তোমার নেশায় মুগ্ধ পর্ব-১৪+১৫

0
36

গল্প:- #তোমার_নেশায়_মুগ্ধ
লেখিকা:- #রাইমা । #পর্ব :-১৪

🥀কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্ক ও মুক্তমনাদের জন্য🥀

সামনে মেহু কে চায়ের প্লেট হাতে দেখে অবাকের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে মুগ্ধ। একই ভাবে মেহুও বুঝতে পারছে না, ওর আপাই ই লোকটার বাড়ীতে কি করে এলো??

” মেহু রাখ প্লেট টা এদিকে আয়। তুই এখানে কি করছিস??”
” আপাই” মেহু মুগ্ধ কে জড়িয়ে ধরে হুহু করে কেঁদে দেয়।
” বনু শান্ত হ। কি হয়েছে বল?? কার সাথে এলি? দ্বারা আমি তোকে বাড়ি দিয়ে আসার…..”

” মেহেএএএএএএএক ওপরে এসো।তাড়াতাড়ি”
দোতলার বারান্দার দিকে একেবারে শেষের ঘরটা থেকে সেই ব্যাক্তিটি চিৎকারে মেহু চমকে ওঠে। চোখের জল মুছে উপরে যায় মেহু। মেহু কে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলতে দেখে মুগ্ধর অন্তরাত্মা যেনো কেঁপে ওঠে।

অবাক করা পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার আগেই নিজেকে ভাসমান অনুভব করে মুগ্ধ। তাকিয়ে দেখে ইভান তাকে কোলে তুলে নিজের রুমের দিকে রওনা দেয়।
________________

” আমার breakfast কোথায়?? এতক্ষণ লাগে বানিয়ে আনতে?? নাকি জলখাবারেও তোমাকে খেয়েই কাজ চালাতে হবে??”

স্বামী নামক অচেনা মানুষটার নোংরা কথা শুনে মেহেকের ঘৃণায় চোখ বুঁজে আসে।

” Five minutes, five minutes you have। আমার ব্রেকফাস্ট নিয়ে হাজির না হলে আজ সারাদিন তোমার খাওয়া বন্ধ।”

হঠাৎ কোমড় জড়িয়ে টানার ফলে চমকে চোখ খুলে তাকায় মেহু, দেখে তার স্বামীর বুকে লেপ্টে গেছে ও। নিজেকে ছড়ানোর জন্য মোচড়া মোচড়ি করতে থাকে। মেহুর বাম কানের কাছে মুখ নিয়ে এসে বলে ব্যাক্তিটি, ” সারাদিন তোমার খাওয়া বন্ধ মানে এটা ভুলেও ভেবো না, রাতে তোমায় খাওয়ার থেকে আমি বিরত থাকবো। you know what I mean ”

কথা শেষ করে মেহুর ঠোঁট জোড়া স্পর্শ করতে উদ্ধত হয় সে।

“মেহুউউউউউ”

হঠাৎ চিৎকারে মেহুকে ছেড়ে পাশে তাকিয়ে দেখে যে মুগ্ধ দাঁড়িয়ে আছে। মুগ্ধ গিয়ে মেহুর হাত টেনে সরিয়ে নেয়।

!!ঠাসসসসসসসস!!

রক্তলাল দৃষ্টি ফেলে লোকটি মুগ্ধর দিকে। আঙ্গুল উঁচিয়ে এগিয়ে আসে।
” আপ…..”
” ঈশাআআআন”

ইভানের চিৎকারে ঈশান পিছিয়ে গিয়ে দাড়ায়।

” নিজের ভাবীর সাথে কি করে কথা বলতে হয়,সব সহবত আদব কায়দা ভুলে যাচ্ছিস দেখছি” ইভান রুমে ঢুকে বলে।
” সরি ভাইয়া। আসলে……”
” সাহস ভালো যদি সেটা দুঃসাহসে পরিণত না হয়।”

ওদের কথপোকথন শুনে মুগ্ধ ও মেহু স্তব্ধ হয়ে গেছে।

” ভাইয়া মানে?? এই লোকটা আপনার কে হয় ইভান??”মুগ্ধ জিজ্ঞেস করে।
” ও হচ্ছে আমার ছোটো ভাই ঈশান।”
” আপনার ভাই??”
” হ্যাঁ ঈশান চৌধুরী……”
” মেহু কে আপনার ভাই কেনো জড়িয়ে ধরে ছিলো??”
” কারণ তারা স্বামী–স্ত্রী। আর হাজবেন্ড নিজের ওয়াইফকে জড়িয়ে ধরবে এটাই কি স্বাভাবিক নয় babe??”

ইভানের কথায় মুগ্ধর মাথায় যেনো বজ্রাঘাত হয়। স্বামী স্ত্রী মানে?? মেহুর বিয়ে হয়ে গেছে??

” ইভান ইভান আপনার যা করার আপনি আমার সাথে করুন। আমার….আমার বোনটাকে ছেরে দিন। ওকে এই সবে টানবেন না। প্লীজ। আপনি যা চান আমি তাই করবো। যে ভাবে বলবেন সে ভাবেই চলবো। কিন্তু আমার বোনটা বড্ড নিষ্পাপ ওকে এসব টানবেন না। ওকে যেতে দিন। ওকে” হাউ হাউ করে কাঁদতে কাঁদতে মাটিতে বসে পরে মুগ্ধতা।

” ভাবী মেহেক আমার বিবাহিত স্ত্রী। গতকাল সপরিবারে আপনাদের বাপেরবাড়ি গিয়ে সব নিয়ম মেনে আমি ওকে বিয়ে করেছি। ওর অপর আমার অধিকার আমি কারোর বলাতেই ছাড়বো না। এই ব্যাপারে আমি ভাইয়ার মতোনই জেদি। ভাইয়ার আপনাকে নিয়ে জেদের বিষয়ে আশা করি আপনাকে আর কিচ্ছু বলার দরকার পড়বে না??”
____________

” আরফিন দরজা খোল বাবা। আব্বুর কথাটা একবার শোন। আরফিন। বাবা।”

হামিদুল সাহেব ছেলের ঘরের বাইরে দরজা ধাক্কাচ্ছেন। সকালের ঘটনার পর দরজা আটকে বসে আছে আরফিন। একের পর এক মদের গ্লাস শেষ করে যাচ্ছে সে।

অনেক্ষণ ধাক্কাধাক্কিতে দরজার ছিটকিনি পরে গেলে হামিদুল সাহেব ছেলের ঘরের ভেতরে আসেন। ভেতরে এসে যে দৃশ্যের স্বাক্ষী উনি হন হয়তো এই পৃথিবীর কোনো বাবাই হয়তো চাইবে না সেই দৃশ্যের স্বাক্ষী হতে।

আরফিন মেঝেতে এলোমেলো ভাবে শুয়ে আছে। নেশায় বুঁদ হয়ে খালি একটাই কথা বিড়বিড় করে যাচ্ছে,” মেহুপরী কেনো হলো না আমার?? ওকে অন্যকেও স্পর্শ করেছে ?? ও আর আমার নেই??”

ছেলের এই অবস্থা দেখে হামিদুল সাহেবেড়ি চোঁখে জল চলে আসে। আজ সন্ধ্যায় যে মেহুদের রিসেপশন সেখানে গেলে কি করে নিজেকে সামলাবে আরফিন।
_______________

” রেডী কখন হবে babe?? নাকি আমার হাতে রেডী হওয়ার জন্য wait করছো??”

ইভানের কথায় ধ্যান ফেরে মুগ্ধতার।

” আপনার ভাইয়ের বয়স কতো ইভান??”
” 32 years। ঈশানের বত্রিশ বছর বয়স।”
” মেহুর থেকে ঈশান গুনে গুনে চোদ্দ বছরের বড়ো। ওই বাড়ির সবাই এই অসম বিয়েতে রাজী হয়ে গেলো??”
” তোমার বাড়ির লোকেরা নিজেদের মেয়েদের অনেক ভালবাসে কিনা তাই।” তাচ্ছিল্য হেঁসে বলল ইভান।

মুগ্ধ নিজের ধ্যানে মগ্ন থাকাকালীন ইভান হুট করে তার অধর দুটি আঁকড়ে ধরে। নিজের প্রাণপ্রেয়সী কে কোলে তুলে পান করতে থাকে তার অধর সুধা। অনেক্ষণ পর ছাড়া পেয়ে জোড়ে জোড়ে নিশ্বাস নিতে থাকে মুগ্ধ।

” এভাবে থেকে থেকে চু*মু খাওয়া বন্ধ করুন। আপনার স্পর্শ আমার বিষ লাগে।”
” বেশী না বকে গাউন টা পরে রেডী হও মুগ্ধ। লেট করা আমার পছন্দ নয়। আদারওয়াইজ I will punish you my Snowflake ❄️।”

শেষের কথাটা চোঁখ মেরে বলে ইভান ও বেরিয়ে যায় রুম থেকে। তার যাওয়ার পর তাকিয়ে আছে মুগ্ধ।

” এতো সুন্দর দেখতে আর ব্যবহার দেখোনা, দেখলে মন চাই মাথা ফাটিয়ে দি।




চৌধুরী ম্যানসনে বাগানটা আজ বিলাসবহুল ভাবে সাজানো হয়েছে। শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সমাজের বিভিন্ন উঁচু স্থানীয় মানুষজন এসেছেন।

” বেটা তোমার dad কে একবার call করলে?? উনি কি আজ আসবেন না??” বুশরা বেগম বলেন।
” আমি আসতে মানা করেছি mom. You know why. মুগ্ধের ফ্যামিলির সামনে dad এখনই আসুক আমি চায়না।”
” I can understand বেটা। আরেকটা কথা বলতে পারি??”
” Why are you asking me mom?? একটা কেনো হাজারটা বলো।”
” আজ ওকেও তো এখানে নিয়ে এলে পারতে??”
” কাকে mom??”
” যার জন্য এতো সব কিছু…. ই….”
” Mom please. Leave this topic. G
গেষ্টরা সবাই wait করছে। ওদিকটা দেখো।”

ইভানের চলে যাওয়ার দিকে হতাশা চোঁখে তাকিয়ে থাকেন বুশরা বেগম। আজ কিছু অতীতের অধ্যায়ের জন্য ইভানের এই রূপ। কি যে হতে চলেছে কে জানে??
_________

” আপাই একটু শুনবে??”

স্টেজে বসা গোল্ডেন কালারের লেহেঙ্গা পরিহিত ছোট্ট বোনটির দিকে তাকায় মুগ্ধ। নিমেষেই চোখের কোনে জলেরা এসে ভিড় করে। এই দিনটা নিয়ে বোনটার কতো স্বপ্ন ছিল। আজ সব ধুলিস্যাৎ। আচ্ছা ভাইয়াটা কেমন আছে?? নিজের মেহুপরী থেকে বিচ্ছেদ সইতে পেরেছে??

নিজের ভাবনাকে সরিয়ে রেখে মেহুর পাশে গিয়ে দাঁড়ায় মুগ্ধ।
” কি হয়েছে মেহু?”
” আরফিন ভাইয়া আসবে নাকি??”
” জানি না রে। কিচ্ছুই বুঝতে পারছি না। প্রথমে আমি আর এখন তুই। এই দুই ভাই কি করতে চাইছে আমার মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে।”
” আমার কি দোষ ছিল আপাই?? আমার সাথে এমন কেনো হলো বলো??” ফুঁফিয়ে কেঁদে ওঠে মেহু।
” শান্ত হ মেহু। এবাড়িতে অনেক রহস্য লুকিয়ে আছে জানিস তো। আমি আগে আগে বুঝতে পারিনি। এখন আমার মনে হয় যে যা হচ্ছে তার পিছনে অনেক বড়ো কোনো কারণ রইছে।নইলে…”

কথা বলতে বলতে সামনে তাকিয়ে স্তব্ধ হয়ে যায় মুগ্ধ। তার দৃষ্টি অনুসরণ করে সামনে তাকায় মেহু বিড়বিড় করে খালি একটা কথাই বেরিয়ে আসে ওর মুখ দিয়ে,” আরফিন ভাইয়া।”

হঠাৎ কোমরে উন্মুক্ত অংশে শীতল হাতের স্পর্শ পেতেই কেঁপে ওঠে মেহু। পাশে তাকাতেই ঈশান আরও গভীর ভাবে নিজের স্ত্রীর কোমর ধরে ওকে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। ডান হাতে চুল কানের পাশে গুঁজে দিয়ে কপালে অধর ছোঁয়ায় সে। এই মুহূর্ত কে ক্যামেরা বন্দী করে ক্যামেরাম্যান।

অন্যদিকে এই দৃশ্য যে একজন কে ভেতর ভেতর শেষ করে দিচ্ছে টা হয় কেও জানতেও পারছে না।

মুগ্ধ ও ইভানকে ওখানে দেখে তালুকদার বাড়ির সবাই অবাকের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। সবার মনে একটাই প্রশ্ন এরা এখানে কেনো??

রিসেপশন পার্টি যখন জমে উঠেছে তখন হঠাৎ এক চিৎকারে চারিদিক থমথমে হয়ে যায়। বাড়ির পিছনে দিকে সবাই গিয়ে দেখে একজন পরে আছে মাথা ফেঁটে তার গল গল করে র*ক্ত বেরোচ্ছে। ডান হাত কেটে পাশে পরে আছে।হয়তো ছাদ থেকে পড়ে গেছে।কিন্তু কে সেটা কিছুতেই বোঝা যাচ্ছে না। হটাৎ বুশরা বেগম চিৎকার করে ওঠেন।

” ইভাআআআআআআআআন”

#চলবে
#লেখিকা_রাইমা

গল্প:- #তোমার_নেশায়_মুগ্ধ
লেখিকা:- #রাইমা । #পর্ব :-১৫

🥀 কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্ক ও মুক্তমনাদের জন্য🥀

” ইভাআআআআন ”




কিছুক্ষণ আগে,

” শুনছেন মুগ্ধতা ও ইভান চৌধুরী এখানে কি করছে?? মেহেকের শশুড় বাড়ীতে ওরা কেনো??” মুগ্ধতা ও ইভানকে স্টেজে মেহু ও ঈশানের পাশে দাঁড়ানো দেখে এনামুল সাহেবকে জিজ্ঞেস করেন সুমাইয়া বেগম।
” পাগলের মতো কথা বলো না তো। তুমিও যেখানে আমিও সেখানে। এই জন্যেই বলে মেয়ে মানুষের বুদ্ধি কম।” এনামুল সাহেব বলেন।

” Dear ladies and gentlemen attention please। আজ আমার জীবনের একটা বড়ো ও গুরুত্বপূর্ণ দিন। গতকাল আমি আমার জীবনে আমার ভালোবাসার মানুষটিকে পেয়েছি। যদিও এটা অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ তবুও মেহেককে প্রথম দেখায় আমি ওর প্রেমে পড়ে গেছি। স্বাভাবিক বউ যদি এতো সুন্দরী হয় তাহলে তার প্রেমে না পরে উপায় আছে?? বলতে গেলে আমাদের মধ্যে চোদ্দ বছরের পার্থক্য, আমার 32 আর মেহেকের 18। কিন্তু কথায় আছে না যে ভালোবাসা বয়স দেখে না, আমাদের ব্যাপারটাও ঠিক সেরকমই।

আজ আমি আরেকটা বড়ো announcement করতে যাচ্ছি সেটা হলো আমাদের চৌধুরী গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রির নতুন ceo হওয়ার জন্য dad আমার ও ভাইয়ার মধ্যে কথা বলে নিজেদের মধ্যে একজন কে ঠিক করতে বলেছিলো। কিন্তু আমি নিজেই একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি। সেটা হলো আজকের পর থেকে চৌধুরী গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রির নতুন ceo আমার ভাইয়া ইভান চৌধুরী।”

ঈশানের announcement এর সাথে সাথে চারিদিক করতালির আওয়াজে ভরে উঠলো। কিন্তু এই উচ্ছাস যেনো তালুকদার বাড়ির কয়েকজনের গায়ে আগুন জ্বলে ওঠে।

” শেষে তোমার জামাই কিনা আপা ইভান চৌধুরীর অধীনে কাজ করবে??” সুরাইয়া বেগম বলেন।
” সেটাই তো মানতে পারছি না যে আমার মেয়ের জামাই ওই রক্ষি*তার নাগ*রের নীচে কাজ করবে” সুমাইয়া বেগম দাঁত কিড়মিড় করে বলে উঠলেন।

পাশ থেকে আরফিন নিজের চাচীদের কথা শুনে তাচ্ছিল্য হেঁসে ওঠে। বহুত কষ্টেও চুপ থাকতে পারলো না সে।
” একটা কথা আছে জানেন তো মেজো চাচী, বিনাশ কালে বুদ্ধি নাশ। শুনতে খারাপ লাগলেও আপনার অবস্থা এখন অনেকটা সেরকমই।”
______________

পার্টির মাঝখানে মুগ্ধ হঠাৎ খেয়াল করে তার গাউনের পিছনের চেইনটা কিছুটা অংশ খুলে গেছে। তাকিয়ে দেখে আসে পাশে কোনো মেয়ে নেই। নিজে চেষ্টা করেও লাগাতে পারছে না মুগ্ধ।

হঠাৎ পিঠে শীতল হাতের স্পর্শ পেতেই চমকে ওঠে মুগ্ধ। নাকে তার চিরচেনা পুরুষালী ঘ্রাণ পোঁছাতেই নিশ্চিন্ত হয় সে। আবেশে চোখ বুজে আসে তার।

চেইনটা লাগিয়ে মুগ্ধর মাথার পিছনে ঠোঁট ছুঁয়ে দাঁড়ায় ইভান।

” কি মেখেছো বলোতো?? নেশা ধরিয়ে দিছো যে Snowflake ❄️।”

ইভানের স্পর্শে কেঁপে কেঁপে ওঠে মুগ্ধ।
“ক…কি করছেএএএন?? কেও দেখে ফেললে??”
” বাব্বাহ এই প্রথমবার আমাকে সরে যেতে বললে না, কি ব্যপার babe?……. Interesting।”
নেশা লাগা কণ্ঠে আবার বলে ওঠে ইভান,” তুমি এত সুন্দর কেনো Snowflake ❄️?? তুষারপাতের মতোন স্নিগ্ধ তুমি মুগ্ধ। যতই তোমার থেকে আবেগ দূরে রাখবো ভাবী ততোই যেনো তোমার মায়ায় জড়িয়ে যায়। এতো মায়া কেনো তোমার মধ্যে babe??”

ইভানের বলা প্রতিটা কথা মুগ্ধর মনে দাগ কাটে।

আচ্ছা কি বললেন ইভান?? আচ্ছা উনি তো আমাকে ভালবাসেন না। তাহলে কাওকে ভালো না বাসলে তার জন্য কেও এভাবে ভাবতে পারে?? উনি কি আমাকে সত্যি ভালবাসেন না??

মুগ্ধর ভাবনার মধ্যেই ইভান তার মাথায় গভীর চুম্বন এঁকে দেয়। পিছন ঘুরে কিছু বলতে মুগ্ধ।
” শুনুন…… যাঃ চলে গেলেন।”

” ছাদে এসো” হঠাৎ কথায় এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখে মুগ্ধতা। আশে পাশে কাউকেই দেখতে পায় না।তাহলে কথাটা বলো কে??
______________

” কেমন আছিস মেহুপরী??”

আরফিনের ডাকে সামনে তাকায় মেহু। সবাই খেতে গেছে যেহেতু স্টেজের দিকটা একটু হালকা জনশূন্য আছে।

” আরফিন ভাইয়া….. কেনো এলে না সেদিন আরফিন ভাইয়া?? দেখলে তো বলেছিলাম না আমাদের ভালোবাসার ফুলও একদিন অকালে ঝরে যাবে, ঝরে গেল। সব কেমন শেষ হয়ে গেল।”
” আমি পারলাম না মেহুপরী, পারলাম না তোকে নিজের করে রাখতে। আজ নিজেকে বড্ড ব্যর্থ মনে হচ্ছে জানিস তো।”

মেহু আর আরফিনের চোঁখ যেন আজ আর বাঁধ মানছে না।

” আমি কি করে বাঁচবো মেহুপরী?? কি করে থাকবো তোকে ছাড়া?? রাতে ঘুম না এলে কে আমার জন্য নুডলস করে দেবে?? কে চোঁখ রাঙিয়ে বলবে আরফিন ভাইয়া তুমি আরেকটা সিগারেট খেলে আমি কিন্তু আর কখনও তোমার সাথে কথা বলবো না বলে দিলাম?? কে থেকে থেকে রাগ করবে আমার সাথে মেহুপরী??? কার মান আমি ভাঙাবো??”

চোখে হাত দিয়ে হুহু করে কেঁদে ওঠে আরফিন। কষ্ট গুলো গলায় যেন দলা পাকিয়ে যাচ্ছে। বুকের বাম পাশটায় অদ্ভুত এক চিনচিনে ব্যাথা অনুভব করছে আরফিন।

” আমাদের সাথেই কেনো এমন হলো আরফিন ভাইয়া?? কি পাপ করেছিলাম আমরা বলো?? ভালোই তো বেশিই ছিলাম। জানো…. জানো কতো করে আম্মু আব্বু কে বলেছিলাম বিয়ে করবো না করবো না শোনেনি কেও আমার কথা। জোড় করে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে আমাকে বিয়ে করতে বাধ্য করে ওরা। ওই বাড়ির কেও মানুষ নয় ভাইয়া কেও মানুষ নয়, মানুষ হলে কেও দুজন ভালোবাসার মানুষকে আলাদা করতে পারে বলো?? অতো মানসিক অত্যাচার করতে পারে??……..প্রথমে আপাই তারপর আমি ও তুমি। ওদের কাছে শুধু ওদের সো কলড মানসন্মান টাই সব। মানসম্মান রক্ষা করার জন্য ওরা নিজেদের ছেলেমেয়েদের খুন করতেও পিছপা হবে না। ঠিক…. ঠিক যেমন ভাবে আমাদের ভালোবাসো কে খুন করেছে।”

হাউ হাউ করে কেঁদে ওঠে মেহু।

” জানো ভাইয়া ওই ঈশান লোকটা যখন….. যখন আমায় ছোঁয় না, আমার যেন মনে হয় আমার গোটা শরীরে যেনো কেও তরল লোহা ঢেলে দিয়েছে। যখন আমার শরীরে কামড় দেয় আমার মনে হয় যেন বিষ পিঁপড়ে আমার শরীরে কামড়ে ছেকে ধরেছে। নিজেকে শেষ করা যদি পাপ না হতো না ভাইয়া আজ তোমরা আমার রিসেপশনে নয় হাসপাতালে আমার মরদেহ দেখতে আসতে।”
” মেহুউউউউ ”

ঠাস

আরফিনের চিৎকার ও মেহুকে চর মারা দেখে ঈশান দুর থেকে ছুটে আসে। আরফিনের সামনেই মেহু কে টেনে নিজের বুকে জড়িয়ে ধরে সে।

” How dare you আরফিন?? তোর সাহস কি করে হয় আমার স্ত্রীকে স্পর্শ করার??”
” স… সরি”
” What sorry?? তোকে তো আমি পরে দেখবো আগে আমার বউ জান কে দেখি।”

ঈশান মেহু কে কোলে তুলে নিয়ে সবার সামনে দিয়েই নিজের রুমে চলে যায়।




অন্যদিকে ছাদে যাবে কি যাবে না দোমনা মনি করে অবশেষে ছাদে যায় মুগ্ধ।

” ইভান আপনি আছেন?? ইভান আমি এসে গেছি ইভান…..”

হঠাৎ বলিষ্ঠ দুই হাত মুগ্ধ কে পিছন থেকে জাপটে ধরে। প্রথমে ইভান ভাবলেও নাকে অন্য সেন্টের ঘ্রাণ এসে পৌঁছাতেই নিকে ছড়ানোর জন্য মোচড়া মুচরি করতে থাকে মুগ্ধ।

” কে??? ছাড়ুন আমায়। ছাড়ুন”
” উফফ উফফ সুন্দরী এতো ছটফট করছো কেনো?? আমার স্পর্শ বুঝি ভালো লাগছে না??
” রেহান আপনি?? ….. কেনো ধরেছেন আমায়?? ছাড়ুন বলছি”
” এতো না না করছো কেনো মুগ্ধ?? ইভান কাছে এলে তো বিশাল মজা লুটো। ওর রক্ষিতা হলেও একটু মজা নাহয় আমাকেও দিলে। নাকি তোমার এই শরীরটা নিংড়ানো অধিকার শুধু ঐ ইভানটার আছে?? আরে সুন্দরী একটা বড় সুযোগ দিয়েই দেখো না, ওই ইভানের থেকেও বেশি সুখ দেবো।”

ধস্তা ধস্তি করতে করতে এক পর্যায়ে মুগ্ধতার গাউনের হাত ছিঁড়ে ফেলে রেহান। শরীরে নোংরা হাতের বিচরণে গা গুলিয়ে ওঠে মুগ্ধর। প্রান ফাটা চিৎকার করে ওঠে মুগ্ধ।

” ইভাআআআআন”



” কি করছিলে আরফিনের সাথে মেহেক??”

প্যান্টের বেল্ট খুলতে খুলতে মেহুর দিকে এক পা এক পা করে এগোতে থাকে ঈশান।

” শুনুন ঈশান আপনি যেমন ভাবছেন তেমন কিছু না….”
” উহু উহু ভয় পেও না বউ সোনা। তোমায় আমি বেল্টের বারি মারবো না।”

ঈশান বেল্ট দিয়ে মেহুর হাত বেঁধে দেয়। তারপর পকেট থেকে একটা ছোটো ছুরি বার করে লাইটার জ্বালিয়ে গরম করতে থাকে।

” খুব সখ তাইনা??? নিজে প্রাক্তন প্রেমিকের সাথে কথা বলার? কোন গালে যেনো ছুঁয়ে ছিলো??”

মেহুর বাম গালে ঈশান গরম ছুরি চেপে ধরে।

” মা গোওওওওওও ”
” চিৎকার করেও লাভ নেই বউ সোনা। তোমার যে অঙ্গ পরপুরুষ ছোঁবে সেই স্থান কে এই ভাবেই পুড়তে হবে ”

#চলবে
#লেখিকা_রাইমা