমি তো আমায় ভালোবাসো না..? তাহলে আমি কি আর করবো…আমার শক্তিই তো তুমি..সেই তুমিই তো আমায় স্বীকার করতে চাও না…!
ইচ্ছে: আমি কি একবারো বলছি আমি আপনাকে ভালোবাসি না..?
আশিস:তুমি কি একবারো বলেছো আমায় ভালোবাসো…?
ইচ্ছে: সব বলতে হয়না..বুঝে নিতে হয়…এসব কথা রাখেন এখন..কিছু করেন প্লিজ…বিয়ে তো একবারি হয় আর সেটা আমার হয়ে গেছে..!
আশিস: চিন্তা করেনা বউ..আমি নানুমনিকে পাঠিয়ে দিবো তোমার বাবার সাথে কথা বলার জন্য…তাতে কি আদৌ কাজ হবে…?
.
.
তিনদিন পর…
দিহানের বাবা মা আর দিহান এসেছে ইচ্ছেদের বাড়িতে… বিয়ের দিন ঠিক করা হয়েছে পাচঁ দিন পর.. এভাবে বিয়ের দিন ঠিক করাতে তারা বেশ অবাক..যেখানে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল ইচ্ছের অনার্স কমপ্লিট করার পর…!
তাদের কথা বলার মাঝে কেউ একজন বলে উঠলো…
আসতে পারি….?
সবাই দরজার দিকে তাকালো..একজন বয়স্ক মহিলা দাঁড়িয়ে আছে…!
ইচ্ছের মা এগিয়ে গিয়ে… হ্যাঁ আসুন..আপনাকে তো ঠিক চিনলাম না..
নানুমনি: আমি আশিসের নানুমনি… আমি আশিস আর ইচ্ছের….
নানুমনির কথা শেষ হবার আগেই..
ইচ্ছের বাবা: আপনি হয়তো ভুল সময় ভুল প্রস্তাব নিয়ে আসছেন..কেনো না আমার মেয়ের বিয়ে আজ থেকে পাচঁ দিন বাদে….
.
.
.
___
.
.
.
নানুমনি বাড়ি ফিরতেই…
অশিস: নানুমনি তোমাকে এমন লাগছে কেনো…? কি হয়েছে…?
নানুমনি: ইচ্ছের বিয়ে পাচঁ দিন বাদে…!
.
.
__
.
.
এভাবে হুট করে বিয়ের ব্যবস্থা করায় দিহানের মনে কিছুটা খটকা লাগলো…তার উপর আশিসের নানুমনি আর ইচ্ছের বাবার কথায় কিছুটা আচ করছে বোধহয়…
দিহান আর ইচ্ছের বিয়েটা ঠিক হয় পারিবারিক ভাবে…দিহান বিয়ের ব্যপারটা সিরিয়াস ভাবে নিলেও ইচ্ছের কোনো হেলদোল ছিল না… না ছিল ভালো লাগা না ছিল খারাপ লাগা…!
পরেরদিন…!
দিহান: ইচ্ছে সত্যি করে একটা কথা বলবে…?
ইচ্ছে: হুমম…
দিহান: তুমি কি এ বিয়ে নিয়ে খুশি না..না মানে তুমি কি অন্য কাউকে পছন্দ করো…?
ইচ্ছে কোনো উত্তর না দিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে..ইচ্ছেকে চুপ দেখে..
দিহান: তোমার নিরবতাই আমি আমার উত্তর পেয়ে গেছি… হুট করে বিয়ের তারিখ ঠিক করা..আর তুমি যার অফিসে চাকরি করতে সে তার নানুমনিকে পাঠিয়ে ছিল মানে আশিস….তখনি কিছুটা আন্দাজ করতে পেরেছিলাম..এখন তো সিওর..!
ইচ্ছে: আমায় ক্ষমা করে দিন প্লিজ.. কি থেকে যে কি হয়ে গেছে আমি বুজতে পারিনি…আসলে…
ইচ্ছেকে থামিয়ে দিয়ে…
দিহান: আমাকে explain করতে হবেনা ইচ্ছে..আসলে আমাদের মনের উপর কারো জোর খাটেনা…. আমাকে যে ভরসা করে সবটা বলেছো তার জন্য ধন্যবাদ… বাকিটা আমি দেখছি কি করা যায়…!
ইচ্ছে: কিন্তু বাবা তো…
দিহান: আমায় একটু ভরসা করো…আর বিয়ের জন্য রেডি হও…!
.
.
.
চলবে……