গল্প:- #তোমার_নেশায়_মুগ্ধ
লেখিকা:- #রাইমা । #পর্ব:- ৮
🥀 কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্ক ও মুক্তমনাদের জন্য🥀
“দাঁড়াও” রাশভারী কণ্ঠের হুঙ্কারে চৌকাঠে পা দিতে গিয়েও পিছিয়ে নেয় মুগ্ধ।
” কোনো দুশ্চরিত্র ও কলঙ্কিত নারীর স্থান তালুকদার বাড়িতে নেই।”
“দাদাজান!!!!!” অবাক চোখে তাকায় মুগ্ধ।
“আপাই”মেহেক মুগ্ধ কে দেখে তাকে ছুটে জড়িয়ে ধরতে যায়।মাঝ পথে তার পথ আটকায় সুরাইয়া বেগম।বলেন,” এই মেয়ে দাড়া কোথায় যাচ্ছিস? আব্বা কি বললেন শুনতে পেলি না?”
” আমায় ছাড়ো খালা আমি আপাইয়ের কাছে যাবো।”
” একবারে না ওই কলঙ্কিত মেয়ের কাছে গিয়ে নিজের গায়েও কাদা লাগাবি নাকি??”
মুগ্ধ অবাকের সপ্তম পর্যায়ে পৌঁছে হা হয়ে তাকিয়ে বলে ওঠে “ছোটো চাচী তুমি এভাবে বলতে পারলে?? আমাকে ছুলে মেহুর গায়ে কাদা লাগবে?? আমি মানুষটা তো পাল্টায়নি একই আছি।”
” আর যে চরিত্র তুই খুইয়েছিস সেটা?? তাতো আর পাবি না।মেহেক ভেতরে যা। আর কি যেনো নাম ইভান আপনি আপনার এই র*ক্ষিতা কে নিয়ে এবাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান।” সুমাইয়া বেগম এগিয়ে এসে বলেন।
” মেজো চাচী তুমিও?? তুমি তো আমায় আর মেহুকে কখনো আলাদা করে দেখোনি। আজ তুমি…….”
“আমার ফুলের মতো পবিত্র মেয়ের নাম নিবিনা তোর ওই কলঙ্কিত মুখে। ন*ষ্টা মেয়ে ছেলে।”
কান্নায় ভেংগে পরে মুগ্ধ নিজের লোকেদের কাছে এরূপ ব্যবহারের জন্য সে মোটেও প্রস্তুত ছিল না।সে ভেবেছিল অন্তত তার পরিবার তার দিকটা বুঝবে। শেষবারের মতো একবার নিজের মা-বাবার দিকে তাকায় মুগ্ধ। দেখে কীভাবে তারা মেয়ের ওপর কাদা ছোড়াছুড়িতে নিশ্চুপ হয়ে এক বোবার ভূমিকা পালন করছে। অভিমানে মুখ ফিরিয়ে নেয় মুগ্ধ।
” চলুন ইভান। একটা কথা আমার রাখবেন??আমি মরে গেলেও যেন আমাকে কখনো এবাড়িতে আনবেন না।” বেরিয়ে যায় তালুকদার বাড়ি থেকে ও।
মেয়ের মুখে এমন শক্ত কথা শুনে হাউ হাউ করে কাঁদতে কাঁদতে মাটিতে বসে পরে।
” অতো কেঁদে কি হবে বড়ো ভাবী?যা মেয়ে পেটে ধরেছেন সারাজীবনই না কেঁদে মরতে হয়।”
” ছোটো চাচী কিছু মনে না করলে একখান কথা বলি, কি হয়েছে ?ইভান কেনো মুগ্ধ কে নিয়ে গেছে ?কিচ্ছুই যখন জানোনা তাহলে অতো মুখ খোলো কেনো??”
” আমি যে তোমার বড়ো সেটা তুমি ভুলে যাও না গো আরফিন?? সত্যি বড়ো ভাবী আপনার ছেলে মেয়ে দুটো এক্কেবারে নির্লজ্জ হয়েছে।”
রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে আরফিন বেরিয়ে যায়।
__________________
” এখানে কেনো নিয়ে গাড়ি থামালেন?”
” দরকার আছে।” গাড়ি থেকে নামতে নামতে বলে ইভান।” এই কাগজে সাইন করো”
ইভানের কোথায় অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে মুগ্ধ,” কিসের কাগজ??”
” ইভান চৌধুরী কাওকে কৈফিয়ত দেয় না Snowflake ❄️। Sign it।”
কিছু বলেই লাভ হবে না দেখে বাধ্য হয়ে সই করে দেয় মুগ্ধ।
কিছুক্ষন পর তারা বাড়ি ফিরে আসে। মুগ্ধ রুমে চলে যেতেই, ইভান তার মমের রূমে যায়।
” ইভান, বেটা কোথায় গেছিলে?? আজ পার্টিতে সবাই জিজ্ঞেস করছিলো তোমার কথা সবাই জিজ্ঞেস করছিলো” সোফা থেকে উঠে দাড়ায় বুশরা বেগম।
” তুমিই তো থাকতে মানা করেছিলে mom।”
” আমি?? আমি তো…….”
” মুগ্ধ কে পার্টি অ্যাটেন্ট না করলে আমি কি করে করি??”
ইভানের কথা চোখ লোকাতে থাকেন বুশরা বেগম ” আমি সেই ভাবে কিছু বলিনি বেটা। Actually party তে ওকে দেখলে যে কেমন react করবে? And ওর তো কোনো পরিচয় ও নেই যে ও এবাড়ির কে?………”
” মুগ্ধ আমার আমানত mom। আমার নেশা।আমার জীবনের 1st priority প্রাপ্ত woman মুগ্ধ।ওর কোনো অপমান আমি বরদাস্ত করবো না। তা সে অপমানটা আমার চোখের সামনে হোক আর চোখের পিছনেই হোক।”
আজ রাতের বেলায় রুমে ইভানের আসতে একটু দেরি হয়ে যায়। Bed সাইড টেবিলের কাছে হাতের ঘড়িটা খুলতে খুলতে আর চোঁখে তাকায় সে পাশে বিছানায় শুয়ে থাকা তার ঘুমপরীর দিকে। ঘুমন্ত অবস্থায় মুগ্ধ কে যেনো একটা স্নিগ্ধ গোলাপ লাগছে।
” এতো মায়ায় কি করে আমাকে জড়াও মুগ্ধ?? প্রতি মুহূর্তে এভাবে আমাকে মায়ায় বাঁধলে ফেললে,কি করে রিভেঞ্জ নেবো বলোতো??…… কিন্তু নিতে যে আমায় হবেই,এতদিনের প্ল্যান আবেগে নষ্ট হতে দিতে পারিনা আমি।”
ইভান নিজের প্রাণপ্রেয়সীর কপালে নিজের অধর স্পর্শ করায়।
মুগ্ধ কে কোলে করে নিয়ে বাড়ী থেকে বেড়িয়ে যায় ইভান।
___________________
“ইভান ভাইয়ার রুমে ওই নীল শাড়ী পরিহিতা সুন্দরী নারীটি কে ইয়ানা?? I want her at any cost.”
” আস্তে বল” চিৎকার করে ওঠে ইয়ানা।” বিগ ব্রো শুনলে না তোকে আর বিয়ে করতে হবে না, তার আগেই মেরে দেবে তোকে।”
“তাহলে তোর বিগ ব্রো হয়তো রেহান কে চেনে না”( গল্পটির আসল লেখিকা রাইমা)
” রেহান ব্রো তুই যদি আমার বড়ো খালাতো ভাই না হতিস তোকে আমি ঠাটিয়ে চড় মারতাম”ইয়ানা বলে।
” Why??”
” মুগ্ধ বিগ ব্রোর ভালবাসা নয়, সে তার নেশা। বিগ ব্রো আসক্ত ওতে। আর নেশা ছাড়া মানুষ বাঁচে না। প্লীজ এমন করো না রেহান ভাইয়া” ইনায়া বোঝাই রেহান কে।
” নেশা ছাড়া মানুষ বাঁচে না তো তোদের বিগ ব্রো কে মরে যেতে বল। আমি আমার নীলপরী কে নিজের করেই ছাড়বো at any cost. কি যেনো নাম বললি? মুগ্ধ। প্রথম দেখায় আমাকে মুগ্ধ করে ফেলেছো মুগ্ধ। এবার তোমাকে নিজের করার পালা।”
রেহানের কথা শুনে ইয়ানা ও ইনায়া একেপরের চোখ চাওয়া চাওয়ি করতে থাকে। না জানি আবার কোন নতুন ঝড় আসতে চলেছে??
____________
” মুগ্ধ wake up। See কে এসেছে??” গাড়ির পিছনের সিটে শুয়ে থাকা মুগ্ধ কে ডাকে ইভান। পিট পিট করে চোঁখ মেলে তাকায় মুগ্ধ। কোথায় আছে সে বুঝতে না পেরে সে ভয়ে ঢোক গিলতে থাকে।
” Relax my Snowflake ❄️। বাইরে এসো তোমার জন্য স্পেশাল সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে।”
ইভানের শীতল কণ্ঠে শীতল স্রোত বয়ে গেলো মুগ্ধতার শরীরে। না জানি এই লোক কখন কি করে? এতো রাতে এই ফাঁকা মাঠে নিয়ে এসেছে কেনো? মেরে টেরে ফেলবে নাতো?? বলা যায় না, একে কোনো বিশ্বাস নেই, তারকাটা ছেলে। আল্লাহ্ গো রক্ষা করো, যেনো প্রাণ নিয়ে বাড়ী ফিরতে পারি।
মনে মনে আরও কয়েক দফা আল্লাহ্ কে ডেকে, স্বল্প বিস্তর সাহস নিয়ে গাড়ির বাইরে যায় মুগ্ধ।
” আপাই”
চেনা মনুষের আওয়াজে পিছনে ঘুরে তাকায় মুগ্ধ।
” মেহু” বলেই বোনকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে মুগ্ধ।
” কেমন আছো আপাই?? ওই লোকটা তোমাকে মারেনি তো??”
” আমি একদম ঠিক আছি মেহু।তুই এখানে একা কীকরে??”
” আরফিন ভাইয়া নিয়ে এসেছে।উনি তো ওই ইভান চৌধুরীর বেষ্ট ফ্রেন্ড।”
” বেষ্ট ফ্রেন্ড????”
” হ্যাঁ তুমি জানো না?? ফ্রান্সেই তো তাদের আলাপ। আচ্ছা আপাই ফ্রান্সে কি হয়েছিলো গো?? তুমি ওই ইভান চৌধুরীকে চিনলে কিভাবে??”
” আজ তোকে সবটা জানাবো মেহু। তোর জানাটা খুব দরকার।”
#চলবে