তোর মন পাড়ায় পর্ব-১৮

0
10

#তোর_মন_পাড়ায়
পর্ব১৮
#ইস্পিতা_রহমান
অর্কভ অন ডিউটিতে।নিজের কেবিনে দারোগা,কন্সটেবলদের সাথে কেইস নিয়ে গরুত্বপূর্ণ কিছু আলোচনা করছিলো।নিজের ডেক্সের সামনে হেলান দিয়ে আড়া-আড়ি পা রেখে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলো।হাতে কেইসের ফাইল।বুকে সানগ্লাস ঝুলানো।কন্সটেবল গুলো ওর সামনে দাঁড়িয়ে মনোযোগ সহকারে কথা শুনছিলো।তখন হঠাৎ ওর ফোন বেজে উঠে।পকেটে হাত দিয়ে ফোনটা বের করে মুখের সামনে ধরতেই দেখলো রায়াত কল করেছে।এই মেয়ে তো ঘুণাক্ষরেও ওকে কল দেয় না।আর ওই দিনের ঘটনার পর থেকে তো ওর সাথে কথা বলায় বন্ধ করে দিয়েছে।আঞ্জুমান আরা রায়াতকে বলেছে ভার্সিটি থেকে ফেরার পথে রিকশা না পেলে অর্কবকে কল দিস। ও তোকে ভার্সিটি থেকে নিতে যাবে।আমি বলে দিবো ওকে।নাহ,এই মেয়ে প্রয়োজনে হেটে হেঁটে বাড়ি ফিরবে তবুও ভাব দেখিয়ে অর্কভকে কল দিবে না।রায়াতের কল পেয়ে কিছুটা অবাকই হলো অর্কভ।এ সময় তো ও ভার্সিটিতে থাকে।হয়তো বাড়ি ফিরতে হবে তাই কল দিছে।বয়ে গেছে অর্কভের বাড়ি পৌঁছে দিতে।তাই ফোনটা রিসিভ করবে না ভেবেও কল কেটে দিতে গিয়ে কলটা রিসিভ করে ফেলে।আর তখনি শুনতে পাই অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু কথা।অর্কভের চোয়াল শক্ত হয়ে আসে।সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পরে।দ্রুত বাইক নিয়ে বেড়িয়ে পরে।

–++–

“দরজা খুলো বেইবি।এমন করে কেউ হু?তুমি না আমায় ভালোবাসো?আমিও তো তোমায় খুব ভালোবাসি।তাহলে এভাবে নিজেকে কেনো দরজার আড়াল করে রাখছো?কাম অন বেইবি।ইটস নর্মাল।রিলেশনে থাকলে আগে থেকেই দুজন-দুজনার চাওয়া-পাওয়া গুলো এভাবেই মেটাতে হয়।”

এক টানে কথাগুলো আওড়াল সায়ান।সেদিন রায়াত ওর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথাটা সায়ানকে বলেছে।ওর যে ১১ বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিলো তা জানার পর সায়ান হয়ত আর রায়াতকে একসেপ্ট করবে না ভেবেছিলো রায়াত।কিন্তু সায়ান মৃদু হেসে বলেছিলো,পাস্ট ইজ পাস্ট।আমি তোমাকে ভালোবাসি এইটাই সত্য।এইটাই বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। রায়াত স্বস্তি পাই।আজ হঠাৎ ভার্সিটিতে আসার পর সায়ান বলল ওর বাবা-মায়ের সাথে দেখা করাবে রায়াতকে।তাই ওকে সায়ানের বাসায় নিয়ে যাবে।রায়াতও হাসিমুখে সায়ানের সাথে ওদের বাড়ি যায়।কিন্তু বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে বুঝতে পারে বাড়িতে কেউ নেই।সায়ান ওকে মিথ্যা বলে নিয়ে এসেছে এখানে।রায়াত চলে যেতে চাই।সায়ান পথ আটকে দাঁড়ায়।বলে আজ ওরা একান্তে সময় কাটাবে এখানে।ভড়কে যায় রায়াত।সায়ানকে অনেক বোঝায় বিয়ের আগে এসব ঠিক না।কিন্তু সায়ানের এক কথা আজ ওরা একান্তে সময় কাটাবেই।সায়ান ওর দিকে এগুতে থাকে। রায়াত বুঝতে পারে ও ট্রাপে পরে গেছে।হাতে থাকা ফোনটা এ অর্কভ ভাইয়ের নাম্বার সেভ করে রাখা।এক ক্লিকেই কল চলে যাবে।পিছাতে পিছাতে রায়াত লুকিয়ে অর্কভকে কল দিলো।ওপাশ থেকে অর্কভ কলে শুনতে পেরেছে ওদের কথোপকথন গুলো।

রায়াত যত পিছানায় সায়ান তত এগুতে থাকে।ভীত স্বরে রায়াত বলে,

–এ এ এগুবে না সায়ান।আমি কখনো ভাবিনি তোমার মনে এতো নোংরামি ছিলো।

–উসস বেবি।তুমি বিবাহিতা একটা মেয়ে জানার পরও তোমার সাথে রিলেশনে আছি।আর তোমায় টাচ করবো না বলো?একটু আদর তো আমারও প্রাপ্য।

রায়াত এদিক-ওদিক তাকালো।বাঁচার মতো কোন উপাই কি নেই?ফোনটা পেছন করে হাতে লুকানো।অর্কভ ভাই কল রিসিভ করেছে কিনা ওর জানাও নেই।যদি না করে তবে কি হবে ওর এখন।নিজেকে বাঁচাবে কি করে এই সায়ানের কাছে থেকে।একটা ঘরের দরজা খোলা দেখে রায়াত দৌড়ে সে ঘরে চলে গেলো।দরজা আটকে দিলো।কিন্তু একি!দরজার ছিটকানি লাগে না কেনো?রায়াত দরজায় পিঠ ঢেকিয়ে আটকে দাঁড়ালো।ওপাশ থেকে সায়ান বারবার বলছে দরজা খুলে দিতে।কিন্তু রায়াত দুহাতে দুদিকে ছাট করে আটকে ধরে আছে দরজা।খুললেই যে আজ ওর বড় সর্বনাশ হয়ে যাবে।সায়ান অনেক্ষণ ভালোভাবে ডাকার পর রাগ চড়াও হলো মাথায়।সজোরে একটা লাথি দিলো দরজায়।ধাক্কায় অমনি রায়াত ছিটকে গিয়ে সামনে থাকা বিছানার পরে উপর হয়ে মুখ থুবড়ে পরলো।ক্রোধান্বিত সায়ান এসে এক হাটু বিছানার উপর রেখে রায়াতের বাম হাতটা পিঠে দিকে বাঁকিয়ে ওকে বিছনায় চেপে ধরলো।দাঁত কিড়মিড় করে বলল,

–শালি তোকে ভালো করে বোঝালাম।শুনলি না আমার কথা।এবার দেখ কি করি তোর সাথে।জোরজবরদস্তি আমার একদম ভালো লাগে না।আজ তোর সাথে সেটাই করবো।

বলেই রায়াতের উপর নিজের ভরটুকু সব ছেড়ে দিলো সায়ান।মাথার পেছনে চুল ধরে ওর মুখ চেপে ধরলো বিছনায়।ঘাড়ে মুখ ডোবালো।রায়াত যেহেতু বিছানায় উপর হয়ে পরেছে আর সায়ান ওর পিঠের উপর।ফলে ও চাইলেও হাত দিয়ে বাঁধা দিতে পারছে না।শুধু বিছানায় হাত পা ছুরে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়ার বৃথা চেষ্টা করছে।সায়ান ওর পিঠের কাছে জামা অলরেডি ছিড়ে ফেলেছে।সায়ান অবাধ্য ঠোঁট ছোয়ালো সেখানে। রায়াত খিঁচে চোখ বন্ধ করে নিলো।মনে মনে বলল,

–পারলাম না নিজেকে বাঁচাতে।পারলাম অর্কভ ভাই,আপনার আমানত রক্ষা করতে।

সায়ান রায়াতের বগলের নিচ দিয়ে বক্ষদেশে হাত রাখতেই ডুকরে কেঁদে উঠলো ও।চিৎকার করে বলল,

–ছেড়ে দাও সায়ান।ছেড়ে দাও প্লিজ।আমি অন্যের আমানত।ছেড়ে দাও আমায় প্লিজ।

সায়ান ওর মাথার পেছনে চুল ধরে মাথাটা উচু করে ধরলো।ওর কানের কাছে বিরবিড়িয়ে বলল,

–সবে তো শুরু বেইবি।এখনো যে অনেক আদর বাকি।
-শয়তানের বাচ্চা শয়তান।আমি এই তোর মতো জানোয়ারকে পছন্দ করতাম।ঘৃণা হচ্ছে আমার নিজের উপরইএভাবে ঠকালি তুই আমাকে।

–আমি তো সত্যিই ভালোবাসি তোমায় বেবি।তাই তো আমার হক আমি আদায় করে নিচ্ছি।

–কিসের হক তোর?আমার উপর শুধু অর্কভ ভাইয়ের হক।আমার স্বামীর হক।

–তাই।তো কই তোর স্বামী?তার হক আমি কেড়ে নিচ্ছি।সে তো এলো না তা রক্ষা করতে।

–আমাকে ছাড় তুই।

–ছাড়ার জন্য কি এনেছি।আজ তোমার সর্বস্ব লুটে নিয়ে তবেই ছাড়বো।তোমার পুলিশ স্বামীর হক আমি নিয়ে নিবো।

–ভালো হচ্ছে না সায়ান।আমায় ছেড়ে দাও বলছি।

–সম্পূর্ণ আমার কবজায় তাও এতো তেজ?বললাম জোরজবরদস্তি আমার একদম পছন্দ না।শুনলে না।জেন্টলি সব হতো।কিন্তু এখন যে হাল করবো তোমার।পদে পদে ছটফটিয়ে মরবে।এখনো সময় আছে রায়াত নিজে বশ্যতা স্বীকার করো।

–কুত্তার বাচ্চা ছাড় আমায়।অর্কভ ভাই জানলে তোকে কুকুরের মতো পিটাবে।

–কুকুরের মতই আমি আজ তোকে আদর করবো।

–প্লিজ সায়ান,প্লিজ প্লিজ যেতে দাও আমায়।তোমার দুটো পায়ে পরি।প্লিজ আমার ইজ্জত ভিক্ষা দাও।

রায়াত মনে মনে প্রার্থনা করলো।হে আল্লাহ রক্ষা করো।এই শয়তানের হাত থেকে আমার ইজ্জত বাঁচাও। অর্কভ ভাই, আপনি কি আমার ফোন রিসিভ করে নি?আমায় কি বাঁচাতে আসবে না?তবে কি শেষ রক্ষা হলো না।
ভেবেই রায়াত বিছানায় মুখ চেপে চোখ বন্ধ করে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো।তখনি অনুভব করলো ওর পিঠের উপরের ভাড় কমে গেছে।এবং পাশে ছিটকে কিছু একটা পরলো।বিছানা থেকে মুখ তুলে তাকালো রায়াত।ঘাড় ঘুরিয়ে বামে তাকাতেই ইউনিফর্ম পরিহিত অর্কভ ভাইকে দেখতে পেলো।ডানে তাকালো,সায়ান ফ্লোরে পরে কুকাচ্ছে।আর এক সেকেন্ড দেরি করলো না রায়াত।বিছানা ছেড়ে উঠে ঝাপিয়ে পরলো অর্কভ ভাইয়ের বুকে।হু,হু করে কেঁদে দিলো।অর্কভও দু-বাহুতে আগলে নিলো ওকে।মাথায় হাত বুলিয়ে আদুরে স্বরে বলল,

–এইতো আমি এসে গেছি।কিচ্ছু হয় নি ইফতা।আমি আছি তো।আমি থাকতে তোর কিচ্ছু হতে দিবো না।

হিচকি তুলে ফুঁপিয়ে রায়াত বলল,অর্কভ ভাই,ও ও ও ওই সায়ান আমার….
বলেই আমার হু হু করে কেঁদে দিলো।চোয়াল শক্ত করে সায়ানের দিকে তাকিয়ে অর্কভ বলল,ওই জানোয়ারের বাচ্চাকে তো আমি দেখে নিচ্ছি ।ওর সাহস হয় কি করে আমার ইফতার শরীরে হাত দেয়ার।
রায়াত ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে অর্কভের বুকের মাঝে কেঁদেই চলল।অর্কভ ওকে বুকে থেকে সরিয়ে ওড়নাটা তুলে ওর গায়ে জড়িয়ে দিলো।এরপর ঘাড় ঘুরিয়ে বাঘের মতো তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে সায়ানের দিকে তাকালো।
রায়াতকে ছেড়ে অর্কভ সায়ানের কাছে গিয়ে কলা ধরে টেনে তুলে মেইন পয়েন্ট বরাবর একটা লাথি মেরে দিলো।কুঁকিয়ে উঠলো সায়ান।আবার কলার ধরে টেনে নাকে মুখে এলোপাথাড়ি ঘু*ষি মারলো।

–আমার ইফতাকে টাচ করেছিস তুই।আমার ইফতাকে।তোর কলিজা কত বড় আজ আমি দেখবো।

অর্কভের মাইরের তোরে রায়াত নিজেও ভয়ে কেপে কেপে উঠছে।ভীত স্বরে বার বার ডাকছে,

–অর্কভ ভাই।

অর্কভের কোন দিকে হুস নেই।পাগলা ষাড়ের মতো ও সায়ানকে মারছে।রায়াত এবার অর্কভের ইউনিফর্ম টেনে টেনে ডাকছে,

–অর্কভ ভাই।অর্কভ ভাই।

সায়ানকে মাইর থামিয়ে অর্কভ ঘুরে তাকালো রায়াতের দিকে।অমনি রায়াত আবার অর্কভকে জড়িয়ে ধরে বুকে মাথা রেখে বলে,

–আমার ভয় করছে অর্কভ ভাই।প্লিজ চলুন।চলুন অর্কভ ভাই।

রায়াত থরথর করে কাঁপছে। দুহাত দিয়ে আবার বুকের সাথে জড়িয়ে নিলো অর্কভ ওকে।কেঁদে কেঁদে আবার রায়াত বলছে,

–প্লিজ অর্কভ ভাই আমায় নিয়ে চলুন।

অর্কভ আবার ওর মাথায় হাত রাখলো।স্বান্তনা ও ভরসা দিলো।কোন ভয় নেই ইফতা।আমি আছি তো।
দুহাতের আঁজলায় রায়াতের গাল ধরে অর্কভ আবার বলল,ভয় পাস না।কিচ্ছু হয় নি তো।এই তো, এইতো আমি আছি।

রায়াত আবার অর্কভের বুকে মুখ লুকিয়ে কেঁদে বলে,আমায় নিয়ে চলুন অর্কভ ভাই।প্লিজ আমায় নিয়ে চলুন।

হঠাৎ বিকট শব্দ।রায়াতের পিঠের কাছে অর্কভের হাতের বাঁধন ঢিল হয়। কিছু বুঝে উঠার আগেই অর্কভ ঢলে পরে গেলো ফ্লোরে।
আপনা-আপনিই চোখ দুটো বড় বড় হয়ে চেঁচিয়ে উঠলো রায়াত,

–অর্কভ ভায়ায়ায়ায়ায়ায়াইইইই।

সায়ান নিজেও ফ্লোরে পরে আছে।তবে খিকখিক করে হাসছে।মেরে ওর যে হাল করেছে অর্কভ। এতেই উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতা নেই তবুও কোনমতো উঠে ফুলদানিটা দিয়ে অর্কভের মাথার উপর বারি মেরে দিয়েছে।ওরা দুজন দুজনকে নিয়ে এতোটায় ব্যস্ত হয়ে পরলো, অন্য কোনদিকে আর নজর নেই জেনো।এই সুযোগে সায়ান কাজটা করে বসলো।

রায়াতের দিন-দুনিয়ার জেনো অন্ধকার হয়ে গেলো।রক্ত ছড়িয়ে পরেছে ফ্লোরে। মূর্তির ন্যায় স্তব্ধ হয়ে গেলো রায়াত।স্বামীর সোহাগ,সংসার হলোই না।তার আগেই কি তবে বিধবা হতে হলো ওকে।অর্কভ ভাইকে তো বলাও হয় নি ও কতটা ভালোবাসে ওর অর্কভ ভাইকে।সেদিনের সেই তিক্ত কথা গুলোই তো শুধু শুনে গেলো যে রায়াত সংসার করবে না।অথচ বুকের ভেতরে লুকানো সত্যটা যে লুকানোই রইলো।কতটা ভালোবাসে অর্কভ ভাইকে জানানোই হলো না।হ্যা সেদিন অভিমানে বলেছিলো ও সংসার করবে না।কিন্তু অর্কভ ভাই যখন বলেছিলো ও ফিরে এসেছে,সংসার করবে।শুনে রায়াতের বুকটা জুড়িয়ে গিয়েছিলো। ও তো এতোটা বছর এই দিনের জন্যই অপেক্ষা করেছিলো। অর্কভ ভাই ফিরে আসবে।ওদের সংসার হবে।ফুপুকে শ্বাশুড়ি বলে ডাকবে।সেবা করবে,যত্ন করবে।

আরো যাতে অর্কভ ভাই ওকে ত্যালায় তার জন্যই তো সেইদিন বলেছিলো অর্কভ ভাইয়ের সাথে সংসার করবে না।তাকে জেলাসি করানোর জন্যই তো জিদ দেখিয়ে সায়ানের সাথে ক্লোজড হয়ে ছিলো।
রায়াত ধপ করে অর্কভের পাশে বসে পরলো।আলগোছে ওর মাথাটা কোলের উপর তুলে নিলো।ধীরে ধীরে কম্পিত গলায় ডাকলো,
–অ অ অ অর্কভ ভাই।অর্কভ ভাই?এই অর্কভ ভাই কথা বলেন না কেনো?চোখ খুলেন?দেখেন আমার দিকে।দেখেন না কেনো।দেখুন আমায়।এই অর্কভ ভাই চোখ খোলেন।
এবার চেঁচিয়ে বলল রায়াত,আমার কথা শুনছে না কেনো অর্কভ ভাই?সংসার করবেন না আমার সাথে?এই অর্কভ এই। সেদিন না বললেন আমাদের সংসার হবে।আরে কথা বলেন না কেন?আমাদের সংসার শুরুই হলো না।তার আগেই আমাকে বিধবা করার পায়চারি করছেন।এই কথা বলেন, চুপ করে থাকবেন না।একদম চুপ করে থাকবেন।উত্তর দেন বলছি।উত্তর দেএএএন।এই অর্কভ ভাই।

অর্কভের মাথা বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কেঁদে উঠলো রায়াত,অর্কভ ভায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়াই।আবার আমায় ছেড়ে যাবেন না অর্কভ ভাই।কি নিয়ে বাঁচবো আমি।এতোটাদিন অপেক্ষা করিয়ে ফিরে এসে আবার কেনো চলে যাচ্ছেন।আমি কিন্তু কোন দিন ক্ষমা করবো না আপনায় বলে দিলাম।আমায় এভাবে একা ফেলে চলে গেলে কোনদিন ক্ষমা করবো না আপনায়।আমার আপনার সাথে সংসার করা হলো না।হলো না সংসার করা।

খ্যাঁক খ্যাঁক করে হেসে উঠলো সায়ান।নাকে মুখে রক্ত ওর।তবুও হাসি থামছে না জেনো।রাগ হলো রায়াতের।ওর হাসি দেখে গা-পিত্তি জ্বলে গেলো।উঠে গিয়ে যে ফুলদানি দিয়ে অর্কভকে মেরেছে ওইটা দিয়ে সায়ানকে এলোপাথাড়ি মারলো,

—মর,মর তুই মর।আমার অর্কভ ভাইকে আঘাত করেছিস তুই।কুত্তার বাচ্চা।

আবার থপ করে বসে পরলো রায়াত।নিজের চুল চেপে ধরে বলল,কেন,কেন,কেন আমি সায়ানের কথা শুনে এখানে আসছিলাম।কেন আসছিলাম, কেন।
হাউমাউ করে কেঁদে দিয়ে রায়ায় আবার বলল,ও ফুপুওওও, ফুপুওওওও তোমার রায়াতের জন্য তোমার ছেলে এই অবস্থা।তোমার রায়াত, তোমার ছেলের খেয়াল রাখতে পারে নি।ফুপুওওও।

চলবে…