তোমার নিমন্ত্রণে পর্ব-০১

0
195

#তোমার_নিমন্ত্রণে (পর্ব ১)
নুসরাত জাহান লিজা

“কিছুদিন আগে আমার সাথে আপনার বিয়ের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল আপনার বাসায়। আপনি আমাকে রিজেক্ট করেছিলেন কেন জানতে পারি?”

দীপ্ত’র কথায় শ্রেয়সীর গা জ্বলে গেল। এই চূড়ান্ত অভব্য লোকটা এখানে কী করছে সেটা ওর বোধগম্য হলো না। শ্রেয়সী এই রেস্টুরেন্টে এসেছে ছেলে দেখতেই৷ কিন্তু ছেলের সাথে লেজ হিসেবে যে ওরই এক মাস আগে রিজেক্ট করে দেয়া দাম্ভিক, মাকাল ফলটাও আসবে সেটা জানলে কখনোই রাজি হতো না। সে খানিকটা রূঢ় গলায় বলল,

“আপনি জানেন না কারণটা?”

“কীভাবে জানব? আমার মধ্যে রিজেক্ট করার মতো কী আছে?”

“কিছু নেই?”

“না, আমি দেখতে হ্যান্ডসাম, ভালো জব, স্যালারিও হ্যান্ডসাম। সাথে ব্রিলিয়ান্ট। তাহলে সমস্যাটা কোথায়?” আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর স্বরে বলল দীপ্ত।

শ্রেয়সী এবার আর রাগ সামলাতে পারল না। তবে রেস্টুরেন্টে এত লোকজনের মধ্যে গলা চড়াল না, পরিবেশ সম্পর্কে সে অবগত। তবুও দাঁতে দাঁত চেপে বলল,

“বিভিন্ন প্রোডাক্টসের এডভারটাইজমেন্ট দেখেছি। জ্বলজ্যান্ত মানুষের তাও আবার নিজের ব্র‍্যান্ডিং সেলেব্রিটি ছাড়া আর কারোর কোনোদিন দেখিনি। রিজেকশনের জন্য এটা কি যথেষ্ট কারণ নয়?”

দীপ্ত হাল ছাড়ার পাত্র নয়, সে উৎসাহ নিয়ে বলল, “আমার মধ্যে সেই কোয়ালিটি আছে বলেই করি৷ তাতে সমস্যাটা কোথায়? নিজের গুণ থাকলে সেটা প্রকাশ করাটা কি দোষের? কত নম্বর ধারার অফেন্স এটা?”

“এটা আপনার বিহ্যাভিয়ারাল ডিসএবিলিটি। সব ধরনের অফেন্স তো আর আইনের ধারায় লেখা থাকে না, তাই না?” হেসে কথাটা বলল শ্রেয়সী।

“আপনি যে আমাকে ইনসাল্ট করছেন সেটা আপনার মতো একজন সুশীল আচরণ বিশিষ্ট মেয়ের চোখে পড়ছে না?”

“আপনার বায়োডাটায় দেখেছিলাম আপনি নাকি সায়েন্সের স্টুডেন্ট ছিলেন৷ নিউটনের তৃতীয় সূত্র জানেন তো?”

দীপ্তর বদরাগী স্বভাব। অল্পে মাথা গরম হয়ে যায়। আর আজ তো রীতিমতো অগ্নিগোলক বর্ষিত হচ্ছে৷ সে কথার খেই হারিয়ে বলল, “আপনার সাথে কথা বলাটাই আমার ভুল হয়েছে। আমার জন্য কত মেয়ে লাইন দিয়ে আছে আপনি জানেন?”

পাশ থেকে সৌম্য বুঝতে চেষ্টা করেছে আসলে হচ্ছেটা কী! সে অনেকক্ষণ থেকেই এটা সেটা জিজ্ঞেস করছিল, কিন্তু বেচারা সুযোগই পাচ্ছে না। এখানে ক্যাটফাইট চলছে, সে দুজনের মাঝে বসে কথার বর্ষণে চিড়েচ্যাপ্টা হয়ে যাচ্ছে।

শ্রেয়সী দীপ্তর দিকে তাকিয়ে বলল, “তো আমাকে এসব কেন জিজ্ঞেস করছেন? আপনার কোনোকিছুতেই আমার কোনো ইন্টারেস্ট নেই৷ আপনি আপনার ইগোইস্টিক ন্যাচার নিয়ে যারা লাইন দিয়েছে তাদের গলায় ঝুলে পড়ুন। তাদের নিয়ে গদগদ করুন।”

এবার দীপ্তর দৃষ্টি বিস্ফারিত হলো। সে বিস্মিত গলায় বলল, “মানে কী? বলতে চাইছেন আপনার প্রতি আমার ইন্টারেস্ট আছে? এই জন্যই মেয়েদের সাথে কথা বলতে যাই না। এদের সাথে কথা বলতে গেলেই ভাবে যেন প্রেম নিবেদন করার জন্য মরে যাচ্ছে। এদের মাথায় ঘিলু বলতে কিছু থাকে না।”

শ্রেয়সী বুঝতে পারছে ওর মেজাজের পারদ একশো দশ ডিগ্রি অতিক্রম করে গেছে। যে-কোনো মুহূর্তে বি”স্ফো”র”ণ ঘটবে। তবুও সে মেজাজ হারাল না। মাথা ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করতে করতে বলল,

“আপনার মাথায় ঘিলুর উর্বরতা প্রয়োজনের চাইতে বেশি হয়ে গেছে। এক কাজ করুন, আপনার হাই প্রোফাইল জবের পাশাপাশি ঘিলুর বিজনেস শুরু করুন। এখন তো অনলাইনে ব্যবসার রমরমে বাজার। তবে ঘিলু সেল করার মতো ইনোভেটিভ আইডিয়া কেউ নিয়ে আসেনি৷ আপনার অতিরিক্ত ঘিলু বিক্রি করে দিলে আপনার নিজেরও মস্তিষ্কের ব্যালেন্স আসবে আবার যাদের ঘিলুর অভাব, তারাও কিনে উপকৃত হবে। হ্যান্ডসাম এ্যামাইন্টে সেল হবে। তবুও আমি ফ্রি তে ভালো উপদেশ দিলাম৷ আসি, গুড বাই।” একটানা হড়বড়িয়ে কথাগুলো বলে শ্রেয়সী উঠে দাঁড়ালো। মাঝে থামলে বা বলার গতি কমে গেলে কথাগুলো শোনাতে পারত না লোকটাকে।

দীপ্তর মুখ এখন থমথমে হয়ে আছে, ততক্ষণে খাবার দিয়ে গেছে। সে বলল, “আমি ফ্রি সার্ভিস নেই না। খাবার না খেয়ে যাচ্ছেন কেন? উপদেশের জন্য আজ আমার তরফ থেকে ট্রিট ধরে নিন না। মেয়েরা অবশ্য এমনিতেও কখনো রেস্টুরেন্টের বিল দেয় না।”

শ্রেয়সী হাত তুলে ওয়েটারকে ডেকে বিল দিয়ে যেতে বলল। রাগে ওর মাথা ফেটে যাবার উপক্রম। অপমানটা হজম করতে পারছে না কিছুতেই। সে আবার বসল, ইচ্ছে করছে সামনের কাঁটাচামচ তুলে নিয়ে ফালতু লোকটার চোখে গেঁথে দিতে। কিছুক্ষণের মধ্যে শ্রেয়সী বিল পরিশোধ করে উঠে যাবার আগে দীপ্তর চোখে চোখ রেখে বলল,

“উপদেশ যেমন ফ্রি তে দিয়েছি, বিলটাও দিয়ে গেলাম। নিজেকে নিজে চালানোর সামর্থ্য আমার আছে। অন্যের উপরে নির্ভর করতে হয় না। বেশি করে খান, আমার খাবারটাও আপনার জন্য রইল। একটু বেশি করে খান, যদি সুবুদ্ধি হয়।”

বের হবার আগে শুনল সৌম্য বলছে, “শ্রেয়সী, আমরা তো কথাই বললাম না।”

শ্রেয়সীর ঘুরে তাকিয়ে বলল, “এরকম সেলফ অবসেসড লোকের বন্ধুর সাথে কথা বলার কোনো ইচ্ছে আমার নেই।”

রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে এলোমেলো অনেকক্ষণ হাঁটল শ্রেয়সী। মেজাজ গরম হলে সে চেষ্টা করে কারো সাথে কথা না বলতে। কিছুক্ষণ একা থাকলে ধীরে ধীরে রাগ পড়ে যায়। ফোন বাজতে দেখল মা কল করেছেন। কিন্তু এখন কল ধরতে ইচ্ছে করছে না।

সূর্য তেজ হারাতে শুরু করেছে, লালচে আভা ছড়াতে শুরু করেছে। সূর্যকে মেঘের আড়ালে ডুবে যেতে দেখতে ওর ভারি ভালো লাগে। দোর্দণ্ডপ্রতাপ সূর্য কেমন মিঠে আলো ছড়ায় তখন। বসন্তের শেষ লগ্নের বাতাস গায়ে এসে ঝাপটা দিয়ে গেল। হুট করে মন ভালো হয়ে গেল শ্রেয়সীর।

***
পাত্রী দেখার কথা ছিল সৌম্যর জন্য। দীপ্ত ওর খুব ভালো বন্ধু৷ পরশু সৌম্য গিয়েছিল দীপ্তর অফিসে দেখা করতে। কথায় কথায় জানায় সে মেয়ে দেখতে যাবে। প্রথমে দীপ্ত আগ্রহ দেখায়নি, কিন্তু একপর্যায়ে সে যখন মেয়েটার নাম বলে তখন দীপ্ত হঠাৎ কৌতূহলী হয়ে উঠে জিজ্ঞেস করে,

“তোর কাছে ওই মেয়ের ছবি আছে?”

সরল মনে সৌম্য ছবিটা দেখায়৷ দীপ্ত বলল, “তুই একাই যাবি দেখা করতে?”

“হ্যাঁ। শ্রেয়সীর কাজিনের আসার কথা ছিল ওর সাথে, কিন্তু পা নাকি মচকে গেছে। সে একাই আসবে। তাই আমিও…”

“আমি যাই তোর সাথে?”

“আয়। সমস্যা নেই।’’

দীপ্ত এসেছিল দুটো উদ্দেশ্য নিয়ে। ওকে আজ পর্যন্ত কেউ প্রত্যাখ্যান করেনি৷ বরং সে-ই অসংখ্য প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে। বিয়েতেও সে রাজি হয়নি, কিন্তু বাবা ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে মেয়ে দেখতে পাঠান। সে যায়, কথা বলে নিজে ভেঙে দেয়।

শ্রেয়সী ওর সাথে পাঁচ মিনিট কথা বলে উঠে চলে গিয়েছিল, যাবার আগে বলে গিয়েছিল, “আই থিঙ্ক, উই আর নট পারফেক্ট ফর ইচ আদার।”

ওই রিজেকশন দীপ্ত কোনোভাবেই মানতে পারেনি। নিজের মধ্যে এমন কোনো দোষ খুঁজে পায়নি যে অন্য কেউ ওকে না বলতে পারে। নিজের উপরে এতদিনের তৈরি হওয়া আত্মবিশ্বাসের পালে জোর ধাক্কা দিয়েছিল শ্রেয়সী। কারণটা সে জানতে চাইছিল।

দ্বিতীয় কারণ ছিল, ওকে যে মেয়ে রিজেক্ট করেছে সে-ই মেয়ে যদি পাত্র হিসেবে সৌম্যকে পছন্দ করে তাহলে অপমানের চূড়ান্ত হবে। বন্ধু মহলে ওর রেপুটেশন ধপাস করে মাটিতে মিলিয়ে যাবে। যা সে হতে দিতে চায় না। শ্রেয়সী নিশ্চয়ই সৌম্যকে বলবে বিষয়টা। ওদিকে সৌম্যের পেটে কোনো কথা থাকে না। অত্যন্ত বোকা স্বভাবের ছেলে, কিন্তু নিজের বাহাদুরি প্রকাশ করার কোনো সুযোগ ছাড়তে চায় না। এটা তো রীতিমতো ব্রেকিং নিউজ হবে পরিচিত গণ্ডিতে। তারপর সবাই ওকে নিয়ে হাসাহাসি করবে।

যাক এদিক থেকে সে সফল। এখন সৌম্য নিজেও যেহেতু ‘রিজেক্টেড’, নিজের স্বার্থেই সে আজকের ঘটনা গোপন রাখবে।

“তুই এইজন্য এসেছিলি শালা? মেয়েটা দেখতে কত সুন্দর। তোর জন্য আমার বিয়েটা ভাঙল।”

ওই মেয়ের মধ্যে সৌন্দর্যের কী দেখল সৌম্য, তা দীপ্ত ভেবে পেল না। সে তো দেখল কেবল আগুনে গনগনে চোখ আর ওই তেতো কণ্ঠস্বর। সে সান্ত্বনা দেবার ভঙ্গিতে বলল,

“আরে দোস্ত, আমি কি তোর খারাপ চাই বল? আমি তোরে সেভ করলাম। একটা ধন্যবাদ দে শালা, তা না।”

“কীসের জন্য ধন্যবাদ দিব? কী সেভ করলি?”

“আরে আমি সাথে না আসলে তুই চেহারা দেখেই গলে যেতি। চাঁদ দূর থেকেই সুন্দর। কাছে গেলে ভেতরে খালি পাথর আর পাথর। জানিস না?”

“ভেরি ব্যাড জোক।”

“আচ্ছা, যা সব বাদ দিলাম। তুই বল, ওই মেয়ের আচরণ তুই দেখিসনি? কেমন মুখরা মেয়ে। তোর জীবন ঝালাপালা হয়ে যেত ওরে বিয়ে করলে। আমি তো ওকে চিনতাম, তাই এসেছি, বললে তো বিশ্বাস করতি না। তাই ডেমনস্ট্রেশন দেখালাম।”

সৌম্য তবুও মানল না, সে রেগে চলে গেল।

দীপ্তর মেজাজ খারাপ হলেও এখন মজাই লাগছে। কেন যেন ভীষণ হাসি পাচ্ছে। হো হো করে হেসে ফেলল। সে হাসির তীব্রতা এমন ছিল যে রেস্টুরেন্টের অন্য লোকজনও একবার করে হলেও ফিরে তাকাল।

***
মোহসীন সাহেব আর দীপ্তর বাবা-ছেলের সংসার। নিরপদ্রুপ আর নির্ঝঞ্ঝাট। তারা দুজনেই ভাগাভাগি করে রান্না করেন, সংসারের কাজগুলোও সেভাবেই চলে। তিনি চান ছেলে বিয়ে করে একটা সত্যিকারের সংসার করুক। যা তার সেভাবে করা হয়ে উঠেনি। কিন্তু ছেলে তার কথা কানেই নেয় না। বিষয়টার একটা সুরাহা তিনি করতে চাইছেন।

দীপ্ত বাসায় ঢুকতেই মোহসীন সাহেব হেসে বললেন, “আজ তোর রান্না আমি করে দিয়েছি। আগামী দুইদিন কিন্তু তোর পালা।”

দীপ্ত মৃদু হেসে বলল, “বাবা, তুমি ইদানিং হিসেবি হয়ে গেছ মনে হচ্ছে। আমি যে এই সপ্তাহে তিনদিন ঘর মুছলাম, বাথরুম পরিষ্কার করলাম তার বেলা?”

মোহসীন সাহেবের হাসি এবার বিস্তৃত হলো, “এখন বুড়ো হচ্ছি না? এখন বাপের জন্য এটুকু করতে পারবি না?”

দীপ্ত প্রমাদ গুনল, কথা কোনদিকে এগুচ্ছে সে ধরতে পারল। কেন যে কাজের ফিরিস্তি দিতে গেল।

বাবা আবার বললেন, “বয়স বাড়ছে, নিজের আর তোর এসব রান্না খেতে খেতে মুখের টেস্ট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এবার বিয়েটা করে…”

দীপ্ত এবার বলল, “বাবা, তুমিও না। তোমার ধারণা আমি বিয়ে করলে সে তোমার এসব রান্নাবান্না, সব কাজ করে দেবে?”

ওদের বাসায় যেহেতু মহিলা নেই, তাই কাজের লোক পুরুষ কাজের লোক রেখেছিলেন মোহসীন সাহেব। তখন দীপ্ত আট বছর বয়সী ছিল। দুরন্ত ছিল খুব, দুষ্টুমি থামাতে না পেরে ওকে পিটিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল, যাবার আগে কিছু মূল্যবান জিনিসপত্র সরিয়েছিল। অফিস থেকে ফিরে এই ঘটনা দেখে তিনি আর রিস্ক নেননি। দীপ্তকেও ঘরের কাজ শিখিয়েছিলেন যেটুকু না করলেই নয়।

“কাজ করার জন্য তোকে বিয়ে করাব একবারও বলেছি? তোর সংসারটা একবার দেখব না? নাতি-নাতনীদের সাথে খেলাধূলা করব না? এভাবে জীবন কাটিয়ে দেব?”

দীপ্তর হাসিমুখ ম্লান হলো খানিকটা, মুখে চলে এসেছিল, “তুমিও তো বিয়ে করেছিলে, তোমার সংসার হলো?”

কিন্তু বলা হয় না, বাবার মুখটা ভীষণ হাসি হাসি। এই হাসি ওর জন্য অমূল্য। সে বলল,

“বাবা, তোমার কথা শুনে পাত্রী দেখতে গিয়ে অপমানিত হয়েছি। আমাকে আর এসব বলবে না তো।”

“একটা রিজেকশনেই তোর এত সমস্যা, তাহলে তুই যাদের দেখতে গিয়ে এটাসেটা খুঁত খুঁজে রিজেক্ট করেছিস, তাদের কেমন লেগেছে?”

“তুমি আমার বাবা, অথচ ওদের ডিফেন্ড করছ। ভালো ভালো।”

“তো একটা প্রেম অন্তত করতে পারতি, তাহলে পাত্রী দেখার কষ্টটা করতে হতো না।”

“আমি আর প্রেম? ওইসব ন্যাকামি আমাকে দিয়ে হবে না।”

“ন্যাকামি থেকে ভালো কিছু হলে একটু ন্যাকামি করলি না-হয়। এমনিতে তো অন্য কত ন্যাকামি করিসই।”

দৃষ্টিতে একরাশ অবিশ্বাস নিয়ে সে বাবার দিকে তাকিয়ে বলল, “আমি ন্যাকামি করি? এরকম একটা কথা তুমি বলতে পারলে বাবা?”

“উদাহরণ দেব? বলে শেষ করা যাবে না। আমি একটা কাগজে লিস্ট করে তোকে কাল দেব। এখন খেতে হয়। খাবার ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে, সাথে আমার ক্ষুধা লেগেছে। তোর পছন্দের চিংড়ি ভুনা করেছি।”

খুঁনসুটিতে খাবার পর্ব শেষ হলো। দীপ্ত ওষুধ খাইয়ে বাসন পরিষ্কার করল। দু’জনে একসাথে সময় কাটাল ঘণ্টাখানেক। এরপর শুতে গেল।

দীপ্ত মিনিট দশেক পরে মোহসীন সাহেবের ঘরে এলো। এবার ওর মুখ থমথমে।

“বাবা, তোমার এক্স ওয়াইফ যদি তোমাকে কল দেয় তাহলে বলবে, আমাকে যেন উনি কল করে বিরক্ত না করেন।”

কথা শেষে ঝড়ের বেগে বেরিয়ে গেল দীপ্ত, মোহসীন সাহেবের মনটাও খারাপ হয়ে গেল।
………..
ক্রমশ