তোমার নেশায় মুগ্ধ পর্ব-৩০+৩১

0
30

গল্প:+ #তোমার_নেশায়_মুগ্ধ
লেখিকা:- #রাইমা । #পর্ব :-৩০

🥀কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্ক ও মুক্ত মনাদের জন্য🥀

গোটা কমিউনিটি সেন্টারে থমথমে পরিস্থিতি। ছেলের সামনে বসে আহাজারি করে কাঁদছে হুমাইরা বেগম। সামনে তুর্য শুয়ে আছে। তার এক পা ও এক হাত নেই, এক চোখে আবার ব্যান্ডেজ করা। এমন ভয়াবহ দৃশ্য দেখে সবার অন্তর কেঁপে উঠতে বাধ্য। যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে তূর্য। কথা বলতে পারছে না সে। কেউই এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে পারছে না।

“শান্ত হ হুমাইরা। কিছু তো হয়নি তোর ছেলের। বেঁচে আছে……” হামিদুল সাহেব বলেন।
” শুধু বেঁচে টাই আছে বড়ো ভাইজান। দেখো আমার ছেলের হাত পা সব কাটা। কাল পর্যন্ত তো আমার ছেলেটা সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলো গো। হঠাৎ কি এমন হলো গো। ওর চোঁখের দিকে যে আমি তাকাতে পরছি না গো।”

” এতো আদিখ্যেতা করার তো কিছু নেই। আফটার অল আপনার ছেলে তো আর মরে যায়নি।” অনেক্ষণ ধরে নিজেকে আটকানোর চেষ্টা করেও অবশেষে ব্যর্থ হয়ে বলে ওঠে ইভান।

ইভানের কথায় হুমাইরা বেগম উঠে গিয়ে ইভান কে এলোপাথারি চর থাপ্পর মারতে থাকে। তার কলার ধরে টেনে জিজ্ঞেস করে ,

” এই জানোয়ার ছেলে তুই আমার ছেলেকে মেরেছিস তাই না?? কেনো মারলি বল?? কেনো মারলি??”
” হুমাইরা শান্ত হ বোন। কি করছিস?? ছাড় ওকে। ও কেনো মারবে তূর্য কে?? তুই জানিস ও কে??” হামিদুল সাহেব বোনকে থামানোর চেষ্টা করেন।

” এতো মাতৃত্ব বোধ আপনার বত্রিশ বছর আগে সেদিন কোথায় ছিলো মিসেস হুমাইরা?? আজ নিজের ছেলে কে এই অবস্থায় দেখে তো কপাল ঠুকে মরে যাচ্ছেন প্রায়,সেদিন আপনার ছেলে মেয়ে কে যখন আপনার সামনেই মেরে ফেলতে যাছিলো আপনার গুনধর মেজো ভাইজান তখন কোথায় গেছিলো আপনার এই মাতৃত্ব বোধ?? পেটে তো তাদের কেও ন-মাসই ধরে ছিলেন। একটা বারও মন চাইনি রুখে দাঁড়াতে?? কি করে পেরেছিলেন চুপ থাকতে সেদিন?? বলুন??”

ইভানের কথায় থ হয়ে গেছে হুমাইরা বেগম, হামিদুল সাহেব ও ওখানে উপস্থিত সবাই।

” ইভান , বাবা তুমি কি করে জানলে এইসব কথা?? এ কথা তো তোমার জানার কথা না??” হামিদুল সাহেব বলেন।
” নিজের বোন কে জিজ্ঞেস করুন আব্বু, কেনো নিজে ফুর্তি মারার সময় ফুর্তি মেরে দায়িত্ব নেয়ার সময় পিছিয়ে গিয়েছিলেন উনি?? প্রেমিকের সাথে বিছানায় শুতে লজ্জা লাগেনি,কিন্তু ফলস্বরুপ যখন পেটে বাচ্চা আসে তখন সেই বাচ্চা কে জন্ম দিতে লজ্জা লেগেছিলো কেনো?? প্রেম করার সময় মনে হয়নি যে ওনার আব্বাজান মেনে নেবেন না?? নাকি মজা মারতে মজা লেগেছিলো ওনার??”

” এই ছেলে কি সব বলছো তুমি?? তুমি আমাদের মুগ্ধতার স্বামী তাই চুপ করে আছি মনে এই নয় যা ইচ্ছা তাই বলে যাবে আর আমরা শুনে যাবো” মুগ্ধের ফুফা অর্থাৎ হুমাইরা বেগমের স্বামী।

” সেটা আপনি আপনার স্ত্রী কে জিজ্ঞেস করুন। আমি যা ইচ্ছা তাই বলছি নাকি যা বলছি ঠিক বলছি??”
” কি ব্যাপার হুমাইরা তুমি কিছু বলছো না কেনো?? এই ছেলেটা কি সত্যি বলছে? বড়ো ভাইজান আপনি চুপ করে আছেন কেনো?” মুগ্ধের ফুফু।

” কে…… কে তুমি?এতো কথা তুমি জানো কি করে?” হুমাইরা বেগম বলেন।
” আমিই সেই ব্যক্তি যে আপনার ছেলের এই অবস্থা করেছে। আর তাছাড়াও আমার আরেকটা পরিচয় আছে আমিই সেই ছেলে যাকে আপনি ও আপনার বাড়ির লোকেরা জন্মের পর মুখে নুন দিয়ে মেরে ফেলতে চেয়েছিলেন।”

ইভানের কথাটা যেনো বোমের ন্যায় ফাটে বিয়ের বাড়িতে।

” আরেকটা কথা, আপনার ছেলেকে বলবেন যেনো আর কোনোদিনও আমার মুগ্ধের দিকে নজর না দেয়। একবার প্রাণ টুকুনি হয়তো নিয়ে ফিরেছে পরের বার আর সেই সুযোগটাও পাবে না।”

ইভান সানগ্লাস পরে হন হন করে বেরিয়ে যায় সেখান থেকে।
________________

” বাড়ি আছেন চাচী??”
“কে রে??”
” আমি মুগ্ধ চাচী।”
” মুগ্ধ?? কোন মুগ্ধ দেখি??”

টিনের চালা ঘর থেকে এক বয়ষ্কা জীর্ণ মহিলা বেরিয়ে আসে।

“কোন মুগ্ধ…… ওহ্ তালুকদার বাড়ির মাইয়া??”
“হ্যাঁ চাচী। চিনতে পারলেন??”
” হ চিনতে পারুম না ক্যান?? সেই ছোট্ট থাইকা তো তোরে কোলে পিঠে মানুষ করসি,আর তোরে চিনুম না??”
” শরীর কেমন আছে চাচী??”
” আর শরীর রে মা। একা মানুষ, তোর চাচা তো সেই কবে থাইকা আমাগো ছাইড়া চলে গেছে। আর আমার পোলাডা সেও তো……” হুহু করে কেঁদে ওঠেন নির্মল ভাইয়ার মা।
” কেঁদেননা চাচী। কি আর করবেন বলুন কিছু তো করারও নেই। যতদিন আয়ু আছে মানুষতো ততদিনই বাঁচবে।”
” জানিস রে মা একহান কথা আমি ভাবি, নির্মোলডা ক্যান করলো অমন?? কি এমন ঘটনা ঘটছিলো যার লগে ওগো নিজেরে মাইরা ফেলতে হইলো??”
” জানি না চাচী। সত্যিই এতো বছরেও এই উওর খুঁজে পাইনি আমি।”
” এই দেইখো মাইয়া ডা সেই কহন আইসে আর আমি কিনা তারে খাইতে না দিয়ে কিনা বইসা আছি। তুই দারা মুগ্ধ আমি কিছু নাস্তা পানি লইয়ে আসতাসি।”

নির্মলের মা চলে যেতেই মুগ্ধ বাড়িটিকে ঘুরে দেখতে থাকে। দুই কামরা বিশিষ্ট টিনের চালার ঘর।এই বাড়ির উঠোনে ছোটবেলায় কত খেলেছে। যতদিন নির্মল ভাইয়া বেচে ছিলো ততদিন বাড়িটি বড়ো সৌখিন ছিলো। হঠাৎ যেন সব শেষ হয়ে গেল। নির্মলের রুমে এসে এটা ওটা দেখতে থাকে মুগ্ধ। আজ এত বছর পরও চাচী নির্মল ভাইয়ার সবকিছু খুব যত্ন করে যেমনকার তেমন করেই রেখেছে। নিজের অজান্তেই চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে মুগ্ধের। ছোটবেলার একটা কমিকস বই হাতে নিতেই অতীতে ডুব দেয় সে।

পাঁচ বছর আগে,

” নির্মল ভাইয়া ও নির্মল ভাইয়া তোমায় আম্মু ডাকছে। আজ বাড়িতে বিরিয়ানি হয়েছে আম্মু তোমায় যেতে বলেছে।” মুগ্ধ ডাকতে ডাকতে নির্মলের রুমে এসে বসে।
” হুম” নির্মল বইয়ে মুখ গুঁজে উওর দেয়।
“কি হুম?? আম্মু তোমাকে সঙ্গে করে নিয়ে যেতে বলেছে। কি সারাক্ষণ বই পড় বলোতো??”
” বই না পড়লে হবে?? বউ না পড়লে তোর হবু ভাবী কে বিয়ে করবো কি ভাবে??”
” বাব্বাহ বিশাল বিয়ের সখ জেগেছে তো তোমার?? তা আমার এই হবু ভাবীটাকে প্রোপোজ করছো কবে??”
” দ্বারা বোন সবুর কর একটু। অনার্স পাস করে আগে একটা চাকরি পায়। তারপর ডিরেক্ট বিয়ের প্রস্তাব দেবো।”
” তাহলে তো খুব মজা হবে গো নির্মল ভাইয়া।”
” হ্যাঁ তা তো হবে। তবে একটা চিন্তা আছে জানিস তো।”
” যাঃ বাবা এতে আবার কিসের চিন্তা??”
” আরে বাবা তোর হবু ভাবী তো বিশাল বড়লোকের মেয়ে, আমার মত গরীব ঘরের ছেলেকে কি বিয়ে করবে??”
” কেনো করবে না ?? আমার নির্মল ভাইয়া কি কারোর থেকে কম নাকি?? আমি কথা বলব ওনার সাথে। কি যেনো নাম গো আমার হবু ভাবীর??”
“ই……”

” মুগ্ধ মা” নির্মলের আম্মুর ডাকে অতীত থেকে বেরিয়ে আসে মুগ্ধ।

” যায় চাচী।”
” থাক তুই বস। এই নে মা তোর লগে এইটুকুই নাস্তা পানির আয়োজন করতে পারসি। পিঠা খানা খাইয়া কও তো মা,কেমন হইসে??”
” খুব ভালো হইছে গো চাচী। অনেক দিন পর তোমার হাতের পিঠা খাওয়ার সৌভাগ্য হলো।”
” আচ্ছা তুই খা। আমি ভাত চরায়ে দিতাসি। এক্কেরে রাত্রেরে খাইয়া যাবি। জামাই বাবা আবার রাগ করুম না তো??”
” না না চাচী আমি ওনাকে ফোন করে দিচ্ছি। রাতে একবারে খেয়েই যাবো। তবে একটা শর্তে।”
” কিডা শর্ত??”
” আজ তোমার হাতের সিদ্ধ ভাত খাওয়াতে হবে।”
” তুই এতদিন পড়ে আইলি,আর আমি কিনা তোগো সিদ্ধ ভাত খাওয়ামু?? এইডা একহান কথা হইলো??”
” হ্যাঁ গো চাচী প্লীজ না করো না।তোমার হাতের আলু সিদ্ধ, ডাল সিদ্ধ, ডিম সিদ্ধ আর ভাত জাস্ট দারুন। সাথে কাঁচা লঙ্কা। ব্যাস ব্যাস আর কি চাই??”
” আচ্ছা তাই হইবো। তুই পিঠা খানা খাইয়া লো।আমি আসতেসি।”

নির্মলের মা চলে যাওয়ার পর মুগ্ধ আবার সেই বইটা পড়তে থাকে। হঠাৎ সেখান থেকে একটা কাগজ নিচে পরে যায়। অবাক হয়ে সেটা হাতে তুলে নেয় মুগ্ধ। খুলে দেখে একটা চিঠি। পড়তে আরম্ভ করে সে ।

স্নেহের
ছোটবোন মুগ্ধ ,

তুই এই চিঠিতো যখন পড়বি ততক্ষণে আমি এই দুনিয়া থেকে অনেক দূরে চলে যাবো। ভেবেছিলাম কাউকে কিচ্ছু বলবো না, নিশ্চুপে বিদায় নেবো এই স্বার্থপরের পৃথিবী থেকে। কিন্তু আফসোস,পারলাম না। মনের কষ্ট গুলো মনে রেখে দিলে হয়ত শান্তি তে মরতেও পারবো না আমি।

আমি বড্ড ব্যার্থ জানিস তো বোন।এতো ভালোবেসেও নিজের ভালোবাসাকে নিজের করতে পারলাম না। গত দুদিন আগে আমার কাছে একটা প্রাইভেট ফার্মের চাকরির আপনমেন্ট লেটার পেয়েছি। তোকে বলেছিলাম যে চাকরি পেয়েই ওকে বিয়ের প্রস্তাব দেবো, সেই কথা অনুযায়ী আমি ওকে আমার মনের কথা বলি সেদিন। জানিস বোন ও বলল ও নাকি আমায় ভালোবাসে না, কোনোদিনই ভালোবাসে নাই। কিন্তু তারপর ও আমায় যা বলো সেটা শুনে যেন মনে হলো আমার গোটা জীবনটাই যেনো মিথ্যা। ও বললো ও নাকি আরফিনের সাথে রিলেশনে আছে বিগত দশ মাস ধরে।

জানিস সেই মুহূর্তে আমি নিজের কাউকেও বিশ্বাস করতে পারিনি। আমার ভাইসম বেষ্ট ফ্রেন্ড কিনা আমারই ভালোবাসার মানুষের সাথে প্রেমের সম্পর্কে আছে?? আমি ওর কথা বিশ্বাস করতে পারিনি।বার বার অনেক অনুরোধ করতে থাকি যাতে ও আমায় একটু ভালোবাসে।তখন ও আমার ওর আর আরফিনের কিছু ছবি দেখায়। ওই ছবিগুলো দেখে বোঝা যাচ্ছিলো যে ওরা একে অপরের কতটা ক্লোজ।আমি বলে বুঝাতে পারবো না রে আমার কি হচ্ছিলো তখন।আমার বুকের ভেতরটা কেমন ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছিল।

আমি গিয়ে আরফিন কে জিজ্ঞেস করি,যে ও কেনো করলো ওরকম আমার সাথে? তখন জানিস ও কি বললো?? ও বললো সব কিছুতে আমি ওর থেকে এগিয়ে থেকেছি সর্বদা। সেটা পড়াশোনা হোক বা খেলাধূলা আরফিন সবসময় নির্মলের পিছনে ছিলো। তাই ভালোবাসার খেলায় ও আমার আগে স্থান পেয়ে আমায় নাকি হারাতে চেয়েছিলো। তাই ও আমার ভালোবাসা কে একান্ত নিজের করে নিয়েছে।

আচ্ছা হ্যাঁ রে বোন তুই বল না রে আমি কি ভুল করেছিলাম?? কেনো এতো ভালোবাসার পরেও ও আমাকে ভালোবাসলো না?? কেনো আরফিন আমায় ঠকালো?? ও তো প্রথম থেকে সব জানতো যে আমি ওকে কত ভালোবাসি তবুও শুধুমাত্র আমার সাথে শত্রুতা করে আমাকে অতো বড়ো আঘাত দিতে পারলো??আমি কখনো ওকে বন্ধু ভাবিনি।সবসময় নিজের ভাই মনে করে এসেছি,আর শেষে কিনা ওই আমাকে ঠকালো??

আর কি নিয়ে আমি বাঁচবো?? আমার সবটা জুড়েই তো ও ছিলো। এই দুই দিন ধরে আমার ওপর দিয়ে কি গেছে তা হয়তো তোকে বলে বোঝানোর নয়।আমি আর পারছি না। নিজের চোখের সামনে নিজের ভালোবাসাকে প্রতি মুহূর্তে অন্যের সাথে সহ্য করা যে কি পরিমান বেদনা দায়ক তা হয়তো যাদের সাথে হয় তারাই জানে।

জানিস ছোটো বেলায় যখন মায়ের কাছে ছোটো বোন চেয়ে বায়না করতাম তখন বকতো খুব। আসলে গরিবের ঘরে এক সন্তানই মানুষ হয়না আবার আরেকটা।আমার খুব মন খারাপ হতো আমার কোনো ছোটো বোন নেই বলে। কিন্তু যেদিন ছোট্ট তোকে চাচিমনির কোলে দেখেছিলাম সেদিন আমার মনে হয়েছিল আল্লাহ্ যেনো আমার ছোটো বোনের ইচ্ছাটা পূরণ করে দিলো। তোদের বাড়ির কাজের বুয়ার ছেলে হওয়ার পরেও তুই আমাকে নিজের ভাইয়ার মতো ভালোবেসেছিস রে বোন।

তোর এই অভাগা ভাইয়া কে ক্ষমা করে দিস পারলে। তোকে কথা দিয়েছিলাম যে তোর বিয়েতে বড়ো ভাইয়ের সব দ্বায়িত্ব আমি পালন করবো,সেই কথা আর রাখা হলো না। এই একুশ বছরের ছোটো জীবনে বড্ড হাঁপিয়ে উঠেছি রে বোন। আর কোনোদিনও তো সাথে ফুচকা খাওয়া হবে না। চাচিমণির হাতের বিরিয়ানি খাওয়া আর হবে না। ভালো থাকিস। আর পারলে আমার আম্মু টাকে একটু দেখে রাখিস। বলতে পারিস স্বার্থপরের মতো কেনো ছেড়ে চলে যাচ্ছি??? তুই এখন বুঝবি না যখন জীবনের সব থেকে বড় বিশ্বস্থ মানুষটা বিশ্বাসঘাতকতা করে, তখন কতটা নিঃস্ব লাগে জীবনটা।

ইতি,
তোর নির্মল ভাইয়া।

(শব্দ সংখ্যা –১৬৪২)

#চলবে
#লেখিকা_রাইমা

গল্প:- #তোমার_নেশায়_মুগ্ধ
লেখিকা:- #রাইমা।#পর্ব:-৩১

🥀কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্ক ও মুক্তমণাদের জন্য🥀

সময় নিজের গতিতে এগিয়ে চলে। কোনকিছুর জন্যেই তা থেমে থাকে না। দেখতে দেখতে দুই দিন পেরিয়ে গেছে।

ব্যালকনি তে দোলনার উপর বসে গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে আছে মুগ্ধ। ইভান যে কখন তার পাশে এসে বসেছে তা তার খেয়ালই নেই। বউকে এভাবে অন্যমনস্ক দেখে মাথায় দুষ্টুমি বুদ্ধি এসে ভর করে ইভানের। হঠাৎ করে স্ত্রীর গালে একটা আলতো কামড় দেয় সে। স্বামীর এহেন কার্যে নিজের হুশ ফিরে পেতেই চমকে ওঠে মুগ্ধ।

” এটা কি ছিলো??”
” কোনটা বেইব??”
” এই যে আপনি যেটা করলেন? কেনো করলেন?ঠিক করলেন?এমন কেও কি করে?”

ইভান উত্তরে মুগ্ধের কোমর ধরে ওকে টেনে নিজের কোলের ওপর নিয়ে আসে। মুগ্ধের কানের লতিতে মুখ ঠেকিয়ে বলে,” বউ আমার, বউয়ের গাল আমার, আমার যখন ইচ্ছা আমি তখন কামড়াবো। পারলে টুপ করে গিলে খেয়ে নেবো।”

ইভানের কথায় চোঁখ মুখ রাঙা হয়ে ওঠে মুগ্ধর। মনে মনে লজ্জা পেলেও মুখে সে তা প্রকাশ করে না।

” ছাড়ুন আমায়। এভাবে ধরেছেন কেনো??”
” আমার বউ আমার বউয়ের কোমড়,আমার যখন ইচ্ছা তখন জড়িয়ে ধরবো।”
” ধুর ছাই ভাল্লাগেনা। ছাড়ুন তো”

ওদের ধস্তাধস্তির মাঝেই রুমে ঢুকে আসে তানহা। এসে এরকম দৃশ্য দেখতে হবে তা সে কল্পনাও করেনি। ভারী অপ্রস্তুত হয়ে যায় সে। বউয়ের সাথে খুনসুটির মাঝে সেদিকে চোঁখ পরতেই ভুরু কুঁচকে আসে ইভানের।

” তানহা তুই??”

ইভানের কথায় তার চোঁখ অনুসারে তাকায় মুগ্ধ। তানহা কে সেখানে দেখে গা–পিত্তি জ্বলে ওঠে তার। এতো বেহায়া কেনো এই মেয়ে? জানে না যে অন্যের রুমে ঢুকতে গেলে নক করতে হয়?

” হ্যাঁ তোর সাথে একটু কথা ছিল।একটু বাইরে আয়।”
” দাঁড়া যাচ্ছি।”

ইভান মুগ্ধ কে সরিয়ে উঠতে নিলেই মুগ্ধ আর শক্ত করে গলা জড়িয়ে ধরে ইভানের। কোলেই বসে থাকে সে।

” কি হলো বেইব নামো।”
” আমি নামবো কেনো? আপনাদের যা কথা বলার এভাবেই বলুন।”

মুগ্ধের কথায় ইভান হতবম্ব। কি বলে এই মেয়ে??

” মুগ্ধ কি হচ্ছে কি? তানহা সামনে দাঁড়িয়ে। নামো। ওর দরকার আছে।”
“এমন কি দরকার যে বউয়ের সামনে বলা যাবে না??”
” কিছু কথা তো থাকতেই পারে মুগ্ধতা। সবকিছু কি সবার সামনে বলা যায়?” তানহা বলে।

তানহার কথায় মুগ্ধর কাছে কেমন পিঞ্চের মতো শুনালো।

” আপনার সাথে ইভানের এমন কোনো কথা থাকতে পারে না তানহা আপু যেটা আমার সামনে বলা যাবে না।……… আর যদি থেকে থাকে তাহলে বলতে হবে আপনার উদ্দেশ্য ভালো না।”

” মুগ্ধতাআআআ” চিৎকার করে তানহা।
” তানহাআআআ। তুই মুগ্ধের উপর গলা তুলছিস?!” ইভান বলে।
” আর ওই মেয়ে কি বলল সেটা তুই শুনলি না ইভান??
” তোর কি বলার আছে বল।”
” তোর বউ না বড্ড বেহায়া মেয়ে, অন্যের সামনে কেমন তোকে বরের সাথে ঢোলা ঢলি করছে।”

” তা আপনি যখন বিনা অনুমতিতে এক বিবাহিত দম্পতির রুমে ঢুকলেন তখন আপনি এটা কেনো ভাবেননি যে ভেতরে সেই স্বামী স্ত্রী ঢলা ঢলি করতে পারে??” মুগ্ধ বলে।

” আমি আগেও কখনও এই রুমে আসতে অনুমতি নিইনি….”তানহা বলে।
” সেটা আগের কথা ছিলো তখন ইভান সিঙ্গেল ছিলেন। এখন উনি বিবাহিত। আমিও ওনার সাথে এই রুমে থাকি,এটা আপনার খেয়াল রাখা উচিত ছিলো।” মুগ্ধ ইভানের কোল থেকে উঠে দাড়ায়ে বলে।
“তোর বউ আমায় কথা সোনাচে তুই কিছু বলবি না ইভান??”
” মুগ্ধ ভুল কিছু বলেনি তানহা। তোর কি বলার আছে সেটা বল।”

তানহা রাগে ফুঁসতে থাকে,” ইসহাক ও ইসরাত এখানে কিছুদিন থাকবে। আমাকে ফ্রান্সে যেতে হবে তাই।”
” কেনো? আপনার ছেলে মেয়ে এখানে থাকবে কেনো?? আপনি আপনার সঙ্গে নিয়ে যান দরকার পড়লে।” মুগ্ধ ফট করে উওর দেয়।
” ঠিক আছে মমের কাছে রেখে যা ওদের।” ইভান বলে তানহা কে।
” ওরা ওদের পাপার সাথে একই রুমে থাকতে চাই।”
” সেটা সম্ভব নয়।”
” বাচ্চারা জেদ করছে ইভান। আর প্রবলেমের কি আছে?”
” এখানে শোয়ার জায়গা নেই।”
” কেনো?? তুই আর বাচ্চারা খাটে শুয়ে পড়বি।”
” আর মুগ্ধ??”
” মুগ্ধতা সোফায় বা অন্য রুমে শোবে। আর তাছাড়াও কয়েকটা দিনেরই তো ব্যপার। কি এসে যায়?”

ঠাসঠাস

” অনেক্ষণ ধরে তোর ঔদ্ধত্য বরদাস্ত করছি। তোর সাহস কি করে হয় আমার আর মুগ্ধ কে আলাদা করার চেষ্টা করার??”
” তুই আমায় মারলি ইভান??”
” একটা থাপ্পর অনেক কম ডোজ তোর জন্য। যখন তোর দরকার ছিলো তখন আমি তোকে সাহায্য করিনি?? তোকে বিয়ে করে ইসরাত কে বাবার পরিচয় দিইনি?? আর প্রতিদানে তুই কি করছিস? আমার থেকে আমার মুগ্ধ কে আলাদা করতে চাইছিস। কেনো??”
” তুই কেনো অতো সব সময় মুগ্ধ মুগ্ধ করিস বলতো??”
” ও আমার স্ত্রী।”
” স্ত্রী তো আমিও ছিলাম, কই কখনও তো তোকে আমাকে নিয়ে অতো ব্যাকুল হয়ে দেখিনি??”
” কারণ তোকে আমি কোনোদিনই ভালোবাসিনি। বিয়েটা শুধু মাত্র একটা শর্তের উপর হয়ে ছিলো।”
” কেনো ভালোবাসিসনি আমাকে?? একটা বার কি আমায় ভালোবাসা যেতো না??”
‘” এসব কি বলছিস তুই তানহা?? তুই আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড ছিলিস। তোকে নিয়ে আমি কোনোদিনই ওইরকম ভাবিনি। আর ডিভোর্সের আগে যখন মম তোকে বলেছিলো তুই ওই বিয়েতে থাকতে চাস কিনা ,তুই তো সোজ সাপটা বলেছিলি যে না তুই ডিভোর্স চাস। তাহলে এখন কেনো আমার এর মুগ্ধের মাঝে আসছিস??”
” হ্যাঁ আমি তখন ডিভোর্স চেয়েছিলাম। চেয়েছিলাম কারণ তখন আমার মনে হয়েছিল নইলে তোর সাথে বেইমানি করা হবে। আমি যে তোকে ভালোবেসে ফেলেছি সেটা আমি তখন জানতাম না।”

তাহনা হাউ হাউ করে কাঁদতে কাঁদতে মাটিতে বসে পরে।

” একবার ইভান একবার কি আমায় ভালোবাসা যায় না??”
” শান্ত হ তানহা। বাচ্চামো করিস না। আমি মুগ্ধ কে ভালোবাসি। ও ছাড়া আমার কোনো অস্তিত্ব নেই। আমার থেকে ওকে আলাদা করা মনে জানবি তুই আমাকে মরতে বাধ্য করবি। ওকে ছাড়া আমি বাঁচতে পারবো না রে। ও আমার জীবনে না থাকলে আমি আমার এই জীবনই রাখবো না।”
“না ইভান।আই এম সরি । আমার ভুল হয়ে গেছে। আমায় ক্ষমা করে দে। আমি আর কখনও এমন করবো না,কথা দিচ্ছি। মুগ্ধতা আম সরি। আমার উচিত হয়নি…… আমি আর কোনোদিন তোমাদের মাঝে আসবো না। সরি।”

তানহা রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
______________

” আরফিন ড্যাড রাজি হয়ে গেছেন। তবে……”
” রাজি হয়ে গেলেন??”
” হ্যাঁ ড্যাড রাজি হয়েছেন আপনাকে টাকা ধার দিতে যাতে আপনাদের ব্যবসা আরো বড়ো হতে পারে। কিন্তু….”
” কি কিন্তু ইয়ানা??”
” কিন্তু আরফিন ড্যাড টাকা দেওয়ার আগে আপনাদের ব্যবসার কাগজ পত্র দেখতে চাইছেন। মানে আপনারা কোনো দুনম্বোরি করবার করেন কিনা সেটাই আরকি….”
” ওহ্ মাত্র এই ব্যাপার? আমি ওই বেলাতেই ইভান কে তোমার ড্যাড কে সব কাগজের জেরক্স কপি দিয়ে আসবো।”

ইয়ানা গিয়ে আরফিন কে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে।

” ওহ্ তোমার ড্যাড? খালি আমারই ড্যাড নাকি?? আর তোমার কিছু লাগেন না??”

আরফিন ঘুরে বউয়ের কাঁধে হাত রেখে মাথায় মাথা ঠেকিয়ে বলে, ” হ্যাঁ তাইতো, আমার তো খুব বড়ো ভুল হয়ে গেছে। শুধু তোমার ড্যাড নয় সে তো আমারো ড্যাড।”

ধীরে ধীরে আরফিন এগোতে থাকে থাকে ইয়ানার ঠোঁটের দিকে। একটু অপ্রস্তুত হলেও পরক্ষণেই বাধ্য হয়ে স্বামীকে সঙ্গ দেয় ইয়ানা।
________________

রাতের আকাশে চাঁদের আলোয় আলোকিত হচ্ছে গোটা শহর। মধ্যরাতে চারিদিকে নিস্তব্ধতার মধ্যেও স্ত্রীর গুনগুন করে গাওয়া গানে যেনো মোহিত হয়ে যাচ্ছে ঈশান। বউকে বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরে চুলে বিলি কেটে দিচ্ছে সে।

” কি ভাবছেন ঈশান??”
” থামলে কেন মেহেক?? ভালো গাইছিলে তো।”
” গাইলাম আর কোথায়? এমনিই তো গুন গুন করছিলাম। আপনার ভালো লেগেছে??”
” হ্যাঁ। আচ্ছা মেহেক তুমি আমাকে ভালোবাসো??”
” হঠাৎ এই প্রশ্ন কেনো??”
” না আসলে কখনও নিজে থেকে বলোনি তো তাই ভাবলাম আমিই জিজ্ঞেস করি। বাসো??”
” সত্যি বলতে এখন আর আপনাকে আগের মতো অসহ্য লাগে না। বলতে পারেন এখন ভালো লাগে আপনাকে। কিন্তু ভালোবাসি কিনা জানি না।”
” এখনো আরফিন কে ভালোবাসো নাকি??”
” না এই ব্যাপারে আমি সিওর ভাবে বলতে পারি ঈশান। আমি আরফিন ভাইয়া কে ভালোবাসি না। আর তাছাড়াও আমি চাই আপনার সাথে সংসার করতে। জীবনে একটা স্থিতি আনতে। আপনিও কোনোদিন আমাকে দূরে ঠেলে দেবেন না তো ঈশান?? আমার দেখা সংসারের স্বপ্ন ভেঙে দেবেন না তো আপনি??”

উত্তরে ঈশান চুপ করে থাকে। শুধু একটা গভীর চুম্বন এঁকে দেয় মেহুর কপালে সে।
________________

” এখনো রেগে আছো Snowflake ??”

মুগ্ধ কে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে কাঁধে থুতনি রেখে জিজ্ঞেস করে ইভান।

” কি হলো বলো??………. আরে বাবা তানহা আর ইসরাত ফ্রান্স চলে যাচ্ছে কালকে। লাইফ টাইমের জন্য। আর হয়তো কখনও দেশে আসবেও না। তোমাকে আর ওকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে না……”
” আপনি যে আমার ফুফুমণির ছেলে সে কথা আমাকে আগে বলেননি কেনো ইভান??”

ইভান ভুরু কুঁচকে আসে মুগ্ধের কথা শুনে। তার জীবনের সবথেকে স্বার্থপর ও জঘন্য মহিলাটিকে ফুফুমনি বলে সম্বোধন করছে কেনো মুগ্ধ? মুগ্ধ কে ছেড়ে সরে আসে ইভান।

” এতে আবার বলার কি আছে??”
” কারণ আপনার স্ত্রী হিসাবে এটা আমার জানার অধিকার।”
” এমন অনেক কিছুই আছে যা তুমি এখনো জানো না।”
” কেনো ইভান??কেনো আমার থেকে এতো লুকোছাপা?? এতো রহস্য কেনো আপনি আমার থেকে লুকিয়ে রাখেন বলুন তো??”
” আস্তে কথা বলো মুগ্ধ। মম ড্যাড শুনতে পাবে।”
” শুনলে শুনুক। এসে থেকে আমি এত দুর্ব্যবহার সহ্য করেছি বাড়ির সবার, কারণ আপনি হলেন আমার ফুফুর সন্তান। নিজের স্বামীর বিয়ের আগের সন্তানের বউ নিজের স্বামীরই প্রাক্তনের ভাইয়ের মেয়ে হবে তা আপনার মম মানতে পারেননি।”
” কেনো আমায় তুলে নিয়ে এসেছিলেন ইভান?? কেনো আমায় বিয়ে করেছিলেন??”

ইভান রাগে মুগ্ধের চোয়াল খামচে ধরে। তাকে ঠেলতে ঠেলতে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরে।

” এক কথা বার বার কেনো বলো মুগ্ধ?? আমি তোমায় ভালোবাসি বোঝোনা তুমি??”
” তাহলে বলুন আপনাদের চিলে কোঠাযর ঘরে ওই আপুটা কি করে এলো ইভান??”

ইভান অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে। মুগ্ধ কে ছেড়ে সরে আসে।

” কো…. কোন আপু?? একবার তো বলেছি ওখানে কেউ ছিলো না।”
” ওখানে আমার নির্মল ভাইয়ার হত্যাকারী ছিলো।”
” মুখ সামলে কথা বলো মুগ্ধ। কে তোমার নির্মল ভাইয়ার হত্যাকারী??”
” ওই আপুটা আর আমার ভাইয়া। ওরা দুজন মিলে আমার নির্মল ভাইয়ার বিশ্বাস ভেঙ্গেছে যার জন্য নির্মল ভাইয়া নিজেকে শেষ করে দিতে বাধ্য হয়েছিল।”

হাউ মাউ করে কাঁদতে কাঁদতে মাটিতে বসে পরে মুগ্ধতা। ইভান গিয়ে মুগ্ধ কে বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরে। মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে।

” শান্ত হও মুগ্ধ। আমি জানি তোমার খুব কষ্ট হচ্ছে। সব পাপীরা শাস্তি পাবে। আমি তোমায় কথা দিচ্ছি আমি নিজের হাতে সব পাপীদের কে শাস্তি দেওয়াবো।”
” আরফিন নামক জানোয়ারটাকে শাস্তি দিন ইভান। ও একটা খুনি ওকে চরম শাস্তি দিন।”
” ওর পাপের দিন ফুরিয়ে এসেছে মুগ্ধ ওর উলটি গিন্তি শুরু” মনে মনে বলে ইভান।

ইভান মুগ্ধ কে কোলে তুলে বিছানায় নিয়ে গিয়ে শুইয়ে দেয়। বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে ইভান। স্বামীর ভালোবাসার আবেশে চোঁখে ঘুম ভর করে মুগ্ধের। স্বামীর বুকে মাথা রেখে ঘুমের দেশে পাড়ি দেয় সে।

তিন জুটিই নিজেদের বর্তমান সময়ে এতোটাই বিভোর, যে তারা হয়তো জানেই না যে আগামী দিনে কি ঝড় আসতে চলেছে।(গল্পের আসল লেখিকা রাইমা)
__________

পরের দিন এয়ারপোর্টে মেয়ের সাথে ফ্লাইটের অপেক্ষা করছে তানহা। হঠাৎ সামনে অনাকাঙ্খিত মানুষটিকে দেখে অবাক হয় সে। চোখের সানগ্লাসটা খুলে জিজ্ঞেস করে,

” মুগ্ধতা?তুমি এখানে??”
” আপনি চলে যাচ্ছেন কেনো তানহা আপু??”
” এই বলতেই এখানে এসেছো বুঝি??”
” না তবে। মনের ভেতরের কৌতূহলটাকে আর দমাতে পারিনি।”
” কিসের কৌতূহল??”
” আপনি আপনার মেয়ে কে নিয়ে সারাজীবনের জন্য ফ্রান্সে চলে যাচ্ছেন, তাহলে আপনার ছেলে ইসহাকের কি হবে?? ওকে আমাদের বাড়িতে কেনো রেখে যাচ্ছেন??”
” ইসহাক ওর নিজের লোকেদের কাছে থাকবে না তো কার কাছে থাকবে?”
” মা…. মানে??”
” মানেটা ইভান তোমায় সময় মতো বুঝিয়ে দেবে। এখন আমাদের যেতে হবে। ফ্লাইটের আনাউন্সমেন্ট করে দিয়েছে।”

কয়েক পা এগিয়ে গিয়ে হঠাৎ থমকে দাঁড়ায় তানহা। পিছনে ফিরে তাকায় সে।

” তবে একটা কথা বলবো মুগ্ধ। ইসহাকের সাথে আমার কোনো রক্তের সম্পর্ক নাই। ও তোমার রক্তের কেউ।”

(শব্দ সংখ্যা –১৭৫৬)

#চলবে
#লেখিকা_রাইমা