#তোর_মন_পাড়ায়
পর্ব১২
#ইস্পিতা_রহমান
পায়ের ব্যথা ও যন্ত্রনায় বিছানায় শুয়ে ছটফট করছে রায়াত।আঞ্জুমান আরা গরম পানির সেক দিয়ে দিচ্ছে।অর্কভ ডাক্তারকে সদর দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিতে গেছে।রায়াতকে নিয়ে যখন গাড়িতে উঠবে তখনি রায়াতকে সায়ান ডেকে উঠে।অর্কভ গাড়ির দরজা খুলতেছিলো। সায়ানের ডাকে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো।রায়াতের দিকে এগিয়ে আসছে ও।অর্কভ চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,
–তোর আসিক রেডিই থাকে?
অর্কভ গাড়িতে উঠে বসলো।রায়াত সায়ানের সাথে কথা বলছে ভেতর থেকে তা অগ্নিচোক্ষে দেখছে অর্কভ।হর্ণ বাজালো।রায়াত চমকে উঠলো।সায়ান রায়াতের পেছনে তাকালো।অর্কভ আবার হর্ণ বাজালো।রায়াত সায়ানের সাথে আর কথা বাড়ালো না।ওকে বিদায় দিয়ে দ্রুত এসে গাড়িতে বসলো রায়াত।অর্কভ গাড়িটা বাড়ির রাস্তায় না নিয়ে অন্যদিকে ঘোরালো।তা দেখে ভ্রু কুঁচকে অর্কভের দিকে তাকালো রায়াত।
–বাড়ির রাস্তা তো এদিকে না।কোথায় যাচ্ছেন?
–তোকে শাস্তি দিতে।
আকুতির স্বরে রায়াত বলল,অর্কভ ভাই,এবারের মতো মাফ করে দেন না।আর জীবনেও কারোর লাভ লেটার এনে আপনাকে দেবো না।
অর্কভ কোন জবাব দিলো না।গাড়ি গিয়ে নদীর ধারে থামালো।ভয়ে ভয়ে রায়াত গাড়ি থেকে নামলো।নদীর ধারে কেনো নিয়ে এসেছে ওকে?তবে কি ওকে নদীর পানিতে চুবাবে নাকি?ভীত স্বরে বলল রায়াত,
–এখানে কেনো নিয়ে আসলেন অর্কভ ভাই?
–মাঝ নদীতে গিয়ে তোকে রেখে চলে আসবো।
–অর্কভ ভাই প্লিজ প্লিজ প্লিজ।আমি পানিতে ভয় পাই।প্লিজ অর্কভ ভাই এমন শাস্তি দিয়েন না। এই কান ধরছি।
–বেশ,কান যখন ধরেছিস তবে কান ধরে ১০০বার উঠবোস কর।
–কিহ?এতো বার কেনো?
–কারন ওই মেয়েটা ১০০ শব্দের প্রেমপত্র লিখেছে তাই।
বিরবিড়িয়ে রায়াত বলল,মরার ১০০ শব্দই লিখতে হলো তোকে খালাম্মা।শুধু আই লাভ ইউ লিখতে হতো না তাহলে তিনবার কান ধরে উঠবোস করতে হতো।
–বিড়বিড় করে কি বলিস?
–মাফ করে দেন না।
–কোন মাফ নাই।
–আমি ফুপুকে বলে দিবো।
–কান ধরে উঠবোস করবি নাকি নৌকা করে নিয়ে গিয়ে মাঝ নদীতে বৈঠা ছাড়া নৌকায় রেখে আসবো তোকে?
—নায়ায়ায়া।উঠবোস করছি কিন্তু একটু কমাই দেন না।
–একটা করে কথা বাড়াবি,তো একটা বেশি করে কান ধরে উঠবোস করা লাগবে।
রায়াত আসে পাশে তাকিয়ে দেখলো কেউ আছে কিনা।কেউ নেই দেখে কান ধরে উঠবোস করতে শুরু করলো।অর্কভ আঠারো পর্যন্ত গুনে ফোনে কথা বলতে বলতে একটু সাইডে গেলো।রায়াতকে বলে গেলো কন্টিনিউ করতে।কথা শেষে ফিরে এসে দেখলো রায়াত মাটিতে লুটিতে পড়ে আছে।ছুটে গিয়ে রায়াতের মাথাটা কোলের উপর তুলে নিলো।মুখের আলতো করে থাপ্পড় দিতে দিতে উদিগ্ন হয়ে বলল,
–ইফতা?এ্যাঁই ইফতা?কথা বল?ইফতা?
কড়া রোদে কানধরে উঠবোস করতে গিয়ে মাথা ঘুরে পরে গেছে ও। অর্কভ ওকে পাঁজাকোলা তুলে নিয়ে গিয়ে গাড়িতে বসালো।বোতল এনে ওর মুখের পানির ঝাপটা মারলো।জ্ঞান ফিরলো ওর। চোখ মেলে তাকাতেই আতংকিত হয়ে বলল,পানি?পানি কোথা থেকে এলো?আমায় নদীর মাঝে নিয়ে এসেছেন নাকি?
–গাড়িতে আছিস তুই।ভয় নেই।
–আটষট্টিবার কান ধরে উঠবোস করেছি।
বাড়ি আসার পর রাতে পায়ে ব্যাথা আর যন্ত্রনা শুরু হয়ে যায়।অর্কভ নিজেই গিয়ে ডাক্তার নিয়ে আসে।ডাক্তারকে এগিয়ে দিয়ে এসে যখন রায়াতের ঘরে ঢুকছে অর্কভ তখন শোনে রায়াত আঞ্জুমান আরাকে কাতর স্বরে বলছে,
–ফুপু,তোমার ছেলেকে যদি আজ তুমি শাস্তি না দাও তাহলে তোমার সাথে কোন কথা নাই বলে দিলাম।
গলা পরিষ্কার করার মতো শব্দ করে অর্কভ ভেতরে ঢুকলো।মুখ ভেংচি কেটে রায়াত অন্যপাশ ঘুরে শুলো।অর্কভ বলল,
–মায়ের কাছে আমার নালিশ দিচ্ছিস?
আঞ্জুমান আরা অর্কভকে শাসানোর মতো করে বলল,এইটা তুই একদম ঠিক করিস নি অর্কভ।কি এমন দোষ করছে মেয়েটা?একটা চিঠিই তো এনে দিয়েছে।
–পিয়নগিরি করতে ওকে কে বলেছে?যার তার চিঠি এনে আমার হাতে দেয়।কত্ত বড় শয়তান।
–চিঠি দিছে দিছে।তুই প্রেম না করলেই তো হলো।
–আমি প্রেম করবো না কে বলছে?আমি প্রেম করবো তো।
অমনি রায়াত ঘুরে ওদের দিকে তাকালো।বলল,দেখছো ফুপু,দেখছো?প্রেম করবে অথচ আমাকে শুধু শুধু কান ধরালো।আমি কি সেই ছোটবেলার মতো ছোটো আছি এখন?
ভেঙিয়ে অর্কভ বলল, নায়ায়ায়া তুই ছোট নেই।বাড়ির সকলে এখনো তোকে গদগদ করে।দামড়ি হয়ে গেছিস তাও সবার গদগদ যায় না।বিশেষ করে আমার মা।
পাশে রায়াতের দাদিমা অর্থাৎ অর্কভের নানিমা বলল,দামড়ি তো তোমার জন্যই হয়ছে নানুভাই।সেই কবে বিয়ে দিছি তোমাদের এতদিনের তিন চারটা গেদাগেদী হয়ে যেতো।বুড়ি হইলে তোমার জন্যই হইছে।
দাঁত কিড়মিড় করে চেঁচিয়ে রায়াত বলল,দাদিমায়ায়া।
দাদিমা হেসে বলল–লজ্জা পাইছে দেখো ছেমড়ি।ও নানাভাই কও দেখি ফুলসজ্জা খাট সাজাবো নাকি?
–উফফ নানিমা তুমিও না।
বিরক্তির সহিতে বলে রায়াতের রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো অর্কভ ও ওষুধ কিনতে বন্ধু রিসাদের দোকানে গেলো।
পায়ের ব্যথায় দুইদিন আর ভার্সিটিতে গেলো না রায়াত।অর্কভ কাজে যাওয়ার আগে কাজ থেকে ফিরে দুইদিনই ভালই খোঁজ নিলো ওর।আজও বাড়ি ঢুকে সোজা ওর রুমে গেলো।রায়াত পড়ার টেবিলে পড়ছিলো।অর্কভ ওর মাথায় গাট্টি ওর বিছানায় বসলো।রায়ায় রাগি চোখে তাকালো।
–ব্যথা কমছে নাকি হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে হু?
–মজা নিচ্ছেন?নেন মজা নেন।পুরা দুনিয়া এখন মজা নিচ্ছে।এখন আপনিও নেন।
রায়াতের একটা বই টেনে নিয়ে নেড়েচেড়ে দেখতে দেখতে
বলল কেন কি হয়েছে?
রায়াত ফোনটা বের করে একটা ভিডিও দেখালো।ভিডিওটা দেখে বিছানায় গড়াগড়ি খেলো অর্কভ। রায়াত রাগে ফুসতেছে।অর্কভ হাসি থামিয়ে স্বাভাবিক হয়ে বলল,
–কোন বুদ্ধিমান লোক এই ভিডিওটা করছে রে।তাকে নোবেল দিবো।যদিও অনেক দূর থেকে জুম করে ভিডিও করছে।তোকে আমাকে বোঝা যাচ্ছে না।কিন্তু তোর কানে ধরা ভিডিওটা ভাইরাল হয়ে গেছে হাহাহাহা।
–আপনি পুলিশ না।শয়তানের নানা।এখানে যদি আমার চেহারা বোঝা যেতো তাইলে আমার মান-সম্মান সব মাঠে মাঠে হয়ে যেতো।
অর্কভ আর কিছু বলল না।হাসতে হাসতে উঠে চলে গেলো।কিন্তু পরেরদিন অফিসে গিয়ে প্রথম কাজ যেটা করলো তা হলো,রায়াতের কান ধরা ভিডিও কে ছেড়েছে তার খোঁজ লাগাতে।আর সামাজিক মাধ্যমের সব সাইড থেকে এই ভিডিও ডিলিট করে দিতে।অনেক দূর থেকে জুম ভিডিও করে ভিডিও করার কারনে হয়তো ওদের চেহারা বোঝা যাচ্ছে না।তবও রায়াতের কোন ভিডিও ফেসবুকে থাকবে না।
চলবে…
#তোর_মন_পাড়ায়
পর্ব১৩
#ইস্পিতা_রহমান
ভার্সিটির ক্লাস শেষে মাইশার সাথে করে রিকশায় বাসায় ফিরছিলো রায়াত।পথিমধ্যে দেখলো একদল ছেলেকে পেটাচ্ছে অর্কভ।রাস্তায় তাই ভীড় জমে গেছে।রিকশা বেরোতে পারলো না।মেজাজ খারাপ হলো রায়াতের।এই অর্কভ ভাইকে রাস্তার মাঝেই মাইরপিট করতে হবে।পুলিশ সে,সো ধরে নিয়ে গিয়ে থানায় মারুক।তা না এখানেই ধুমধাম বসিয়ে দিচ্ছে।বিরক্ত হয়ে মাইশাকে রায়াত বলল,
–বালের পুলিশ একটা।
–তোরই তো ভাই।
–এই জন্যই তো গালি দিলাম।
–সামনে দিতে মারাও না তাই আড়ালে-আবডালে দিচ্ছোস।
–পাগল?কান ধরে উঠবোস করার আর শখ নাই আমার।
মাইশা আর কিছু বলল না।শুধু হাসলো।ওরা দেখলো পাশের চায়ের দোকান থেকে কিছু লোক বাহবা দিয়ে অর্কভ সম্পর্কে বলাবলি করছে,আসলেই থানায় এবার একটা ভালো অফিসার এসেছে।বখাটে ছেলেগুলা রাস্তায় মেয়েগুলোকে কিভাবে ইভটিজিং করতে ছিলো।দিক কয়টা আচ্ছামত ধোলাই।সারাদিন স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে মেয়েগুলাকে ইভটিজিং করে।
পাশে থেকে আরেকজন বলল,ঠিকি বলেছেন ভাই।এই অফিসারটা আসার পর থেকে কিন্তু দোকানে দোকানে চাঁদাবাজিও হয় না আর।সেদিন চাঁদা তুলতে এসেছলো,ওদের ধরে গারদে পুরেছে।
আরেক লোক বলল,হো অফিসারটা আসার পর মেলা শান্তি ফিরে আইছে মহল্লায়।
দোকানদার তখন বলল,অফিসারটা কে জানেন আপনারা?মৃত ইরফান শিকদারের মেয়ের ঘরের নাতী।সাদেকুর রহমানের ভাগ্নে।
–কি কও মিয়া?তাইলে তো আমাগোরই পোলা।
–হো।
রায়াত আর মাইশা শুনলো।মাইশা রায়াতের কাঁধে কাঁধ দিয়ে ধাক্কা মেরে বলল,কিরে,তোরভাই তো দেখছি সুপার হিরো হয়ে গেছে।
–সুপার হিরো না ছাই।এক্কেবারে বজ্জাতের সুপারম্যান। আহ রে,এখনো মাঝে মাঝে পায়ের ব্যথা করে।কি কানটাই না ধরাইছিলো আমায়।
মাইশা ফিক করে হেসে দেয়।রায়াত ওকে গাট্টি মারে।ছেলেগুলাকে কন্সটেবল এর হাতে তুলে থানায় পাঠিয়ে দিলো অর্কভ।সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলো রাস্তায় জ্যাম হয়ে যাওয়ার জন্য।এবার নিজেই জেনো দায়ীত্ব নিয়ে ট্রাফিকপুলিশের ন্যায় জ্যাম ছারালো।একে একে গাড়ি এগুচ্ছে।তখনি অর্কভের চোখ পড়লো রাস্তায় ধারে রায়াতদের রিকশায়।এগিয়ে গেলো ও। বলল,
–আর তো এইটুকু পথ বাকি ছিলো,হেঁটে গেলেও তো পারতি।
মুখ বাঁকিয়ে রায়াত বলল,আমার ইচ্ছা।অর্কভ রিকশাওয়ালার হাতে ভাড়া ধরিয়ে দিয়ে বলল ওদের দেখেশুনে পৌছে দিতে।রিকশাওয়ালার এক প্যাডেল মারতেই অর্কভ ডেকে উঠলো,
–ওই মামা দাঁড়ান।
আবার এগিয়ে গিয়ে রিকশার সামনে দাঁড়িয়ে ভ্রু নাচিয়ে অর্কভ রায়াতকে বলল,কিছু খাবি?কিনে দিবো দোকান থেকে?ওই দেখ লাড্ডু ঝোলানো আছে
রায়াত ওইদিকে তাকালো।যদিও রায়াতের লাড্ডু দেখে খেতে ইচ্ছে করলো।তবুও ভাব দেখিয়ে বলল নিবে না।ছোটবেলায় চায়ের দোকানে সেই লাড্ডু ওর কত পছন্দেরছিলো।অর্কভ ভাই কাঁধে করে এনে কত লাড্ডু কিনে দিতো।এখনো অর্কভ ভাইয়ের সেটা মনে আছে ।রায়াত নিতে চাইলো না অর্কভও স্বাভাবিকভাবে বলল ঠিক আছে যা।তখনি মাইশা বলে উঠলো,
–নিজের বোনকেই বললেন ভাইয়া?পাশে আমি আছি দেখলেনও না।
–ওকে বলা মানে তোমাকেও বলা।
–কিন্তু ওর না মানে তো আমার না,না ভাইয়া।
হেসে অর্কভ বলল হু।কি খাবে বলো?
অমনি মাইশা বলল ফুচকা খাবে।রায়াত চোখ গরম করে তাকালো মাইশার দিকে।মাইশা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে অর্কভকে বলল,
–দেখছেন ভাইয়া দেখছেন।চোখ রাঙাচ্ছে।
গম্ভীরভাবে অর্কভ বলল,তুমি নেমে এসো।ও থাক একা।না খাইলে,না খাবে।
মাইশা নামতে থাকে রিকশা থেকে। রায়াত ওরহাত চেপে ধরে,যাবি না।মাইশা হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,উঁহু ফ্রি ফুচকা খাবো।তোর কথা শুনবো নাকি।গেলে চল,না গেলে তুই ভাই থাক।
রায়াত ভাব ধরে বসে থাকলো রিকশায়।নামবে না ও।মাইশা ভাবলো,যাবি না?তুই যাবি তোর ঘাড় যাবে বলেই ও রিকশা থেকে নেমেই রায়াতের হাত ধরে দিলো এক টান।অমনি রায়াত হুমড়ি খেয়ে পড়তে লাগলো।আচমকা টানটা সামলাতেপারে নি।তখনি অর্কভ ওকে দু-বাহুর মাঝে আগলে নিলো।অর্কভের বুকে রায়াত।তা দেখে মাইশা মুচকি হাসলো।
অর্কভ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দুই বান্ধবির ফুচকা খাওয়া দেখছে।বাপড়ে বাপ এতো ঝাল দিয়ে খাচ্ছে দুজন।মনে হচ্ছে টুপ করে এখনি চোখের পানি পরবে।পারেও বটে।খাবে না,খাবে না বলে আবার মাইশার সাথে পাল্লা দিয়ে ফুচকা খাচ্ছে রায়াত।
হঠাৎ বিকট শব্দ!একটা স্কুটিতে চালানো মেয়ে গাড়ির সাথে ধাক্কা লেগে,বাইক সহ অনেকদূর পর্যন্ত টেনে নিয়ে গেলো।অর্কভ দৌড়ে গেলো। রায়াতদের খাওয়া থেমে গেলো।ওরাও অর্কভের পেছনে ছুটে গেলো।মেয়েটার জামা ছিড়ে শরীর বেড়িয়ে গেছে দেখে অর্কভ বোতাম খোলার তোয়াক্কা না করে একটানে বোতাম ছিড়ে দ্রুত ওর ইউনিফর্ম খুলে মেয়েটার শরীরের উপর রাখলো।মেয়েটার জ্ঞান ফেরাতে চাইলো।রায়াতকে পানি দিতে বলল।রায়াতও ব্যাগ থেকে পানির বোতল বের করে দিলো।অর্কভ পানির ঝাপটা দিতে থাকে।রায়াত খেয়াল করলো মাইশা সহ বাকি আরো মেয়েগুলা অর্কভের পেটানো শরীরের দিকে হা করে চেয়ে আছে।এক্সিডেন্টে থেকে জেনো ওদের অর্কভের শরীরের আগ্রহ বেশি।যদিও স্যান্ডো গেঞ্জি পরা ছিলো অর্কভের।রায়াতের হয়তো কিছুটা জেলাসি হলো।ওর অর্কভ ভাইকে অন্য মেয়েরা দেখবে?তাই ও নিজের ব্যাগে রাখা দাদিমার চাদরটা বের করে অর্কভের কাঁধে দিলো।ততক্ষণে অর্কভ মেয়েটাকে পাঁজাকোলা করে নিয়ে দাঁড়িয়ে পরে।
হাসপাতালের কড়িডোরে রায়াত মাইশা দাঁড়িয়ে।অর্কভ ভেতরে বেডে শুয়ে।রক্ত দিচ্ছে অচেনা সেই মেয়েটাকে।রক্ত দেয়া শেষে আবার চাদরটা গায়ে জড়িয়ে কেবিন থেকে বেরিয়ে এলো।রায়াত ও মাইশা এগিয়ে গেলো ওর কাছে।অর্কভ হাসপাতালের চেয়ারগুলোর একটায় বসলো।রায়াত দ্রুত গ্লুকোজের বোতলটা এগিয়ে দিলো অর্কভের দিকে।অর্কভ মাথা তুলে ওর দিকে তাকালো,
–এসবের কি দরকার ছিলো।যেটা করতে বলেছি সেটা করেছিস?
মাইশা মেয়েটার ফোনটা এগিয়ে দিয়ে বলল,লক করা।তাই কাউকে কল দিতে পারি নি।
ফোনটা হাতে নিয়ে অর্কভ বলল,তোরা দুটোই মাথা মোটা।
অর্কভ ফোন থেকে সিমটা খুলে নিজের ফোনে সেট করলো।উঠে গিয়ে ফোনে মেয়েটির পরিবারের সাথে কথা বলতে লাগলো।রায়াত দেখলো ওর অর্কভ ভাইকে।আজ কেনো জানেনা অন্যরকম ভালো লাগছে তাকে।স্কুলের সামনের বখাটেদের শায়েস্তা করলো,একটা মেয়ের জীবন বাঁচালো,রক্ত দিলো।একদম সুপারহিরোর মতই।
চলবে..