তোমার নামে লেখা চিঠি পর্ব-১৩

0
4

#তোমার_নামে_লেখা_চিঠি
#কলমে_নওরিন_মুনতাহা_হিয়া
#পর্ব_১৩

শাফায়াত নামটা ইনায়ার অনেক পরিচিত মনে হয় কোথাও একটা এই নাম শুনেছে সে কিন্তু মনে করতে পারছে না। ইনায়া ইশারা দেয় আসিফকে ম্যানেজারকে ছেড়ে দিতে কারণ ম্যানেজার এর থেকে বেশি কিছু যানে না। তবে ইনায়ার লোক সবসময় ম্যানেজারের উপর নজর রাখবে। ইনায়ার ভাবনার মাঝে আসিফ ওর সামনে একটা কাগজ নিয়ে আসে যেখানে কোম্পানির ডিটেইলস দেওয়া ছিলো।

ইনায়া ভালো করে সব দেখতে থাকে কাগজের মধ্যে একটা ছবি বের হয়ে আসে। ছবির মধ্যে থাকা বক্তির বয়স খুব বেশি না তিরিশ বছর হবে তবে ছবির উপর দাগ দেখে মনে হচ্ছে অনেক পুরানো ছবি। ইনায়া কৌতূহল নিয়ে জিজ্ঞেস করে –

“- আসিফ এই ছবির লোকের নাম কি? আর কোম্পানির কাগজের মধ্যে ওনার ছবি কি করছে?

“- ম্যাম ওনি হলেন শাফায়াত। ম্যানেজার যার কথা বললেন এখন বর্তমানে এসএস কোম্পানির মালিক।

আসিফের কথা শুনে ইনায়া আবার ভালো করে শাফায়াতের ছবি দেখতে থাকে। শাফায়াতকে দেখে ইনায়ার মনে হচ্ছে সে ছোটবেলা কোথাও এই লোককে দেখেছে। ইনায়া আসিফের সাথে অনেক সময় ধরে কথা বলে এসএস কোম্পানি আদালে নোটিশে বন্ধ করে হয়ে গেছে। ইনায়া নিজেকে নিদোষ প্রমাণ করতে হবে আর এসএস কোম্পানি বিরুদ্ধে সকল তথ্য প্রমাণ মিথ্যা প্রমাণিত করতে হবে।

ইনায়া তার কাজ শেষ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় এরপর গাড়ি ড্রাইভ করে বাড়িতে ফিরে আসে। ইনায়া সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে যায় এরপর নিজের রুমে গিয়ে ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে আসে। ইনায়া সম্পূর্ণ রুমে ভালো করে খেয়াল করে দেখে অরণ্য কোথাও নাই। ইনায়া যাওয়ার আগে অরণ্য রুম থেকে বোর হয়ে যায় এরপর কি আর রুমে ফিরে আসে নাই।

ইনায়া রুম থেকে বের হয়ে যায় কিন্তু অরণ্য কোথায় চলে গেছে তা সে যানে না। ইনায়া প্রায় প্রতিটা রুমে ভালো করে দেখতে থাকে কিন্তু কোথাও অরণ্য নাই। এই বাড়িতে মাএ কয়েকদিন আগে সে এসেছে তাই বাড়িতে থাকা রুমের বিষয়ে তার কোনো ধারণা নাই। ইনায়া দেখে একজন কাজের লোক বাড়ির মেঝে পরিস্কার করছে ইনায়া তাকে জিজ্ঞেস করে –

“- আচ্ছা আপনি কি অরণ্যকে দেখেছেন? ওনি কি বাহিরে চলে গেছে?

“- না ম্যাম অরণ্য স্যার তার স্টাডি রুমে গেছে। বাড়ির সবার শেষের রুমে অরণ্য স্যারকে যেতে দেখেছি “।

“- ওকে “।

ইনায়া কথাটা শুনে কাজের লোককে ধন্যবাদ বলে জানিয়ে চলে যায় অরণ্যর রুমের দিকে। অরণ্য সোফায় বসে আছে তার সামনে ল্যাপটপ কিন্তু কাজের প্রতি তার কোনো মনোযোগ নাই। ইনায়া অরণ্যর রুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে নক করে এরপর বলে –

“- অরণ্য আপনি কি রুমের ভিতরে? আপনার সাথে আমার কিছু জরুরি কথা বলার আছে?

ইনায়ার কণ্ঠ শুনে অরণ্য তার ভাবনার জগৎ থেকে বের হয়ে আসে। অরণ্য দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে ইনায়া দাঁড়িয়ে আছে অরণ্য বলে –

“- হুম ভিতরে আসেন ইনায়া “।

অরণ্যর সম্মতি পেয়ে ইনায়া রুমে চলে আসে এরপর সে এসে অরণ্যর পাশে বসে। অরণ্য ইনায়ার সাথে কোনো কথা বলে না তবে ইনায়া বলে –

“- কি হয়েছে আপনার মুখে হাসি নাই কেনো? এমন দেবদাস হয়ে বসে আছেন কেনো?আপনার কি মন খারাপ?

“- আমার যদি মন খারাপ হয় তাহলে আপনার কি ইনায়া? আমি আপনার শএু তাই শএুর মন খারাপ হলে খুশি হওয়ার কথা আপনার ইনায়া। রুমে যান বাড়ির থেকে এসেছেন আপনি রেস্ট নেন “।

অরণ্যর মুখে বাহিরে যাওয়ার কথা শুনে ইনায়া যথেষ্ট অবাক হয় কারণ অরণ্য রুম থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর ইনায়া বাহিরে গিয়ে ছিলো। ইনায়া বলে –

“- আমি যে বাহিরে গিয়েছি সেটা আপনি কি করে যানতে পারলেন? আর আপনি আমার শএু সেটা আমি জানি আপনার জন্য আমার মনে কেনো কষ্ট হয় না।

“- ওহ রিয়েলি মিসেস ইনায়া চৌধুরী তাহলে এখানে কেনো এসেছেন? মিথ্যা কথা বলে নিজের মনকে সান্তনা দেওয়ার ভুল চেষ্টা করে কি খুব দরকার আছে মিসেস ইনায়া “.

অরণ্যর কথা শুনে ইনায়া ভ্রু কুঁচকে ইনায়ার দিকে তাকায় এই রুমে আসা তার ভুল হয়েছে। ইনায়া অরণ্যকে চলে যাচ্ছি কথাটা বলে সোফা থেকে উঠে যেতে চাই তখন অরণ্য ওর হাত ধরে ফেলে। ইনায়াকে আবার সোফার কাছে এনে বসিয়ে দেয় অরণ্য বলে –

“- এতো তাড়াতাড়ি রাগ করলে কি হয় মিসেস ইনায়া। আর এই অরণ্য অনেক খারাপ মানুষ তার সাথে কেউ থাকতে চাই না। কিন্তু অরণ্য কি এতোই খারাপ যে সবাই ওকে ঘৃণা করে?

অরণ্যর কথা শুনে ইনায়ার খুব মায়া হয় তার মুখের দিকে তাকিয়ে অরণ্যর মুখ লাল হয়ে গেছে। অরণ্যর চোখ লাল হয়ে গেছে ওর চোখে পানি জমে গেছে ইনায়া এর কারণ বুঝতে পারো না৷ ইনায়া বলে –

“- কি হয়েছে আপনার অরণ্য? এমন করে কথা কেনো বলছেন? আর কে আপনাকে ঘৃণা করে? আপনি একটু রাগী কিন্তু খারাপ না অরণ্য।

ইনায়া কথাটা বলে অরণ্যর হাত ধরে এরপর অরণ্যর চোখ দিয়ে বেয়ে আসা জল মুছে দেয়। অরণ্য বলে –

“- আমার মা আমাকে ঘৃণা করে ইনায়া। ওনি ছোটবেলা থেকে আমার সাথে ভালো করে কথা বলেন না। আমার সাথে রাগ করে রুম থেকে বের হন না আমার বোন ও বিদেশে থাকে অনেক সময়। আমি কি এতো খারাপ ইনায়া।

ইনায়া বলে –

“- অরণ্য আপনি অনেক ভালো মানুষ। আপনার মা আপনাকে ঘৃণা করে না ওনি হয়তো আপনার উপর রাগ করে আছেন। কোনো মা তার সন্তানকে ঘৃণা করতে পারে না আমি বলছি আপনি অনেক ভালো মানুষ। আমার অরণ্য কখনো খারাপ হতে পারে না “।

ইনায়া কথার শুনে অরণ্য ওকে জড়িয়ে ধরে ইনায়ার ও অরণ্যকে জড়িয়ে ধরে। ইনাযা এতোদিনে বুঝতে পারে অরণ্য সকলের সামনে অনেক রাগী ভাব নিয়ে থাকলে ও বাড়িতে সে খুব সাধারণ জীবন যাপন করে হাসি খুশি থাকে।

আজকে আমি অনেক অসুস্থ সারাদিন মাথা ব্যাথার কারণে উঠতে পারি নাই। যার জন্য পর্ব ছোট হয়েছে। মাফ করবেন সত্যি আমি অনেক অসুস্থ।

#চলবে