গল্প:- #তোমার_নেশায়_মুগ্ধ
লেখিকা:- #রাইমা । #পর্ব :- ১০
🥀কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্ক ও মুক্তমনাদের জন্য🥀
” ফুফুমনি আমি বাড়ী যাবো। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব।”
মুগ্ধর কথায় সবাই মেইন দরজার দিকে তাকায়। কালকে রাতে আরফিন ও তুর্যের নাইট ক্লাবে পৌঁছাতে দেরী হয়। গিয়ে ওরা তুবার কাছে জানতে পারে কে যেনো মুগ্ধ কে নিয়ে কোথায় চলে গেছে। সারা রাত ধরে খুঁজেও কোথাও পায় না তারা মুগ্ধ কে। অবশেষে সকালে সকল কে চমকে দিয়ে বাড়ীতেই এসে হাজির হয় মুগ্ধ।
” মুগ্ধ মা তুই কালকে রাতে কোথায় ছিলি?? তুই ঠিক আছিস তো??” ব্যাকুল হয়ে প্রশ্ন করেন সাবা বেগম। তুর্য মুগ্ধর কাছে এগিয়ে আসে।
” মুগ্ধ তোমাকে কালকে রাতে কে নিয়ে গিয়েছিলো??”
তুর্যের প্রশ্নে থতমত খেয়ে যায় মুগ্ধ। সকালে যখন তার ঘুম ভাঙ্গে, এক অজানা পুরুষের বলিষ্ঠ উন্মুক্ত বক্ষমাঝে আবিষ্কার করে সে নিজেকে। বিছানার চাদরে রক্তের ছাপ এবং নিজেকে ও পাশে অচেনা পুরুষটিকে বিবস্ত্র দেখে গতকাল রাতে কি হয়েছে তা আর বুঝতে বাকি রইলো না মুগ্ধর। ভয়ে ও লজ্জা ঘৃণায় মুগ্ধ তাকাতে পর্যন্ত পারছে না।
” You belongs to me, my Snowflake ❄️। তোমার উষ্ণতায় আমি আমার প্রতিটি রাত কাটাতে চাই মুগ্ধ babe।”
ইভানের ঘুমন্ত ভারী গলায় বলা কথাতে কেঁপে ওঠে মুগ্ধ। “কি সব বলছে এই লোকটা? আমাকে চেনে কি করে?? আমাকে এই ওঠার আগেই পালাতে হবে।” মুগ্ধ ইভানের ওঠার আগেই কোনোরকমে ওখান থেকে পালিয়ে আসে।
।
।
।
” মুগ্ধ আপু কোথায় হারালে??” তুবার আওয়াজে ধ্যান ফেরে মুগ্ধতার।
” ফুফুমনি ভাইয়া আমার আম্মু আব্বুর জন্য খুব মন খারাপ করছে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমি বাড়ি যাবো।”
” আর এক সপ্তাহ পরই তো টিকিট বনু, এখন কি করে ম্যানেজ করবো বলতো??”
” আরফিন মুগ্ধ যখন চাইছে তখন আমি দেখছি কি করা যায়।” তুর্য বলে।
” আমারও এক চেনা আছে দেখি আমিও কি করতে পারি ”
_________________
_বর্তমান_
” আচ্ছা তাহলে আরফিন ভাইয়ার সেই চেনাটা হলো ইভান চৌধুরী।” মেহু মাথা নেড়ে বলে ” আচ্ছা আপাই তুমি এই কথাটা আমাকে আগে বলোনি কেনো??”
” কি করে বলি বল? নিজের কলঙ্কের কথা কি কেও নিজের মুখে বলতে পারে??”
” অমন করে বলবে না তো তুমি। আচ্ছা সেই নাইট ক্লাবে তোমার কি হয়েছিলো? মানে তুমি হঠাৎ অমন করেছিলে কেনো?”
” জানি না রে মেহু। ওই জলের বোতল থেকে জল খাওয়ার পরেই যে কি হলো আমার আর কিচ্ছুই তেমন মনে নেই।”
” তোমাদের দুই বোনের গল্প আড্ডা হয়ে গেলে বাড়ি যায় এবার snowflake ❄️ ”
” হুম। মেহু সাবধানে থাকবি আমার ভাইয়াটার খেয়াল রাখবি।”
” তুমিও সাবধানে থেকো আপাই।”
গাড়িতে করে বাড়ির দিকে রওনা দেয় ইভানরা।
” আচ্ছা মুগ্ধ, মেহেক কে কেনো বললে আরফিনের খেয়াল রাখতে?”
” কারণ ভাইয়া মেহু কে ভালোবাসে।”
মুগ্ধের উত্তরে এক গভীর চিন্তায় ডুব দেয় ইভান।
_____________
পরেরদিন সকাল থেকেই অনেক ব্যস্ত মুগ্ধ রান্নাঘর থেকে বেরোনোর সময় পাচ্ছে না সে। একেক জনের একেক রকমের ফরমাইশ। আজ নাকি ইয়ানা কে ছেলের বাড়ি থেকে দেখতে আসবে, তার জন্যই এলাহী আয়োজন করতে বলেছে বুশরা বেগম মুগ্ধ কে।
রান্নাঘরের পিছনের জানলা দিয়ে একজোড়া চোখ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মুগ্ধর পানে। হঠাৎ ডাকে পিছনে ফেরে সে ব্যক্তি।
” রেহান ভাইয়া কি করছো এখানে?? বিগ ব্রো বাড়িতেই আছে। যদি দেখে ফেলে তাহলে তুমি আজকেই শেষ”
” আচ্ছা ইনায়া একটা মেয়ে এতোটা সুন্দর হয় কি করে রে?? ঘেমে চুপচুপে হয়ে আছে, কপালের চুল গুলো লেপ্টে আছে। খোঁপা টাও যেনো কেমন অগোছালো। তবুও এতো সুন্দর দেখাচ্ছে ওকে কেনো??”
রেহানের কথায় চোঁখ ছলছল করে ওঠে ইনায়ার। নিজের ভালোবাসার মানুষটার মুখে অন্য কোনো নারীর সৌন্দর্যের বর্ণনা সহ্য করার মতো ক্ষমতা হয়তো কারোর নেই। হোক না সেই ভালবাসা এক পাক্ষিক। কিসে যায় তাতে? ভালো তো বাসে সে রেহান কে। তাহলে কেনো রেহান তাকে ভালবাসবে না? দ্রুত সেখান থেকে চলে যায় ইনায়া।
।
।
।
।
রিং রিং
” হ্যালো। এবার দেশে ফিরতে হবে তোকে। তোর প্রয়োজন পরেছে।” ইভান বলে।
” কেনো?” ওপর পাশের ব্যক্তিটি বলে।
” ম্যাসেজ চেক কর।”
” টিকিটের ব্যবস্থা করো আমি দেশে আসছি”
“কার সাথে কথা বলছেন ইভান?”
হঠাৎ অনাকাঙ্খিত আওয়াজে পিছনে ফিরে ইভান। ফোন কেটে দেয়। মনে মনে একটাই সংশয় মুগ্ধ কিছু শুনতে পেলো নাতো?…… আবার দাকে হুশ ফেরে।
” কি হলো?”
” একদিন বোনের সাথে দেখা করাতে নিয়ে গেছি মানে এই নয় you have the rights to ask me any questions my Snowflake ❄️।”
” ভাইয়া যে আপনার সেটা আমি জানতাম না। নিজের বেষ্টফ্রেন্ডের বোনের সাথে ওইসব নোং*রামো করতে লজ্জা লাগে না??”
তাচ্ছিল্য হেঁসে ইভান ” why are you so curious about me babe?? প্রেমে পড়লে নাকি?” ( গল্পটির আসল লেখিকা রাইমা)
এতক্ষণ ধরে চোঁখে চোখ রেখে কথা বললেও শেষের কথায় চোঁখ নামিয়ে নেয় মুগ্ধ। তা দেখে প্রশান্তির হাসি হাসে ইভান।বলে,” কথায় আছে তুমি যদি নেশা করো তাহলে একটা সময় নেশারও তোমার প্রতি নেশা হয়ে যাবে।….. নীচে এসো গেষ্টরা এসেগেছে।”
______________
সব গেস্টদের একে একে খবর পরিবেশন করে দিচ্ছে মুগ্ধ।
” এই মেয়েটি কে বুশরা আপা আপনার বড়ো মেয়ে বুঝি??” পাত্র পক্ষের একজন বলে ওঠে।
” না না ও এবাড়িতে থাকে।”
” কি না তোমার মেয়ে??”
” মুগ্ধতা”
” আহা নামেই মনটা প্রশান্ত হয়ে গেল।”
” কিসে পড়ো??”
” অনার্স ফাইনাল ইয়ারে ”
” বিবাহিত??”
” না”
” খুব মিষ্টি মেয়ে তুমি। যে ঘরে যাবে ঘর আলো করে থাকবে।”
” তা যা বলেছেন আপনি আপা। সেসব কথা ছাড়ুন আমার ইয়ানা কে কেমন লাগলো আপনদের বলুন” বুশরা বেগম বলেন।
“আচ্ছা… আমি একটা প্রস্তাব রাখতে পারি বুশরা আপা??”
“বলুন”
” আমি ভাবছিলাম আমার ছেলের সাথে আপনার মেয়ের থেকে বেশী মুগ্ধতা কে মানাবে। মানে আমার ওকেই ছেলের বউ হিসাবে পছন্দ হয়েছে।”
” মানে??”
” না মানে আমার বোনের এক ছেলে আছে সেই ভালো, আপনি বললে নাহয় তারা এসে ইয়ানা কে দেখে যাক। আমার ছেলেও মনে হয় ওকেই পছন্দ, কিরে তোর কাকে ভালো লেগেছে বাবা ??”
মহিলাটির ছেলে বলে ওঠে,” আমার প্রথম থেকে চোখ মুগ্ধতার ওপরেই আটকে গেছে মা। তুমি এখানে না বলকেও আমি বাড়ি গিয়ে তোমায় বলতাম ”
এতক্ষণ ধরে চুপচাপ সব সহ্য করলেও অন্য ছেলের মুখে মুগ্ধর কথা শুনে আর চুপ থাকতে পারেনি ইভান। জনসমক্ষেই ক্ষিপ্ত ভাবে আঁকড়ে ধরে নিজের প্রাণপ্রেয়সীর অধর দুটি। লজ্জায় উপস্থিত সবাই চোখ নামিয়ে নেয়। মুগ্ধ কে কোলে তুলে নিজের রুমে গিয়ে সজোরে দরজা লাগায় ইভান। দরজা লাগানোর আওয়াজে গোটা বাড়ি কেঁপে ওঠে।
” এটা কি হলো??আমার হবু বৌমা কে ওই ছেলে কি করলো??”
তার কথা শেষ হর না হতেই ইভানের লোকেরা এসে ওই মহিলার ছেলে কে তুলে নিয়ে যায়।
____________
” মেহু এখনো কিসের রাগ তোর??” আরফিন ব্যাকুল হয়ে বলে ওঠে।
” ফ্রান্সে নাইট ক্লাবে আপাইয়ের সাথে কি কি হয়েছিলো সেটা তুমি আর তুর্য ভাইয়া কি করে জানলে ভাইয়া?? তোমাদের তো জানার কথা নয়।
” কি…কি সব বলছিস আমরা কি করে জানবো?”
“আপাইয়ের হলুদের দিন আমি তোমাদের দুজনের কথা শুনেছিলাম। অস্বীকার করার চেষ্টাও করবে না।”
মেহুর কথায় থতমত খেয়ে যায় আরফিন। এবার কি উত্তর দেবে সে?? এভাবে যে ধরা পড়ে যাবে তা তো সে কখনও ভাবেনি।
#চলবে
#লেখিকা_রাইমা
গল্প:- #তোমার_নেশায়_মুগ্ধ
লেখিকা:- #রাইমা । #পর্ব :- ১১
🥀কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্ক ও মুক্তমনাদের জন্য🥀
” না ইভান প্লীজ না ”
মুগ্ধতার কোনো আহাজারিই ইভানের কানে যাচ্ছে না। একটা ছোট চাবুক হাতে নিয়ে সে ধীর গতিতে এগিয়ে আসছে মুগ্ধর দিকে।
” কেনো এতো সেজেছো মুগ্ধ?? রূপ দেখিয়ে ছেলেদের বশ করতে চাইছো?? আমাকে দিয়ে পোষাচ্ছে না বুঝি?? বিছানায় কি সুখ পাচ্ছ না babe??”
ইভানের এই রূপের সাথে খুব ভালোভাবে পরিচিত মুগ্ধ। এর আগে যখনই এই রূপে এসেছে ইভান তাকে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে।
‘চটাৎ’
চাবুকের আওয়াজে সম্বিৎ ফিরে পায় মুগ্ধ।
” Then Let me give you pleasure in a different way my Snowflake ❄️” ।
ইভানের শীতল কণ্ঠে কেঁপে ওঠে মুগ্ধ ” ইভান প্লীজ মারবেন না। আমার লাগবে প্লীজ”।
ইভান হাঁটুগেড়ে মুগ্ধর সামনে এসে বসে।
” লাগবে কেনো জান?? বলো মজা লাগবে”
“নাআআআআআআআআ”
ইভান চাবুক উঠিয়ে মারতে গেলেই প্রাণ ফাটা চিৎকার করে ওঠে মুগ্ধ। চোঁখ বুঝে কান চেপে একদম গুটি সুটি হয়ে যায় সে।
” না ইভান না আমায় মারবেন না,প্লীজ প্লীজ না। আমি সুখী আমি সুখী আপনার সাথে। আমার কোনো কষ্ট নেয়। প্লীজ মারবেন না।আমি মরে যাবো। প্লীজ প্লীজ।”
” Fine” ইভান চাবুকটা ফেলে দেয়। ” Take my clothes off Snowflake ❄️।”
ইভানের কথায় ছলছল চোখে বোধশূন্য হয়ে তাকায় মুগ্ধ। যেনো নিজের মধ্যে আর নেই সে। সে জানে ইভানের কথা না শুনলে এখন ইভান যে কি করবে তা হয়তো ইভান নিজেও জানে না। জ্ঞান-বোধশূণ্য হয়ে পুতুলের ন্যায় সোজা এগিয়ে যায় মুগ্ধ। অনিচ্ছাকৃত ভাবেই বাধ্য মেয়ের মত ইভানকে সঙ্গ দেয় মুগ্ধ। ইভান আবার মেতে ওঠে নিজের প্রাণপ্রেয়সীতে।
______________
অনেক্ষণ যাবৎ শারীরিক অত্যাচার সহ্য করার পর শেষের দিকে জ্ঞান হারায় মুগ্ধ। মুগ্ধ কে জ্ঞান হারাতে দেখে ভয় পেয়ে যায় ইভান। পাগলের মতো ওকে ডাকতে থাকে। কোনকিছুতেই যখন মুগ্ধর জ্ঞান ফেরাতে ব্যর্থ হয় ইভান,তখন তানহা কে কল করে ডাকে।
” Are you crazy or what Ivan?? কি অবস্থা করেছিস মেয়েটার??”
” বেশি না বকে চেক কর”
” একটা ভালো ডাক্তারও তো ডাকতে পারিস।”
” আমার মুগ্ধ কে অন্য কেউ ছোঁবে সেটা হতে দেবো তুই ভাবলি কি করে??”
” কেনো কোনো মেয়ে ডাক্তার নেই??”
” চেনা কেও নেই।একজনই আছে তুই, তাই তো তোকে ডাকলাম”
তাচ্ছিল্যে মুচকি হাসে তানহা। আর চোঁখে তাকায় একবার তার নাহওয়া অতি প্রিয় মানুষটির দিকে। ধূসর রঙের ট্রাউজার ও উন্মুক্ত শরীরে কি মারাত্মক চোঁখ ধাঁধানো সুন্দর দেখাচ্ছে ইভানকে। আচ্ছা উষ্কখুষ্ক চুলে সিগারেটে টান দেওয়ার সময় সব পুরুষকেই কি এত্ত সুন্দর লাগে?? নিজের অজান্তেই নিজেকে করা প্রশ্নে আবার হেঁসে ওঠে সে। ( গল্পটির আসল লেখিকা রাইমা)
” হাসছিস কেনো তুই? কেমন আছে মুগ্ধ??”
” তোর মুগ্ধ ঠিক আছে। শুধু আর কখনও এমন করিস না। আসলে কি বলতো শরীরের ক্ষত সেরে গেলেও মনের ক্ষত কিন্তু রয়েই যায়।”
তানহার কথায় তানহার দিকে তাকায় ইভান। কলেজ লাইফ থেকে তাঁরা বেষ্ট ফ্রেন্ড। কলেজের সব থেকে সুন্দর মেয়েটি যখন নিজে থেকে তাকে বন্ধু হওয়ার প্রস্তাব দেয় সেটা গোটা কলেজের জন্য ছিল এক অবাক ও অদ্ভুত ঘটনার নিদর্শন।
” কলেজের দিন গুলো মনে আছে ইভান??”
তানহার কথায় ধ্যান ফেরে ইভানের।
“পুরোনো কথা মনে করে লাভ??”
” তুই যে তোর নতুন নিয়ে মগ্ন সেটা তো অজানা নয়, কিন্তু পুরোনো অতীত যে অনেক মানুষের কাছে অক্সিজেনের কাজ করে।”
ইভান হাতের সিগারেটটা ফেলে দেয়, ” বিয়ে কবে করবি তানহা??”
” আমার চিন্তা কেনো তোর?? নিজেরটা ভাব।”
” তুই আর আমি আলাদা নাকি??”
” আলাদা নয়??”
” না। তুই আর অয়ন আমার খুব ভালো বন্ধু। আর আমি তোদেরকে আমার থেকে আলাদা ভাবি না জানিস তো”
” ওহ্……….. বাদ দে আমার কথা, মুগ্ধতা কে কবে বিয়ে করছিস বল??”
” যেদিন মুগ্ধ নিজে থেকে বলবে বিয়ের জন্য সেদিন।”
” তুই ওর জীবনের হিরো থোরী না, যে তোকে ও বিয়ে করতে চাইবে??” হেঁসে উঠল তানহা।
উত্তরে মুচকি হেসে ওঠে ইভান ,” একটা কথা আছে জানিস তো,
A hero will support you in your life battle when the world is against you ; But a villain will burn the world cause the world stood against you.”
” তুই মুগ্ধ কে ভালবাসিস তো ইভান??”
” ভালবাসা সময়ের সাথে ফুরিয়ে যায়, আর নেশা ছাড়া মানুষ বাঁচে কখনও শুনেছিস??….. মুগ্ধ আমার নেশা। ”
ইভানের বলা কথা গুলো যেনো আজ তানহার মনে সুচের মতো বিঁধছে। একটা ভুল ….. একটা ভুল সিদ্ধান্ত যদি সেদিন ও না নিতো ,একটু ধৈর্য ও যদি ধরতো তাহলে হয়তো আজ ওর জীবনটা অন্যরকম হতো, ইভান আর ওর হয়তো একটা ছোট্ট সংসার হতো। একহাত দূরে দাঁড়ানো মানুষটাকে হয়তো ছোঁয়ারও অধিকার থাকতো। আজ বড্ড আফসোস হয় তানহার। অতীতে করা নিজের বোকামীর কথা মনে পরলেই বুখ চিরে এক দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে তার।
_______________
” তোমার চা ভাইয়া, এখানে রাখলাম। আমার আজ অনেক কাজ আছে আমাকে যেতে হবে।”
মেহেক চলে যেতে নিলে আরফিন তারহাত ধরে টান দেয়।
” পালাছিস মেহুপরী??”
” ছাড়ো কেও চলে আসবে।কেও দেখে নিলে অসুবিধা।”
” দেখলে দেখুক। নানাবাড়ি থেকে ফিরেই আমি দাদাজানের সাথে কথা বলে তোর হাত চাইবো।”
” কেও মানবে না ভাইয়া। সময়ের সাথে অকালে আমাদেরও ভালোবাসার ফুল ঝড়ে যাবে দেখো।”
” মেহু কি সব কথা এগুলো?? আমি দাদাজানের সাথে নানাবাড়ি থেকে ফিরেই কথা বলবো….”
” নাআআআআআআআ ”
নিচের বসার ঘরে চিৎকার শুনে ছুটে নীচে যায় আরফিন আর মেহু।
” আব্বাজান আমার ছেলে দুটোকে ফিরিয়ে নিয়ে আসুন। ওরা কিচ্ছু করেনি ওদের ছেড়ে দিতে বলেন।”
” শান্ত হও সুরাইয়া। তোমার দুলাভাই ও ভাইয়া গেছে, তারা ঠিক আদিল ও আহিল কে ঠিক ছড়িয়ে নিয়ে আসবে।”
নাজিয়া বেগম ছোটো জা সুরাইয়া বেগমকে শান্তনা দিচ্ছেন। কিছুক্ষণ আগে বাড়িতে পুলিশ এসে আদিল ও আহিল কে ধরে নিয়ে গেছে। তাদের স্কুলের এক মেয়ে তাদের দুই ভাইয়ের নামে কেস করেছে যে তারা দুজন নাকি সেই মেয়েটির শ্লীলতাহানি করতে চেয়েছিলো। ছেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে সুরাইয়া বেগমের কান্না ও আহাজারি যেনো থামছেই না।
” বড়ো আম্মু কি হয়েছে গো??”
নাজিয়া বেগম উত্তর দেওয়ার আগেই আরফিন একটা ফোন পেয়ে টিভি গিয়ে চালায়। টিভিতে সব নিউজের চ্যানেলে আদিলদের খবরটাই দেখাচ্ছে।
” ছি ছি এই নাতি নাতনিদের জন্য আর তালুকদার বাড়ির কোনো মান সম্মান বাকি থাকলো না।” ইয়াজউদ্দিন তালুকদার বললেন।
” না আব্বাজান আমার ছেলেদের নিয়ে অমন বলবেন না।ওরা নির্দোষ। মেয়েটা ওদের ফাসাছে”
সুরাইয়া বেগমের কথা শুনে তাচ্ছিল্য হাসে আরফিন।বলে,” বাহ্!! ছোটো চাচী আজ নিজের ছেলেদের ব্যাপার বলে ওরা নির্দোষ ওরা ভালো, আর দুদিন আগে যখন আমার বোনটার গায়ে কাদা ছুরছিলে?তাকে চরিএ*হীন বলেছিলে? তখন মনে হয়নি ও কে কেও ফাঁসাতে পারে?? আজ একটা কথা ভারী মনে পড়ছে জানো তো যে আল্লাহ ছাড় দেন,ছেড়ে দেননা।”
আরফিন বাড়ি থেকে বেরিয়ে চলে যায়।
______________
ইভান ভিডিও কনফারেন্সে মিটিং করছে। হঠাৎ মুগ্ধ এসে ইভানের কলার ধরে দাঁড় করায়।লাল চোঁখে ইভান তাকায় মুগ্ধর দিকে।
” কেনো?? কেনো আমার পরিবারের পিছনে পড়েছেন আপনি উত্তর দিন?? আমার ভাইদের আপনি অ্যারেস্ট করিয়েছেন তাই না?? উওর দিন।”
কলার থেকে মুগ্ধর হাত সরিয়ে দেয় ইভান।
” মুগ্ধর চোখ দিয়ে যারা মুক্ত ঝরিয়েছে তাদেরকে কি ইভান চৌধুরী ছেড়ে দিতে পারে, my Snowflake ❄️??”
#চলবে
#লেখিকা_রাইমা