তোমার নেশায় মুগ্ধ পর্ব-০৪

0
54

গল্প:- #তোমার_নেশায়_মুগ্ধ
লেখিকা:- #রাইমা । #পর্ব :- ৪

🥀কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্ক ও মুক্তমনাদের জন্য🥀

“Didn’t you miss me Snowflake ❄️??”

“কে Snowflake?? কে আপনি?? মুগ্ধ কে আপনি চেনেন??” তুর্য নিজের জায়গা থেকে উঠে মুগ্ধতাকে হাত ধরে সরিয়ে ইভানের সামনা সামনি দাঁড়ায়।

তুর্য কি বললো সেদিকে ইভানের খেয়াল নেই।সে তার আগুন দৃষ্টি নিবদ্ধ করে রেখেছে তুর্যর হাতের দিকে,যে হাত দিয়ে সে এখন তার প্রানপ্রেয়সীর হাত ধরে রেখেছে।

ঠাসসসসসস

চরের আওয়াজে সবাই তুর্যের দিকে তাকায়। তুর্যের বাম কানের পাশে থেকে র*ক্ত বেরোতে দেখে ভয়ে মুগ্ধ ছিটকে পাশে সরে যায়। বাড়ির পুরুষেরা এগিয়ে আসে তুর্যের কাছে।

“এই ছেলে কে তুমি?? আমার মেয়ের জামাইকে মারলে কোন অধিকারে??”বলেন হামিদুল তালুকদার।
” সেটা আপনার মেয়েকে ask করুন my dear শশুর মশাই।”বরের বসার জায়গায় গিয়ে বসে ইভান।

সুরাইয়া বেগম এগিয়ে এসে মুগ্ধতার কাঁধ ধরে ঝাকাতে থাকেন,” এই মুগ্ধতা এখন চুপ করে আছিস কেন?? কে এই ছেলে?বল তুই কি করে চিনিস ওকে??”
“সুরাইয়া থাম। মেয়েটার লেগে যাবে”
“না আপা আজ একেবারে আমায় তুমি থামাবে না।আর তোমাদের মনে হচ্ছে না এই ছেলেটা নিশ্চই মুগ্ধতার প্রেমিক।এই মেয়ে বাইরে থেকে যতই বোকা দেখাক নিজেকে ভেতর থেকে বহুত চতুর তলে তলে এতদিন প্রেম করেছে। আরে তাই হয়তো এই ছেলেটা আজ ওর বিয়ের খবর পেয়ে এখানে এসেছে ।”

“নাআআআ।…..আমি ওনাকে চিনিনা,ইভান আমার প্রেমিক নন।”চিৎকার করে বলে মুগ্ধ।
“Wowww babe!!!! You don’t know me but you knew my name. কিভাবে সম্ভব??”রহস্যের হাসি হাসে ইভান।

মুগ্ধ আর নিতে পারছে না। মন চাচ্ছে চিৎকার করে সে কাঁদুক।কোন কুক্ষণে সেই ভুল করেছিলো?যার ফল তাকে আজ মেটাতে হচ্ছে??চোখের জল মুছে সে এগিয়ে যায় ইভানের দিকে, কাঁপা কাঁপা গলায় বলে, “দেখুন ইভান আজ আমার বিয়ে,আমি আপনাকে তো বলেছিলাম যা হয়েছে ভুলে যান।কেনো এসেছেন আপনি এখানে প্লীজ চলে……”।

বাকি কথা শেষ করার আগেই ইভান মুগ্ধর চোয়াল খামচে ধরে।” আমারই সামনে আমার আমানত অন্যের হওয়ার কথা বলে?? How dare you Jaan????”ইভানের আঙুল গুলো যেনো পারলে মুগ্ধর গালের মাংস ভেদ করে ঢুকাতে পারলে তার রাগ কমবে।
“আ….আমার লাগ….লাগছে…..”
সবাই মুগ্ধকে ইভানের হাত থেকে ছড়ানোর চেষ্টা করেও পারছে না ছাড়াতে।”আমার হবু স্ত্রীকে ছাড় কুত্তার বাচ্চা।”চিৎকার করে বলে তুর্য।

তুর্যের কথা মুগ্ধুকে ছেড়ে সরে আসে “হবু স্ত্রী 😂 তা মুগ্ধ তোমার হবু বর জানে that you are already lost your virgi*nity to me??”

ইভানের একটা কথায় গোটা বিয়েবাড়িতে যেনো বজ্রপাত ঘটে। আত্মীয় স্বজনের মধ্যে ছিঃছিঃ সাড়া পরে যায়। কাউকে কাউকে বলতে শোনা যায় এই মেয়েরই চরিত্রে দোষ আছে নাহলে কখনও দুই দুবার kaourir বিয়ে ভাঙ্গে? আরো নানা ধরনের কালি লাগাতে থাকে মুগ্ধর চরিত্রে গোটা গ্রামবাসী।

“মুগ্ধতা মা এদিকে তাকা।আম্মু কে বল মা এই ছেলেটা কি বলছে??সত্যি??”
“আরে ভাবী এখনো নিজের মেয়েরে আড়াল করবেন? এই ছেলেরে দেখে মনে তো হচ্ছে না যে মিথ্যা বলছেন।
“ছোটো চাচী তুমি কিভাবে আম্মুর সাথে বলছো? দাদাজান আপনি দেখছেন??”
“আরফিন তুই কিভাবে তোর ছোটো চাচীর সাথে কথা বলছিস??”চিৎকার করে বলে ওঠে আজিজুল তালুকদার।
“ছোটো চাচ্চু তুমি ভুল ভাবছো। আমি সেই ভাবে বলতে চাইনি।কিন্তু চাচীও তো সেই কখন থেকে আমার বোনটার ওপর দোষ দিয়ে যাচ্ছে।…… আর তূর্য তোকে বলেছিলাম বিয়েটা করিসনা হলো তো?? শান্তি পেলি??”

“থামো তোমারা।” হুংকার ছাড়েন ইয়াজউদ্দিন তালুকদার।” অনেক্ষন ধরে তোমরা অনেকে অনেক কিছুই বলেছো আরেকটা কথা নয়।…. এই ছোকরা কি নাম তোমার??”

“ইভান ইভান চৌধুরী।”
“আমার বড়ো নাতনিরে কি করে চেনো??”
” সেটা আপনি আপনার নাতনিকে ask করুন।”
” মুগ্ধতা কি করে চেনো এই ছেলেকে??… উওর দাও।”
” আ…আমি ওনাকে এক…একবার ফ্রান্সে ফুফুমণিদের ওখানে একটা রেষ্টুরেন্টে দেখেছিলাম।”
” শুধুই কি দেখেছিলে?? নাকি নিজেরও অনেক কিছু দেখিয়েছিলে My Snowflake ❄️?? নেশাক্ত কণ্ঠে মুগ্ধর কাছে এসে বলে ইভান।
“চুপ করুন” আচমকা ইভানের কাছে আসায় চমকে দূরে সরে যায় মুগ্ধ। “আম্মু আব্বু আমি কিছু করিনি… কিছু……”

“নিজে থেকে আমাকে সিডিউস করে এখন বলছো আম্মু আব্বু আমি কিচ্ছুই করিনি?? ইন্টারেস্টিং babe 😈”

“আব্বাজান আপনি অনুমতি দিকে আমি একটা সিদ্ধান্তের কথা বলতে চায়।”
” বলো হামিদুল ”
” আব্বাজান আমার মেয়ের তো যা বদনামী হওয়ার হয়েই গেছে,আমি চাই এই মুহূর্তে এই ছেলের সাথে মুগ্ধতার বিয়ে দিতে। এবার আপনি যা বলবেন।”
“তোমার মেয়ে হামিদুল তোমার সিদ্ধান্ত।”

মুগ্ধ ছুটে গিয়ে পা ধরে দাদাজানের।”দাদাজান এমন বলবেন না। আমি উই ছেলেকে বিয়ে করব না দাদাজান।”
“আজ থেকে মুগ্ধতা নামে আমার কোনো নাতনি নেই। আর না এই বংশের সাথে আজকের পর এই মেয়ের কোনো সম্পর্ক থাকবে। আমার মতের বিরুদ্ধে যে যাবে তাকেও এই বাড়ি ছাড়তে হবে।”

মুগ্ধতা পাগলের মতো কাঁদতে থাকে। কি থেকে কি হয়ে গেলো তার জীবনে। ছুট্টে গিয়ে সে তার আব্বুর হাত ধরে অনুরোধ করতে থাকে।
“আব্বু ও আব্বু আমি তো তোমার জীবন বলো? আমাকে তাড়িয়ে দিওনা তোমরা।আমি ওই ছেলেকে বিয়ে করবো না আমি ওই ছেলের সাথে এক বাড়িতে থাকা আমার পক্ষে অসম্ভব।”

“তোমার দেহের এমন কোনো ইঞ্চি বাকি নেই যা আমার ঠোঁটের স্পর্শ পেতে বাকি রয়েছে।তাহলে কিসের এতো সংকোচ বোধ MY SNOWFLAKE❄️??”

এমন লজ্জাহীন কথা কর্নগহ্বর হতেই লজ্জায় ও ঘৃণায় চক্ষুদ্বয় কুঁচকে আসে মুগ্ধতার।কেঁদে চোঁখ-মুখ রক্তাভ হয়ে গেছে মুগ্ধতার। তালুকদার বাড়ীর সকলের মেঝের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ। মুগ্ধতা ক্ষিপ্ত ভাবে ঘৃণার দৃষ্টি ফেলে সামনে বসে থাকা যুবকটির দিকে।

“আমার সব শেষ করতে তো কিছুই আর বাকি রাখলেন না,এবার অন্তত আমায় মুক্তি দিন প্লীজ” অনুরোধ করতে করতে মাটিতে বসে পরে মুগ্ধতা।
হাউ মাউ করে কেঁদে ওঠে সে।সামনে বসে থাকা যুবকটি এভাবে নিজের প্রাণপ্রেয়সী কে কাঁদতে দেখে মুগ্ধতার সামনে এসে হাঁটু গেঁড়ে বসে।নিজের বন্দুকের সামনের অংশ দ্বারা মুগ্ধতার চিবুক ওপরে উঠায়।

“মুক্তি?😆😆😆।হাসালে Snowflake ❄️। মুক্তি তো তুমি আমার থেকে আমার মৃত্যুর পরেও পাবে না।আমার মৃত্যু হলেও তুমি একান্ত আমার আমানতই থাকবে। বিয়ে করবে না তাই তো? ঠিক আছে। আজ থেকে নাহয় বিয়ে ছাড়াই আমাদের সংসার শুরু হলো।”

কথাটা বলেই নিজের প্রাণ প্রেয়সীকে নিজের ডান কাঁধে তুলে নেয় ইভান।কাউকে কিচ্ছু বুঝে ওঠার সুযোগটাই সে দেইনি যে কি হলো? অনেক আহাজারি করে, কিল–ঘুষি মেরেও নিজেকে ছাড়াতে পারেনি মুগ্ধ। তাকে নিয়ে বেরিয়ে যায় ইভান তালুকদার বাড়ি থেকে।

#চলবে