তোর মন পাড়ায় পর্ব-১৪+১৫

0
6

#তোর_মন_পাড়ায়
পর্ব১৪
#ইস্পিতা_রহমান

সোফায় বসে পাশের বাড়ির এক ভাইয়ের বাচ্চার সাথে খেলছে রায়াত।কাজ থাকলে মাঝে মাঝে ভাবিটা এসে রায়াতের কাছে বাচ্চা রেখে যায়।রায়াতও সানন্দে বেবি রাখে।ডিউটি থেকে ফিরে সিঙ্গেল সোফায় গা এলিয়ে দিলো অর্কভ।ঘাড় ঘুরিয়ে একবার রায়াতকে দেখলো।
–এক গ্লাস পানি আন তো।
রায়াত মাথা তুলে তাকালো অর্কভের দিকে।চোখ বুঝে আছে।বুঝলো হয়তো অনেক ক্লান্ত।তাই উঠে গিয়ে ডাইনিং থেকে গ্লাসে নিয়ে আসলো।এক ঢোক খেয়েই অর্কভ মুখ কুঁচকে বলল,
–গরম পানি!ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানি আন।
রায়াত আবার গিয়ে ফ্রিজ খুলে বোতল এনে দিলো।অর্কভ বলল,
–গ্লাসে ঢেলে দে।
রায়াত তাই দিলো।অর্কভ ঢক ঢক করে পানি পান করলো।রায়াত আবার বেবির কাছে যেতে নিলেই অর্কভ বলল,মাথাটা টিপে দে তো ইফতা।প্রচন্ড ব্যাথা করছে।
–আপনি দেখছেন না আমি বাচ্চা রাখছি।
–ও মা।বাচ্চার মা হলি কবে?আমাদের তো এখনো এক সাথে থাকার অনুমতিই হয় নি।
শেষের কথাটুকু একটু আস্তেই বলল।রায়াত হয়তো কিছু শুনেও নি বা শুনেওছে এমন তাই বলে উঠলো,
–কি?কি?কি বললেন?
–বাচ্চার মা হলি কবে?
–বাজে কথা বলেন কেনো?আমি কি বিবাহিত?
অর্কভ তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকালো।সুধালো,তুই বিবাহিত নোস?
–আ আব ওসব বিয়ে কে মানে?
বলেই রায়াত বাচ্চাটার কাছে গিয়ে আবার খেলতে লাগলো।অর্কভ সুক্ষ্ম দৃষ্টিতে তা দেখলো।বলল,
–তুই বাচ্চা পছন্দ করিস?
–হুম।কে বা বাচ্চা পছন্দ করে না।
–বাচ্চা নিবি?
–মানে?
–মানে ইয়া বড় পুতুল কিনে এনে দিয়।
বলেই উঠে চলে গেলো অর্কভ।বিরবিড়িয়ে বলতে বলতে লাগলো,বুঝে না জেনো কি বলতে চাইছি।গাধী একটা।
রায়াত অর্কভের যাওয়ার দিকে চেয়ে রইলো।আজকাল ওর অর্কভ ভাইকে কেনো জানেনা ভালো লাগা শুরু হয়েছে।সেদিন দোকানের লোকগুলো কত প্রশংসা করলো।আবার হাসপাতালে যখন মেয়েটির পরিবারের লোক খবর পেয়ে এলো।ওরা মন ভরে অর্কভকে দোয়া করলো।মেয়েটির মা তো অর্কভকে বলেই বসলো,না জানি তুমি কার সন্তান।নিঃসন্দেহ তিনি রত্নগর্ভা।তোমার মতো ছেলে ঘরে ঘরে হোক।আমার মেয়েকে নিজে হাসপাতলে আনলে,রক্ত দিলে।এই ঋণ ভোলার না।তুমি আমার আরেক ছেলে।
অর্কভ সৌজন্যমূলক হাসলো।বলল,মানুষ হিসেবে এইটা আমার কর্তব্য আন্টি।
মেয়েটির মা অর্কভের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল,নিজের ইউনিফর্ম খুলে দিয়ে আমার মেয়ের ইজ্জত বাঁচিয়েছো।তুমি খুব ভালো ছেলে বাবা।তোমার স্ত্রী,সে খুব ভাগ্যবতী।
–আন্টি আসলে..
এইটুকু বলতেই মহিলাটি বলে উঠলো,ও তুমি অবিবাহিত?তোমার লজ্জা পাওয়া দেখেই বুঝলাম।ছেলে মানুষও লজ্জা পাই।
–না মানে আসলে আন্টি..
—তাহলে তো এখন বলতে হয়,যে মেয়ে স্বামী হিসবে তোমায় পাবে সেই মেয়ের সাত কপাল।তুমি নারীদের সম্মান রক্ষা করতে পারো।
মহিলাটির কথা শুনে অর্কভ আড়চোখে রায়াতের দিকে তাকালো।রায়াতও মুগ্ধ হয়ে ওই মহিলার কথা শুনতেছে।ভালো লাগছে ওর মহিলাটির কথা শুনে।

এই কথাগুলো ভেবে রায়াত দুহাতে মুখ ঢাকলো।তখনি পিচ্চিটা কেঁদে উঠলো।ওকে কোলে তুলে নিয়ে রায়াত অর্কভের ঘরের সামনে উঁকিঝুঁকি মারলো।রুমে দেখলো না,গোসলে ঢুকেছে বোধহয়।ঘুরে দাঁড়াতে কারোর উদোম বুকে বাড়ি খেলো।
মাথা তুলে তাকাতেই দেখলো অর্কভ ভাই।ভেজা চুলগুলো মুখের সামনে টুপটাপ করে পানি পরছে সেখান থেকে চোখ নামিয়ে,হাতের ফোলাফোলা মাসল গুলোর দিকে তাকালো।এরপর চওড়া বুক,তারপর ভাজকাটা মেদহীন পেটে।আরেকটু নিচে তাকাতেই অর্কভ ভালো করে তোয়ালেটা কোমড়ে চেপে ধরে বলল,
–এ্যাঁহ,শখ কত!আজ তোয়ালে ওতো সহজে খুলবে না।সেদিন দেখে লোভ হয়ে গেছে নাহ?

ফট করে রায়াত উপরে অর্কভের মুখের দিকে তাকালো।বলে কি এই লোক।ও কি ওসব দেখার জন্য এসেছে নাকি?তুতলিয়ে রায়াত বলল,
–আ আ আমি কি ওসব দেখেছি নাকি?
অর্কভ দরজায় কুনই ঠেকিয়ে হেলান দিয়ে বলল,তাহলে আমার ঘরে উঁকি মারছিলি কেনো?ধান্দা কি বল?
–কই উঁকি দিচ্ছিলাম।
অর্কভ এবার সামনের চুলগুলো হাত দিয়ে পানি ঝাড়তে ঝাড়তে রুমের ভেতরে যেতে যেতে বলল,এখনো এই আণ্ডাবাচ্চা কোলেই রেখেছিস?নিবি নাকি একটা বাচ্চা?
–লাগবে না।আমি কি ছোট নাকি? পুতুল নিয়ে আমি কি করবো?
–খেলবি।সারাক্ষণ কোলে নিয়ে ঘুরবি।
–ধুররু।
বলেই রায়াত চলে গেলো।অর্কভ ঘাড় ঘুরিয়ে একবার দেখলো ওর যাওয়া।বিরবিড়িয়ে বলিল,যত পাগল ছাগল আমার কপালেই জুটেছে।কার না কার বাচ্চা রেখে বেড়ায়।
–++-
ভার্সিটির গেটে পা দিতেই মাইশাকে দেখে দৌড়ে গিয়ে রায়াত ওর দুহাত ধরে ঘুরে।হঠাৎ কি হলো কিছুই বুঝলো না মাইশা।শুধু বলল,আরে ছাড় ছাড় পরে যাবো।
–মাইশু,মাইশু মাইশুওওওও
–কি হয়েছে বল।
রায়াত থেমে বলে,অর্কভ ভাইয়ের বাইসেপ মাসল কেমন জানিস?উসসসস,সেই সেই।
মাইশা তখন এক্সাইটেড হয়ে বলল,হো হো হো দেখেছি।আসলেই,সেই সেই সেই।একদম বলিউড হিরোরে মতো।আর কাঁধে কাছে একটা তিল আছে।

অমনি রায়াতের মুখ কালো হয়ে গেলো।সেদিন তবে মাইশা ওগুলোই দেখতে ছিলো।তার মানে ওত্তগুলো মেয়েও হা করে দেখতে ছিলো অর্কভ ভাইকে।রায়াত মাইশার মাথায় গাট্টি মেরে বলল,শালা তুই তিলও দেখেছিস।
–হু।ফর্সা শরীরে কালো তিল সেই ফুটে উঠেছিলো।
দাঁতে দাঁত পিষে রায়াত বলল,এবার নজর দিলে তোর চোখ তুলে নিবো মাইশুওওওও।
–কেনো?চোখ তুলে নিবি কেনো?বান্ধবি হিসেবে তোর ভাইকেনজর দেয়া আমার বান্ধবিগত অধিকার।
—মাইশুর বাচ্চা মাইশুওওওও।

–++–

ভার্সিটিতে ফিরে বার বার ফুপুকে,মা-কে,দাদিমাকে জিজ্ঞেস করেছে অর্কভ ভাই ডিউটি থেকে ফিরেছে কিনা।কখন থেকে ড্রয়িংরুমে অপেক্ষা করছে আর সদর দরজার দিকে তাকাচ্ছে অর্কভ ভাই কখন আসবে।কখন যে ঘুমিয়ে গেলো সোফার উপর।যখন জাগলো তখন দেখলো অর্কভ সিঙ্গেল সোফায় বসে টিভি দেখছে।আরে অর্কভ ভাই এসে গেছে।উঠে অর্কভের সোফার পিছে গেলো।এদিক এদিক ঘুরে ঘুরে দেখলো।অর্কভ তা খেয়াল করলো।তবে কিছু বলল না।ও জানে এই মেয়ে এমনিতেই পাগল।অবশ্য জাতে পাগল টালে ঠিক।রায়াত অর্কভের সামনে এসে বলল,

–আজ গোসল করবেন না?

–অফিস থেকে এসেই করেছি।

রায়াত চলে গেলো।কিছু সময় পর আবার এসে বলল,আচ্ছা,স্যান্ডো গেঞ্জি পরবেন না?

–টিশার্টের উপর কেউ স্যান্ডো গেঞ্জি পরে?

–ওহ।

আবার চলে গেলো। কিছুসময় পর আবার এসে বলে,আজ সেই গরম নাহ?গরমে আপনি খালি গায়ে শোওন?

–কি হয়েছে রে?এমন অদ্ভুত আচরণ করছিস কেনো?পেট খারাপ নাকি মাথা?

–নাহ।এমনি।

চলবে….

#তোর_মন_পাড়ায়
পর্ব১৫
#ইস্পিতা_রহমান

সারা সন্ধ্যাময়,অর্কভের আসে পাশে ঘুরঘুর করে অর্কভ ভাইয়ের কাছে একটা রাম ধমক খেয়ে এসে দাদিমার কাছে গাল ফুলিয়ে বসে রইলো রায়াত।রাতে খাবার টেবিলে আর একবারও তাকালো না অর্কভের দিকে।আঞ্জুমান আরা অর্কভকে জিজ্ঞেস করলো ফ্রি টাইম আছে নাকি ওর।অর্কভ কারন জিজ্ঞেস করলে উনি বললেন,সেদিন তার যে কাজিনরা তাদের বাড়িয়ে বিয়ের দাওয়াত আছে।বিয়ের জন্য গিফট কিনতে হবে।ওর মামা মানে সাদেকুর রহমান ব্যস্ত থাকবে গিফট কেনার সময় পাচ্ছে না।অর্কভ বিনাবাক্যে রাজি হয়ে গেলো।আঞ্জুমান আরা সাথে রায়াতকে নিয়ে যেতে বলল।অর্কভ ওর দিকে তাকালো।কিন্তু রায়াত মুখ ভেংচি দিয়ে অন্যদিকে তাকালো।

পরেরদিন বিকেলে রায়াতকে নিয়ে অর্কভ শপিংমলে এলো।অর্কভ নিজের পছন্দমতো গিফট দেখতে লাগলো রায়াতকে জেনো পাত্তাই দিলো না গিফট পছন্দ করার জন্য।এতে রায়াত ক্ষুব্ধ হলো।সরাসরি বলল,

–দেখেন অর্কভ ভাই,আমাদের দুজকে গিফট কিনতে পাঠিয়েছে তার মানে আপনার একার পছন্দে গিফট কিনবো। আমারো পছন্দ হতে হবে।

–তোর যা পছন্দ।বিয়ের কনে সেই গিফট দেখে আগেই বমি করে দিবে।আর সবাই ভাববে বিয়ের দিনই নতুন বউ প্রেগন্যান্ট। তোর জন্য ওদের বিয়েটায় ভেঙে যাবে।তুই কি তা চাস?

রায়ায় রেগে প্রায় চিল্লিয়ে বলে উঠে,অর্কভ ভাইইই।

–শপিংমলের মধ্যে ষাড়ের মত চিৎকার করছিস কেন?চুপ কর।ধমকের বলল অর্কভ।

–আমার পছন্দেই গিফট কিনবো তা না হলে গিফট আমি কিনতে দিবো না আপনাকে।

–আমার কথা কি বুঝিস নি?আগের কথা কি আবার রিপিট করবো?

ক্রদ্ধ গলায় রায়াত কিছু বলতে যাবে তার আগেই কেউ অর্কভকে ডেকে উঠে।দুজনে ঘুরে তাকাতেই দেখে একটা সুন্দরী মেয়ে। কিছু বুঝে উঠার আগেই মেয়েটা দৌড়ে এসে অর্কভকে জড়িয়ে ধরে।যা দেখে রায়াত ভ্রুকুচকে তাকিয়ে থাকে ওদের দিকে।অর্কভ মেয়েটাকে জড়িয়ে না ধরে দু হাত উচু করে রেখেই একটু অপ্রস্তুত হয়েই বলে–

–কি হচ্ছে কি জারা।শপিংমল এইটা।

রায়াত এতোক্ষণে বুঝলো মেয়েটার নাম জারা।কথার ধরন শুনে মনে হচ্ছে দুজন দুজনার চেনা।তবে মেয়েটা ওভাবে অর্কভকে জড়িয়ে ধরা দেখে রায়াতের মেজাজটা একটু খারাপ হলো।মনে মনে ভাবে,কি গায়ে পড়া মেয়ে। হুট করে কাউকে জড়িয়ে ধরে এভাবে।তাও একটা ছেলেকে।

অর্কভ জারাকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে প্রশ্ন করে তুমি এখানে?

জারা অর্কভকে পেয়ে অতি এক্সাইডেট হয়ে বলে– আমিও তো কখনো ভাবতে পারি নি এখানে এসে তোমার সাথে দেখা হয়ে যাবে।আমি তো আমার কাজিনের বান্ধবির বিয়ে খেতে এসেছি।

–ওহ।

–শুধু ও।তুমি খুশি হও নি অর্কভ আমাকে দেখে?কতদিন পর আমাদের দেখা হলো।কল দিলে তো খালি বলো ব্যস্ত আছি।

–পুলিশের জব করি আমি।সময়ের অনেক মূল্য আমার কাছে।

–এখন তো ঠিকি শপিং করছো।

–ফ্যামিলির কাজে এসেছি।সময় তো বের করতেই হবে।

–বাই দ্যা ওয়ে,তোমার পাশে ওটা কে?

রায়াতকে দেখিয়ে জারা প্রশ্ন করলো অর্কভকে।রায়াত মেয়েটার দিকে তাকিয়ে ন্যাকামুগুলো দেখছে।

অর্কভ সোজাসাপটা বলল,আমার শ্বশুরের মেয়ে।
রায়াত চোখ বড় বড় করে তাকালো অর্কভের দিকে।জারা বলল,

–কিহ!তুমি বিয়ে করেছো?এই মেয়েটা তোমার বউ?

–হুম।সেই উনিশ বছর বয়সেই বিয়ে করেছি।

–ওও সেই জন্য তুমি ভার্সিটিতে কখনো কোন মেয়েকে পাত্তা দিতে না।

–তোমাকেও দিতাম না।

জারা আর কোন কথা বলল না।রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে চলে গেলো।রায়াত অর্কভকে বলল,

–আপনি মিথ্যা বললেন কেনো?

–কি মিথ্যা বলেছি?

–আমি আপনার বউ?

–ওর মতো ছ্যাচরা মেয়ের হাত থেকে বাঁচতে হলে এরাম হাজার মিথ্যা বলতে আমি রাজি আছি।ভার্সিটি লাইফে জ্বালিয়ে মেরেছে আমাকে।আর হ্যা,তোর সাথে আমার কিন্তু বিয়েটা ভাঙে নি।সো মিথ্যা বলি নি কিন্তু আমি।

–আপনি ভার্সিটিতে থাকতে ওই জারার সাথে প্রেম করেছেন?

–তুই কি মাথা মোটা?এই মাত্র কি বললাম তোকে।

–হুহ্,বুঝি বুঝি।

বলেই রায়াত আগে আগে হাঁটা ধরলো।অর্কভ এগিয়ে এসে বলল,

–ওই, তুই ওইভাবে বললি কেন?তুইও তো প্রেম করিস।ওই যে তোর আসিক, কি জেনো নাম….সায়ান,না ফায়ান।

–হো প্রেম করি আরো প্রেম করবো।আপনার সমস্যা?নিজে না জানি কয়টা করেছে।আজ তী একটা স্বচক্ষে দেখলাম।বাড়ি গিয়ে ফুপুকে বলবোনে তোমার ছেলের বউ পেয়েছি।নেকুরানী বউ।

–আমার মায়ের ছেলের বউ হলে তোর কি হয়?

–সতী..

বলতে গিয়ে রায়াত বলল,ভাবি হয়।

–কুত্তা।

বলেই এবার অর্কভ আগে আগে হাঁটা ধরলো।রায়াত কেমন মুখটা গোমড়া করে চেয়ে রইলো ওর যাওয়ার পানে।গিফট কিনলো ওরা কিন্তু রায়াত গিফট চুজ করতে হেল্প করলো না।বরং মুখ গোমরা করে রইলো।অর্কভ ওকে এটা-ওটা কিনে দিতে চাইলো নিলো না ও।আইসক্রিম এনে দিলো তাও নিলো না।অর্কভ ভাবলো এর আবার কি হলো।সারারাস্তা কোন কথাও বলল না।অর্কভ গাড়ি থেকে নেমেই রায়াতের হাতে গিফটটের ব্যাগগুলো ধরিয়ে দিয়ে বলল,

–উফফ কি গরম রেএএএ।

বলেই শার্টের বোতাম খুলে ঘাড়ের কাছে থেকে কলার নামিয়ে দিলো।উন্মুক্ত হলো কাঁধের দিক।রায়াতের চোখ আটকে গেলো সেই কালো তিলের উপর।যেটা দেখার জন্য সেদিন কত ঘুরঘুর করছিলো অর্কভের আসেপাশে।অর্কভ সদর দরজার দিকে এগুনোর জন্য দুইটা সিঁড়ি পার করার সময় পেছনে ফিরে একবার চাইলো।রায়াত চোখ নামিয়ে নিলো।অর্কভ একটা বাঁকা হেসে বাড়ির কলিংবেল বাজালো।রায়াত বাড়ির ভেতর গিয়েই প্রথমে আঞ্জুমান আরার ঘরে যায়।দাদিমাও সেখানে ছিলো।ফুপুর কাছে গিয়ে অভিযোগের স্বরে অর্কভের গার্লফ্রেন্ড কিভাবে শপিংমলে ওকে জড়িয়ে ধরেছে,কি কি হয়েছে সব জেনো বেশি বেশি করে বলল।সাথে হাত দিয়ে দেখিয়ে দেখিয়ে বলল।দরজার কাছে দাঁড়িয়ে সবটা শুনলো অর্কভ।তারপর ভেতরে গিয়ে ওর মাথায় গাট্টি মেরে বলে,

–কি মিথ্যুক রে তুই।তোকে বললামও ও আমার গার্লফ্রেন্ড না।তবুও তুই…

–উমম,বললেই হলো।আমি তো দেখলাম।আপনি চোখ টিপে ওকে ইশারা করলেন আমার সামনে চুপ হয়ে যেতে।

–কিহ,আমি কখন এমনটা করলাম?তুই আসলেই মিথ্যুক।তোর আর তোর আসিক সায়ানের পিরিতের কথা আমি কি কোন মিথ্যা বানিয়ে বলি?তুই কেন বলবি?

মুখ ভেংচি কাটলো রায়াত।অর্কভ ওর মাকে সবটা ক্লিয়ার করলো।দুজনার কথা শুনে আঞ্জুমান আরা হাসলো।তবে মনে মনে একটু বেশিই খুশি হলো।কারন দুজনে দুজনার পাশে কাউকে সহ্য করতে পারে না।

চলবে…